হাকিকুল ইসলাম খোকন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে :
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধ ও খনিজ উপাদান হস্তান্তর সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য ওয়াশিংটন সফরে গিয়েছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে বৈঠকেই বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ওয়াশিংটন থেকে কোনো প্রকার চুক্তি স্বাক্ষর না করেই ফিরে গেছেন জেলেনস্কি।
২৮ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তাদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। এই বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল, ইউক্রেনের খনিজ সম্পদে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে একটি চুক্তি সই করা, শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়নি।
রাশিয়ার সাথে চলমান যুদ্ধে ইউক্রেন কয়েকশো কোটি ডলারের অস্ত্র ও অর্থ সহায়তা পেয়েছে, কিন্তু ২০ জানুয়ারি ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর পরিস্থিতি পাল্টে যায়। ট্রাম্প জেলেনস্কির বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য দোষারোপ করতে শুরু করেন। তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে সমালোচনা করে বলেন, তাকে শান্তি আলোচনা শুরু করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
এ উত্তেজনার কারণে পূর্বনির্ধারিত সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত না হয়ে শেষ পর্যন্ত হোয়াইট হাউস থেকে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বের হয়ে যান। ঘটনা পরিক্রমায়, দুই দেশের সম্পর্ক এবং বৈঠকের ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এবং পরিস্থিতি বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন অজানা দিক উন্মোচন করেছে।
এর আগে, সাংবাদিকদের সামনে এই বৈঠকে জেলেনস্কিকে একের পর আক্রমণ করে বক্তব্য দেন ট্রাম্প। জেলেনস্কি ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে জুয়া খেলছেন’ বলে অভিযোগ করে ট্রাম্প বলেন, আপনার দেশের মানুষ খুবই সাহসী; কিন্তু আপনাকে হয় (রাশিয়ার সাথে) একটি চুক্তি করতে হবে না হলে আমরা আর আপনাদের সাথে নেই। আর আমরা যদি না থাকি তাহলে আপনাকে একা লড়তে হবে।
ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে মতপার্থক্য একসময় চিৎকার-চ্যাঁচামেচির পর্যায়ে চলে যায়। ‘জেলেনস্কি যুদ্ধে হেরে যাচ্ছেন’ দাবি করে ট্রাম্প বলেন, মানুষ মারা পড়ছে। যুদ্ধের জন্য সেনার সংখ্যাও কমছে ক্রমশ। আপনার হাতে কার্ড (বিকল্প) নেই। একবার আমরা চুক্তি সই করলে আপনি ভালো অবস্থানে চলে যাবেন। কিন্তু আপনাকে আদৌ কৃতজ্ঞ মনে হচ্ছে না। সত্যি কথা বলতে কি এটা ভালো কোনো বিষয় নয়।
বৈঠকের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে বলেন, হোয়াইট হাউসে আজ (শুক্রবার) অর্থবহ মিটিং করেছি। এতো চাপ ও উত্তেজনার মধ্যে এমন কিছু শেখা গেছে, যা কথা না বললে কখনো বোঝা যেত না। আবেগের মধ্য দিয়ে যা বেরিয়ে আসে তা আশ্চর্যজনক, আমি স্থির হয়েছি যে জেলেনস্কি শান্তির জন্য প্রস্তুত না। এতে যদি আমেরিকা যুক্ত থাকে, কারণ তিনি মনে করেন আমাদের যুক্ত থাকার ফলে আলোচনায় তার একটা বড় সুবিধা হবে। আমি সুবিধা চাই না, শান্তি চাই।
ডোনাল্ড ট্রাম্প আরো বলেন, তিনি (জেলেনস্কি) যখন শান্তির জন্য প্রস্তুত হবেন, তখন তিনি আসতে পারেন। তিনি প্রিয় ওভাল অফিসে যুক্তরাষ্ট্রকে অসম্মান করেছেন।
বৈঠকের শুরুতে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের বিষয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন ইউক্রেনের সামরিক কর্মকর্তারা। যখন তাদের বাদানুবাদ চলছিল, তখন বৈঠকে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূতকে মাথায় হাত অবস্থায় দেখা গেছে।
অনলাইন ডেস্ক :
দ্বিতীয় মেয়াদে আজ ২০ জানুয়ারি সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিনেই যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ব্যবস্থার ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। নির্বাচনী প্রচারণার সময় দেওয়া এই মূল প্রতিশ্রুতিটি দ্রুত পূরণ করার অঙ্গীকার করেছেন ট্রাম্প।
ক্ষমতা গ্রহণের একদিন আগে রবিবার ওয়াশিংটনে এক সমাবেশে ডোনাল্ড ট্রাম্প হাজার হাজার সমর্থকের উদ্দেশে এ কথা জানান।
ক্যাপিটাল ওয়ান এরিনাতে আয়োজিত ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ বিজয় সমাবেশে সমবেতদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, “কাল (সোমবার) সূর্যাস্তের সময় থেকে আমাদের দেশে অনুপ্রবেশ থামবে।”
নির্বাচনী প্রচার চলার সময় ট্রাম্প বারবারই বলেছেন, প্রেসিডেন্ট হলে তিনি অবৈধ অভিবাসীদের বিতাড়িত করতে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন তৎপরতা শুরু করবেন। এই পদক্ষেপের আওতায় লাখ লাখ অবৈধ অভিবাসীকে বিতাড়িত করা হবে।
ট্রাম্প বলেন, “এটা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক আন্দোলন। ৭৫ দিন আগে, আমরা ঐতিহাসিক রাজনৈতিক বিজয় অর্জন করেছি। আমাদের দেশ কখনও এমনটা দেখেনি। সোমবার থেকে, আমি ঐতিহাসিক শক্তি প্রয়োগ করে ব্যবস্থা নেব এবং আমাদের দেশের প্রতিটি সংকটের সমাধান করব।”
২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি পর এটি ওয়াশিংটনে দেওয়া ট্রাম্পের প্রথম বড় ভাষণ। ওই ভাষণের পর ট্রাম্পের সমর্থকেরা ক্যাপিটল হিলে হামলা চালাতে উদ্বুদ্ধ হয়েছিল। এবার ট্রাম্প বলেছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিলে ক্যাপিটল হিলে হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত দেড় হাজারের বেশি মানুষকে ক্ষমা করে দেবেন।
আজ সোমবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ভাষণ দেবেন ট্রাম্প। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প কী কী পরিকল্পনা করছেন, তার আভাস তিনি ওই ভাষণে দেবেন বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্র: রয়টার্স
অনলাইন ডেস্ক :
বিদ্রোহী যোদ্ধাদের আক্রমণের মুখে ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক ছেড়েছেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। তার দেশ ছাড়ার পর দেশটির প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জালালি বলেছেন, জনগণের দ্বারা নির্বাচিত যেকোনো নেতৃত্বকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। আজ ৮ ডিসেম্বর রবিবার এসব কথা বলেন তিনি। খবর-আল জাজিরার
তিনি জানান, নিজের বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার কোন পরিকল্পনা নেই তার। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সচল রাখতে কাজ করবেন।
প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জালালি আরও বলেন, এই দেশটি একটি স্বাভাবিক দেশ হতে পারে যেটি তার প্রতিবেশী এবং বিশ্বের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করে। তবে এটি সিরিয়ার জনগণের দ্বারা নির্বাচিত যেকোনো নেতৃত্বের ওপর নির্ভর করে। আমরা এটিকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত এবং সম্ভাব্য সব ধরনের প্রস্তাব দিতে প্রস্তুত। এসময় জনগণকে সরকারি সম্পত্তি রক্ষার আহ্বানও জানান তিনি।
এদিকে বিদ্রোহী দলের প্রধান জানিয়েছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর না হওয়া পর্যন্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো প্রধানমন্ত্রীর অধীনে থাকবে।
সিরিয়ার বিরোধী গোষ্ঠীগুলো সংক্ষিপ্ত এক বিবৃতিতে বলছে, ‘আমাদের বাহিনী রাজধানী দামেস্কে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। আমরা সেদনায়া কারাগারে অত্যাচারের যুগের সমাপ্তি ঘোষণা করছি। এই কারাগারের সব বন্দীদের মুক্ত করে দিয়েছি।’
অনলাইন ডেস্ক :
সময়ের সাথে সাথে প্রযুক্তি জগতে নতুন এক দিগন্তের পথে এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্ব। এবার সেই যাত্রায় বড় পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে চীন। দেশটি আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে ৬G নেটওয়ার্ক চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছে। চীনের শীর্ষ প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা এ তথ্য জানিয়েছেন।
চলমান ‘গ্লোবাল ৬জি কনফারেন্স ২০২৫’-এ বৃহস্পতিবার চায়না ইঞ্জিনিয়ারিং একাডেমির বিশিষ্ট বিশেষজ্ঞ উ হ্য ছুয়ান এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ৬জি শুধু আগের প্রজন্মের চেয়ে দ্রুতগতির নেটওয়ার্ক নয়, এটি একটি প্রযুক্তিগত বিপ্লব।
বিশেষজ্ঞরা জানান, ১জি থেকে ৪জি পর্যন্ত প্রযুক্তির ব্যবহার সীমাবদ্ধ ছিল কেবল ভয়েস ও ডেটা সেবার মধ্যে। পরে ৫জি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পর্যায়ে ব্যবহৃত হতে শুরু করলেও প্রত্যাশিত হারে শিল্প খাতে অগ্রগতি আসেনি। সে অভিজ্ঞতা থেকেই ৬জি নিয়ে গড়ে উঠছে নতুন প্রত্যাশা ও চ্যালেঞ্জ।
উ হ্য ছুয়ান বলেন, আগামী প্রজন্মের স্মার্টফোন হবে সম্পূর্ণ এআই-চালিত, যেগুলো শুধু কনটেন্ট ব্যবহারে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং ব্যবহারকারীদের আরো দ্রুত ও সহজে কনটেন্ট তৈরি করতেও সক্ষম করে তুলবে।
চীনের বিজ্ঞান একাডেমির সদস্য এবং পারপল মাউন্টেন ল্যাবরেটরিজের পরিচালক ইয়ু সিয়াওহু জানান, ৬জি প্রযুক্তি শুধু উচ্চগতির ইন্টারনেট নয়, বরং এটি সেন্সিং এবং স্বল্প উচ্চতার কমিউনিকেশন সিস্টেমসহ নতুন প্রযুক্তির যুগের সূচনা করবে।
তিনি আরও বলেন, ৬জি যুগে যোগাযোগ, কম্পিউটিং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল কন্ট্রোল একত্র হয়ে গড়ে তুলবে একটি সুপার-কনভার্জড প্রযুক্তি ব্যবস্থা।
চীনের চিয়াংসু প্রদেশের নানচিং শহরে শুরু হওয়া এই গ্লোবাল ৬জি কনফারেন্স চলবে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত। এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য বিষয়— ‘ফ্রন্টিয়ার ইনোভেশন ড্রাইভিং ৬জি ডেভেলপমেন্ট’। সূত্র: সিজিটিএন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
টানা কয়েকদিন সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের পর মিয়ানমারের কাওলিন শহরের দখল নিয়েছে জান্তাবিরোধী বিদ্রোহীরা। গত সোমবার কাওলিনের নিয়ন্ত্রণ বিদ্রোহীদের হাতে ছেড়ে দিয়ে সেনা বাহিনী পিছু হটেছে বলে রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছে দেশটির জান্তাবিরোধী রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠীগুলোর জোট ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (নাগ)।
মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ সাগাইংয়ে অবস্থিত কাওলিন কৌশলগত দিক থেকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি শহর। কারণ কাওলিন জেলার সামরিক প্রশাসনিক কার্যালয়ের সদর দপ্তরের অবস্থান এই শহরে। প্রায় ২৫ হাজার মানুষ বসবাস করেন কাওলিনে।
যেহেতু জেলার সামরিক প্রশানিক কার্যালয়ের শহর কাওলিনে, তাই এই শহরটির দখল করা মানে এক অর্থে পুরো কাওলিন জেলার নিয়ন্ত্রণ নেওয়া।
মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী রাজনৈতিক জোট ‘নাগ’ একই সঙ্গে নিজেকে দেশটির ছায়া সরকার বলেও দাবি করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক বার্তায় নাগের প্রধানমন্ত্রী মান উইন খাইং থান বলেন, ‘জেলা শহর কাওলিন এখন আমাদের দখলে। কী যুগান্তকারী একটি বিজয়!’
এক্সে একটি ভিডিওচিত্রও পোস্ট করেছেন খাইং থান। সেখানে দেখা গেছে— কাওলিন সামরিক প্রশাসনিক কার্যালয়ের সেনা সদস্যরা কার্যালয়ের সামনে বিদ্রোহী জোট নাগের পতাকা উত্তোলন করছেন।
এ ব্যাপারে আরো বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে জান্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। তবে কোনো কর্মকর্তা মুখ খুলতে রাজি হননি।
কাওলিন শহরের ২৮ বছর বয়সী এক বাসিন্দা নিরাপত্তাজনিত কারণে নিজের নাম প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকে জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে এবং এই সংঘর্ষের আঁচ থেকে আত্মরক্ষা করতে কাওলিনের অধিকাংশ মানুষ শহর ছেড়ে পালিয়েছেন।
‘শহরে আর কোনো নিরাপদ স্থান নেই। প্রায় সবাই নিজের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে’, বলেছেন সেই বাসিন্দা।
২০২০ সালের জাতীয় নির্বাচনে ভূমিধস বিজয় পেয়ে সরকার গঠন করেছিল মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। কিন্তু সেই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেই সরকারকে হটিয়ে জাতীয় ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। দেশটির তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং সেই অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
ক্ষমতা দখলের পর বন্দি করা হয় এনএলডির শীর্ষ নেত্রী অং সান সু চিসহ দলটির অধিকাংশ উচ্চ ও ও মাঝারি পর্যায়ের নেতা ও আইনপ্রণেতাদের। এখনও তারা কারাগারে রয়েছেন।
মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী জনগণ অবশ্য সামরিক বাহিনীর এ পদক্ষেপ একেবারেই মেনে নেয়নি। বাহিনী ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই রাজধানী নেইপিদো, প্রধান শহর ও বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনসহ দেশটির ছোট-বড় বিভিন্ন শহরে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভের শুরুর দিকে শান্তিপূর্ণভাবে তা দমনের চেষ্টা করলেও একসময় বিক্ষোভ দমন করতে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেয় জান্তা।
নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে হাজারেরও অধিক মানুষের মৃত্যু হয়। এক পর্যায়ে গণতন্ত্রপন্থীরা জান্তাবিরোধী রাজনৈতিক দল ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোতে যোগ দিতে থাকেন, গঠিত হয় ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট বা নাগ।
বেলজিয়ামভিত্তিক থিংকট্যাংক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের মিয়ানমার বিষয়ক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা রিচার্ড হোরসি অবশ্য মনে করছেন নাগ বেশিদিন এই শহর দখলে রাখতে পারবে না।
‘মিয়ানমারের যে বাস্তবতা, তাতে কোনো বিদ্রোহী গোষ্ঠীর পক্ষে পার্বত্য অঞ্চলের কোনো প্রাদেশিক শহর দখল করে নেওয়া তেমন কঠিন নয়; তবে দীর্ঘসময় ধরে তা দখলে রাখা খুব কঠিন।’ সূত্র : রয়টার্স
চলারপথে রিপোর্ট :
সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেছেন বাংলাদেশের হাফেজ আনাস বিন আতিক। বিশ্বের ১২৩টি দেশের প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে তিনি প্রথম হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন। গত বুধবার রাতে বাংলাদেশ সময় ৯টায় প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে বলে বিশ্বজয়ী হাফেজ আনাস বিন আতিকের বাবা হাফেজ মাওলানা আতিকুর রহমান জানিয়েছেন।
ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে অবস্থিত ‘মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার’ ছাত্র হাফেজ আনাস বিন আতিক ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের লোপাড়া গ্রামের হাফেজ মাওলানা আতিকুর রহমানের একমাত্র ছেলে।
হাফেজ আনাসের বাবা হাফেজ মাওলানা আতিকুর রহমান ঢাকার লালবাগ মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরে একটি প্রাইভেট মাদ্রাসা পরিচালনা করছেন। পারিবারিকভাবে ৪ সন্তানের মধ্যে হাফেজ আনাস তার একমাত্র পুত্রসন্তান।
মেধাবী হাফেজ আনাস ইতোপূর্বে আরটিভিতে অনুষ্ঠিত হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায়ও প্রথম হওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেন। আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় হাফেজ আনাস বিন আতিক প্রথমস্থান অর্জন করার খবরে এলাকাবাসীর মাঝে আনন্দ বিরাজ করছে। হাফেজ আনাসের এ অসাধারণ সাফল্য অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুলে ধরে তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে বিশ্বজয়ী হাফেজ আনাসের বাবা হাফেজ মাওলানা আতিকুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে আবেগাপ্লুত কন্ঠে তিনি বলেন, সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত কুরআন প্রতিযোগিতায় বিশ্বের ১২৩টি দেশের প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে আমার ছেলে হাফেজ আনাস প্রথম হওয়ায় মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। গতকাল রাতে ফলাফল ঘোষণার পর আমরা খবরটি জানতে পেরেছি। বর্তমানে হাফেজ আনাস তার ওস্থাদদের সঙ্গে সৌদি আরব অবস্থান করছে। আল্লাহর রহমতে শিগগিরই তারা দেশে ফিরবে বলে আশা করছি।
তিনি বলেন, আমার ছেলে আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করে বিশ্ব দরবারে দেশের সুনাম অর্জন করায় আমি আনন্দিত। দেশবাসীর কাছে তিনি তার ছেলের জন্য দোয়া কামনা করেছেন।