চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবায় অভিযান চালিয়ে মো. রুবেল মিয়া (৩৫) নামে হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জেল পলাতক এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে এন্টি টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ)।
আজ ২৬ ফেব্রুয়ারি বুধবার দুপুর পৌনে ২টায় উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের বড়াইগ্রাম এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার রুবেল নেত্রকোনার পূর্বধলা থানার গরুয়াকান্দা গ্রামের হেলাল উদ্দিনের ছেলে। গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন এটিইউয়ের মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস উইংয়ের পুলিশ সুপার ব্যারিস্টার মাহফুজুল আলম রাসেল। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ২০১১ সালে রুবেল ব্যবসায?িক দ্বন্দ্বের জেরে রিপন নামের এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে রুবেলকে আসামি করে পূর্বধলা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। মামলাটির তদন্ত শেষে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হলে বিচারিক কার্যক্রম শেষে ২০১৮ সালের ৩০ মার্চ নেত্রকোনা জেলা ও দায়রা জজ রুবেলকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়ে রায় প্রদান করেন। ওই মামলায় গ্রেফতার হয়ে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে আটক ছিলেন রুবেল (মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দি নম্বর ৪৩৬৬/এ)।
গত জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের পর উদ্ভূত পরিস্থিতির সুযোগে ৬ আগস্ট জেল থেকে পালিয়ে আত্মগোপনে যান রুবেল। এ ঘটনায় মামলা কোনাবাড়ি থানায় মামলা দায়ের করে কারা কর্তৃপক্ষ। এদিকে, কারাগার থেকে পালিয়ে দীর্ঘদিন দেশের বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে ছিলেন রুবেল। এন্টি টেরোরিজম ইউনিটের চৌকস দল আসামি রুবেলের অবস্থান শনাক্ত করে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতার আসামির বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
চলারপথে রিপোর্ট :
সামিউল ইসলাম নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে স্ত্রী ও শ্যালিকাকে খুন করার অভিযোগ উঠেছে। আজ ৩ মার্চ সোমবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের ধজনগর গ্রামে বাবার বাড়ি থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
ঘটনার পর তিনি পালিয়ে গেছেন। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে ২ ফেব্রুয়ারি রবিবার গভীর রাতে । তবে কী কারণে তাদের হত্যা করা হয়েছে, এ বিষয়ে স্থানীয় বা পরিবারের লোকজন নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।
আজ ৩ ফেব্রুয়ারি সোমবার সকাল সোয়া ১০টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধারসহ বিভিন্ন বিষয়ে তদন্ত শুরু করছে।
নিহতরা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের ধজনগর গ্রামের রওশন আলীর মেয়ে স্মৃতি আক্তার ও তিথি আক্তার। স্মৃতির সাথে বছর দেড়েক আগে কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার জামতলী গ্রামের জাকির হোসেনের ছেলে আমীর হোসেনের বিয়ে হয়।
পরিবারের লোকজন জানান, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। রবিবার রাত ১টার পর এ ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে তারা।
কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জানান, খবর পেয়ে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠায় পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। অভিযুক্ত সামিউলকে ধরার চেষ্টা চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
কসবায় খড়ের গাদার নিচ থেকে পলিথিনে মোড়ানে ৯ কেজি গাঁজাসহ একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
৮জুলাই সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার খাড়েরা ইউপির কেয়াইর গুচ্ছগ্রাম থেকে গাঁজাসহ রৌশন মিয়াকে আটক করা হয়। আটক রৌশন মিয়া কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউপির নোয়াগাঁও গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে।
কসবা থানার ওসি রাজু আহাম্মেদ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার খাড়েরা ইউপির কেয়াইর গুচ্ছগ্রামে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে গুচ্ছগ্রাম থেকে রৌশন মিয়াকে আটক করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্য মতে গুচ্ছগ্রামের ২১৯ নম্বর ঘরের পাশে খড়ের গাদার নিচে ছোট ছোট পলিথিনে মোড়ানে ৯ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। তিনি একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
কসবায় অসহায় শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করেছেন বিজিবি। আজ ৮ জানুয়ারি বুধবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী গোসাইস্থল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ও বিকেলে একই ইউনিয়নের চন্ডিদ্বার শেখ ফজলুল করিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে সুলতানপুর ৬০ বিজিবির পক্ষ থেকে এলাকার দুই শতাধিক অসহায়, দরিদ্র মানুষের মাঝে এসব কম্বল বিতরণ করা হয়।
কম্বল পেয়ে আনন্দিত অসহায় পরিবারের লোকজন।
কম্বল বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন সুলতানপুর ৬০ বিজিবি অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল এ এম জাবের বিন জব্বার।
এসময় সুলতানপুর ৬০ বিজিবি সহকারী পরিচালক মোঃ মতিউর রহমান ও গোসাইস্থল বিওপি ক্যাম্প কমান্ডার সুবেদার মোঃ আলমগীর হোসেনসহ অন্যান্য কর্মকর্তাগণ এবং এলাকার উপকারভোগী লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
৬০ বিজিবি অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল এএম জাবের বিন জব্বার বলেন, বিজিবি সবসময় অসহায় শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণসহ বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কাজ করে থাকে। ভবিষ্যতে এ ধরনের কল্যাণমূলক কাজ চলমান থাকবে।
আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি ॥ সংশ্লিষ্টদেরকে নোটিশ
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ব্রোকেন স্টোন বা চূর্ণ পাথরের ঘোষণা দিয়ে ভারত থেকে আমদানি হয়েছে ২৭০০ টন পাথরের ধুলা (ডাস্ট)। মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানির অভিযোগে ছাড়পত্র মিলছে না কাস্টমসের। যে কারণে প্রায় এক মাস ধরে আখাউড়া স্থলবন্দরে এই ডাস্ট বা ধুলাগুলো পড়ে আছে। কাস্টমসের গঠিত তদন্ত কমিটিও ডাস্ট উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িরা দাবি করেছেন, এতে প্রতিদিন লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদেরকে। এ জন্য তারা কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে দায়ী করছেন। রপ্তানিমুখী আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে প্রথমবারের মতো চূর্ণপাথর আমদানি হয় গত ১৩ নভেম্বর। এরপর কয়েক দফায় মোট ২৭০০ টন আমদানি করে ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। এ প্রতিষ্ঠানটি আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত করার কাজের জন্য পাথর আমদানি করেছে। আমদানিকৃত চূর্ণপাথরগুলো প্রতি টন আমদানি হয়েছে ১৩ মার্কিন ডলারে। এগুলো বন্দর থেকে ছাড়ানোর কাজ পায় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট খলিফা এন্টারপ্রাইজ। তবে কাস্টমস থেকে ছাড়পত্র নিতেই বাঁধে বিপত্তি। প্রথমবারের মতো আমদানি হওয়ায় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ছাড়পত্র দেওয়ার কথা জানায় কাস্টমস। পরবর্তীতে এগুলো পরীক্ষা করে পাথরের বদলে ডাস্ট আনা হয়েছে জানিয়ে আটকে দেয়া হয়। ফলে প্রতিদিনই বন্দর কর্তৃপক্ষকে মাশুল বাবদ প্রায় ৩৬ হাজার টাকা গুনতে হচ্ছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে।
অভিযোগ উঠেছে- আমদারিকারক প্রতিষ্ঠান ভাঙা পাথরের ঘোষণা দিয়ে ডাস্ট এনেছে। এজন্য কাস্টমসের তরফ থেকে চার সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়। তদন্ত শেষে রিপোর্ট দেওয়া হয় ডাস্ট হিসেবে। তবে দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে বলে জানান কাস্টমসের কর্মকর্তারা।
এদিকে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে চূর্ণ পাথর বা ডাস্ট আমদানির অনুমতি না থাকায় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে তাদেরকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট খলিফা এন্টারপ্রাইজকেও কার্যার্থে একই চিঠি দেওয়া হয়। সিএন্ডএফ এর মালিক হলেন আখাউড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মো.তাকজিল খলিফা কাজল।
খলিফা এন্টার প্রাইজের প্রতিদিন নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা প্রথম দফা আনার পর বলা হয় সব আনার পর অনুমতি দেওয়া হবে। এখন বলা হচ্ছে এ ধরণের পাথরের অনুমতি নেই। এখন পাথর আটকে থাকায় আমরা লোকসানের মুখে পড়েছি।’
আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘তদন্ত করে আমদানি করা পণ্য ডাস্ট হিসেবে পাওয়া গেছে। এ ধরণের পণ্য আমদানির অনুমতি নেই। এখন এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন।’
চলারপথে রিপোর্ট :
গরুর ভাইরাসজনিত লাম্পি স্কিন রোগের প্রাদুর্ভাবে দিশেহারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার প্রান্তিক খামারিরা। এই রোগে আক্রান্ত গরুর গায়ে গুটি বের হতে দেখা যায়। পরে গায়ে প্রচণ্ড ব্যথায় গরু অসুস্থ হয়ে পড়ে। নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা না থাকায় গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে রয়েছেন খামারি ও গরু পালনকারীরা।
কসবার গরু পালন অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। উপজেলার প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই এখন গরু পালন করা হচ্ছে। অন্যদিকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি খামার বৃদ্ধি পাচ্ছে। গরু পালন অনেকের সংসারে সচ্ছলতা এনেছে। পাশাপাশি বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু নতুন এই রোগের কারণে শঙ্কিত গরু পালনকারীরা।
উপজেলা প্রাণীসম্পদ হাসপাতালে এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে চারশ আক্রান্ত গরু চিহ্নিত হয়েছে। এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে ছড়িয়ে পড়ছে এই রোগ। প্রতিদিনই নতুন আক্রান্ত গরু চিহ্নিত হচ্ছে। এই রোগে গরুর গায়ে গোটা উঠতে দেখা যায়।
গরু পালনকারী সৈয়দাবাদ গ্রামের আলিম মিয়া জানান, গাভী গরুগুলো বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। এতে প্রয়োজনীয় দুধ না পাওয়ায় বাছুর পালন করতে অনেক কষ্ট করতে হচ্ছে। অন্যদিকে গরুর শরীরে ব্যথা ও শরীরে ঘা’র স্থলে মশা-মাছি বসে অস্থির করে রাখছে।
একই গ্রামের গরু পালনকারী বিল্লাল মিয়া বলেন, এ রোগ হলে চিকিৎসা কী হবে, সে বিষয়ে আমাদের কোনো ধারণা নেই। প্রাণীসম্পদ হাসপাতালেও কোনো চিকিৎসা নেই। শুধু জ্বর ও ব্যথার ইনজেকশন দিচ্ছে। এতে আক্রান্ত গরুর ফোলা ও গুটি সারতে অনেক সময় লাগছে। অনেক টাকা খরচ হচ্ছে।
কসবা উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. তারেক মাহমুদ বলেন, মশা-মাছির মাধ্যমে এ রোগ ছড়ায়। মশা বা মাছি আক্রান্ত গরুর শরীরে বসে। অন্য একটি সুস্থ গরুর শরীরে বসলে সেটিও আক্রান্ত হয়ে যায়। তাই এই রোগ প্রতিরোধে গরুগুলোকে মশারির ভেতরে রাখা ও বাড়ির আশপাশ (গোয়াল ঘর) পরিষ্কার রাখতে বলা হচ্ছে। এছাড়া এ রোগের বিস্তার ঠেকাতে স্থানীয়দের মাঝে সচেতনতার জন্য লিফলেট বিতরণ ও উঠান বৈঠক করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, ভাইরাসজনিত এই রোগের কোনো টিকা বা ওষুধ আবিষ্কার হয়নি। তবে ছাগলের বসন্ত রোগের মিল থাকায় প্রাথমিকভাবে ১১ হাজার সুস্থ গরুকে ‘গোট পক্স’ টিকা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া রোগ দেখা দিলে তাৎক্ষণিক নিকটস্থ প্রাণীসম্পদ দপ্তর বা ভেটেরিনারি সার্জনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে।