জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিন এর বিশেষ আমল

ধর্ম, 28 May 2025, 330 Views,

জাওয়াদ তাহের :
ইসলামের ইতিহাসে জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ তাআলা এই দিনগুলোর গুরুত্ব বোঝাতে কোরআনে এর নামে শপথ করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘শপথ ফজর কালের। এবং ১০ রাতের।’ (সুরা : ফজর, আয়াত : ১-২)

banner

মুফাসসিরদের মতে, এখানে ফজর বলতে বিশেষভাবে জিলহজের ১০ তারিখের ফজর বোঝানো হয়েছে। আর যে ১০ রাতের শপথ করা হয়েছে, তা হলো জিলহজের প্রথম ১০ রাত।

১০ দিনের শ্রেষ্ঠত্বের কারণ :
হজ ও কোরবানি, আরাফাহ দিবস—এসব মিলিয়ে এই দিনগুলোর রয়েছে বিশেষ ফজিলত। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, এমন কোনো দিন নেই, যে দিনসমূহের সৎকাজ আল্লাহ তাআলার নিকট জিলহজ মাসের এই ১০ দিনের সৎকাজ অপেক্ষা বেশি প্রিয়।

সাহাবারা বলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহ তাআলার পথে জিহাদ করাও কি (এত প্রিয়) নয়? রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, আল্লাহ তাআলার পথে জিহাদও তার চেয়ে বেশি প্রিয় নয়। তবে জানমাল নিয়ে যদি কোনো লোক আল্লাহ তাআলার পথে জিহাদে বের হয় এবং এ দুটির কোনোটিই নিয়ে যদি সে আর ফিরে আসতে না পারে তার কথা (অর্থাৎ সেই শহীদের মর্যাদা) ভিন্ন। (তিরমিজি, হাদিস : ৭৫৭)

আল্লামা হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানি (রহ.) বলেন, জিলহজের এই ১০ দিনের বৈশিষ্ট্যের কারণ হলো, এ সময় শরিয়তের মৌলিক কিছু ইবাদতের সম্মিলন ঘটে। শরিয়তের প্রধান ইবাদত হলো নামাজ, রোজা, সদকা ও হজ।

এ ধরনের সমাবেশ বছরের অন্য সময় পাওয়া যায় না।
(ফাতহুল বারি, আসকালানি : ২/৪৬০)

১০ দিনের বিশেষ কিছু আমল :
সামর্থ্যবানদের জন্য হজ ও কোরবানি ছাড়া এই মাসে আছে বিশেষ কিছু আমল, যার মাধ্যমে সে রাঙিয়ে নিতে পারে নিজের জীবন। যারা হজ আদায় করবে তারা নির্ধারিত স্থান থেকে হজের বিধানাবলি পূরণ করবে। এ ছাড়া অন্যরা এসব আমল বেশি বেশি করবে।

বেশি পরিমাণে তাকবির বলা :
এই ১০ দিনে বেশি পরিমাণে আল্লাহর জিকিরে নিজেকে ব্যতিব্যস্ত রাখা; বিশেষ করে তাকবির বলা।

আমাদের মাঝে এই আমলটি প্রায় ছুটে গেছে। তাই এই দিনগুলোতে তাকবিরের প্রতি গুরুত্বারোপ করা চাই। ইবনে ওমর ও আবু হুরায়রা (রা.)-এর আমল ছিল, এই ১০ দিন তাকবির বলতে বলতে বাজারের দিকে যেতেন এবং তাঁদের তাকবিরের সঙ্গে অন্যরাও তাকবির বলত। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৯৬৯)

ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, আল্লাহ তাআলার নিকট জিলহজের প্রথম দশকের আমলের চেয়ে বেশি প্রিয় আর কোনো আমল নেই। সুতরাং তোমরা এ সময় অধিক পরিমাণে তাকবির (আল্লাহু আকবার), তাহলিল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) এবং তাহমিদ (আলহামদু লিল্লাহ) পাঠ করো। (শুআবুল ঈমান, হাদিস : ৩৭৫৮)

রোজা রাখা :
এই সময়ের গুরুত্বপূর্ণ একটি আমাল হচ্ছে, জিলহজের প্রথম ৯ দিন আল্লাহর জন্য রোজা রাখা। আহমদ ইবনে ইয়াহইয়া (রহ.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.)-এর কোনো স্ত্রী থেকে বর্ণিত যে রাসুল (সা.) জিলহজ মাসের ৯ দিন, আশুরার দিন এবং প্রতি মাসের তিন দিন রোজা পালন করতেন। মাসের প্রথম সোমবার এবং দুই বৃহস্পতিবার। (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ২৪১৭)

আরাফাহর দিনের রোজার বিশেষ ফজিলত আলাদাভাবে এসেছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমি আল্লাহ তাআলার নিকট আরাফাতের দিনের রোজা সম্পর্কে আশা করি যে তিনি এর মাধ্যমে পূর্ববর্তী এক বছর এবং পরবর্তী এক বছরের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। (জামে তিরমিজি, হাদিস : ৭৪৯)

নখ-চুল না কাটা :
এই ১০ দিনের আরেকটি আমল হচ্ছে জিলহজের চাঁঁদ ওঠার পর নখ, চুল এবং শরীরের অবাঞ্ছিত লোম ইত্যাদি কর্তন না করা; বরং কোরবানি দেওয়ার পর এগুলো পরিষ্কার করবে। এই আমল সবার জন্য প্রযোজ্য, চাই সে কোরবানি করুক বা না করুক। ঈসা ইবনে হিলাল আস-সাদাফি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা) থেকে বর্ণনা করেন, একবার রাসুলুল্লাহ এক ব্যক্তিকে বললেন, ইয়াওমুল আজহাকে ঈদের দিন করার জন্য আমাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা এই উম্মতের জন্য এ দিনকে ঈদে পরিণত করেছেন। তাই তুমি তোমার চুল ও নখ কাটবে, তোমার গোঁফ ছোট করবে এবং তোমার নাভির নিচের পশম মুড়ে ফেলবে। আল্লাহর নিকট এটাই তোমার পূর্ণ কোরবান। (তাহাবি শরিফ, হাদিস : ৬১৭২)
আল্লাহ তাআলা আমাদের তাওফিক দান করুন। আমিন।

Leave a Reply

প্রতিপক্ষের হামলায় নারী নিহত, দুইজন আটক

চলারপথে রিপোর্ট : তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় খাইরুন Read more

গাজীপুরে মামা হত্যার আসামি ভাগিনা গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : গাজীপুরে আনিসুর রহমান হত্যার মামলার আসামি ভাগিনা Read more

সদর মডেল থানায় যোগদান করেই কঠোর…

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য : আজহারুল ইসলাম সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

চলারপথে রিপোর্ট : ফ্ল্যাট বাসা থেকে শরীর মীর (৪০) নামের Read more

নাসিরনগরে বাবাকে হত্যার ঘটনায় ছেলে আটক

চলারপথে রিপোর্ট : নাসিরনগরে আলম মিয়া (৬০) নামের এক ব্যবসায়ী Read more

আখাউড়ায় খেলাফত মজলিসের প্রার্থীর মতবিনিময়

মোঃ ইসমাইল: ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের খেলাফত মজলিস মনোনীত প্রার্থী Read more

৫০ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ৫০ কেজি গাঁজা ও ১টি সিএনজি উদ্ধারসহ Read more

কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপদসীমায়, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের…

অনলাইন ডেস্ক : বর্ষার শেষপ্রহরে নেমে আসা অবিরাম বৃষ্টি ও Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার নতুন ওসি আজহারুল…

চলারপথে রিপোর্ট : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে Read more

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে…

অনলাইন ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ঐতিহাসিক Read more

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : কুমিল্লার দাউদকান্দি বারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) Read more

মেক্সিকোতে যাত্রীবাহী বাসে ট্রেনের ধাক্কায় ১০জন…

অনলাইন ডেস্ক : মেক্সিকোর আটলাকোমুলকো শহরে একটি পণ্যবাহী ট্রেন ও Read more

অসৎ সঙ্গ থেকে বাঁচার উপায়

ধর্ম, 18 February 2025, 390 Views,

মুফতি আবদুল্লাহ নুর:
সুপথ গ্রহণে অসৎ সঙ্গ একটি বাধা। অসৎ মানুষরা তাদের সঙ্গীকে সৎ হওয়ার সুযোগ দিতে চায় না। সঙ্গীদের কেউ সুপথে চলতে চাইলে অসৎ মানুষ নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। যেমন তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা, অতীত পাপের কথা বারবার স্মরণ করিয়ে দেওয়া, আল্লাহর ক্ষমা লাভের ব্যাপারে হতাশ করা, পার্থিব সুযোগ-সুবিধা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয় দেখানো ইত্যাদি। যারা এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন তাঁদের প্রতি পরামর্শ হলো আপনি আপনার ইচ্ছার ওপর অটল থাকুন, ধৈর্য ধারণ করুন এবং আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করুন। অচিরেই আল্লাহ আপনার জন্য রাস্তা খুলে দেবেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘অতঃপর তুমি কোনো সংকল্প করলে আল্লাহর ওপর নির্ভর করবে। যারা নির্ভর করে আল্লাহ তাদেরকে ভালোবাসেন।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৫৯)। অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা আমার উদ্দেশে সংগ্রাম করে আমি তাদেরকে অবশ্যই আমার পথে পরিচালিত করব। আল্লাহ অবশ্যই সৎকর্মপরায়ণদের সঙ্গে থাকেন।’ (সুরা : আনকাবুত, আয়াত : ৬৯)। আর যারা আপনাকে অসৎ পথে আঁকড়ে ধরে রাখতে চায় তাদের এড়িয়ে চলুন। কেননা এসব মানুষ ও জিন শয়তান পরস্পরকে সাহায্য করে যেন আপনাকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে নিতে পারে। এ জন্য আল্লাহ দোয়া শিখিয়েছেন, ‘বলুন! আমি আশ্রয় চাচ্ছি মানুষের প্রভুর কাছে, মানুষের মালিকের কাছে, মানুষের মাবুদের কাছে খান্নাস শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে। যারা মানুষের বক্ষে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষ ও জিনদের মধ্যে থেকে।’ (সুরা : নাস, আয়াত : ১-৬)। তাদের সান্নিধ্য ত্যাগ আপনার ভেতরও বিরহ জাগিয়ে তুলতে পারে, তবে তা সাময়িক। কিন্তু আপনি যখন ঈমানের আলোয় উদ্ভাসিত হবেন, তখন এই ব্যথা আপনার কাছে বিতৃষ্ণায় পরিণত হবে। কেননা তখন আপনি বুঝতে পারবেন অসৎ বন্ধুরা পরকালে আক্ষেপের কারণ হবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘জালিম ব্যক্তি সেদিন নিজ হস্তদ্বয় দংশন করতে করতে বলবে, হায় আমি যদি রাসুলের সঙ্গে সৎপথ অবলম্বন করতাম। হায়, দুর্ভোগ আমার, আমি যদি অমুককে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম। আমাকে সে বিভ্রান্ত করেছিল আর কাছে উপদেশ আসার পর। শয়তান মানুষের জন্য মহাপ্রতারক।’ (সুরা : ফোরকান, আয়াত : ২৭-২৯)। যখন তারা আপনাকে বিরক্ত করবে অথবা নিজেকে নিঃসঙ্গ মনে হবে, তখন আপনি মনকে বোঝাবেন আল্লাহর আনুগত্য উত্তম, নাকি মন্দ মানুষের? আল্লাহর অনুগ্রহ বেশি, নাকি অসৎ বন্ধুদের? আল্লাহ বেশি হকদার নাকি তাঁর অবাধ্য সৃষ্টিরা? আপনি অবিরাম আল্লাহর জিকিরে মগ্ন থাকুন, তাঁর সাহায্য অনুগ্রহ প্রার্থনা করুন। ঈমান ও তার দাবি সম্পর্কে সচেতন হোন। আল্লাহ আপনাকে অবশ্যই সাহায্য করবেন। কেননা আল্লাহর অঙ্গীকার হলো, ‘আল্লাহ তাদের দৃঢ়পদে রাখবেন, যারা ঈমান এনেছে শাশ্বত বাণীর ওপর দুনিয়ার ও আখিরাতের জীবনে।’ (সুরা : ইবরাহিম, আয়াত : ২৭)। আপনাকে যদি তারা ত্যাগ করে, সুন্দর আচরণ ও সহযোগিতার দুয়ার বন্ধ করে দেয়, তবে আপনি বিখ্যাত সাহাবি কাআব বিন মালিক (রা.)-এর ঘটনা স্মরণ করুন। তিনি তাবুকের যুদ্ধে না যাওয়ার কারণে যখন রাসুলুল্লাহ (সা.) সব সাহাবিকে বলেছিলেন, তাঁরা যেন তাঁকে বয়কট করে চলে, যতক্ষণ না আল্লাহর পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো ফায়সালা আসে। তখন তাঁর নিকট গাসসানের বাদশাহ এই মর্মে চিঠি লেখেন—‘আমি জানতে পেরেছি যে আপনার সাথি আপনার সঙ্গে রূঢ় ব্যবহার করেছে। আল্লাহ আপনাকে অপমানিত করবেন না এবং শেষ করেও দেবেন না। সুতরাং আপনার উচিত আমাদের সঙ্গে মিলে যাওয়া।’ সে চেয়েছিল এই সাহাবিকে মদিনা থেকে বের করে নিয়ে নিজের দলে টেনে নিতে, যেন তিনি অমুসলিম দেশে গিয়ে ঈমানহারা হয়ে যান। কিন্তু কাআব (রা.)-এর দৃঢ়তা দেখুন! তিনি বলেন, আমি তা পাঠ করে বললাম, এটিও একটি পরীক্ষা। আমি চিঠিটি দলা পাকিয়ে চুলার মধ্যে ছুড়ে ফেললাম এবং তা পুড়িয়ে ফেললাম। আপনিও এমন দৃঢ়তা অবলম্বন করবেন, যেন শয়তান ও তাদের দোসরদের মন ভেঙে যায়, তারা হতাশ হয়ে ফিরে যায় অথবা আপনার দৃঢ়তা দেখে তারা ঈমান ও ইসলামের পথে ফিরে আসবে। আল্লাহ আপনাকে বলছেন, ‘অতএব, আপনি ধৈর্য ধারণ করুন, নিঃসন্দেহে আল্লাহর অঙ্গীকার সত্য, আর এই অবিশ্বাসীরা যেন আপনাকে বিপথগামী করতে না পারে।’ (সুরা : রোম, আয়াত : ৬০)। আল্লাহ সবাইকে দ্বিনের ওপর অটল থাকার তাওফিক দিন। আমিন।

banner

মিলাদুন্নবীর ছুটির তারিখ পুনঃনির্ধারণ

জাতীয়, ধর্ম, 28 August 2025, 148 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
পবিত্র মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে সাধারণ ছুটির তারিখ পুনঃনির্ধারণ করেছে সরকার। আজ ২৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

banner

প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, চলতি বছর ২৬ আগস্ট থেকে রবিউল আউয়াল মাস গণনা শুরু হয়েছে। সেই হিসাবে আগামী ৬ সেপ্টেম্বর শনিবার মিলাদুন্নবী (সা.) পালিত হবে। এরই প্রেক্ষিতে ৫ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) নির্ধারিত সাধারণ ছুটির পরিবর্তে ৬ সেপ্টেম্বর শনিবার ছুটি পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে।

এদিন সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।

তবে জরুরি পরিষেবার আওতায় থাকা বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন, ইন্টারনেট, ডাকসেবা, হাসপাতাল, চিকিৎসাসেবা, ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম পরিবহনসহ সংশ্লিষ্ট যানবাহন ও কর্মীরা ছুটির বাইরে থাকবেন। জরুরি দায়িত্বে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রেও এ ছুটি প্রযোজ্য হবে না।

ব্যাংক খোলা থাকবে কি না-সেই বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে। আর আদালতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সুপ্রিম কোর্ট।

বাংলাদেশের আকাশে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে, রবিবার ঈদ

জাতীয়, ধর্ম, 30 March 2025, 490 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশের আকাশে আজ ৩০ মার্চ রবিবার ১৪৪৬ হিজরি সনের পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। আগামীকাল ৩১ মার্চ সোমবার সারা দেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদ্‌যাপিত হবে।

banner

সন্ধ্যায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভাপতি ও ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেনের সভাপতিত্বে এ বৈঠক হয়।

এদিকে, সৌদি আরবে আজ পালিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর। গতকাল শনিবার হিজরি ১৪৪৬ সালের পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। এর মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে পবিত্র রমজান। দুই মসজিদভিত্তিক ওয়েবসাইট ইনসাইট দ্য হারামাইন ও ফেসবুক পেজ হারামাইন শরিফাইনে এ ঘোষণা আসে।

পবিত্র ঈদুল আযহা আজ

জাতীয়, ধর্ম, 7 June 2025, 356 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
আজ ৭ জুন শনিবার পবিত্র ঈদুল আযহা। বাঙালি সমাজে কোরবানির ঈদ নামেও পরিচিত মুসলমানদের এই অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। যুগ যুগ ধরে এই ঈদ ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর করে আসছে।

banner

ঈদের নামাজ শেষে মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি করবেন সামর্থ্যবান মুসলমানরা। ঈদুল আযহার সাথে পবিত্র হজের সম্পর্ক রয়েছে। গতকাল শুক্রবার মক্কার অদূরে আরাফাতের ময়দানে সমবেত হওয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলিম সম্প্রদায় হজ পালন করবে। স্থানীয় হিজরি মাস গণনা অনুযায়ী ৬ জুন শুক্রবার সৌদি আরবে ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে। সকালে মুজদালিফা থেকে ফিরে হাজীরা মিনায় অবস্থান করে পশু কোরবানিসহ হজের অন্য কার্যাদি সম্পাদন করবেন।

ঈদুল আযহা হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও তার পুত্র হজরত ইসমাইলের (আ.) সঙ্গে সম্পর্কিত। হজরত ইব্রাহিম (আ.) স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে পুত্র ইসমাইলকে আল্লাহর উদ্দেশে কোরবানি করতে গিয়েছিলেন। আল্লাহর পক্ষ থেকে এই আদেশ ছিল হজরত ইব্রাহিমের জন্য পরীক্ষা। তিনি পুত্রকে আল্লাহর নির্দেশে জবাই করার সব প্রস্তুতি নিয়ে সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ইসলামে বর্ণিত আছে, নিজের চোখ বেঁধে পুত্র ইসমাইলকে ভেবে যখন জবেহ সম্পন্ন করেন তখন চোখ খুলে দেখেন ইসমাইলের পরিবর্তে পশু কোরবানি হয়েছে, যা এসেছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে।

সেই ঐতিহাসিক ঘটনার স্মৃতি ধারণ করেই হজরত ইব্রাহিমের (আ.) সুন্নত হিসেবে পশু জবাইয়ের মধ্য দিয়ে কোরবানির বিধান এসেছে ইসলামী শরিয়তে। সেই মোতাবেক প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য পশু কোরবানি করা ওয়াজিব।

ইসলামে কোরবানি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। পবিত্র কোরআনে সুরা কাউসারে এ ব্যাপারে বলা হয়েছে, ‘অতএব আপনার পালনকর্তার উদ্দেশে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি করুন।’ রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘ঈদুল আযহার দিন কোরবানির চেয়ে আর কোনো কাজ আল্লাহর কাছে অধিক পছন্দনীয় নয়।’ গরু, মহিষ, উট, ভেড়া, ছাগল, দুম্বাসহ যে কোনো হালাল পশু দিয়ে কোরবানি দেয়া যায়।
শনিবার সকালে মুসল্লিরা নিকটস্থ ঈদগাহ বা মসজিদে ঈদুল আযহার দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করবেন। খতিব নামাজের খুতবায় তুলে ধরবেন কোরবানির তাৎপর্য। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ধনি-গরিব নির্বিশেষে সবাই একত্রে নামাজ আদায় ও শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।

দস্তারবন্দী ও আন্তর্জাতিক ইসলামী মহাসম্মেলনে মাওলানা মামুনুল হক

জাতীয়, ধর্ম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 9 January 2025, 1254 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, ১৯৭২ সাল বাংলাদেশের জন্য কলঙ্কের বছর। ৭২ সালে এমন এক চেতনা ও সংবিধান তৈরি করা হয়েছিল যা ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ছিনতাই করা হয়েছে।

banner

আরও পড়ুন
লন্ডন পৌঁছেছেন বেগম খালেদা জিয়া

৯ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরে অবস্থিত হেফাজতের মহাসচিব আল্লামা সাজিদুর রহমানের প্রতিষ্ঠিত জামিয়া দারুল আরকাম আল ইসলামিয়া মাদরাসায় অনুষ্ঠিত দস্তারবন্দী ও আন্তর্জাতিক ইসলামী মহাসম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আরও পড়ুন
ডিবিতে আয়নাঘর থাকবে না, থাকবে না ভাতের হোটেলও: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আল্লামা সাজিদুর রহমানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক মুফতি খলিল আহমদ কাসেমীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেন, বাংলাদেশ-ইসলাম এক সূত্রে গাথা। বাংলাদেশে ইসলাম বিপন্ন হলে স্বাধীনতা টিকবে না। যারা ইসলামবিদ্বেষী তারাই বাংলাদেশের শত্রু। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের গৌরবময় বছর এবং ১৯৭২ সাল বাংলাদেশের জন্য কলঙ্কের বছর। ৭২ সাল কলঙ্কের কারণ, এ বছরের শেখ মুজিবুর রহমান নতুন চেতনা তৈরি করেছিলেন যা ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ছিনতাই করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান ৯ মাস পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি ছিলেন। স্বাধীনতার পর তিনি বাংলাদেশে না এসে, চলে গেলেন লন্ডনে। সেখান থেকে বাংলাদেশে না এসে চলে গেলে ভারতের নয়াদিল্লি। দেখা করলেন তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে। তখন ইন্দিরা গান্ধী শেখ মুজিবুর রহমান এর মুজিব কোটে কিছু নীতিকথা লিখে একটি চিরকুট ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন। সেই চিরকুটের কথা ছিল বাংলাদেশের গোলামির জিঞ্জির, স্বাধীনতা যুদ্ধের কৃতিত্ব ও চেতনাকে ছিনতাই করার মন্ত্র। তাই ৭২ সালের সংবিধান চার নীতি ভারতের সংবিধান থেকে পাচারকৃত।

আরও পড়ুন
ডালিম খেলে কী কী উপকার হয়?

মামুনুল হক বলেন, ১৯৭০ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে জাতির সঙ্গে শেখ মুজিবুর রহমান অঙ্গীকার করেছিলেন কোরআন ও সুন্নাহবিরোধী কোনো আইন তৈরি করবেন না। ৭২-এর সংবিধান করতে গিয়ে শেখ মুজিবুর রহমান অঙ্গীকার ভুলে গেছেন। তাই বলি ৭২ এর সংবিধান গাদ্দারের সংবিধান, মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার সংবিধান, বাংলাদেশকে ধ্বংস করার সংবিধান। সংবিধানে চার মূলনীতির এক নীতি ধর্ম নিরপেক্ষতা মতবাদ বাংলাদেশে ছিল না। এই নীতি ভারত থেকে আমদানি করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার সুনাম করে মামুনুল হক বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছিলেন। সকল রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতাদের ঐক্যবদ্ধ করেছেন। সেখানে ভারত আধিপত্যের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সর্বকালের নজিরবিহীন ঐক্য গড়ে তোলা হয়েছে। আমরাও ঘোষণা করতে চাই ভারতীয় আধিপত্যবাদ রুখতে সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতার মূলনীতি দিল্লিতে পাঠিয়ে দিতে হবে।

এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন হেফাজত ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব ও খতিবে বাঙাল আল্লামা জুনায়েদ আল হাবিব, মুফতি শাখাওয়াত হোসেন রাজি প্রমুখ।