চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে বাবাকে হত্যার দায়ে ছেলে জসিম মিয়াকে (৪৩) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সাথে এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ ১৫ অক্টোবর বুধবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ এর বিচারক মো. শহিদুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফখরুদ্দিন খান আদালতের রায়ের জানান, এ রায়ের মাধ্যমে বাদীপক্ষ ন্যায় বিচার পেয়েছেন। তবে আসামি পক্ষের আইনজীবী নাজমুল হক রিটন রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের আপিল করবে বলে জানান।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০২৩ সালের ১৪ আগস্ট দুপুরে নবীনগরের জিনোদপুর ইউনিয়নের কাঁঠালিয়া গ্রামে পাট কাটা নিয়ে লিল মিয়া(৭৫) এর সাথে তার ছেলে জসিম মিয়ার কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে জসিম ভারী কাঠ দিয়ে তার বাবাকে একের পর এক আঘাত করে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় লিল মিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মমতাজ বেগম বাদী হয়ে নবীনগর থানায় একটি হত্যা মামলা করলে জসিম মিয়াকে গ্রেফতার করেন পুলিশ ।
এ মামলায় ২০২৪ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। পরবর্তীতে আদালতে আসামি জসিম মিয়ার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রমাণ ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। আদালত উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আজ রায় ঘোষণা করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দুস্থদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী উপহার দিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
সুলতানপুর ব্যাটালিয়নের (৬০ বিজিবি) আয়োজনে মঙ্গলবার বিকালে আখাউড়া ও কসবার সীমান্তবর্তী চন্ডিদ্বার বিওপি’র এলাকার ঝাঠুয়ামোড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ১০০ জন অসহায়-দুস্থ পরিবারের মাঝে শুকনা খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
প্রত্যেককে পাঁচ কেজি চাল, দুই কেজি ডাল, এক কেজি তেল, এক কেজি চিনি ও দুই কেজি আলু দেওয়া হয়। এসময় সুলতানপুর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মুহাম্মদ আশিক হাসান উল্লাহ, পিএসসি বলেন, আমরা খুবই ভাগ্যবান যে আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান এঁর মত একজন নেতা পেয়েছিলাম। যার কারণে আজ আমরা একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে বিশ্ববাসীর নিকট মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে আছি। এ রকম মহান নেতা একশ বছরে অথবা হজার বছরে একজন জন্ম গ্রহণ করে থাকেন। বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি কথা আমাদের জন্য অনুকরণীয় এবং অনুস্বরণীয়। আমরা সীমান্ত রক্ষার মহান দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছি। সীমান্ত রক্ষী বাহিনী হিসেবে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া উপদেশ ও নির্দেশ আমরা যথাযথভাবে পালন করেতে পারলে আজকের অনুষ্ঠানের সার্থকতা।
তিনি জানান, সীমানা ঘেঁষা মানুষদের অনেকেই বেশ গরীব। এ কারণেই আমরা শহর থেকে দূরের এলাকা বেছে নিয়েছি। আমাদের এই উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।
খাদ্য সামগ্রী বিতরণের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সুলতানপুর ব্যাটালিয়নের উপ অধিনায়ক মেজর এ. এম. জাবের বিন জব্বার, পিএসসি, চন্ডিদার বিওপি ক্যাম্প কমান্ডার নায়েব সুবেদার হারুনুর রশিদ প্রমুখ।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, দিবসের কর্মসূচি অনুযায়ী সুলতানপুর ব্যাটালিয়ন (৬০ বিজিবি) এ বাদ ফজর হতে কোরআন খতম করা হয়। মসজিদে জোহর নামাজের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ শাহাদাত বরণকারী পরিবারবর্গের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রিভিলি হতে রিট্রিট পর্যন্ত ব্যাটালিয়নের সকল স্থাপনায় জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয় এবং কর্মরত সকল সদস্য কালো ব্যাজ পরিধান করে। এসব খাদ্যসামগ্রী পেয়ে খুশি আব্দুল ক্দ্দুুস নামে বৃদ্ধ বলেন, বিজিবির এ সহযোগিতা আমাদের খুব উপকারে আসবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আব্দুল কাদের বলেছেন, ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ ভূমিকার কারণে গত ১৭ বছরের নিপীড়িত শাসন ব্যবস্থাকে বিতাড়িত করতে পেরেছে। এই আন্দোলন শুধুমাত্র ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের বিরুদ্ধে নয়, বরং রাষ্ট্রের অপব্যবস্থার বিরুদ্ধেও ছিল। আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে হঠানো গেলেও তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা এখনো নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আন্দোলনের গতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পাঁয়তারা করে বেড়াচ্ছে। তারা কখনো আনসার বা ভিন্ন রুপে ফিরে আসে। তাই আমরা লঙ্কার সিস্টেমকে বদলাতে চাই যাতে কেউ লঙ্কায় গিয়ে রাবন হতে না পারে। সংখ্যালঘুদের দুর্গা পূজাকে ঘিরে একটি মহল ছাত্র সমাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চেষ্টা করবে। তাই দূর্গাপূজাকে নির্বিঘ্ন ও সফল করতে ছাত্র-জনতাসহ সকলকে পাশে থাকতে আহ্বান জানান।
আজ ১১ সেপ্টেম্বর বুধবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের জাতীয় বীর আব্দুল কুদ্দস মাখন পৌর মুক্তমঞ্চে শহীদ পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ এবং দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ছাত্র-নাগরিক মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি আরো বলেন, যারা ছাত্রদের বুকে গুলি চালিয়ে রক্ত ঝড়িয়েছে তাদের অচিরেই বিচারের আওতায় আনা হবে। আন্দোলনে নিহত ও আহতদের কল্যাণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সাথে কথা হয়েছে। ফাউন্ডেশন গঠনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ফাউন্ডেশন গঠনের পর প্রত্যেক নিহত ও আহতদের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা ও একজন করে সরকারি চাকরীর নিশ্চয়তা দেয়া হবে।
সীমান্ত হত্যার কথা উল্লেখ করে বলেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হবে, কোন নতজানু সম্পর্ক হবে না। সেই সম্পর্ক হবে ন্যায্য ও সমমর্যাদার।
জিয়া উদ্দিন আয়ান তাঁর বক্তব্যে বলেন, এটা ছাত্রদের প্রতিনিধির সরকার। আস্থা রাখতে হবে এ সরকারের প্রতি। আগে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এর আগে কেউ ক্ষমতায় আসতে পারবে না। শেখ হাসিনা যে গর্তেই লুকিয়ে থাকুক না কেন, তাকে বের করে এনে ফাঁসি দিতে হবে। এজন্য সরকারকে চাপ দিতে হবে। যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক তাদেরকে চাপে রাখতে হবে। প্রয়োজনে আবার আন্দোলনে নামতে হবে। আন্দোলনের সময় সারাদেশে পুলিশ নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। এই পুলিশকে ঢেলে সাজাতে হবে। এমনভাবে সাজাতে হবে যেন-গুলি করা তো দূরের কথা কোনো পুলিশ যেন চোখ রাঙিয়ে কথা বলতে না পারে।
আন্দোলনে নিহত তানজিন মাহমুদ সুজনের বোন ইসরাত জাহান বলেন, পুলিশ নৃশংসভাবে হত্যাকান্ড চালিয়েছে। আমার ভাইসহ ছয়জনকে হত্যার পর পিকআপ ভ্যানে করে লাশ আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়, যেন চেনা না যায়। সঙ্গে থাকা স্কুলের আইডি দেখে ভাইকে চিহ্নিত করা হয়। আমি আমার ভাইসহ সকল শহীদের বিচার দাবি করছি।
সভায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হামযা মাহবুবে সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সহ সমন্বয়ক আতিক মুন্সী, খালিদ হাসান, মোঃ মহিউদ্দিন, সমন্বয়ক জিয়া উদ্দিন আয়ান, আলী আহমেদ আরাফ. মোঃ ইব্রাহিম। এছাড়াও সভায় বিভিন্ন শহীদ পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সাইদুর রহমান, শাহজাহান মোল্লা, ইসরাত জাহান প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা তথ্য অফিসের ব্যবস্থাপনায় “শিশু, কিশোর-কিশোরী ও নারী উন্নয়নে সচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রমের” আওতায় আজ ২২ অক্টোবর মঙ্গলবার সিভিল সার্জনের সম্মেলন কক্ষে “জেলা পর্যায়ে এইচপিভি টিকাদান কার্যক্রম ২০২৪” নামে একটি ওরিয়েন্টেশন কর্মশালার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ডিডিএলজির মোহাম্মদ রুহুল আমিন এর সভাপতিত্বে ওরিয়েন্টেশন কর্মশালায় প্রধান অথিতি ছিলেন সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ নোমান মিয়া।
কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন এবং পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন জেলা তথ্য অফিসার দীপক চন্দ্র দাস। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন বাংলাদেশের যত নারী ক্যান্সারে মারা যায় তার অর্ধেক মারা যায় জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে। সাধারণত নারীরা যে সকল ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় বৈশ্বিকভাবে জরায়ুমুখ ক্যান্সার চতুর্থ সর্বোচ্চ। প্রতিবছর বিশ্বের ছয় লক্ষ নারী জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় তার মধ্যে তিন লক্ষ বিয়াল্লিশ হাজার জন মৃত্যু বরন করেন। এর প্রায় ৯০% বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশে হয়ে থাকে।
বক্তারা আরো বলেন, বাংলাদেশী নারীদের ক্ষেত্রে জরায়ুমুখ ক্যান্সার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। বাংলাদেশে প্রতি এক লক্ষ নারীর মধ্যে এগারজন জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। প্রতি বছর ৪৯৭১ জন মহিলা মৃত্যুবরন করেন। বর্তমান সরকার এই ভয়াবহ রোগের কথা চিন্তা করে ৫ম -৯ম শ্রেণী ছাত্রীদের এবং ১০-১৪ বছর বয়সী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত কিশোরীদের বিনামূল্য এইচপিভি টিকাদান ব্যবস্থা করে দেন। এইচপিভি টিকা জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে এইচপিভি টিকার একটি ডোজই যথেষ্ট। এইচপিভি টিকা বিশ্বব্যাপী পরীক্ষিত,নিরাপদ ও কার্যকর। ১ ডোজ টিকা পেতে www.vaxepi.gov.bd ভিজিট করে জন্ম সনদ দিয়ে নিবন্ধন করে ৫ম -৯ম শ্রেণী ছাত্রীদের এবং ১০-১৪ বছর বয়সী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত কিশোরীরা টিকা গ্রহন করতে পারে।
বক্তারা আরো বলেন, জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধ করার জন্য একটি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। যার জন্য প্রয়োজন সর্বস্তরের মানুষের সহায়তা।
চলারপথে রিপোর্ট :
গোষ্ঠীগত বিরোধকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। প্রায় পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন।
আজ ১৩ নভেম্বর সোমবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সংঘর্ষ শুরু হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের কালিসীমা পশ্চিম পাড়ায়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অর্ধশতাধিক রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। সংঘর্ষে আহতদের ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহ আলম জানান, খানিবাড়ি ও সিরাজ আলী বাড়ির গোষ্ঠীর সঙ্গে দোলাবাড়ি গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব রয়েছে। একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা পরিষদ সদস্য বাবুল মিয়া। আরেকটি গ্রুপের নেতৃত্বে ইউপি মেম্বার আরজু মিয়া। কিছুদিন আগে আরজু মেম্বার গ্রুপের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদের ছেলেকে মারধর করেন খানিবাড়ির ছেলেরা। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা করা হয়।
১২ নভেম্বর রবিবার আবার মারধর করা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদকে। এ ঘটনায় উত্তেজনা তৈরি হলে সদর মডেল থানার সদস্যরা সেখানে যান। সোমবার সকালে ঘটনাটি থানায় মীমাংসার জন্য সালিশ সভা ডাকা হয়। সকালে সভা চলাকালীন দুই গ্রুপ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ঘে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। উভয় পক্ষ ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। কয়েকটি বাড়িঘরে হামলার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সদর মডেল থানা পুলিশের কয়েকটি দল ঘটনাস্থলে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অর্ধশতাধিক রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পুলিশ।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সংঘর্ষ চলছিল। এ ঘটনায় আহতদের ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও আশপাশের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) সোহেল আহমেদ বলেন, সকালে গোষ্ঠীগত বিরোধে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। সংঘর্ষে যারা জড়িত তদন্ত করে সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে অবৈধ সীমানা প্রাচীর, টিনের ঘর ও চার চালা টিনের ঘর উচ্ছেদ করে প্রায় তিন শতক খাস জায়গা উদ্ধার করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ মোশারফ হোসাইন সদর উপজেলার রামরাইল ইউনিয়নের সেন্দ গ্রামে এই ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সদর উপজেলার সুলতানপুর ও রামরাইল ইউনিয়নের অধীনে সেন্দ মৌজায় রামরাইল ইউনিয়নের শিলাউর গ্রামের সৈয়দ জাকির হোসেন বাহারের ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গা রয়েছে। জাকির হোসেনের জায়গার উত্তর পাশে রয়েছে সরকারি রাস্তা। সরকারি সার্ভেয়ার নিয়োগ করে সরকারি রাস্তার সীমানা নির্ধারণের জন্য ২০১৫ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি জাকির হোসেন বাহার জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেন। ২০১৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসক এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশ দেন। ওই বছরের ৮ মার্চ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সার্ভেয়ারকে নিয়ে মাপঝোঁক করে সরকারি রাস্তার সীমানা নির্ধারণ করেন।
সে সময় ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গা ও রাস্তার সীমানার উপর ছয়টি পিলার স্থাপন করে জাকিরকে বুঝিয়ে দেন। কিন্তু সেন্দ গ্রামের চার ভাই সেলিম মিয়া, মনির মিয়া, খোকন মিয়া ও মামুন মিয়া নিষ্পত্তিকৃত সীমানা নির্ধারণ লঙ্ঘণ করে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান থেকে বরাদ্দ নিয়ে সরকারি রাস্তাটি বিভাজন করেন। পরে তারা জাকিরের জায়গা দখলের পায়তাঁরা শুরু করেন। এক পর্যায়ের তারা সরকারী রাস্তা দখল করে সীমানা প্রাচীর দিয়ে বাড়িঘর নির্মাণ করে বসবাস করা শুরু করেন। ২০২০ সালের ১২ জুলাই জাকির হোসেন বাহার নকশা অনুযায়ি সরকারি রাস্তাসহ তার ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গা উদ্ধারের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে কাছে লিখিত আবেদন করেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার রামরাইল ইউনিয়নের সেন্দ গ্রামের চার ভাই সেলিম মিয়া, মনির মিয়া, খোকন মিয়া ও মামুন মিয়া সেন্দ মৌজার ১ নং বিএস খাস খতিয়ানভুক্ত ৫৬৩২ দাগে ২ দশমিক ৯৬ শতক খাস জায়গা অবৈধভাবে দীর্ঘদিন ধরে দখল করে রেখেছেন। সেখানে তারা অবৈধভাবে দুটি সীমানা প্রাচীর, একটি ভিটি পাকা টিনের ঘর ও একটি চার চালা টিনের ঘর নির্মাণ করে বসবসা করে আসছিলেন।
২০২০ সালে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের ( রাজস্ব) আদালতের এক উচ্ছেদ মামলার রায়ের নির্দেশনা এবং জেলা প্রশাসসক কার্যালয়ের এক চিঠি অনুযায়ী সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোশারফ হোসাইন অবৈধভাবে দখলদার চার ভাই সেলিম, মনির, খোকন ও মামুনকে প্রথমে গত ১০ এপ্রিল পরে গত ৫ জুনের মধ্যে ২ দশমিক ৯৬ শতক খাস জায়গা থেকে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হলেও তারা কর্ণপাত না করায় বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোশারফ হোসাইন সেখানে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে তাদের চার ভাইয়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেন। এসময় দুটি সীমানা প্রাচীর, একটি ভিটি পাকা টিনের ঘর ও একটি চার চালা টিনের ঘর উচ্ছেদ করে ২ দশমিক ৯৬ শতক খাস জায়গা উদ্ধার করেন।
এ ব্যাপারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সদর উপজেলা সহকারী কমিমশনার (ভূমি) মোশারফ হোসাইন জানান, অবৈধ স্থাপনাসহ দখল সরিয়ে নিতে তাদের দুই দফা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কিন্তু দখলকারীরা কোনো কর্ণপাত করেননি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান চালিয়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ২ দশমিক ৯৬ শতক খাস জায়গা উদ্ধার করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) আদালতের উচ্ছেদ মামলা মূলে খাস জমি থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। উক্ত অবৈধ স্থাপনা সমূহের কারণে সেখানে সরকারি রাস্তা নির্মান করা যাচ্ছিল না।