চলারপথে রিপোর্ট :
বাঞ্ছারামপুরের ছলিমাবাদ ইউনিয়নের পাইকারচর গ্রামে ইঞ্জিনিয়ার্স প্যালেসে বাঞ্ছরামপুর কল্যাণ সমিতির তত্ত্বাবধানে দিনব্যাপী বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও চক্ষু শিবির অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দিনব্যাপী বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও চক্ষু শিবির অনুষ্ঠিত হয়। পাইকারচর স্টুডেন্ট অ্যান্ড ইয়ুথ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির আয়োজনে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। চট্টগ্রাম লায়ন্স চক্ষু হাসপাতাল মাহবুবুর রহমান মেমোরিয়াল হাসপাতলের একাধিক মেডিক্যাল টিম, বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা প্রায় দুই হাজার রোগীকে বিনামূল্যে চক্ষু ও বিভিন্ন রোগের সেবা প্রদান করে।
শিবিরে বিশেষভাবে চোখের চিকিৎসার ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা রোগীদের বিস্তারিত পরীক্ষা- নিরীক্ষা করে বিনামুল্যে তাদের ওষুধ ও চশমা প্রদান করা হয়। সেই সাথে চোখে ছানিপড়া রোগীদের চিহ্নিত করে তাদের কে লায়ন্স হাসপাতাল চট্টগ্রামে নিয়ে বিনামূল্যে অপারেশন করা হবে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে মেডিসিন, গাইনি, শিশু রোগ, চর্ম, হৃদরোগ বিভাগে আসা রোগীদের পরীক্ষা করে প্রেসক্রিপশন দেওয়া হয় ও বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় ওষুধ বিতরণ করা হয়।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকাস্থ বাঞ্ছারামপুর উপজেলা কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেজর (অব.) এসএম সাইদুল ইসলাম। প্রধান অতিথি সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও চক্ষু শিবির আয়োজন একটি মানবিক সময়োপযোগী উদ্যোগ। সমাজের দরিদ্র সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য এ আয়োজন নিঃসন্দেহে আশীর্বাদস্বরূপ। আমি আশা করি, এ ধরনের উদ্যোগ নিয়মিত হলে মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা আরও বৃদ্ধি পাবে।’
প্রধান প্রকৌশলী (অব.) বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও পাইকারচর স্টুডেন্ট অ্যান্ড ইয়ুথ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির প্রধান উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার মো. মকবুল হোসেনের সভাপতিত্বে দিনব্যাপী এই চিকিৎসা শিবিরে অভিজ্ঞ চিকিৎসকগণ উপস্থিত থেকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা, ঔষুধ প্রদান, চক্ষু রোগের চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় অপারেশনের
ব্যবস্থা করেন।
মকবুল ইঞ্জিনিয়ার মো. হোসেন বলেন, ‘গ্রামীণ দোরগোড়ায় মানুষের স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে এ শিবির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বিশেষ করে চোখের চিকিৎসা ও বিনামূল্যে ওষুধ প্রদানের মাধ্যমে অনেকেই উপকৃত হচ্ছেন। আমাদের লক্ষ্য হল্গেকেউ যেন অর্থাভাবে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত না হয়। এ ধরনের মানবিক উদ্যোগ নিয়মিত হলে সমাজের অসহায় মানুষরা আরও বেশি উপকৃত হবে। মুখ্য আলোচক ছিলেন পিএমজেএফ জেলা গভর্নর লায়ন মোসলেহ উদ্দীন আহমেদ অপু।
বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকাস্থ বাঞ্ছারামপুর উপজেলা কল্যাণ সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার শফিকুর রহমান, বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক ফারুক আলম, কনস্টেবল ইমন, জুয়েল প্রমুখ।
আয়োজকরা জানান, সমাজের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে একত্রিত করে একটি মানবিক ও সচেতন সমাজ গঠনের লক্ষ্যে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ উপলক্ষে তারা এলাকার সকল শ্রেণিপেশার মানুষকে শিবিরে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ জামাল আবু নাসের বলেন, গ্রামীণ মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে এ শিবির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিশেষ করে চক্ষু চিকিৎসা ও বিনামূল্যে ওষুধ প্রদানের মাধ্যমে অনেকেই সরাসরি উপকৃত হবেন। উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ এ ধরনের মানবিক উদ্যোগকে সবসময় সহযোগিতা পাশে থাকবে। পাইকারচর স্টুডেন্ট অ্যান্ড ইয়ুথ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির আহবায়ক অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন বলেন, সমাজের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর অংশগ্রহণে জনগণের কল্যাণে যে ধরনের ক্ষেত্রে আয়োজন হচ্ছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। উদ্যোগ সমাজের দরিদ্র মানুষদের চিকিৎসা প্রাপ্তির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আমি আশা করি, এই উদ্যোগে এলাকার মানুষ ব্যাপকভাবে উপকৃত হবেন। পাইকারচর স্টুডেন্ট অ্যান্ড ইয়ুব ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সদস্য সচিব মো. মহসিন বলেন, আমাদের এ উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য হলো গ্রামের সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানো। আমরা চাই, একটি বলেন, মানবিক সমাজ গড়ে উঠুক যেখানে অসহায় কেউ চিকিৎসার অভাবে কষ্ট পাবেন না। এই শিবিরে যারা আসবেন, তারা যেন সুস্থ হয়ে নতুনভাবে জীবনযাপন করতে পারেন সেটাই আমাদের প্রার্থনা। তিনি আরও পাইকারচর স্টুডেন্ট অ্যান্ড ইয়ুধ ওয়েলফেয়ার সোসাইটি শুধু চিকিৎসা সেবা নয়। সংগঠনটি নিয়মিতভাবে খেলাধুলা, বৃক্ষরোপণ, শিক্ষামূলক কার্যক্রম সামাজিক উন্নয়নমূলক বিভিন্ন আয়োজন করে থাকে। এ ধরনের উদ্যোগের মাধ্যমে তরুণ সমাজকে সম্পৃক্ত করা এবং একটি মানবিক, সচেতন ও সুস্থ সমাজ গড়ে তোলাই সংগঠনটির মূল লক্ষ্য।
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেমকে (৭৩) রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাত ৯টার দিকে উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামে নিজ বাসভবনে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। পারিবারিক সূত্র জানায়, আবুল হাশেম দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। গত শনিবার রাতে নিজ বাসভবনে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। গতকাল রোববার দুপুরে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের মাঠে তাকে নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মুহাম্মদ সরওয়ার উদ্দীনের নেতৃত্বে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেয়া হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. ইসমত আলী, সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ৫ ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়ন শাখা অফিস উদ্বোধন করা হয়েছে। ১২ অক্টোবর শনিবার বিকাল ৩ টায় সোনারামপুর বাজার হাজী সিদ্দিক মার্কেটে অফিস উদ্বোধন করা হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়ন শাখার সেক্রেটারী মো: আল মামুনের সঞ্চালনায় জামায়াতে ইসলামি সোনারামপুর ইউনিয়ন শাখার সভাপতি সোহরাব হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা নাজমুল আলম আরিফ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাঞ্ছারামপুর উপজেলা আমীর মাওলানা কাজী আবুল বাশার, উপজেলা সহকারী সেক্রেটারী মাওলানা আলাউদ্দীন সাদী, উপজেলা কর্মপরিষদ সদস্য শামীম নূর ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাহজাহানপুর ওয়ার্ড সভাপতি মাসুদুর রহমান, ওয়ারী ওয়ার্ড সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা: মো: ইসমাইল, উপজেলা ইসলামি ছাত্র শিবির সেক্রেটারী সোহেল আহমেদ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন দরিয়াদৌলত ইউনিয়ন শাখার সভাপতি মো: শাহ আলম, মো: লিটন মিয়া, মো: মতিউর রহমান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, সোনারামপুর শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ইউনিয়ন শাখার সভাপতি মো: নাসির উদ্দিন, জামায়াত কর্মী আনিসুর রহমান, মো: আলমগীর মাস্টার, মো: মমিন মাস্টার ডা: শফিক, ডা: রফিকুল ইসলাম, ডা: মফিজুল ইসলাম, ডা: আবুল হোসাইন, মো: ইউনূস বিন রমজান, রুবেল মিয়া, অনিক, সেলিম, মো: ইদ্রিস, মো: জালাল উদ্দিন, জুবায়ের ফয়সাল, মো: ইসমাইল, মো: আবদুল জব্বার, আবু হানিফ, মনির হোসেন, আবুল কালাম, আল মামুন, রাসেল আহমেদ, হাবীব, দ্বীন ইসলাম, আবু হানিফ প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুরে পুকুর থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় আশিক মিয়া (১৬) নামের এক কিশোরের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আজ ২০ জানুয়ারি শনিবার সকাল ১১টার দিকে বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ফরদাবাদ ইউনিয়নের গাওরাটুলি এলাকায় কবর সংলগ্ন পুকুর থেকে এ লাশ উদ্ধার করা হয়।
আশিক মিয়া উপজেলার কলাকান্দি ২নং ওয়ার্ডের আফজাল মিয়ার বড় ছেলে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গতকাল শুক্রবার বিকেলে আশিক জীবিকার তাগিদে বাড়ি থেকে অটোরিক্সা নিয়ে বের হন। রাতে আর বাড়ি ফিরে আসেননি।
পরিবারের লোকজন রাতে ও গতকাল সকালে আত্মীয় স্বজনসহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নেয়। কিন্তু কোথাও তার সন্ধান মেলেনি।
সকালে পুকুরের পানিতে আশিকের মৃতদেহ ভাসতে দেখে পুলিশকে খবর দেয় এলাকাবাসী। পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রেরন করা হয়।
বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: মহিউদ্দিন বলেন, শুক্রবার রাতে কোন এক সময় তাকে হাত পা বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পুকুরের পানিতে ফেলে দেয়। এসময় তারা অটোরিক্সাটি নিয়ে যায়। আমরা খুনীদের সনাক্ত করতে কাজ করছি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলামকে ২১ মাস আগে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে করা এক মামলায় রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। আজ ২১ আগস্ট বুধবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চতুর্থ আদালতের বিচারক সাদেকুর রহমান তাঁর ৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ক্যাপ্টেন (অব.) তাজুল ইসলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। তিনি ২০০৮ সাল থেকে টানা চার মেয়াদে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। এর আগে তিনি ১৯৯৬ সালে একই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০৯ সালের শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রিসভার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি। একই সঙ্গে তিনি দলটির মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদকও ছিলেন। পরে কমিটি থেকে বাদ পড়েন। গতকাল ২০ আগস্ট মঙ্গলবার রাতে তাজুল ইসলামকে রাজধানীর বনশ্রী এলাকা থেকে আটক করে পুলিশ।
পুলিশ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০২২ সালের ১৯ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুরে মিছিল বের করাকে কেন্দ্র করে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। ওই সংঘর্ষ চলাকালে উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ-সভাপতি রফিকুল পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। ওই দিন সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি।
এ ঘটনায় ২০২২ সালের ২০ নভেম্বর বাঞ্ছারামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আফজাল হোসেন বাদী হয়ে ৩০২ ধারাসহ (হত্যা) বিভিন্ন ধারায় বিএনপির ১৭ জন নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১০০ থেকে ১২০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ওই মামলার এজাহারে সাবেক সংসদ সদস্য তাজুলের নাম নেই, তবে এই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ দুপুরে রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ।
জানতে চাইলে জেলা ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সহিদুল ইসলাম বলেন, ছাত্রদল নেতা নিহত হওয়ার ঘটনায় পেছন থেকে ইন্ধনদাতা হিসেবে তাজুল ইসলামের জড়িত থাকার বিষয়ে তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। এ কারণে অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে তাঁকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
ওসি সহিদুল ইসলাম বলেন, ওই মামলায় জেলা গোয়েন্দা শাখার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল আহমেদ ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। আদালতে ৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। এর আগে একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে তিনি ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ পুলিশ কর্মকর্তারা তাঁকে ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে আসেন।
সরেজমিন দেখা গেছে, আজ দুপুরে তাজুল ইসলামকে পুলিশের বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট পরিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চতুর্থ আদালতে তোলা হয়। এ সময় আদালতের ভেতর বিএনপির আইনজীবীরা ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদনের জন্য হইচই করেন। আওয়ামী লীগের চারজন আইনজীবী সেখানে উপস্থিত হলেও পরিস্থিতি অনুকুলে না থাকায় কোনো কথা বলেননি। একপর্যায়ে তাঁরা এজলাস ত্যাগ করে চলে যান। তিনটায় আদালতের রায়ের পর প্রিজন ভ্যানে তুলে পুলিশ তাঁকে আদালত থেকে নিয়ে যায়। এ সময় বিএনপির আইনজীবীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন।
কয়েকজন আইনজীবী বলেন, আদালত প্রথমে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আইনজীবীদের হইচইয়ের কারণে পরে ৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি কামরুজ্জামান মামুন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারেকুল ইসলাম খান ও জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি আইনজীবী আবদুর রহিম বলেন, ছাত্রদল নেতা রফিকুল হত্যা মামলায় তাজুল ইসলামের ইন্ধন রয়েছে। সে সময় থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ গ্রহণ করেনি। আদালতে পুলিশসহ ৬০ জনের বেশি আসামি করে মামলা দিলেও তা খারিজ হয়ে যায়।
এদিকে তাজুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের খবরে আজ দুপুরে বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় আনন্দমিছিল করেছে উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। দুপুরে উপজেলার মুসা মার্কেট থেকে কেন্দ্রীয় কৃষক দলের নেতাকর্মীরা আনন্দমিছিল বের করে উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করেন।
এতে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান, উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল মহসিন, সদস্য সাখাওয়াত হোসেন, আবদুল করিম, দেলোয়ার হোসেন, আবদুল করিম, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক হারুন অর রশিদ প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা মিলনায়তনে বসুন্ধরা গ্রুপের অর্থায়নে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন ৭৩তম সুদ ও সার্ভিস চার্জ মুক্ত ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। সর্ব সাধারনের জীবন-যাত্রার মান স্বাভাবিক রাখতে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন ঋণ বিতরণ করে যাচ্ছে।
আজ ২৪ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের ঋণ বিতরণের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের উপদেষ্টা ও ইষ্ট ওয়েষ্ট মিডিয়া গ্রুপের প্রকাশক ময়নাল হোসেন চৌধুরী, বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এম নাসিমুল হাই এফসিএস।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের ডিজিএম মাইমূন কবির, বসুন্ধরা শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান, মাইটিভি ও দৈনিক ইত্তেফাক প্রতিকার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা প্রতিনিধি এম এ আওয়াল, বাঞ্ছারামপুর সরকারি কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. চাঁন মিয়া সরকার, বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপক মো. মোশাররফ হোসেন, সিনিয়র অফিসার আমির হোসেন আনোয়ার, জুনিয়র অফিসার শাহজাহান, মোহাম্মদ বাছির প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে ঋণ বিতরণের পূর্বে এম নাসিমুল হাই এফসিএস বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান সাহেব অসহায় অস্বচ্ছল মানুষদের নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য এই প্রকল্প হাতে নিয়েছিলেন ২০০৫ সালে। প্রকল্প শুরুর হওয়ার পর থেকেই বসুন্ধরা গ্রুপ ধারাবাহিকভাবে মানুষের কল্যাণে সুদ ও সার্ভিস চার্জ মুক্ত ঋণ বিতরণ করছে।
নদী এলাকা বাঞ্ছারামপুরের মানুষ গুলো ঋণ গ্রহণ করে, যেভাবে বিনিয়োগ করছে তারা বেশিদিন আর অস্বচ্ছল থাকবে না। তাদের স্বচ্ছল করে তোলাই গ্রুপের একমাত্র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
অনুষ্ঠানে ঋণ বিতরণের পূর্বে ময়নাল হোসেন চৌধুরীর বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপ সুদ ও সার্ভিস চার্জমুক্ত ঋণ বিতরণসহ গরীব অসহায় লোকদের মাঝে ওষুধসহ স্বাস্থ্য সেবা বিনামূল্যে প্রদান করে থাকে। গরীব ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে মাসিক উপবৃত্তি প্রদান করছে। যাতে অর্থের অভাবে কোনো শিক্ষার্থী ঝরে না যায় এবং উচ্চ শিক্ষা অর্জন করতে পারে। গরীব মেয়েদের মাঝে প্রশিক্ষণসহ সেলাই মেশিন বিতরণ করে।
বসুন্ধরা গ্রুপ এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে যাতে করে তৃণমূল মানুষকে সামনে এগিয়ে নিয়ে আসতে পারে। বসুন্ধরা গ্রুপ চাচ্ছে গ্রামের অসহায় ও হতদরিদ্র মানুষ গুলোর অর্থনীতির চিত্র পাল্টে দিতে।
তিনি বলেন, বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রদত্ত ঋণের টাকা কোনো প্রকার অবৈধ কাজে বিনিয়োগ করা যাবে না। বসুন্ধরা গ্রুপ দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করে। দেশের অসহায় ও হতদরিদ্রদের মাঝে বিভিন্ন ক্লান্তিকালে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় বসুন্ধরা গ্রুপ।
দেশে মহামারি, বন্যাসহ অস্থিতিশীল পরিবেশে বসুন্ধরা সরাসরি আর্থিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় সারা বাংলার বিভিন্ন এলাকার হতদরিদ্র ও ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের মাঝে।
আজ ৪৮১ জন উপকারভোগীর মাঝে ৭৮ লাখ ৫ হাজার টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে প্রথমবারে ৫৬ জনকে ১৫ হাজার টাক করে ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা, দ্বিতীয়বারে ৩০৭জনকে ১৫ হাজার টাকা করে ৪৬ লাখ ৫ হাজার এবং তৃতীয়বারে ১১৮ জনকে ২০ হাজার টাকা করে ২৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা ঋণ প্রদান করা হয়। এই ঋণ শুধুমাত্র নারীদের মাঝে বিতরণ করা হয় যা দিয়ে হাঁস-মুরগী, গরু-ছাগল এবং শাক-সবজি চাষসহ ৩২ প্রকার কাজে মহিলারা এই ঋণের অর্থ বিনিয়োগ করে খুবই উপকার পাচ্ছে। ২০০৫ সাল থেকে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান এর সরাসরি তত্ত্বাধানে নিয়মিত ঋণ দিয়ে যাচ্ছে। এই ঋণের পরিধি প্রথম দিকে শুধু বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সীমাবদ্ধ থাকলেও বর্তমানে তা পাশ্ববর্তী উপজেলা হোমনা ও নবীনগরে বিস্তার লাভ করেছে।
মিরপুর গ্রামের রোহেলা বেগম (৩০) বলেন, ‘আমার স্বামী নাই। বসুন্ধরার টেহা নিয়া হাঁস-মুরগি পাইলা অনেক লাভবান হইছি। এখন খাওয়া দাওয়ার কোন সমস্যা নাই। আল্লাহ কাছে দোয়া করি বসুন্ধরারা যেন ভালো থাকে।’