চলারপথে রিপোর্ট :
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ত্রিপুরা রাজ্যে ‘গণহত্যা দিবস’ পালন করা হয়েছে।
২৫ মার্চ শনিবার সন্ধ্যায় আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের উদ্যোগে যথাযথ ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ‘গণহত্যা দিবস’ পালিত হয়।
দিবসটি উপলক্ষে হাইকমিশন কার্যালয় প্রাঙ্গণে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শুরুতে মুক্তিযুদ্ধে সব শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা ও মোমবাতি প্রজ্জলন কর্মসূচি পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে জীবন উৎসর্গকারী সব শহীদের আত্মার মাগফিরাতের জন্য কোরআন তিলাওয়াত ও বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
দোয়া করা হয় বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের শহীদ এবং দেশের শান্তি ও অব্যাহত অগ্রগতি কামনার্থেও। মোনাজাত পরিবেশ করেন মিশন প্রধান আরিফ মোহাম্মদ।
পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ত্রিপুরায় নিযুক্ত বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মদ অনুষ্ঠানে গণহত্যা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এবং মিশনের প্রথম সচিব আল আমীন প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত বাণীসমূহ পাঠ করেন ।
সহকারী হাইকমিশনের প্রথম সচিব ও দূতালয় প্রধান রেজাউল করিম চৌধুরীর সঞ্চালনায় এসময় বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধের গবেষক ড. দেবব্রত দেব রায়, রাজ্যের শিক্ষাবিদ ড. মুজাহিদ রহমান, ড. আশিষ কুমার বৈদ্য, ড. মোস্তফা কামাল, বাংলাদেশ-ভারত সম্মননাপ্রাপ্ত সাংবাদিক মহিউদ্দিন মিশু।
অনুষ্ঠানে একাত্তরের গণহত্যার ওপর একটি ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। পরে গণহত্যা দিবসের ওপর আলোচনা করা হয়।
আলোচনায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বরতা ও গণহত্যার ব্যাপকতার ওপর আলোকপাত এবং ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবি করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। বৈঠকে জ্বালানি, ব্যবসা ও বিনিয়োগ এবং বাংলাদেশি জনশক্তি এবং মুসলিম উম্মাহ, বাংলাদেশের উন্নয়ন বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘এই বৈঠকটি অত্যন্ত উষ্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়।’
জ্বালানি সম্পর্কে কাতারের আমির বলেন, ‘কাতার থেকে বাংলাদেশে আরও বেশি পরিমাণে জ্বালানি সরবরাহের বিষয়ে নতুন চুক্তি স্বাক্ষরের আলোচনা কয়েক মাস ধরে বিবেচনাধীন রয়েছে। আমি আমির হিসাবে, আপনাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি যে, বন্ধু দেশ হওয়ায় আমি আপনাকে সব ধরণের সুযোগ-সুবিধা দেব।’
ড. মোমেন বলেন, এটি (প্রতিশ্রুতি) বাংলাদেশের জন্য একটি বড় অর্জন। এই নতুন চুক্তি শিগগিরই স্বাক্ষরিত হবে।
২০১৭ সালে স্বাক্ষরিত ১৫ বছরের চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ এখন প্রায় ৪০ কন্টেইনার অর্থাৎ ১.৮ থেকে ২.৫ এমটিএ জ্বালানি আমদানি করছে। কিন্তু এখন বাংলাদেশ কাতার থেকে আরও এলএনজি সরবরাহ চায়।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বেও প্রশংসা করে কাতারের আমির বলেন, তারা একসময় জানত বাংলাদেশ একটি দুর্যোগ ও দারিদ্র্যপীড়িত দেশ। কিন্তু শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশের খাদ্য ঘাটতি দূর করেছেন।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার গত সাড়ে ১৪ বছরে দারিদ্র্যের হার ৪১ শতাংশ থেকে ১৮ দশমিক ৫ শতাংশে এবং চরম দারিদ্র্যের হার ২৫ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। তিনি বলেন, ‘আমি বাংলাদেশকে দারিদ্রমুক্ত করেছি। দারিদ্র্য একটি অভিশাপ।’
শেখ হাসিনা বলেন, তার পিতার (জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) স্বপ্নের বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করাই তাঁর একমাত্র লক্ষ্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কিছুটা এগিয়েছি। কিন্তু আমার কাজ শেষ হয়নি। আমি আরও কাজ করতে চাই। কিন্তু আমি একা তা করতে পারবো না। আমি আপনার সাহায্য চাই। আমার আরও বিনিয়োগ দরকার। আমি আমার দেশকে বিনিয়োগের জন্য খুলে দিয়েছি। আপনি পারস্পরিক সুবিধার জন্য বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে পারেন।’
শেখ হাসিনা কাতারের আমিরকে এ বছরের মধ্যে সম্ভব হলে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। জবাবে শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি বলেন, তিনি অবশ্যই বাংলাদেশ সফর করবেন এবং এটি এই বছরের মধ্যেই হবে।
মুসলিম উম্মাহ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মুসলিম দেশগুলো কোনো কোনো ক্ষেত্রে তুচ্ছ বিষয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে, যা মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের জন্য অন্তরায়।’ তিনি কাতারের আমিরকে বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায়ের উন্নয়নে মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের জন্য কাজ করার অনুরোধ জানান।
জবাবে আমির বলেন, তিনি হয়তো মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারবেন না, তবে, মুসলিম উম্মাহ যাতে আরও অগ্রসর হয় সে বিষয়ে তার প্রচেষ্টা থাকবে।
কাতারে বাংলাদেশি শ্রমিকদের চাকরি হারানোর আশঙ্কা সম্পর্কে আমির বলেন, ‘এখন তিন লাখ ৭০ হাজার বাংলাদেশি এখানে আছেন এবং তারা কাতারের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। কাতার নতুন প্রকল্প নিতে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশিরা এখানেই থাকবে এবং তারা পরিশ্রমী ও আন্তরিকভাবে কাজ করছে। আমরা বাংলাদেশিদের নিয়ে খুবই খুশি।’
ড. মোমেন বলেন, ‘বৈঠকটির পরিবেশে ছিল খুবই আন্তরিক। এটি একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় যে, তিনি তাঁকে তাঁর গাড়ি থেকে নামার সময়ই স্বাগত জানান।
পরে প্রধানমন্ত্রী দোহায় কাতার ফাউন্ডেশন পরিচালিত বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য একটি বিশেষায়িত স্কুল আওসাজ একাডেমি পরিদর্শন করেন। শেখ হাসিনা একাডেমির বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষ পরিদর্শন করেন। আওসাজ একাডেমিতে ৩ বছর থেকে ২৫ বছর বয়সী প্রায় ৫০০ জন ছাত্র এবং ১৮৫ জন শিক্ষক রয়েছেন।
এর শিক্ষার্থীদের আঁকা শিল্পকর্ম বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করা হয়। তিনি একাডেমিতে বাংলাদেশি অটিস্টিক শিশুদের আঁকা চারটি শিল্পকর্মও উপহার দেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী এ ধরনের স্কুলের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ এবং বাংলাদেশে অটিস্টিক শিশুদের দ্রুত শনাক্তকরণে কাতারের সহায়তা চান। ড. মোমেন জানান, কর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত করেছে যে, তারা একটি ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বাংলাদেশি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিতে পারে।
অনলাইন ডেস্ক :
পাকিস্তানে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে দেশটির অর্থমন্ত্রী ইসহাক দারের নাম প্রস্তাব করেছে ক্ষমতাসীন জোট সরকারের বৃহত্তম শরিক পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএলএন)। মূলত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও অন্যান্য বৈশ্বিক ঋণদাতা সংস্থার সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার তাগিদ থেকেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পিএমএলএন।
আজ ২৪ জুলাই সোমবার পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের একজন জ্যেষ্ঠ নেতা রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমরা মনে করছি, আইএমএফ পাকিস্তানের অর্থনীতি সংস্কারে যেসব শর্ত দিয়েছে – সেই অনুযায়ী একটি অন্তর্বর্তী সরকারকে পরিচালনার জন্য ইসহাক দার সবচেয়ে উপযুক্ত ব্যক্তি। এছাড়া আইএমএফ ও অন্যান্য ঋণদাতা সংস্থার সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য আসলে এই মুহূর্তে ইসহাক দারের বিকল্প কেউ নেই।’
দুর্নীতি, অপব্যয় এবং করোনা মহামারিজনিত কারণে ডলারের রিজার্ভ তলানিতে ঠেকে যাওয়ায় চরম অর্থনৈতিক সংকটে থাকা পাকিস্তানকে গত মাসে ৩০০ কোটি ডলার জরুরি (বেইল আউট) ঋণ দিয়েছে আইএমএফ। তবে এই ঋণ প্রাপ্তির জন্য আক্ষরিক অর্থেই ঘাম ছুটে গেছে দেশটিতে ক্ষমতাসীন সরকারের।
২০১৯ সালে পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ও দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সময় থেকেই শুরু হয়েছিল আইএমএফের ঋণের কিস্তি। কিন্তু ইমরানের নেতৃত্বাধীন তৎকালীন সরকার ঋণচুক্তির শর্ত অনুসারে, জ্বালানির ওপর ভর্তুকি প্রত্যাহার না করায় আইএমএফ ঋণের কিস্তি স্থগিত করে।
আইএমএফের কিস্তি স্থগিতের পদক্ষেপে অন্যান্য বৈশ্বিক ঋণদাতা সংস্থার ঋণও অনিশ্চিত হয়ে পড়ে পাকিস্তানের। ২০২১ সালের ১০ এপ্রিল পার্লামেন্টে বিরোধীদের অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হন ইমরান খান। তার বিদায়ের পর দেশের নতুন প্রধানমন্ত্রী হন পিএমএলএনের চেয়ারম্যান শেহবাজ শরিফ।
নতুন সরকার গঠন করার পর থেকেই স্থগিত ঋণের কিস্তি ফের চালুর জন্য দেন-দরবার শুরু করে ইসলাবাদ। আর এক্ষেত্রে নেতৃত্বের পুরোভাগে ছিলেন অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার।
অবশেষে গত ১২ জুলাই পাকিস্তানকে ৩০০ কোটি ডলার জরুরি ঋণ প্রদানে সম্মত হয় আইএমএফ। আইএমএফের অনুমোদনের ২ দিন পর, ১৪ জুলাই রাজধানী ইসলামাবাদে এক অনুষ্ঠানে দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বলেন, আগামী ১৪ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে বিদায় নেবে তার নেতৃত্বাধীন সরকার।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া সীমান্তের ওপারে ভারতের ত্রিপুরার রাজ্যের আগরতলায় সে দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের সাথে ১ অক্টোবর মঙ্গলবার হওয়া বৈঠকে সীমান্ত হত্যার জোরালো প্রতিবাদ জানিয়েছে বিজিবি। একইসঙ্গে ওই বৈঠকে ভারত থেকে মাদক আসা বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিএসএফের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে বেলা সোয়া তিনটা নাগাদ আগরতলা আইসিপির ল্যান্ড কাস্টমস কনফারেন্স হলে বিজিবি-বিএসএফ কমান্ডার পর্যায়ের এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বিজিবি সুলতানপুর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল এ এম জাবের বিন জব্বারের নেতৃত্বে ২৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল বৈঠকে অংশ নেয়।
এতে ২৫ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্ণেল ফারাহ মো. ইমতিয়াজসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বিএসএফের পক্ষে ৪২ ব্যাটালিয়ন, ১৫০ ব্যাটালিয়ন, ১০৪ ব্যাটালিয়ন ও ৮১ ব্যাটালিয়নের কর্মকর্তারা বৈঠকে অংশ নেন।
বিজিবির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে সীমান্তে গুলিবর্ষণ, হত্যা বন্ধ করা, অনুপ্রবেশ রোধ, মাদক ও মানব পাচার প্রতিরোধ এবং চোরাচালানসহ বিভিন্ন আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমন বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা করা হয়। সীমান্ত হত্যার বিষয়ে জোরালো প্রতিবাদ জানায় বিজিবি
সীমান্তবর্তী জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও সীমান্তে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বিজিবি-বিএসএফ একসঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। সূত্র : কালেরকণ্ঠ
অনলাইন ডেস্ক :
এশিয়ার দেশ চীনে আবারও দেখা যাচ্ছে করোনা সংক্রমণের ঢেউ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী জুনে দেশটিতে প্রতি সপ্তাহে নতুন ধরন এক্সবিবিতে ৬ কোটি ৫০ লাখেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হতে পারেন।
গত বছরের ডিসেম্বরে সাধারণ মানুষের আন্দোলনের মুখে হঠাৎ করে জিরো কোভিড নীতি প্রত্যাহারে বাধ্য হয় চীন সরকার। এছাড়া তুলে নেওয়া হয় সব বিধিনিষেধ। এসব কঠোর বিধিনিষেধ তুলে দেওয়ার পর অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হন এবং তাদের মধ্যে ইমিউনিটি সৃষ্টি হয়। তবে নতুন ধরন এক্সবিবি এই ইমিউনিটি ধ্বংস করে দেবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
চীনের করোনা বিশেষজ্ঞ ঝং নানসেন গত সোমবার এক তথ্যে জানিয়েছেন, তাদের আশঙ্কা জুন থেকে প্রতি সপ্তাহে করোনা সংক্রমণ ৪ কোটি থেকে বেড়ে ৬ কোটি ৫০ লাখে পৌঁছাতে পারে।
সাসসেপটিবল-এক্সপোসড ইনফেকসাস-রিকভার্ড মডেলের ওপর ভিত্তি করে হিসাব-নিকাষ করে জং বলেছেন, ‘কয়েকদিন পর সংক্রমণের যে ঢেউ দেখা যাবে সেটি এড়ানো খুবই কঠিন হবে।’
ওমিক্রনের নতুন উপধরন (এক্সবিবি ১.৯.১, এক্সবিবি ১.৫ এবং এক্সবিবি ১.১৬) মোকাবিলায় চীনে ইতোমধ্যে দুটি নতুন ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েন জং। এছাড়া আরও চারটি ভ্যাকসিন অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
গত ডিসেম্বরে বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পর চীনের প্রায় ৮৫ ভাগ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে ওই সময়ের পর জুনে আবারও তীব্র সংক্রমণ দেখা দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ঠেকাতে এখন থেকেই পদক্ষেপ নিতে হবে। ভ্যাকসিন দেওয়ার পাশাপাশি হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ এন্টি ভাইরাল ওষুধ রাখতে হবে।
২০২০ সালের ১১ মার্চ ডব্লিউএইচও করোনাকে মহামারি ঘোষণা করার পর সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে চীনসহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশ দীর্ঘ লকডাউন, সপ্তাহের পর সপ্তাহব্যাপী বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইন, সামাজিক দূরত্ববিধি, বাধ্যতামূলক করোনা টেস্টসহ কঠোর সব বিধি জারি করেছিল। তবে ২০২১ সালের প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ প্রায় সব বিধি উঠিয়ে নিলেও চীন সে পথে হাঁটেনি।
বরং মহামারির প্রায় তিন বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও দেশজুড়ে যাবতীয় কঠোর করোনাবিধি জারি রেখেছিল চীন। সংক্রমণ প্রতিরোধে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল এই দেশটির এ অবস্থান পরিচিতি পেয়েছিল জিরো কোভিড নীতি হিসেবে।
তার সুফলও অবশ্য পাওয়া যাচ্ছিল। মহামারির দুই বছরে যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেখানে লাখ লাখ মানুষ আক্রান্ত ও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে— সেখানে চীনের সরকারি তথ্য অনুযায়ী এই সময়সীমার মধ্যে দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন মাত্র ৩৩ হাজারের কিছু বেশি মানুষ এবং মৃত্যু ছিল এক হাজারের কিছু ওপরে।
কিন্তু প্রায় তিন বছর কঠোর করোনা বিধির মধ্যে থাকার জেরে অতিষ্ঠ চীনের সাধারণ জনগণ ২০২২ সালের নভেম্বরের শেষদিকে করোনা বিধির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করে। জনগণের এই বিক্ষোভের পর ডিসেম্বরের প্রথম দিকে ‘জিরো কোভিড’ নীতি থেকে সরে এসে সব করোনাবিধি শিথিল করে দেয় দেশটির সরকার।
তারপর থেকেই দেশটিতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যায় উল্লম্ফন দেখা যায়। ওই সময় প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছিলেন, হাসপাতালগুলো করোনা রোগীদের উপচে পড়া ভীড় দেখা গিয়েছিল।
গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যেভিত্তিক স্বাস্থ্যতথ্য গবেষণা সংস্থা এয়ারফিনিটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, চীনে কোভিডজনিত অসুস্থতায় প্রতিদিন ৯ হাজার মানুষ মারা যাচ্ছিলেন। যদিও চীন এসব দাবি অস্বীকার করেছিল।
অনলাইন ডেস্ক :
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টা ৪২ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় সোমবার সকাল ৮টা ৪২ মিনিট) প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইট জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সূত্র : বাসস
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ আবদুল মুহিত এবং যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানান।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট রোববার রাত ৯টা ৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময়) লন্ডনে পৌঁছায়। লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে চার ঘণ্টা যাত্রাবিরতির পর প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্কের উদ্দেশে যাত্রা করেন।
রোববার সকাল ১০টার পর রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যায় প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট। সে সময় বিমানবন্দরে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, তিন বাহিনীর প্রধান, সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও বিশ্বনেতারা ৭৮তম ইউএনজিএ অধিবেশনে যোগদানের জন্য নিউইয়র্কে জমায়েত হবেন। আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনে এবারের প্রতিপাদ্য ‘বিশ্বাস পুনর্গঠন ও বিশ্ব সংহতির পুনরুদ্ধার : ২০৩০ এজেন্ডা বাস্তবায়নে ত্বরান্বিত পদক্ষেপ, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যে শান্তি, সমৃদ্ধি, অগ্রগতি এবং সবার জন্য স্থায়িত্বের দিকে’।
এ সফরে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিউইয়র্কে অবস্থানকালে প্রধানমন্ত্রী ১৯ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সদরদপ্তরের সাধারণ পরিষদ হলে ৭৮তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের উচ্চপর্যায়ের প্রথম দিনের বিতর্কে যোগ দেবেন। ২২ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় দুপুর ১টা থেকে দুপুর ২টার মধ্যে ভাষণ দেবেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানিয়েছেন, সাধারণ বিতর্কে প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বাংলাদেশের অবিশ্বাস্য উন্নয়ন-অগ্রগতি, অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও স্বাস্থ্য খাতে সাফল্যের পাশাপাশি বিশ্বশান্তি, নিরাপত্তা, নিরাপদ অভিবাসন, রোহিঙ্গা সংকট, জলবায়ু ও ন্যায়বিচারের মতো বিষয় তুলে ধরবেন।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদানের পাশাপাশি এই সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সংকট, জলবায়ু পরিবর্তন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) এবং সর্বজনীন স্বাস্থ্য ও অর্থসহ বেশ কয়েকটি উচ্চপর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় ও সৌজন্যমূলক বৈঠকে অংশ নেবেন।
এরমধ্যে সোমবার নিউইয়র্কের রকফেলার সেন্টারে ইউএনআইডিও ও ডেলয়েট আয়োজিত ‘খাদ্যের জন্য চিন্তা– খাদ্য সরবরাহ চেইন উদ্ভাবনের জন্য এসডিজিকে ত্বরান্বিত করার জন্য সহযোগিতা’ শীর্ষক একটি উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী মূল বক্তব্য দেবেন। প্রধানমন্ত্রী আগামী ৪ অক্টোবর দেশে ফিরবেন বলে আশা করা হচ্ছে।