চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় ‘শয়তানের নিশ্বাস’ (ডেভিল ব্রেথ) দিয়ে লুটে নেয়া মোটরসাইকেল চক্রের সক্রিয় সদস্য জুয়েলকে (২৭) গ্রেপ্তার ও তার কাছে থাকা ৩টি দামি মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। গতকাল ২৫ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) এসআই রবিউল ইসলাম। এর আগে শনিবার রাতভর ঢাকা ও চট্টগ্রাম পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি পুলিশ) পৃথক দুটি দল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় অভিযান চালিয়ে জুয়েলকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
জুয়েলের বাড়ি আখাউড়া পৌরশহরের তারাগন গ্রামে। তার পৌর শহরের বাইপাস এলাকায় একটি মোটরসাইকেল ওয়ার্কশপ রয়েছে।
গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম রাউজান থানার বাসিন্দা মামুন মোটরসাইকেলে রাইড শেয়ারিং করেন। গত ২৭ জানুয়ারি একজন যাত্রী নিয়ে হাটহাজারী উপজেলায় যাওয়ার পথে মোবাইলে কৌশলে বিষাক্ত কেমিক্যাল যা ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ নামে পরিচিত ওই রাসায়নিক পদার্থ তার নাকের কাছে ধরে স্মৃতিভ্রম করেন। পরে তার কথামতো মামুন নিজেই প্রতারকের হাতে তুলে দেন তার রাইড শেয়ারিংয়ের মোটরসাইকেল ও তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন। এরপর দ্রুত সটকে পড়ে প্রতারক।
গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্তে নামে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি) দল। এরপর ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে বিভিন্ন সূত্র ধরে আসামিদের নাম ও ঠিকানা শনাক্ত করে ডিবি পুলিশ। পরে আখাউড়া থেকে গ্রেফতার করা হয় জুয়েলকে। এ সময় তার দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ৩টি দামি বাইক উদ্ধার করে গোয়েন্দা পুলিশ। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার এসআই রবিউল ইসলাম জানান, মূলত দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এ চক্রের মূলহোতারা ভয়াবহ মাদক ‘স্কোপোলামিন’ অপরাধ জগতে ‘ডেভিলস ব্রেথ’ বা ‘শয়তানের নিশ্বাস’ নাকের কাছে ধরে স্মৃতিভ্রম করে মোটরসাইকেল লুট করে আখাউড়া নারায়ণপুর গ্রামের রাব্বি এবং জুয়েলের মোটরসাইকেল ওয়ার্কশপে নিয়ে আসা হতো। এখানে মোটরসাইকেলের চেসিস নম্বর ও কিছু মালামাল পরিবর্তন করে ভারতীয় টানা মোটরসাইকেল বলে অন্য জায়গায় বিক্রি করা হতো। তিনি জানান, এ চক্রের সদস্য রাব্বি পলাতক থাকলেও তার ভাই হৃদয়কে জিম্মি করে ৩টি বাইকসহ জুয়েলকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়। সবকয়টি মোটরসাইকেলই ‘শয়তানের নিশ্বাস’ দিয়ে লুটে আনা হয়েছে।
আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছমিউদ্দিন বলেন, ‘চক্রের সদস্য রাব্বি পলাতক। তাকে গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে আফজাল হোসেন জুম্মান (৩৪) নামে এক চোরাকারবারীকে আটক করা হয়েছে।
এসময় তার বাড়ি থেকে ২৭৯ পিস ভারতীয় শাড়ি, ৭৫০ পিস রং ফর্সারকারী ক্রিম, ২টি ল্যাপটপ ও ২টি মোবাইল উদ্ধার করেছে। ২ অক্টোবর বুধবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের দ্বিজয়পুর গ্রামের বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়। সে ওই গ্রামের মুখলেছুর রহমানের পুত্র।
অভিযানকালে জুম্মানের বাড়ি থেকে দেশীয় ২টি চাকু ও ১টি দা জব্ধ করা হয়।
আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুল হাসিম বলেন, আটক জুম্মানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের পূর্বক তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী ও কসবা-আখাউড়ার সংসদ সদস্য এড. আনিসুল হক বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার নেপথ্যের কুশীলবদের চিহ্নিত করার জন্য একটি কমিশন তৈরি করা হবে।
সেই আইন প্রায় ড্রাফট হয়ে গেছে। জনগণ সহযোগিতা করলে সেই আইন পাশ করা হবে। আমরা নতুন প্রজন্মকে বাংলাদেশের সত্যিকারের ইতিহাস জানাতে চাই।
আমরা কোন প্রতিহিংসার জন্য তাদেরকে চিহ্নিত করবো না। বাঙালির সামনে সত্য ইতিহাস উপস্থাপন করার জন্য তাদেরকে চিহ্নিত করবো। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে আজ ১৫ আগস্ট মঙ্গলবার সকালে আখাউড়া উপজেলা আওয়ামীলীগ ও সহযোগীদের সংগঠনের আয়োজনে আখাউড়া রেলওয়ে ষ্টেশন চত্বরে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন বাংলাদেশকে সোনার বাংলা করার স্বপ্ন দেখছিলেন, তখন কিছু বেইমান, মিরজাফর তাকে হত্যা করে। শুধু তাকে নয়, তাঁর পরিবারের ১৭ জনকে হত্যা করা হয়েছিল। আমরা বলতে পারি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার উদ্দেশ্য ছিল, বাংলাদেশকে হত্যা করা। তারা মনে করেছিল বঙ্গবন্ধুকে স্ব-পরিবারে হত্যা করা গেলে বাংলাদেশকেও হত্যা করা যাবে।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নিতে হবে। তবে হত্যা করে আমরা প্রতিশোধ নিতে চাই না। যারা ষড়যন্ত্র করেছিল, যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল তারা বাংলাদেশকে হত্যা করতে চেয়েছিল। আমাদের প্রতিশোধ হবে বাংলাদেশকে সোনার বাংলা বানিয়ে দেখাবো, বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু কোন দিন মরবে না। বঙ্গবন্ধুকে বাংলাদেশে মারা যায় না।
যারা খুনি তাদেরকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছি সেটা আলাদা কথা। বঙ্গবন্ধুর হত্যার কুশীলবদের চিহ্নিত করা হবে। নতুন প্রজন্ম যাতে জানতে পারে এরাই বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। জাতির পিতার পরিবারকে হত্যা করেছিল। বাংলাদেশের ভার তাদের (খুনিদের) পরিবারের হাতে যেন তুলে না দেয়। তাদের হাতে দেশের ভার গেলে তারা দেশকে বিরান করে ফেলবে।
ষড়যন্ত্রকারীরা বসে নাই মন্তব্য করে আনিসুল হক বলেন, আইনে একটা কথা আছে ষড়যন্ত্র সব সময় অন্ধকারে হয়। এই অন্ধকারের রাজনীতিবিদরা এখনও বিএনপি জামাতে আছে। তারা এখনো ষড়যন্ত্র করছে। তারা দেশকে ধ্বংস করতে চায়। এই ষড়যন্ত্রকারীদের ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আজকের শোককে শক্তিতে পরিণত করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর প্রতি আামাদের যে ঋণ তা পরিশোধ করার জন্য বাংলাদেশকে সোনার বাংলা গড়ার শপথ নিতে হবে।
আইন মন্ত্রী আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল দেশে আইনের শাসন থাকবে। তার কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আন্দোলন করে ক্ষমতায় আসার পর দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে। তিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার করেছেন। জেল হত্যাকারীদের বিচার করেছেন। এর নামই হচ্ছে আইনের শাসন। উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরীর সভাপতিত্বে এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি এড. আব্দুল্লাহ ভূইয়া বাদল, উপজেলা যুবলীগের য্গ্মু আহবায়ক আব্দুল মমিন বাবুল প্রমুখ।
এর আগে তিনি সকাল সোয়া এগারটায় ঢাকা থেকে আন্ত:নগর মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনে আখাউড়া এসে পৌঁছেন।
স্টাফ রিপোর্টার :
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের ঘাগুটিয়া সীমান্ত দিয়ে ভারতে যেতেন মুক্তিযোদ্ধা ও শরনার্থীরা। ওই স্মৃতিকে ধরে রাখার উদ্যোগ গ্রহন করেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজরিত ওই স্থানে স্মৃতি কেন্দ্র নির্মাণ করার কথা জানিয়েছেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার।
তিনি আজ ১০ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার দুপুরে ঘাগুটিয়া এলাকার সেই স্থান পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি জানান, আগামী বর্ষার আগেই পরিকল্পনা মাফিক কাজ শেষ করা হবে।
আল-মামুন সরকার জানান, ঘাগুটিয়ার বর্তমান বিজিবি ক্যাম্পের পাশ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত যাতায়ত করেছেন মুক্তিযোদ্ধা ও শরনার্থীরা। তিনি নিজেও এ পথে বহুবার ভারত গেছেন। যে কারণে স্থানটি স্মৃতিবিজরিত ও গুরুত্বপূর্ন। এছাড়াও এর পাশে পদ্মবিল থাকায় জায়গাটিতে অনেক লোকের সমাগম হয়। এসব ভাবনাকে মাথায় রেখে এখানে স্মৃতিকেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। ইতিমধ্যেই প্রস্তাবিত জায়গার মালিকের সাথে এ নিয়ে কথা হয়েছে। জায়গা দিতে তাঁর সম্মতি পাওয়া গেলেই কাজ শুরু করা হবে।
এ সময় আল মামুন সরকারের সাথে উপস্থিত ছিলেন আখাউড়া পৌরসভার মেয়র মোঃ তাকজিল খলিফা কাজল, উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোঃ মুরাদ হোসেন, সংরক্ষিত ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন শফিক আলেয়া, জেলা পরিষদ সদস্য মোঃ সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার বকতারপুর গ্রামের মো. ইদ্রিস ১৯৮০ সাল থেকে ভারতে অবস্থান করছিলেন। সেখানে স্থায়ীভাবে বাসও গেড়েছিলেন। সেখানকার নাগরিকত্ব নিয়ে পাসপোর্টের মাধ্যমে বাংলাদেশের বাড়িতে যাওয়া আসা করতেন। সম্প্রতি পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হলে অবৈধ পথে বাংলাদেশে আসেন। ফেরার পথে ভারতের আইনশৃংখলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে সত্যটা স্বীকার করেন।
অবশেষে প্রায় ৪৫ বছর পর ভারত থেকে ফিরতে হলো মো. ইদ্রিসকে। আজ ১৯ জানুয়ারি রবিবার সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে তাকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়। একই সময়ে প্রেমের ‘ফাঁদে’ ঘর ছাড়া আরতি দাসকে (ছদ্মনাম) বাংলাদেশে পাঠানো হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইদ্রিস ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে ভারতের ত্রিপুরায় আটক হন। ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার আরতি নামে ওই কিশোরী মাস ছয়েক আগে আটক হন। দুই দেশের মধ্যে আলোচনা শেষে তাদেরকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়।
এ সময় আগরতলাস্থ বাংলাদেশ সহকারি হাই কমিশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ওমর শরীফ, স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন ইনচার্জ মো. শফিকুল ইসলাম, বিজিবি’র নায়েব সুবেদার মো. মালেকুল ইসলাম, বিএসএফ কম্পানি কমাণ্ডার অভিষেক শিংসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরতির বাবা জানান, তার স্ত্রী বেঁচে নেই। মেয়েকে লালন পালন করবেন বলে বিয়েও করেননি। কখন যে সে সীমান্ত পাড়ি দেয় তা তিনি বুঝতে পারেননি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর ভারতে তার মেয়ের অবস্থানের কথা জানতে পারেন। মেয়েকে কাছে পেয়ে তিনি এখন খুশি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় খড়মপুর কেল্লা শাহ মাজারের পুকুরের পানিতে ডুবে মরিয়ম আক্তার (১০) এক শিশুর মৃত্যু আছে। শিশুটি তার পরিবারের সাথে মাজারে এসেছিল। মৃত মরিয়ম আক্তার জেলার বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর এলাকার মন মিয়ার মেয়ে।
১৮ অক্টোবর বুধবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শিশু মরিয়ম আক্তার তার পরিবারের লোকজনের সাথে মাজারে জিয়ারত করতে এসেছিল। হঠাৎ মাজারের পেছনের পুকুরের পানিতে পড়ে তলিয়ে যায়। পরে স্বজনরা খোঁজাখুজি করে পুকুরে তার মরদেহ ভাসতে দেখে।
আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুল ইসলাম বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, খবর পেয়ে আখাউড়া থানা পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রেরণ করে।