অনলাইন ডেস্ক :
গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় কমপক্ষে ৮১জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আরো চার শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার দুপুর পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় গাজার বিভিন্ন স্থানে এসব হামলার ঘটনা ঘটে। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
আল-শিফা হাসপাতালের কর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গাজা শহরের একটি স্টেডিয়ামের কাছে হামলায় শিশুসহ কমপক্ষে ১১ জন নিহত হয়েছেন। স্টেডিয়ামটি তাঁবুতে বসবাসকারী বাস্তুচ্যুত লোকদের আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, তারা বসে ছিলেন। একটি রাস্তায় হামলা হওয়ার পর হঠাৎ বিশাল বিস্ফোরণের শব্দ শোনেন।
আহমেদ কিশাউই নামে এই ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, এই এলাকাটি তাঁবুতে পরিপূর্ণ ছিল– এখন তাঁবুগুলো বালুর নিচে। আমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা খালি হাতে খুঁড়েছি।
তিনি বলেন, এখানে এমন কোনো ব্যক্তি নেই যাকে খোঁজা হচ্ছে, বা তাদের (ইসরাইলিদের) দাবি অনুযায়ী কোনো সন্ত্রাসীও নেই এখানে। কেবল বেসামরিক বাসিন্দা, শিশু, যাদেরকে কোনো দয়া না দেখিয়ে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
আল-মাওয়াসি এলাকায় একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক এবং একটি তাঁবুতে হামলায় আরো ১৪ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে, যাদের মধ্যে কয়েকজন শিশুও ছিল।
আত্মীয়রা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানিয়েছেন, আল-মাওয়াসিতে হামলায় তিনটি শিশু এবং তাদের বাবা-মা নিহত হয়েছেন, যারা ঘুমের মধ্যেই মারা যান।
শিশুদের দাদি সুয়াদ আবু তেইমা বলেন, এই শিশুরা তাদের কী ক্ষতি করেছিল? তাদের দোষ কী?
শনিবার বিকালে জাফা স্কুলের কাছে তুফফাহ মহল্লায় একটি বিমান হামলার পর আরো মানুষ নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে, যেখানে শত শত বাস্তুচ্যুত গাজাবাসী আশ্রয় নিয়েছিল।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, এই হামলায় পাঁচ শিশুসহ প্রায় আটজন নিহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী মোহাম্মদ হাবুব রয়টার্সকে বলেন, হামলায় তার ভাগ্নে, বাবা এবং প্রতিবেশীদের সন্তানরা নিহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা তাদের কোনো ক্ষতি করিনি, তারা কেন আমাদের ক্ষতি করছে? আমরা কি তাদের ক্ষতি করেছি? আমরা বেসামরিক নাগরিক।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ক্ষতিগ্রস্ত কিছু এলাকায় চলাচল অসম্ভব হওয়ায় অ্যাম্বুলেন্স এবং সিভিল ডিফেন্স কর্মীরা ধ্বংসস্তূপের নিচে ও রাস্তায় আটকে পড়া অনেক হতাহতের কাছে পৌঁছাতে পারেনি।
গত মার্চ মাসে ইসরাইল গাজায় নতুন করে হামলা শুরু করলে দুই মাসের একটি যুদ্ধবিরতি ভেঙে পড়ে। ১৯ জানুয়ারি শুরু হওয়া এই যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি তিনটি ধাপে বিভক্ত ছিল, কিন্তু তা প্রথম ধাপের পর আর এগোয়নি।
দ্বিতীয় ধাপের অন্তর্ভুক্ত ছিল একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা। ইসরাইলে বন্দি ফিলিস্তিনিদের বিনিময়ে গাজায় থাকা বাকি জীবিত জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা এবং গাজা থেকে ইসরাইলি বাহিনী সম্পূর্ণ প্রত্যাহার।
বৃহস্পতিবার হামাসের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, মধ্যস্থতাকারীরা গাজায় একটি নতুন যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি চুক্তির জন্য তাদের প্রচেষ্টা জোরদার করেছে, কিন্তু ইসরাইলের সঙ্গে আলোচনা স্থবির হয়ে আছে।
গাজায় হামাসের হাতে আটক বাকি ইসরাইলি জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে একটি চুক্তির জন্য শনিবার সন্ধ্যায় তেলআবিবে একটি সমাবেশের আয়োজন করা হয়। আয়োজকরা বলেন, যুদ্ধ শেষ করে এক দফাতেই সবাইকে বাড়ি ফিরিয়ে আনার সময় এসেছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ভারতে গিয়ে আটকে পড়া ১২ বাংলাদেশি নাগরিক দেশে ফিরেছেন। আজ ৬ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বিকেলে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে তারা বাংলাদেশে আসেন। তারা বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে গিয়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়ে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করেন। ত্রিপুরাস্থ বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সহযোগিতায় তাদেরকে দেশে পাঠানো হয়েছে।
দেশে ফেরত আসা বাংলাদেশিরা হলেন সুনামগঞ্জ জেলার জয় হরি রায়ের স্ত্রী। জবা রানী রায় ও তার ছেলে জগদীশ রায়, নেত্রকোনা জেলার কুদরত আলীর মেয়ে মোছা. বিউটি, চাঁদপুর জেলার আবু তাহেরের ছেলে রিয়াদ হোসেন, যশোর জেলার মো. সুবহান মিয়ার মেয়ে বিনা বেগম, একই জেলা মো. আজাদ শেখের ছেলে শেখ সাদি, নওগা জেলার মো. শাহীর আলীর মেয়ে শাহিনা বেগম, জামিলপুর জেলার মো. নরুল ইসলামের ছেলে মো. শামীম মিয়া ও তার ভাই সোহান মিয়া, একই জেলার আকবর আলীর ছেলে মো. ফারুক হোসেন, একই জেলার মো. ফারুক হোসেন ও তার স্ত্রী আসমা বেগম, ঝালকাটি জেলার বিল্পব চন্দ্র অধিকারীর মেয়ে তৃষ্ণা অধিকারী।
দেশে ফেরা এক মেয়ের মা বলেন, আমার মেয়ে ফিরে এসেছে এজন্য আমি খুশি। দালালের মাধ্যমে ভারতে গিয়েছিল বলে তিনি জানান।
ভারত ফেরত জামালপুরের এক নারী (আসমা বেগম) বলেন, আমাকে গার্মেন্টস্ কাজ দেওয়ার কথা বলে আমাকে নিয়ে যায়। বলেছিল ৪০ হাজার টাকা বেতন দিবে। আখাউড়া চেক পোষ্টের সীমান্ত রেখায় উপস্থিত স্বজনরা ভারত ফেরত বাংলাদেশীরদেরকে গ্রহণ করেন।
এসময় আখাউড়া উপেজলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাবেয়া আক্তার উপস্থিত ছিলেন। ব্র্যাক মাইগ্রেশন ম্যানেজার সজিব কুমার পান্ডে, ডেপুটি ম্যানেজার শায়লা শারমিন উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে ত্রিপুরাস্থ বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মদ বলেন, ত্রিপুরার সংবাদ পত্রে প্রায়ই দেখছি ত্রিপুরার সীমান্ত দিয়ে নারী এবং শিশু পাচারের ঘটনা ঘটছে। যেহেতু ত্রিপুরার সঙ্গে বাংলাদেশের একটি বড় সীমান্ত রয়েছে। অনেক জায়গায় কাঁটাতারের বেড়া নেই। দুষ্কৃতিকারীরা এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে এসব কাজ করে যাচ্ছে। আশা করি দুদেশই এ বিষয়ে আরও তৎপর হবেন।
তিনি আরো বলেন, ১২ জন বাংলাদেশি অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিল। পরবর্তীতে তারা ভারতের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়ে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ শেষে সেখানে একাধিক সেন্টারে রাখা হয়। আইনি প্রক্রিয়া শেষে আজ তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশে স্টারলিংক সফলভাবে চালু করার ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তাদের সমন্বিত প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন স্পেসএক্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ার। এ সময় তিনি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের বিভিন্ন বিষয়ে ভূয়সী প্রশংসা করেন। আজ ১৮ জুলাই শুক্রবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এই প্রশংসা করেন।
স্পেসএক্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ার বলেন, আমরা ১৫০টি দেশ ও অঞ্চলে কাজ করি। আমরা এত দক্ষতা ও দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ আগে কখনো দেখিনি। স্পেসএক্স-এর সব সহকর্মীর পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা আপনার লোকজনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার অপেক্ষায় আছি।
প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশ সফরের জন্য ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এখন বর্ষাকাল, দেশের এক মনোরম সময়। সুন্দর পরিবেশ। চারদিকে সবুজ আর পানি। কিন্তু বন্যা ও জলাবদ্ধতা পরিস্থিতির বাস্তবতাও আছে। সেজন্য আমাদের ভালো কানেক্টিভিটির স্বার্থে নির্ভরযোগ্য প্রযুক্তির প্রয়োজন। আমাদের পার্বত্য অঞ্চলের দূরবর্তী এলাকাগুলোতে উন্নত কানেক্টিভিটির বিশেষ প্রয়োজন। এসব অঞ্চলে ভালো স্কুল শিক্ষক ও ডাক্তার নেই। আমরা ১০০টি স্কুলে অনলাইন শিক্ষা চালু করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছি, যা বিচ্ছিন্ন এলাকার শিক্ষার্থীদের উপকারে আসবে।
অন্তর্ভুক্তিমূলক স্বাস্থ্যসেবার ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি, যাতে দূরবর্তী এলাকার মানুষ অনলাইনে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে পারে। তাদের চিকিৎসার ইতিহাস ডিজিটালি সংরক্ষিত থাকবে, এর ফলে ভবিষ্যতে পরামর্শ দেওয়া সহজ হবে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, এটি প্রেগনেন্সি পিরিয়ডে খুব কার্যকর ভূমিকা রাখে। নারীদের এ সময় ডাক্তারের কাছে যাওয়ার জন্য আরেকজন সহযোগীর প্রয়োজন হয়। ডিজিটাল হেলথ সেবা হলে তারা ঘরে বসেই ডাক্তার দেখাতে পারবেন।
অধ্যাপক ইউনূস উল্লেখ করেন, প্রবাসী বাংলাদেশিরাও ডিজিটাল হেলথ সেবা থেকে উপকৃত হবেন। প্রবাসীরা ভাষার কারণে অনেক সময় ডাক্তারের কাছে যেতে অস্বস্তিতে ভোগেন। কী বলবেন-এটা নিয়ে ভাবেন। তবে ডিজিটাল হেলথ সেবা হয়ে গেলে বিদেশ থেকেই বাংলাদেশের ডাক্তারের সাথে তারা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শের জন্য কথা বলতে পারবেন।
প্রধান উপদেষ্টা লরেন ড্রেয়ারের উদ্দেশে বলেন, আমরা এখানে ছোট ছোট যে উদ্যোগ নিচ্ছি, আপনারা এগুলোকে বৈশ্বিক পরিসরে নিয়ে যেতে পারেন।
লরেন ড্রেয়ার অধ্যাপক ইউনূসের আইডিয়ার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘আপনি যে দৃষ্টান্ত তৈরি করছেন, তা নিয়ে অন্য নেতাদের সঙ্গে আমরা কথা বলতে পারি। আমরা বলবো-অধ্যাপক ইউনূস যদি নিজের দেশে এগুলো করতে পারেন, তাহলে আপনারাও আপনার দেশে করতে পারেন।’
তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে অধ্যাপক ইউনূসের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।
স্পেসএক্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, সরকারি সেবাগুলো দেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে আপনি যে উদ্যোগ নিয়েছেন তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। আমি প্রায়ই বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করি, তাই জানি দুর্নীতি কীভাবে একটি গুরুতর সমস্যা হতে পারে। প্রযুক্তির মাধ্যমে সেবা বিকেন্দ্রীকরণ এবং সুশাসন নিশ্চিত করা একটি অর্থবহ দৃষ্টিভঙ্গি।
বৈঠকে স্পেসএক্সের গ্লোবাল এনগেজমেন্ট কনসালট্যান্ট রিচার্ড গ্রিফিথস, বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এবং বিডা ও বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
পাঁচ মাসেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আবারও পণ্য আমদানি শুরু হয়েছে।
আজ ১৩ জুন বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া ছয়টায় একটি ট্রাকে করে বন্দর দিয়ে ৭ মেট্রিক টন জিরা এসেছে ভারত থেকে। এর মাধ্যমে আবারও সচল হলো বন্দরের আমদানি বাণিজ্য।
হাইড্রোল্যান্ড সলিউশন নামে ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠান এই জিরা আমদানি করেছে। তবে আজ থেকে সরকারি ছুটি শুরু হওয়ার ঈদের আগে বন্দর থেকে জিরা খালাস না করতে পারার শঙ্কা প্রকাশ করেন প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে।
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট মেসার্স শফিকুল ইসলাম আমদানিকৃত জিরার কাস্টমস ক্লিয়ারিংয়ের কাজ করবে।
আমদানিকারক সূত্রে জানা গেছে, প্রতি টন জিরার দাম পড়েছে দুই হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার, যা স্থানীয় মুদ্রায় দুই লাখ ৯২ হাজার ৫০০ টাকার মতো (প্রতি ডলার ১১৭ টাকা ধরে)।
আখাউড়া স্থলবন্দরের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. ছাগিরুল ইসলাম বলেন, হাইড্রোল্যান্ড সলিউশন আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ৭ মেট্রিক টন জিরা আমদানির জন্য এলসি খুলেছে। আজকে সন্ধ্যায় জিরা নিয়ে একটি ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করেছে। প্রথমবারের মত এই স্থলবন্দর দিয়ে দেশে জিরা আমদানি হয়েছে। আমদানি পণ্য থেকে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত হারে শুল্ক এবং বন্দর কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন মাশুল পাবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অভিযোগে আটক করা দুই বাংলাদেশি তরুণ-তরুণী কারাভোগ শেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ফিরেছেন। ৯ অক্টোবর বুধবার সন্ধ্যায় আখাউড়া স্থলবন্দরের শূন্যরেখায় তাদেরকে হস্তান্তর করা হয়।
দেশে ফেরা তরুণ তরুণীরা হলেন, চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার সুব্রত ভট্টাচার্য্য (২১) ও নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা জান্নাত আক্তার (১৯)।
ভারতের ত্রিপুরার বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সহযোগিতায় আখাউড়া-আগরতলা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট সীমান্ত দিয়ে তারা দেশে ফেরেন।
এদিকে আখাউড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সজিব মিয়া, ইমিগ্রেশন ইনচার্জ মো. খাইরুল আলম, বিজিবির আইসিপি পোস্ট কমান্ডার মো. রুহুল আমিনের কাছে তাদেরকে হস্তান্তর করেন ত্রিপুরায় নিযুক্ত বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের কর্মকর্তা মো. ওমর শরীফ।
এসময় গণমসাধ্যমকে সুব্রত ভট্টাচার্য্যের মা বলেন, ‘আমি পোশাক কারখানায় কাজ করি। আমাদের আর্থিক অবস্থা খারাপ বিধায় ছেলেকে একটা আশ্রমে পড়াশোনা করার জন্য দেওয়া হয়। একদিন রাতে ফোন আসে আমার ছেলে ভারতে। ফোন পেয়ে আমি দিশাহারা হয়ে যাই। সে ওখানে থাকার প্রায় দশ মাস আমি পাগলপ্রায় ছিলাম। আমার স্বামীও অসুস্থ। কোথায় যাবো, কী করবো বুঝে উঠতে পারছিলাম না। এতোদিন পর ছেলেকে পেয়ে আমি আনন্দিত।’
দেশে ফেরা সুব্রত ভট্টাচার্য্য জানান, তিনি দশ মাস আগে রামগড় সীমান্তপথে পুরোহিত বিদ্যার্জনে ভারত যান। সেখানে তিনি বিএসএফের হাতে আটক হন।
এদিকে জান্নাত আক্তার জানান, পরিচ্ছন্নতা কাজের জন্য দালালের মাধ্যমে তিনি ভারতে যান। সিলেটের খোয়াই সীমান্তপথে তিনি গিয়েছিলেন। দেশে ফিরতে পেরে তিনি খুব খুশি।
অনলাইন ডেস্ক :
স্থানীয় সময় ভোর ৫ টায় দিকে নির্বাচন কমিশন থেকে প্রাপ্ত ভোটের ফলে পার্লামেন্টে বড় জয় পেয়েছে বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের দল একে পাটি। অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এখনো তিনি ৫০ %-এর বেশি ভোট পাননি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তিনি ৪৯.৪৪ % ভোট পেয়েছেন। অন্য দিকে তার প্রতিদ্বন্দ্বি পেয়েছেন প্রায় ৪৫% ভোট।
গতকাল রবিবার এশিয়া ও ইউরোপের দেশ তুরস্কে ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। সারারাত ভোট গণনার পর দেখা যায় পার্লামেন্টের ভোটে বড় জয় পেয়েছে রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের দল একে পার্টি ও তার জোট পিপলস অ্যালায়েন্স। তবে এরদোয়ান প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন কি না সেটি এখনও স্পষ্ট নয়। তবে এখনো ২ % ভোট গণনা বাকী রয়েছে।
বেসরকারি প্রাপ্ত ভোটের ফলাফলে দেখা গেছে, সংসদে ৬০০ আসনের মধ্যে পিপলস অ্যালায়েন্স জোট পেয়েছে ৩২২ আসন। এর মধ্যে এরদোয়ানের দল একে পার্টি পেয়েছে ২৬৬ সিট। এছাড়া বিরোধী নেসন্স অ্যালায়েন্স জোট পেয়েছে ২১২ সিট। এছাড়া অন্যান্য দলগুলো পেয়েছে ৬৬ সিট।
এদিকে তুরস্কের সংবাদ সংস্থা আনাদুলু এজেন্সি ভোটের ফলাফল প্রকাশ করছে। সেখানের হিসাবে সোমবার বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ৯৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ ব্যালট গণনা হয়েছে। এতে এরদোয়ান পেয়েছেন ৪৯.৪৩ শতাংশ ভোট। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কামাল কিলিচদারুগলু পেয়েছেন ৪৪.৯৮ শতাংশ।
কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশ ভোট না পেলে রানঅফ বা দ্বিতীয় দফায় ভোট হবে ২৮ মে। তবে এরদোয়ান আশা প্রকাশ করে বলেছেন, ফাইনাল রেজাল্টে তিনি ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পাবেন।
প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে স্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে আছেন উল্লেখ করে এরদোয়ান বলেন, ‘প্রথম দফা ভোটে নির্বাচন শেষ হবে কি না আমরা এখনো তা জানি না।কিন্ত দেশের মানুষ ইচ্ছায় দ্বিতীয় দফায় লড়তে প্রস্তুত রয়েছি আমি।’
সাধারণত ইস্তাম্বুলে থেকে ভোটের ফল জানেন তিনি। তবে এবার ভোটের ফল প্রকাশের আগেই রাজধানী আঙ্কারায় পৌঁছে গেছেন এরদোয়ান। দলের সদরদফতের বারান্দায় সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বক্তৃতাও দিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট।
তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় জাতীয় ইচ্ছার প্রতি সম্মান জানিয়েছি। এই নির্বাচন ও আগামী নির্বাচনেও আমরা জাতীয় ইচ্ছাকেই সম্মান জানাব।’
এদিকে ফল ঘোষণায় বিলম্বের অভিযোগ তুলেছেন কামাল কিলিচদারুগলু। তার দাবি, ভোটগণনা এতক্ষণে শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্ত নির্বাচন কমিশন ফল ঘোষণায় বিলম্ব করছে। বিশেষ করে যেসব কেন্দ্রে তার জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
কিলিচদারুগলু বলেন, ‘এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। খুব শিগগিরই ভোটের ফল জানা যাবে। দেশের জনগণ আর বেশিক্ষণ এ অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকতে চায় না। ভোটে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন নিয়ে কেউ শঙ্কিত হবেন না।’
এবারের নির্বাচনে তুরস্কের নিবন্ধিত ভোটার সংখ্যা ছিল ৬ কোটি ৪১ লাখ। এর মধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৫ কোটি ৩৯ লাখের বেশি মানুষ ভোট দিয়েছে। মোট হিসাবে এটি ৮৮.৮৩ শতাংশ। সব মিলিয়ে গ্রহণযোগ্য ভোট পড়েছে ৫ কোটি ২৮ লাখ ৯৬ হাজারের বেশি। ব্যালট বক্স ছিল ১ লাখ ৯২ হাজার ২১৪টি।
অপরদিকে পার্লামেন্ট নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৫ কোটি ৪৩ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ১৩ লাখ ভোট বাতিল হয়েছে। ব্যালট বক্স ছিল দুই লাখের বেশি। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৮৮.১০ শতাংশ।
তুরস্কে নির্বাচন। প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। কতটা এগিয়ে এরদোয়ান। কত ভোট পেলেন এরদোগান, এরদোয়ান। জিততে পারবেন কি এরদোয়ান। তুর্কি ভোট। তুরস্কে নির্বাচনের ফলাফল। সূত্র: আনাদুলু, টিআরটি