চলারপথে রিপোর্ট :
প্রতিবাদের সুরে মাদক থাকবে দূরে, এখনই সময় শপথ নেওয়ার, মাদক মুক্ত সমাজ গড়ার” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে নবীনগরে মাদকমুক্ত নবীনগর চাই সংগঠনের নাটঘর উচ্চ বিদ্যালয় শাখার দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন আজ ১৩ মার্চ সোমবার বিদ্যালয়ের হল রুমে অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল্লাহ-র সভাপতিত্বে ও মাদক মুক্ত নবীনগর চাই নাটঘর ইউনিয়ন শাখার সাধারণ সম্পাদক মমিনুল হক রুবেলের সঞ্চালণায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুদ্দিন আনোয়ার।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন-মাদকমুক্ত নবীনগর চাই কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আবু কাউছার, অত্র বিদ্যালয়ের হেড মাওঃ দেলোয়ার হোসেন।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন মাদক মুক্ত নবীনগর চাই নাটঘর ইউনিয়ন শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক নাইমুল ইসলাম।
এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন,জরু মিয়া সর্দার, হাজী জমির আলী সর্দার, ৮ নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. হুমায়ুন কবির, অত্র বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক বাবু কেশবচন্দ্র আচার্য্য, সিনিয়র শিক্ষিকা সাজেদা বেগম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে আলোচনা সভা শেষে ঐশী রানী আচার্য্যকে সভাপতি ও পারভেজ আহমেদ কে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়।
আগামী এক মাসের মধ্যে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পরামর্শে ক্রমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করার নির্দেশ প্রদান করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মেধাবী শিক্ষার্থী আনিকা আক্তারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে জেলা প্রশাসন। গতকাল রবিবার বিকেলে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত মেধাবী শিক্ষার্থী আনিকার পড়াশুনা চালানোর জন্য তার হাতে ২০ হাজার টাকা তুলে দেন জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম।
আনিকা আক্তার জেলার নবীনগর উপজেলার ভোলাচং গ্রামের কাজীমাবাদ শালকান্দি গ্রামের প্রয়াত মোঃ ফারুকুল ইসলামের একমাত্র মেয়ে।
আনিকা আক্তার যখন ষষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্রী তখন তার বাবা ফারুকুল ইসলাম মারা যান।এরপর দারিদ্র্যের সাথে সংগ্রাম করে আনিকার পড়াশুনা চালিয়ে যান মা আয়েশা খাতুন।
অভাব অনটনের কারণে আনিকার বই কেনা, বিদ্যালয়ের বেতন, পরীক্ষার ফি ও ফরম পূরণের টাকা দেওয়ার মতো অবস্থা ছিলোনা মা আয়েশা খাতুনের। অনেক কষ্ট করে এসব টাকা পয়সা যোগাড় করতে হয়েছে আয়েশা খাতুনকে।
তবে কোনো কিছুই বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়নি সংগ্রামী আনিকার। ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষায় নবীনগর উপজেলার ভোলাচং উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অংশ নিয়ে বিজ্ঞান বিভাগে সকল বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে আনিকা। পরে সে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে ভর্তি হয়।
কিন্তু বিপত্তি বাঁধে এইচএসসি পর্যায়ের পড়াশোনার খরচ চালানো নিয়ে। বিষয়টি জানতে পেরে জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম তাকে ২০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই কৃতি শিক্ষার্থীকে ২০ হাজার টাকার সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। যেহেতু এই শিক্ষার্থী ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে, তাই সেখানে পড়াশোনার খরচ তেমন হবে না। নিয়মিত ক্লাশে উপস্থিত থাকলে এবং মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করলে এই শিক্ষার্থী ভালো ফলাফল করতে পারবে। তিনি এই শিক্ষার্থী ও তার মাকে সহায়তা ববাদ দেয়া টাকা পড়াশোনার জন্য খরচের পরামর্শ দেন।
এ ব্যাপারে আনিকা বলেন, বাবার আদর স্নেহ পেলেও সে কথা মনে নেই। মা আমার সব। এক চাচি পরীক্ষার ফি যোগাড় করে দিতেন। বই কেনাসহ অন্যান্য টাকা মামা দিতেন। বাবার আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল না বলে সৌদি আরব প্রবাসী মামা আমজাদ হোসেনের বাড়িতে তৃতীয় থেকে অষ্টম শ্রেনী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছি।
নবীনগর পৌরসভার মেয়র শিব সংকর দাস বিদ্যালয়ের বেতন ও এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে ফি মওকুফ করিয়েছেন। শিক্ষকরা বিনা টাকা পড়িয়েছেন। আনিকা বলেন, সহায়তা পেয়েছি। জেলা প্রশাসক স্যারের কাছে কৃতজ্ঞ। এখন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের হোস্টেলে একটি সীট পেলেই হয়। প্রয়োজনে টিউশনি করব, তবুুও পড়াশোনা চালিয়ে যাব।
আনিকার মা আয়েশা খাতুন বলেন, মেয়ের বাবা বেঁচে নেই। আমার আয়ের কোনা উৎস নেই। সহায়তা নিয়ে পাশে দাঁড়ানোর জন্য জেলা প্রশাসনকে তিনি ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমি চাই মেয়ে পড়াশোনা করে সামনে এগিয়ে যাক।
চলারপথে রিপোর্ট :
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম শহিদ ‘সুজয়’-এর স্মরণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার বিটঘর ইউনিয়নে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সব শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষের সম্মতিক্রমে বিটঘর পুকুরপাড়ের তিন রাস্তার মোড়কে ‘শহিদ সুজয় চত্বর’ নামকরণ ও তার পাশে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সুজয় বিটঘর ইউনিয়নের একমাত্র শহিদ। জাতির দ্বিতীয় স্বাধীনতার দিনে বিজয় উদযাপনের সময় স্বৈরাচার সরকার তাকে পুড়িয়ে মারে। নবীনগর উপজেলার বিটঘর গ্রামের তরুণ টগবগে যুবক তানজিল মাহমুদ সুজয় (১৯) গত ৫ আগস্ট বিকাল ৩টায় সাভারের আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় পেট্রলের আগুনে পুড়ে মারা যায়।
সুজয় ছিলেন বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির পক্ষে সরব। সরকার পতনের ঠিক আগের দিন নিজের ফেসবুক আইডি থেকে একটি পোস্ট করেন; যা এখন রীতিমতো ভাইরাল। পোস্টে সুজয় স্বৈরশাসককে উদ্দেশ করে লিখেন- ‘আমি বেঁচে থাকলে বীর, মরলে শহিদ। তুই বাঁচলে টোকাই মরলে আলহামদুলিল্লাহ। হিসাবটা মিলা’।
সুজয়ের বাবা মো. শফিকুল ইসলাম জানান, আমার ছেলে এই সরকারের দুঃশাসনের বিপক্ষে সবসময় সরব ছিল। বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলনে ছাত্রদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে প্রতিদিন আন্দোলনে যোগ দেয়। সরকারের পতন ঘটলে সবার সঙ্গে আমার ছেলেও আনন্দে আত্মহারা হয়ে উদযাপন করতে রাস্তায় নামলে সাভার থানায় ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি পুলিশের পোশাক পরে এলোপাতাড়ি গুলি করে তাকেসহ ১১ জনকে একটি কাভার্ডভ্যানে তুলে পেট্রল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দিলে সেখানে সবারই মৃত্যু হয়।
সুজয়ের বাবা ছোটখাটো একটি ব্যবসা করতেন। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে বাবা এখন পরিবারের ভবিষ্যত কী হবে সেটা নিয়ে চিন্তিত।
শহিদ সুজয়ের স্মৃতিকে চির অম্লান করে রাখার প্রত্যয়ে বিটঘর ইউনিয়ন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ঘোড়ায় চেপে স্বপ্নের রাজপুত্র এসে নিয়ে যাবে রাজকন্যাকে-গল্পকথায় এ উপমার দেখা হর-হামেশাই মেলে। তবে যুগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এ কালের রাজকন্যাদের বিয়ের গল্পেরও আধুনিকায়ন হয়েছে। এখন রাজকন্যাদের স্বপ্নের রাজপুত্র আর ঘোড়ায় চেপে নয়, আসেন হেলিকপ্টারে চেপে।
এ কালের এমনই এক রাজপুত্রের দেখা মিলল নবীনগর উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের বলদীবাড়ি গ্রামে।
গতকাল ৩১ জুলাই সোমবার দুপুর ২টায় বলদীবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে এসে নামল একটি হেলিকপ্টার। চারপাশে ততক্ষণে বেশ ভিড় জমে উঠেছে। কিছুক্ষণ পর আকাশযান থেকে নেমে আসলেন বরবেশী এক যুবক। পাশেই অপেক্ষা করছিল ফুল দিয়ে সাজানো বিয়ের গাড়ি। তাতে চড়েই রাজকন্যাকে আনতে চললেন স্বপ্নের রাজপুত্র।
জানা গেছে, হেলিকপ্টারে উড়ে আসা বর নবীনগর উপজেলার ভিটিবিষাড়া গ্রামের মো. মানিক মিয়া ও সূচিত্রা বেগম দম্পতির মেঝ ছেলে মো. সুজন মিয়া। আর কনে হলো পার্শ্ববর্তী বলদীবাড়ি গ্রামের মো. হুমায়ুন কবির ও শিক্ষিকা মোসাম্মাৎ স্বপ্না কবিরের একমাত্র মেয়ে হাসনাত কবির সূচি। বিয়ের এই মুহূর্তটি স্বরণীয় করে রাখতে এক লাখ সত্তর হাজার টাকা দিয়ে হেলিকপ্টার ভাড়া করেছেন বর পক্ষ।
বলদীবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন বালুর মাঠে হেলিকপ্টারটি যতক্ষণ ছিল, ততক্ষণই চারপাশে ছিল উৎসুকদের ভিড়। হেলিকপ্টারে করে আসা বর দেখার জন্য আশপাশের অনেকেই ভিড় জমান মাঠে। উৎসুকদের ইচ্ছাপূরণ করে বিয়ে শেষে সন্ধ্যার আগেই কনেকে নিয়ে বর ফের চড়লেন হেলিকপ্টারে। বিকট শব্দে আকাশে ওঠে হেলিকপ্টার; আর মেঘের দেশ হয়ে ইট-কাঠ-পাথরের শহরে পাড়ি জমান এ কালের রাজপুত্র আর রাজকন্যা।
চলারপথে রিপোর্ট :
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, দেশে মতবিরোধ থাকতে পারে। তবে শেখ হাসিনার জন্যই আজ দেশে এত পরিবর্তন হয়েছে, যা আমাদের জীবদ্দশায় আশা করিনি।
আজ ৯ আগস্ট বুধবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে লাউর ফতেহপুরে ব্যারিস্টার জাকির আহমেদ কলেজের শিক্ষাবৃত্তি ও শেখ হাসিনা একাডেমিক ভবন উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
একমাত্র শিক্ষাই পারে আমাদের আলোকিত পথে নিয়ে যেতে উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক জেলায় পর্যায়ক্রমে একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। নবীনগরে হবে কি না জানি না, তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করবো।
কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ব্যারিস্টার জাকির আহমেদের সভাপতিত্বে ও অধ্যক্ষ ইকবাল হোসেনের সঞ্চালনায় উদ্বোধক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ এবাদুল করিম বুলবুল।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক শাহগীর আলম, পুলিশ সুপার শাখাওয়াত হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একরামুল ছিদ্দিক, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদা জাহান প্রমুখ।