চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক মোরাদ হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ২৮ সেপ্টেম্বর রবিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশের তথ্যমতে, তিনি বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু মামলা থাকার কারণে ইমিগ্রেশন পুলিশ প্রথমে গ্রেফতার করে। পরে আখাউড়া থানা পুলিশের একটি দল তাকে রাতেই আনার জন্য ঢাকার পথে রওনা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ও সাবেক আইনমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ হিসেবেও পরিচিত মোরাদ পটপরিবর্তনের পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছিলেন।
আখাউড়া থানার ওসি মোহাম্মদ ছমিউদ্দিন গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মোরাদ হোসেন বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের একটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতি কে. এম. হাফিজুল আলম বলেন, কলেজ জীবনের ২টি বছর একজন শিক্ষার্থীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কলেজ জীবনকে সঠিক ভাবে কাজে লাগাতে পারলে স্বপ্ন পূরণের পরের ধাপ ভার্সিটি, মেডিকেল বা ইঞ্জিনিয়ারিং যে যেখানে ভর্তি হতে চাও তা সহজ হবে। অনেকে এসময় ঝড়ে পড়ে যায়। তাই তাই স্বপ্ন বাস্তবায়নে কলেজ জীবনকে গুরুত্বসহকারে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় ২০২৩ সনের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। আজ ২১ অক্টোবর শনিবার সকালে উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের ধলেশ্বর গ্রামের রাবিয়া খাতুন স্মৃতি পাঠাগার ও আকছির চৌধুরী চ্যারিটি ট্রাস্ট স্কুল যৌথভাবে এ সংবর্ধনার আয়োজন করে।
প্রধান অতিথি বিচারপতি কে. এম. হাফিজুল আলম আরো বলেন, আমি জানি ভবিষ্যৎ নিয়ে তোমাদের প্রত্যেকের একটি স্বপ্ন আছে। তোমাদের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত কলেজে ভর্তির সময়ই নিতে হবে।
ভবিষ্যতে তোমরা যা হতে চাও তার প্রতি গভীর অনুরাগ ও ভালোবাসা এবং চেষ্টা থাকতে হবে। সে অনুযায়ী কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। কোন পেশা-ই ছোট নয়, যে যেই পেশায় যেতে চাও সে পেশার যারা শ্রেষ্ট আছে তাদের মধ্যে থাকার জন্য চেষ্টা থাকতে হবে।
কাঙ্ক্ষিত পেশার শ্রেষ্ঠ মানুষদের মধ্যে এক বা একাধিক ব্যক্তিকে আইকন হিসেবে চিহ্নিত করে তাদেরকে অনুসরন করতে পারলে তোমাদের চলার পথ সহজ হবে। আমি বিশ্বাস করি লক্ষ্যে অটুট থেকে সঠিক ভাবে সময়কে কাজে লাগিয়ে পরিশ্রম করলে তোমরা নিশ্চয় সফল হতে পারবে।
ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, তোমাদেরকে মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন, সৎ এবং বিজ্ঞান মনস্ক সুনাগরিক হতে হবে। কোন ধরনের মাদক থেকে দূরে থাকতে হবে।
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী আকছির এম. চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার অংগ্যজাই মারমা, জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ সাখাওয়াত হোসেন , যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ (২য় আদালত) মোঃ হারুন অর রশিদ, সহকারী পুলিশ সুপার (কসবা-আখাউড়া) সার্কেল মোঃ দেলোয়ার হোসেন, সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী এড. মৌলী মোর্শেদ মৌ প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়া উপজেলায় শ্বশুরবাড়িতে রাসেল মিয়া নামে এক যুবকের আত্মহত্যার ঘটনায় স্ত্রী, শাশুড়ি, স্ত্রীর ভাই-বোনসহ ৭ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ১৩ জুলাই বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (আখাউড়া) আদালতে নিহতের মা আরজু বেগম বাদী হয়ে এ মামলা করেন। রাসেল আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের ধলেশ্বর গ্রামের মো. আবুল খায়ের মিয়ার ছেলে।
মামলার আসামিরা হলেন রাসেলের স্ত্রী শামীমা আক্তার (২৬), শামীমার মা হালিমা (৬০), বড় ভাই বেদন ভূঁইয়া (৪৫), সুমন ভূঁইয়া (৪০), রাজন ভূঁইয়া (৩৫), বড় বোন দিপালী (৩০) ও বড় কুড়িপাইকা গ্রামের সুরুজ ভূঁইয়ার ছেলে সাকিন ভূঁইয়া (৩৫)।
৯ জুলাই রবিবার বিকেলে উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের হিরাপুর গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে আত্মহত্যা করেন রাসেল মিয়া।
মামলার এজহারে উল্লেখ করা হয়, ৭ বছর আগে শামীমাকে বিয়ে করেন রাসেল মিয়া। তাদের ৬ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। কিন্তু শামীমা নানান জায়গায় বিচরণ করতেন। এছাড়াও একাধিক পর পুরুষের সঙ্গে মোবাইল ফোনে প্রেমালাপ ও ব্যভিচারসহ ইত্যাদি অনৈতিক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকতেন। স্বামী রাসেলের আদেশ-নিষেধ না মেনে তার খেয়াল-খুশিমত উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন শুরু করে। শামীমাকে বুঝিয়ে ভালোভাবে ঘর-সংসার করতে অনুরোধ জানালে সে বিভিন্ন প্রকার হুমকি-ধামকি প্রদান করতো। বহু চেষ্টা করেও শামীমাকে ভালো পথে ব্যর্থ হয় রাসেল।
রাসেল তাকে বুঝালেও উল্টো শামীমা তার মা, ভাই ও বোনের কু-প্ররোচনায় বিনা অনুমতিতে বাবার বাড়িতে চলে যায়। বাবার বাড়িতে থেকে রাসেলকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কটূকথা ও অযৌক্তিক দাবি-দাওয়া উত্থাপন করে মানসিক যন্ত্রণা দিতে থাকে। রাসেল মিয়া নিজ সন্তানের ভবিষ্যৎ ও পরিবারের মান সম্মানের কথা চিন্তা করে শামীমার সঙ্গে সম্পর্ক অটুট রেখে আসছিল। তারপরও রাসেলকে কারণে-অকারণে মিথ্যা অপবাদ রটিয়ে আত্মহত্যা করতে মানসিক অত্যাচার নির্যাতন করে আসছিল। অবশেষে শামীমা, তার মা, ভাই ও বোনের মানসিক নির্যাতনে রাসেল আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদি পক্ষের আইনজীবী ড. আব্দুল্লাহ ভূঁইয়া বাদল জানান, রাসেলের মা বাদী হয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলাটি করেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (আখাউড়া) আদালতে বিচারক ফরহাদ হোসেন মামলাটি আমলে নিয়েছেন। পাশাপাশি আখাউড়া থানায় এ সংক্রান্ত আর কোন মামলা আছে কি না, তা জানাতে বলা হয়েছে।
আখাউড়ায় এক প্রবাসীর বাড়িতে এসি লাগাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হুজাইফা (২৫) নামে এক বিদ্যুৎ মিস্ত্রির মৃত্যু হয়েছে।
আজ ১৮ সেপ্টেম্বর বুধবার বিকেলে পৌর শহরের খড়মপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত হুজাইফা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের বাউতলা গ্রামের মো. বুলবুল মিয়ার ছেলে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পৌর এলাকার খড়মপুর দক্ষিণপাড়ার প্রবাসী মো. জহির খাদেমের বাড়িতে এসি মিস্ত্রি হুজাইফা কাজ করতে যান। রুমের মধ্যে এসি লাগানোর পর এতে সংযোগ দিতে গেলে অসাবধানতাবশত তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। বাড়ির লোকজন তাকে উদ্ধার করে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আখাউড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাসুদ এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, খবর পেয়ে খোঁজ নিতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বহুল আকাঙ্ক্ষিত রেলপথ প্রকল্প যা বাংলাদেশের আখাউড়াকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলার সঙ্গে সংযুক্ত করতে যাচ্ছে। সেই মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায় দুইপাড়ের বাসিন্দারা উন্মুখ হয়ে তাকিয়ে আছেন সীমান্তের দিকে। শনিবার আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পটি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন।
ওই দিন আখাউড়া-আগরতলা রেলপথে পরীক্ষামূলক বা ট্রায়াল ট্রেন চালাতে যাচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। আখাউড়া-আগরতলা রেলপথে ট্রায়াল রানের ট্রেনটি এখন পূর্বাঞ্চল রেলপথের আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে অপেক্ষা করছে।
শনিবার দুপুরে নতুন এ রেলপথ দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া রেল সেকশনের গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ভারতের উত্তর-পূর্ব ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা রেলওয়ে স্টেশনের নিশ্চিতপুর স্টেশনে যাবে একটি মালবাহী কন্টেইনার ট্রায়াল ট্রেন।
রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো) শহীদুল ইসলাম, পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন ও আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্প পরিচালক আবু জাফর মিয়া সম্প্রতি রেলপথ প্রকল্প পরিদর্শনে আসলে গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশন সুপারিন্টেনডেন্ট মো. নুরুন্নবী জানান, ঢাকার তেজগাঁও স্টেশন থেকে ট্রায়াল রান বা পরীক্ষামূলক ট্রেনটি ৩ সেপ্টেম্বর বিকালে আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে পৌঁছায়। ট্রেনটি ১১টি কোচ নিয়ে আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে পৌঁছলে ট্রায়াল রান ট্রেনের কোচগুলোতে হলুদ ও বডিতে কালো রংয়ের কাজ করানো হয়েছে।
তিনি জানান, পরীক্ষামূলক বা ট্রায়াল রানের ট্রেনটি এখন আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনের ৩ নম্বর প্লাটফর্মের ৮ নম্বর লাইনে রাখা হয়েছে। শুক্রবার সকালে ট্রায়াল রানের ট্রেনটি আখাউড়া স্টেশন থেকে গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হবে।
জানা গেছে, আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ উদ্বোধনের দিনক্ষণকে সামনে রেখে রেলপথ মন্ত্রী, সচিব, অতিরিক্ত সচিবসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রকল্প এলাকা ঘুরে গেছেন। শনিবার দুপুরে প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করেন রেলওয়ের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল। দলের নেতৃত্বে ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. ইয়াছিন। প্রতিনিধি দলে রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো) শহীদুল ইসলাম, পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন, আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্প পরিচালক আবু জাফর মিয়া, আখাউড়া-লাকসাম ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন প্রকল্পের পরিচালক মো. সুবক্তগীন, আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের কান্ট্রি হেড শরৎ শর্মাসহ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ইতোমধ্যে এ পথে একাধিকবার পরীক্ষামূলক গ্যাঙ্কার বা পরিদর্শন কার চলাচলও করেছে। প্রকল্পের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশন থেকে গ্যাঙ্কার বা পরিদর্শন কারে ভারত সীমান্তবর্তী শিবনগর পর্যন্ত ঘুরে দেখেছেন।
জানা যায়, ভারত-বাংলাদেশ রেলওয়ে সংযোগ প্রকল্পটি আখাউড়া-ঢাকা হয়ে আগরতলা এবং পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে ভ্রমণের সময় ও দূরত্ব কমিয়ে দেবে। প্রকল্পটি চালু হলে ৩১ ঘণ্টার পরিবর্তে সময় লাগবে ১০ ঘণ্টা এবং আগরতলা-কলকাতার দূরত্ব ১ হাজার ৬৫০ কিলোমিটার থেকে দূরত্ব দাঁড়াবে মাত্র ৫১৩ কিলোমিটার।
স্থানীয় বাসিন্দাদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে রেলপথে বাণিজ্যের দ্বার খুলবে, কমবে পরিবহণ খরচ- এমনটাই দাবি করছেন রেলপথ মন্ত্রী ও সচিবসহ সংশ্লিষ্টরা।
আখাউড়া-আগরতলা সড়কপথের পর এবার আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ সংযোগে উন্মোচিত হবে বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যের নতুন দ্বার। রেলপথটি চালু হলে ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে পর্যটন এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়ে দিগন্তের সূচনা ঘটবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আখাউড়ার গঙ্গাসাগর থেকে আগরতলার নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণের জন্য ২০১৮ সালের ২১ মে ভারতের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই প্রকল্পের কাজ শুরু করে। দেড় বছরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও করোনা মহামারিসহ নানা সংকটের কারণে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্প পরিচালক আবু জাফর মিয়া বলেন, দুই দেশের এ রেলপথের মোট দৈর্ঘ্য ১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ রেলপথের বাংলাদেশ অংশে ৬ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার। পুরো অংশেই বসানো হয়েছে রেললাইন। ইতোমধ্যে প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৯৫ শতাংশের বেশি শেষ হয়েছে এবং শেষপর্যায়ের কাজ চলছে বলে ওই প্রকল্প পরিচালকের দাবি। তবে এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন ভবন এবং স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের কাজ।
এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ৪৭৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৫৭ কোটি ৫ লাখ টাকা এবং ভারতীয় ঋণ ৪২০ কোটি ৭৬ লাখ কোটি টাকা।
২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় এ রেলপথ নির্মাণের বিষয়ে উভয় দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ইমিগ্রেশন পুলিশের কর্মবিরতির কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে যাত্রী পারাপার কার্যক্রম চার ঘন্টা ছিল।
আজ ৭ আগস্ট বুধবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে যাত্রী পারাপার কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ। এতে আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে ভারতগামী প্রায় ১শ যাত্রী আটকা পড়ে। এতে দূর- দুরান্ত থেকে আসা যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন। তবে বেলা ১ টার দিকে ভারতীয় নাগরিক এবং চিকিৎসাজনিত জরুরি কাজে যাওয়া যাত্রীদের ইমিগ্রেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করে পাঠানো হয়। তবে ট্যুরিস্ট ভিসা ও বিজনেস ভিসার যাত্রী পারাপার কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
কুমিল্লা থেকে আসা জান্নাত বেগম বলেন, আমার স্বামী ক্যান্সারে আক্রান্ত। চিকিৎসার জন্য ভারতে যাব। বিকেল ৪ টায় বিমানে উঠার সময়। সেজন্য সকাল ৯ টায় আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে আসি। আমাদেরকে বার বার অপেক্ষার জন্য বলা হয়। এতে আমাদের সময় যেমন নষ্ট হয়েছে, তেমনি দুর্ভোগও পোহাতে হয়েছে। কুমিল্লার ফরিদ উদ্দিন তার স্ত্রীকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়া জন্য অপেক্ষা করছেন।
তিনি জানান, দেশের এমন পরিস্থিতিতে গাড়ি ভাড়া দ্বিগুণ দিয়ে সকাল ১০টায় ইমিগ্রেশনে এসে জানতে পারেন পুলিশের কর্মবিরতি চলছে। অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে এখন তিনি বিপাকে পরেন।
আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট পুলিশের ইনচার্জ মো. খায়রুল আলম জানান, সারাদেশে থানায় হামলা হয়েছে, অনেক পুলিশ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় আছেন পুলিশ সদস্যরা। এর ফলে নিরাপত্তা নিশ্চিকরণসহ বিভিন্ন দাবিতে পুলিশ সদস্যরা কর্মবিরতি পালন করেছি। তবে বেলা ১ টার পর ভারতীয় নাগরিক এবং চিকিৎসা জনিত জরুরি কাজে যাওয়া যাত্রীদের পাঠানো হয়েছে। এখন আর কোন যাত্রী আটকা নাই। তবে বাংলাদেশী যাত্রীদেও মধ্যে শুধুমাত্র গুরুতর অসুস্থ মেডিকেল ভিসাধারী যাত্রীদেও ভারত গমনের সুযোগ দেয়া হচ্ছে। ট্যুরিস্ট ভিসা ও বিজনেস ভিসার যাত্রী পারাপার বন্ধ রয়েছে।