চলারপথে রিপোর্ট :
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের কাছে চিকলি নদীর ওপর নির্মিত একটি নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোই এখনো হাজারো মানুষের একমাত্র চলাচলের মাধ্যম। নদীর ওপর স্থায়ী সেতুর অভাবে বছরের পর বছর এই বাঁশের সাঁকো দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পশ্চিম অসুরখাই, পূর্ব অসুরখাই ও দক্ষিণ অসুরখাই এলাকার মানুষসহ প্রায় ১০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন এই সাঁকো ব্যবহার করে সৈয়দপুর শহরে যাতায়াত করেন।
স্থানীয়দের উদ্যোগে ও চাঁদা তুলে নির্মিত উক্ত বাঁশের সাঁকো বর্ষাকালে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। পানি বাড়লেই সাঁকোটি প্রায় ডুবে যায়, এমনকি ভেসে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে প্রায় প্রতি বছর।
স্থানীয় এক বাসিন্দা হোসেন বলেন, প্রতিদিন এই সাঁকো দিয়ে নদী পার হই। বর্ষায় পানি বেড়ে গেলে পার হতে ভয় লাগে। রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতে হলে সাত কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়, এতে সময় ও অর্থ দুটোই নষ্ট হয়।
কামারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য তহিদুল ইসলাম বলেন, বর্ষায় এই সাঁকো পার হওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। প্রতিবার সাঁকো ভেঙে গেলে আবার নতুন করে তৈরি করতে হয়। বাঁশের সাঁকোটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল মুয়িদ বিন কাদির জানান, কামারপুকুর ইউনিয়নের তোফায়েলের মোড় এলাকার কাছারি ঘাটের এই সাঁকো পার হয়ে কাশিরাম বেলপুকুর, খাতামধুপুর এবং রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার আলমপুর ইউনিয়নের মানুষ সৈয়দপুর শহরে আসেন। এসব এলাকায় প্রায় ৩০ হাজার মানুষের বসবাস। কিন্তু এই নদীর ওপর কোনো সেতু না থাকায় তাদেরকে প্রায় ১০ কিলোমিটার ঘুরে শহরে আসতে হয়।
সৈয়দপুর উপজেলা প্রকৌশলী এম এম আলী রেজা রাজু জানান, গ্রামীণ সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় আমরা তথ্য প্রেরণ করেছি। সম্প্রতি একটি চিঠি পেয়েছি, যেখানে বলা হয়েছে পানি আইন ২০১৩ অনুসরণ করে কাজ করতে হবে।
স্থানীয়রা বলছেন, স্থায়ী সেতু নির্মাণ হলে শুধু যাতায়াতই নয়, কৃষিকাজ, পণ্য পরিবহন ও এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়নেও ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। তাই দ্রুত সময়ে একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানাচ্ছেন তারা।
অনলাইন ডেস্ক :
রাজধানীর বাড্ডা থানায় হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের দুই দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ ১৪ অক্টোবর সোমবার সকালে ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হুদা চৌধুরীর আদালত এ আদেশ দেন।
আদালতে রিমান্ড শুনানিতে পুলিশ জানায়, ৫ আগস্ট রাজধানীর বাড্ডা থানার অন্তর্গত এলাকায় ছাত্র জনতার মিছিলে গুলি চালায় পুলিশ। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আলামিন গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনার সঙ্গে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সরাসরি জড়িত। তার নির্দেশনায় হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। হত্যার রহস্য উদঘাটন এবং বাকি আসামিদের তথ্য সংগ্রহে আসামিকে রিমান্ডেেনেওয়া দরকার।
আদালতে আসামি পক্ষের আইনজীবী জানান, কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই আনিসুল হকের বিরুদ্ধে। এর আগেও কয়েকবার তাঁকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। বারবার রিমান্ডে নিয়ে তাঁকে হয়রানি করা হচ্ছে। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এছাড়া রাজধানীর মতিঝিল, মিরপুর, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, আদাবর, বাড্ডা, বনানী থানার প্রায় অর্ধ শতাধিক হত্যা মামলায় সালমান এফ রহমান, আনিসুল হক, হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, জুনায়েদ আহমেদ পলক, দীপু মনি, ফারজানা রূপা, দিলিপ কুমার আগর ওয়ালা, সাবেক সাংসদ সাদেক খান, শাজাহান খান, ডিবির অতিরিক্ত যুগ্ম কমিশনার মশিউর রহমান, মাজহারুল ইসলামকে গ্রেফতার দেখিয়েছেন আদালত।
আজ সকালে পুলিশি পাহারায় এসব আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়। এরপর ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হুদা চৌধুরীর আদালতে হাজির করে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করে পুলিশ।
চলারপথে ডেস্ক :
চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করলে ২০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রেখে ওষুধ আইন, ২০২৩ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
আজ ৬ ফেব্রুয়ারি সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
এছাড়া খসড়া আইনে ওষুধ অবৈধভাবে মজুত করে সংকট সৃষ্টি এবং ভেজাল ওষুধ তৈরি করলে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
চলারপথে রিপোর্ট :
সুন্দরগঞ্জে বাদশা মিয়া (৫৫) নামের এক খুচরা সার ব্যাবসায়ীর ঘর থেকে ১৩৩ বস্তা টিএসপি সার উদ্ধার করেছে উপজেলা প্রশাসন। আজ ২৯ জুলাই মঙ্গলবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অতিরিক্ত দায়িত্ব ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জসিম উদ্দিন। এর আগে সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ৯ টার দিকে উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়ন পরিষদ ভবন সংলগ্ন পিনুর মোড় থেকে এ সার উদ্ধার করা হয়।
অভিযুক্ত বাদশা মিয়া ওই ইউনিয়নের হুড়াভায়া খাঁ গ্রামের মৃত আবু হোসেনের ছেলে।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অতিরিক্ত দায়িত্ব ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জসিম উদ্দিন বলেন, গোপন সূত্রের তথ্যের ভিত্তিতে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে ১৩৩ বস্তা টিএসপি সার উদ্ধার করা হয়। পরে জব্দ হওয়া সারগুলো উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার জিম্মায় রাখা হয়েছে। ঘর মালিককে না পাওয়ায় কোনো ব্যব্স্থা নেয়া সম্ভব হয়নি।
এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, যতটুকু জানি এ সারগুলো ডিলার ননি গোপাল সরকার এবং মৃত প্রদীপ সরকারের। তাদের গোডাউন সোনারায় ইউনিয়নের ছাইতানতোলা বাজারে এবং আরেকটি গোডাউন রামজীবন ইউনিয়নের ডোমের হাট বাজারে। দহবন্দ ইউনিয়নে কিভাবে এলো বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাসও দেন তিনি।
গাইবান্ধা জেলা বাফার গোডাউনের ইনচার্জ হারুনুর রশিদ বলেন, ১৩৩ বস্তা টিএসপি সার ডিলার ননি গোপাল সরকার উত্তোলন করেন।
জানা যায়, সারগুলো বিসিআইসি ডিলার ননি গোপাল সরকার উত্তোলন করেন। এরপর ঢাকা মেট্রো ন ১৯-৫৯৮৫ নম্বর ট্রাক যোগে বাদশা মিয়ার ঘরে রাখা হয়। উদ্ধারকৃত সারগুলো চড়া দামে কালো বাজারে বিক্রি করা হয়েছিল বলে গোপন তথ্যে জানা গেছে।
বিষয়টি স্বীকার করে ডিলার ননি গোপাল সরকারের ছেলে রিপন বলেন, প্রদীপ চন্দ্র ও আমাদের বরাদ্দকৃত সার একসাথে তোলা হয়। আমাদের বরাদ্দকৃত টিএসপি সার আমরা নিয়েছি এবং প্রদীপ চন্দ্রের বরাদ্দকৃত টিএসপি সার তার ম্যানেজারকে দিয়েছি। সারগুলো এখানে কি ভাবে এলো বিষয়টি প্রদীপ চন্দ্রের ম্যানেজার জয়ন্ত বাবু ভালো বলতে পারবে।
ডিলার মৃত প্রদীপ চন্দ্র সরকারের ম্যানেজার জয়ন্ত বলেন, অন্য কোথাও টিএসপি সার বিক্রি করা হয়নি। তবে আমার গোডাউনে জায়গা না থাকায় পাশ্ববর্তী ইউনিয়ন দহবন্দ ইউনিয়নের খুচরা সার বিক্রেতা বাদশা মিয়ার ঘরে রাখা হয়েছিলো।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাশিদুল কবির বলেন, বিষয়টি জানার পরে ঘটনাস্থলে যাই। অবৈধভাবে মজুদকৃত ১৩৩ বস্তা টিএসপি সার উদ্ধার করা হয়। যা এখন আমার জিম্মায় আছে। পরর্বতীতে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও এ কর্মকর্তা জানান।
অনলাইন ডেস্ক :
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে একটি পুকুরে ৩৫ বছর অবরুদ্ধ প্রায় ৮০-৯০ কেজি ওজনের একটি কুমির উদ্ধার করা হয়েছে। আজ ১৭ ফেব্রুয়ারি শনিবার বিকেল ৩টার দিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা চরহাজারী ইউনিয়নের চরহাজারী গ্রামের কুমির আলা বাড়ির পুকুর থেকে বন্যপ্রাণী ও অপরাধ দমন ইউনিটের একটি দল কুমিরটি উদ্ধার করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৩৫ বছর যাবত কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরহাজারী গ্রামের কুমির আলা বাড়ির পুকুরে অবৈধভাবে অবরুদ্ধ ছিল লোনা পানির এ কুমিরটি। ওই কুমিরের নাম অনুসারে বাড়িটি পরিচিতি লাভ করে কুমির আলা বাড়ি হিসেবে। বছর খানেক আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে বিষয়টি নজরে আসে বন্যপ্রাণী ও অপরাধ দমন ইউনিটের। এরপর শনিবার দুপুর ২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে অভিযান চালায় বন্যপ্রাণী ও অপরাধ দমন ইউনিট ও নোয়াখালী বন বিভাগ। সেখানে ঘন্টাব্যাপী অভিযান চালিয়ে কুমিরটি উদ্ধার করে নোয়াখালী বিভাগীয় উপকূলীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয় নিয়ে আনা হয়। স্থানীয়দের মধ্যে জনশ্রুতি রয়েছে, ঐ এলাকার অনেক মানুষ উদ্দেশ্য পূরণে মানত করে এ কুমিরকে খাবার দিত।
বন্যপ্রাণী ওজীববৈচিত্র সংরক্ষণ কর্মকর্তা রথীন্দ্র কুমার বিশ্বাস বলেন, গত বছর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে বিষয়টি আমরা অবগত হই। উদ্ধারকৃত কুমিরটি পঞ্চাশ বছর বয়সী। এর ওজন প্রায় ৮০-৯০ কেজি। এখান থেকে কুমিরটি চট্রগ্রামের সাফারি পার্কে নিয়ে চিকিৎসা শেষে অবমুক্ত করা হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালীর উপকূলীয় বনকর্মকর্তা আবু ইউসুফ, বন্যপ্রণী পরিদর্শক নার্গিস সুলতানা প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
চট্টগ্রাম নগরে অভিযান চালিয়ে পাঁচ যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের দাবি, গ্রেফতারকৃতরা পেশাদার ছিনতাইকারী। রাতের বেলা ঈদের বাজার করতে আসা লোকজনকে লক্ষ্য করে টাকাপয়সা ও মালামাল ছিনিয়ে নিত তারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নগরের কোতোয়ালী থানার নিউমার্কেট মিউনিসিপ্যাল মডেল হাই স্কুলের সামনে ফুটওভার ব্রিজের নিচ থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার পাঁচ যুবক হলেন- মো. শাওন ফরাজী (২৫), মো. সজিব (২৭), মো. শাহেদ (৩২), মো. জুয়েল (২১) ও মো. ইয়াছিন (৩০)।
কোতোয়ালি থানার এসআই মোমিনুল হাসান বলেন, গোপন খবর আসে মিউনিসিপ্যাল মডেল হাই স্কুলের সামনে ফুটওভার ব্রিজের নিচে ছিনতাইকারীরা অবস্থান নিয়েছে। এরপর সেখানে অভিযান চালানো হয়। ছিনতাইয়ের প্রস্তুতির সময় ছুরিসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাদের যাচাই-বাচাই করে দেখা গেছে, তারা পেশাদার ছিনতাইকারী। সবার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘রোজার মাসে তাদের মূল লক্ষ্য ঈদের বাজারগামী লোকজন। তারা রাত থেকে ভোর পর্যন্ত নিউ মার্কেট এলাকায় অবস্থান করতো। ওই সময় বাজারে আসা যাওয়া করা লোকজনের কাছ থেকে টাকাপয়সা মালামাল ছিনিয়ে নিত।’