আজ মহান বিজয় দিবস

জাতীয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 15 December 2022, 2173 Views,

স্টাফ রিপোর্টার:
আজ মহান বিজয় দিবস, বাঙালি জাতির হাজার বছরের শৌর্যবীর্য এবং বীরত্বের এক অবিস্মরণীয় গৌরবময় দিন। বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার দিন। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন ভূখন্ডের নাম জানান দেয়ার দিন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৪৮ সাল থেকে ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৬’র ছয় দফা, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১ এর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, ২৫ মার্চে গণহত্যা শুরু হলে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা, ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠন এবং রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ৩০ লাখ শহীদ ও দু’লাখ মা-বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাক সেনাদের আত্ম সমর্পণের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। সেই হিসাবে বিজয়ের ৫১ বছর পূর্তির দিন কাল। জাতীয় পর্যায়ে এদিন ঢাকায় প্রত্যুষে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তববক অর্পণ করবেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর নেতৃত্বে উপস্থিতিতে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। বাংলাদেশে অবস্থনরত বিদেশি কূটনীতিকবৃন্দ, মুক্তিযুদ্ধে মিত্রবাহিনীর সদস্য হিসেবে অংশগ্রহণকারী আমন্ত্রিত ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্যগণ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।
এছাড়া সকাল সাড়ে ১০টায় তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে সম্মিলিত বাহিনীর বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে। রাষ্ট্রপতি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করবেন। প্রধানমন্ত্রীও এ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বাণী দিয়েছেন। দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এদিন সংবাদপত্রসমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। এ উপলক্ষ্যে ইলেকট্রনিক মিডিয়াসমূহ মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতি পরাধীনতার শেকল ভেঙ্গে প্রথম স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ করে। ২৪ বছরের নাগপাশ ছিন্ন করে জাতির ভাগ্যাকাশে দেখা দেয় এক নতুন সূর্যোদয়। প্রভাত সূর্যের রক্তাভা ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে। সমস্বরে একটি ধ্বনি যেন নতুন বার্তা ছড়িয়ে দেয় ‘জয়বাংলা’ বাংলার জয়, পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে, রক্ত লাল, রক্ত লাল, রক্ত লাল। মহামুক্তির আনন্দ ঘোর এই দিনে এক নতুন উল্লাস জাতিকে প্রাণ সঞ্চার করে সজিবতা এনে দেয়। যুগ যুগ ধরে শোষিত বঞ্চিত বাঙালি চোখে আনন্দ অশ্রু আর ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তা নিয়ে এগিয়ে যায় সামনে। বিন্দু বিন্দু স্বপ্নের অবশেষে মিলিত হয় জীবনের মোহনায়। বিশ্ব কবির সোনার বাংলা, নজরুলের বাংলাদেশ, জীবনানন্দের রূপসী বাংলা, রূপের তাহার নেইকো শেষ, বাংলাদেশ আমার বাংলাদেশ। বাঙালি যেন খুঁজে পায় তার আপন সত্তাকে।
আদি বাঙালির সাংস্কৃতিক ও আর্থ-সামাজিক জীবন এবং ক্রমবিকাশের চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে বাঙালির শৌর্য-বীর্য যেন আর একবার ধপ করে জ্বলে উঠে। প্রথম আগুন জ্বলে ’৫২-র একুশে ফেব্রুয়ারি। ফাগুণের আগুনে ভাষা আন্দোলনের দাবি আর উন্মাতাল গণমানুষের মুষ্টিবদ্ধ হাত একাকার হয়ে যায় সেদিন। ভাষার জন্য প্রথম বলীদান বিশ্ববাসী অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করে। সেই থেকে শুরু হয়ে যায় বাঙালির শেকল ভাঙার লড়াই। পাকিস্তানিদের সাথে হিসেব-নিকেশের হালখাতার শুরুতেই রক্তের আঁচড় দিয়ে বাঙালি শুরু করে তার অস্তিত্বের লড়াই। পলাশীর আম্রকাননে হারিয়ে যাওয়া সেই সিরাজদ্দৌলা আবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রূপে এ লড়াইয়ে সেনাপতি হিসেবে আবির্ভূত হন। ’৫২ সালে যে আগুন জ্বলেছিল রাজধানী ঢাকা শহরে সে আগুন যেন ক্রমান্বয়ে ছড়িয়ে পড়তে থাকে দেশের আনাচে-কানাচে সবখানে। যে আগুন জ্বলেছিল মোর প্রাণে, সে আগুন ছড়িয়ে গেল সবখানে সবখানে সবখানে। বাঙালির বুকের ভেতর জ্বলে উঠা আগুন যেন সহস্র বাঙালির মধ্যে প্রবাহিত হতে থাকে।
বাষট্টি, ঊনসত্তর এবং সত্তর শেষ করে একাত্তরে বাঙালি জাতি হিসাব করতে বসে। হিসেব-নিকেশ আর দেনা-পাওনায় পাকিস্তানিরাও বসে নেই। তারাও অংক কষতে থাকে কিভাবে বাঙালি জাতিকে যুগ যুগ ধরে পরাধীনতার শেকল পরিয়ে রাখা যায়। তাদের কাছে এই অলংকারই বাঙালির শ্রেষ্ঠ প্রাপ্য। ঘড়ির কাঁটার টিক টিক শব্দ জানিয়ে যায় সময় আসছে হিসেব নিকেশ চুকিয়ে দেয়ার পালা। অবশেষে গভীর কালো নিকষ আঁধার থেকে জেগে উঠে হিরন্ময় হাতিয়ার। ৭ মার্চ একাত্তরের বিশাল জনসমুদ্র থেকে যুগের কবি, মহাকাব্যের প্রণেতা বঙ্গবন্ধু বজ্রকণ্ঠ ঘোষণা দেন ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তি সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। রক্ত যখন দিয়েছি তখন আরো দেব, তবুও এদেশকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ। এই একটি মাত্র উচ্চারণে যেন বাঙালি সত্যিকার দিক-নির্দেশনা পেয়ে যায়। চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে থাকে বাঙালি। বাঙালি বুঝে যায় শেষ কামড় দেয়ার সময় আসন্ন। পাকিস্তানিরাও আর বসে নেই। পুরো জাতিকে স্তব্ধ করার লক্ষ্যে মারাত্মক মারণাস্ত্র নিয়ে ২৫ মার্চ একাত্তর ঘুমন্ত জাতির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। শুরু হয় বাঙালি নিধন যজ্ঞ। বাতাসে লাশের গন্ধ, বারুদে বারুদে আর ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন আকাশ। এ যেন এক প্রেতপুরী। আকাশে শকুনের উদ্যত থাবা, নিচে বিপন্ন মানুষের বিলাপ। হায় বাংলাদেশ। একি বাংলাদেশ। এ যেন এক জ্বলন্ত শ্মশান। কিন্তু ঠিকই হাড়ের আর খুলির স্তুপ একদিন পাললিক হয়।
মুক্তি পাগল বাংলার দামাল ছেলেরা স্বাধীনতার রক্ত সূর্যকে ছিনিয়ে আনবে বলে একদিন অস্ত্র কাঁধে তুলে নেয়। ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, কৃষক, শ্রমিক, কামার, কুমার সবাই শরিক হয়ে থাকে এ লড়াইয়ে। যতই দিন অতিবাহিত হতে থাকে আরো শাণিত হয় প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধার অস্ত্র। লক্ষ্য স্থির রেখে শত্রু হননে দৃঢ়তায় এগিয়ে যায় বীর বাঙালি। ইতোমধ্যেই বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থন স্পষ্ট হয়ে উঠে। প্রতিবেশী ভারতও জড়িয়ে পড়ে বাঙালির ভাগ্য যুদ্ধে। ডিসেম্বর শেষ পর্যায়ে এসে চূড়ান্ত রূপ নেয় এই যুদ্ধের।
অবশেষে ন’মাসের দুঃস্বপ্নের অবসান ঘটিয়ে বাঙালি জাতির জীবনে এলো নতুন প্রভাত। ১৬ ডিসেম্বর সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সূচিত হল মুক্তিযুদ্ধের অনিবার্য বিজয়। এর মধ্য দিয়ে এলো হাজার বছরের কাক্সিক্ষত স্বাধীনতা। বাঙালি জাতি এদিন অর্জন করে তার ভাগ্য নিয়ন্ত্রণের অধিকার। ৩০ লাখ শহীদের রক্ত আর ২ লাখ ধর্ষিতা মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে স্বাধীনতা ধরা দেয় বাঙালির জীবনে।

banner

Leave a Reply

জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন জামায়াতের আমির…

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান Read more

বাঞ্ছারামপুরে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি

চলারপথে রিপোর্ট : ৬ দফা দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য Read more

সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল গ্রেফতার

অনলাইন ডেস্ক : সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল Read more

রাইস কুকারে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মা-মেয়ের মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক : মাগুরার সদর উপজেলার টিলা গ্রামে রাইস কুকারে Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি

চলারপথে রিপোর্ট : সরকারি মেডিকেল কলেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় Read more

নাসিরনগরে মৎস্য আড়তে অভিযান, নিষিদ্ধ পিরানহা…

চলারপথে রিপোর্ট : বিক্রির জন্য রাখা নিষিদ্ধ পিরানহা মাছ জব্দ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিন চাঁদাবাজ গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খাটিহাতা (বিশ্বরোড) গোলচত্বর নামক এলাকায় চাঁদাবাজির Read more

সড়ক মেরামতের সপ্তাহ না পেরোতেই উঠে…

চলারপথে রিপোর্ট : সড়ক মেরামতের এক সপ্তাহ না পেরোতেই ইতিমধ্যে Read more

কসবায় গাঁজাসহ গ্রেফতার ১

চলারপথে রিপোর্ট : আজ ২৪ জুন মঙ্গলবার সকালে এস আই Read more

শাস্তি পেলেন ঋষভ পন্ত

অনলাইন ডেস্ক : আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট Read more

বাংলাদেশে গুগল পে এর উদ্বোধনী

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর ড. আহসান এইচ মনসুর Read more

যে কাজে নেক আমল নষ্ট হয়

ইসলাম ডেস্ক : মানুষের জীবনের সবচেয়ে মারাত্মক ক্ষতিকারক দিক হলো Read more

কারও সঙ্গে যুদ্ধে জড়ানোর ইচ্ছে নেই: প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, 12 July 2023, 1024 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
বর্তমান সরকার শুধু দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সশস্ত্র বাহিনীর সার্বিক উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

banner

তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের কারও সঙ্গে কোনো ধরনের যুদ্ধে জড়ানোর ইচ্ছে নেই। আমরা প্রকৃতপক্ষে কারও সঙ্গে যুদ্ধে জড়াতে চাই না। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি শুধু আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা।

আজ ১২ জুলাই বুধবার পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী বিএনএস শের-ই-বাংলা’র নবনির্মিত ঘাঁটি, ৪১টি পিসিএস-এর চারটি জাহাজ ও চারটি এলসিইউর কমিশনিং অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

শেখ হাসিনা বলেন, সরকার নৌবাহিনীসহ সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নে পদক্ষেপ নিয়েছে। এতে তারা আন্তর্জাতিক স্তরের যোগ্যতা ও মান অর্জনের মাধ্যমে দক্ষ হয়ে উঠেছে। আমরা সেই উদ্দেশ্যে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছি।

তিনি বলেন, হেলিকপ্টার কেনার পাশাপাশি সাগরে নজরদারি ও নিরাপত্তা জোরদার করতে বেশ কয়েকটি যুদ্ধজাহাজ নির্মাণের কাজ চলছে।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম শাহীন ইকবাল। শুরুতেই বিএনএস শেরে বাংলা, ৪১ পিসিএসের চারটি জাহাজ ও চারটি এলসিইউ-এর ওপর একটি অডিও-ভিজ্যুয়াল ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।

কমিশনিং অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম শাহীন ইকবাল বিএনএস শের-ই-বাংলার বেস কমান্ডার এবং চারটি জাহাজের কমান্ডার এবং ৪১ পিসিএসের চারটি এলসিইউ-এর কাছে কমিশনিং ফরমান হস্তান্তর করেন।

প্রধানমন্ত্রী বিএনএস শের-ই-বাংলা ঘাঁটি এবং ৪১ পিসিএসের চারটি জাহাজ ও চারটি এলসিইউ-এর নেমপ্লেটও উন্মোচন করেন।

এই প্রথমবারের মতো নৌ-ঐতিহ্য অনুযায়ী বিএনএস শের-ই-বাংলা ঘাঁটি, চারটি জাহাজ এবং চারটি এলসিইউতে জাতীয় পতাকা উড়ানো হয়। যা নৌবাহিনীতে ‘রঙ’ নামে পরিচিত।

তেলবাহী ট্রেনের একটি বগি লাইনচ্যুত

জাতীয়, 24 December 2023, 777 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় তেলবাহী ট্রেনের একটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। এতে সিলেট থেকে ঢাকা বা চট্টগ্রামের কোন ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়নি। আজ ২৪ ডিসেম্বর রবিবার সকাল ৯টা ২০ মিনিটে ঢাকা- চট্টগ্রাম রেল সড়কের মনতলা স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশনের মাস্টার (গ্রেড-৪) গৌর প্রসাদ দাশ।

banner

তিনি জানান, তেলবাহী ট্রেনটি চট্টগ্রাম থেকে শ্রীমঙ্গলের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল। সামান্য ত্রুটির কারণে ট্রেনের পেছনের বগিটি লাইনচ্যুত হয়।

তবে ট্রেনটি তৃতীয় লাইনে আটকা পড়ায় এতে অন্য কোন ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় হয়নি। বগিটি উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে। পরে বিকাল ৩টার দিকে রিলিফ ট্রেন এসে লাইনচ্যুত ট্রেনটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করার আগে অর্থনৈতিক সম্ভাবনা বিবেচনা করুন: প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, 7 May 2024, 603 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হলে দেশের অর্থনীতি কতটা চাঙ্গা হবে এবং স্থানীয়রা কতটা উপকৃত হবে তা বিবেচনায় নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।

banner

তিনি বলেন, আমাদের প্রথমে ভাবতে হবে ফলাফল কি হবে এবং বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করে একটি প্রকল্প নেওয়ার পরে জনগণ কতটা উপকৃত হবে। আমাদের দেশের উন্নয়ন এমনভাবে করতে হবে যাতে আমাদের সক্ষমতা বাড়বে এবং অন্যের উপর নির্ভরশীলতা কমবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ ৭ মে সকালে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে স্মার্ট বাংলাদেশ-২০৪১ বিনির্মাণে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের কার্যক্রমের রূপরেখা সংক্রান্ত উপস্থাপনা অবলোকনকালে এ কথা বলেন।

রূপরেখা প্রত্যক্ষ করার পর, প্রধানমন্ত্রী প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন এবং অপ্রয়োজনীয় ব্যয় এড়াতে এবং প্রকল্পগুলো দ্রুত শেষ করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে অগ্রাধিকার দিতে বলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব কে এম সাখাওয়াত মুন এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে দেশের কতটা উন্নয়ন হবে এবং মানুষ কতটা উপকৃত হবে তা আপনাদের বিবেচনা করতে হবে। দ্রুত কিছু অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে বলে দেশবাসী এর সুফল পাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা একটি লক্ষ্য নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন। তিনি আরো বলেন, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর তার সরকারের প্রথম অগ্রাধিকার ছিল জনগণের জন্য খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

তিনি বলেন, গবেষণার মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির করে আমরা সফলভাবে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। তার সরকার রূপকল্প ২০২১ ঘোষণা করেছিল এবং উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি লাভের মধ্যদিয়ে সফলভাবে তা বাস্তবায়ন করেছে। এখন আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট দেশে রূপান্তর করা। আমরা সেই রূপকল্প বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি।

এসময় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।

৫০টি জেলায় ১০০টি রাস্তা-মহাসড়ক উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর

জাতীয়, 21 December 2022, 1492 Views,
স্টাফ রিপোর্টার:
১০০টি সেতু উদ্বোধনের দেড় মাস পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বুধবার সারাদেশের ৫০টি জেলায় ২০২১ দশমিক ৫৬ কিলোমিটার সম্মিলিত দৈর্ঘ্যের ১০০টি সড়ক ও মহাসড়ক উদ্বোধন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী গতকাল বুধবার সকালে রাজধানীতে তাঁর কার্যালয় থেকে মহাসড়কগুলো ভার্চুয়ালি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। সম্প্রতি আটটি বিভাগে অধিকাংশ রাস্তা নির্মাণ বা উন্নয়ন করা হয়েছে। ১০০টি মহাসড়কের মধ্যে ৯৯টি সরকারি তহবিল থেকে সম্পন্ন হয়েছে, বাকি একটি এবং ৭০ কিলোমিটার গাজীপুরের জয়দেবপুর থেকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা মহাসড়ক পর্যন্ত ৬১৬৮ দশমিক ৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ে চার লেনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে এডিবি, ওপেক ও আবুধাবির তহবিলের আওতায়। প্রধানমন্ত্রী এর আগে গত ৭ নভেম্বর সারাদেশের ২৫টি জেলায় ১০০টি সেতুর উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনকৃত রাস্তাগুলোর মধ্যে শুধু বিদেশি ঋণে ৭০ কিলোমিটার রাস্তার কাজ হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় দুই পাশে সার্ভিস লেন দিয়ে সড়কটি চার লেন করা হয়েছে। সড়ক ও মহাসড়কের একটি ২২,৭৭৪ কিলোমিটার সড়ক নেটওয়ার্ক রয়েছে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ সময় কৃষিমন্ত্রী ড. মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক উপস্থিত ছিলেন। মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী সড়কের সংক্ষিপ্ত উপস্থাপনা করেন।
উন্নয়ন করা মহাসড়কগুলোর মধ্যে ঢাকা প্রশাসনিক বিভাগের আওতায় রয়েছে ৩২টি, ময়মনসিংহ প্রশাসনিক বিভাগের আওতায় রয়েছে ৬টি, চট্টগ্রাম প্রশাসনিক বিভাগের আওতায় রয়েছে ১৫টি, সিলেট প্রশাসনিক বিভাগের আওতায় রয়েছে ৪টি, খুলনা প্রশাসনিক বিভাগের আওতায় রয়েছে ১৬টি, রংপুর প্রশাসনিক বিভাগের আওতায় রয়েছে ১৫টি, রাজশাহী প্রশাসনিক বিভাগের আওতায় রয়েছে ৮টি এবং বরিশাল প্রশাসনিক বিভাগের আওতায় রয়েছে ৪টি।
১০০ মহাসড়কগুলো হলো- ঢাকা প্রশাসনিক বিভাগের: ১. জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা সড়ক, ২. এলঙ্গা-জামালপুর জাতীয় মহাসড়ক, ৩. সালনা (রাজেন্দ্রপুর)-কাপাসিয়া-টোক-মঠখোলা মহাসড়ক, ৪. মাওনা-ফুলবাড়ীয়া-কালিয়াকৈর-ধামরাই-নবীনগর (ঢুলিভিটা) মহাসড়ক, ৫. হেমায়েতপুর-সিংগাইর-মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক, ৬. জিঞ্জিরা-কেরাণীগঞ্জ-নবাবগঞ্জ-দোহার-শ্রীনগর মহাসড়ক (কদমতলী থেকে জনি টাওয়ার লিংকসহ), ৭. ইজতেমা মহাসড়ক (আর-৩০৩), ৮. ভবেরচর-গজারিয়া-মুন্সীগঞ্জ জেলা মহাসড়ক, ৯. জিরাবো-তৈয়বপুর-দিয়াখালী-তাজপুর জেলা মহাসড়ক, ১০. মাতুয়াইল-নিউটাউন-কোনাপাড়া-মানিকান্দি-শেখেরজায়গা জেলা মহাসড়ক, ১১. তুরাগ-রুহিতপুর-বাউরভিটা জেলা মহাসড়ক (জেড-৫০৫৯), ১২. শ্রীপুর-বৈরাগীরচালা জেলা মহাসড়ক, ১৩. কালীগঞ্জ-তুমুলিয়া-উলুখোলা জেলা মহাসড়ক, ১৪. গোলড়া-সাটুরিয়া জেলা মহাসড়ক, ১৫. নিমতলী-সিরাজদিখান-কাকালদী জেলা মহাসড়ক, ১৬. মুন্সীগঞ্জ (হাসাড়া)-আলমপরি-শিবরামপুর-(সিরাজদীখান)-নওয়াবপুর (কাসুর) জেলা মহাসড়ক, ১৭. শিবপুর-দুলালপুর-লাকপুর-হাতিরদিয়া জেলা মহাসড়ক, ১৮. জিহাসতলা-শেখেরচর জেলা মহাসড়ক, ১৯. রাজবাড়ি-বাগমারা জৌকুড়া ফেরিঘাট সংযোগ সড়ক, ২০. আহ্লাদীপুর-রাজবাড়ি-পাংশা-কুমারখালী-কুষ্টিয়া সড়ক (তত্ত্বীপুর-মাচমাড়া অংশসহ), ২১ শরীয়তপুর-নড়িয়া (ভোজেস্বর বাইপাসসহ) সড়ক, ২২ বোয়ালমারি (সাতৈর) মোহাম্মাদপুর সড়ক, ২৩. রাজবাড়ী-বালিয়াকান্দি-জামালপুর-মধুখালী সড়ক, ২৪ বিজয়পাশা-তালারহাট-জয়নগরঘাট সড়ক, ২৫. গোয়ালন্দ (জামতলা) গোদারবাজার-পাংশা-হাবাসপুর সড়ক, ২৬. ভাঙ্গাব্রীজ-বোতলা-কমলাপুর-আইসার-ধামুসা-পিরেরবাড়ী-সড়ক, ২৭. পাকুল্লা-দেলদুয়ার-এলাসিন সড়ক প্রশস্তকরণ (দেলদুয়ার-এলাসিন অংশ), ২৮. ভাতকুড়া (করটিয়া)-বাসাইল-সখিপুর সড়ক প্রশস্তকরণ (ভাতকুড়া-বাসাইল অংশ), ২৯. টাঙ্গাইল-দেলদুয়ার সড়ক, ৩০. ঘাটাইল (পোড়াবাড়ী)-শালিয়াজানী-গোপালপুর-সরিষাবাড়ী (জগন্নাথগঞ্জ) সড়ক, ৩১. ভরাডোবা-সাগরদিঘী-ঘাটাইল-ভূঞাপুর সড়ক, ৩২. উজানপুর-বাজিতপুর-অষ্টগ্রাম সড়ক।
ময়মনসিংহ প্রশাসনিক বিভাগের: ৩৩. ইসলামপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিস-হাকিম চেয়ারম্যানবাড়ি-ঋষিপাড়া সড়ক, ৩৪. নান্দাইল-আঠারবাড়ী-কেন্দুয়া সড়ক, ৩৫. ময়মনসিহ-গফরগাঁও-টোক সড়ক, ৩৬. নেত্রকোণা-পূর্বধলা-হোগলা-ধোবাউড়া সড়ক (জেড-৩৭০৭) (নেত্রকোনা-নারায়নডহর পর্যন্ত), ৩৭. ত্রিশাল-বালিপাড়া-নান্দাইল (কানুরামপুর) সড়ক, ৩৮. ভালুকা-গফরগাঁও-হোসেনপুর সড়ক।
চট্টগ্রাম প্রশাসনিক বিভাগের: ৩৯. হাটহাজারী-ফটিকছড়ি-মানিকছড়ি-মাটিরাঙ্গা-খাগড়াছড়ি সড়ক, ৪০. বারৈয়ারহাট-হেঁয়াকো-নারায়নহাট-ফটিকছড়ি সড়ক (হেঁয়াকো-ফটিকছড়ি অংশ), ৪১. রাউজান-বাহ্মনছড়ি (শহীদ জাফর সড়ক), ৪২. প্রীতিলতা সড়ক (পটিয়া-বোয়াখালী-কানুনগোপাড়া সড়ক), ৪৩. মইজ্জারটেক-বোয়ালখালী-কানুনগোপাড়া-উদরবন্যা সড়ক, ৪৪. মইজ্জারটেক-বিএনডিসি মৎস বন্দর ফেরীঘাট সড়ক, ৪৫. ইয়াংচা-মানিকপুর-শান্তিবাজার সড়ক, ৪৬. লক্ষ্মীপুর-চরআলেকজান্ডার-সোনাপুর সড়ক, ৪৭ সোনাপুর (মান্নাননগর)-চরজববর-ষ্টীমারঘাট সড়ক, ৪৮. ভূঁঞারহাট-চেয়ারম্যানঘাট সড়ক, ৪৯. সোনাইমুড়ী-সেনবাগ-কল্যান্দী সড়ক, ৫০ চাঁপাপুর-টমছমব্রিজ-বার্ড-কালিরবাজার-বরুড়া সড়ক, ৫১. নিমসার-বরুড়া সড়ক, ৫২. খাজুরিয়া-পয়েলগাছা-বরুড়া সড়ক, ৫৩. লাকসাম (বিনয়ঘর)-বাইয়ারাবাজার-ওমরগঞ্জ-নাঙ্গলকোট সড়ক।
সিলেট প্রশাসনিক বিভাগের: ৫৪. জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়ক [আগের নাম: সিলেট (ওসমানী বিমানবন্দর বাইপাস)-সালুটিকর-কোম্পানীগঞ্জ সড়ক], ৫৫. কুলাউড়া-পৃথিমপাশা-হাজীপুর-শরিফপুর জেলা মহাসড়ক (জেড-২৮২২), ৫৬. চুনারুঘাট-সাটিয়াজুড়ী-নতুনবাজার সড়ক, ৫৭. সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক।
খুলনা প্রশাসনিক বিভাগের: ৫৮. যশোর-বেনাপোল সড়ক, ৫৯. দৌলতদিয়া-ফরিদপুর (গোয়ালচামট)-মাগুরা-ঝিনাইদহ-যশোর-খুলনা-মোংলা (দ্বিগরাজ) সড়ক (মাগুরা শহর অংশ), ৬০. খুলনা-চুকনগর-সাতক্ষীরা সড়ক (খুলনা অংশ), ৬১ খুলনা-চুকনগর-সাতক্ষীরা সড়ক (সাতক্ষীরা অংশ), ৬২. নওয়াপাড়া-বাগেরহাট-পিরোজপুর সড়ক, ৬৩. আহলাদিপুর-রাজবাড়ী-পাংশা-কুমারখালী-কুষ্টিয়া (চৌরহাস) সড়ক, ৬৪. চড়াইকোল আর-৭১১-শিলাইদহ লিংক রোড সড়ক, ৬৫. বাগেরহাট-চিতলমারী সড়ক, ৬৬. চিতলমারী-পাটগাতী (টুঙ্গিপাড়া) সড়ক, ৬৭. আড়পাড়া-কালিগঞ্জ সড়ক (ঝিনাইদহ অংশ), ৬৮. আড়পাড়া-কালিগঞ্জ সড়ক (মাগুরা অংশ), ৬৯. আড়পাড়া-শালিখা সড়ক, ৭০. খালিশপুর-মহেশপুর-দত্তনগর-জিন্নানগর-যাদবপুর সড়ক, ৭১. চুড়ামনকাঠি-চৌগাছা সড়ক, ৭২. নড়াইল-ফুলতলা সড়ক, ৭৩. কচুয়া (পিংগুরিয়া)-তেলিগাতী-হেরমা-রামপাল সড়ক।
রংপুর প্রশাসনিক বিভাগের: ৭৪. খানসামা-রানীরবন্দর সড়ক, ৭৫. বীরগঞ্জ-খানসামা-দারোয়ানী সড়ক, ৭৬. চিরিরবন্দর-আমতলী বাজার সড়ক, ৭৭. বীরগঞ্জ-কাহারোল সড়ক, ৭৮. পঞ্ছগড়-গোয়ালপাড়া-রুহিয়া, ৭৯. গাইবান্ধা-গোবিন্দগঞ্জ ভায়া নাকাইহাট জেলা মহাসড়ক, ৮০. সোনাহাট সেতু এ্যাপ্রোচ হতে সোনাহাট স্থলবন্দর পর্যন্ত সড়ক, ৮১. নীলফামারী বাইপাস সড়ক, ৮২. রানীসংকৈল-হরিপুর সড়ক, ৮৩. জয়পুরহাট-রাজাবিরাট-গোবিন্দগঞ্জ সড়ক, ৮৪. ধূপণী বেলকা সড়ক, ৮৫. দারিয়াপুর-কামারজানি সড়ক, ৮৬. মধুপুর-শ্যামপুর জেলা মহাসড়ক, ৮৭. সাহেবগঞ্জ-হারাগাছ জেলা মহাসড়ক, ৮৮. লালমনিরহাট-মোঘলহাট সড়ক।
রাজশাহী প্রশাসনিক বিভাগের: ৮৯. জয়পুরহাট-আক্কেলপুর-বদলগাছি সড়ক, ৯০. ক্ষেতলাল-গোপিনাথপুর-আক্কেলপুর সড়ক, ৯১. নন্দিগ্রাম -তালোড়া-দুপচাঁচিয়া-আক্কেলপুর জেলা মহাসড়ক, ৯২. নন্দিগ্রাম-কালিগঞ্জ-রাণীনগর জেলা মহাসড়ক, ৯৩. হরিশপুর বাইপাস মোড় হতে বনবেলঘরিয়া বাইপাস মোড় সড়ক, ৯৪. রাজশাহী-নওহাটা-চৌমাসিয়া সড়ক, ৯৫. সিরাজগঞ্জ-কড্ডা-সমেশপুর সড়ক, ৯৬. উল্লাপাড়া-লাহিড়ীমোহনপুর-ভাঙ্গুড়া (ময়দানদিঘী বাজার) সড়ক।
বরিশাল প্রশাসনিক বিভাগের: ৯৭. বরিশাল-ঝালকাঠি-ভান্ডারিয়া-পিরোজপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক, ৯৮. পটুয়াখালী-আমতলী-বরগুনা-কাকচিড়া আঞ্চলিক মহাসড়ক, ৯৯. মাদারীপুর-পাথারিয়ারপাড়-ডাসার-আগৈলঝড়া জেলা মহাসড়ক ও ১০০. গুইংগারহাট-চরপাতাস্কুল-দলিলখাঁর হাট-দৌলতখান হ্যালিপ্যাড-দৌলতখান বাজার জেলা মহাসড়ক।

আজ জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী

জাতীয়, 30 May 2025, 160 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী আজ। ১৯৮১ সালের এই দিনে দিবাগত রাতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে একদল বিপথগামী সৈনিকের হাতে তিনি শাহাদাতবরণ করেন। সেই থেকেই তাঁর প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপি দিবসটিকে যথাযথ মর্যাদায় শাহাদাতবার্ষিকী হিসেবে পালন করে আসছে। প্রতি বছরই দিবসটি উপলক্ষে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, দোয়া-মোনাজাতে দল ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী অংশ নেন। অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা, থাকে কয়েক দিনব্যাপী কর্মসূচি।

banner

জিয়াউর রহমান তাঁর ঘটনাবহুল কর্মময় জীবনের কারণেই মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। তাঁর সততা, নিষ্ঠা, দেশপ্রেম, পরিশ্রম, নেতৃত্বের দৃঢ়তাসহ নানা গুণাবলি এ দেশের গণমানুষের হৃদয় স্পর্শ করেছিলেন।

জিয়াউর রহমান ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়ার গাবতলীর বাগবাড়িতে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মনসুর রহমান কলকাতায় প্রধান কেমিস্ট হিসেবে সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত ছিলেন। শৈশব ও কৈশোরের একটি সময় গ্রামে কাটিয়ে জিয়া পিতার সঙ্গে কলকাতায় এবং দেশ বিভাগের পর করাচিতে চলে যান। শিক্ষাজীবন শেষে ১৯৫৩ সালে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি কাকুলে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে ভর্তি হন।

১৯৫৫ সালে তিনি কমিশন লাভ করেন। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধে খেমকারান সেক্টরে অসীমসাহসিকতার সঙ্গে একটি কোম্পানির অধিনায়ক হিসেবে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। তাঁর কোম্পানি যুদ্ধে সবচেয়ে অধিক সাফল্য ও খেতাব লাভ করে। সৈনিক জীবনে তিনি যেমন চরম পেশাদারত্ব দেখিয়েছেন, তেমনি জাতীয় জীবনের সব সংকটে শক্ত হাতে হাল ধরেছেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী যখন নিরস্ত্র জনতার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। মেজর জিয়াউর রহমানই তখন চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। ৯ মাসের মুক্তিসংগ্রামে তিনি একটি সেক্টরের অধিনায়ক হিসেবে সমরনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। পাশাপাশি জেড ফোর্সের কমান্ডার হিসেবে নেতৃত্ব দেন। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি বীরউত্তম খেতাব লাভ করেন।

১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হওয়ার পর ওই বছরের ৭ নভেম্বর এক বিশেষ প্রেক্ষাপটে সিপাহি-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর আগে ৩ নভেম্বর ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে সামরিক অভ্যুত্থানে খোন্দকার মোশতাক আহমদ ক্ষমতাচ্যুত হন এবং সেনাবাহিনীর তৎকালীন প্রধান মেজর জেনারেল জিয়াকে গৃহবন্দি করা হয়। সেনাবাহিনীতে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে। চারদিকে এক অনিশ্চয়তার মধ্যে আধিপত্যবাদের শ্যেনদৃষ্টিতে উৎকণ্ঠিত ছিল সারা জাতি। ৭ নভেম্বর সিপাহি-জনতার মিলিত প্রয়াসে জিয়াকে মুক্ত করা হয় এবং নেতৃত্বের হাল ধরেন তিনি।

গভীর দেশপ্রেমের গুণাবলি দিয়ে জিয়াউর রহমান জাতির মধ্যে নতুন করে জাগরণের সৃষ্টি করেন। দেশের মানুষের উপযোগী একটি স্বতন্ত্র জাতীয়তাবাদী আদর্শের বাস্তবায়ন ঘটান। দেশে ঐক্যের রাজনীতি চালু করে সবাইকে এককাতারে নিয়ে আসেন তিনি। তাঁর প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল বিএনপিতে একদিকে যেমন চরম বামপন্থিরা স্থান পান তেমনি চরম ডানপন্থিরাও জায়গা করে নেন। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন, বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেন। মাত্র ছয় বছরের জন্য রাষ্ট্রপরিচালনার সুযোগ পেয়ে তিনি বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন এবং তলাবিহীন ঝুড়ির অপবাদ থেকে দেশ ও জাতিকে মুক্ত করেন। বিশ্বদরবারে বাংলাদেশকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সাহস জোগান। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীকে নতুনভাবে ঢেলে সাজিয়েছিলেন। মৃত্যুর পর ঢাকায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত তাঁর স্মরণকালের জানাজায় প্রমাণিত হয় তিনি কত জনপ্রিয় ছিলেন।