অনলাইন ডেস্ক :
বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে দুর্দান্ত সব পারফরম্যান্স উপহার দিচ্ছে মরক্কো। সবশেষ ম্যাচে নাইজারকে স্রেফ উড়িয়ে দিয়েছে তারা। টানা ছয় জয়ে আফ্রিকা অঞ্চল থেকে সবার আগে বিশ্বকাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছেন আশরাফ হাকিমি, ব্রাহিম দিয়াসরা। ‘ই’ গ্রুপে নিজেদের ৬ষ্ঠ ম্যাচে নাইজারের জালে গোল উৎসব করে মরক্কো। একপেশে লড়াইয়ে ৫-০ গোলে প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দেয় তারা। শতভাগ জয়ে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ টেবিলের শীর্ষে মরক্কো। ৬ ম্যাচে ৩ জয় ও এক ড্রয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে তানজানিয়া। আফ্রিকা অঞ্চলের বাছাই পর্বের ৯ গ্রুপের মধ্যে মরক্কো একমাত্র দল, যারা এখন পর্যন্ত সবগুলো ম্যাচই জিতেছে।
এ নিয়ে সপ্তমবারের মতো বিশ্বকাপে খেলতে যাচ্ছে মরক্কো। বৈশ্বিক আসরে তাদের সবচেয়ে বড় সাফল্য এসেছে ২০২২ আসরে। কাতারে অনুষ্ঠিত সেই আসরে সবাইকে চমকে দিয়ে প্রথম আফ্রিকান দল হিসেবে সেমি-ফাইনালে খেলে দলটি। গ্রুপ পর্বে বেলজিয়াম ও কানাডাকে হারিয়ে এবং ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ড্র করে অপরাজিত থেকে শেষ ষোলোয় জায়গা করে নেয় মরক্কো। পরে সেখানে টাইব্রেকারে স্পেনকে হারায় উত্তর আফ্রিকার দেশটি। কোয়ার্টার-ফাইনালে পর্তুগালের বিপক্ষে ১-০ গোলের জয়ে সেমি-ফাইনালে ওঠে মরক্কো। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে ফ্রান্সের সঙ্গে পেরে ওঠেনি তারা, হেরে যায় ২-০ গোলে। শেষ পর্যন্ত চতুর্থ হয়ে আসর শেষ করে দলটি।
আফ্রিকা অঞ্চলের ৯ গ্রুপের শীর্ষ দলগুলো সরাসরি খেলবে বিশ্বকাপ। আর সেরা চার গ্রুপ রানার্স-আপ খেলবে প্লে-অফে। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোয় আগামী বছরের ১১ জুন শুরু হয়ে ১৯ জুলাই শেষ হবে ২০২৬ সালের বিশ্বকাপ।
স্বাগতিক হিসেবে বিশ্বকাপে খেলবে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডা। আর বাছাই পর্ব থেকে এখন পর্যন্ত মরক্কো ছাড়া জায়গা করে নিয়েছে আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, কলম্বিয়া, প্যারাগুয়ে, উরুগুয়ে, একুয়েডর, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ইরান, উজবেকিস্তান, জর্ডান, নিউ জিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া।
অনলাইন ডেস্ক :
দেশের ব্যাডমিন্টন অঙ্গনে আজ শোকের একদিন। বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক ব্যাডমিন্টন আম্পায়ার নাজিব রাসেল ইসমাইল আর নেই। ভারতের গৌহাটিতে একটি আন্তর্জাতিক ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতায় আম্পায়ারিং করতে গিয়েছিলেন। সেখানেই হোটেলে ঘুমের মধ্যে মারা গেলেন দেশের সেরা আম্পায়ার। মৃত্যুর আগে তার বয়স হয়েছিল ৫২ বছর।
তার মৃত্যুর ঘটনা উল্লেখ করে সাবেক জাতীয় ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়ন ও ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জোবায়েদুর রহমান রানা আম্পায়ার রাসেল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ভারতের গৌহাটিতে একটি আন্তর্জাতিক সিরিজ চলছিল। রাসেল বিশ্ব ব্যাডমিন্টনের প্যানেলের আম্পায়ার হওয়ায় ম্যাচ পরিচালনা করতে গিয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘আজ তার ম্যাচ ছিল। কোর্টে যখন সে আসছিল না, তখন আয়োজকরা হোটেলে যায়। রুম ধাক্কার পরও না খোলায় দরজা ভাঙা হয়। তখন তারা দেখেন রাসেল আর নেই।’
এছাড়া জানা যায়, বিশেষ কোনো রোগে আক্রান্ত ছিলেন না তিনি। ব্যাডমিন্টনের কৃতি আম্পায়ার নাজিব রাসেলের মরদেহ আনার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশন।
আম্পায়ারিংয়ের পাশাপাশি ইসমাইল নজীব রাসেল ফেডারেশনের বর্তমান নির্বাহী কমিটিতেও ছিলেন। ব্যাডমিন্টন নিয়ে তার বিস্তর পড়াশোনা। ব্যস্ততাপূর্ণ দৈনন্দিন জীবনেও তার দিনের অনেক সময় কাটে ব্যাডমিন্টনের বই পড়ে। সূত্র : যায়যায়দিন
অনলাইন ডেস্ক :
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ভুটানের রাজধানী থিম্পুর উচ্চতা প্রায় ৮ হাজার ফুট। এই উচ্চতা নিয়ে শঙ্কা ছিল বাংলাদেশ দলের। কন্ডিশনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে প্রায় এক সপ্তাহ আগে ভুটান গেলেও উচ্চতার কারণে জামাল-তপুদের যে সমস্যা হচ্ছিল, সেটি শোনা যাচ্ছিল।
বিশ্বকাপের প্রাক-বাছাইয়ে মালদ্বীপের বিপক্ষে ঘরের মাঠে গত বছরের অক্টোবরে বাংলাদেশ ফুটবল দল জয়ের দেখা পেয়েছিল। তারপর ১০ মাসেরও বেশি সময় পেরিয়েছে। হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার দল এর মাঝে খেলেছে ছয় ম্যাচ, যার পাঁচটিতেই পেয়েছে পরাজয়ের স্বাদ। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আন্তর্জাতিক ম্যাচে দলটি অবশেষে জেতার স্বস্তি নিয়ে মাঠ ছাড়ল।
আজ ৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার থিম্পুর চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে সন্ধ্যায় ভুটানের বিপক্ষে ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১-০ ব্যবধানে বাংলাদেশ জিতেছে। গোলদাতা শেখ মোরসালিন জয়ের নায়ক।
খেলার ছয় মিনিটের মাথায় অতিথি দল এগিয়ে যায়। ডানপ্রান্ত দিয়ে তৈরি হওয়া আক্রমণে রাকিব হোসেনের ক্রস ডি বক্সে উড়ে আসলে বলে পাঞ্চ করেন ভুটানি গোলরক্ষক তিশেরিং ধেনদুপ। তার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মোরসালিনের পায়ে বল লাগে। সুযোগ বুঝে মাটিতে পড়ে থাকা গোলরক্ষককে কাটিয়ে এই ফরোয়ার্ড ডান পায়ের টোকায় ফাঁকা জালে বল জড়িয়ে দেন।
নির্ধারিত সময়সীমা পেরিয়ে অতিরিক্ত সময়ে তখন গড়িয়েছিল প্রথমার্ধের খেলা। চোট পাওয়া রাকিব হোসেন মাটিতে শুয়ে ব্যথায় কাতরাতে থাকেন। দৃশ্যটি দেখতে পেয়ে রেফারি খেলা থামিয়ে দেন। মাঠে স্ট্রেচার নিয়ে কয়েকজন প্রবেশ করেন। ঠিক তখনই ঘটে অনাকাঙ্ক্ষিত এক ঘটনা। স্ট্রেচার বহনকারীদের একজন আকস্মিকভাবে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান।
ঘটনার আকস্মিকতায় বাংলাদেশ ও ভুটান দলের ফুটবলাররা হতভম্ব হয়ে পড়েন। মেডিকেল স্টাফ দৌড়ে মাঠে ঢুকে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া ব্যক্তির বুকে বারবার চাপ দিতে থাকেন। এ সময় ফুটবলাররা তাকে ঘিরে ধরে রাখেন।
দ্রুততম সময়ের ভেতর মাঠে অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশ করে অজ্ঞান থাকা স্ট্রেচার বয়কে হাসপাতালে নিয়ে যায়। খানিক পর প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ের ৩ মিনিটের খেলা আবারো শুরু হয়।
দ্বিতীয়ার্ধে কোনো দলই গোলের মুখ না দেখায় একমাত্র গোলের জয় নিয়ে বাংলাদেশকে সন্তুষ্ট থাকতে হয়। ভুটানের বিপক্ষে এটি দলটির ১১তম জয়। মোট ১৩ দেখায় দুইবার হয়েছিল ড্র। একটিতে পায় পরাজয়ের স্বাদ।
নারী অনূর্ধ্ব-১৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় আসর মালয়েশিয়ায় শুরু হচ্ছে। আগামীকাল শনিবার টুর্ণামেন্টের উদ্বোধনী দিন মাঠে নামছে বাংলাদেশ। নেপালের মুখোমুখি হবে ইয়াং টাইগ্রেসরা। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় দুপুর সাড়ে ১২টায়।
২০২৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ১৬ দলকে নিয়ে প্রথমবারের মত নারী অনূর্ধ্ব-১৯-টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এবারও চার গ্রুপে ১৬টি দল অংশ নেবে। ‘ডি’ গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া, নেপাল ও স্কটল্যান্ড।
গত ডিসেম্বরে নারী অনূর্ধ্ব-১৯-টি টোয়েন্টি এশিয়া কাপে বাংলাদেশ রানার্স-আপ হয়েছিল। ভারতের কাছে ফাইনালে হেরেছিল তারা।
এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আসরে ভালো করার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ। দেশ ছাড়ার আগে দলের অধিনায়ক সুমাইয়া আক্তার বলেছিলেন, ‘আমরা ম্যাচ বাই ম্যাচ সামনে এগোতে চাই। আমাদের দলটা অনেক ভালো। দলের শক্তির জায়গা কোনটি আমরা তা জানি। সুতরাং নিজেদের সেরাটা দিতে পারলে ভাল কিছু হবে আশা করছি।’
নেপালের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচের পর ২০ জানুয়ারি অস্ট্রেলিয়া ও ২২ জানুয়ারি স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। গ্রুপ ম্যাচে বাংলাদেশের বড় প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া। এই টুর্ণামেন্টের প্রথম আসরে অস্ট্রেলিয়াকে ৭ উইকেটে হারিয়ে বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করেছিল বাংলাদেশ।
তাই এবার অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত নয় বাংলাদেশ। সুমাইয়া বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া বা অন্য যে দলই হোক আমরা আমাদের খেলা খেলবো। আমরা মনে করি বরং অস্ট্রেলিয়াই আমাদের ভয় পাবে।’ বিশ্বকাপের আগে দু’টি প্রস্তুতিমূলক ম্যাচেই জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৪ উইকেটে এবং দ্বিতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডকে সুপার ওভারে হারায় তারা।
এবার চার গ্রুপের প্রতিটি থেকে সেরা তিনটি করে দল সুপার সিক্স পর্বে খেলার সুযোগ পাবে। সেখানে দুই গ্রুপের শীর্ষ দু’টি করে দল সেমিফাইনালের টিকিট পাবে। ৩১ জানুয়ারি সেমিফাইনাল এবং ২ ফেব্রুয়ারি ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ স্কোয়াড : সুমাইয়া আক্তার (অধিনায়ক), আফিয়া আসিমা ইরা (সহ-অধিনায়ক), মোসাম্মৎ ইভা, ফাহমিদা ছোঁয়া, হাবিবা ইসলাম পিংকি, জুয়াইরিয়া ফেরদৌস, ফারিয়া আক্তার, ফারজানা ইয়াসমিন, আনিসা আক্তার সুবহা, সুমাইয়া আক্তার সুবর্ণা, নিশিতা আক্তার নিশি, লাকি খাতুন, জান্নাতুল মাওয়া, সাদিয়া আক্তার ও সাদিয়া ইসলাম।
স্ট্যান্ড বাই : আশরাফি ইয়াসমিন অর্থি, লেকি চাকমা, অরভিন তানি, মেহেরুন নেসা।
অনলাইন ডেস্ক :
সেমিফাইনাল নিশ্চিতের ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল শক্তিশালীয় ভারত। দু’বছর আগে যাদেরকে ৩-০ গোলে তারা হারিয়েছিল। এবার আবারও তাদের উড়িয়ে দিয়েছে লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। আজ (নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এতে করে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে নেপালের কাঠমান্ডুতে সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ।
আজ ২৩ অক্টোবর বুধবার ম্যাচে বাংলাদেশের ড্র প্রয়োজন ছিল সেমিফাইনাল খেলতে। এমন সমীকরণ নিয়ে মাঠে নেমে সাবিনারা ৩-১ গোলের দাপুটে জয় আদায় করে নিয়েছেন। পুরো ম্যাচেই বাংলাদেশ দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছে। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে সিনিয়র খেলোয়াড়দের সঙ্গে কোচের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছিল। আজ মাঠের পারফরম্যান্সে অবশ্য সেই প্রভাব পড়েনি। তিন গোলের দুটি তহুরা খাতুনের, আরেকটি আফিদা খন্দকারের। ভারতের গোলটি করেন অধিনায়ক বালা দেবী। ম্যাচের চারটি গোলই হয়েছে প্রথমার্ধে।
এর আগে শুরুর একাদশে দুই পরিবর্তন করে মারিয়া মান্দা ও মাসুরা পারভীনকে সুযোগ দিয়েছিলেন কোচ পিটার বাটলার। ১৫ মিনিটে অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের কর্নার ভারতীয় গোলরক্ষক ঠিকমতো গ্রিপ করতে পারেননি। বল এসে পড়ে বাংলাদেশের আফিদার কাছে। ভারতীয় ডিফেন্ডাররা ব্লক করার আগেই তিনি শট নেন। ভারতীয় গোলরক্ষকের পাশ দিয়ে গোললাইন অতিক্রম করে তার শটটি। এরপরই বাংলাদেশ গোল উৎসবে মাতে।
গোলের পর বাংলাদেশ আরও সুন্দর ফুটবল খেলা উপহার দেয়। অল্প সময়েই তারা বেশ কয়েকটি আক্রমণ শাণায়। ২৮ মিনিটে ভারতের ডিফেন্ডারের ভুলে আরেকটি গোল পায় বাংলাদেশ। বাম প্রান্ত থেকে আসা ক্রস ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে পারেননি ভারতীয় ডিফেন্ডার। তার সঙ্গে থাকা বাংলাদেশের ফরোয়ার্ড তহুরার গায়ে লেগে সেই বলটি জালে জড়ায়।
৪২ মিনিটে তৃতীয় দফায় ব্যবধান বাড়ায় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। শামসুন্নাহার সিনিয়র ও জুনিয়র বল দেওয়া-নেওয়ার মধ্যে বক্সের ওপর বল পান তহুরা খাতুন। জোরালো শটে গোল করেন বাংলাদেশের এই ফরোয়ার্ড। পরের মিনিটে ভারত এক গোল পরিশোধ করে। ভারতের আক্রমণে বাংলাদেশের গোলরক্ষক রুপ্না চাকমা গ্রিপ করতে পারেননি। গোলরক্ষকের হাত ফসকে যাওয়া বলে হেড দিয়ে জালে পাঠান ভারতীয় অধিনায়ক বালা দেবী।
বিরতির পর ভারত গোলের কয়েকটি সুযোগ পায়। প্রতিবারই বাধা হয়ে দাড়ান গোলরক্ষক রুপ্না চাকমা। রুপ্নার পারফরম্যান্সে ভারত দ্বিতীয়ার্ধে আর গোল পায়নি। বাংলাদেশের কোচ পিটার বাটলার দ্বিতীয়ার্ধে স্বপ্না রাণী, সানজিদাকে নামান। অবশ্য বাংলাদেশ দ্বিতীয়ার্ধে তেমন গোলের সুযোগ পায়নি। ফলে প্রথমার্ধের একই ব্যবধান নিয়েই দুই দল মাঠ ছাড়ে।
অনলাইন ডেস্ক :
পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে সফরকারী জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সহজ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
আজ ৩ মে শুক্রবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের দেওয়া ১২৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ২৮ বল ও ৮ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ দল।
১২৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৫ রান তুলতেই লিটনের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৩ বলে ১ রান করে সাজঘরে ফিরেন টাইগার ওপেনার লিটন কুমার দাস। এরপর ধীর গতির ব্যাট করেন নাজমুল শান্ত। আউট হওয়ার আগে তিনি ২৪ বলে ২১ রান করেন। এরপর তানজিদ তামিম ও তাওহীদ হৃদয় ঝড়ো ব্যাটিং করে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। অভিষিক্ত তানজিদ তামিম ৪৭ বলে ৬৭ রান করেন ও তাওহীদ হৃদয় ১৮ বলে করেন ৩৩ রান।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই প্রথম উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। মাহেদী নিজের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই সরাসরি বোল্ড করে ফেরান জিম্বাবুয়ের ওপেনার ক্রেইগ আরভিনকে (০)। এরপর শরিফুল ইসলাম এক ওভারে তিন বাউন্ডারি সহ হজম করেন ১৩ রান। কিন্তু তাসকিন আহমেদ এসে রানের চাকায় লাগাম টানেন। যার ফল তুলে নেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। প্রথমবার বল হাতে নিয়ে দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন সাইফউদ্দিন।
ওভারের শেষ বলে তিনি জিম্বাবুয়ের অভিষিক্ত ব্যাটার জয়লর্ড গাম্বিকে (১৪) বিদায় করেন। উইকেট পতনের মিছিল এরপর চলতেই থাকে। ষষ্ঠ ওভারে ফের বল হাতে নেন মাহেদী। এবার প্রথম বলেই রান আউটের শিকার হন একপ্রান্ত আগলে রাখা ব্রায়ান বেনেট (১৬)।
পরের বলে এসেই ডাক মারেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক সিকান্দার রাজা। মাহেদীর লেন্থ বলে প্যাডেল সুইপ খেলতে গিয়ে ফার্স্ট স্লিপে থাকা লিটন দাসের হাতে ক্যাচ তুলে দেন রাজা। ১ উইকেটে ৩৬ রান করা জিম্বাবুয়ে আর কোনো রান যোগ করার আগেই হারায় আরও ৩ উইকেট।
এখানেই শেষ নয়। তাসকিন পরের ওভারে তুলে নেন জোড়া উইকেট। ওভারের প্রথম দুই বলেই তিনি বিদায় করেন শন উইলিয়ামস ও রায়ান বার্লকে। দু’জনেই বিদায় নিয়েছেন রানের খাতা খোলার আগেই। এরপর অষ্টম ওভারে লুক জঙওয়ে (২) বিদায় নেন সাইফউদ্দিনের বলে।
৪১ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে সঙ্গে নিয়ে ক্লিভে মাদানদে ইনিংস গড়ার দায়িত্ব নেন। শুরুতে তারা ধীরস্থিরভাবেই খেলছিলেন। কিন্তু শেষদিকে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন তারা।
শরিফুলের করা ১৭তম ওভারে ১১ ও রিশাদ হোসেনের করা পরের ওভারে ১৬ রান নেন মাসাকাদজা ও মাদানদে। এরপর ১৮তম ওভারের প্রথম বলে তাসকিনকেও ছক্কা হাঁকান মাসাকাদজা। এক বল পরই অবশ্য তার সঙ্গী মাদানদেকে বোল্ড করেন তাসকিন।
তার ইয়র্কার মাদানদের দুই পায়ের মাঝখান দিয়ে স্টাম্পে আঘাত করে। অষ্টম উইকেটে জিম্বাবুয়ের রেকর্ড ৬৫ বলে ৭৫ রানের জুটি ভেঙে যায় এতে। ৬ চারে ৩৯ বলে ৪৩ রান করে আউট হন মাদানদে। তার বিদায়ের পর জিম্বাবুয়ের রান হয়নি খুব একটা। শেষ বলে রান আউট হওয়ার আগে ৩৮ বলে ৩৪ রান করেন মাসাকাদজা।
বাংলাদেশের হয়ে ৪ ওভারে ১৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন তাসকিন। সমান ওভারে ১৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট পান সাইফউদ্দিনও।
জিম্বাবুয়ের ছোট লক্ষ্য তাড়ায় বাংলাদেশের শুরুটা মোটেও ভালো ছিল না। ব্যাট হাতে অনেকদিন ধরেই অধারাবাহিক ওপেনার লিটন দাস শুরুটা করেন বাজেভাবে। ব্লেসিং মুজারাবানির করা দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলেই বোল্ড তিনি। গুড লেংথে ফেলা বলটি লিটনের ব্যাট ও প্যাডের ফাঁক গলে স্টাম্প ভেঙে দেয়। এতে ৩ বলে মাত্র ১ রানেই থামল সর্বশেষ ১৯ ইনিংস আগে ফিফটির দেখা পাওয়া লিটন। যা বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের জন্যও বড় চিন্তার কারণ!
শান্ত ভালো খেলতে থাকলেও কাটা পড়েছেন দলের ৫৭ রানের মাথায়। ২৪ বলে ২১ রান করে সাজঘরে ফিরে যান তিনি। তবে তানজিদকে থামানোই যাচ্ছিল না। দারুণ ছন্দে থাকা এই ওপেনার দৃষ্টিনন্দন সব শটে হাঁকাচ্ছিলেন একের পর এক বাউন্ডারি। দুর্দান্ত দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে অভিষেকেই হাঁকিয়েছেন ফিফটি।
চারে নেমে দারুণ কিছু শট খেলেছেন তাওহিদ হৃদয়ও। শেষ দিকে তানজিদ-হৃদয়ের ব্যাটে চড়েই এগিয়েছে বাংলাদেশের ইনিংস। দুজনে মিলে হতে দেননি কোনো বিপদ। হেসেখেলেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। ২৮ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটের জয় পায় টাইগাররা। তানজিদ অপরাজিত ছিলেন ৪৭ বলে ৬৭ রানের ইনিংস খেলে। অন্যদিকে হৃদয় ১৮ বলে ৩৩ রান করে শেষ পর্যন্ত টিকে ছিলেন। দলকে জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছেন তানজিদ-হৃদয়। জিম্বাবুয়ের হয়ে ১টি করে উইকেট নেন লুক জঙ্গুয়ে এবং ব্লেসিং মুজারাবানি।