হাকিকুল ইসলাম খোকন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে :
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধ ও খনিজ উপাদান হস্তান্তর সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য ওয়াশিংটন সফরে গিয়েছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে বৈঠকেই বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ওয়াশিংটন থেকে কোনো প্রকার চুক্তি স্বাক্ষর না করেই ফিরে গেছেন জেলেনস্কি।
২৮ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তাদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। এই বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল, ইউক্রেনের খনিজ সম্পদে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে একটি চুক্তি সই করা, শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়নি।
রাশিয়ার সাথে চলমান যুদ্ধে ইউক্রেন কয়েকশো কোটি ডলারের অস্ত্র ও অর্থ সহায়তা পেয়েছে, কিন্তু ২০ জানুয়ারি ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর পরিস্থিতি পাল্টে যায়। ট্রাম্প জেলেনস্কির বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য দোষারোপ করতে শুরু করেন। তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে সমালোচনা করে বলেন, তাকে শান্তি আলোচনা শুরু করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
এ উত্তেজনার কারণে পূর্বনির্ধারিত সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত না হয়ে শেষ পর্যন্ত হোয়াইট হাউস থেকে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বের হয়ে যান। ঘটনা পরিক্রমায়, দুই দেশের সম্পর্ক এবং বৈঠকের ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এবং পরিস্থিতি বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন অজানা দিক উন্মোচন করেছে।
এর আগে, সাংবাদিকদের সামনে এই বৈঠকে জেলেনস্কিকে একের পর আক্রমণ করে বক্তব্য দেন ট্রাম্প। জেলেনস্কি ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে জুয়া খেলছেন’ বলে অভিযোগ করে ট্রাম্প বলেন, আপনার দেশের মানুষ খুবই সাহসী; কিন্তু আপনাকে হয় (রাশিয়ার সাথে) একটি চুক্তি করতে হবে না হলে আমরা আর আপনাদের সাথে নেই। আর আমরা যদি না থাকি তাহলে আপনাকে একা লড়তে হবে।
ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে মতপার্থক্য একসময় চিৎকার-চ্যাঁচামেচির পর্যায়ে চলে যায়। ‘জেলেনস্কি যুদ্ধে হেরে যাচ্ছেন’ দাবি করে ট্রাম্প বলেন, মানুষ মারা পড়ছে। যুদ্ধের জন্য সেনার সংখ্যাও কমছে ক্রমশ। আপনার হাতে কার্ড (বিকল্প) নেই। একবার আমরা চুক্তি সই করলে আপনি ভালো অবস্থানে চলে যাবেন। কিন্তু আপনাকে আদৌ কৃতজ্ঞ মনে হচ্ছে না। সত্যি কথা বলতে কি এটা ভালো কোনো বিষয় নয়।
বৈঠকের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে বলেন, হোয়াইট হাউসে আজ (শুক্রবার) অর্থবহ মিটিং করেছি। এতো চাপ ও উত্তেজনার মধ্যে এমন কিছু শেখা গেছে, যা কথা না বললে কখনো বোঝা যেত না। আবেগের মধ্য দিয়ে যা বেরিয়ে আসে তা আশ্চর্যজনক, আমি স্থির হয়েছি যে জেলেনস্কি শান্তির জন্য প্রস্তুত না। এতে যদি আমেরিকা যুক্ত থাকে, কারণ তিনি মনে করেন আমাদের যুক্ত থাকার ফলে আলোচনায় তার একটা বড় সুবিধা হবে। আমি সুবিধা চাই না, শান্তি চাই।
ডোনাল্ড ট্রাম্প আরো বলেন, তিনি (জেলেনস্কি) যখন শান্তির জন্য প্রস্তুত হবেন, তখন তিনি আসতে পারেন। তিনি প্রিয় ওভাল অফিসে যুক্তরাষ্ট্রকে অসম্মান করেছেন।
বৈঠকের শুরুতে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের বিষয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন ইউক্রেনের সামরিক কর্মকর্তারা। যখন তাদের বাদানুবাদ চলছিল, তখন বৈঠকে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূতকে মাথায় হাত অবস্থায় দেখা গেছে।
অনলাইন ডেস্ক :
এ এক অভূতপূর্ব দৃশ। নিজের পাপের বোঝার কথা স্মরণ করে লাখ লাখ মুসল্লির অবিরল অশ্রুধারায় ভিজেছে ঐতিহাসিক আরাফাত ময়দান। তাঁদের ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে আরাফাত ময়দান প্রকম্পিত হয়েছে।
আজ ২৭ জুন মঙ্গলবার এ ময়দানে যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পবিত্র হজ পালন করেছেন হজযাত্রীরা। এসময় হাজিদের কেউই চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। তাঁরা নিজেদের আত্মশুদ্ধি ও পাপমুক্তির আকুল বাসনার পাশাপাশি মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনায় মহান আল্লাহর কাছে অঝোরে কেঁদে বুক ভাসিয়েছেন। নামাজ আদায় করার পাশাপাশি অন্যান্য ইবাদত বন্দেগিতে মশগুল থেকেছেন।
মহান আল্লাহর অশেষ রহমত ও নৈকট্য লাভের আশায় সার্বক্ষণিক জিকির করেছেন। প্রায় সারাক্ষণ তালবিয়া পড়েছেন। আল্লাহ তায়ালার আনুগত্য প্রকাশ করছেন।
এর আগে, পবিত্র হজ পালনের জন্য মহান আল্লাহর দরবারে হাজিরা দিতে সৌদি আরবে আসা বিশ্বের ২৫ লাখ মুসল্লি হজের দ্বিতীয় রুকন আদায়ের জন্য সোমবার সূর্যোদয়ের পর মিনা থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে আরাফাতের ময়দানে সমবেত হন। সূর্যাস্ত পর্যন্ত এই ময়দানেই অবস্থান করেন তাঁরা। আরাফাতের দিনকে মনে করা হয় বছরের শ্রেষ্ঠ দিন। এদিন মহান আল্লাহ বান্দাদের পাপ মাফ করে দেন।
করোনা মহামারি পেছনে ফেলে এবার হজ আবার আগের রূপে ফিরে এসেছে। বলা হচ্ছে, এবারের হজে সবচেয়ে বেশি মুসল্লি এসেছেন। এই সংখ্যা ২৬ লাখেরও বেশি।
ঐতিহাসিক আরাফাত ময়দানের তিন দিকে জাবাল বা পাহাড়। এই পাহাড়ের নাম রহমতের পাহাড় (জাবালে রহমত)। দোয়া কবুলের স্থান হওয়ায় কোনো কোনো হজযাত্রী জাবালে রহমত পাহাড়ে উঠেও ইবাদত বন্দেগিতে মশগুল ছিলেন। কোনো কোনো হজযাত্রী আরাফাত ময়দানে যাঁর যাঁর মতো সুবিধাজনক জায়গা বেছে ইবাদত বন্দেগী করেছেন। আরাফাত ময়দানে একটি উঁচু পিলার রয়েছে। এই পিলারটিও দোয়া কবুলের স্থান। আদি পিতা হজরত আদম (আ.) এবং আদি মা হাওয়া (আ.) আরাফাতের ময়দানে এসে পুনর্মিলনের সুযোগ পেয়েছিলেন। এ জন্য তাঁরা এই ময়দানেই মহান আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ছিলেন।
পাকিস্তানের ২৬ বছর বয়সী শিক্ষার্থী উসমান আরশাদ ৬ মাস হেঁটে এবার পবিত্র হজে এসেছেন। আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত হতে পেরে বাকরুদ্ধ তিনি। আর মিশরীয় ব্যবসায়ী ইয়াহিয়া আল ঘানামের আবেগ যেন হৃদয় ছোঁয়া। তিনি চোখের পানি সংবরণ করতে পারছেন না কিছুতেই। বললেন, পবিত্র হজে এসে গত ১৫ দিনে আমি দৈনিক এক ঘণ্টার বেশি ঘুমাইনি।
আরাফাত ময়দানের মসজিদে নামিরা থেকে জোহরের নামাজের আগে মিম্বরে দাঁড়িয়ে আরবি ভাষায় হজের খুতবা পাঠ করা হয়। এবার খুতবা দিয়েছেন শায়খ ড. ইউসুফ বিন মোহাম্মদ। তিনি নামাজেও ইমামতি করেছেন। হজের খুতবা বাংলাসহ প্রায় ১৪টি ভাষায় অনুবাদ করে শুনানো হয়েছে।
খুতবার পর মসজিদে নামিরায় সমবেত মুসলমানরা এক আজান এবং দুই ইকামতে জোহর ও আছরের নামাজ এক সঙ্গে জামাতে আদায় করেন। মসজিদে নামিরা থেকে দূরে অবস্থান করা হজযাত্রীরা জোহর এবং আছরের নামাজ আলাদাভাবে আদায় করেন নিজেদের তাঁবুতে।
তাঁরা সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্তের পর কিছু সময় পর্যন্ত অবস্থান করেন আরাফাতের ময়দানে। সূর্য অস্ত যাওয়ার কিছু সময় পরে মাগরিবের নামাজ আদায় না করেই আরাফাত ময়দান থেকে হজযাত্রীরা প্রায় আট কিলোমিটার দূরে মুজদালিফার উদ্দেশে রওয়ানা দেন। মুজদালিফায় গিয়ে এশার নামাজের সময় এক সঙ্গে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করেন। পরে সেখানেই খোলা আকাশের নীচে বিস্তীর্ণ খোলা মাঠে রাত যাপন করেন তাঁরা। রাতে প্রতীকী শয়তানের উদ্দেশে নিক্ষেপের জন্য সংগ্রহ করেন ৭০টি পাথর।
আরাফাত ময়দানে আসার আগে হজযাত্রীরা গত ৮ জিলহজ পবিত্র হজ পালনের প্রথম আনুষ্ঠানিকতার অংশ হিসেবে দু’দিকে পাহাড় পরিবেষ্টিত এলাকা মিনায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত তাঁবুতে অবস্থান করেন। হজযাত্রীদের মধ্যে পুরুষরা হজের প্রথম রুকন ইহরাম (শরীরের নিচের অংশে আড়াই হাত বহরের আড়াই গজের এক টুকরা কাপড় আর গায়ে জড়িয়ে নেওয়ার জন্য একই বহরের তিন গজের এক টুকরা সাদা রংয়ের সেলাইবিহীন কাপড়) পরিধান অবস্থায় রয়েছেন। নারীরা আছেন পর্দায় আচ্ছাদিত। তাঁরা আগামী ১২ জিলহজ পর্যন্ত মিনা ও মক্কায় অবস্থান করবেন।
বুধবার ফজরের নামাজ আদায়ের পর সূর্যোদয়ের আগে কিছু সময় অবশ্যই মুজদালিফায় অবস্থান করবেন হাজিরা। এরপর তাঁরা যাবেন মিনায়। সেখানে মিনার জামারায় (শয়তানের উদ্দেশে পাথর ছোঁড়ার স্থান) বড় শয়তানের উদ্দেশে প্রতীকী সাতটি পাথর নিক্ষেপ শেষে পশু কোরবানি এবং রাসুলুল্লাহর (সা.) আদর্শ অনুসরণে পুরুষরা মাথা মুণ্ডন করে গোসল করবেন। নারীরা চুলের অগ্রভাগ থেকে প্রায় এক ইঞ্চি পরিমাণ চুল কাটবেন। এরপর হাজীরা সেলাইবিহীন ইহরাম খুলে ফেলবেন এবং পশু কোরবানি দেবেন। পরে তাঁরা হজের তৃতীয় অর্থাৎ শেষ রুকন আদায়ের জন্য মিনা থেকে মক্কায় গিয়ে সুবহে সাদিকের পর থেকে কাবা শরীফ তাওয়াফ করবেন।
কাবা শরীফের সামনের দুই পাহাড় সাফা ও মারওয়ায় সাতবার ‘সাঈ’ (দৌড়ানো) করবেন। সেখান থেকে তাঁরা আবার ফিরে যাবেন মিনায়, নিজেদের তাঁবুতে। হজযাত্রীরা ১১ জিলহজ আবার মিনার জামারায় গিয়ে জোহরের নামাজের পর থেকে পর্যায়ক্রমে ছোট, মধ্যম ও বড় শয়তানকে সাতটি করে ২১টি পাথর নিক্ষেপ করবেন। একইভাবে ১২ জিলহজ আবারও ছোট, মধ্যম ও বড় শয়তানকে ২১টি পাথর নিক্ষেপের পর সন্ধ্যার আগে তাঁরা মিনা ত্যাগ করবেন। পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে সৌদি আরবের হিজরি বর্ষপঞ্জী অনুযায়ী ১০ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত যে কোনো সময়ে কাবা শরীফকে ফরজ তাওয়াফের মধ্য দিয়ে।
অনলাইন ডেস্ক :
বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ হরমুজ প্রণালি বন্ধে প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছে ইরানের পার্লামেন্ট। আজ ২২ জুন রবিবার পার্লামেন্টে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এটি এখনো চূড়ান্ত নয়, কারণ বিষয়টি এখন ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বিবেচনার অপেক্ষায় রয়েছে। খবর জানিয়েছে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম প্রেস টিভি।
বিশ্বের মোট জ্বালানি তেলের প্রায় ২০ শতাংশ হরমুজ প্রণালি দিয়েই পরিবাহিত হয়। তাই এই পথটি বন্ধ হলে বৈশ্বিক জ্বালানি সরবরাহে বড় ধরনের সংকট দেখা দিতে পারে।
পার্লামেন্ট সদস্য ও ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) জ্যেষ্ঠ কমান্ডার এসমাইল কোসারি ইয়াং জার্নালিস্ট ক্লাবকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, বিষয়টি এখন আলোচনা পর্যায়ে রয়েছে এবং ‘প্রয়োজন পড়লে কার্যকর করা হবে’।
এ সিদ্ধান্ত আসে এমন এক সময়ে, যখন ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর যুক্তরাষ্ট্র সামরিক অভিযান চালিয়েছে। শনিবার গভীর রাতে চালানো ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’ নামক অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ইরানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় “ব্যাপক ধ্বংস” সাধিত হয়েছে।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা জেনারেল ড্যান কেইন জানিয়েছেন, এই অভিযান ছিল ‘প্রতিরোধমূলক ও সুনির্দিষ্ট’। এরই জবাবে ইরান সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া হিসেবে হরমুজ প্রণালি বন্ধের পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অনলাইন ডেস্ক :
ঐতিহাসিক মালাক্কা প্রদেশে অবস্থিত মালাকা ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড সেন্টারে তিন দিনব্যাপী হালাল ফেস্টিভালে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ। চলমান এ আসরে খাদ্য ও পানীয়, হালাল ফ্যাশন, হালাল ট্যুরিজমসহ মোট ৯টি ক্লাস্টারে ২৫০ টি বুথের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের ১০টি দেশ এই মেলায় অংশগ্রহণ করেছে। মালাক্কা প্রাদেশিক সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় মালাকা ইসলামিক রিলিজিওন কাউন্সিল প্রথমবারের মতো এই মেলার আয়োজন করে।
আজ ২১ ডিসেম্বর এ মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মালাক্কা প্রদেশের মূখ্যমন্ত্রী ওয়াইএবি দাতুক সেরি উতামা এবি রউফ বিন ইউসুহ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আয়োজকদের বিশেষ আমন্ত্রণে যোগদান করেন মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো: শামীম আহসান।
এছাড়া অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন মালাক্কার প্রাক্তন মূখ্যমন্ত্রী ওয়াইবি দাতুক সুলাইমান মো: আলী, প্রাদেশিক আইনসভার স্পিকার ওয়াইবি দাতুক ওয়াইরা ইব্রাহিম দুরুম, শিক্ষা ও ধর্ম বিষয়ক প্রাদেশিক এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল ওয়াইবি দাতুক সেরি উতামা রহমান বিন মারিমান এবং মালাক্কা প্রাদেশিক সরকারের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
মেলায় বাংলাদেশ হাইকমিশন, কুয়ালালামপুর এর সহযোগিতায় বরাদ্দকৃত বুথে বাংলাদেশের বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠান “মৈত্রী” এই মেলায় অংশগ্রহণ করে এবং তাদের বিভিন্ন ধরণের খাদ্য ও পানীয় পণ্যসামগ্রী প্রদর্শনী করে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে অন্যান্য স্টলের পাশাপাশি বাংলাদেশের স্টল পরিদর্শন করেন মালাক্কা প্রদেশের মূখ্যমন্ত্রী ওয়াইএবি দাতুক সেরি উতামা এবি রউফ বিন ইউসুহ। এ সময় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো: শামীম আহসান তাকে স্বাগত জানান এবং বাংলাদেশের রপ্তানিযোগ্য বিভিন্ন পণ্য সম্পর্কে তাকে অবহিত করে হালাল বাণিজ্য সম্প্রসারণে তার সহযোগিতা প্রত্যাশী করেন।
পরিদর্শনশেষে মূখ্যমন্ত্রীকে পাটের তৈরী ব্যাগে বাংলাদেশী বিভিন্ন খাদ্য ও পানীয় সামগ্রী প্রদান করা হয়। এসময় অন্যান্য অতিথিবৃন্দসহ বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রথম সচিব (বাণিজ্যিক) প্রণব কুমার ঘোষ ও প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) রেহানা পারভীন এবং অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, মালয়েশিয়া তথা আসিয়ান অঞ্চলে বাংলাদেশের বিভিন্ন পণ্য ও সেবাকে পরিচিত করার লক্ষ্যে হাইকমিশন নিয়মিত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মেলায় অংশগ্রহণ করে আসছে এবং ২০২৪ সালে এখন পর্যন্ত ১০টি আন্তর্জাতিক মেলায় অংশগ্রহণ করেছে।
অনলাইন ডেস্ক :
গ্রিসের নবনিযুক্ত মাইগ্রেশন ও আশ্রয় বিষয়ক মন্ত্রী থানোস প্লেভরিস সাথে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নাহিদা রহমান সুমনা এক সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। এথেন্সে মন্ত্রীর কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। রাষ্ট্রদূত নাহিদা রহমান সুমনা গ্রিক মন্ত্রী থানোস প্লেভরিসকে তার নতুন দায়িত্ব পালনের জন্য আন্তরিক শুভেচ্ছা ও সফলতার কামনা জানান।
বৈঠকে গ্রিসের নতুন অভিবাসন নীতিমালা, বাংলাদেশি অভিবাসীদের সুযোগ-সুবিধা এবং অভিবাসন ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়। রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের কর্মীদের গ্রিসের কৃষি ও অন্যান্য খাতে অবদানের কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের শ্রমিকরা গ্রিসের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন।
মন্ত্রী থানোস প্লেভরিস বাংলাদেশি কমিউনিটির নিষ্ঠা ও পরিশ্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি জানান, বাংলাদেশি কর্মীরা গ্রিসের বিভিন্ন অর্থনৈতিক খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।
দুই দেশের মধ্যে অভিবাসন ব্যবস্থাপনায় পারস্পরিক সহযোগিতা আরো জোরদার করতে উভয়পক্ষ সম্মত হন। অভিবাসী শ্রমিকদের কল্যাণ নিশ্চিত করার বিষয়ে তারা একমত হন।
অনলাইন ডেস্ক :
ইসরাইলের চলমান নৃশংস হামলায় গাজা উপত্যকায় আরো প্রায় ৫৬জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে শুধু উত্তর গাজায় মধ্যরাতের পর থেকে ইসরাইলি বাহিনীর ব্যাপক বোমা হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫০ জন। দক্ষিণ গাজার ইউরোপীয় ও নাসের হাসপাতালের ওপর চালানো পৃথক হামলায় নিহত হয়েছেন আরো ৩০ জন।
আলজাজিরার খবরে উল্লেখ করা হয়েছে, হাসপাতালগুলোতে হামলার কয়েক ঘণ্টা পরই উত্তর গাজায় শুরু হয় এই নতুন দফার হামলা।
আলজাজিরা আরো জানায়, দক্ষিণ গাজার দুটি হাসপাতাল—ইউরোপীয় ও নাসের—লক্ষ করে চালানো বোমা হামলায় অন্তত ৩০ জন প্রাণ হারান। নিহতদের মধ্যে একজন সাংবাদিকও ছিলেন, যিনি চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন।
স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকদের বরাতে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া হামলায় কেবল উত্তর গাজায় ৫০ জন নিহত হয়েছেন।
গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরাইলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৫২ হাজার ৯০৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও এক লাখ ১৯ হাজার ৭২১ জন।
প্রায় ১৫ মাস ধরে চলা সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক মহলের চাপে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি ইসরাইল গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। এরপর প্রায় দুই মাস অপেক্ষাকৃত শান্ত থাকলেও, হামাসের সঙ্গে মতানৈক্যের জেরে মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে আবারও গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরাইল।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ১৮ মার্চ থেকে শুরু হওয়া এই নতুন দফার হামলায় এখন পর্যন্ত আরও ২ হাজার ৭৮০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ৭ হাজার ৭০০ জন আহত হয়েছেন। এই হামলার মাধ্যমে ইসরাইল চলতি বছরের জানুয়ারিতে স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতির চুক্তি ভেঙেছে।
জাতিসংঘের মতে, ইসরাইলি আগ্রাসনের ফলে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুহারা হয়েছেন। পাশাপাশি, অবরুদ্ধ এই উপত্যকার অধিকাংশ অবকাঠামো সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।