চলারপথে রিপোর্ট :
জমি ভরাট করতে গিয়ে একটি সড়কের কালভার্টের মুখ বন্ধ করে দিয়েছেন প্রভাবশালী এক ব্যক্তি। এতে সড়কের দুই পাশের প্রায় ১০০ বিঘা ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। অনেক কৃষক এসব জমিতে ফসলের বীজ বা চারা রোপণ বন্ধ রেখেছেন। প্রতিকার চেয়ে ইউএনওর কাছে লিখিত আবেদন করেছেন কৃষকরা। ইউএনও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছেন।
গত ১৩ মার্চ রামরাইল ও ঘাটিয়ারা গ্রামের ২০-২৫ জন কৃষক লিখিত আবেদন করেন।
মোহাম্মদপুর গ্রামের আরমান মিয়া জানান, কালভার্ট-সংলগ্ন দক্ষিণ পাশে জামাল মিয়ার ছয় বিঘা জমি বছরে ৩০ হাজার টাকায় জমা নিয়ে তিনি সবজির চাষ করেন। তবে জলাবদ্ধতার শঙ্কায় তিনি উৎপাদন বন্ধ রেখেছেন। এতে কয়েক লাখ টাকার লোকসান গুনতে হবে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সেলিম শেখ জানান, ইউপি চেয়ারম্যানকে সমস্যাটি সমাধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কৃষকরা বলছেন, ইউএনওর কাছে আবেদন দেওয়ার পর কয়েক দিন অপেক্ষা করবেন। প্রশাসন কোনো প্রতিকার না করলে আরেকটি কালভার্ট ভরাটের হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।
রামরাইল গ্রামের কৃষক সুখলাল, মতিলাল, হীরালাল, দুলাল, নির্মল, চন্দন দেব, পরিতোষ দেব এবং ঘাটিয়ারা গ্রামের সোহাগ মিয়া, আব্দুল্লাহ মিয়া, হাবিব উল্লাহ, খবির মিয়া, আবু তাহের মিয়াও একই কথা বলেন। তাঁরা বলেন, ইচ্ছা করেই কালভার্ট বন্ধ করে মাটি ভরাট করেছেন মালিক। ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।
রামরাইল ও মোহাম্মদপুর গ্রামের সংযোগ সড়কের ঘাটিয়ারা গ্রামে প্রায় শত বছর ধরে কালভার্টটির মাধ্যমে পানি নিষ্কাশন হয়। পার্শ্ববর্তী বিলে গিয়ে পড়ে সেই পানি। তবে এক মাস আগে মোতালেব মিয়া বাড়ি নির্মাণের জন্য জমিটি ভরাট করেন। প্রভাবশালী হওয়ায় জমি ভরাটে বাধা দেওয়ার সাহস করেনি কেউ।
এ বিষয়ে মোতালেব মিয়ার বক্তব্য জানা যায়নি। তবে তাঁর ছেলে স্কুল শিক্ষক মোহাম্মদ জুয়েল বলেন, এ কালভার্টের নিচ দিয়ে পানি যায় না। বাড়ি নির্মাণের প্রয়োজনে মাটি ভরাট করা হয়েছে। কারও প্রয়োজন হলে পাইপ-কালভার্ট নিজ খরচে করবেন।
রামরাইল ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমার সেলিম বলেন, ইউএনওর নির্দেশে সরেজমিন গিয়ে জমির মালিককে কালভার্টের মুখের মাটি সরিয়ে মোটা পাইপ বসিয়ে দিতে বলা হয়েছে; পানি নিষ্কাশনে যাতে কোনো অসুবিধা না হয়। অন্যথায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আল খলিল হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামক একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় ইশতিয়াক আহমেদ প্রকাশ ইকরাম (২১) নামে এক কলেজ ছাত্রের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার বেলা ১১টার দিকে নিহতের স্বজনসহ স্থানীয়রা হাসপাতালে ভাংচুর করেছে।
পাশাপাশি শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল শেষে ও মানববন্ধন করেছে নিহতের স্বজনসহ বন্ধুরা। নিহত ইশতিয়াক আহমেদ সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের চান্দিয়ারা গ্রামের হাজী সহিদ মিয়ার ছেলে।
স্থানীয় লোকজন, নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে ইশতিয়াক বেশ কয়েকদিন ধরে নাকের পলিপাস সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগছিলেন। তাঁর নাকের মাংস বেড়ে গিয়েছিল। নাকের অস্ত্রোপচারের জন্য গত শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে সে জেলা শহরের পুরাতন জেলরোডস্থ আল খলিল হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি হয়।
ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিডফোর্ট হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ রাফিউল আলম তার অস্ত্রোপচার করেন। শুক্রবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ইশতিয়াককে ওই হাসপাতালের অস্ত্রোপচার কক্ষে নেয়া হয়। সেখানে তাকে অচেতন করার ইনজেকশন দেন অবেদনবিদ (এনেস্থেশিস্ট) ফৌজিয়া মমতাজ সুপ্তি। অস্ত্রোপচারের পর অস্ত্রোপচার কক্ষ থেকে অচেতন ও আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করা হয়।
পরে বিষয়টি জানতে পেরে রোগীর মা শরিফা বেগম ও তাঁর ভাবী ভয় পেয়ে চিৎকার-চেচামেচি শুরু করেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে পুনরায় অস্ত্রোপচার কক্ষে নিয়ে যান। এরপর থেকে রাত পর্যন্ত স্বজনরা বার বার ইশতিয়াককে দেখার চেষ্টা করলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে দেখার সুযোগ দেননি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইশতিয়াক ভালো আছেন বলে তার স্বজনদের আশ্বস করেন। এক পর্যায়ে সন্ধ্যায় অস্ত্রোপচার কক্ষ থেকে রোগীর স্বজনকে না জানিয়ে অচেতন অবস্থায় ইশতিয়াক জেলা শহরের কুমারশীল মোড়ের ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইসিইউ স্পেশালাইডজ এন্ড জেনারেল হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে স্থানান্তর করে আল খলিল হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষ। শনিবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইশতিয়াকের মৃত্যু হয়।
বেলা ১১টার দিকে ইশতিয়াকের স্বজনরা আল খলিল হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে হাসপাতালের একজন মালিকসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেন। বেলা ১২টার দিকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠানো হয়।
এদিকে দুুপুর দেড়টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে নিহতের স্বজন ও বন্ধুরা বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেন। সেখানে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাসুম বিল্লাহসহ নিহতের বন্ধুরা বক্তব্য রাখেন। গ্রেফতারকৃতরা হলেন আল খলিল হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক নাজমুল সাকিব (৩২), কর্মী আরিফুল ইসলাম (২৮) ও এমদাদুল বাছির (৩৩)।
দুপুরে ভুল চিকিৎসায় ইশতিয়াকের মৃত্যুর অভিযোগ এনে নিহেতর বড় ভাই বাচ্চু মিয়া বাদী হয়ে আল খলিল হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান খলিলুর বশির, চিকিৎসক রাফিউল আলম ও ফৌজিয়া আক্তার টিকলিকে আসামী করে সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
নিহতের ভাবী আরজিনা আক্তার বলেন, ইশতিয়াককে সুস্থ অবস্থায় অস্ত্রোপচার কক্ষে নেয়া হয়। চিকিৎসক রাফিউল আলম তার অস্ত্রোপচার করেন। বিকাল চারটায় অস্ত্রোপচার কক্ষ থেকে অচেতন অবস্থায় তাকে বেডে নেয়া হয়। কিছুক্ষণ পর পর তাঁকে ডাকতে ও নাড়াচাড়া করানোর কথা বলেন চিকিৎসক। এক পর্যায়ের তাঁর হাত পা ঠান্ডা ও কালো হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়। পরে তাঁকে পুনরায় অপারেশন থিয়েটর নেয়া হয়। তিনি অভিযোগ করে বলেন, চিকিৎসক ফোৗজিয়া সঠিকভাবে এনেস্থেসিয়া না দেয়ায় তাঁর এমন অবস্থা হয়েছে বলে জানতে পারি। আমাদেরকে কিছু না বলে তাঁকে অন্য হাসপাতালের আইসিউতে নিয়ে যায় ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শনিবার বেলা ১২টায় আইসিইউ হাসপাতাল ইশতিয়াকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইসিইউ স্পেশালাইডজ এন্ড জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক (প্রশাসন) আবু কাউসার বলেন, তাকে আইসিইউতে অচেতন অবস্থায় আনা হয়। শনিবার সকাল সোয়া সাতটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এ ব্যাপারে নাক কান ও গলা বিশেষজ্ঞ ডাঃ রাফিউল আলমকে একাধিকবার ফোন করলে তিনি রিসিভ করনে নি।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, ইশতিয়াকে মৃত্যুর বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে তার ভাই বাচ্চু মিয়া। ঘটনার প্রেক্ষিতে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর উর্ধ্বগতির কারণে দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ। আস্তে আস্তে জিনিসপত্রের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। এদিকে ব্যবসায়ীরা যাতে মজুদ করে বাজারে কৃত্রিম সংকট না করতে পারে সেজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাজারগুলোতে নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও ভ্রাম্যমাণ আদালত অসাধু ব্যবসায়ীদের জরিমানা করছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাজারগুলোতে চালের দাম স্থিতিশীল পর্যায়ে থাকলেও শাক-সবজি ও মসলা জাতীয় দ্রব্য সামগ্রীর দাম চড়া।
শহরের সবচেয়ে বড় বাজার আনন্দ বাজারের বিশিষ্ট চাল ব্যবসায়ী মেসার্স সুমা ট্রেডার্সের পরিচালক মোঃ নাঈম হোসেন বলেন, বাজারে চালের কোন সংকট নেই। গত ৩ মাস ধরে চালের বাজার স্থিতিশীল। অন্যান্য বছরগুলোতে জুলাই-আগষ্ট মাসে বাজারে চালের যে দাম থাকে এবছর এই সময়ে চালের দাম আগের চেয়ে কম।
তিনি বলেন, বাজারে কাটারী ভোগ চাল ৫০ কেজির বস্তা ৩১০০টাকা, কাটারী নাজির চাল ৫০ কেজির বস্তা ৩০০০টাকা, ঘি-ভোগ চাল ৫০ কেজির বস্তা ২৯০০ টাকা, বিআর-২৮ চাল ৫০ কেজির বস্তা ২৫০০টাকা, বিআর-২৯ চাল ৫০ কেজির বস্তা ২৪৫০ টাকা, মিনিকেট চাল ৫০ কেজির বস্তা ২৮০০ টাকা,পাইজাম চাল ৫০ কেজির বস্তা ৩০০০ টাকা, নাজির শাইল চাল ৫০ কেজির বস্তা ৩০০০টাকা, বোরো চাল ৫০ কেজির বস্তা ৩৫০০ টাকা ও মোটা চাল ৫০ কেজির বস্তা ১৮০০টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
একই বাজারের আরেক চাল ব্যবসায়ী হাজী শামীম ট্রেডার্সের মালিক মোঃ শামীম হোসেন বলেন, গত ২ মাস ধরে বাজারে চালের দাম বাড়েনি। তিনি বলেন, বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন ধরনের বিআর-২৮ চাল ৫০ কেজির বস্তা ২৪৫০ থেকে ২৫০০ টাকা, বিআর-২৯ চাল ৫০ কেজির বস্তা ২৩৫০ থেকে ২৪০০ টাকা, বিভিন্ন ধরনের কাটারীভোগ চাল ৫০ কেজির বস্তা ২৯০০ থেকে ৩২০০ টাকা, বিভিন্ন ধরনের মিনিকেট চাল ৫০ কেজির বস্তা ৩২০০ টাকা থেকে ৩৫৫০ টাকা, নাজিরশাল চাল ৫০ কেজির বস্তা ৩০০০টাকা, বিভিন্ন ধরনের বোরো চাল ৫০ কেজির বস্তা ৩৬০০ থেকে ৩৭০০ টাকা ও বিভিন্ন ধরনের মোটা চাল ৫০ কেজির বস্তা ১৮০০ টাকা থেকে ২১০০টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
একই বাজারের মেসার্স শরীফ ট্রেডার্সের কর্ণধার মোঃ বাহার উদ্দিন বলেন, বাজারে অন্যান্য জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও চালের দাম বাড়েনি। গত প্রায় ৩ মাস ধরে চালের দাম স্থিতিশীল।
মোঃ বাহার উদ্দিন জানান, বাজারে বিভিন্ন ধরনের কাটারী ভোগ চাল ৫০ কেজির বস্তা ৩২০০ থেকে থেকে ৩৪০০টাকা, বিভিন্ন ধরনের ঘি ভোগ চাল ৫০ কেজির বস্তা ২৯০০ থেকে থেকে ৩১০০টাকা, বিভিন্ন ধরনের পাইজাম চাল ৫০ কেজির বস্তা ৩৪০০ থেকে থেকে ৩৬০০টাকা, বিভিন্ন ধরনের নাজিরশাল চাল ৫০ কেজির বস্তা ৩০০০ থেকে থেকে ৩৪০০টাকা, বিভিন্ন ধরনের বোরো চাল ৫০ কেজির বস্তা ৩৭০০ থেকে থেকে ৩৮০০ টাকা, বিভিন্ন ধরনের বিআর-২৮ চাল ৫০ কেজির বস্তা ২৩০০ থেকে থেকে ২৮০০টাকা, বিভিন্ন ধরনের বিআর ৪৯ চাল ৫০ কেজির বস্তা ২৫০০ থেকে থেকে ২৯০০ টাকা, বিভিন্ন ধরনের মিনিকেট চাল ৫০ কেজির বস্তা ৩০০০ থেকে থেকে ৩২০০ টাকা, দেশী বাসমতি চাল ৫০ কেজির বস্তা ৩৩০০ থেকে থেকে ৩৮০০টাকা, বালাম চাল ৫০ কেজির বস্তা ২৭০০ থেকে ৩০০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
তিনি জানান, বাজারে শুকনা দেশী মরিচ কেজি ৩৭০ থেকে ৩৯০ টাকা, ভারতীয় শুকনা মরিচ প্রতি কেজি ৪২০ থেকে ৪৬০ টাকা, হলুদ প্রতিকেজি প্রকার ভেদে ১৬০ টাকা থেকে ২০০ টাকা, ধনিয়া প্রতি কেজি ১৯০ টাকা থেকে ২৪০ টাকা, এলাচি প্রতি কেজি প্রকার ভেদে ১৫০০ টাকা থেকে ২৮০০টাকা, জিরা প্রতি কেজি ১০৭০ থেকে ১১০০টাকা, চিনি প্রতি কেজি ১২৮ থেকে ১৩৫টাকা, লবণ প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পিয়াজ দেশী প্রতি কেজি ৮০টাকা, পিয়াজ ভারতয়ি ৩৮/৪০টাকা, রসুন দেশী প্রতি কেজি ১৭০/১৯০ টাকা, রসুন ভারতীয় প্রতি কেজি ১৭৫/১৮৫ টাকা, আদা প্রতি কেজি ১৪০/১৭০ টাকা, আটা প্রতি কেজি ৪০/৪৫ টাকা, প্যাকেটজাত মসল্লা হলুদ (রাঁধুনী) ৫০০ গ্রাম ২৪০ টাকা, মরিচ (রাঁধুনী) ৫০০ গ্রাম ৪১০ টাকা, ধনিয়া (রাঁধুনী) ৫০০ গ্রাম ১৭৫ টাকা, জিরা (রাঁধুনী) ৫০০ গ্রাম ১০০০ টাকা, পোলাও চাল চাষী প্রতি কেজি ১৬০ টাকা, বিভিন্ন ধরনের সয়াবিন ৫ লিটার ৮৪০/৮৬০ টাকা, মুশরির ডাল প্রতি কেজি ৯০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা, বুট ডাল প্রতি কেজি ৮০/ ৯০ টাকা, মুগ ডাল প্রতি কেজি ১২০/১৩০ টাকা, প্যাকেটজাত গুড়া দুধ ডানো ৫০০ গ্রাম ৪২৫, গুড়া দুধ মাস্ক ৫০০ গ্রাম ৪২৫, গুড়া দুধ ডিপ্লোমা ৫০০ গ্রাম ৪২৫, গুড়া দুধ ডানো পুষ্টি ৫০০ গ্রাম ৩৭০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
সবজির বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, টমেটো প্রতি কেজি ১৮০টাকা, সীম প্রতি কেজি ১৫০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৩০/৫০টাকা, ধনিয়া পাতা প্রতি কেজি ১২০টাকা, লেবু হালি ২০/৩০ টাকা, লাউ প্রতিপিস ৫০/৭০ টাকা, করলা কেজি ৭০ টাকা, জিঙ্গা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, পটল প্রতি কেজি ৩০ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি ৪০ টাকা, কাঁচা কলা হালি ৩০/৩৫ টাকা, মুখী প্রতি কেজি ৬০টাকা, আলু প্রতি কেজি ৪০ টাকা, দেড়শ প্রতি কেজি ৪০টাকা, পেপে প্রতি কেজি ৪০টাকা, মুলা প্রতি কেজি ৪০টাকা, ঝালি কুমড়া প্রতি পিস ৪০/৫০টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে শহরের কাজীপাড়ার খলিলুর রহমান বলেন, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে আমরা দিশেহারা। ব্যবসায়ীরা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অজহাত দেখিয়ে তাদের মনগড়া মতো দাম বাড়াচ্ছে। আগে ৫০০ টাকা দিয়ে যে জিনিস কিনতাম, সেই জিনিস কিনতে এখন ১০০০/১২০০ টাকা লাগে।
পৌর এলাকার পশ্চিম মেড্ডার গৃহিনী শামসুন্নাহার বলেন, বাজারের জিনিসপত্রে দাম বাড়ছেই। একবার বাড়লে আর কমেনা। তিনি বলেন, এভাবে দাম বাড়তে থাকলে আমরা কি করব?
পৌর এলাকার বাগানবাড়ির বাসিন্দা লোকমান হোসেন বলেন, বাজারে যেতে ভয় করে। প্রতিদিনই নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। শহরের হালদারপাড়ার বাসিন্দা শামীম হোসেন বলেন, জিনিসপত্রের দাম বাড়ার কারনে এখন আর চাহিদামতো জিনিসপত্র কিনতে পারিনা। খুবই কষ্ট হচ্ছে আমাদের মধ্যে নিম্ন আয়ের মানুষদের।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সেলিম শেখ বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যাতে স্থিতিশীল পর্যায়ে থাকে সেজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব সময় বাজারে নজরদারী করা হয়। আমরা বাজারগুলো সব সময় মনিটরিং করি। কেউ যাতে পন্য সামগ্রী মজুদ করে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তাদেরকে জেল-জরিমানা করা হচ্ছে।
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সুবর্ণ নাগরিকদের মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ করা হয়েছে। গত ২৬ মার্চ নিয়াজ মুহম্মদ স্টেডিয়ামে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত সুবর্ণ নাগরিকদের মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম।
অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচকের বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র মিসেস নায়ার কবির।
এ সময় অন্যান্যের মধে উপস্থিত ছিলেন সিভিল সার্জন ডাঃ একরাম উল্লাহ্, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আমিনুল ইসলামসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা- কর্মচারীবৃন্দ।
এ সময় সুবর্ণ নাগরিকদের মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা যুব মৈত্রীর কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল ৩ জুন শনিবার বিকেলে শহরের দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনে আয়োজিত ৬ষ্ঠ সম্মেলনে এ কমিটি ঘোষণা করা হয়ে।
কমিটিতে সভাপতি পদে কাজী তানভীর মাহমুদ শিপন, সাধারণ সম্পাদক পদে ফরহাদুল ইসলাম পারভেজ ও সাংগঠনিক সম্পাদক বাছির মিয়ার নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি কমরেড রাশেদ খান মেনন।
সম্মেলন উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ যুব মৈত্রীর সভাপতি তৌহিদুর রহমান। সঞ্চালনায় ছিলেন জেলা যুব মৈত্রীর সদস্য সচিব ফরহাদুল ইসলাম পারভেজ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা যুব মৈত্রীর আহবায়ক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ নাসির মিয়ার সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য মাহমুদুল হাসান মানিক, জেলা বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি কাজী মাসুদ আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ খান, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমেদ রুবেল।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে সম্পত্তির লোভে জাহানারা বেগম (৭০) নামে এক বৃদ্ধা মাকে তিন মাস ধরে তালাবদ্ধ ঘরে বন্দি রেখেছিল সন্তানরা। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার পৌরসভার গোর্কণঘাট এলাকার প্রয়াত হাজী মো. আবদু মিয়ার স্ত্রী।
আজ ১৬ আগস্ট শুক্রবার সকালে তাকে উদ্ধার করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ৩৩ বীর। এই সময় আটক করা হয় সন্তানদের। তার ৯ ছেলে ও ৩ মেয়ে তারা তাদের মায়ের কাছ থেকে সম্পত্তি নেওয়ার জন্য পাশবিক এই কান্ড করেন।
গোপন সংবাদের মাধ্যমে খবর পেয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ৩৩ বীর একটি অভিযানিক দল জেলা শহরের গোর্কণঘাট এলাকায় বৃদ্ধ জাহানারা বেগমকে উদ্ধার করেন। এসময় সেনাবাহিনীর দলটি ঘটনাস্থল থেকে তার ৮ সন্তানকে আটক করে নিয়ে আসে। এই সময় তার সন্তানরা মায়ের কাছে ক্ষমা প্রার্থণা করেন।
পৌরসভা ৭ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর মো. ফারুক আহামেদ মুচলেকা দিয়ে তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে যান। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদে থাকা সেনাবাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্পের ইনচার্জ ৩৩ বীরের ওয়ারেন্ট অফিসার দিদারুল আলম দিদার জানান, সম্পত্তির জন্য তাদের মাকে তিন মাস ঘরবন্দি করে রাখে সন্তানরা। পাশাপাশি তাদের মাকে মারধর করে, নিয়মিত খাবার না দেওয়া, বস্তায় ভরে হত্যার হুমকিও দিয়ে আসছিল।
তারা তাদের ভুল বুঝতে পারায় স্থানীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে তাকে মায়ের কথামত তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।