অনলাইন ডেস্ক :
বগুড়ায় সিএনজিচালিত অটোরিক্সা চালকের সততায় স্বর্ণ ব্যবসায়ীর ফেলা যাওয়া ২৫ লাখ টাকা মূল্যের ১৮ ভরি স্বর্ণ ও নগদ ১৫ হাজার টাকা ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ।
৪ এপ্রিল শুক্রবার রাত ১১টায় বগুড়া সদর থানায় পুলিশের মাধ্যমে স্বর্ণের প্রকৃত মালিককে এসব ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ১৮ ভরি স্বর্ণ ফিরিয়ে দিয়ে শততার আরেক দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন খায়রুল ইসলাম নামের ওই অটোরিকশাচালক।
জানা গেছে, বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার বেতগাড়ি হাজীপাড়ার খায়রুল ইসলাম তার লেখাপড়ার খরচ জোগাতে ও বাড়তি আয় করতে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালান। খায়রুল বগুড়ার একটি সরকারি কলেজে ম্যানেজমেন্ট বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। প্রতিদিনের মতো ঈদের দুই দিন আগে ২৯ মার্চ অটোরিকশা চালাচ্ছিলেন তিনি। সেই দিন ইফতারের আগে জুয়েলারি ব্যবসায়ী পাবনার ফরিদপুর উপজেলার উত্তর গোপালনগর এলাকার শফিউর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ শাহিন বগুড়া নিউ মার্কেট থেকে ২৫ লাখ টাকা মূল্যের প্রায় ১৮ ভরি স্বর্ণ কিনে একটি কালো রঙের ব্যাগে ভরে বাড়ি ফিরছিলেন। ফেরার পথে খায়রুলের অটোরিকশা করে শাজাহানপুর উপজেলার বনানীতে গিয়ে দ্রুত বাসে উঠে যান। বাসে উঠে ইফতার করার সময় তার মনে পড়ে যায় স্বর্ণসহ নগদ ১৫ হাজার টাকার ব্যাগটি অটোরিকশা ফেলে এসেছেন। বাস থেকে নেমে অটোরিকশাচালককে খুঁজে না পেয়ে শাজাহানপুর থানা ও বগুড়া সদর থানায় গিয়ে আইনগত সহযোগিতা কামনা করেন।
পুলিশের পরামর্শে তিনি শাজাহানপুর থানায় একটি জিডি করেন এবং বাড়ি ফিরে যান। এরপর থেকে স্বর্ণ ব্যবসায়ী শাহিন বগুড়ার বিভিন্ন এলাকায় তার হারিয়ে ফেলা ব্যাগটির খোঁজ করতে থাকেন। একপর্যায় সেটি না পেয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।
এদিকে, নিজের অটোরিক্সায় ব্যাগটি পেয়ে সেটি না খুলে ওই যাত্রীর সন্ধান করতে থাকেন খায়রুল। সেদিন ব্যাগটির মালিককে খুঁজে না পেয়ে বাড়ি ফিরে যান। বাড়ি গিয়ে খায়রুল তার মাকে সব খুলে বলেন। তার মা তাকে বলেন স্বর্ণগুলো প্রকৃত মালিকের কাছে ফিরে দিতে। পরে পরিচিত এক পুলিশ সদস্যের মাধ্যমে বগুড়া সদর থানায় যোগাযোগ করেন খায়রুল।
সর্বশেষ শুক্রবার রাতে বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম মঈনুদ্দীনকে বিষয়টি জানালে তিনি দ্রুত স্বর্ণের মালিককে ডেকে নেন। সেদিন রাত ১১টায় প্রকৃত মালিক শাহিনের হাতে ১৮ ভরি স্বর্ণ ও ১৫ হাজার টাকার ব্যাগটি তুলে দেন।
বগুড়া সদর থানায় ওসির কক্ষে অটোরিক্সা চালক খাইরুলকে দেখেই চিনতে পারেন যাত্রী শাহিন। মালামাল ফিরে পেয়ে যাত্রী শাহিন ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার হিসেবে দিতে চান অটোরিক্সা চালক খাইরুলকে। অটোরিক্সা চালক খাইরুল পুরস্কারের টাকা নিতে অনীহা প্রকাশ করেন এবং বলেন ব্যাগে থাকা সোনা ও টাকা তাকে ফিরিয়ে দিতে পেরে তিনি দায়মুক্ত হয়েছেন।
আবেগাপ্লুত শাহিন স্বর্ণ ফিরে পেয়ে জানান, তিনি ভেবেছিলেন তার সব শেষ হয়ে গেছে। মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার পর থানার ওসির ফোন পেয়ে আনন্দে দিশেহারা হয়ে পড়েন। অটোরিক্সা চালক খায়রুলের সততা তাকে মহিত করেছে। খায়রুলের মতো মানুষ থাকলে সমাজের কোনো ভয় নেই।
সিএনজি চালক খায়রুল জানান, সারা জীবন সৎ থাকতে হবে, সৎ থাকলে পরকালে ভালো হবে। মায়ের অনুপ্রেরণায় তিনি সোনার গহনা ও টাকাগুলো ফেরত দিতে পেরে ধন্য মনে করছেন। শিক্ষার উদ্দেশ্য মনুষ্যত্ব অর্জন, অসততা নয়।
বগুড়া সদর থানার ওসি এসএম মঈনুদ্দীন জানান, খায়রুল মূলত একজন শিক্ষার্থী। অটোরিক্সা চালিয়ে নিজের লেখাপড়ার জন্য খরচ বহন করেন। তিনি শুধু সৎ নন, দায়িত্বশীল ও মানবিকও। তার মতো মানুষই আমাদের সমাজে আরও আলো ছড়াবে। এ যুগেও যে হাজারো মানুষের ভিড়ে সৎ মানুষ আছে তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ খায়রুল।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত জুলাই যোদ্ধাদের মাঝে আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ করেছে সদর উপজেলা প্রশাসন। মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রদত্ত সি ক্যাটাগরির ১৭ জন জুলাই যোদ্ধার মাঝে ১৭ লক্ষ টাকার চেক বিতরণ করা হয়।
গতকাল ২৮ মে বুধবার দুপুরে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে চেক বিতরণ করেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত মোঃ ইশতিয়াক ভূইয়া। এ সময় সদর উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মোঃ নুরুল মাহমুদ ভূইয়া, সদর উপজেলা উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবদুল লতিফসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত মোঃ ইশতিয়াক বলেন, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আপনারা যে ভূমিকা রেখেছেন এটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
তিনি আরো বলেন, ভবিষ্যতেও আপনার রাষ্ট্রের প্রয়োজনে এগিয়ে আসবেন বলে আমি মনে করি। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহতদের এক যোদ্ধা বক্তব্যে রাখতে গিয়ে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের অপরাধীদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানান।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিজিবির সুলতানপুর ব্যাটালিয়নের (৬০ ব্যাটালিয়ন) অভিযানে গত ১ বছরে (২০২৪ সালে) প্রায় একশত পঞ্চাশ কোটি টাকা মূল্যের বিপুল পরিমান মাদক ও বিভিন্ন প্রকার অবৈধ মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় ৮৬ জন আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ ১ জানুয়ারি বুধবার দুপুরে বিজিবির পক্ষ থেকে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানা গেছে।
বিজিবির সুলতানপুর ব্যাটালিয়নের (৬০ ব্যাটালিয়ন) অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল এ.এম. জাবের বিন জব্বার, পিএসসি, এসি স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালে বিজিবির মাদক ও চোরাচালান বিরোধী অভিযানে ১শত ৪৬ কোটি ৯৪ লাখ ৮ হাজার ৩১৯ টাকা মূল্যের বিপুল পরিমান ভারতীয় অবৈধ মাদক ও বিভিন্ন প্রকার মালামাল উদ্ধার করা হয়। একই সময় এসব মাদক ও চোরাচালানীর সাথে জড়িত ৮৬ জনকে গ্রেফতার এবং ২০ জন পলাতক আসামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্যের মধ্যে রয়েছে হুইস্কি ১০৭৭১ বোতল, বিয়ার ১৭০৮ পিস, ইস্কফ সিরাপ ৩৯১৩ বোতল, গাঁজা ৩৯২০.৯ কেজি, ফেন্সিডিল, ৩৪১৪ বোতল, ইয়াবা ট্যাবলেট- ৪৬,০৬৮ পিস, ভারতীয় বিভিন্ন প্রকার শাড়ি ১৭১৬৬ পিস, গরু ৩৩৩ টি, বিভিন্ন প্রকার মোবাইল ফোন ১৯৪৮ টি, মোবাইল ফোনের ডিসপ্লে ৪৫০৪০ টি, বাসমতি চাল ৩৭৩১৮.৫ কেজি, চিনি ১০,৯৫,৬৭০.৫ কেজি, নেহা মেহেদী ২১৫৮১৫ পিস, জিরা ১৫৬২ কেজি, বিভিন্ন প্রকার চকলেট ১১৭৯৯৮ পিস, বিভিন্ন প্রকার তালা ১৪,২৩৪ পিস, বিভিন্ন প্রকার বাঁজি-৬৩,৯০,০০৯ পিস, বিপুল পরিমাণ বিভিন্ন প্রকার নিষিদ্ধ ঔষধ সামগ্রী, বিভিন্ন প্রকার কাপড়, কসমেটিক্স সামগ্রী, খাদ্য সামগ্রী, যানবাহনের খুচরা যন্ত্রাংশ, মোটর সাইকেল, সিএনজি, বাংলাদেশী বিভিন্ন প্রকার মাছ ইত্যাদি। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বিজিবির সুলতানপুর ব্যাটালিয়নের (৬০ বিজিবি) এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
অনলাইন ডেস্ক :
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে একটি বসতবাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি তিনটি দোকানও পুড়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিসের দু’টি ইউনিট এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনতে সক্ষম হয় বলে জানা গেছে। আজ ২৭ জানুয়ারি সোমবার নাসিক সিদ্ধিরগঞ্জের ৭ নম্বর ওয়ার্ডস্থ কদমতলী নয়াপাড়া (ভান্ডারিপুল) এলাকায় মনিরের ভাড়াটিয়া বাড়িতে ভোর সাড়ে ৫টায় এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদমজী ইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. মিরন মিয়া।
জানা গেছে, ভোর সাড়ে ৫টার সময়ে ভান্ডারিপুল এলাকার বাসিন্দা মনিরের ভাড়াটিয়া বাড়িতে হঠাৎ আগুন ধরে ৫টি ঘর পুড়ে যায়। এরপর সেই আগুন মুহূর্তেই ছড়িয়ে গিয়ে বাড়ির সামনের অংশের থাকা আরো ৩টি দোকানেও আগুন লাগে। এতে ভাড়াটিয়াদের ঘরের আসবাবপত্র ও দোকানের মালামাল পুড়ে যায়।
আদমজী ইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. মিরন মিয়া বলেন, আমরা আগুনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আমাদের দুইটি ইউনিটের প্রায় ঘণ্টা খানিকের চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। প্রাথমিকভাবে আগুনের সূত্রপাত জানা যায়নি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় আড়াই লাখ টাকা হবে বলে ধারণা করছি।
অনলাইন ডেস্ক :
স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে অনশন শুরু করেছেন এক তরুণী। ১৬ জুন সোমবার সকাল থেকে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার হাপানিয়া গ্রামে অনশন করছেন তিনি। ওই তরুণী জানান, ওই গ্রামের বাসিন্দা সৌদি প্রবাসী জলিল হাওলাদারের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। জলিল ২০২৩ সালে সৌদি আরবে যাওয়ার পর, ওই বছরের ১২ জানুয়ারি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার একটি কাজী অফিসে পাঁচ লাখ টাকা কাবিনে তাদের বিয়ে হয়।
সাম্প্রতি জলিল দেশে ফিরে অন্যত্র বিয়ের উদ্যোগ নেন। বিষয়টি জানতে পেরে নিজের স্বামীর স্বীকৃতি ও অধিকার আদায়ে অনশন শুরু করেন তিনি। এর আগে জলিল আত্মগোপনে চলে গিয়েছিলেন বলেও দাবি করেন ওই তরুণী।
গৌরনদী মডেল থানার এসআই নজরুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পক্ষকে শান্তিপূর্ণ সমাধানের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জাতীয় ভিটামিন “এ” প্লাস ক্যাম্পেইন ১৫ মার্চ শনিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ক্যাম্পেইনে জেলার সাড়ে ৫ লাখ শিশুকে ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী শিশু রয়েছে ৫৮ হাজার ৪০৮ জন এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুর সংখ্যা রয়েছে ৪ লাখ ৯৭ হাজার ৪৭০ জন।
শনিবার সকালে শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই কমিউনিটি ক্লিনিকে ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাম্পেইন উদ্বোধন করেন সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ নোমান মিয়া। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডাঃ হিমেলসহ স্বাস্থ্য বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মচারীগণ। দিনব্যাপী ক্যাম্পেইনে জেলার ১০টি উপজেলার ৯৮টি ইউনিয়নের ২ হাজার ৪৩৩টি কেন্দ্রে ৬ থেকে ৫৯ মাস বয়সী ৫ লাখ ৫৫ হাজার ৮৭৮ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর কথা রয়েছে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত জেলার ২ হাজার ৪৩৩টি কেন্দ্রে ৩৩৮জন স্বাস্থ্য সহকারি, ১০০জন এএইচআই, ৩৪৮জন পরিবার কল্যাণ সহকারি এবং ৮৭জন এফপিআই দায়িত্ব পালন করেন। ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল অন্ধত্ব’ প্রতিরোধ, দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি নিশ্চিত এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে শিশু মৃত্যুর ঝুঁকি কমায়।