অনলাইন ডেস্ক :
রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করেছেন আপিল বিভাগ। আজ ১ জুন রবিবার দলটির পক্ষে করা আপিল গ্রহণ করে রায় দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ। এর ফলে জামায়াতকে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া নিবন্ধনের সিদ্ধান্ত বৈধ বলে গণ্য হবে বলে জানিয়েছেন দলটির আইনজীবীরা।
এদিকে, জামায়াতের দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন আপিল বিভাগ।
এর আগে গত ১৪ মে এ মামলায় আপিল শুনানি শেষে রায়ের জন্য ১ জুন দিন ধার্য করেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। ওইদিন আদালতে জামায়াতের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী এহসান এ সিদ্দিক ও আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম।
২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর জামায়াতের পক্ষে কোনও আইনজীবী আদালতে উপস্থিত না থাকায় আদালত আপিল মামলাটি খারিজ করে দেন।
এরপর আপিলটি পুনরুজ্জীবনের জন্য আবেদন করা হয়। গত বছরের ২২ অক্টোবর আদালত বিলম্ব মার্জনা করে আপিলটি শুনানির জন্য রিস্টোর করেছেন অর্থাৎ পুনরুজ্জীবন করেছেন। এরপর ৩ ডিসেম্বর আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়েছিল। চতুর্থ দিনের মতো শুনানি শেষে মামলার রায়ের দিন ধার্য করা হয়।
২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর জামায়াতে ইসলামীকে সাময়িক নিবন্ধন দেওয়া হয়। পরের বছর বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, জাকের পার্টির তৎকালীন মহাসচিব মুন্সি আবদুল লতিফ, সম্মিলিত ইসলামী জোটের প্রেসিডেন্ট মাওলানা জিয়াউল হাসানসহ ২৫ জন জামায়াতের নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন।
রিটে জামায়াতের তৎকালীন আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, নির্বাচন কমিশনসহ চারজনকে বিবাদী করা হয়। তারা জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের আর্জি জানান।
এ রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক (পরে প্রধান বিচারপতি) ও বিচারপতি মো. আবদুল হাইয়ের (বর্তমানে অবসর) হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি রুল জারি করেন। নিবন্ধন নিয়ে রুল জারির পর ওই বছরের ডিসেম্বরে একবার, ২০১০ সালের জুলাই ও নভেম্বরে দু’বার এবং ২০১২ সালের অক্টোবর ও নভেম্বরে দু’বার তারা গঠনতন্ত্র সংশোধন করে নির্বাচন কমিশনে জমা দেয় জামায়াত। এসব সংশোধনীতে দলের নাম ‘জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশ’ পরিবর্তন করে ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’ করা হয়।
২০১৩ সালের ১২ জুন ওই রুলের শুনানি শেষ হয়। একই বছরের ১ আগস্ট জামায়াতকে দেওয়া নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে অবৈধ বলে রায় দেন বিচারপতি এম মোয়াজ্জাম হোসেন (বর্তমানে অবসর), বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম (পরে আপিল বিভাগের বিচারপতি পদ থেকে পদত্যাগ করেন) ও বিচারপতি কাজী রেজা-উল-হকের (১৯ নভেম্বর পদত্যাগ করেন) সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বৃহত্তর (লার্জার) বেঞ্চ।
সে সময় সংক্ষিপ্ত রায়ে আদালত বলেন, এ নিবন্ধন দেওয়া আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত। একইসঙ্গে আদালত জামায়াতে ইসলামীকে আপিল করারও অনুমোদন দিয়ে দেন।
তবে এ রায়ের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে জামায়াতের করা আবেদন একই বছরের ৫ আগস্ট খারিজ করে দেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী। পরে একই বছরের ২ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে জামায়াতে ইসলামী আপিল করে। ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর জামায়াতের আপিল খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।
এরপর ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে টানা চতুর্থ মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে। তবে গত বছর জুলাই মাস থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা কোটা প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। এ আন্দোলনে গণহত্যার অভিযোগে ছাত্র-জনতা সরকার পতনের দাবি তোলে। এর মধ্যে ১ আগস্ট সরকার অঙ্গসংগঠনসহ জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধের আবেদন বাতিলের উদ্যোগ নেয়। গত ২৮ আগস্ট সরকার আগের নিষিদ্ধের আদেশ বাতিল করে। এরপর আপিল বিভাগে নিবন্ধন মামলাটি পুনরায় শুনানির জন্য আবেদন করে জামায়াত।
অনলাইন ডেস্ক :
নতুন শিক্ষাক্রমের বিভিন্ন বিষয়ে সংযোজন-বিয়োজন ও মূল্যায়ন পদ্ধতির পরিবর্তনের সম্ভাবনা জানিয়েছেন সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তিনি বলেছেন, এই শিক্ষাক্রমে বেশকিছু ইনপুট (সংযোজন-বিয়োজন প্রয়োজনীয়তা) এসেছে। সেগুলো বিচার বিশ্লেষণ করে দেখা হচ্ছে। যেসব বিষয় পরিবর্তন করা প্রয়োজন, আমরা অবশ্যই সেগুলো পরিবর্তন করব।
আজ ১২ জানুয়ারি শুক্রবার বিকাল ৪টায় রাজধানীর বনানীতে অবস্থিত নিজস্ব বাসভবনে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাতে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো মূল্যায়ন পদ্ধতি, যেখানে ইতিমধ্যে বেশকিছু ইনপুট এসেছে। ফলে মূল্যায়ন পদ্ধতিতে কিছু পরিবর্তন করতে হবে। এ ছাড়া নতুন শিক্ষাক্রমেও বেশকিছু পরিবর্তন করা প্রয়োজন। এই শিক্ষাক্রম যে শতভাগ স্থায়ী, বিষয়টি এমন না। এর আগেও আমরা বলেছি, শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে যেসব সমস্যা দেখা দেবে, সেগুলো বিচার বিবেচনা করে সংশোধন করা হবে।’
তরুণদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে শিক্ষায় গুরুত্বারোপ করে তিনি আরও বলেন, ‘কর্মসংস্থান সংশ্লিষ্ট সব দক্ষতা আমরা শিক্ষাক্রমে অন্তর্ভুক্ত করতে চাই। এতে করে শিক্ষার্থীরা কর্মসংস্থানের বিষয়টি মাথায় রেখে নিজেদের শিক্ষা বিষয়ে পরিকল্পনা সাজাতে পারবে। তাদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার বিষয়ে আমরা বেশি জোর দিচ্ছি। কর্মমুখী শিক্ষাকে প্রাধান্য দিয়ে আমরা পুরো শিক্ষা ব্যবস্থা সাজাতে চাই।’
অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে সৈয়দ রেফাত আহমেদ শপথ নিয়েছেন। আজ ১১ আগস্ট রবিবার দুপুর পৌনে ১টার দিকে বঙ্গভবনের দরবার হলে তাঁকে শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
দেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিয়ে ১১ আগস্ট রোববার দুপুরে সরাসরি সুপ্রিম কোর্টে এসেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
বেলা সোয়া ২টায় প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ সুপ্রিম কোর্টে আসেন এবং উপস্থিত বিচারপতিদের সাথে করমর্দন করেন। কিছুক্ষণের মধ্যে শ্রদ্ধা জানাতে সাভার স্মৃতি সৌধে যাবেন প্রধান বিচারপতি।
এর আগে আজ রোববার বেলা ১২টা ৪৫ মিনিটে বঙ্গভবনের দরবার হলে তাকে শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। শপথ অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সহ অন্যান্য উপদেষ্টা, সামরিক-বেসামরিক ব্যক্তিবর্গ, অ্যাটর্নি জেনারেল, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সাংবাদিকসহ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবির মুখে গতকাল ১০ আগস্ট শনিবার দেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান পদত্যাগের পর নতুন প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদকে সংবিধানের ৯৫ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন প্রধান বিচারপতি পদে নিয়োগ দেন। শপথের তারিখ থেকে তার এই নিয়োগ কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) আজ। মানবজাতির শিরোমণি মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও ওফাত দিন। ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল ইসলামের শেষ নবী (সা.) আরবের মরু প্রান্তরে মা আমিনার কোল আলো করে জন্মগ্রহণ করেন। ৬৩২ খ্রিস্টাব্দের এ দিনে মাত্র ৬৩ বছর বয়সে তিনি ইন্তেকাল করেন। দিনটিকে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী বা সিরাতুন্নবী (সা.) হিসেবে পালন করে আসছে বিশ্বের মুসলমান সম্প্রদায়।
একটা সময় আরবজাহান ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। মানুষ হয়ে পড়েছিল বেদিন। তারা আল্লাহকে ভুলে গিয়ে নানা অপকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়ে। সর্বত্র দেখা দিয়েছিল অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা।
মারামারি আর হানাহানিতে লিপ্ত ছিল মানুষ। মূর্তিপূজা করত। এ যুগকে বলা হয় ‘আইয়ামে জাহেলিয়াত’। এ থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে, তাদের আলোর পথ দেখাতে আল্লাহতায়ালা মুহাম্মদ (সা.)-কে এ পৃথিবীতে পাঠান।
পবিত্র কোরআনে বর্ণিত আছে, ‘মহানবীকে সৃষ্টি না করলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পৃথিবী সৃষ্টি করতেন না।’ এ কারণে এবং তৎকালীন আরবজাহানের বাস্তবতায় এ দিনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক বেশি।
পবিত্র কুরআনে তাঁর জীবনকে বলা হয়েছে ‘উসওয়াতুন হাসানাহ্’ অর্থাৎ সুন্দরতম আদর্শ।
এ দিনটি উপলক্ষে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও সব স্থাপনায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আজ ১ ফেব্রুয়ারি। শুরু হলো রক্তে রাঙানো সেই ফেব্রুয়ারি মাস-ভাষা আন্দোলনের মাস। বাঙালি জাঁতি পুরো মাসজুড়ে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা জানাবে ভাষার জন্য যারা আত্মত্যাগ করেছিলেন তাদের। সবাই গেয়ে উঠবেন ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’।
ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ফেব্রুয়ারি ছিল ঔপনিবেশিক প্রভুত্ব ও শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে বাঙালির প্রথম প্রতিরোধ এবং জাতীয় চেতনার প্রথম উন্মেষ। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে দুর্বার আন্দোলনে সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিকের রক্তের বিনিময়ে বাঙালি জাঁতি পায় মাতৃভাষার মর্যাদা এবং আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেরণা। তারই পথ ধরে শুরু হয় বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন এবং একাত্তরে নয় মাস পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
বস্তুত ফেব্রুয়ারি মাস একদিকে শোকাবহ হলেও অন্যদিকে আছে এর গৌরবোজ্জ্বল দিক। কারণ, এ মাসে পৃথিবীতে একমাত্র জাঁতি হিসেবে বাঙালিরা ভাষার জন্য জীবন দিয়েছিলেন। আজ ১ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের সবচেয়ে বড় কর্মযঞ্জ মাসব্যাপী বইমেলা শুরু হচ্ছে। বাংলা একাডেমিতে বিকেল ৩টায় এই মেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরি চত্বরে জাতীয় কবিতা উৎসব শুরু হবে। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে শৃঙ্খল মুক্তির ডাক দিয়ে ১৯৮৭ সালে শুরু হয় এ উৎসবের। এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এ মাসে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নিয়েছে।