হাকিকুল ইসলাম খোকন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে :
যুক্তরাস্ট্রের নিউইয়র্কের ব্রুকলীনের ওমর রেস্টুরেন্টে গত ১৮ মার্চ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হেলাল উদ্দীনের সভাপতিত্বে এবং শরিফ হোসেন নিরব ও কবির হোসেনের যৌথ সঞ্চালনায় ‘চাটখিল উপজেলা সোসাইটি ইউএসএ-এর আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং ইফতার ও দোয়ার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন -নোয়াখালী সোসাইটির সভাপতি নাজমুল হাসান মানিক।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লক্ষীপুর সোসাইটির সভাপতি লিয়াকত আলী,এসএম রহমত উল্ল্যাহ, হুমায়ন কবির ও লিয়াকত হোসেন মামুন।
আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে ছিলেন-হাজী আনোয়ার হোসেন লিটন,আবুল কাশেম,হারুনুর রশীদ বাবুল,নিজাম উদ্দীন,নুর নবী চৌধুরী।
প্রধান বক্তা ছিলেন-মাঈন উদ্দীন নটু ।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন-রিয়াজ উদ্দীন চৌধুরী ।
এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন চাটখিল উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার গণ্যমান্য অনেক
ব্যক্তিবর্গ ।
ইফতার মাহফিলে সকলের উপস্থিতিতে চাটখিল উপজেলা সোসাইটি ইউএসএ-এর আহবায়ক কমিটির করেন হুমায়ন কবির,লিয়াকত হোসেন মামুন এবং মাঈন উদ্দিন নটু।
সভায় সর্ব সম্মতিক্রমে হেলাল উদ্দিনকে আহবায়ক এবং শরিফ হোসেন নিরবকে সদস্য সচিব করে ৮১ সদস্য বিশিষ্ট একটি শক্তিশালী আহবায়ক কমিটি নাম ঘোষণা করেন।
কমিটির কর্মকর্তারা হলেন আহবায়ক হেলাল উদ্দিন, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আহবায়ক, নূর আলম সেলিম, যুগ্ম আহবায়ক ফারুক খান, নোমান সিদ্দিকী. হুমায়ুন বাঙ্গালী,আবিদ হোসেন মাসুদ,নূর জালাল স্বপন, মাসুদ রানা, মোঃ জাহাঙ্গীর, শফিকুল ইসলাম, রাশেদুল আলম,সাইফুল ইসলাম ও শাওন শুভ,সদস্য সচিব শরিফ হোসেন নিরব, যুগ্ম সদস্য সচিব, কবির হোসেন,সরাজ ইসলাম জাকির হোসেন জুপিটার ,সদস্য রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী, শাহজাহান ভূইয়া মিলন, আবু হানিফ, শওকত আকবর, এম এইচ রনি, ইসমাইল হোসেন, বিকাশ চন্দ্র দে ভুট্টো, গোলাম গউস রুবেল, মাহামুদুল মুরাদ, নাজমুল হুদা জর্জ, শাহাদাত হোসেন সুজন, শামসুল ইসলাম মিয়া তরুন, মোঃ মহসীন, ওমর ফারুক পলাশ, শিহাব বিন ওযাসেফ, মনজুর আলম মঞ্জ,আব্দুর রহিম, আলাউদ্দিন তরফদার, ইসমাইল হোসেন পলাশ, শাহরিযার আলম হিমেল, সামছুল আলম, আমিন উল্লাহ, মহিন উদ্দিন মামুন, মিঠু চৌধুরী লিটন, বিপ্লব খন্দকার, আসিফ মাহমুদ,নূর হোসেন, তানভীর হাসান রাজীব, আব্দুর রহমান, মোঃ সোহাগ, রাজীব হোসেন, জহিরুল ইসলাম সোহাগ,শওকত আলী,আব্দুল কাদের খোকন, মাকসুদুর রহমান কিরন, আব্দুল বাছেদ কাকন, আরিফে হোসেন,ওমর ফারুক শরীফ, আশরাফ উদ্দিন ফয়সাল, ইব্রাহিম খলিল, আবু বক্কর ছিদ্দিক, মোঃ রতন, কাজী জুয়েল, ফাহাদ হোসেন, মোহাম্মদ মিলন, ইয়াসিন আরাফাত রাফি, রিযাদ হোসেন, সজীব আহাম্মেদ, আনসার উ্দ্দিন জাবেদ, মাহবুব আলম, নুরুল হুদা, হাসান গাজী, আল আমিন, সাইফুল ইসলাম, মোজাম্মেল হোসেন সজীব, ইয়াসিন জনি, ইয়াসিন রবিন, আফজাল হোসেন পিয়াল, হাসান রতন, সাজ্জাদুল হাসান রনি, মুরাদ হোসেন, আহাম্মেদ বাবু, বাদশা ফাহাদ, মনির উদ্দিনকে নির্বাচিত করা হয়েছে।
নব নির্বাচিত আহবায়ক কমিটি পবিত্র রমযানে ইফতার ও দোয়ার মাহফিলের মাধ্যমে সোসাইটির আনুস্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করেন।নতুন আহবায়ক কমিটি উপজেলার সকলকে নিয়ে দলমত নির্বিশেষে একসংঙ্গে কাজ করার অংঙ্গীকার করেন।
ইফতার ও ডিনার শেষে হেলাল উদ্দীনের সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে অনুস্ঠানের সমাপ্তি ঘোষনা করা হয়।
হাকিকুল ইসলাম খোকন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে :
জর্জিয়া স্টেট সিনেটর হিসাবে দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নিয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নাবিলা ইসলাম। গত ৫ নভেম্বরের নির্বাচনে জর্জিয়ার ৭ম সিনেট জেলা থেকে তিনি নির্বাচিত হন। ১৬ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার নাবিলা তার স্বামী পার্কেস এবং নবজাতক ছেলে আহসানকে সঙ্গে নিয়ে শপথ গ্রহণ করেন। তিনি ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, শিশু ও পরিবার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, এবং প্রাক্তন সেনা, সামরিক ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিষয়ক সিনেট কমিটিগুলিতে মনোনীত হয়েছেন।
সিনেটর নাবিলা ইসলাম সম্প্রতি জর্জিয়া উইমেনস লেজিসলেটিভ ককাসের সহ-চেয়ার হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। নাবিলা ইসলাম একজন উদীয়মান নেত্রী এবং সমাজসেবী। তিনি জর্জিয়ার ডুলুথ একজন বাসিন্দা এবং একজন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ রাজনীতিবিদ, যিনি তার কর্মজীবন ও পারিবারিক অভিজ্ঞতার মাধ্যমে কমিউনিটির সেবা প্রদান করছেন।
নাবিলা ইসলামের জন্ম ও বেড়ে ওঠা যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী পরিবারে। তার বাবা-মা একটি উন্নত জীবন গড়ে তোলার জন্য বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হন। নাবিলা জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছেন।
নাবিলা ইসলাম ২০২০ সালে প্রথমবারের মতো জর্জিয়া রাজ্যের ৭ম সিনেট জেলা থেকে নির্বাচিত হন। তিনি অত্যন্ত প্রতিভাবান, দক্ষ এবং জনগণের সমস্যাগুলোর প্রতি আন্তরিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করছেন। তার পিতামাতার অভিবাসী জীবন থেকে তার অনুপ্রেরণা আসে, এবং তিনি সবসময় তার কণ্ঠস্বর ব্যবহার করেন কমিউনিটির উন্নতির জন্য।
শপথ গ্রহণের পর সিনেটর নাবিলা ইসলাম বলেন, একজন শ্রমজীবী অভিবাসীর কন্যা হিসেবে, আমি সবসময় আমাদের বৈচিত্রময় সম্প্রদায়গুলিকে উজ্জীবিত করতে আমার কণ্ঠস্বর ব্যবহার করব। তিনি বলেন, একজন নতুন মা হিসেবে, আমি বুঝতে পারি যে জর্জিয়ার পরিবারগুলো কী ধরণের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। আমি প্রস্তুত, যতটুকু সম্ভব, জর্জিয়াকে এমন একটি স্থানে পরিণত করতে যেখানে পরিবারগুলো সফল হতে পারে এবং শিশুরা উন্নতি করতে পারে।
অনলাইন ডেস্ক :
বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষে ফিনল্যান্ডে এক বর্ণাঢ্য বর্ষবরণ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। হেলসিঙ্কির নিকটবর্তী এসপো শহরের ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ক্যাম্পাসে ‘প্রত্যাশা’ সাংস্কৃতিক সংগঠনের আয়োজনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা মিলিত হন উৎসবে।
সহস্রাধিক অংশগ্রহণকারীর উপস্থিতিতে উৎসবটি পরিণত হয় এক টুকরো বাংলাদেশে। বৈশাখী পোশাক, আলপনা, পান্তা-ইলিশ ও দেশীয় খাবার ছাড়াও মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় মুখর ছিল সন্ধ্যা। গান, আবৃত্তি, নৃত্যে ফুটে ওঠে বাংলার ঐতিহ্য।
উপস্থিত ছিলেন ফিনল্যান্ডে বসবাসরত শতাধিক পরিচিত মুখ, যাদের প্রাণবন্ত অংশগ্রহণে উৎসব ছিল প্রাণচঞ্চল। আয়োজক সংগঠন ‘প্রত্যাশা’ জানিয়েছে, ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে বর্ষবরণ আয়োজনের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।
হাকিকুল ইসলাম খোকন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে :
“গ্রেটার সিলেট কমিউনিটি ইউকের সাউথ ওয়েলস রিজিওনের উদ্দোগে ৫২ এর ভাষা সংগ্রামের অহংকারের ৭৩ বছর তথা মহাণ শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন উপলক্ষে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার লন্ডন সময় রাত ১০টায় বৃটেনের কার্ডিফের সিরিয়ানা রেষ্টুরেন্টে ডিনারপার্টি ও অমর একুশের এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সংগঠনের সাউথ ওয়েলস রিজিওনাল কনভেনার মুজিবুর রহমান মুজিব এর সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব রকিবুর রহমান ও অর্থ সচিব এ বি রুনেল এর যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন গ্রেটার সিলেট কমিউনিটি ইউকের কেন্দ্রীয় কনভেনার কমিউনিটি লিডার মকিস মনসুর।
বিশেষ অতিথি হিসেবে গ্রেটার সিলেটের সাবেক চেয়ারপার্সন আলহাজ্ব লিয়াকত আলী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহ শাফি কাদির, সাবেক সহ সভাপতি আব্দুর রুউফ তালুকদার, আলহাজ্ব আসাদ মিয়া,ভিপি সেলিম আহমদ, আব্দুল ওয়াহিদ বাবুল, বদর উদ্দিন চৌধুরী বাবর, মফিকুল ইসলাম, ইকবাল আহমেদ, আব্দুল বাছিত বাচ্ছু, শেখ সুমন তরফদার, মৌলা আফতাব, এস এইচ রাজিব, শাহ মুন্না আহমেদ, বদরুল হক মনসুর, ও রাসেল আহমদ, সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। সভায় আাগামী ১০ ই মার্চ সোমবার সংগঠন এর পক্ষ থেকে ইফতার মাহফিল করার সীদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
এদিকে প্রচন্ড ঠান্ডা আবহাওয়া উপেক্ষা করে মাতৃভাষার টানে যথাযোগ্য মর্যাদায় ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে গনতন্ত্রের মাতৃভূমি নামে খ্যাত মাল্টি কালচারেল ও মাল্টিন্যাশনালের বৃটেনের ওয়েলস এর রাজধানী কার্ডিফের ইন্টারন্যাশনাল ম্যাদার ল্যাংগুয়েজ মনুমেন্ট তথা শহীদ মিনারে ২১ ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে ভাষা শশহীদানদের অমর স্মৃতির প্রতি পুস্পস্তবক অপনের মাধ্যমে বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন গ্রেটার সিলেট কমিউনিটি ইউকের ও সাউথ ওয়েলস রিজিওনাল নেতৃবৃন্দ।
শুরুতেই সমবেত কন্ঠে “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি এই গান পরিবেশন করা হয়েছে। এর পর এক আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ভাষা আন্দোলনের রক্তক্ষয়ী দিনটি এখন আর শুধু শোক ও বেদনার দিন নয়। জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের সব ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার এক সাবজনীন উৎসবের দিন।
একুশ আমাদের অহংকার, একুশ আমাদের আত্মপরিচয় একুশের পথ ধরেই আমরা পেয়েছি লাল বৃত্ত সবুজ পতাকা বলে উল্লেখ করে গ্রেটার সিলেট কমিউনিটি ইউকের কেন্দ্রীয় কনভেনার সিনিয়র সাংবাদিক মকিস মনসুর বলেন আমাদের ভাষা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পাবার পর অমর একুশের চেতনা আজ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে। তিনি বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি প্রদানের অব্যাহত ক্যাম্পেইনে যার যার অবস্থান থেকে সবাইকে সহযোগিতা করার আহবান জানিয়েছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
মরুর দেশ সৌদি আরবে ফুড ডেলিভারি করতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় ইসহাক সায়েদ (২১) নামে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার এক যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ ৯ এপ্রিল বুধবার সৌদি আরবের দাম্মাম শহরে স্থানীয় সময় রাত ৩টার এবং বাংলাদেশ সময় ভোরের দিকে তার মৃত্যু হয়।
নিহত ইসহাক সৌদি আরবে হাংগেরি নামক একটি ফুড ডেলিভারি কোম্পানিতে ডেলিভারি বয় হিসেবে হিসেবে কাজ করত। সে কসবা পৌর এলাকার আড়াইবাড়ি গ্রামের খোরশেদ আলমের ছেলে। নিহতের পিতা খোরশেদ আলম জানায়, সংসারের হাল ধরতে জীবিকার তাগিদে গত বছরের আগস্ট মাসে মধ্য প্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে পাঠানো তাকে। রাতে কোম্পানির ডিউটি পালন করতে মোটরসাইকেল যোগে ফুড ডেলিভারি করতে যায়। এসময় সড়কে ট্রাক চাপায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় এই রেমিটেন্স যোদ্ধা।
সকালে তাঁর মৃত্যুর সংবাদ পেয়েছি। কান্না জড়িত গলায় সন্তান হারানো পিতা সরকারের কাছে আকুল আবেদন করেন, তার সন্তানের লাশ যেন দ্রুত বাংলাদেশে ফেরত আনা হয়। সন্তানের লাশটা যেন নিজ হাতে দাফন করতে পারে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারসহ পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কসবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ছামিউল ইসলাম বলেন, নিহতের লাশ ফেরত আনার বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তর বরাবরে আবেদন করলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।
হাকিকুল ইসলাম খোকন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে :
ডেমক্র্যাটিক পার্টির জাতীয় কমিটির (ডিএনসি) ভাইস চেয়ারম্যান (Civic Engagement and Voter Participation ) পদে প্রথম মুসলমান প্রার্থী বাংলাদেশী-আমেরিকান ষ্টেট সিনেটর (জর্জিয়া) শেখ রহমান চন্দন ২৪ জানুয়ারি সাউথ ক্যারলিনায় অনুষ্ঠিত পার্টির সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরামে বলেছেন, এখনও সময় হচ্ছে নেতৃত্বে আমার মত লোকের আসার। ট্রাম্পের মত লোকেরা বারবার আসছেন এবং চলেও যাচ্ছেন। কিন্তু আমার মত বাদামি রংয়ের মানুষেরা, মুসলমানেরা কখনোই এদেশ-সমাজ থেকে চলে যাবো না। বিভিন্ন অঞ্চল ও স্টেটের নেতৃবৃন্দের তুমুল করতালির মধ্যে সিনেটর শেখ রহমান চন্দন আরো বলেন, গত নির্বাচনে ডেমক্র্যাটিক পার্টির বিপর্যয়ের মূল কারণগুলো খতিয়ে দেখতে হবে। শুধু হোয়াইট হাউজ আর ক্যাপিটল হীলেই নয়, স্টেট, সিটি ও কাউন্টি প্রশাসনেও ডেমক্র্যাটিক পার্টির বিজয়ের পথ সুগম করতে আমাদের কাজ করতে হবে। আমি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হলে আগামী ৯০দিনের মধ্যে বিজয় নির্দ্ধারণী ৭টি স্টেটে গিয়ে আপামর মানুষের সাথে মতবিনিময় করবো। সামনের দু’বছরের মধ্যে সকল টেরিটরিসহ ৫০টি স্টেট ভ্রমণ করবো এবং ডেমক্র্যাটিক পার্টির প্রতি আমেরিকানদের আস্থার ভিত পুনপ্রতিষ্ঠায় কাজ করবো। এটাই সময়ের দাবি। শেখ রহমান চন্দন আরো উল্লেখ করেছেন, ভোটারের নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথ সুগম করতেও সুদূর প্রসারি পরিকল্পনা জনসমক্ষে উপস্থাপন করতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, ধর্ম-বর্ণ-জাতিগোষ্ঠির প্রতিনিধিত্বকারিরা নীতি-নির্দ্ধারণে অংশগ্রহণের অবাধ সুযোগ পেতে হবে। বিশেষ কোন বর্ণ আর জাতি-গোষ্ঠির আধিক্য পরিহার করতে পারলেই নাজুক অবস্থা থেকে ডেমক্র্যাটিক পার্টিকে উদ্ধার করা সহজ হবে। কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার সরারচরের সম্ভ্রান্ত এক পরিবারের সন্তান শেখ রহমান চন্দন ২০১৮ সাল থেকে ডিস্ট্রিক্ট-৫ আসনে জর্জিয়া লোকাল সরকারের স্টেট সিনেটর হিসেবে নির্বাচিত হয়ে আসছেন। এটা হচ্ছে তার চতুর্থ টার্মের দায়িত্ব। ১৯৮১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর আমেরিকান স্বপ্ন পূরণের অভিপ্রায়ে উচ্চ শিক্ষায় মনোনিবেশ করেন এবং সেন্ট্রাল পাইডমন্ট কম্যুনিটি কলেজে ভর্তি হন। ১৯৯৫ সালে তিনি জর্জিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে ব্যবসা প্রশাসনে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তারপর কর্মজীবনে পেশাগত দক্ষতা প্রদর্শনের পাশাপাশি বসবাসকারি এলাকার বিভিন্ন ভাষা ও বর্ণের মানুষের সাথে সম্পর্ক নিবিড় করতে সক্ষম হন। সেই পথ বেয়েই আফ্রিকান-আমেরিকান ও শ্বেতাঙ্গ আমেরিকান অধ্যুষিত এলাকা থেকে বারবার বিজয়ী হচ্ছেন। স্পষ্টভাষী শেখ রহমান চন্দনের স্ত্রী আফরোজা এবং এক পুত্র আঞ্জার ও এক কন্যা রাওদাকে নিয়ে নির্বাচনী এলাকাতেই স্থায়ীভাবে বাস করছেন। ডিএনসি নির্বাচনে বিজয়ের ব্যাপারে তিনি অত্যন্ত আশাবাদি।
উল্লেখ্য, গত নির্বাচনে ট্রাম্পের কাছে কমলা হ্যারিসের পরাজয়ের পাশাপাশি সিনেট এবং হাউজেরও সংখ্যাগরিষ্ঠতা খুইয়েছে ডেমক্র্যাটরা। অনেক স্টেটের আসনও হারিয়েছে। এহেন অবস্থায় ডেমক্র্যাটিক পার্টির নেতৃত্বে উদ্যমী-কর্মঠ-মেধাবি এবং ধর্ম-বর্ণ-অঞ্চল নির্বিশেষে সকল আমেরিকানের আস্থা রয়েছে-এমন ব্যক্তিগণের প্রয়োজনীয়তা অনুভ’ত হচ্ছে। সে তাগিদ সম্ভাব্য সকল প্রার্থীর মধ্য থেকেই উচ্চারিত হচ্ছে। উল্লেখ্য, ৩০ জানুয়ারি থেকে ৩দিনের এই জাতীয় সম্মেলন হবে ম্যারিল্যান্ড স্টেটে ন্যাশনাল হার্বারে। পার্টির চেয়ারম্যান, ট্রেজারার, ভাইস চেয়ারসহ বিভিন্ন পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ১ ফেব্রুয়ারি। আরো উল্লেখ্য, প্রথম বাংলাদেশী এবং প্রথম মুসলমান প্রার্থী হলেও ষ্টেট সিনেটর শেখ রহমান চন্দনকে ইতিমধ্যেই ৬ টেরিটরি-সহ অধিকাংশ স্টেটের ডেলিগেটরা সাপোর্ট দিয়েছেন। এরফলে তার নির্বাচনের পথ অনেকটা সুগম হয়েছে বলে আশা করা হচ্ছে। ভাইস চেয়ার পদে তার প্রতিদ্বন্দ্বিরা হলেন কংগ্রেসওম্যান (ওহাইয়ো ) জয়েস বীটি, কংগ্রেসওম্যান নিকেমা উইলিয়ামস (জর্জিয়া), বর্তমান কমিটির ভাইস চেয়ার সাবেক স্টেট অ্যাসেম্বলীম্যান (নিউইয়র্ক) মাইকেল ব্ল্যাক প।
সময়ের প্রয়োজনে চার বছর মেয়াদি (২০২৫-২০২৯) ডেমক্র্যাটিক পার্টির জাতীয় কমিটির আসন্ন নির্বাচন নিয়ে সরগরম শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমগুলোও। সচেতন ভোটারেরও অধীর আগ্রহে নয়া নেতৃত্ব প্রত্যাশা করছেন। তেমন একটি আকাঙ্খার পরিপূরক কমিটির চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৮ জন। এর অন্যতম হচ্ছেন ম্যারিল্যান্ড স্টেটের সাবেক গভর্ণর এবং সোস্যাল সিকিউরিটি এডমিনিস্ট্রেশনের কমিশনার মার্টিন ও’ম্যালি, উইসকনসিন স্টেট ডেমক্র্যাটিক পার্টির চেয়ারম্যান বেন উইকলার, বিদায়ী কমিটির ভাইস চেয়ার কেন মার্টিন, ইউএস সিনেট প্রার্থী (ম্যারিল্যান্ড) রবার্ট হোটন, এটর্নী ও রাজনৈতিক বিশ্লেক (ম্যাসেচুসেট্স)জ্যাসন পোল, বাইডেন ও ওবামা প্রশাসনে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রণালয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনকারী ন্যাট স্নাইডার, ডেমক্র্যাটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচার টিমে দায়িত্বপালনকারি সংগঠক ও লেখক ম্যারিয়েন উইলিয়ামসন এবং টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটির এডজাঙ্কট প্রফেসর কুইনটেসা হ্যাথাওয়ে। ট্রেজারার পদে লড়ছেন অলাভজনক একটি সংস্থার সিইও এবং নর্থ ক্যারলিনা ডেমক্র্যাটিক পার্টির ওরেঞ্জ কাউন্টি শাখার সাবেক চেয়ারপার্সন ম্যাট হাজেজ এবং বিদায়ী কমিটির ট্রেজার ভার্জিনিয়া ম্যাকগ্রেগর। সেক্রেটারি পদেও সরাসরি লড়াই হচ্ছে দু’প্রার্থীর। এরা হলেন নিউজার্সি শ্রম দফতরের সাবেক ডেপুটি কমিশনার ম্যারিলিন ডেভিস এবং বিদায়ী কমিটির সেক্রেটারি জ্যাসন র্যা। ন্যাশনাল ফাইন্যান্স চেয়ার পদে পুনরায় লড়ছেন বিদায়ী কমিটির চেয়ার ক্রিস কর্গ এবং ডেপুটি চেয়ার ক্রিস্টফার লওই।