স্টাফ রিপোর্টার:
গৌরব ও অহংকারের ১৬ ডিসেম্বর বাঙ্গালী জাতির মহান বিজয় দিবস। বিজয় দিবসে জাতি সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করবে স্বাধীনতার স্বপ্নপুরুষ, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধা, জীবন উৎসর্গকারী ও যুদ্ধাহত বীর সন্তানদের, যাঁদের ত্যাগে অর্জিত হয়েছে আমাদের কাঙ্খিত বিজয়; জাতি অর্জন করেছে লাল সবুজ পতাকা এবং স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষে মহান বিজয় দিবস-২০২২ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। আজ প্রত্যুষে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের ফারুকী পার্কে ৫০ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে- ফারুকী পার্কস্থ স্মৃতিসৌধে সরকারি-বেসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত বিভাগ/সংস্থা সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনতা কর্তৃক স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পন, সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সরকারি, বেসরকারি স্বায়ত্ব শাসিত এবং বেসরকারি ভবনে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৮টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিয়াজ মুহম্মদ স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবে জেলা প্রশাসন। এ সময় কুচকাওয়াজ ও অভিবাদন গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে সকাল সাড়ে ১০টায় একই মাঠে মোরগ লড়াই ও বেলা ১১টায় কারাতে প্রতিযোগিতা, একই মাঠে বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদেরকে সংবর্ধনা প্রদান এবং জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে বেলা ১১টায়। বেলা সাড়ে ১১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া মূক ও বধির নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় ও সরকারি শিশু পরিবারের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর জেলার সকল মসজিদে বাদ জোহর জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা এবং মুক্তিযুদ্ধে শহিদ ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিশেষ মোনাজাত এবং অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়সমূহে সুবিধাজনক সময়ে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি এদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সকল সরকারি হাসপাতাল, শিশু সদন, জেলখানা, এতিমখানা ও শিশু পরিবারে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে। বিকেল আড়াটায় ব্রাহ্মণবড়িয়া নিয়াজ মুহাম্মদ স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসন একাদশ বনাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা ও মুক্তিযোদ্ধা একাদশ দলের মধ্যে প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। বিকাল ৩টায় সরকারি মডেল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরষ্কার বিতরণ করা হবে। বিকেল সাড়ে ৫টায় মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে সাংস্কৃতিক ও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হবে।
মহান এ দিবসের সকল অনুষ্ঠানে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেশপ্রেমি মানুষের স্ববান্ধব উপস্থিতি কামনা করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম।
অনুরূপ কর্মসূচি জেলার সকল উপজেলায় পালিত হবে।
আখাউড়া প্রতিনিধি :
আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ফের ভারতে মাছ রপ্তানী শুরু হয়েছে। আজ ৬ ফেব্রুয়ারি সোমবার ১০ টি পিক-আপে করে প্রায় ১ লক্ষ ৬০ হাজার মার্কিন ডলারের মূল্যমানের ৬৫ টন মাছ রপ্তানী হয়েছে। এর আগে গত ১ ফেব্রুয়ারি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অব ইন্ডিয়া (ফেসাই) খাদ্য নিরাপত্তা জনিত কারন দেখিয়ে আগরতলা বন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ১ মার্চ পর্যন্ত এক মাসের জন্য মাছ রপ্তানি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়। হঠাৎ মাছ রপ্তানী বন্ধ করে দেওয়ায় ক্ষতির মুখে বাংলাদেশের রপ্তানীকারকসহ বন্দর সংশ্লিষ্ট শ্রমিক কর্মচারীরা। এদিকে আগরতলায় মাছের চাহিদা থাকায় সেদেশের ব্যবসায়ীরাও আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন। পরে রাজ্য সরকারের অনুরোধে কেন্দ্রীয় সরকার এ বন্দর দিয়ে মাছ রপ্তানীর উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। ফলে বন্দরের আমদানী-রপ্তানীকারকদের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসে। অবশেষে আবারও মাছ রপ্তানী শুরু হলো। কর্ম চাঞ্চল্য ফিরে এসছে বন্দরে।
স্থল বন্দর ও মাছ রপ্তানীকারক সূত্রে জানা গেছে, ত্রিপুরা রাজ্যটি বাংলাদেশী মাছের উপর নির্ভরশীল। এ বন্দর দিয়ে প্রচুর মাছ রপ্তানী হয় ভারতে। ১ ফেব্রুয়ারী হঠাৎ করে কেন্দ্রীয় সরকার এক মাসের জন্য আখাউড়া স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দর দিয়ে মাছ আমদানী বন্ধ করে দেয়। এর ফলে গত ১, ২ ও ৪ ফেব্রুয়ারি ৩ দিন এ বন্দর দিয়ে মাছ রপ্তানী বন্ধ থাকে। পরে ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ বন্দর দিয়ে মাছ রপ্তানীর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে স্বস্তি ফিরে আসে উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের মাঝে। সোমবার ৬৫ মেঃ টন মাছ ভারতে রপ্তানী হয়েছে। যার মূল্য ১ লক্ষ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি ৮৪ লক্ষ টাকা। রপ্তানী হওয়ার মাছের মধ্যে রয়েছে রুই, কাতল, পাবদা, পাঙ্গাস, পুটি, বিগ্রেট, ও মৃগেল ইত্যাদি।
আখাউড়া স্থল বন্দরের মাছ রপ্তানীকারক মোঃ শাহনেওয়াজ মিয়া শানু বলেন, ভারতের নিষেধাজ্ঞার কারণে এ বন্দর দিয়ে ভারতে তিন দিন মাছ রপ্তানী বন্ধ ছিল। গতকাল ভারতের চিফ কমিশনারের কাছ থেকে মাছ রপ্তানীর অনুমতি পেয়েছি। আজ থেকে মাছ রপ্তানী শুরু করেছি। আজ প্রায় ২ কোটি টাকার মূল্যের ৬৫ মেঃ টন মাছ রপ্তানী হয়েছে। মাছ রপ্তানী না হলে প্রতিদিন এক থেকে দেড় লাখ ডলার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন থেকে দেশ বঞ্চিত হতো।
আখাউড়া স্থল বন্দরের সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ মনির হোসেন বাবুল বলেন, রোববার কেন্দ্রীয় সরকার এ বন্দর দিয়ে মাছ রপ্তানীর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়ায় উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে মাছ রপ্তানী শুরু করেছে ব্যবসায়ীরা। আজ এক লক্ষ ৬০ হাজার মার্কিন ডলারের মাছ রপ্তানী হয়েছে। এতে ডলারের সংকটকালে দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখবে।
আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারি পরিচালক (ট্রাফিক) মোঃ আতিকুল ইসলাম জানান, ভারতের ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অব ইন্ডিয়া খাদ্য নিরাপত্তা জনিত কারন দেখিয়ে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে আগামী ১ মার্চ পর্যন্ত মাছ রপ্তানি বন্ধ রাখেন ভারতের স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ। এর পর থেকে দু দেশের ব্যবসায়ীদের আলোচনার মাধ্যমে ও রাজ্য সরকারের অনুরোধে ভারতের ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অব ইন্ডিয়া (ফেসাই) এই বন্দর দিয়ে মাছ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। আজকে প্রায় ৬৫ মেঃ টন মাছ ভারতে রপ্তানী হয়েছে। মাছ রপ্তানি শুরু হওয়ায় বন্দরে রাজস্ব আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে নিখোঁজের তিন দিন পর তিতাস নদী থেকে রহমত আলী (৬৯) নামের এক বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আজ ১৭ জানুয়ারি বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সরাইল উপজেলার শাহবাজপুরে তিতাস নদীর সেতু এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। রহমত আলী উপজেলার আইড়ল গ্রামের মৃত জহের আলীর ছেলে।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরানুল ইসলাম জানান, রহমত আলী বাংলাদেশ ব্যাংকের কেয়ারটেকার পদ থেকে অবসর নিয়েছেন। তার ছেলেও একই পদে চট্টগ্রামে চাকরি করেন। তিনি চট্টগ্রামে ছেলের কাছে থাকতেন। সম্প্রতি তিনি উপজেলার দেওড়া গ্রামে তার মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। ১৪ জানুয়ারি সন্ধ্যায় রহমত আলী মসজিদে নামাজে গিয়ে আর বাড়ি ফেরেননি। এই ঘটনায় তার মেয়ে একটি জিডি করেছিলেন। বুধবার তার মরদেহ পাওয়া গেছে।
তিনি আরো জানান, মরদেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। ইতিপূর্বে তিনি তিনবার ষ্ট্রোক করে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিলেন। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্যে পাঠানো হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
মসজিদে আছরের নামাজ আদায় করে বাসায় ফিরছিলেন বৃদ্ধ নাসির মিয়া। রাস্তা পারাপারের জন্য দাঁড়িয়ে সুযোগের অপেক্ষা করছিলেন। আচমকা বেপরোয়া গতির একটি মোটরসাইকেল এসে থাক্কা দেয় তাকে। সড়কে লুটিয়ে পড়েন তিনি। এতে ডান পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাত পান তিনি।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১১ দিন পর ১১ জুন মঙ্গলবার দুপুরে নাসির মিয়া মৃত্যুবরণ করেন। প্রবাস ফেরত নাছির মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় পৌরশহরের রেলওয়ে কুমার পাড়া বাইপাস এলাকার বাসিন্দা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আখাউড়া-সুলতানপুর ফোরলেন সড়কের পাশে নাসির মিয়ার বাড়ি। প্রতিদিনের মতো গত ২ জুন খড়মপুর দক্ষিণ পাড়া মসজিদে আছরের নামাজ পড়তে যান তিনি। নামাজ শেষে ফেরার পথে বাসার সামনে সড়কের অপর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন পারাপারের জন্য। ব্যস্ত সড়কে হঠাৎ পশ্চিম দিকে আসা একটি মোটর সাইকেল তাক্কে সজোড়ে থাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। তার ডান পা, পাজড়ের হাড় ভেঙ্গে যায়। শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পান তিনি। স্থানীয়দের সহযোগিতায় উদ্ধার করে পরিবারের লোকজন প্রথমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করান। চিকিৎসা শেষে সোমবার বাড়িতে নিয়ে আসেন তাকে। মঙ্গলবার দুপুরে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
নিহত নাসির মিয়ার ছেলে ইসমাইল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বেপরোয়া গতির মোটরসাইকেলের আঘাতেই আমার বাবার মৃত্যু হয়েছে। সড়ক দূর্ঘটনা রোধে গাড়ির কাগজপত্র যাচাই করা দরকার। তাহলে এভাবে কারও স্বজনকে অকালে প্রাণ দিতে হবে না।
চলারপথে রিপোর্ট :
মুক্তিযোদ্ধার কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগে দুই নামধারী সাংবাদিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাত ১০টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বাসুদেব ইউনিয়নের জারুইলতলা গ্রাম থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ ৮ সেপ্টেম্বর রোববার সকালে তাদের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, জেলার বিজয়নগর উপজেলার মেরাশানী গ্রামের ভূইয়া বাড়ির ফজলে এলাহী ওরফে উজ্জ্বল ভূইয়া (৫০) ও একই উপজেলার সিঙ্গারবিল গ্রামের ইয়ানুর রহমান (৩৩)। উজ্জ্বল দৈনিক প্রথম বুলেটিং এর প্রতিনিধি। উজ্জ্বলের সহযোগী হলেন ইয়ানুর। উজ্জ্বলের হাতে দৈনিক প্রথম বুলেটিং এবং নিউজ টোয়েন্টিফোর লাইভের লগো মাইক্রোফোন ছিল।
এ ঘটনায় জারুইলতলা গ্রামের বাসিন্দা ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও প্রতারণার মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মোহাম্মদ জহিরুলের বাবা আবু জামাল একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। গত শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে সদর উপজেলার বাসুদেব ইউনিয়নের জারুইলতলা গ্রামে জহিরুলের বাড়িতে যান নামধারী সাংবাদিক উজ্জ্বল ও তার সহযোগী ইয়ানুর। কিন্তু বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জামালকে বাড়িতে না পেয়ে তারা ফিরে যান। পরে নামাজ পড়ে বাড়ি ফেরার পথে দুই নামধারী সাংবাদিকের সাথে মুক্তিযোদ্ধা আবু জামালের কথা হয়। এক পর্যায়ে তারা আবু জামালের বাড়ি যান। সেখানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন আবু জামাল। এক পর্যায়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জামাল মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বিভিন্ন নথিপত্র দেখালে সেগুলোর ছবি মোবাইল ফোনে তুলেন দুই কথিত সাংবাদিক।
সাক্ষাতকার শেষে কমান্ডার সনদপত্র কোথায় জানতে চান তারা। এমন কোনো সনদ হয় না বলে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জামাল উত্তর দেন। এক পর্যায়ে পরিবারের সদস্যদের থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা জামালকে আড়ালে নিয়ে যান উজ্জ্বল। কথিত সাংবাদিক উজ্জ্বল দেশের পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে মুক্তিযোদ্ধার কাছে ১২ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন।
চাঁদা না দিলে মুক্তিযোদ্ধার নাম ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় দিয়ে দিবে বলে ভয় দেখান উজ্জ্বল। মুক্তিযোদ্ধা এক পর্যায়ে কথিত সাংবাদিক উজ্জ্বলকে ৫ হাজার টাকা দেন। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হলে মুক্তিযোদ্ধার ছেলে মোহাম্মদ জহিরুল স্থানীয়দের সাথে নিয়ে তাদের আটক করেন। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানতে পারেন তারা ভুয়া সাংবাদিক এবং সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে তারা চাঁদাবাজি করেন।
পরে জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এ ফোন করে তারা সহায়তা চান। রাতে পুলিশ পৌঁছে দুইজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। রোববার সকাল ১১টায় মুক্তিযোদ্ধার ছেলে বাদী হয়ে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মোজাফফর হোসেন বলেন, তারা সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের নাম ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় তুলে দিবে হুমকি দিয়ে চাঁদাবাজি করেছেন। মুক্তিযোদ্ধার ছেলের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া রেলওয়ে জংশন উন্নয়ন কাজের অংশ হিসেবে নির্মাণ করা প্রতিরক্ষা দেয়ালের কারণে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে হাসপাতাল, রেলওয়ে থানাসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার পথ।
শত বছরের এ পথ রক্ষায় আজ ২১ নভেম্বর মঙ্গলবার সকালে ভুক্তভোগীরা আন্দোলনের নামেন। এ সময় তারা দেয়াল নির্মাণ বন্ধ করে দেয়। ঘটনাস্থলে এসে তোপের মুখে পড়েন এক রেলওয়ে কর্মকর্তা।
সকাল ৯টার দিকে রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারি ও এলাকাবাসী জড়ো হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। প্রথমের তারা রাস্তার কাজ বন্ধ করে দিয়ে আগের সড়কের ওপর অবস্থান নেন। খবর পেয়ে ছুটে আসেন আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ) মো. আব্দুল্লাহ। এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে পূর্বের সড়কে একটু দূরে দিয়ে ‘ইউলোপ’ রাস্তা নির্মাণ করা হবে বলে জানান। আর যে রাস্তাটি বন্ধ করা হয়েছে সেটি দিয়ে শুধুমাত্র লোকজন চলাচলের উপযোগি করা হবে বলে উল্লেখ করেন। ওই কর্মকর্তার আশ্বাসে আশ্বস্থ হতে না পেরে এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। এ সময় তোপের মুখে পড়েন রেলওয়ের ওই কর্মকর্তা। ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. এনামুল হক খাদেম, শ্রমিক নেতা বিল্লাল চৌধুরী, সাবেক ইউপি মেম্বার মো. রুস্তম মিয়া, মো. হানিফ, সাজল খলিফা, মনির খলিফা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, রেলওয়ে পশ্চিম কলোনি এলাকার কবরস্থানের পাশ দিয়ে প্রতিরক্ষা দেয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে। দেয়াল নির্মাণ কাজ উত্তর দিক থেকে দক্ষিণ দিকে রেলওয়ে স্টেশনের দিকে আসছে। যেখানে দেয়াল নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে সেখানে মাটি, বালু ফেলে রেল বসানোর উপযোগি করে তোলা হচ্ছে। পূর্ব দিক থেকে এসে রেলওয়ে হাসপাতালে যাওয়ার যে পথ সেটি বন্ধ হয়ে গেছে দেয়ালের কারণে। থানায় যাওয়ার পথের সামনেও দেয়াল নির্মাণের কাজ চলছে। দেয়ালের অপরপ্রান্তে হাসপাতাল রেলওয়ে থানা, হাসপাতালের পাশাপাশি রেলওয়ের সহকারী পুলিশ সুপারের কার্যালয়, লোকোশেড, রেলওয়ে ক্লাব, রেলওয়ে কোয়ার্টার রয়েছে। এছাড়া শ্যামনগর ও রূপনগর এলাকার মানুষ এ পথ দিয়ে চলাচল করে।
রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ) মো. আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা তো আর জোর করে কাজ করতে পারবো না। এলাকাবাসীকে বলেছি আগের সড়ক নিয়ে লোকজন যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হবে। যানবাহন চলাচলের জন্য আরেকটি নতুন রাস্তা করে দেওয়া হবে।