চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি মহিলা কলেজে তারুণ্যের উৎসব আজ ১৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হয়। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানমালায় ছিলো পিঠা উৎসব, উদ্যোক্তা মেলা, বসন্ত বরণ, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কুমিল্লার চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. শামছুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ (পিআরএল) প্রফেসর এ এস এম শফিকুল্লাহ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক মো: সাইফুল ইসলাম, নাসিরনগর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. রমজান আলী, সাংবাদিক মোহাম্মদ আরজু, নারী উদ্যোক্তা রিফাত পারভীন রীনা, শাহজালাল হীরা প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কলেজের অধ্যক্ষ (চলতি দায়িত্ব) প্রফেসর মো: মিজানুর রহমান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রেসক্লাব সভাপতি জাবেদ রহিম বিজন, বিটিজিএর সভাপতি আল আমীন শাহীন, সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান লিমন, ফ্রনটিয়ার সম্পাদক আব্দুল মালেক, সাংবাদিক বিশ্বজিৎ পাল বাবু, ফরহাদুল ইসলাম পারভেজ, কবি রুদ্র মোহাম্মদ ইদ্রিস। অনুষ্ঠান উপস্থাপন করেন অধ্যাপক কবি মুসলেম উদ্দিন সাগর ও উৎসব কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক মোহাম্মদ মাজেদুল ইসলাম।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে চাকরির দিকে না তাকিয়ে উদ্যোক্তা হওয়ার আহবান জানান। পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মকে নতুন দেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করতে বলেন।
পিঠা উৎসবে বিভিন্ন রকমের পিঠার ৮টি স্টল বসে। এছাড়া কলেজের শিক্ষার্থীরা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বিশ্ব নদী দিবসে তরী বাংলাদেশ এর র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আজ ২২ সেপ্টেম্বর রবিবার বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে নদী ও প্রকৃতি সুরক্ষা সামাজিক আন্দোলন তরী বাংলাদেশ এর বর্ণাঢ্য র্যালি দানবীর লোকনাথ রায় চৌধুরী ময়দান থেকে শুরু হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে শেষ হয়। র্যালি শেষে প্রেসক্লাব মিলনায়তনে তরী বাংলাদেশ এর আহবায়ক শামীম আহমেদ এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, নদীমাতৃক বাংলাদেশের সকল নদ-নদী দখল-দূষণ, নাব্যতা সংকটসহ নদীর বালু লুন্ঠনের মহোৎসব এখনই থামানো না গেলে বাংলাদেশের নদ নদীর অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে। যার জলন্ত উদাহরণ সাম্প্রতিক সময়ে হয়ে যাওয়া আকস্মিক বন্যার প্রকোপ। তিনি আরো বলেন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান একজন পরিবেশ কর্মী এবং দীর্ঘদিন যাবৎ নদী-প্রকৃতি সুরক্ষায় কাজ করছেন। আমরা আশা করি তিনি নদী সুরক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে উদ্যোগী হবেন।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি জাবেদ রহিম বিজন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি দীপক চৌধুরী বাপ্পী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর ডিগ্রি কলেজের কার্যকরী কমিটির সভাপতি এবিএম মোমিনুল হক, দৈনিক কুরুলিয়া সম্পাদক ইব্রাহিম খান সাদাত, সিনিয়র সাংবাদিক কাউসার ইমরান, কমরেড নজরুল ইসলাম, নারী নেত্রী ফজিলাতুন নাহার প্রমুখ।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন তরী বাংলাদেশ এর আহবায়ক কমিটির সদস্য খালেদা মুন্নী। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ফরহাদুল ইসলাম পারভেজ, সাংবাদিক হারুন আল রশিদ প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, ঐতিহ্যবাহী তিতাস নদীর শহরের অংশে সব ক’টি বাজারের বর্জ্য সরাসরি নদীতে যাচ্ছে এছাড়াও নদীর সাথে যুক্ত খালগুলো বিশেষ করে টাউনখাল দখল দূষণে বিলীন প্রায়।
পরিবেশ কর্মীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন কর্তৃক দখলদারদের চিহ্নিত করে তালিকা ও আংশিক উচ্ছেদ অভিযান হলেও দীর্ঘদিন তদারকি না থাকায় দখলদারেরা পুনঃদখলের পাঁয়তারা করছে।
তিতাস নদীর শিমরাইলকান্দি থাকে মেড্ডা পর্যন্ত দখলদারদের চিহ্নিত করলেও উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়নি। অনুরূপ লালপুর সড়কের পাশে থাকা প্রায় ১৪ কিলোমিটার খালে দখলদারদের চিহ্নিত করা হলেও উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়নি।
বিরাশার মোড়ে সরকারি খাল দখল করে অবৈধভাবে টিনশেড মার্কেট নির্মাণের ফলে বারোমাস জলাবদ্ধতা লেগে থাকে। এতে মারাত্বক জনদূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এসব বিষয় নিয়ে বিভিন্ন সময় আলোচনা হলেও সমাধান পাওয়া যায়নি। পানি উন্নউন বোর্ড কর্তৃক তিতাস নদী খননের কথা শোনা গেলেও মূলতঃ নদী থেকে বালু উত্তোলন আর বালুর ব্যবসা হয়েছে। নদীর বালু দিয়ে বিল ভরাট করা হয়েছে। উপশহরের নামে বিল লুণ্ঠনের পরিকল্পনা প্রায় শেষ পর্যায়ে। পৌরসভার পরিধি বৃদ্ধির জন্য শহরের উত্তর, দক্ষিণ ও পশ্চিমে পর্যাপ্ত জায়গা থাকলেও তিতাস নদীর পূর্বপাড় বিলের জায়গাকে অন্তর্ভুক্ত করার অপচেষ্টা চলছে। নদী রক্ষায় নদীর সীমানা নির্ধারণ, সঠিক খনন ও নৌপথ সচল রাখার গুরুত্বারোপ করেন বক্তারা। তাঁরা আরো বলেন বিলের মাঝ দিয়ে নির্মিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-বিজয়নগর সড়কের পাশে ফসলী জমি প্লট হিসেবে বেচাকেনা হচ্ছে এবং চটকদার বিজ্ঞাপন নানা মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে। কোথাও কোথাও প্লট ভরাটের কার্যক্রমও চলছে। যা পরিবেশ আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ। পরিশেষে বক্তারা জেলা নদী রক্ষা কমিটির আহবায়ক ও জেলা প্রশাসক হিসাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে মহোদয়ের কঠোর হস্তক্ষেপ প্রত্যাশা করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আবদুল মতিন শিপন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির ত্রি-বার্ষিক সাধারণ নির্বাচন ২০২৪ এর তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। ২৮ অক্টোবর সোমবার তারিখে নির্বাচনী উপ কমিটি ২০২৪ এর চেয়ারম্যান মোঃ আবুল বাশার স্বাক্ষরিত এই তফসিল ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির ত্রি-বার্ষিক সাধারণ নির্বাচন ২০২৪ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৩ নভেম্বর ২০২৪ইং রোজ শনিবার। নির্বাচনের মনোনয়পত্র বিলি করা হবে আগামী ২ ও ৩ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার ও রোববার প্রতিদিন সকাল ১০টা হতে দুপুর ২টা পর্যন্ত। মনোনয়নপত্র জমা প্রদান করা যাবে ৪ ও ৫ নভেম্বর ২০২৪, সোমবার ও মঙ্গলবার সকাল ১০টা হতে দুপুর ২টা পর্যন্ত। মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই অনুষ্ঠিত হবে ৬ নভেম্বর ২০২৪ইং, বুধবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। মনোনয়ন প্রত্যাহারের তারিখ ৭ নভেম্বর ২০২৪ইং, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা হতে দুপুর ২টা পর্যন্ত। সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২৩ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার। এইদিন সংগঠনের প্রধান কার্যালয়ে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এবং দুপুর ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত মধ্যাহ্ন বিরতী দিয়ে দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ কার্যক্রম চলবে।-প্রেস বিজ্ঞপ্তি
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমৃত্যু কারাদন্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের ১৭ নেতা-কর্মীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
বহিষ্কৃত নেতা-কর্মীরা হলেন, সরাইল উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমির খন্দকার, সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক সোহাগ নিয়ামুল, শাহবাজপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সদস্য আজহার উদ্দিন, কসবা উপজেলার মেহারী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক সোহরাফ ইসলাম, একই উপজেলার খাড়েরা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক দিপু মিয়া, কুটি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক সাব্বির আহমেদ, উপজেলার কুটি ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম হাসিব, বিনাউটি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সদস্য সৈকত আলী, খাড়েরা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সদস্য আসিফুল আলম, নবীনগর উপজেলার বড়াইল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কর্মী মোঃ মমিন সরকার, আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কর্মী আমিন সুমন, আখাউড়া শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহবায়ক বাইজিদ খান, আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ সোহান, আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহবায়ক ফুরকান আহম্মেদ, আখাউড়া পৌর ছাত্রলীগের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি রবিন খান, কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের ছয় নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সদস্য নাজমুল সরকার ও সরাইল উপজেলা ছাত্রলীগের কর্মী রিয়াজ উদ্দিন খান। গত বুধবার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল ও সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন স্বাক্ষরিত প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাদেরকে বহিস্কার করা হয়।
সাময়িক বহিষ্কৃত ছাত্রলীগের নেতা জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর দিন রাতে তাদের নিজ নিজ ফেসবুকে এই স্ট্যাটাসগুলো দেন। কিছুক্ষণ পরই তারা এসব পোস্ট ফেসবুক থেকে মুছে ফেলেন।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন বলেন, ছাত্রলীগের ওই নেতারা আদর্শ বিরোধী কাজ করেছেন। তাই সংগঠনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে তাদেরকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে। স্থায়ী বহিস্কারের জন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে আমৃত্যু কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। তার মৃত্যুর পর অভিযুক্ত নেতাকর্মীরা ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থি কাজ করেছেন। তিনি ওই ১৭ নেতা-কর্মীর ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাস আমরা স্ক্রীন শট রেখেছি। অবশ্য পরে তারা এসব পোস্ট ফেসবুক থেকে মুছে ফেলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ঢাকা-সিলেট রেলপথে চলাচলকারী আন্তঃনগর কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায় দুমড়ে-মুচড়ে গেছে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকসা।
আজ ৩১ আগস্ট শনিবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার পাঘাচং রেলওয়ে ষ্টেশন এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
রেলওয়ে পুলিশও স্থানীয়রা জানান, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার পাঘাচং রেলওয়ে স্টেশন অতিক্রম করার সময় একটি সিএনজি চালিত অটোরিকসা লেভেল ক্রসিং অতিক্রম করার সময় ট্রেনটির সাথে অটোরিকসাটির ধাক্কা লাগে। এর আগেই অবস্থা বেগতিক দেখে অটোরিকসা চালক দ্রুত অটোরিকসা থেকে নিরাপদে বেরিয়ে যায়। ফলে এ ঘটনায় কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এ সময় অটোরিকসাটি ট্রেনের সামনের অংশে লেগে কিছুদূর নিয়ে যায়। এতে ট্রেনের ইঞ্জিনের সামনে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে ট্রেনটি থামিয়ে ট্রেনের গার্ড নেমে ইঞ্জিনের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ পর্যবেক্ষন করে পুনরায় ট্রেন নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন ফাঁড়ির ইনচার্জ সুব্রত বিশ্বাসের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও বিভিন্ন বিষয়ে বিরোধের জের ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের কালিসীমা পশ্চিম পাড়ায় দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শাহআলমের অনুসারী ও একই ইউনিয়নের বাসিন্দা ও জেলা পরিষদের সদস্য মোঃ বাবুল মিয়ার অনুসারীদের মধ্যে গতকাল সোমবার সকালে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান, সাবেক চেয়ারম্যানসহ ৩৮জনকে গ্রেফতার করেছে তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করে পুলিশ। সোমবার রাতে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। এর মধ্যে ১৫জন নারী ও ২৩জন পুরুষ।
এ ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি মামলা দায়ের করেন সদর মডেল থানার এস.আই শওকত এবং একটি মামলা দায়ের করেন জেলা পরিষদের সদস্য মোঃ বাবুল মিয়ার অনুসারী মোঃ খায়রুল।
পুলিশের পক্ষে ১৫১ ধারা ফৌজধারী কার্যবিধি নিবারন মূলক মামলায় ৩৮ জনের বিরুদ্ধে এবং পুলিশ এ্যাসল্ট মামলায় ৭৩জনকে আসামী করা হয়। অপর দিকে খায়রুলের মামলায় ১২৩জনকে আসামী করা হয়।
১৫১ ধারা ফৌজধারী কার্যবিধি নিবারন মূলক মামলায় ৩৮ জন আসামী হলেন, নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শাহ আলম, সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল কাইয়ুম, সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন, ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার আরজু মিয়া, সাবেক মেম্বার মোঃ কামাল খাঁ, সাবেক মেম্বার আবদুল কুদ্দুস, ইউনিয়নের বাসিন্দা মনির হোসেন, মজিবুর রহমান, বেদন মিয়া, সফিকুল ইসলাম, হোসেন মিয়া, নূরুল ইসলাম, ইব্রাহিম মিয়া, বাদল মিয়া, মহিউদ্দিন মিয়া, বাছির মিয়া, মনিরুল ইসলাম, তাজু মিয়া, ইদন মিয়া, সিরাজ মিয়া, খায়ের আলী, মোঃ শামীম, আম্বিয়া খাতুন, আসমা বেগম, ববি বেগম, শিখা বেগম, লাভলী বেগম, রেখা আক্তার, রীমা বেগম, পারুল বেগম, পারভীন বেগম, নাদিয়া আক্তার, সাফিয়া খাতুন, নাহিয়া ইসলাম অন্তু, সেলিনা বেগম, রেবেকা সুলতানা ও রিমা বেগম।
স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও বিভিন্ন বিষয়ে বিরোধের জের ধরে নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শাহআলমের অনুসারী ও একই ইউনিয়নের বাসিন্দা ও জেলা পরিষদের সদস্য মোঃ বাবুল মিয়ার অনুসারীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিলো।
ইউপি চেয়ারম্যান শাহআলমের গ্রুপে আছেন ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ হোসেন ও ইউপি সদস্য মোঃ আরজু মিয়ার অনুসারীরা।
অপরদিকে জেলা পরিষদের সদস্য বাবুল মিয়ার গ্রুপে রয়েছেন ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ আবদুল কাইয়ূমের অনুসারীরা।
গত কয়েকদিন আগে মোঃ শাহআলম গ্রুপের বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক শওকতের ছেলে মিল্লাতকে মারধোর করে বাবুল মিয়ার অনুসারীরা। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মিমাংসা করার চেষ্টা করা হয়। গত রবিবার রাতে পুনরায় বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক শওকত এবং তার ছেলে মিল্লাতকে আবারো মারধোর করে বাবুলের অনুসারীরা।
এ ঘটনায় গ্রামে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি মিমাংসার জন্য সোমবার সকালে উভয়পক্ষকে সদর থানায় ডাকা হয়।
এরমধ্যেই বেলা সাড়ে ১১টার সময় দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে উভয়পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দফায় দফায় সংঘর্ষ চলাকালে দাঙ্গাবাজরা ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ও উভয়পক্ষের ২০টি বাড়ি ভাংচুর করে। সংঘর্ষ চলাকালে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে লাঠিপেটা, ১ রাউন্ড টিয়ারশেল এবং ৩৭ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসলাম হোসাইন বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমরা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান, সাবেক দুইজন চেয়ারম্যান, বর্তমান একজন ইউপি সদস্য, সাবেক ইউপি সদস্যসহ ৩৮জনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করেছি। বাকী আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।