শফিকুল ইসলাম বাদল :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা নবীনগর উপজেলার নবীনগর পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের ভোলাচং গ্রামের রঞ্জিত পোদ্দার দীর্ঘ ২২ বছর যাবত তাঁর উদ্ভাবিত প্রযুক্তিতে নিজ হাতে তৈরি করেন সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যসম্মত চানাচুর। প্রথম দিকে তিনি অল্প পরিমানে এ চানাচুর বানিয়ে তাঁর ডালপুরী- সিঙ্গারার দোকানে বিক্রি করতে শুরু করলে দ্রুত আশেপাশের এলাকায় এ চানাচুরের জনপ্রিয়তা ও চাহিদা বেড়ে যায়। অল্প সময়ের মধ্যে দুর-দুরান্ত থেকে এমন কি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত বাংলাদেশীরা ও এ চানাচুর খেতে ও পরিবার-আত্মীয় স্বজনদের জন্য নিতে আসেন ভোলাচং পশ্চিম বাজারে রঞ্জিত পোদ্দারের দোকানে। সেই ধারাবাহিকতায় রঞ্জিত পোদ্দার ও তার ছেলে শিবু শংকর পোদ্দার দীর্ঘ দিন ধরে কোন কেমিক্যাল বা রং ব্যবহার না করে বাড়িতেই চানাচুর তৈরি করে বিক্রি করে আসছেন। রঞ্জিতের তৈরি চানাচুরের ব্যবসায়িক নাম “রঞ্জিত চানাচুর”।
জানা যায়- ১৮০ টাকা কেজি দরে দৈনিক প্রায় ২২ থেকে ২৫ কেজি চানাচুর বিক্রি করেন তিনি । এতে যা আয় হয় তাতে ভাল ভাবেই চলে তাঁর সংসার। এ ব্যবসার জন্য জনতা ব্যাংকের লোন আছে কিন্ত বর্তমানে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী তাদের (রঞ্জিতের চানাচুর) নাম ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন স্থানে অবৈধ ভাবে এ তাদের নাম দিয়ে চানাচুর বিক্রি করে আসছেন। এতে ক্রেতারা হচ্ছেন বিভ্রান্ত ও প্রতারিত। ফলে বিক্রি যেমন কমে যাচ্ছে তেমনি বাড়ছে ব্যবসায় দুর্নাম। এ বিষয়ে ভোলাচং পশ্চিম বাজারে অবস্থিত রঞ্জিত পোদ্দারের “রঞ্জিত স্টোর” দোকানে গিয়ে খোঁজ করে জানা যায় – বার্ধ্যক জনিত কারনে রঞ্জিত পোদ্দার মারা গেছেন কয়েক বছর আগে। বর্তমানে দোকানটি পরিচালনা করছেন তার ছেলে শিবু শংকর পোদ্দার। তাঁর নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান- “আমার বাবা এ দোকানে এক সময় সিঙ্গারা-ডালপুরীরর সাথে তাঁর হাতে বানানো চানাচুর বিক্রি করতেন। তিনি সব সময় চাইতেন বাজারের অন্যান্য দোকানের সিঙ্গারা, সমুচ ও ডালপুরী থেকে তার বানানো গুলো যেন ভিন্ন স্বাদের মুখরোচক ও স্বাস্থ্য সম্মত হয়”। আমি সে গুনগত মান ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে নদী থেকে অধিক ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের দায়ে ৯ জনকে সাজা দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল শনিবার দুপুরে উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের জাফরাবাদ এলাকায় নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর ফরহাদ শামীম অভিযান চালিয়ে এ সাজা দেন।
সাজাপ্রাপ্ত হলেন বরগুনা কাউতলী উপজেলার লাউখাড়া এলাকার মো. নিয়ামুল ইসলাম, বরিশাল বাকেরগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুর এলাকার সিফুর রহমান, একই উপজেলার বীরাঙ্গল এলাকার রেজাউল করিম, একই জেলার মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার চরনন্দপুর এলাকার আজিজুল হক, একই এলাকার মো. মাইদুল, একই জেলার সদর উপজেলার টঙ্গীবাড়ি এলাকার মো. মনির, নরসিংদী সদর উপজেলার নেকজানপুর এলাকার এবাদুল্লাহ, ভোলা সদর উপজেলার নন্দনুর এলাকার ওমর ফারুক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগর উপজেলার চরমরিচাকান্দি এলাকার রাজিব মিয়া।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর ফরহাদ শামীম জানান, উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের জাফরাবাদ ও নতুনচর এলাকায় সরকার নির্ধারিত ড্রেজার মেশিনের চেয়ে অধিক ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করছে। খবর পেয়ে সেখানে অভিযান পরিচালনার সময় সরকার নির্ধারিত ড্রেজার মেশিন থেকে অধিক সংখ্যক ড্রেজার মেশিন দিয়ে নিয়ম বহির্ভূতভাবে বালু উত্তোলন করায় দায়ে ৯জনকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে নদীর তীরকে ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে ফেলার অপরাধে ৯ জনকে ২০দিন করে বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়। এ সময় বালু মহালের ইজারাদারকে ইজারার শর্ত মেনে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। জনস্বার্থে ভ্রাম্যমাণ আদালতের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। এ সময় নবীনগর থানা পুলিশ উপস্থিত ছিলো।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরের শিবপুরে সুর সম্রাট আলাউদ্দিন খাঁ ডিগ্রি কলেজে আজ ২০ ফেব্রুয়ারি সোমবার বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও জ্যেষ্ঠ প্রভাষক (বাংলা) মোহসিন সরকারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কলেজের গভর্ণিং বডির সভাপতি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা মো. আরিফুল ইসলাম ভূইয়া টিপু।
বিশেষ অতিথি ছিলেন সুবোধ চন্দ্র চৌধুরী, মো. আশরাফ হোসেন আকছির, মো. সোহরাওয়াদ্দিন চৌধুরী, যুবায়েরুল হক মৃধা, মো. মাইনুদ্দিন, মো. মোখলেছুর রহমান , মো. মোহসীন সরকার, মো. আনেয়ার হোসেন, রাজিয়া বেগম, স্বপন চন্দ্র চৌধুরী, মো.মোসলেম উদ্দিন।
বক্তব্য রাখেন শিবপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হোসাইন কবির ও সহকারী প্রধান শিক্ষক (অব.) খবির উদ্দিন প্রমুখ।
সকালে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন খেলায় তাদের মেধা ও যোগ্যতার মাধ্যমে বিজয় হওয়ার গৌরব অর্জন করায় বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর উপজেলায় তিতাস নদীতে ব্রিজের পিলারের সঙ্গে ধাক্কায় নৌকা ডুবিতে সংঘর্ষে নবম শ্রেণির ছাত্রীসহ ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আজ ০১ মার্চ বুধবার বিকালে শ্রীতারামপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
তাৎক্ষণিকভাবে রাত্রি চৌধুরী (১৫) নামে একজনের পরিচয় জানা গেছে। সে নবীনগর উপজেলার বড়াইল গ্রামের প্রহল্লাহের মেয়ে। সে বড়াইল উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। মৃত্যুর সংবাদে নিহত ছাত্রীর বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। তার মরদেহ দেখার জন্য আত্মীয়স্বজন ও সহপাঠীরা ভিড় করছেন।
পুলিশ ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বুধবার দুপুরে ২০-২৫ জন যাত্রী নিয়ে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা পার্শ্ববর্তী নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার রায়পুরা ইউনিয়নের বাঁশগাড়ি যাচ্ছিল। পথিমধ্যে শ্রীতারামপুর-গোপীনাথপুর গ্রামের মাঝে তিতাস নদীতে নির্মিত ব্রিজের পিলারের সঙ্গে ধাক্কায় নৌকাটি তলিয়ে যায়। এতে দুইজন মারা যায়।
নিহত রাত্রির মা সন্ধ্যা রানী বলেন, রাত্রি স্কুল ছুটি নিয়ে দাদার বাড়ি বাঁশগাড়ি যাচ্ছিল। নৌকায় ২০-২৫ জন লোক ছিল।
নবীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, নৌকাডুবির ঘটনায় দুইজন মারা গেছে। একজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। ব্রিজের সঙ্গে ধাক্কায় নৌকাটি ডুবে যায়।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর উপজেলায় পরিবারের লোকজনের হাতে মার খেয়ে আহত বাকপ্রতিবন্ধী এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আজ ২৩ জুন শুক্রবার রাতে প্রতিবন্ধী হেদায়েত উল্লার বাবা মজিদ মোল্লাকে আটক করেছে পুলিশ। এর আগে বৃহস্পতিবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বাকপ্রতিবন্ধী হেদায়েত উল্লাহ।
জানা যায়, কয়েক মাস আগে হেদায়েত উল্লাহর বাবা-ভাই মিলে তার স্ত্রী রাকিবা আক্তারকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। স্ত্রী রাকিবা আক্তারকে বাড়িতে আনার জন্য পরিবারের লোকজনের কাছে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করলেও তারা তার স্ত্রীকে আনতে রাজি হয়নি। একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ১৬ জুন পরিবারের লোকজনের সঙ্গে তর্কবিতর্ক করে হেদায়েত উল্লাহ। তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে হেদায়েত উল্লাকে মারধর করে বাবা-ভাইসহ পরিবারের লোকজন। পরে আহত অবস্থায় স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে নবীনগর হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থা অবনতি হলে পরবর্তীতে তাকে ঢাকা নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার তার মৃত্যু হয়।
তার স্ত্রী রাকিবা আক্তার বলেন, আমার স্বামীকে পরিবারের লোকজন নির্মমভাবে মারধর করে হত্যা করেছে। আমার একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। এখন আমি কি করব? আমি এর সঠিক বিচার চাই।
নবীনগর থানা পুলিশের ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মোহাম্মদ সোহেল বলেন, রাতেই আমরা অভিযুক্ত মজিদ মোল্লাকে গ্রেপ্তার করে পরদিন প্রেরণ করেছি। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী রাকিবা আক্তার বাদী হয়ে মজিদ মোল্লা, তার স্ত্রী ও ছেলের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার জিনোদপুর ইউনিয়নের বাঙ্গরা বাজার এলাকায় আজ ১৫ জুলাই সোমবার ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালিয়ে প্রায় ৩ শতাধিক অবৈধভাবে নির্মিত স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।
নবীনগর উপজেলা প্রশাসন ও সড়ক বিভাগের উদ্যোগে অভিযানকালে সড়ক ও জনপদ বিভাগের জমি ও খালের উপর অবৈধভাবে নির্মিত স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করা হয়।
দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল নবীনগর থেকে কোম্পানীগঞ্জ পর্যন্ত রাস্তার উভয় পাশের জায়গাগুলো দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মান করেছিল। উচ্ছেদের সময় ২০০ শতাধিক টিনের দোকান ও শতাধিক একতলা, দুইতলা বিশিষ্ট মার্কেট উচ্ছেদ করা হয়েছে।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নবীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর ফরহাদ শামীম ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আবু মুছা। এ সময় সড়ক ও জনপদ বিভাগ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজামুদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
অভিযান সম্পর্কে নবীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর ফরহাদ শামীম জানান, দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল নবীনগর থেকে কোম্পানীগঞ্জ চলাচলের রাস্তার উভয়পাশের জায়গাগুলো দখলে রেখেছিলো। তাদেরকে বারবার বলার পরও তারা তাদের স্থাপনা গুলো সেচ্ছায় অপসারণ করেন নি। যার কারণে পূর্বে থেকে অবগত করে সোমবার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
উচ্ছেদ অভিযান কালে দুই শতাধিক টিনের দোকান ও শতাধিক পাকা আধাপাকা স্থাপনা, দুতলা মার্কেট উচ্ছেদ করা হয়।