যুবককে গণপিটুনির প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত

নবীনগর, 24 March 2025, 251 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
বিটঘরে ধর্ষক সন্দেহে আব্দুল খালেক নামে এক যুবককে গণপিটুনি দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

banner

আজ ২৪ মার্চ সোমবার সকাল ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার বিটঘর ইউনিয়নে বিক্ষোভ মিছিলটি বিটঘর উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু হয়ে বিটঘর বাজার প্রদক্ষিণ করে বিটঘর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনে এসে এক প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হয়।

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিটঘর গ্রামের মোঃ জসিম, এনামুল ইসলাম, মাসুক মিয়া, ইকবাল হোসেন, মোঃ দুলাল, জেসমিন আক্তার, ইয়াছমিন আক্তার, ফাতেমা বেগম, সাজেদা বেগম, রোজিনা আক্তার ও শেফালি আক্তার। বক্তারা বলেন, আব্দুল খালেক একজন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ছেলে। বুদ্ধি প্রতিবন্ধী আব্দুল খালেককে গত ১৯ মার্চ সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে ঢেকে এনে ধর্ষক সন্দেহে স্থানীয় ছাত্র-জনতা তাকে গণপিটুনি দেয়। তারা বলেন, ঐদিন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান খালেককে ছাত্র-জনতার গণপিটুনি থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কাছে তুলে দেয়। বর্তমানে সে এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী আব্দুল খালেককে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।

বিটঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহেদী জাফর দস্তগীর জানান, ঐদিন ধর্ষণ চেস্টার ঘটনাটি শুনে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আগেই ছাত্র-জনতা খালেককে ধরে এনে গণপিটুনি দেন। বিষয়টি নিয়ে ধোয়াশা আছে। আমি চাই প্রশাসনের তদন্তের মাধ্যমে সঠিক ঘটনাটি বেরিয়ে আসুক।

Leave a Reply

গাজীপুরে মামা হত্যার আসামি ভাগিনা গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : গাজীপুরে আনিসুর রহমান হত্যার মামলার আসামি ভাগিনা Read more

সদর মডেল থানায় যোগদান করেই কঠোর…

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য : আজহারুল ইসলাম সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

চলারপথে রিপোর্ট : ফ্ল্যাট বাসা থেকে শরীর মীর (৪০) নামের Read more

নাসিরনগরে বাবাকে হত্যার ঘটনায় ছেলে আটক

চলারপথে রিপোর্ট : নাসিরনগরে আলম মিয়া (৬০) নামের এক ব্যবসায়ী Read more

আখাউড়ায় খেলাফত মজলিসের প্রার্থীর মতবিনিময়

মোঃ ইসমাইল: ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের খেলাফত মজলিস মনোনীত প্রার্থী Read more

৫০ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ৫০ কেজি গাঁজা ও ১টি সিএনজি উদ্ধারসহ Read more

কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপদসীমায়, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের…

অনলাইন ডেস্ক : বর্ষার শেষপ্রহরে নেমে আসা অবিরাম বৃষ্টি ও Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার নতুন ওসি আজহারুল…

চলারপথে রিপোর্ট : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে Read more

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে…

অনলাইন ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ঐতিহাসিক Read more

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : কুমিল্লার দাউদকান্দি বারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) Read more

মেক্সিকোতে যাত্রীবাহী বাসে ট্রেনের ধাক্কায় ১০জন…

অনলাইন ডেস্ক : মেক্সিকোর আটলাকোমুলকো শহরে একটি পণ্যবাহী ট্রেন ও Read more

কানাডায় বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

মুমিনুল হক : কানাডার টরেন্টোতে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। Read more

নবীনগরে বজ্রপাতে তরুণের মৃত্যু

নবীনগর, 4 June 2023, 1384 Views,
ফাইল ছবি

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে বজ্রপাতে শ্রাবণ (১৭) নামের এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে।

banner

আজ ৪ জুন রবিবার বিকাল ৩টার দিকে উপজেলার বিদ্যাকুট হাই স্কুল মাঠে এ ঘটনা ঘটে। শ্রাবণ বিদ্যাকুট বাজার এলাকার কালাগাজী বাড়ির সোহরাব মিয়ার ছেলে।

নবীনগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আক্কাস আলী জানান, দুপুরের পর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির সময় শ্রাবণ সেলুন থেকে চুল কেটে স্কুলের মাঠ দিয়ে বাড়ি যাচ্ছিলেন। এসময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) একরামুল ছিদ্দিক বলেন, বজ্রপাতে তরুণ নিহতের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রাথমিক অবস্থায় তার পরিবারকে ২০ হাজার টাকা দেওয়া হবে।

অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রির দায়ে জরিমানা

নবীনগর, 2 March 2025, 293 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
অতিরিক্ত দামে মুড়ি, লেবু ও শসা বিক্রি করায় ৭ ব্যবসায়ীকে ২১ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। আজ ২ মার্চ রবিবার সকালে নবীনগর পৌর শহরের বড় বাজারে অভিযান পরিচালনা করে এই জরিমানা করেন নবীনগর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো. আবু মুসা।

banner

ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী নবীনগর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো. আবু মুসা জানান, পবিত্র রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল ও ভেজাল পণ্যের বিরুদ্ধে পৌর শহরের বড় বাজারে বিভিন্ন মুড়ির দোকান ও কাঁচা বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হয়।

রমজানকে সামনে রেখে কিছু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত দামে মুড়ি, লেবু ও শসা বিক্রয় করছে। পরে অতিরিক্ত মূল্যে পণ্য বিক্রি করার দায়ে ৭ ব্যবসায়ীকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ এর বিভিন্ন ধারায় ৭ মামলায় ২১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জনস্বার্থে ভ্রাম্যমান আদালতের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। এসময় নবীনগর থানা পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলো।

নবীনগরে রাতের অন্ধকারে জলাশয় ভরাট

নবীনগর, 13 March 2024, 895 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে একটি প্রভাবশালী মহল রাতের আঁধারে জলাশয় ভরাট করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রশাসনের অভিযানের পরও বন্ধ হয়নি জলাশয় ভরাট। এ ঘটনায় গত ৪ মার্চ জালশুকা গ্রামের মোঃ শওকত, আলি মিয়া, রহিম মিয়া, নান্টু মিয়া ও খবির উদ্দিন জলাশয় ভরাট বন্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।

banner

গ্রামবাসীর লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সিএস, আরএস ও বিএসসহ সকল কাগজপত্রে উপজেলার বড়াইল ইউনিয়নের জালশুকা গ্রামে পানি প্রবাহিত হওয়ার খাল বিদ্যমান রয়েছে। এক সময় এই খাল দিয়ে পুরো ইউনিয়নের লোকজন কৃষি পন্য নৌকা দিয়ে জমি থেকে বাড়িতে আনা-নেওয়া করত। স্থানীয় প্রভাবশালীরা খালটির বিভিন্ন অংশে দখল করেছেন।

উপজেলার জালশুকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের জলাশয় ভরাটের দায়ে গত ১৬ ফেব্রæয়ারি নবীনগর উপজেলার তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা জাহান ভ্রাম্যমান আদালতের পরিচালনা করেন। অভিযানকালে অভিযুক্তদের একজনকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেন তিনি। অভিযানের সময় বালু ভরাট কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম পাইপ নষ্ট করা হয়।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের ১ সপ্তাহ পর থেকে জলাশয়টি ব্যক্তি মালিকানার জায়গা দাবি করে রাতের আধারে বালু ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। জালশুকা গ্রামের আবেদ হোসেন ও তার ভাই মোঃ রহমান জলাশয়টি ভরাট করছেন।

অভিযোগকারীদের দাবি জলাশয়ের পাশে মানুষের চলাচলের জন্য থাকা ১ নম্বর খাস খতিয়ানের ১৭শতক জায়গাও ভরাট করা হয়েছে। প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইনের (২০০০) ৫ ধারা অনুযায়ী, খেলার মাঠ, উন্মুক্ত স্থান, উদ্যান ও প্রাকৃতিক জলাধার হিসেবে চিহ্নিত জায়গার শ্রেনী পরিবর্তন করা যাবে না।

এ ছাড়া এ ধরনের জায়গা অন্য কোনোভাবে ব্যবহার করা, ভাড়া, ইজারা বা হস্তান্তর করা যাবে না। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন (২০১০ সালে সংশোধিত) অনুযায়ী যেকোনো ধরনের জলাশয় ভরাট করা নিষিদ্ধ।

জলাধার সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, কেউ আইনের বিধান লঙ্ঘন করলে অনধিক ৫ বছরের কারাদন্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা যাবে। শাস্তি প্রদানের পাশাপাশি আইন অমান্যকারীর নিজ খরচে সেটা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার বিধানও রয়েছে।

ভূমি কার্যালয়ের একটি নথিতে দেখা গেছে, ১ নম্বর খাস খতিয়ানের ১২১ দাগে মানুষের চলাচলের জন্য ১৭শতক চলার পথ রয়েছে। ইতোমধ্যে জায়গাটি ভরাট করে ফেলা হয়েছে।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, জালশুকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে একটি জলাশয় রয়েছে। ওই জলাশয়ের নিচের দিকে বেশিরভাগ অংশ বালু ফেলে ভরাট করা হয়েছে। এর দক্ষিণদিকে গোকর্ণ-কৃষ্ণনগর সড়ক সংলগ্ন একটি খাল রয়েছে। তবে ওই খালেরও অনেকটা জায়গা বালু ফেলে ভরাট করে ফেলা হয়েছে। ভরাট করার পরও কিছু অংশে পানি দেখা যায়। ওই জায়গা বেশ কিছু শিশু শিক্ষার্থীকে খেলা করতে দেখা যায়।

এ ব্যাপারে উপজেলার বড়াইল ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের নায়েব মো. রাসেল জানান, অনুমতি না নিয়ে জলাশয় ভরাটের অভিযোগে জরিমানা করা হয়। তবে যতদূর জানি জরিমানা করার পর জায়গাটিতে আর বালু ফেলা হয়নি।

ভরাটের সাথে যুক্ত আবেদ হোসেন বলেন, প্রশাসনের অভিযানের পর আমরা আর বালু ফেলিনি। জায়গাটি আমাদের নিজস্ব। স্কুলের মাঠের জন্য এখান থেকে মাটি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন জলাশয় হয়ে যাওয়ায় অনুমতি না নিয়ে ভরাটের কারণে প্রশাসন অভিযান চালিয়েছে। তারা বলছে ভরাটের অনুমতি লাগবে।

এ ব্যাপারে মোঃ রহমান বলেন, ‘এটি খাল বা জলাশয় নয়। পৈতৃকসূত্রে পাওয়া এখানে আমাদের ৪০শতক জমি রয়েছে। আমাদের জমির মাটি দিয়ে বিদ্যালয়ের মাঠ এবং গোকর্ণঘাট-কৃষ্ণনগর সড়ক নির্মানের জন্য দেয়া হয়েছে। খালের কোনো জায়গা ভরাট করা হয়নি। বরং আমাদের জমির উপর দিয়ে সেচের পানির নালা গিয়েছে। তিনি বলেন, আমরা এলাকায় থাকি না। একটি চক্র আমাদের জমি ভরাটকে জলাশয় ভরাটের নাম দিচ্ছেন।

এ ব্যাপারে বড়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন, আমি শুনেছি ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানের পর থেকে জলাশয় ভরাট বন্ধ রয়েছে। তবে আমি যতদূর জানি এটি তাদের ব্যক্তিগত জায়গা। একসময় জমি ছিল। স্কুলের মাঠ ও রাস্তা নির্মাণের সময় তাদের জমি থেকে মাটি নিয়েছিল। এটাকে এলাকায় মরা ডোবা বলে। বর্তমানে ভরাট বন্ধ আছে। শুনেছি ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে নবীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর ফরহাদের সাথে যোগাযোগগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেনি।

৬বছরের শিশু নিখোঁজ সন্তানকে খোঁজতে গিয়ে মা নিখোঁজ

নবীনগর, 12 July 2024, 681 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১১ জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুরে মায়ের সাথে চিকিৎসা করাতে গিয়ে সিয়াম নামে (৬ বছরের) শিশু সন্তান নিখোঁজ হয়ে গেছে। সন্তানকে খুঁজতে গিয়ে দিনভর নিখোঁজ রয়েছে ওই সন্তানের মা রিনা বেগম। নিখোঁজ সিয়াম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর পৌর এলাকার আলিয়াবাদ গ্রামের মালদ্বীপ প্রবাসী রায়হান মিয়ার ছেলে, রিনা বেগম তার স্ত্রী ।

banner

সরেজমিনে নিখোঁজ সিয়ামের বাড়িতে গেলে তার চাচা ওবায়দুল হক বলেন, বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকাল দশটায় রিনা তার ছেলে সিয়ামকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যায়,চিকিৎসা শেষে ডাক্তারের পরামর্শ ও ওষুধ আনতে গেলে সেই সময় হারিয়ে যায় সিয়াম। হাসপাতালে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি, ওই সময় হাসপাতালের সামনে থাকা এক পথচারী রিনাকে বলেন, একটি ছেলে রসুল্লাবাদ গ্রামের অটোরিকশায় উঠতে দেখছি। এই কথা শুনে রিনা ছেলের খোঁজে বেড়িয়ে যায়। আমাকে দুপুর ১ টার দিকে ফোন করে সিয়াম নিখোঁজ হওয়াসহ এসব কথা জানান রিনা। তখন রিনা নবীনগর ফল বাজারে আছে এবং তার মোবাইলে চার্জ নেই একথাও আমাকে বলেছে। এটাই ছিলো তার সাথে শেষ কথা। এরপর থেকে তার মোবাইল ফোন নাম্বার বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।সংবাদ পেয়ে আমরাও সিয়ামকে খোঁজতে বেড়িয়ে যায়।

এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাদের ছবি দিয়ে নিখোঁজ হবার সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে। দিন শেষে রাত হয়ে গেলো এখনো তাদের কোনো খোঁজখবর পাইনি।একদিকে ছেলে নিখোঁজ অন্য দিকে ছেলেকে খোঁজতে গিয়ে মা নিখোঁজ। এই ঘটনার পর থেকে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে গোটা নবীনগরে এলাকাবাসী ভীড় করছে সিয়ামদের বাড়িতে। পরিবারে চলছে শোকের মাতম। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত মা ও ছেলের কোন খবর পাওয়া যায়নি। বাজারের সিসি ক্যামেরা ফুটেজেও দেখা যাচ্ছে না তাদেরকে।

এ বিষয়ে নবীনগর থানার অফিসার্স ইনচার্জ মাহবুব আলম বলেন, সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে,পুলিশ এ বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছে।

দীর্ঘ ৫ বছরেও শেষ হয়নি নবীনগর-আশুগঞ্জ নির্মিত সেতুগুলো

নবীনগর, 16 March 2024, 898 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
দীর্ঘ ৫ বছরেও শেষ হয়নি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর ও আশুগঞ্জ উপজেলার ৫ লক্ষাধিক মানুষের স্বপ্নের সড়ক নবীনগর-আশুগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের নির্মাণ কাজ। তবে সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ না হলেও গত তিন বছর আগে সড়কের বিভিন্ন প্রান্তে বেশ কয়েকটি সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে।

banner

ভূমি অধিগ্রহনে জটিলতা, ঠিকাদারের গাফিলতি এবং প্রকল্প প্রণয়ন কমিটির ভুলের কারনে দীর্ঘ পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর-আশুগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের নির্মাণ কাজ। এতে দিন দিন বাড়ছে স্থানীয়দের ক্ষোভ। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন দ্রুত সময়ের মধ্যেই শেষ হবে মহাসড়কটি নির্মাণ কাজ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একনেকে (জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি) পাশ হওয়ার পর গত ২০১৮ সালের ১লা জুলাই মেঘনা-তিতাস ও পাগলা নদীর তীর ঘেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর ও আশুগঞ্জ উপজেলার সাথে দীর্ঘ ২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের আঞ্চলিক সড়কটির নির্মান কাজ শুরু করে সড়ক বিভাগ।

প্রকল্পের সময় সীমা অনুযায়ী গত ২০২১ সালের জুন মাসে সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিলো। তবে ভ‚মি অধিগ্রহণে জটিলতা ও প্রকল্প প্রণয়ন কমিটির ভুলের কারনে মাঝ পথেই থমকে যায় সড়কটির নির্মাণ কাজ।

প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় প্রকল্প ব্যয় মোট ৪২১ কোটি ধরা হলেও সম্প্রতি ভূমি অধিগ্রহণের জন্য সড়কটির নির্মাণ ব্যায় বাড়ানো হয় আরো ১৮৩ কোটি টাকা। এতে সর্বশেষ প্রকল্পটির নির্মাণ ব্যয় দাঁড়ায় ৬০৪ কোটি টাকা।

এদিকে সড়কটি নির্মাণের আগেই ২০ কিলোমিটার পথে পাগলা ও তিতাস নদীর উপর ২টি বড় সেতুর কাজ শেষ হয়েছে। তবে সড়ক নির্মাণের আগেই ৯টি মাঝারি সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ায় সেতু ও কালভার্ট গুলো জমির উপর দৃশ্যমান অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে।

স্থানীয়দের দাবি জনসাধারনের দুর্ভোগ লাঘবে দ্রæত সময়ের মধ্যে সড়কটি নির্মাণ কাজ যেন দ্রæত বাস্তবায়ণ করা হয়।

এ ব্যাপারে নবীনগর উপজেলার বাইশমৌজা গ্রামের মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, এই রাস্তা না করার কারনে আমাদের গ্রামের মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। এখানে ব্রীজ আছে তবে রাস্তা নেই। মানুষ পায়ে হেটে কষ্ট করে এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। যদি দ্রুত রাস্তার কাজ বাস্তবায়ন করা হয় তাহলে আমাদের অনেক উপকার হবে।

নবীনগর উপজেলার গাজীরকান্দি গ্রামের মোঃ সাজন মিয়া বলেন, আমাদের গ্রামের ভিতর দিয়ে মোটর সাইকেল যাওয়ার রাস্তা নেই । অথচ এখানে নাকি ফোর-লেন রাস্তা হবে। রাস্তার রামে খোঁজ নেই, অনেক গুলো ব্রীজ নির্মাণ করা হয়েছে। আমাদের দাবি এই রাস্তার কাজ যেন দ্রুত বাস্তবায়ন করা হয়। তাহলে আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক সহজ হবে।

একই গ্রামের হাজেরা বেগম নামে আরেক নারী বলেন, রাস্তা না থাকার কারনে আমাদের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়া-আসা করতে কষ্ট হচ্ছে। পায়ে হেঁটে তাদের চলাফেরা করতে হয়। তিনি বলেন, রাস্তার কাজ শেষ হওয়ার আগে কেন ব্রীজ নির্মাণ করা হয়েছে তা আমার বোধগম্য নয়। এই ব্রীজগুলো আমাদের কোন কাজে আসছেনা।

এদিকে নবীনগর-আশুগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের কাজের ধীরগতির জন্যে সচেতন মহল প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের গাফলতি এবং প্রকল্প ব্যয় বৃদ্ধির কারসাজিকেই দায়ী করেছেন।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) এর সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুন নূর বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর-আশুগঞ্জ নির্মানাধীন রাস্তাটির কাজ প্রায় ৫বছর ধরে ঝুলে আছে। আমি মনে করি যারা প্রাথমিকভাবে রাস্তার জন্য ব্যয় ধরেছেন তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা উচিত। কারন তারা তখন ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ভ‚মির বাজার দর না জেনেই এই ব্যয় ধরেছেন। তাই এখন প্রকল্পের কাজ যেমন দেরি হচ্ছে, সেই সাথে প্রকল্পের ব্যয়ও দ্বিগুণ হয়ে গেছে।

এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ জানান, সড়কটি নির্মাণের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু ঠিকাদার সঠিক সময়ে কাজ শুরু করতে না পারায়, আগের যে ভ‚মি অধিগ্রহণ করা ছিল সে জায়গা এবং যেখানে রাস্তা ছিল সেখানে কাজ করার সুযোগ ছিল।

কিন্তু ঠিকাদার তার সময় বাড়ানোর কোন আবেদন না করায় আমরা সেটির দরপত্র বাতিল করে দিয়েছি। আমরা পরবর্তীতে নতুন করে দরপত্র আহবান করেছি। সেটির মূল্যায়ন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পুণঃ দরপত্র আহবানসহ নতুন ঠিকাদার নিয়োগের মাধ্যমে দ্রæত সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ করা হবে।

উল্লেখ্য, প্রায় ২০ কিলোমিটার লম্বা সড়টিতে ২টি বড় সেতু, ৭টি মাঝারি সেতু এবং ১৩টি কালভার্ট রয়েছে। আগামী ২০২৫ সালের জুন মাসে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।