মুরাদ মৃধা, নাসিরনগর :
নাসিরনগরে জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস পালিত হয়েছে। ২৫ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সকালে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে, “তরুণদের দেশ গড়ার অঙ্গীকার জনসেবা স্থানীয় সরকার,” এ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে এক বর্ণাঢ্য রেলি উপজেলা সদরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে উপজেলা পরিষদ হল রুমে নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীন নাছরীন সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।সভায় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসাইন, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ মাহাবুব উল আলম, পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মাসুদ রাণা, গোকর্ণ ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ শাহীন, সদর ইউপি চেয়ারম্যান পুতুল রাণী দাস, প্রেসক্লাব সভাপতি আছমত আলী, সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক সবুজ, সদর ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তা, শাখায়াত হোসেন, বিশ্বজিৎ দাস, গুনিয়াউক ইউপি হিসাব সহকারী মোঃ নোমান মিয়া প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগর ইব্রাহিম মিয়া (২৫) নামে এক মাদকসেবীকে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আজ ১৩ জুন বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ও নিবার্হী ম্যাজিষ্ট্রেট মো: ইমরানুল হক ভূঁইয়া তাকে এই সাজা দেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, ইব্রাহিম মাদকাসক্ত হয়ে মারধর করে এবং অশ্লীলভাষার গালমন্দ করে। এ ঘটনায় মায়ের অভিযোগের আলোকে নাসিরনগর থানার এস আই মো: মাঈনুদ্দিনের নেতৃত্বে পুলিশ নাসিরনগর উপজেলা সদর ইউনিয়নের দাতঁমন্ডল নিজ বাড়ি থেকে মাদক সেবনকারী ইব্রাহিমকে আটক করে। পরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ এর সংশ্লিষ্ট ধারায় আটককৃত দাতঁমন্ডল গ্রামের মৃত চান মিয়ার ছেলে ইব্রাহিমকে ১ বছরের বিনাশ্রমে কারাদণ্ড দেয়া হয়। একই সঙ্গে ১০০ টাকা অর্থদন্ড করা হয়। কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ইব্রাহিমকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
নাসিরনগর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট মো: ইমরানুল হক ভূইয়া ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। উপজেলা প্রশাসনের মাদক বিরোধী মোবাইল কোর্ট অব্যাহত থাকবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আন্ত:জেলা ডাকাত দলের সদস্য দুর্র্ধর্ষ ডাকাত নূর মোহাম্মদকে (৪০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল ১৮ সেপ্টেম্বর বুধবার দিবাগত রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার গােকর্ণ ইউনিয়নের নুরপুর গ্রাম থেকে নাসিরনগর থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। সে ওই গ্রামের ফিরোজ আলীর ছেলে। নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল কাদের জানান, নুর মোহাম্মদ দুর্র্ধর্ষ ডাকাত। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। একটি মামলায় তার বিরুদ্ধে নাসিরনগর থানায় গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। আটক নুর মোহাম্মদকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগর উপজেলার আকাশী বিলে আজ ৬ মে মঙ্গলবার সকালে আকস্মিকভাবে একটি টর্নেডো দেখা গেছে। উপজেলার গোকর্ণ ইউনিয়নের জেঠাগ্রাম এলাকায় সকাল ১০টার দিকে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় কোনো ক্ষয়-ক্ষতির খবর পাওয়া না গেলেও এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় ২ মিনিট ধরে এ দৃশ্য দেখা গেছে বলে তারা জানিয়েছেন।
এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালের দিকে হঠাৎ করে আকাশী বিলে ভয়াবহ টর্নেডো দেখে তারা ভয় পেয়ে যান। অনেকে মোবাইল দিয়ে সেই ঘটনার ভিডিও ধারণ করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহীনা নাছরিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সকাল ১০ টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে এতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগরে পূর্ব শত্রুতার জেরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আক্কেল আলী (৫৫) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। আজ ৯ মে শুক্রবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার গোয়ালনগর ইউনিয়নের সোনাতোলা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। নিহত আক্কেল আলী সোনাতলা গ্রামের পূর্বপাড়ার মৃত লাল মিয়ার ছেলে। নিহত হওয়ার খরবে আতঙ্ক বিরাজ করায় আহতের নাম সংগ্রহ করা যায়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গোয়ালনগর ইউনিয়নের সোনাতোলা গ্রামের সালাম মেম্বারের পক্ষ এবং আলী আজগরের পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েক মাস যাবত ঝগড়া-বিবাদ ও সংঘর্ষ চলে আসছিল। গত ৬ নভেম্বর আজগর আলীর গোষ্ঠীর সিদ্দিক মোল্লা নামে একজন নিহত হয়। এরকিছু দিন পর গত ২১ এপ্রিল সালাম মেম্বারের গোষ্ঠীর জোহরালী মিয়া নামে একজনের গলাকাটা লাশ পাওয়া যায়। সেই ঘটনায় উভয় পক্ষের মধ্যে হত্যা ও লুটপাট মামলা আদালতে চলমান রয়েছে। সর্বশেষ শুক্রবার দুপুরে পূর্বের ঘটনার জের ধরে উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই আজগর আলীর গোষ্ঠীর আক্কেল আলী মারা যান। আরো জানা যায়, দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বে সোনাতলা গ্রামে গত ছয় মাসে গোষ্ঠীগত সংঘর্ষে আক্কেল আলীসহ উভয় পক্ষের মোট তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে। মূলত গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বে জিততেই একের পর এক প্রাণ যাচ্ছে। গোয়ালনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজহারুল হক জানান, পূর্বের ঘটনার জের ধরেই আজকের উভয় পক্ষের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
নাসিরনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জামিল খান হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে বলেন, দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের ঘটনায় আক্কেল আলী নামে একজন নিহত হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠানো হয়েছে। এখনও লিখিত অভিযোগ পাইনি, পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে ৫ শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে ষষ্ঠ শ্রেণীর এক শিশু শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলার ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় ৭দিন কারাভোগের পর জামিনে এসেও পুলিশ আতঙ্কে ভুগছে ভুক্তভোগী শিশু সাকিবুল। সে সদর ইউনিয়নের টেকানগর গ্রামের উসমান মিয়ার ছেলে। শিশুর বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মামলার ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ভয়ে সাকিবুলের সহপাঠী এবং অন্য শিশুরাও এখন স্কুলে যেতে চাচ্ছে না। ঘটনাটি নাসিরনগর উপজেলা সদরের টেকানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।
গত ৪ জুলাই নাসিরনগর থানায় ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে ভুক্তভোগী এক শিশুর পিতা মো. জালাল উদ্দিনকে বাদী করে নাসিরনগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করে নাসিরনগর থানা পুলিশ। যদিও বাদীর দাবি পুলিশ তাকে থানায় ডেকে এনে মামলার বাদী হতে বলেছে।
এবিষয়ে মামলার বাদী মো. জালাল উদ্দিন বলেন, “আমাকে থানায় ডেকে এনে বলছে তুমি মামলার বাদী হইবা। পরে আমারে বসাইয়া রাইখা মামলা লেইখা এরা আমার সই নিছে। আমার মেয়ে ছোট, নদীতে দল বেধে খেলাধুলা করে, গোছল করে। সময়ে কাপড় পড়ে আবার সময়ে কাপড় ছাড়াই গোছল করে।”
ভুক্তভোগী শিশু শিক্ষার্থী সাকিবুল মিয়া জানান, “আমি সকাল সাতটার সময় সহপাঠীর সাথে প্রাইভেট পড়তে নাসিরনগর যাই। সকালের প্রাইভেট শেষে স্কুলে যাই দশটার সময়। তখন আমাদের পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষা শেষে বিকাল চারটার দিকে অন্য আরেকটা প্রাইভেটে যাই। সেখান থেকে আমার বাবা আমাকে থানায় নিয়ে আসে। আমি কিছুই জানিনা অথচ থানায় নেওয়ার পর পুলিশ আমাকে জেলে দিয়ে দিল।”
সাকিব আরো বলে, “আমি অসুস্থ্য, শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। জেলে থাকতে আমার অনেক কষ্ট হয়েছে। নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে বিচার দিয়েছি। আমার গ্রামের স্কুলের ম্যাডামরা আমাকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে। এখন আর স্কুলে যেতে ইচ্ছে করে না। পুলিশ দেখলে ভয় লাগে আবার যদি ধরে নিয়ে যায়।”
মামলার স্বাক্ষী ও টেকানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রওশন আরা বলেন, ঘটনার দিন ছিল বন্ধের পর স্কুল খোলার প্রথম দিন। সকাল ৯টার সময় স্কুলে ঢুকে ৫জন মেয়ে বাচ্চাকে শ্রেণিকক্ষের ভিতরে দেখতে পায় আমার সহকারি শিক্ষক সালমা আক্তার। এদের কয়েকজনের পড়নে পোশাক ছিল না। কিন্তু কোনো ছেলেকে আমরা আশেপাশে দেখিনি।
তিনি আরো জানান, সাকিব আমার সাবেক ছাত্র। সে অনেক ভালো ছেলে। মামলার আরেক স্বাক্ষী সালমা আক্তার জানান, আমিই প্রথম বাচ্চাগুলোকে দেখতে পেয়ে ম্যাডামকে জানাই। আমরা সাকিব তো দুরের কথা, কোনো ছেলেকেই দেখি নাই।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে ৩ জুলাই সকাল সাড়ে আটটার সময় জাম্বুরার প্রলোভন দেখিয়ে শিশুদের স্কুলে নিয়ে যায় সাকিব। অথচ প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি সেদিন প্রাইভেট পড়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে ৪৫ মিনিটের দূরত্বে সকাল সাতটার সময় সহপাঠীর সাথে সাকিব নাসিরনগরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।
এবিষয়ে নাসিরনগর আশুতোষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো. রওশন সিদ্দিক জানান, সাকিব আমার ছাত্র। গত ৩ জুলাই সকাল আটটায় আমার কাছে গণিত প্রাইভেট পড়তে আসে সাকিব। তার বাড়ি থেকে আমার এখানে আসতে প্রায় ৪৫ মিনিট সময় লাগে।
টেকানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীর মা ফাহিমা বেগম বলেন, আমার ছেলে স্কুলে যেতে চাচ্ছে না, বলে স্কুলে গেলে যদি পুলিশে ধরে নিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী পাঁচ শিশুর একজনের মা বলেন, “ঘটনার দিন আমি দেখেছি আমাদের পাঁচজন বাচ্চা কাপড় ছাড়া নদীতে নেমে গোছল করতেছে। কতক্ষণ পরে দেখছি স্কুলের সিঁড়ি দিয়া উপড়ে গেছে। আমি আমার বাচ্চারে ডাক দিছি নিচে নামার জন্য।”
তিনি আরো বলেন, “আমার মেয়ের বয়স পাঁচ বছর। সে এখনও বিছিনায় প্রস্রাব করে, কাপড় ছাড়া নদীতে গোছল করে। ওসমানের পোলারে আমরা চিনি, হে ইতা করার পোলা না, বয়সও হয়নাই।”
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহাগ রানা বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে সাকিবকে আটক করা হয়েছিল। মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে। পুলিশ আতঙ্কের বিষয়টি সত্য নয়।
জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার পুলিশ সুপার শাখাওয়াত হোসেন জানান, “এরকম হওয়ার কথা না, আমার নজরে এসেছে এখন আমি দেখব।”