লাগবে না কি পাপড়, এভাবে সংসার চলছে নব্বই বছরের ফজলুল হকের

সারাদেশ, 24 February 2025, 354 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
জীবনের শেষ বয়সে এসেও জীবন যুদ্ধে হার মানতে রাজি নয় ফজলুল হক (৯০)। শরীরের চামড়াগুলো টান ধরে শুকিয়ে গেছে। বয়সের ভাড়ে কোমর বাঁকা হয়ে গেছে। এরপরও হালাল পথের আয় দিয়ে নিজে কর্ম করে বাকি জীবন কাটাতে চায় ফজলুল হক। তাই দুই হাতে পাপড় এর বস্তা নিয়ে ‘লাগবে না কি পাপড় এই যে লাগবে না কি পাপড়, মচমচে পাপড় বলে বিক্রি করছেন। মো. ফজলুল হক দিনাজপুরের হাকিমপুর হিলি পৌরসভার মধ্যে বাসুদেবপুর (তারকাটা) এলাকার বাসিন্দা। ফজলুল হক তার দুই ছেলে এবং দুই মেয়ে রয়েছে এবং তাদের সকলের আলাদা সংসার। বাড়িতে তার প্রতিবন্ধী স্ত্রী রুনা বেগম। জীবনের শেষ বয়সে এসে কারও উপর নির্ভরশীল বা হাত না পেতে পাপড় বিক্রির টাকায় সংসার চালাচ্ছেন তিনি।

banner

গ্রামেগঞ্জ ও শহরে ছোট থেকে বড়দের একটি মুখরোচক খাবার হচ্ছে পাপড়। সাধারণত মেলার মাঠ, সিনেমা হলের সামনে, পূজা-পার্বণে, অস্থায়ী বাজার, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কিংবা ধর্মীয় মাহফিলস্থলে পাপড় বিক্রির ধুম পড়ে যায়। দামে সস্তা এ খাবারটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হলেও মুখরোচক হওয়ায় এর চাহিদার কমতি নেই। জীবনের শেষ বয়সে এসে দুই হাতে বস্তায় নিয়ে পাপড় বিক্রি করে সংসার চালায় ফজলুল হক। দীর্ঘদিন পাপড় তৈরি করে ফেরি করে বিক্রি করে তিনি চালান অভাবের সংসার। পাশাপাশি প্রতিবন্ধী স্ত্রীকে নিয়ে বেশ সুখেই আছেন তিনি।

সম্প্রতি ফজলুল হকের সাথে কথা হয়। বলছেন এই যে পাপড় লাগবে পাপড়, মচমচে পাপড়। মুহূর্তে তাঁর নিকট এগিয়ে গিয়ে শুনলাম তার অতীত ও বর্তমান জীবনের গল্প। অভাবের সংসার তেমন লেখা পড়া করতে পারে নাই। প্রথমের দিকে হিলি এলএসডি গোডাউনে বস্তা ভড়াতো এবং বস্তা সেলাই করতো এতে সুন্দর সংসার চলতো তার। দুই ছেলে এবং দুই মেয়ে বড় করে বিয়ে সাদী দিয়ে সবার এখন আলাদা সংসার। বড় ছেলে গার্মেন্টসে চাকরি করে এবং আর এক ছেলে একটি কারখানায় চাকরি করে। ছেলেরা প্রতি মাসে যে খরচের টাকা দেয় তা দিয়ে সংসার চলে না। তাই জীবনের শেষ বয়সে এসে পাপড় বিক্রি করে সংসার চালান ফজলুল হক।

তিনি অনেক আগের কথা মাটির বাড়ির দেয়াল ভেঙে পড়ে গিয়ে ছিল আমার স্ত্রীর উপরে তখন তার কোমড়ে প্রচণ্ড আঘাত পায়। চিকিৎসার জন্য ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে মতিঝিল এলাকায় প্রায় দেড় যুগ সময় পার করেন তিনি। মতিঝিল এলাকায় ছেঁড়া, ফাটা ও টুকরো টুকরো করা টাকা কিনে নিতেন তিনি। এরপর ওই টাকা গুলো নাম্বার সহ জোড়া দিয়ে ব্যাংকে দিতো এতে প্রতি হাজারে তার ৪’শ থেকে ৫’শ টাকার মতো ব্যাংক দিতো। তা দিয়েই সংসার চলতো ফজলুল হকের। কিন্তু তার স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য ডাক্তার যেতে বলেন ভারতের বেঙ্গালুরুর। টাকার অভাবে সেখানে চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব হয় নাই। সেখানে চিকিৎসার ব্যয় প্রায় ৭-৮ লাখ টাকা। এতো টাকা কোথায় পাবো বলে প্রশ্ন ছোড়ে ফজলুল হক।

রাজধানীতে বাসা ভাড়া ও সংসারের খরচ বেশি হওয়ার প্রায় বিশ বছর আগে চলে আসেন নিজ বাড়ি হিলিতে। বাড়িতে বসে তেল, ময়দা, হলুদ, ডিম, কালোজিরা ও লবণসহ বিভিন্ন মশলা দ্বারা তৈরি কার হয় এই পাপড়। তৈরি করা পাপড় প্রতিদিন দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দুই হাতে পাপড়ের বস্তা নিয়ে বিক্রি করেন তিনি।

উপজেলা পরিষদে পাপড় কিনে নেওয়া আরিফ হোসেন নামের এক যুবক বলেন, ফজলু কাকার পাপড় খুবই মজাদার। আমি প্রায়ই জায়গায় দেখা হলেই খাই। আবার মাঝে মাঝে আমার ছেলে-মেয়ের জন্য কিনে নিয়ে যাই।

তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত রায় এর নিকট ফজলুল হক চাচার বিষয়ে কিছু বলতেই তিনি বলেন, আমি ওনাকে আগের থেকে চিনি। আমার জানা মতে ওনি খুব ভালো মানুষ। মাঝেমধ্যে আমার অফিসে আসে আমি তাকে সাধ্যমতো সহযোগিতা করি।

পাপড় কেমন বিক্রি হয় জানতে চাইলে ফজলুল হক চাচা বলেন, প্রতিদিন ১’শ থেকে দেড়শ পাপড় বিক্রি করি। একটি পাপড় ৫ টাকা দরে বিক্রি করায় দৈনিক প্রায় ৫’শ থেকে সাতশত টাকা বিক্রি হয়। এখন বেশি লাভ হয় না তেলসহ সব জিনিসের দাম বেশি।
তিনি আরো বলেন, আমার দুই ছেলে তাদের আলাদা সংসার তাদের ও খরচ আছে। বাড়ীতে আমার স্ত্রী (তোমার চাচি) অসুস্থ প্রতিবন্ধী মানুষ। পাপড় ভাজতে হয় গ্যাসের চুলায়। ছেলেরা যে টাকা দেয় গ্যাস সিলিন্ডার ও ঔষধ সহ টুকটাক খরচ করতেই শেষ হয়। তাই কার ও কাছে হাত না পেতে নিজে পরিশ্রম করে সংসার চালায়।

সরকারি কোন সুবিধা পায় কি না এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পাও বা ১৮০০’শ টাকা কখন ও দুই মাস আবার কখনো তিন মাস পরে এলা দিয়ে কি হয় বা!

ওই দিন বাদ মাগরিব উপজেলা পরিষদের মসজিদের বাহিরে আমার সাথে দেখা হয় ফজলুল হক চাচার। আমি পাপড় নিতে চাইলে সঙ্গে সঙ্গে বলে তোমাকে টাকা দেওয়া লাগবে না বা। তুমি আমার অনেক গল্প শুনলেন, ছবি তুললেন টাকা নিবো না বা। আমি ৫০ টাকার নোট দিয়ে বললাম চাচা একটা পাপড় দেন বাকিটা রেখে দেন। ওনি বললেন না এতো টাকা নিবো কেন! পরে আমাকে একটি পাপড় দিয়ে ৪০ টাকা ফেরত দেয়। আমাদের সমাজের অনেকের ফজলুল হক চাচার কাছ থেকে শিক্ষা নেওয়া দরকার বলে আমি মনে করি।(সূত্র :বিবার্তা)

Leave a Reply

নবীনগরে সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে প্রাইভেটকার ও ট্রাক্টরের সঙ্গে Read more

প্রতিপক্ষের হামলায় নারী নিহত, দুইজন আটক

চলারপথে রিপোর্ট : তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় খাইরুন Read more

গাজীপুরে মামা হত্যার আসামি ভাগিনা গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : গাজীপুরে আনিসুর রহমান হত্যার মামলার আসামি ভাগিনা Read more

সদর মডেল থানায় যোগদান করেই কঠোর…

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য : আজহারুল ইসলাম সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

চলারপথে রিপোর্ট : ফ্ল্যাট বাসা থেকে শরীর মীর (৪০) নামের Read more

নাসিরনগরে বাবাকে হত্যার ঘটনায় ছেলে আটক

চলারপথে রিপোর্ট : নাসিরনগরে আলম মিয়া (৬০) নামের এক ব্যবসায়ী Read more

আখাউড়ায় খেলাফত মজলিসের প্রার্থীর মতবিনিময়

মোঃ ইসমাইল: ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের খেলাফত মজলিস মনোনীত প্রার্থী Read more

৫০ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ৫০ কেজি গাঁজা ও ১টি সিএনজি উদ্ধারসহ Read more

কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপদসীমায়, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের…

অনলাইন ডেস্ক : বর্ষার শেষপ্রহরে নেমে আসা অবিরাম বৃষ্টি ও Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার নতুন ওসি আজহারুল…

চলারপথে রিপোর্ট : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে Read more

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে…

অনলাইন ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ঐতিহাসিক Read more

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : কুমিল্লার দাউদকান্দি বারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) Read more

গাজায় অব্যাহত গণহত্যার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আইনজীবীদের বিক্ষোভ-সমাবেশ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, সারাদেশ, 9 April 2025, 425 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর অব্যাহত গণহত্যার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন আইনজীবীরা।

banner

আজ ৯ এপ্রিল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় “ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইনজীবী সমাজের” ব্যানারে এই বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কালেক্টরেট ও জেলা জজ আদালত প্রাঙ্গণ প্রদক্ষিণ শেষে বারভবন সংলগ্ন গোলচত্বরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সৈয়দ মোঃ জামালের সভাপতিত্বে আইনজীবীদের এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

অ্যাডভোকেট বশির আহমেদের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে গাজায় ইসরায়েলী গণহত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অনতিবিলম্বে এ গণহত্যা বন্ধের দাবি জানিয়ে ফিলিস্তিনবাসীদের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি অকৃত্রিম সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আনিছুর রহমান মঞ্জু, অ্যাডভোকেট মোঃ নাসির মিয়া, অ্যাডভোকেট জিবরাইল, অ্যাডভোকেট ইয়াকুব আলী, অ্যাডভোকেট যতন শর্মা, অ্যাডভোকেট ইয়াসমিন, অ্যাডভোকেট আবদুন নূর প্রমুখ।

প্রতিবাদ সমাবেশে মার্কিন মদদে গাজায় ইসরায়েলী মানবতাবিরোধী, বর্বরোচিত অব্যাহত গণহত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তারা বলেন, দখলদার ইসরায়েল নির্মমভাবে ও নির্বিচারে নিরীহ নারী ও শিশুদের হত্যা করে বর্বরতার সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে, যা কোন বিবেকবান মানুষ কোন অবস্থায় সমর্থন করতে পারে না। তাই অনতিবিলম্বে এ গণহত্যা বন্ধের জন্য জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে গোটা বিশ^ সম্প্রদায়কে এককাট্টা হয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে হবে।

নাগরদোলায় উঠে স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা

জাতীয়, সারাদেশ, 15 April 2025, 448 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
মেলায় নাগরদোলায় ঘোরার সময় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা করেছেন এক স্বামী। পুলিশ তাৎক্ষণিক তাকে আটক করেছে। ১৪ এপ্রিল সোমবার রাত পৌনে ৮টার দিকে বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের হাফেজ মহিন উদ্দিনের ওরস উপলক্ষে আয়োজিত মেলায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।

banner

নিহত লাকী বেগম (১৯) নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার কালাপোল এলাকার বেদে পল্লীর মনছুর আলীর মেয়ে। আটক স্বামী মো. শাকিব সদর উপজেলার মান্নান নগর বেদে পল্লীর বাসিন্দা মঙ্গলের ছেলে।

নিহতের মা শেফালী বেগম জানান, এক বছর আগে লাকীর সঙ্গে শাকিবের বিয়ে হয়। বর্তমানে লাকী পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। প্রায় পনের দিন আগে তারা শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে আসে। রোববার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়ার একপর্যায়ে শাকিব লাকীকে মারধর করে, জামাকাপড় ছিঁড়ে ফেলে এবং নিজের ব্যবহৃত মোবাইল ভেঙে দেয়। এমনকি নিজের মাথায় নিজেই আঘাত করে।

সোমবার সন্ধ্যায় শাকিব ও তার পরিবারের সদস্যরা একলাশপুরে ওরস মেলায় ঘুরতে যান। সেখানে স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে নাগরদোলায় ওঠেন।

নাগরদোলায় থাকা এক নারী প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে শেফালী বেগম জানান, নাগরদোলায় ওঠার একপর্যায়ে শাকিব তার স্ত্রীর গলায় ছুরি চালিয়ে গুরুতর জখম করেন। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় লাকীকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বেগমগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাবীবুর রহমান বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করা হয়েছে। নিহতের মরদেহ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। নিহতের পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সড়ক দুর্ঘটনায় শ্যালক-দুলাভাইয়ের মৃত্যু

সারাদেশ, 12 January 2025, 581 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
ফরিদপুরের মধুখালীতে বাসচাপায় মোটরসাইকেলের দুই আরোহী মারা গেছেন। আজ ১২ জানুয়ারি রবিবার ঢাকা-ফরিদপুর-খুলনা মহাসড়কের শকড়িকান্দি এলাকার সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

banner

নিহতরা হলেন- ফরিদপুর শহরের শোভারামপুর মহল্লার সাধন কুমার দাসের ছেলে বাঁধন কুমার দাস (২৮) ও তার শ্যালক ফরিদপুর মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী প্রান্ত দাস (২২)।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, শকরিকান্দি এলাকায় অস্থায়ী চেকপোস্টে সিগন্যাল দিয়ে ফরিদপুরগামী একটি মোটরসাইকেল থামানোর চেষ্টা করে পুলিশ।

এ সময় মাগুরার দিক থেকে আসা ফরিদপুরগামী মুক্তা পরিবহন নামের একটি যাত্রীবাহী বাসের নিচে মোটরসাইকেলটি চাপা পড়ে।

করিমপুর হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাউদ্দিন জানান, বাসচাপায় মোটরসাইকেল এর দুইজন আরোহী ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। ঘাতক বাসটি আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ভালুকায় ছাত্র আন্দোলনে শহীদ তোফাজ্জল হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

সারাদেশ, 3 February 2025, 429 Views,

আল আমিন, ভালুকা (ময়মনসিংহ):
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তোফাজ্জল হোসেন হত্যার ছয় মাস অতিবাহিত হলেও এখনো কোন মামলা না হওয়ায় তোফাজ্জলকে হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে ময়মনসিংহের ভালুকায় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

banner

সকালে উপজেলার স্কয়ার মাস্টারবাড়ী এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ওই বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেন যুবদল, সেচ্ছাসেবক দলসহ ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।

জানা যায়, ০৪ আগস্ট উপজেলার স্কয়ার মাস্টারবাড়ী এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা তোফাজ্জলকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে।

এ সময় হবিরবাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম এর সভাপতিত্বে ও রফিকুল ইসলাম লিটনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য হাজ্বী আব্দর রউফ, খলিলুর রহমান বিএসএস।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা যুবদল নেতা এমদাদুল হক খসরু, মোকলেছুর রহমান, রাসেল ঢালী, শাহজাহান প্রধান, তোফায়েল আহমেদ রানা, স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা মিয়াজ, উপজেলা ছাত্রদল নেতা মাহমুদুল হাসান মানিক, আকরাম মোল্লা, সাকিব খান, সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা কর্মীরা।

মৃত্যুর দেড় মাস পর দেশে ফিরলো প্রবাসীর লাশ, জানাযায় অংশ নিলো হাসনাত

প্রবাস সংবাদ, সারাদেশ, 17 January 2025, 1309 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
সৌদি আরবের মদিনায় শ্রমিকের কাজ করে বাসায় ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো কুমিল্লার দেবিদ্বারের যুবক মো. বাছির উদ্দিনের (২৩) মরদেহ প্রায় দেড় মাস পর দেশে এসেছে। মো. বাছির দেবিদ্বার উপজেলার হোসেনপুর গ্রামের মৃত স্বপন আলীর ছেলে।

banner

১৭ জানুয়ারি শুক্রবার রাত ৭টার দিকে উপজেলার জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের হোসেনপুর ঈদগাহ মাঠে সামনে জানাযা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

জানাযায় উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, কুমিল্লা উত্তর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মু সাইফুল ইসলাম শহীদ, উপজেলা বিএনপি নেতা মো. আবুল হোসেন লিপুসহ স্থানীয়রা।

বিকালে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাছির উদ্দিনের মরদেহ এসে পৌঁছায়। পরে সন্ধ্যায় মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। তার মৃত্যুতে পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

বাছির উদ্দিনের শ্বশুর সিরাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বাছির উদ্দিন মারা যাওয়ার পর মরদেহ দেশে ফেরানোর জন্য চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই।

পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর সহযোগিতায় দেড় মাস পর বাছিরের মরদেহ বাড়িতে আনা হয়।

তিনি আরো বলেন, গত ৫ ডিসেম্বর সৌদি আরবের মদিনায় একটি কোম্পানির কনস্ট্রাকশন কাজ শেষ করে বাসায় ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় বাছির মারা যায়। আমরা প্রতিবেশী এক প্রবাসীর মাধ্যমে খবর জানতে পারি।

বাছিরের মা শাহীনা বেগম বলেন, বাছিরের বাবা দুই বছর আগে মারা যায়।

পরে অনেক ধারদেনা করে বাছিরকে সৌদি আরবে পাঠাই। আমার ছেলে যে ওখানে মারা যাবে কে জানত। আমার পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিল বাছির।

জানাযা পূর্ব বক্তব্যে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, বাছিরের পরিবারের প্রায় সাড়ে ৭ লাখ টাকা ঋণ রয়েছে। এই ঋণ পরিশোধের দায়িত্ব আমাদের। আমাদের কিছু সময় দিতে হবে। আমরা এলাকার সবাই মিলে যদি বাছিরের পরিবারের দিকে খেয়াল রাখি, তাহলে এই পরিবারটি স্বাবলম্বী হবে।