চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় দুইজনকে আটক করেছে বিজিবি। আজ ১৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার বিকেলে বিজিবি ২৫ ব্যাটালিয়ন থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। আটককৃতরা হলেন, দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে বাপ্পি ইসলাম (২৮) ও একই এলাকার মৃত শহীদুল ইসলামের মেয়ে মোছা. সুমী বেগম (৩৩)। তারা সম্পর্কে খালাতো ভাই বোন বলে জানা গেছে।
বিজিবি ২৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল ফারাহ মোহাম্মদ ইমতিয়াজ জানান, শুক্রবার গভীর রাতে ফকিরমোড়া বিওপির হীরাপুর এলাকা থেকে বাংলাদেশি দুই নাগরিককে অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার সময় আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা ভারতের দিল্লিতে চিকিৎসার জন্য যেতে চাচ্ছিলেন।
আটককৃত অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে আখাউড়া থানায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
এসএসসি পরীক্ষায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলায় অকৃতকার্য হয়েছে ৪৩৩ জন পরীক্ষার্থী। গত ১২ মে রবিবার সারাদেশের ন্যায় আখাউড়ায় এসএসসি সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অকৃতকার্য ছাত্রছাত্রীর বেশির ভাগই ইংরেজি ও গণিতে ফেল করেছে। এছাড়া অন্যান্য বিষয়েও কেউ কেউ ফেল করেছে। কয়েজন শিক্ষকের সাথে কথা বলে এবং কিছু ফলাফল পর্যালোচনা করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
ফেল করার কারণ হিসেবে পাওয়া গেছে ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখা। কোভিড- ছাত্রছাত্রীদের অমনোযোগিতা, নিয়মিত ক্লাশ না করা, অভিভাবকের সচেতনতার অভাবসহ আরো কিছু অজুহাত দিচ্ছেন শিক্ষকরা। অভিভাবকদের দাবি, শিক্ষকরা আন্তরিকভাবে পাঠদান করে না। ইংরেজি ও গণিতে মান সম্মত শিক্ষকের অভাব। প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষকের স্বল্পতা। যোগ্য ম্যানেজিং কমিটির অভাবসহ রয়েছে আরো কিছু সমস্যা।
আখাউড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১ হাজার ৬২৮ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাশ করেছে ১ হাজার ১৯৫ জন। শতকরা পাশের হার ৭৩.৪০।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় স্ত্রীর দেয়া অভিযোগে মোঃ রিপন মিয়া (২৬) নামে এক যুবককে কারাদন্ড প্রদান ও জরিমানার আদেশ দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) এস.এম রাহাতুল ইসলাম এই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত ও স্থানীয় সূত্র জানায়, পৌর এলাকার দেবগ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে রিপন মিয়া নামের ওই যুবক আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা। তার স্ত্রীর অভিযোগ সে মাদকাসক্ত। মাদক সেবন করে প্রায়ই সে স্ত্রীকে মারধর করে। বিকেলে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়। এ অবস্থায় ভ্রাম্যমাণ আদালত রিপনকে মিয়াকে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও এক হাজার টাকা অর্থদন্ডের আদেশ দেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আখাউড়ায় আইনমন্ত্রী অ্যাড. আনিসুল হকের নিজস্ব অর্থায়নে অসহায় দুস্থদের মাঝে শাড়ি-লুঙ্গি বিতরণ করা হয়েছে।
আজ ২০ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আইনমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে ৭’শ নারী-পুরুষকে শাড়ি-লুঙ্গি দেওয়া করা হয়।
এরমধ্যে ৩৫০ জনকে শাড়ি এবং ৩৫২ জনকে লুঙ্গি দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার অংগ্যজাই মারমা। মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম.এ. মতিনের সভাপতিত্বে এসময় অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন মোগড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আমিনুল হক দুলাল, ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আবু কাউছার ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক আবু হানিফ ভূইয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, যুবলীগ নেতা সুহেল প্রমুখ। এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
বিয়ে, গায়ে হলুদ, পুজা, খেলা-ধুলা বা মিছিলে বাদ্য বাজানোর জন্য ডাক পরে তাদের। কাঁধে ঢোল ঝুলিয়ে দু’হাতে ঢাকে কাঠির বারি দিয়ে ছন্দের আওয়াজ তুলেন। সেই ছন্দে মানুষ নেচে গেয়ে আনন্দ করে। মানুষকে আনন্দ দিয়েই চলে ঢুলিদের সংসার। পুজা এলেই কদর বাড়ে তাদের। ঢাকের বাদ্য ছাড়া পুজার আনন্দ যেন অসম্পূর্ণ। তাই আসছে দুর্গাপুজায় বাদ্য বাজানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের করুয়াতলী ঋষিদাস পাড়ার ঢুলিরা। শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দূর্গাপুজা।
সোমবার দুপুরে ঋষি পাড়ায় ঢুকতেই কানে আসে ঢোলের আওয়াজ টেম-টে টেটেম..টেম.। সেই আওয়াজের ছন্দে শিহরণ জাগায়। মনে করিয়ে দেয় পুজা আসছে। উঠানে গিয়ে দেখা যায় বাদ্যযন্ত্র পরখ করে নিচ্ছেন ঢুলিরা। কেউ বা আঙ্গুলের আলতো ঁেছায়ায় ঢোলে তাল তুলছেন। তাদের চোখে মুখে আনন্দের ঝিলিক।
ঢুলিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পারিবারিক ঐতিহ্য ঢাক-ঢোল বাদ্য-বাজনার পেশা ধরে রেখেছে ঋষিদাস পাড়ার ৫/৬টি পরিবার। বিয়ে-গায়ে হলুদ, পুজাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ঢাক বাজিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে তারা। তাছাড়া ঢাক-ঢোল মেরামত আর মাঝে মধ্যে বাদ্যযন্ত্র বিক্রি করেও কিছু আয় হয়। তা দিয়েই চলে সংসার। তবে তাদের ভাষ্য, দিন দিন আয় রোজগার কমে যাচ্ছে। তবু বাপ-দাদার পেশা বলে আকড়ে ধরে রেখেছেন।
ঢুলির সর্দার বিশাম্বর ঋসি প্রায় ৫০ বছর ধরে ঢাক-ডোল বাজাচ্ছেন। তিনি বলেন, আমার বাবা ঢুলি ছিলেন। ১০/১২ বছর বয়স থেকে বাবার সাথে ঢোল বাজাতে বিভিন্ন জায়গায় যেতাম। এভাবেই ঢোল বাজানো শিখি। শখ থেকেই ঢোল বাজানো পেশা হয়ে গেছে। বাবার মৃত্যুর পর থেকে আমি বাবার পেশা ধরে রেখেছি। প্রায় ৫০ বছর ধরে ঢাক-ঢোল বাজানোর সাথে জড়িত আছি। ২ মেয়ে বিয়ে দিয়েছি। তিন ছেলে আছে তারাও আমার সাথে বাজনা বাজায়।
তিনি আরও বলেন, বছরের অন্য সময় বিয়ে-গায়ে হলুদ, মিছিলে বাদ্য বাজনার ডাক পরে। বছরের ২০/২৫টি অনুষ্ঠান করতে পারি। তবে পুজার সময় কাজের চাপ বাড়ে। এবার দুর্গাপুজায় ৪টি মন্ডপে কাজ পেয়েছি। একটি মন্ডপে ১০/১২ হাজার টাকা পাওয়া যায়। লোকজনকে দিয়ে নিজের কিছু থাকে। বাপ-দাদা এ পেশায় ছিল। আমিও করছি। আমার ছেলেরাও করবে। তিনি বলেন আয় রোজগারের পাশাপাশি, ভক্ত-বৃন্দ আনন্দ পায় এটাই আমাদের আনন্দ।
কথা হয় রাখাল ঋসির সাথে। তিনি বলেন, ৬৫ বছর বয়স হয়েছে। ছোট বেলা থেকেই ঢাক-ডোল বাজাই। পুজার সময় রোজগার বেশি হয়। তাই সারা বছর পুজার জন্য অপেক্ষা করি। ঢাক বাজাতে বিভিন্ন জেলাতে চলে যাই। পুজাতে ঢাক বাজিয়ে বেশি আনন্দ পাই। তিনি আরও বলেন, বিয়ে-গায়ে হলুদ, মিছিলে ২/৩ হাজার টাকা পাওয়া যাই। এভাবেই আমাদের সংসার চলে। বয়স হয়েছে। জানি না আর কত দিন ঢোল বাজানোর কাজ করতে পারবো। আখাউড়া উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব সাংবাদিক বিশ^জিত পাল বাবু বলেন, পুজার একটি অন্যতম অনুষঙ্গ বাদ্য যন্ত্রের ব্যবহার। এটি আদিকাল থেকেই ছিল। এখনও আছে। তবে আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে আয়ের স্বল্পতার কারণে অনেকেই এ পেশা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। ঋষিদাস পাড়ার কয়েকটি পরিবার পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রেখে কোন রকমে টিকে আছে। আশা করি, সরকারসহ স্থানীয়রা তাদের প্রতি নজর দিবেন।
মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া থানার ওসি মোহাম্মদ ছমি উদ্দিন। আজ ২১ জানুয়ারি মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় থানার সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত উপজেলা ইমাম পরিষদের সাথে মতবিনিময় কালে তিনি এই ঘোষণা দেন।
আখাউড়া উপজেলা ইমাম পরিষদের সভাপতি ও থানা মসজিদের খতিব মাওলানা কাজী মাইনুদ্দিনের সভাপতিত্বে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় দেবগ্রাম জামিয়া মাজহারুল হক মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মুফতি আসাদুজ্জামান, মুহিসুন্নাহ মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আসাদ আল হাবিবসহ উপজেলার বিভিন্ন মসজিদের ইমাম ও মাদ্রাসার প্রিন্সিপালরা।
মতবিনিময় সভায় আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ ছমি উদ্দিন আরো বলেন, মাদক একটি সামাজিক সমস্যা। মাদক ব্যবসায়িদের কোন ছাড় দেয়া হবেনা।
তিনি আখাউড়াকে মাদক মুক্ত করতে উপস্থিত সকলের সহযোগীতা চেয়েছেন। এছাড়াও তিনি সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ, নারী নির্যাতন, ইভটিজিং, বাল্যবিবাহ বন্ধে তথ্য প্রদান করতে সকলকে অনুরোধ করেন।