মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, আখাউড়া থেকে :
স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য প্রথমবারের মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া সীমান্তপথে ভারতে গেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা। স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য আজ ৩ মে শনিবার দুপুরে আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে তিনি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় প্রবেশ করেন।
আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে তিনি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় প্রবেশ করেন। এর আগে, সন্তু লারমা সড়কপথে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে আখাউড়ায় আসেন।
আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে তিনি জানান, প্রথমবারের মতো তিনি এপথে ভারত যাচ্ছেন। সেখানে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা ছাড়াও মাতৃ-পিতৃ তর্পণ ও ধর্মীয় আচারাধি সম্পাদন অনুষ্ঠানে যোগদান করারও কথা রয়েছে তার।
সন্তু লারমাকে পাহাড়ে নিরাপত্তাসহ পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিষয়াদি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে সন্তু লারমা বলেন, একবার আসুন রাঙামাটি ঘুরে দেখে যান- তবেই বুঝবেন। এর বেশি কোনো কথা বলতে আগ্রহ দেখাননি সন্তু লারমা।
এ পথেই তিনি দেশে ফিরে আসবেন বলে তার ব্যক্তিগত সহকারী শ্যামল লারমা নিশ্চিত করেছেন। কখন আসবেন তিনি তা জানাতে পারেননি।
চলারপথে রিপোর্ট :
রেলপাত বসানোর কাজ পুরোপুরি শেষ। আনুষঙ্গিক অন্যান্য ফিটিংস লাগানোর কাজও শেষ হয়েছে। চলছে শেষ মুহূর্তের ঘষামাজা। সক্ষমতা যাচাইয়ের কাজও একই সঙ্গে চলমান।
সংশ্লিষ্টরা নিয়মিত আসছেন এর দেখভাল করতে। বলা চলে, পুরোপুরি প্রস্তুত আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ। অপেক্ষা ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে নতুন দিগন্ত উন্মোচনের। আশা করা হচ্ছে, এ রেলপথ চালু হলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়বে। যাত্রী চলাচলে আরো ব্যাপকতা পাবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী উল্লিখিত পথে মঙ্গলবার পরীক্ষামূলকভাবে এ পথে ট্রেন চালানোর কথা। তবে শোকের মাসের কারণে সেটি পিছিয়ে দেওয়া হয়। বুধবার এ বিষয়ে ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য সভায় পরীক্ষামূলক চলাচলের দিনক্ষণ ঠিক হতে পারে।
সেপ্টেম্বরে পরীক্ষামূলক চলাচলের পর ওই মাসেই দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী রেলপথটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করতে পারেন বলে আভাস পাওয়া গেছে।
এদিকে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মঙ্গলবার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি দেখতে আসেন। প্রায় ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তারা। প্রকল্প কর্মকর্তারা পরিদর্শনের সময় গত কয়েক দিনের মতো ‘গ্যাং কার’ নামে পরিচিত ‘ট্র্যাক কার’ পরিচালনা করা হয়। রেলওয়ের বিশেষ ওই কারটি আখাউড়ার গঙ্গাসাগর থেকে সীমান্তবর্তী শিবনগর পর্যন্ত ৬.৭৮ কিলোমিটার অংশ পর্যন্ত চলাচল করে।
গত ১৬ আগস্ট ‘গ্যাং কার’ বা ‘ট্র্যাক কার’ চালানো হয়ে। ‘গ্যাং কার’ নামে পরিচিত ‘ট্র্যাক কার’ বিশেষ আকৃতিতে নির্মিত রেলের ‘ইঞ্জিন’। এর সঙ্গে দুটি বগি সংযুক্ত করে উল্লিখিত পথে চালানো হয়।
দুই দেশের এ রেলপথের দৈর্ঘ্য ১২.২৪ কিলোমিটার। এর মধ্যে বাংলাদেশ অংশে ৬.৭৮ কিলোমিটার। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ৪৭৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়ন ৫৭ কোটি পাঁচ লাখ টাকা এবং ভারতীয় ঋণ ৪২০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।
২০১৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্প নির্মাণকাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। প্রথমে প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় ১৮ মাস। এরপর করোনার প্রভাবসহ নানা কারণে পাঁচ দফা মেয়াদ বাড়ানো হয়। সর্বশেষ নির্মাণকাজের মেয়াদ বাড়িয়ে আগামী বছরের জুন নাগাদ করা হয়েছে।
প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভারতের নয়াদিল্লির টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের বাংলাদেশ প্রধান শরৎ শর্মা মঙ্গলবার পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের বলেন, ‘গ্যাং কারে উঠে বাংলাদেশ অংশের পুরো রেললাইন পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। আরো কী কী কাজ করা দরকার সেটি পর্যবেক্ষণ করা হয়। কয়েক দিনের মধ্যেই রেলপথটি পুরোপুরি চলাচলের উপযোগী করে তোলা হবে।’
বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী ও আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মো. আবু জাফর মিয়া বলেন, ‘সীমান্ত পর্যন্ত রেললাইন বসানো হয়ে গেছে। ফিটিংস লাগানোও শেষ হয়েছে। লেভেল ঠিক রাখার কাজ চলছে। ইমিগ্রেশন ভবনের কাজ যেটুকু বাকি আছে, সেটি দ্রুত শেষ করা হবে।’ প্রকল্পের ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
একাধিক সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে রেলওয়ের এ সংযোগ প্রকল্পটি চালু হলে মূলত ভারতীয়রাই বেশি লাভবান হবেন। বিশেষ করে ভারতীয়রা আগরতলা থেকে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে কলকাতা গেলে বর্তমানের চেয়ে তিন ভাগের এক ভাগ সময় কম লাগবে। সূত্র : কালেরকণ্ঠ
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় অপহরণের কয়েক ঘন্টার মধ্যে অপহৃত এক কিশোরীকে উদ্ধারসহ এক অপহরণকারীকে গ্রেফতার করেছে আখাউড়া থানা পুলিশ।
আজ ৭ ফেব্র“য়ারি শুক্রবার পুলিশ ও মিডিয়া উইংসের দেওয়া এক তথ্য মতে জানা যায়, গতকাল বৃহ¯পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার নূরপুর গ্রাম থেকে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরী অপহরণের ঘটনায় আখাউড়া থানায় একটি মামলা হয়।
থানায় মামলা হওয়ার কয়েক ঘন্টা পর রাত সাড়ে দশটার দিকে পুলিশ আখাউড়া পৌরশহরে অভিযান চালিয়ে অপহৃত কিশোরীকে গ্রেফতার করে এবং কিশোরী অপহরণে জড়িত অপহরণকারী সামিরুল ইসলাম আরিফ (২০)কে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত সামিরুল ইসলাম আরিফ উপজেলার কুড়ি পাইকা গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে।
আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ ছমি উদ্দিন জানান, অপহরণে জড়িত আটককৃত আসামিকে বিচারিক কার্যক্রমের জন্য আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত কিশোরীকে থানা হেফাজতে আনা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বহুল প্রতিক্ষিত আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ নির্মান কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ইতিমধ্যেই রেললাইন বসানোর কাজ শেষ। প্রকল্পের ভবনগুলোর নির্মাণ কাজও শেষ হয়েছে প্রায় ৯৫ ভাগ। আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে দুইদেশের প্রধানমন্ত্রী রেলপথটির উদ্বোধন করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছেন প্রকল্প সংশিষ্টরা।
চলতি আগস্ট মাসের শেষ দিকে পরীক্ষামূলকভাবে আখাউড়া থেকে আগরতলায় ট্রেন চলানোরও প্রস্তুতিও নিচ্ছেন তারা।
এ অবস্থায় রেলপথকে ঘিরে বন্ধুত্বপূর্ন দুই দেশের বাসিন্দাদের মধ্যে আগ্রহের শেষ নেই। সংশ্লিষ্টরা জানান, রেলপথটি চালু হলে ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা বাণিজ্যের উন্নয়নের পাশাপাশি সম্পর্কের উন্নয়নের ক্ষেত্রেও নব-দিগন্তের সূচনা হবে।
সড়ক পথের পর এবার আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ দিয়েও দু’দেশের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হবে। রেলপথে পণ্য পরিবহন খরচ কম হওয়ায় আন্তঃদেশীয় বাণিজ্য আরো চাঙা হবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
চলতি আগষ্ট মাসের শেষ দিকে বহুল কাঙ্ক্ষিত এই রেলপথে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলের প্রস্ততি নিচ্ছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৮ সালের জুলাই মাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থেকে ভারতের আগরতলার নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত ১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ নির্মাণ কাজ শুরু হয়। রেলপথটির ৬ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার পড়েছে বাংলাদেশ অংশে। প্রকল্পের কাজটি বাস্তবায়ন করছে ভারতের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। প্রকল্পের বাংলাদেশ অংশের সাড়ে ৬ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় প্রায় ২৪১ কোটি টাকা।
দেড় বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও করোনা মহামারীসহ নানা সংকটের কারণে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরে কয়েক দফা প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত জুন মাসে। এই রেলপথটি উত্তর-পূর্ব ভারতের সাথে সরাসরি যুক্ত করবে বাংলাদেশকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রকল্পের বাংলাদেশ অংশের রেলপথে রেললাইন বসানোর কাজ শেষ। এছাড়াও প্রকল্পের ১৬টি সেতু ও কালভার্টের সবকটিরই কাজ শেষ হয়েছে ইতোমধ্যে। আর ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে প্রায় ৯৫ ভাগ।
আখাউড়া-আগরতলা রেলপথটি চালু হলে দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য আরো বাড়বে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
আখাউড়া স্থলবন্দরের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, আমদানি খরচ বাড়াসহ নানা কারণে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে এখন ভারত থেকে পণ্য আমদানি হচ্ছে না। এছাড়া একই কারনে ভারতীয় ব্যবসায়ীরাও বাংলাদেশ থেকে পণ্য নিচ্ছেন কম। তবে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথটি চালু হলে সড়কপথের তুলনায় কম খরচে পণ্য পরিবহন করতে পারবেন ব্যবসায়ীরা। এতে দু’দেশের ব্যবসায়ীরাই লাভবান হবেন।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সভাপতি আজিজুল হক বলেন, রেলপথে পণ্য পরিবহন অনেক বেশি নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী। আখাউড়া-আগরতলা রেলপথটি চালু হলে দুইদেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য উল্লেখযোগ্যভাবে বিস্তৃত হবে বলে আশা করছি। এতে আমদানি খরচ কম হবে, ভোক্তা পর্যায়ে কম মূল্যে পণ্য পৌঁছে দেয়া যাবে। ফলে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে এই রেলপথটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এ ব্যাপারে প্রকল্পের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের প্রকল্প ব্যবস্থাপক ভাস্কর বকশি বলেন, প্রকল্পের ভবনগুলোর নির্মাণ কাজ ৯৫ ভাগ শেষ হয়েছে। রেললাইন বসানোর কাজ শেষ। পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলে কোন সমস্যা হবে না। চলতি আগস্ট মাসের শেষ দিকে পরীক্ষামূলকভাবে আখাউড়া থেকে ট্রেন যাবে আগরতলায়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ প্রকল্পের পরিচালক (বাংলাদেশ অংশ) মোঃ আবু জাফর মিয়া বলেন, পুরো প্রকল্পের অগ্রগতি ৯৫ শতাংশ। আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে চলতি মাসেই এই রেলপথে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল করানোর। এরপর সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে দুইদেশের প্রধানমন্ত্রী রেলপথটির উদ্বোধন করবেন বলে আশা করছি। প্রথমে পন্যবাহী এবং পরবর্তীতে যাত্রীবাহি ট্রেন চলাচল করবে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ঘরের সামনে পানি। পানি উঠেছে চুলায়। পানিতে তলিয়ে গেছে বাথরুমের রিং। নোংরা পানির দুর্গন্ধে অসহনীয় পরিবেশ। পানি জমেছে চলাচলের রাস্তায়। এমন চিত্র ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার চরনারায়ণপুর এলাকার সরকারী আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায়। গত ১০/১২ দিন ধরে বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতায় দু:ষহ জীবন যাপন করছে প্রকল্পের বাসিন্দারা। বিশেষ করে নারী-শিশুরা খুব কষ্ট করছে। বাথরুম, গোসল, রান্না-বান্নাসহ দৈনন্দিক কাজে মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাচ্ছে হত-দরিদ্র পরিবারগুলো। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করার দাবী জানিয়েছে আশ্রয়ণের বাসিন্দারা।
জানা গেছে, মুজিব বর্ষের উপহার হিসেবে সারা দেশের ন্যায় আখাউড়া উপজেলায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতক ভূমিতে আধা পাকা ঘর নির্মাণ করে দেয় সরকার। এরই অংশ হিসেবে আখাউড়ায় সাড়ে ৬’শ ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। এরমধ্যে উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের চরনারায়ণপুর এলাকায় ৭৭টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমানে সেখানে প্রায় ৬০টি উপকারভোগী পরিবার বসবাস করছে। গত কয়েক দিন ধরে আখাউড়ায় থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের একটি পাইপ বন্ধ যাওয়ায় পানি সরতে পারছে না। এতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। দুর্ভোগে পড়েছে হত-দরিদ্র পরিবারগুলো।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় পানি জমে আছে। বাথরুমের রিং পানিতে তলিয়ে গেছে। ছোট শিশুরা ঘর বের হতে পারছে না। ময়লা নোংরা পানি মাড়িয়ে ঘর থেকে বের হচ্ছেন বাসিন্দারা।
আশ্রয়ণের বাসিন্দা কাজল মিয়ার স্ত্রী আবেদা বেগম বলেন, আমার এক মেয়ে মৃগি রোগী। তাকে নিয়ে সব সময় দুশ্চিন্তাই থাকি। ছোট একটা নাতি আছে। কখন পানিতে পরে যায় সব সময় এই আতঙ্কে থাকি।
পারুল বেগম নামে আরেক নারী বলেন, বাথরুমের ময়লার রিং পানিতে তলিয়ে গেছে। বাথরুম করতে খুব অসুবিধা হইতেছে। দুর্গন্ধে ঘরে থাকা যায় না। তাছাড়া রান্নার চুলা পানিতে তলিয়ে গেছে। রান্না-বান্না করতে খুব অসুবিধা হয়।
সবিতা রানী বর্মন নামে আরেক নারী দুঃখ করে বলেন, আমরর কষ্টের কপাল কষ্টই করতে অইব। তিনি বলেন, ঘরের সামনে ময়লা নোংরা পানি। রাস্তায় পানি। ঘর থেকে বের হতে পারি না। এভাবে আর ভালো লাগে না। ময়লা নোংরা পানিতে হেঁেট পুলাপাইনের পায়ে ঘা হয়ে গেছে।
আশ্রয়ণ প্রকল্প বাসিন্দাদের সভাপতি নিলেশ বর্মন বলেন, প্রায় ১৫ দিন যাবত পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ঘর থেকে বের হওয়া যায় না। চলাফেলা করা যায়। তিনি বলেন, প্রকল্পের পানি নিষ্কাশনের ১টি পাইপ বন্ধ হয়ে গেছে। এজন্য পানি সরে না। পাইপটি মেরামত করে দিলে পানি সরে যেত। বৃষ্টিবাদলার দিন এভাবে পানি জমে আমরা বসবাস করতে পারব না। তিনি দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রশান্ত কুমার চক্রবর্তী বলেন, দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হবে। আমি প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে সরজমিনে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিব।
চলারপথে রিপোর্ট :
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে গণহত্যাকারী খুনি আখ্যা দিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের সাবেক সংসদ-সদস্য ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ফাঁসি ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আখাউড়ায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের একাংশের নেতাকর্মীরা।
আজ ১৭ আগস্ট শনিবার পৌরশহরের মুক্তমঞ্চে বেলা ১১টা থেকে দুই ঘণ্টা এ কর্মসূচি পালিত হয়। সকাল ১০টার আগেই আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে বিএনপির নেতাকর্মীরা জড়ো হতে শুরু করেন। বেলা পৌনে ১১টার দিকে সেখান থেকে তারা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি পৌরশহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মুক্তমঞ্চে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। এ সময় তারা শেখ হাসিনা ও তার সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ফাঁসি ও তার দোসরদের শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান ও বক্তব্য রাখেন।
আখাউড়া উপজেলা পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপির সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মুসলেম উদ্দিন ভূঁইয়া, উপজেলা সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. কাজী হাম্মাদুল ওয়াদুদ, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমএ রউফ চৌধুরী, রমজান হোসেন, যুবদলের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি হুমায়ুন কবির, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান চৌধুরী, জাহাঙ্গীর আলম রানা, আলমগীর হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।