চলারপথে রিপোর্ট :
গ্রামীণ ঐতিহ্যকে সামনে রেখে সরাইলে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল মনোমুগ্ধকর ও প্রাণবন্ত লাঠি খেলা। ঢাক-ঢোল আর কাঁসার ঝঙ্কারে মুখর ছিল পুরো এলাকা। হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে জমজমাট হয়ে ওঠে আয়োজনটি।
১১ জুলাই শুক্রবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল সদর ইউনিয়নের সৈয়দটুলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় আয়োজিত হয় এই ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা। এতে অংশ নেয় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের লাঠিয়াল বাহিনী। তারা বাদ্যের তালে তালে নেচে-নেচে লাঠির কসরত প্রদর্শন করে। কখনও প্রতিপক্ষের আঘাত ঠেকিয়ে, কখনও পাল্টা আক্রমণে মেতে ওঠে প্রতিযোগীরা।
খেলাকে ঘিরে পুরো এলাকা পরিণত হয় উৎসবমুখর এক আনন্দমেলায়। নারী, পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধ—সব বয়সী মানুষ ভিড় করে খেলা দেখতে। দর্শকরা করতালির মাধ্যমে লাঠিয়ালদের উৎসাহিত করেন। হারিয়ে যাওয়া এই লোকজ খেলাটি দেখে অনেকেই ফিরে যান শৈশব স্মৃতিতে।
দর্শনার্থীরা জানান, এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে নিয়মিত আয়োজন ও সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন।
খেলার উদ্বোধন ও পুরস্কার বিতরণ করেন- প্রধান অতিথি বিএনপির জেলা আইন বিষয়ক সম্পাদক এবং সরাইল উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুজ্জামান লস্কর তপু। তিনি বলেন, লাঠি খেলা শুধু একটি বিনোদন নয়, এটি আমাদের শিকড়ের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
আয়োজনের সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় শালিসকারক নুরুল হক।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক দুলাল মাহমুদ আলী, স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক মিজান মিয়া, সরাইল সদর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কাজল মেম্বার, উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন মাস্টার, উপজেলা জাসাসের আহ্বায়ক রিপন ঠাকুর, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব মীর ওয়ালীদ সাক্ষাত, শালিসকারক মিজান মিয়া ও সিদ্দিক আলী প্রমুখ।
অনুষ্ঠান শেষে অংশগ্রহণকারী লাঠিয়ালদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
কাতারে সড়ক দুর্ঘটনায় কবির হোসেন-(৩৬) নামে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার এক যুবক নিহত হয়েছে। সৌদি আরবে ওমরাহ হজ্ব পালন শেষে কর্মস্থল কাতারে ফেরার পথে গতকাল শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় সৌদি আরব-কাতারের সীমান্তবর্তী এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনা তিনি মারা যান।
নিহত কবির হোসেন সরাইল উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের কালা মিয়ার ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কাতার প্রবাসী ছিলেন। নিহতের মরদেহ সৌদি আরব আল হাসান হোপ কিং ফাহাদ হসপিটালের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি শনিবার বিকালে নিশ্চিত করেছেন নিহতের ছোট ভাই আতাউল্লাহ।
আতাউল্লাহ জানান, তারা ১০ ভাই-বোন। এর মধ্যে কবির হোসেন তৃতীয়। তিনি গত ৯ বছর ধরে কাতারে চাকুরি করতেন।
দেশে ছুটি কাটিয়ে গত ৩ মাস আগে আবার কাতার যায় কবির। গত সপ্তাহে বন্ধুদের নিয়ে কাতার থেকে সৌদি আরব যান ওমরাহ হজ্ব করতে। ওমরাহ শেষে শনিবার সৌদি আরব থেকে কাতার ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় কবির মারা যায়।
আতাউল্লাহ আরো বলেন, কবিরের স্ত্রী ও ৩ বছরের একটি ছেলে সন্তান আছে। কিভাবে সৌদি আরব থেকে তার ভাইয়ের লাশ দেশে আনা যায় তারা সে ব্যাপারে যোগাযোগ করছেন।
এ ব্যাপারে সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সরওয়ার উদ্দিন বলেন, বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি। তার মরদেহ দেশে আসার পর তার পরিবারকে আর্থিক অনুদানের ব্যাপারে আমরা সহযোগীতা করবো।
চলারপথে রিপোর্ট :
কিশোরগঞ্জ-ভৈরব মহাসড়কের ভৈরবের শম্ভুপুর এলাকায় ট্রাক ও সিএনজি চালিত অটোরিক্সার মুখোমুখি সংঘর্ষে আব্দুল জব্বার (৪৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন সীমা বেগম (২০) ও তোফায়েল আহমেদ (২৫) নামে দুইজন। তারা সবাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা।
ঘটনাটি ঘটে সোমবার সকাল ৮টার দিকে ভৈরব উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের শম্ভুপুর সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের সামনের সড়কে।
খবর পেয়ে ভৈরব হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হতাহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। দুর্ঘটনাকবলিত অটোরিক্সা ও ট্রাকটি আটক করে পুলিশ। তবে পালিয়ে গেছে অটোরিক্সা ও ট্রাকের উভয় চালক।
অটোরিক্সার যাত্রী আজিজুর রহমান ও সাবিকুন্নাহার জানান, ঢাকা যাবার উদ্দেশ্যে সকালে তারা রাজাপুর থেকে নৌকাযোগে ভৈরবের সাদেকপুর ইউনিয়নের মেন্দিপুর আসেন। পরে সেখান থেকে ভৈরব বাসস্ট্যান্ড যাবার উদ্দেশ্যে অটোরিক্সাটি নিয়ে যাত্রা করেন। শম্ভুপুর এলাকায় অটোরিক্সাটি অপর একটি অটোরিক্সাকে অভারটেক করে মহাসড়কের মাঝখানে আসলে ভৈরব থেকে কিশোরগঞ্জগামী ট্রাকটির সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে অটোরিক্সাটির সামনে বসা তাদের মামা আব্দুল জব্বার, আজিজুর রহমানের স্ত্রী সীমা বেগম ও অপর আত্মীয় তোফায়েল আহমেদ গুরুতর আহত হন।
পরে স্থানীয়দের সহায়তায় আহতদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক আব্দুল জব্বারকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত তোফায়েলকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ভৈরব হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাম্মেল হক জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হতাহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
ঘটনাস্থল থেকে অটোরিক্সাটি এবং তাড়া করে বাজিতপুরের পিরিজপুর থেকে ট্রাকটিকে আটক করা হলেও উভয় পরিবহণের চালক পালিয়ে যায়। হতাহতের পরিবারের আবেদন সাপেক্ষে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি ‘মৃত্যুদণ্ডের’ দাবিতে মানববন্ধন করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রদল। এ ছাড়া দেশব্যাপী নারীদের উপর সহিংসতা, নিপীড়ন ও আইনশৃঙ্খলার অবনতির প্রতিবাদ এবং বিচার করতে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্টদের পদত্যাগের দাবিও জানান সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
আজ ১০ মার্চ সোমবার দুপুর ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে তারা এ মানববন্ধন করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ ও সদস্য সচিব মাসুদ রুমী মিথুন ছাড়াও যুগ্ম আহ্বায়ক আহসান হাবিব, আনারুল ইসলাম, মনিরুল হক, সদস্য সাব্বির, রাফিজ আহমেদ, নুর উদ্দিন, সৌরভ, উল্লাস, মুক্তাদির, সাক্ষর প্রমুখ।
ছাত্রদলের নেতারা বলেন, দেশব্যাপী ধর্ষণের সিরিজ চলছে। ধর্ষণের বিচার দেখছি না। স্বাধীন বাংলাদেশে কোন নারী, কোন মা, কোন বোন যেন আর ধর্ষণের শিকার না হয় সেজন্য দৃশ্যমান বিচার কার্যক্রম নিশ্চিত করতে হবে।
শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাহেদ আহমেদ বলেন, দেশব্যাপী নারীদের উপর নিপীড়ন, নির্যাতন ও ধর্ষণের প্রতিবাদে আমরা আজ এখানে মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছি। আছিয়ার মতো বোনেরা কেন ধর্ষণের শিকার হবে? তাদের বিচার হতে এতো বিলম্ব হবে কেন? আমরা দাবি জানাই আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত কার্যক্রম শেষ করতে হবে। এছাড়া বিচার কার্যক্রম আগামী ৯০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। যদি তাদের বিচার করতে ব্যর্থ হন তাহলে আপনারা পদত্যাগ করুন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে কৃষি জমি থেকে অহিদ মিয়া (৫৭) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আজ ৭ জুন বুধবার বেলা ১০টায় উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের বড়বল্লা শ্মশান ঘাট এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত অহিদ মিয়া ওই এলাকার মৃত লোফা মিয়ার ছেলে।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসাইন জানান, অহিদ মিয়া পেশায় একজন মাছ ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি বিভিন্ন পুকুরে মাছ চাষ করতেন। গতকাল ৬ জুন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে রাতে আর ফেরেননি। পরিবারের লোকজন বিভিন্ন জায়গায় তার খোঁজ করেও সন্ধ্যান পান না। পরে বুধবার সকালে কৃষি জমির ভেতরে স্থানীয়রা তার মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন।
তিনি আরো জানান, তার মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্যে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
অনলাইন ডেস্ক :
ব্যবসায়িক কাজে গিয়েছিলেন চট্টগ্রামে। এরপর গত তিন দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার ব্যবসায়ী উত্তম দাস (৩৭)। গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে যাওয়ার পর শুক্রবার রাত থেকে পরিবারেরর লোকজন তার কোনো খোঁজ পাচ্ছে না। উত্তম দাসের ব্যবহৃত দুইটি মোবাইল ফোন রয়েছে বন্ধ। বিষয়টি চট্টগ্রামের কতোয়ালি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা থানাকে অবহিত করা হয়েছে।
উত্তম দাস কসবা উপজেলার কুটি ইউনিয়নের জাজিরা গ্রামের গৌরাঙ্গ দাসের ছেলে। পেশায় একজন শুঁটকি ব্যবসায়ী। তিনি ব্যবসায়িক কাজে প্রায়ই চট্টগ্রাম যেতেন বলে পরিবারের লোকজন জানান। তিন দিন ধরে তার খোঁজ না পেয়ে পরিবার দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
নিখোঁজ উত্তম দাসের ভাগ্নে সত্য রঞ্জন দাস জানান, বৃহস্পতিবার ব্যবসায়িক কাজে তিনি চট্টগ্রামে যান। শুক্রবার রাত ৮টা নাগাদ পরিবারের লোকজনের সাথে তার সর্বশেষ কথা হয়। একটি আবাসিক হোটেলে তিনি অবস্থান করবেন বলে তিনি জানান। এরপর থেকে তার সাথে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।
তার সাথে দু’টি আইফোন, হাতে স্বর্ণের ব্রেসলেট ও আংটি ছিল। নিখোঁজের পর থেকে পরিবারের সদস্যরা প্রথমে বিষয়টি কসবা থানা পুলিশ ও পরে কোতোয়ালি থানা পুলিশকে অবগত করা হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে কোতোয়ালি থানা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। পরিবারের সদস্য এখনো চট্টগ্রামে খোঁজাখুঁজি করছেন।
উত্তম দাসের ছোট ভাই সুশান্ত দাস জানান, দাদা শুঁটকি মাছের পাইকারি ব্যবসা করেন। চট্টগ্রামের বড় আড়তে প্রায়ই যেতেন তিনি। শুক্রবার রাতে যোগাযোগ বন্ধ হওয়ার পর থেকে খোঁজ করে পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি সেখানকার স্থানীয় পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল করিম গণমাধ্যমকে জানান, বিষয়টি তারা অবগত আছেন। ওই ব্যবসায়ীকে খোঁজে বের করতে পুলিশ কাজ করছে বলে ই কর্মকর্তা জানান।