নাসিরনগরে ডিজিটাল ক্যাম্পেইনের গ্র্যান্ড র‍্যালি অনুষ্ঠিত

নাসিরনগর, 22 February 2025, 303 Views,

মুরাদ মৃধা, নাসিরনগর :
মার্সেল ব্র্যান্ডের এক্সক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটর মেসার্স এস এস আই ইলেকট্রনিক্স, নাসিরনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, আজ ২২ ফেব্রুয়ারি Digital Campaign 2025 Season-22-এর গ্র্যান্ড র‍্যালির আয়োজন করে।

banner

মার্সেল ব্র্যান্ডের ফ্রিজ, এসি, ওয়াশিং মেশিন এবং ফ্যান কিনে ক্রেতারা পেতে পারেন ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পুরস্কার, এছাড়াও রয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকার নিশ্চিত উপহার।

এই আকর্ষণীয় অফার উপলক্ষে মেসার্স এস এস আই ইলেকট্রনিক্স নাসিরনগরে এক বিশাল গ্র্যান্ড র‍্যালির আয়োজন করে। র‍্যালিটি নাসিরনগর মার্সেল শোরুম থেকে শুরু হয়ে সমগ্র বাজার, কলেজ রোড মোড়সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহ প্রদক্ষিণ করে।

র‍্যালিতে উপস্থিত ছিলেন : ডিভিশনাল ম্যানেজার: নুরুল আমিন, এরিয়া সেলস ম্যানেজার: খান তোফায়েল ফরিদী, ব্র্যান্ড ম্যানেজার: উদ্দম হোসেন মৃধা।

এই ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে তিন দিনব্যাপী মার্সেল শোরুমে বিশেষ মূল্যছাড় চলছে।

মেসার্স এস এস আই ইলেকট্রনিক্সের প্রোপ্রাইটর মোঃ মোক্তার হোসেন বলেন, নাসিরনগর এলাকার ক্রেতারা মার্সেল ব্র্যান্ডের পণ্য সহজেই হাতের কাছে পেয়ে আনন্দিত। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে এ অঞ্চলে মার্সেল পণ্যের বিক্রি আরও বৃদ্ধি পাবে।

মার্সেল ফ্রিজ, এসি, ওয়াশিং মেশিন এবং সিলিং ফ্যান কিনে রেজিস্ট্রেশন করলেই নিশ্চিত পুরস্কার জয়ের সুযোগ!

Leave a Reply

গাজীপুরে মামা হত্যার আসামি ভাগিনা গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : গাজীপুরে আনিসুর রহমান হত্যার মামলার আসামি ভাগিনা Read more

সদর মডেল থানায় যোগদান করেই কঠোর…

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য : আজহারুল ইসলাম সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

চলারপথে রিপোর্ট : ফ্ল্যাট বাসা থেকে শরীর মীর (৪০) নামের Read more

নাসিরনগরে বাবাকে হত্যার ঘটনায় ছেলে আটক

চলারপথে রিপোর্ট : নাসিরনগরে আলম মিয়া (৬০) নামের এক ব্যবসায়ী Read more

আখাউড়ায় খেলাফত মজলিসের প্রার্থীর মতবিনিময়

মোঃ ইসমাইল: ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের খেলাফত মজলিস মনোনীত প্রার্থী Read more

৫০ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ৫০ কেজি গাঁজা ও ১টি সিএনজি উদ্ধারসহ Read more

কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপদসীমায়, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের…

অনলাইন ডেস্ক : বর্ষার শেষপ্রহরে নেমে আসা অবিরাম বৃষ্টি ও Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার নতুন ওসি আজহারুল…

চলারপথে রিপোর্ট : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে Read more

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে…

অনলাইন ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ঐতিহাসিক Read more

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : কুমিল্লার দাউদকান্দি বারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) Read more

মেক্সিকোতে যাত্রীবাহী বাসে ট্রেনের ধাক্কায় ১০জন…

অনলাইন ডেস্ক : মেক্সিকোর আটলাকোমুলকো শহরে একটি পণ্যবাহী ট্রেন ও Read more

কানাডায় বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

মুমিনুল হক : কানাডার টরেন্টোতে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। Read more

সংস্কার হচ্ছে হরিপুর জমিদার বাড়ি

নাসিরনগর, 30 July 2023, 1251 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
সঠিক তদারকির অভাবে এবং অযত্ন ও অবহেলায় অস্তিত্ব হারাতে বসেছিল কালের সাক্ষী হয়ে থাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর জমিদার বাড়ি। ৭৫ বছর ধরে বেদখলে ছিল বিশালাকার বাড়িটি।

banner

সম্প্রতি হরিপুর বড় বাড়ি সংরক্ষণে উদ্যোগ নিয়েছে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ। অবৈধ দখল উচ্ছেদের পর এবার শীঘ্রই সংস্কারের কাজে হাত দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

১৮শ শতাব্দীতে জেলার নাসিরনগর উপজেলায় তিতাস নদীর পাড়ে প্রায় ৪৮০ শতাংশ জমিতে জমিদার কৃষ্ণপ্রদাস রায় চৌধুরী ও গৌরীপ্রসাদ রায় চৌধুরী দৃষ্টিনন্দন এ বাড়িটি নির্মাণ করেন।

জানা যায়, ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর জমিদার পরিবারের লোকজন বাড়িটিতে কয়েকজন পুরোহিতদের রেখে কলকাতায় চলে যান। এরপর পুরোহিতদের বংশধরদের পাশাপাশি স্থানীয় কিছু মুসলিম পরিবার দখল নিয়ে বসবাস শুরু করেন সেখানে। সেই থেকে প্রায় ৭৫ বছর ধরে বাড়িটি ছিল বেদখলে। এতে বাড়িটি দিনের পর দিন বিলুপ্তির পথে যেতে থাকে। তবে সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বাড়িটির দখলে থাকা পরিবারগুলোকে অন্যত্র পুনর্বাসিত করা হয়। এরপরই নেওয়া হয় বাড়িটি সংস্কারের উদ্যোগ।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, তিতাসের পূর্বপ্রান্তে এত বড় বাড়ি আর কোথাও নেই। কারুকাজ খচিত ৬০টি কক্ষ বিশিষ্ট বাড়িটিতে রং মহল, দরবার হল, নাচ ঘর, পুকুর, খেলার মাঠ, মন্দির ও সীমানা প্রাচীর রয়েছে। তবে এর অনেক অংশ ভেঙে ফাটলও ধরেছে। লাল ইট সুরকির গাঁথুনি দিয়ে তৈরি ভবনের দু’পাশে কৃষ্ণ প্রসাদ রায় চৌধুরী ও গৌরী প্রসাদ রায় চৌধুরীর দুটি সমাধি সুউচ্চ মঠ রয়েছে। বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা এখানে এসে ঘুরে ঘুরে পুরো রাজবাড়ির সৌন্দর্য দেখছেন। অনেকে আবার মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. গোলাপ মিয়া বলেন, হরিপুর রাজবাড়ি এটি আমার জন্মের আগে নির্মিত। এই বাড়িটি দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত ছিল। বাড়িটিতে বহিরাগত লোকেরা থাকতেন। তবে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দখলে থাকা বহিরাগতদের আশ্রয়ণ প্রকল্পে জায়গা দিয়ে তাদের উচ্ছেদ করা হয়। আমাদের দাবি, এই বাড়ি যেন পুনঃসংস্কার করে দেয়। তাহলে আমাদের তিতাসের পূর্ব পাড়ে অতীতের একটি স্মৃতি থাকবে।

স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দা আব্দুল জব্বার বলেন, দীর্ঘ কয়েক যুগ ধরে বাড়িটি পরিত্যক্ত। এই বাড়িটি চুনকাঠ ও বীমের উপর দাঁড়িয়ে আছে। যেকোনো সময় একটি বড়ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমি চাই, সরকার যেন দ্রুত এই বাড়িটি সংস্কার করে দেয়। বাড়িটি সংস্কার করে দিলে দর্শনার্থীর সংখ্যা আরো বাড়বে। আমাদের এলাকার উন্নয়ন হবে।

ঘুরতে আসা কয়েকজন পর্যটক বলেন, আমরা হরিপুর জমিদার বাড়ি দেখতে এসেছি। দেখলাম এখানে অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শন রয়েছে। রাজমহল, রঙমহল, দরমহলসহ প্রতিটি দেওয়ালে বিভিন্ন প্রকার কারুকাজ করানো রয়েছে। বাড়িটি অনেক পুরোনো হওয়ায় জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। তবে বাড়িটির ফটকের সামনে যদি এর ইতিহাস লিখে রাখা হয় তাহলে পর্যটকরা এসে এর সঠিক তথ্য জানতে পারবে। বাড়িটি যদি দ্রুত সংস্কার করা যায় তাহলে ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম দেখতে পারবে।

জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম বলেন, হরিপুর জমিদার একটি দর্শনীয় স্থান। এটা প্রত্নতত্ত্বের একটা গুরুত্ব আছে। জমিদার বাড়িতে যেসব বহিরাগত পরিবার ছিল তাদের আশ্রয়ণ প্রকল্পে জায়গা দিয়ে ওখানে স্থানান্তর করা হয়েছে। এর মধ্যে হিন্দু ব্রাহ্মণ পরিবার ছিল তারা নিজেরাই চলে গেছেন।

বাড়িটি সংস্কারের বিষয়ে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের মহাপরিচালক চন্দন কুমার দে বলেন, আমাদের যে সরকারি রাজস্ব ফান্ড আছে তা থেকে এই বছরই আমরা বাড়িটির সংস্কার কাজ শুরু করব। আমরা প্রকল্প তৈরির চেষ্টা করছি। খুব দ্রুত প্রকল্পটা আমাদের মন্ত্রণালয়ে আমরা পাঠিয়ে দেব। আসা করছি প্রকল্পটা অনুমোদন হলে একটা বড় আকারের কাজ করতে পারব। বাড়িটি যেভাবে আছে আমরা ঠিক সেই ভাবে রেখেই সংস্কার কাজ করব।

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালেদ বলেন, প্রত্নতাত্ত্বিক সংরক্ষার একটি আইন বা ব্যবস্থা আছে যা সারা বিশ্বে একই নিয়ম। সেভাবেই আমরা এটি সংস্কার করব।

নাসিরনগরে ফ্রিজ-টিভি কাপ ফুটবল টুর্ণামেন্টের ফাইনাল অনুষ্ঠিত

খেলাধুলা, নাসিরনগর, 29 June 2024, 1243 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে ফ্রিজ-টিভি কাপ ফুটবল টুর্ণামেন্টের ফাইনাল গতকাল শুক্রবার বিকাল ৪টায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলার গোকর্ণ ফুটবল একাডেমি’র আয়োজনে গোকর্ণ সৈয়দ ওয়াল্লী উল্লাহ স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। ফাইনাল খেলায় গোকর্ণ কিংসকে ২-১ গোলে পরাজিত করে গোকর্ণ মটর সমিতি চ্যাম্পিয়ন হয়।

banner

খেলা শেষে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন গোকর্ণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ শাহিন।

গোকর্ণ সৈয়দ ওয়াল্লী উল্লাহ স্কুল এন্ড কলেজের সাবেক সভাপতি বসির উদ্দিন বাচ্চুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ শরীফ আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত পুরষ্কার বিতরনী সভায় জনতা ব্যাংকের সাবেক ডিজিএম মোঃ কামরুজ্জামান খান, নিয়াজ মুহাম্মদ খান হাই স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক সৈয়দ মোহাম্মদ তফছির, গোকর্ণ সৈয়দ ওয়াল্লী উল্লাহ স্কুল এন্ড কলেজের প্রাক্তন ছাত্র সংসদের সভাপতি অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন চৌধুরী শরীফ, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোহাম্মদ নোমান, গোকর্ণ ফুটবল একাডেমির সভাপতি সাকিন চৌধুরী, আওয়ামীলীগ নেতা সৈয়দ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ ও ফুটবলপ্রেমি সংখ্যক দর্শক উপস্থিত ছিলেন।

নিবার্চন থেকে সরে দাঁড়ালেন চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রদীপ কুমার রায়

নাসিরনগর, 3 May 2024, 727 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
আগামী ৮ মে অনুষ্ঠিতব্য নাসিরনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রদীপ কুমার রায়। তিনি দোয়াত-কলম প্রতিক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন।

banner

আজ ৩ মে শুক্রবার দুপুরে উপজেলা সদরে তার বাসায় (প্রদীপ কুমার রায়) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, তিনি অসুস্থ। তিনি নির্বাচন করবেন না এবং নির্বাচন থেকে সরে গেছেন। তিনি বলেন আমার শারিরীক অসুস্থতার কারণে উন্নত চিকিৎসা নেয়া প্রয়োজন। সে জন্য ভোটারদের কাছে বিনীতভাবে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন ডাক্তারসহ পরিবার ও এলাকাবাসীর পরামর্শক্রমে আমি চলমান উপজেলা পরিষদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালাম। তবে আমি আমার আদর্শিক রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়াবো না। আপনারা আমার ডাকে সাড়া দিয়ে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছিলেন তা এ জীবনে ভুলবার নয়। আমার জন্য দোয়া করবেন দ্রæত চিকিৎসা নিয়ে আপনার কাছে সুস্থ হয়ে ফিরতে পারি। আমার সকল ভোটার ও স্বজনদের কাছ থেকে দোয়া চেয়ে নির্বাচনী কার্যক্রম থেকে বিদায় নিচ্ছি।

উল্লেখ্য তিনি দোয়াত-কলম প্রতীক নিয়ে প্রচারণার শুরু থেকে মাইকিং, পোস্টারিং, গণসংযোগ ও বিভিন্ন উঠান বৈঠক করছিলেন।

গত ২৭ এপ্রিল শনিবার বিকালে উপজেলার চাপরতলা ইউনিয়নের বড়ইউড়ি গ্রামে উঠান বৈঠকে বক্তব্য দেয়ার সময় বুকে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব হলে প্রথমে তাকে নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ৫ দিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অধীনে চিকিৎসা শেষে বৃহস্পতিবার নিজ এলাকায় আসেন এবং নিজের অসুস্থতা ও উন্নত চিকিৎসার জন্য এলাকাবাসীসহ পারিবারিক সিদ্ধান্তে নিবার্চন থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা আজ দুপুরে সাংবাদিকদের জানান তিনি। তবে তিনি কোন প্রার্থীকে সমর্থন দেননি।

নাসিরনগরে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রদীপ কুমার রায়।

নাসিরনগর উপজেলা পরিষদে যারা নির্বাচিত হলেন

নাসিরনগর, 9 May 2024, 781 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা পরিষদ নিবার্চনে চেয়ারম্যান পদে জয়ী হয়েছেন ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী রুমা আক্তার। ৮ মে বুধবার রাতে বেসরকারিভাবে এ ফলাফল ঘোষনা করা হয়। এ ফলাফলে ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী রুমা আক্তার পেয়েছেন ৩৩ হাজার ৯৮০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি আনারস প্রতীকের প্রার্থী মো: ওমরাও খান পেয়েছেন ১৮ হাজার ৩৮০ ভোট।

banner

উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আবু আহাম্মদ কামরুল হুদার টিউবওয়েল প্রতীকে ৩৭ হাজার ৯২৬ ভোট জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী ভানু চন্দ্র দেব মাইক প্রতীক পেয়েছেন ২০ হাজার ৪০৭ ভোট।

উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রিটা আক্তারের ফুটবল প্রতীকে ৩২ হাজার ২৩৭ ভোট জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী রুবিনা আক্তার কলস প্রতীক পেয়েছেন ২২ হাজার ৩৬৩ ভোট। নিবার্চনে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন।

আজ বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস

আখাউড়া, কসবা, জাতীয়, নাসিরনগর, বিজয়নগর, রাজনীতি, সরাইল, 9 January 2023, 8205 Views,
স্টাফ রিপোর্টার:
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ। পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি তিনি সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে প্রত্যাবর্তন করেন। এর আগে ৮ জানুয়ারি পাকিস্তানের মিয়ানওয়ালি কারাগারে দীর্ঘ ৯ মাস কারাভোগের পর মুক্তি লাভ করেন তিনি। পরে তিনি পাকিস্তান থেকে লন্ডন যান। তারপর দিল্লী হয়ে ঢাকা ফেরেন বঙ্গবন্ধু। দিবসটি পালন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও দলের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করে বঙ্গবন্ধু সর্বস্তরের জনগণকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। স্বাধীনতা ঘোষণার অব্যবহিত পর পাকিস্তানের সামরিক শাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খানের নির্দেশে তাকে গ্রেফতার করে তদানীন্তন পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে নিয়ে আটক রাখা হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে নয় মাস যুদ্ধের পর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হলেও ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে জাতি বিজয়ের পূর্ণ স্বাদ গ্রহণ করে।
জাতির পিতা পাকিস্তান থেকে ছাড়া পান ১৯৭২ সালের ৭ জানুয়ারি ভোর রাতে ইংরেজি হিসেবে ৮ জানুয়ারি। এদিন বঙ্গবন্ধু ও ড. কামাল হোসেনকে বিমানে তুলে দেওয়া হয়। সকাল সাড়ে ৬টায় তারা পৌঁছান লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে। বেলা ১০টার পর থেকে বঙ্গবন্ধু কথা বলেন, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ, তাজউদ্দিন আহমদ ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীসহ অনেকের সঙ্গে। পরে ব্রিটেনের বিমান বাহিনীর একটি বিমানে করে পরের দিন ৯ জানুয়ারি দেশের পথে যাত্রা করেন।
১০ জানুয়ারি সকালেই তিনি নামেন দিল্লীতে। সেখানে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভিভি গিরি, প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, সমগ্র মন্ত্রিসভা, শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধান এবং অন্যান্য অতিথি ও সেদেশের জনগণের কাছ থেকে উষ্ণ সংবর্ধনা লাভ করেন সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের পিতা শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু ভারতের নেতৃবৃন্দ এবং জনগণের কাছে তাদের অকৃপণ সাহায্যের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান। তার এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে আখ্যায়িত করেছিলেন ‘অন্ধকার হতে আলোর পথে যাত্রা হিসেবে।’
এদিন বেলা ১টা ৪১ মিনিটে তিনি ঢাকা এসে পৌঁছেন। চূড়ান্ত বিজয়ের পর ১০ জানুয়ারি বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুকে প্রাণঢালা সংবর্ধনা জানানোর জন্য প্রাণবন্ত অপেক্ষায় ছিল। আনন্দে আত্মহারা লাখ লাখ মানুষ ঢাকা বিমান বন্দর থেকে রেসকোর্স ময়দান পর্যন্ত তাঁকে স্বতঃস্ফূর্ত সংবর্ধনা জানান। বিকাল পাঁচটায় রেসকোর্স ময়দানে প্রায় ১০ লাখ লোকের উপস্থিতিতে তিনি ভাষণ দেন। পরের দিন দৈনিক ইত্তেফাক, সংবাদসহ বিভিন্ন পত্রিকায় বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিয়ে এভাবেই লিখা হয়- ‘স্বদেশের মাটি ছুঁয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসের নির্মাতা শিশুর মতো আবেগে আকুল হলেন। আনন্দ-বেদনার অশ্রুধারা নামলো তার দু’চোখ বেয়ে। প্রিয় নেতাকে ফিরে পেয়ে সেদিন সাড়ে সাত কোটি বাঙালি আনন্দাশ্রুতে সিক্ত হয়ে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু ধ্বনিতে প্রকম্পিত করে তোলে বাংলার আকাশ-বাতাস।’
জনগণ নন্দিত শেখ মুজিব সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দাঁড়িয়ে তাঁর ঐতিহাসিক ধ্রুপদি বক্তৃতায় বলেন, ‘যে মাটিকে আমি এত ভালবাসি, যে মানুষকে আমি এত ভালবাসি, যে জাতিকে আমি এত ভালবাসি, আমি জানতাম না সে বাংলায় আমি যেতে পারবো কিনা। আজ আমি বাংলায় ফিরে এসেছি বাংলার ভাইয়েদের কাছে, মায়েদের কাছে, বোনদের কাছে। বাংলা আমার স্বাধীন, বাংলাদেশ আজ স্বাধীন। সশ্রদ্ধ চিত্তে তিনি সবার ত্যাগের কথা স্মরণ করেন এবং সবাইকে দেশ গড়ার কাজে উদ্বুদ্ধ করে বলেন, ‘আজ থেকে আমার অনুরোধ, আজ থেকে আমার আদেশ, আজ থেকে আমার হুকুম ভাই হিসেবে, নেতা হিসেবে নয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে নয়। আমি তোমাদের ভাই, তোমরা আমার ভাই। এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি বাংলার মানুষ পেট ভরে ভাত না পায়, এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি বাংলার মা-বোনেরা কাপড় না পায়, এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি এদেশের যুবক যারা আছে তারা চাকরি না পায়। মুক্তিবাহিনী, ছাত্র সমাজ তোমাদের মোবারকবাদ জানাই তোমরা গেরিলা হয়েছো, তোমরা রক্ত দিয়েছো, রক্ত বৃথা যাবে না, রক্ত বৃথা যায় নাই।
বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘একটা কথা-আজ থেকে বাংলায় যেন আর চুরি-ডাকাতি না হয়। বাংলায় যেন আর লুটতরাজ না হয়। বাংলায় যারা অন্য লোক আছে অন্য দেশের লোক, পশ্চিম পাকিস্তানের লোক বাংলায় কথা বলে না, তাদের বলছি তোমরা বাঙালি হয়ে যাও। আর আমি আমার ভাইদের বলছি তাদের উপর হাত তুলো না আমরা মানুষ, মানুষ ভালোবাসি। ‘তবে যারা দালালি করেছে যারা আমার লোকদের ঘরে ঢুকে হত্যা করেছে তাদের বিচার হবে এবং শাস্তি হবে’ উল্লেখ করে জাতির পিতা বলেন, ‘তাদের বাংলার স্বাধীন সরকারের হাতে ছেড়ে দেন, একজনকেও ক্ষমা করা হবে না। তবে আমি চাই স্বাধীন দেশে স্বাধীন আদালতে বিচার হয়ে এদের শাস্তি হবে। আমি দেখিয়ে দিতে চাই দুনিয়ার কাছে শান্তিপূর্ণ বাঙালি রক্ত দিতে জানে, শান্তিপূর্ণ বাঙালি শান্তি বজায় রাখতেও জানে।’ বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমায় আপনারা পেয়েছেন। আমি আসছি। জানতাম না আমার ফাঁসির হুকুম হয়ে গেছে। আমার সেলের পাশে আমার জন্য কবর খোড়া হয়েছিলো। আমি প্রস্তুত হয়েছিলাম, বলেছিলাম আমি বাঙালি, আমি মানুষ, আমি মুসলমান, মুসলমান একবার মরে দুইবার মরে না। আমি বলেছিলাম, আমার মৃত্যু আসে যদি আমি হাসতে হাসতে যাবো। আমার বাঙালি জাতকে অপমান করে যাবো না, তোমাদের কাছে ক্ষমা চাইবো না। এবং যাবার সময় বলে যাবো জয় বাংলা, স্বাধীন বাংলা, বাঙালি আমার জাতি, বাংলা আমার ভাষা, বাংলার মাটি আমার স্থান।’
বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসী সরকার তাঁর নির্দেশিত যুদ্ধ পরিচালনা করে। নয় মাসের যুদ্ধের এক পর্যায়ে বাঙালির মুক্তিযুদ্ধ চূড়ান্ত রূপ নিতে শুরু করে। ধীরে ধীরে স্বাধীনতা অর্জনের পথে মুক্তিযোদ্ধা, জনতা ও মিত্রবাহিনীর যৌথ আক্রমণ তীব্র হয়। জয় তখন সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় মাত্র। একই সাথে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে বিশ্বব্যাপী জনমত গড়ে তোলা হয় প্রবাসী সরকারের নেতৃত্বে। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হলে পাকিস্তানী বর্বর শাসকগোষ্ঠী বাধ্য হয় তাঁকে সসম্মানে মুক্তি দিতে।
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন দেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে বাংলাদেশের মাটিতে প্রত্যাবর্তন করেন। এর আগে সরকার পরিচালনা করে অস্থায়ী প্রবাসী সরকার। ১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ২৩ সদস্য বিশিষ্ট আওয়ামী লীগের মন্ত্রিসভা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করে। ১৯৭২ সালের ২৩ মার্চ জারিকৃত প্রেসিডেন্সিয়াল আদেশ বলে গণপরিষদ গঠন করে নভেম্বর মাসের মধ্যেই দেশের জন্য একটি সংবিধান উপহার দেয়া হয় এবং যা ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়। বাসস।