মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, আখাউড়া থেকে :
আখাউড়া উপজেলায় টয়লেটের গর্তে পড়ে আলী আহাদ নামে এক দেড় বছর বয়সি শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যুর হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে আখাউড়া উপজেলার চাঁনপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। শিশু আলী আহাদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার আখাউড়া উত্তর ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামের আলী আকবরের পুত্র।
শিশুর চাচা আব্দুর রকিব জানান, আজ ৭ এপ্রিল সোমবার দুপুরে ঘরের বাইরে আলী আহাদ খেলাধুলা করছিল। এসময় সবার অজান্তে পাশের বাড়ির টয়লেটের খোলা গর্তে পড়ে যায়। ঘন্টাখানেক খোঁজাখুজির পর এই গর্ত থেকে তাকে উদ্ধার করে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মো. লুৎফর রহমান বলেন, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই শিশুটি মারা যায়। পরে পরিবারের লোকজন শিশুকে নিয়ে যায়।
চলারপথে রিপোর্ট :
লক্ষ্মী রানী দাস। তিনি ভারত থেকে স্বামী ও সন্তান নিয়ে আগরতলা স্থলবন্দর দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর হয়ে বাংলাদেশে আসেন।
যাত্রাকালে আগরতলা ইমিগ্রেশনে সুষ্ঠু ও স্বাচ্ছন্দ্যে ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করে এলেও আখাউড়া স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশনে এসে রীতিমত অবাক হক তিনি। বসারও সুব্যবস্থা নেই এখানে।
ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করতে গাদাগাদি করে লাইনে দাঁড়ালেও ছোট কক্ষটিতে নেই কোনো ফ্যান। হঠাৎ ১২ বছর বয়সী ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়লে সেবা করার জন্য কোনো স্থান না পেয়ে ইমিগ্রেশন ভবনের এক কোনায় বসে তার সেবা যত্ন করেন। আশেপাশে ছিল না কোনো টিউবওয়েল। যাও বা ট্যাংকের পানি জুটেছে, তাও তীব্র তাপদাহে তপ্ত। তা দিয়েই ছেলেকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যান।
লক্ষ্মী রানী দাসের বলেন, আগরতলা ইমিগ্রেশনে শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে ও সুন্দর পরিবেশে আরামে সব কাজ করে এসেছি। বন্দর থেকে গাড়িতে আমাদের ফ্রি চেকপোস্ট পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে। অথচ আখাউড়া স্থলবন্দর ইমিগ্রেশনে এসে নাজেহাল হতে হলো। এখানে কোনো কিছুরই সুব্যবস্থা নেই। একতলা পুরোনো ভবনের ছোট্ট কক্ষে শত শত লোক ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করে। এখানকার ইমিগ্রেশনের অব্যবস্থাপনা দেখে খুবই খারাপ লেগেছে। এখানে যাত্রীদের জন্য পরিষেবা বাড়ানো উচিত। আশা করব, বাংলাদেশ সরকার দুই দেশের যাত্রীদের কথা বিবেচনায় এনে ইমিগ্রেশন উন্নত করবে।
আগরতলা থেকে আসা আরেক যাত্রী খোকন মিয়া বলেন, আমি গত ছয় বছর ধরে এ চেকপোস্ট দিয়ে যাতায়াত করছি। ইমিগ্রেশনটি যে হালতে দেখেছিলাম, সে হালতেই আছে। একজন রোগী এলে যে বসবে, সে উপায় নেই। এখানে যে পরিমাণ জায়গা দরকার, সে তুলনায় খুবই কম আছে।
বন্দরটি ঘুরে দেখা গেছে, মূলফটক পার হলেই একতলা বিশিষ্ট তিন রুমের একটি ভবন। এর মধ্যে দুটি ছোট রুম ও একটি মাঝারি রুম। একটিতে ইমিগ্রেশন ইনচার্জ বসেন, আরেকটি হচ্ছে ব্যারাক। মাঝারি কক্ষটিতে চলে অফিসের কার্যক্রম। পুরোনো ভবনটির বিভিন্ন অংশে ফাটল ধরে গেছে। প্রতিদিন যাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে, তাই গাদাগাদি করেই চলে কার্যক্রম। যাত্রীদের মালপত্র বারান্দায় রেখে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। বসার জন্য ইমিগ্রেশন কক্ষে কোনো জায়গা নেই। আর বাইরে টিনের একটি ছাউনি আছে, যেখানে ১৫/২০টি চেয়ার থাকলেও কোনো টেবিল নেই। অথচ ফরম পূরণ করতে টেবিল প্রয়োজন। ফরম পূরনের জন্য দেখা গেছে কেউ বারান্দার মেঝেতে বসে, আবার কেউ কেউ বিদ্যুৎতের জেনারেটরের ওপরে ফরম রেখে পূরণ করছেন। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে বিশ্রামের জন্যও জায়গা নেই। কক্ষটিতে এসির ব্যবস্থা থাকলেও ভিড় থাকায় যাত্রীদের লাইন কক্ষের বাইরে বারান্দায় চলে যায়। ফলে এসিগুলো চালানো সম্ভব হচ্ছে না। তীব্র গরমে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের পাশাপাশি বৈদ্যুতিক ফ্যানের ব্যবস্থা না থাকায় গরমে কষ্ট সহ্য করে ইমিগেশনের কাজ শেষ করতে হয়।
তবে বিড়ম্বনা এখানেই শেষ নয়। কাস্টমসের কাজ করতে পাড়ি দিতে হচ্ছে অন্তত দুইশ গজ দূরবর্তী অন্য আরেকটি ভবনে। মূলত এক ভবন ও এক ছাদের নিচে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের কাজ করতে না পারায় তাদের দুর্ভোগের মাত্রা আরও বেড়ে যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯৪ সালে চালু হয় আখাউড়া স্থলবন্দরের কার্যক্রম। সুবিধাজনক ভৌগলিক অবস্থান হওয়ায় এ বন্দর দিয়ে যাত্রী পারাপারের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, ফেনী, চট্টগ্রাম, ঢাকা ও সিলেট থেকে অনেকেই আখাউড়া ইমিগ্রেশন ব্যবহার কররে ভারতে যাতায়াত করছেন।
কাস্টমস সূত্র জানায়, এ ইমিগ্রেশন ব্যবহার করে প্রতিদিন অত্যন্ত এক হাজার যাত্রী দুই দেশে যাতায়াত করছেন। এর মধ্যে পাঁচ শতাধিক যাত্রী ভারতে যান। যা থেকে প্রতি মাসে ৭৫ লাখ টাকা আয় হয়ে থাকে সরকারের। বিগত ছয় মাসে চার কোটি ৫০ লাখ টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে।
এদিকে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে আখাউড়া চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন আধুনিক ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হলেও ২০১৭ ও ২০১৯ সালে সীমান্ত আইনের অজুহাতে বিএসএফ নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়।
মৌলভীবাজার জেলা থেকে ভারতগামী বাংলাদেশি যাত্রী সুমন আহমেদ বলেন, আমি ইমিগ্রেশনের পরিবেশ দেখে হতবাক হয়ে গেছি। এখানে লাইনের কোনো শৃঙ্খলা নেই। কোনো ধরনের আধুনিকায়ন নেই। অথচ আগরতলা ইমিগ্রেশনের সব ধরনের সুযোগ সুবিধা রয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ফারহানা মিলি নামে এক নারী চিকিৎসক তার বাবার চিকিৎসা জন্য ভারতে যাওয়া সময় আক্ষেপ করে বলেন, আগরতলা ইমিগ্রেশন ও আখাউড়া ইমিগ্রেশনের মধ্যে অনেক পার্থক্য। আমাদের এখানে ভালো ব্যবস্থা নেই। মালপত্র রাখার জায়গা পাই না। আরেকজনের কাছে পাহারা দিয়ে রাখতে হয়। বছরের কয়েকবার যেতে হয়। তবে এর উন্নতি দেখছি না। এখানে দ্রুত উন্নয়নের ছোঁয়া লাগুক সেই কামনা করি।
মুক্তি খান নামে এক যাত্রী বলেন, বর্তমানে আখাউড়া ইমিগ্রেশন ভবন নামেমাত্র টিকে আছে। জোড়াতালি দিয়ে সংস্কার করে কোনোমতে ঝুঁকি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা হচ্ছে। স্থায়ী ভবন তৈরির পর এক ছাদের নিচে সব পরিষেবা পাওয়া গেলে বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের নাগরিকদের পাশাপাশি বিদেশিদের আসা যাওয়া আরও বেড়ে যাবে। যাত্রীদের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগও লাঘব হবে।
জেলা পুলিশ সুপার মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ ইমিগ্রেশন দিয়ে যাত্রী পারাপারের সংখ্যা আগের চেয়ে কয়েকগুণ বেড়েছে। প্রতিদিন এক হাজারেরও বেশি যাত্রী পারাপার হচ্ছেন। তবে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম চালানোর জন্য যে ধরনের সুযোগ সুবিধা আছে, তা খুবই অপ্রতুল। নতুন ইমিগ্রেশন ভবনের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে সেবার মান বাড়বে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম বলেন, এ ইমিগ্রেশন দিয়ে দুই দেশের বিপুল সংখ্যক যাত্রী যাতায়াত করলেও ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের পর্যাপ্ত সুবিধার কমতি রয়েছে। আমাদের নতুন একটি ইমিগ্রেশন ভবন নির্মাণ কাজ চলছিল, তা বিএসএফের বাধায় বন্ধ রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভারত ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে কথা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি পেলে আমরা ভবনটির কাজ আবার শুরু করতে পারব। এছাড়া বলে রাখি, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এখানে একটি আধুনিক বন্দর নিমার্ণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ৩.৫৭ একর জমি অধিগ্রহণের কাজ হাতে নিয়েছি। এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে। তখন স্থলবন্দর, ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসসহ বন্দর সংশ্লিষ্ট সব কার্যক্রম আরও বেগবান হবে। যাত্রীসেবার মানও উন্নত হবে।
তিনি আরো বলেন, আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত চারলেন সড়ক নির্মাণ কাজ শেষ হলে এবং আধুনিক স্থলবন্দরটি তৈরি হলে আখাউড়াই হবে বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য স্থলবন্দর।
চলারপথে রিপোর্ট :
৬ ডিসেম্বর আখাউড়াবাসীর জন্য স্মরণীয় দিন। ১৭৭১ সালের এই দিনে আখাউড়া এলাকার মানুষ পাকিস্তানি বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয়।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ভারত সীমান্তবর্তী হওয়ায় মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে এই এলাকায় পাকিস্তানি সেনাদের সম্মুখযুদ্ধ হয়। ১৯৭১ সালের ২৩ আগস্ট পাকিস্তানি বাহিনী আখাউড়া উপজেলার গঙ্গাসাগরে গণহত্যা চালায়। ওই দিন একই গ্রামের ২৭ জনসহ ৩৩ জনকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে হানাদাররা। ১৮ এপ্রিল আখাউড়া রণাঙ্গনে পাকিস্তানি সেনাদের গুলিতে শহীদ হন বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহি মোস্তফা কামাল।
১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর ও ১ ডিসেম্বর উপজেলার আজমপুর ও রাজাপুর এলাকায় পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর যুদ্ধ হয়। ৩ ডিসেম্বর হওয়া যুদ্ধে দখলদার বাহিনীর ১১ সেনা নিহত ও মুক্তিবাহিনীর ২ জন শহীদ হন। ৪ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী মিলে আখাউড়া আক্রমণ করে। ওই দিন আজমপুরে শহীদ হন লেফটেন্যান্ট ইবনে ফজল বদিউজ্জামান।
৫ ডিসেম্বর সারা দিন ও রাত যুদ্ধের পর ৬ ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত হয় আখাউড়া।
চলারপথে রিপোর্ট
একটি আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে দুই নারীসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। আজ ২৯ নভেম্বর শুক্রবার দুপুরে গ্রেফতারকৃতদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ভূঁইয়া আবাসিক হোটেলের কর্মচারী হবিগঞ্জের মাধবপুরের পিয়াম গ্রামের জাবেদ আলীর ছেলে আলম, আখাউড়া উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের ফরিদ মিয়ার মেয়ে তিশা আক্তার ও ময়মনসিংহের ফুলপুরের ছোট শুনোই গ্রামের রুকন মিয়ার স্ত্রী শান্তা।
আজ দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া থানা পুলিশ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানায়। এর আগে, পৌর শহরের সড়ক বাজার ভূঁইয়া আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে আবাসিক হোটেলগুলোকে অসামাজিক কার্যকলাপ চলছে। প্রকাশ্যে দিন-দুপুরে নির্ভয়ে আবাসিক হোটেলে যৌনকর্মীরা যাচ্ছেন। এতে করে বাজারের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।
পুলিশ জানায়, পৌর শহরের সড়ক বাজার এলাকায় ভূঁইয়া আবাসিক হোটেলে অসামাজিক কাজ চলছে গোপন সংবাদ মাধ্যমে খবর পেয়ে অভিযান চালানো হয়। এ সময় অসামাজিক কাজে জড়িত থাকায় দুই নারীসহ ৩ জনকে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়। আখাউড়া থানার ওসি মোহাম্মদ আবুল হাসিম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে অসামাজিক কাজে জড়িত থাকায় দুই নারীসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসব অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধে আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, অপরাধ নির্মূলে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় ভোট কেন্দ্রের নাম ও খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাদেকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত খসড়া তালিকাটি উপজেলা নির্বাচন অফিস, পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পরিষদের নোটিশ বোর্ডে প্রকাশ করা হয়েছে। তবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত ভোটার স্থানান্তর ও হালনাগাদ কার্যক্রম চলবে।
প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী আখাউড়ায় ১ টি পৌরসভা ও ৫ টি ইউনিয়নে ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৪৪ টি এবং ভোট কক্ষ ২৬৫ টি। মোট ভোটার সংখ্যা ১ লক্ষ ২৫ হাজার ১৬ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৬৩ হাজার ৮৭১ এবং মহিলা ভোটার ৬১ হাজার ১৪৫ জন। পূর্বের ৫টি কেন্দ্রের স্থান পরিবর্তন করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, খসড়া ভোট কেন্দ্রের উপর যদি কারো কোন দাবি, আপত্তি বা সুপারিশ থাকে তাহলে ৩১ আগস্টের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা অথবা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত আবেদন করতে হবে। এরপর আর কোন আপত্তি গ্রহন করা হবে না। ১১ সেপ্টেম্বর আপত্তি নিষ্পত্তির শেষ তারিখ।
আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর খসড়া ভোট কেন্দ্রের তালিকা চূড়ান্ত হবে। স্থান পরিবর্তিত ৫ টি কেন্দ্র হলো জাহানারা বেগম নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আখাউড়া টেকনিক্যাল আলীম মাদরাসা, রহিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নুরপুর রুটি আব্দুল হক ভূইয়া উচ্চ বিদ্যালয় এবং ঘোলখার রানিখার উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র। স্থান সংকুলান না হওয়ায় বাদ দেওয়া হয়েছে টানপাড়া হাফেজিয়া মাদরাসা, পীর শাহ সুলতান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দেবগ্রাম, নুরপুর ক্যাপ্টেন মাহবুব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ঘোলখার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
উপজেলা নির্বাচন অফিসার সুফিয়া সুলতানা বলেন, গত নির্বাচনে ৪৪ টি কেন্দ্র ছিল। এবছরও তাই আছে। স্থান সংকুলান না হওয়ায় ৫টি কেন্দ্র স্থান পরিবর্তন করা হয়েছে। এসব বিষয়ে কারো কোন আপত্তি থাকলে ৩১ আগস্টের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ লিখিত আবেদন করতে হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে ভ্রমণ কর জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে কাস্টমস ভবনে সোনালি ব্যাংক বুথে কর্মরত উত্তম চক্রবর্তী, কাস্টমসের উপ-পরিদর্শক জয়নাল আবেদীন ও বিমল চন্দ্র দাসের যোগসাজশে ভারতগামী যাত্রীদের দেওয়া ভ্রমণ করের টাকা দীর্ঘদিন থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছেন। আর এতে করে সরকার বিপুল পরিমান হারাচ্ছে রাজস্ব।
জানা যায়, আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে প্রতিদিন যাত্রী পারাপার হয় ৮০০ থেকে ১ হাজার জন। এসময় ভারতগামী যাত্রী প্রতি ১ হাজার টাকা ভ্রমণ কর পরিশোধ করতে হয়।
অভিযোগ উঠেছে, যাত্রীদের সেই অর্থ জালিয়াতির মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে এই অসাধু চক্র। এই চক্রটি ইমিগ্রেশনে জমা দেওয়া ভ্রমণ করের রশিদ সংগ্রহ করে পুনরায় অন্য যাত্রীকে দিয়ে দিচ্ছে ফলে রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ২ ফেব্রুয়ারি এপথে ৫ জন ভারতীয় নাগরিক ভারত ফেরার পথে ভ্রমণ ট্যাক্সের রশিদে পাসপোর্ট নম্বর দেখে ইমিগ্রেশন পুলিশের সন্দেহ হয়। পরে রশিদসহ ওই ৫ ভারতীয় নাগরিককে আটক করা হয়। কারণ তাদের ভ্রমণ করের রশিদে বাংলাদেশী পাসপোর্ট নম্বর দেওয়া ছিলো। যদিও পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এর আগেও এমন জালিয়াতি রশিদ ধরা পরলেও ওই চক্রের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয় নাই।
কাস্টমসের উপ-পরিদর্শক জয়নাল আবেদীনকে ফোন করা হলে তিনি একটি অনুষ্ঠানে আছেন বলে ফোন কেটে দেন। আর বিমল চন্দ্র দাসের ফোনে একাধিক বার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
আখাউড়া ইমিগ্রেশন ইনচার্জ হাসান আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না। বিষয়টি আমার জানা নেই। ৫জন যাত্রী আটকের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের সামান্য সমস্যা ছিলো। সমস্যা সমাধানের পর তারা চলে গেছে।