চলারপথে ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের সংস্কৃতি ছিল। যারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে এসেছে আজকে তারাই গণতন্ত্রের ছবক দেয়!
তিনি বলেন, শুধু দেশের ভেতরে নয়, দেশের বাইরে গিয়েও নালিশ করা বিএনপির চরিত্র। তারা মনে করে দেশের বাহিরে থেকে এসে কেউ তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। বাংলাদেশের মানুষ এখন সচেতন। বিদেশিদের কাছে নালিশ করে লাভ হবে না।
২৭ মার্চ সোমবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের একটাই লক্ষ্য ছিল- এদেশের মানুষ যেন অন্ন পায়, বস্ত্র পায়, বাসস্থান পায়, চিকিৎসা পায়, উন্নত জীবন পায়। সেই লক্ষ্য সামনে নিয়েই তিনি আমাদের এই স্বাধীনতা এনে দেন।
তিনি বলেন, আমাদের স্বাধীনতার ৫৩ বছর। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেই ১৯৪৮ সালে আমাদের মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার আদায়ের যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন সেই আন্দোলনের পথ বেয়েই তিনি ধীরে ধীরে এদেশের মানুষকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেন। তারই ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলার মানুষ অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে এদেশ স্বাধীন করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আমাদেরকে একটি রাষ্ট্র দিয়েছেন, একটি জাতি হিসেবে মর্যাদা দিয়েছেন, বিশ্ব দরবারে আত্মপরিচয়ের সুযোগ করে দিয়েছেন। তিনি তার নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন বাংলাদেশের শোষিত ও বঞ্চিত মানুষের জন্য। তিনি চেয়েছিলেন তাদের ভাগ্য তিনি পরিবর্তন করবেন, দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবেন। আর এসব কারণেই তিনি এদেশের মানুষকে স্বাধীনতা এনে দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, যার যা কিছু আছে তা নিয়ে এদেশের মানুষ লড়াই করতে নেমে গিয়েছিল। বাংলাদেশের যুদ্ধটা একটি জনযুদ্ধ ছিল। যারা ট্রেনিং নিয়ে দেশে এসেছে, দেশের মানুষকে তৈরি করেছে, প্রতিটি ক্ষেত্রে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে বাধা দিয়েছে। ট্রেনিংপ্রাপ্ত শুধু তা নয়, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষও মাঠে নেমে গিয়েছিল। যে যেভাবে পেরেছে, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছিল। যেহেতু এটা গেরিলা যুদ্ধ, গেরিলা যোদ্ধারা যখন দেশে ঢুকেছে, এদেশের মা-বোনেরা রান্না করে খাওয়ার দেওয়া, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অবস্থানের তথ্য দেওয়া; সেই কাজগুলো করেছে। একটা জনযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা এদেশে স্বাধীনতার বিজয় অর্জন করতে পেরেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নালিশ করে তাদের ওপরে নাকি খুব অত্যাচার। অত্যাচার তো আমরা করি নাই। অত্যাচার করেছে বিএনপি-জামায়াত জোট। জিয়াউর রহমান এসে হাজার হাজার মানুষ হত্যা করেছে। সেনা বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা অফিসার, সৈনিক থেকে শুরু করে প্রায় ৫ হাজার মানুষকে নির্বিচারে ফাঁসি দিয়েছে, গুলি করেছে, হত্যা করেছে। পরিবারগুলো তাদের লাশও পায়নি। সব লাশ গুম হয়ে গেছে।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখল করা এবং প্রথমে লেবাস পড়ে ক্ষমতায় যাওয়া, রাজনীতিকে গালি দিয়ে ক্ষমতা দখল করে, আবার সেই লেবাস খুলে নিজেরাই রাজনীতিবিদ হয়ে যাওয়া আর ক্ষমতা উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে দখল গঠন করার কালচারটাই শুরু হয়েছিল বাংলাদেশে। অবৈধ দখলকারীদের হাতে তৈরি করা যে সংগঠন তারা নাকি গণতন্ত্র চায়। যাদের জন্মই গণতন্ত্রের মধ্য দিয়ে হয়নি। যাদের জন্ম মিলিটারি ডিক্টেটেডের মধ্য দিয়ে, তারা আবার গণতন্ত্র চায়। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র দেয়নি, তারা গণতন্ত্র দেবে। গণতন্ত্রের জন্য নাকি তারা লড়াই করে। ওদের জিজ্ঞেস করতে হয়, তাদের জন্মটা কোথায়? অবৈধ দখলদারি এটা তো আমাদের কথা না। আমাদের উচ্চ আদালত বলে দিয়েছে যে, জিয়া-এরশাদ সম্পূর্ণ অবৈধ। তারপর তারাও নাকি গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামও করে।’
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অ্যাম্বাসেডর মোহাম্মদ জমির, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাহজাহান খান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য পারভীন জামান কল্পনা, সানজিদা খানম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি। পরিচালনা করেন দলের প্রচার সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এবং উপ-প্রচার সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল আওয়াল শামীম।
বরিশাল প্রতিনিধি :
জলবায়ু সংকটের পাশাপাশি বায়ু দূষন প্রাণঘাতি হয়ে উঠেছে। ২০১৯ সালে নির্মল বায়ু আইনের খসড়া তৈরি হলেও তা এখনো আলোর মুখ দেখেনি। সরকার ‘পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫’ এর অধীনে বায়ুদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০২২ জারি করলেও এতে কোন সুফল মিলছে না। বায়ুদূষণকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সরকারকে এ সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসতে হবে। এক্ষেত্রে নির্মল বায়ু আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে। বরিশালে পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক এক আলোচনা সভার বক্তারা এসব কথা বলেন।
আজ ১৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার দুপুরে বরিশাল জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ‘নির্মল বায়ু আইন ও নবায়নযোগ্য শক্তির প্রয়োজনীয়তা, সম্ভাবনা ও বর্তমান পরিস্থিতি’ বিষয়ক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। যুব প্লাটফর্ম ইয়ুথ ফর কেয়ার’র উদ্যোগে ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস, দ্য আর্থ সোসাইটি এবং ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশ যৌথভাবে বিষয়ক এই আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বরিশাল জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সোহেল মারুফের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ জাহাঙ্গীর হোসেন। এতে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরিশাল জেলার পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এসবি) ইকবাল হোসেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় প্রথম সারিতে বাংলাদেশ। জলবায়ু পরিবর্তন জনিত দুর্যোগে প্রাণহানি কমলেও, ক্ষয়ক্ষতি বাড়ছে। এ সংকট মোকাবিলায় জীবাশ্ম জ্বালানির বদলে নবায়নযোগ্য শক্তির প্রসারের কোন বিকল্প নেই। বায়ু দূষণ সহ সকল ধরনের দখল-দূষণ বন্ধে সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান চালাতে হবে।
আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে বক্তারা বলেন, সবার সহযোগিতায় বরিশাল এলাকাকে জলবায়ু ঝুঁকি মুক্ত করতে হবে। তরুণরাও এই কাজের অংশ হয়ে একসাথে ইতিবাচক কাজের মধ্যে সম্পৃক্ত থাকার পাশাপাশি এ শহরকে একটি জলবায়ু নিরাপদ শহর হিসেবে বিশ্বদরবারে পরিচয় করিয়ে দিতে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সমন্বিত কাজের পাশাপাশি নাগরিকদের জনমনে সচেতনতা সৃষ্টিতে তরুণরাই এগিয়ে আসবে। সবুজায়নের কোনো বিকল্প নেই। এ জন্য সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। দুষণকারী প্রতিষ্ঠানে কার্বন ট্যাক্স বসানোর পাশাপাশি ইটভাটা রুখে দিতে হবে, সবুজ ইট ও হলোগ্রামের ব্যবহার বাড়ানো, গণপরিবহন ও সাইকেলিংয়ের প্রসার ঘটাতে হবে, পৃথক লেন করা, বায়ু দুষণ ও জীবাশ্ব জ্বালানির বিরুদ্ধে জনমত ও আন্দোলন গড়ে তোলার সুপারিশ জানানো হয়। আলোচনা সভায় মূল তথ্যপত্র উপস্থাপন করেন ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের নির্বাহী সমন্বয়কারী সোহানুর রহমান। যুব নেতৃত্বের প্রচারাভিযান ও ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন আর্থ সোসাইটির প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোসলেহ উদ্দিন সূচক ও প্রোগ্রাম অফিসার মোহাম্মাদ মনোয়ারুল ইসলাম (মনিব)।
মূল তথ্যপত্রে ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের নির্বাহী সমন্বয়কারী সোহানুর রহমান বলেন, বায়ুদূষণকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সরকারকেও এ সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসতে হবে। এক্ষেত্রে বায়ুদূষণ প্রতিরোধে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন জরুরি। বিশ্ব বর্তমানে প্রাক শিল্প বিপ্লবের সময়ের ১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে। প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুযায়ী রাখতে হবে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। এই মুহূর্তে আমরা বৈশি^ক উষ্ণতায় ২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের দিকে যাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস করে বায়ু দূষণ কমাতে আমাদের অবশ্যই নবায়নযোগ্য শক্তির উপর নির্ভরতা বাড়াতে হবে এবং অনবায়নযোগ্য শক্তির উপর নির্ভরতা কমাতে হবে। পাশাপাশি নির্মল বায়ু আইন অবিলম্বে পাশ করতে হবে, প্রয়োগ করতে হবে। সৌরশক্তির উপর নির্ভরতা বাড়াতে নবায়নযোগ্য শক্তিকে ব্যবসার একটি অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে ব্যবসায়ীদের আহবান জানান তিনি। আরো উপস্থিত ছিলেন বরিশাল জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক রাশেদ খান, বিসিকের উপ-মহাব্যবস্থাপক জালিস মাহমুদ, বীর প্রতীক মহিউদ্দিন মানিক, বরিশাল মেট্রোপলিটন প্রেসক্লাব এর সভাপতি কাজী আবুল কালাম আজাদ, বরিশাল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি স্বপন খন্দকার, বরিশালের বেলা প্রতিনিধি লিঙ্কন হোসেন, শহীদ আব্দুর রব সেরানিয়াবাত প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেন, প্রতীকি যুব সংসদের চেয়ারপার্সন আমিনুল ইসলাম’র (ফিরোজ মোস্তফা) প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা প্রশাসনের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান ছাত্রলীগের এক কর্মী উপস্থাপনা করায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে নানামহলে সমালোচনার ঝড় উঠলেও উল্টো বিষয়টি নিয়ে থোরাই কেয়ার করছেন নাসিরনগরের এসিল্যান্ড কাজী রবিউস সারোয়ার। গতকাল ১৪ এপ্রিল সোমবার গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলেও ‘কিছু যায় আসে না’ বললেন ঐ এসিল্যান্ড। তবে জেলা প্রশাসক বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন। যদিও তাৎক্ষণিক সমালোচনার মুখে অনুষ্ঠানটি সংক্ষিপ্ত করতে বাধ্য হয় উপজেলা প্রশাসন।
অভিযোগ উঠেছে, পহেলা বৈশাখ অনুষ্ঠান উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসাইন শাকিলের ব্যক্তিগত পছন্দেই ঐ ছাত্রলীগ কর্মীকে উপস্থাপক করা হয়েছে। ছাত্রলীগের ওই কর্মীর নাম দিদার হোসেন। ১৪ এপ্রিল সোমবার সকালে নাসিরনগর উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার পর থেকে দিদারের ছাত্রলীগের বিভিন্ন মিছিল – মিটিং এর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। সবার একটাই প্রশ্ন উপজেলা প্রশাসনের অনুষ্ঠানের উপস্থাপনার দায়িত্বে কীভাবে একজন ছাত্রলীগ কর্মী থাকে?
এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীনা নাছরিন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী রবিউস সারোয়ার, উপজেলা বিএনপির সভাপতি এম. এ. হান্নান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসাইন শাকিল, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফাহিমুল আরেফিন, শিক্ষা কর্মকর্তা ইসহাক মিয়াসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বিভিন্ন পর্যায়ের রাজনৈতিক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
স্থানীয় সংস্কৃতি কর্মী নিহারেন্দু চক্রবর্তী তার ফেসবুকে লিখেন (হুবহু তুলে দেওয়া হল), সকালে উঠেই একজনের ফেসবুক স্ট্যাটাস চোখে পড়লো। ওই লোক লিখেছে “ফ্যাসিষ্টমুক্ত প্রথম বৈশাখ” একটা লাইক দিয়েছিলাম। এর কিছুক্ষণ পর উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে দেখলাম ঐ লোকের লেখায় ভুল ছিল। দেখলাম প্রশাসন আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানের মূল উপস্থাপক দিদার নামে একটি ছেলে। সে শুধু ফ্যাসিষ্টের দোসর বললে ভুল হবে। সে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের একজন কর্মী।
বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, উপজেলা বিএনপির সভাপতি এম এ হান্নানসহ সকল প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গগণ।
এছাড়াও একই পোস্টে তিনি দুইটি ভিডিও আপলোড করে লিখেন, ১নং ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে নাসিরনগর উপজেলা ছাত্রলীগ (নিষিদ্ধ) এর সিনি. সহ সভাপতি আরমান নূর এর সাথে ছাত্রলীগের মিছিল ও শোডাউনে দিদার। ২নং ভিডিও তে দেখা যাচ্ছে দ্বিতীয় স্বাধীনতা পরবর্তী প্রথম বৈশাখে উপজেলা প্রশাসনের হতে প্রাপ্ত উপহার বিশ্বরঙ ফ্যাশন হাউসের রঙিন পাঞ্জাবি পড়ে প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত বর্ষবরণ অনুষ্ঠান বীরদর্পে উপস্থাপনা করছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসাইন শাকিল বলেন, আমরা তার রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কে জানতাম না। ছাত্রলীগের মিছিলে তার ভিডিও দেখার পর তাকে আর উপস্থাপনা করতে দেওয়া হয়নি। পরে আমরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি সংক্ষিপ্ত করা হয়।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে সাংবাদিকদের উপর মেজাজ হারিয়ে ফেলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী রবিউস সারোয়ার। তিনি বলেন, সংবাদ হলে কি হবে..? কিছুই হবেনা।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, প্রশাসনের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগ কর্মীর উপস্থাপনার বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। তার সুদক্ষ নেতৃত্বে মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর হার হ্রাস পেয়েছে। শিশুদের টিকাদান কর্মসূচি সফল হয়েছে। সারাদেশের জনগণকে সুষ্ঠুভাবে কোভিড-১৯ ভ্যাক্সিন প্রদান করা হয়েছে।
রংপুরের পীরগঞ্জে সরকারি শাহ আব্দুর রউফ কলেজ প্রাঙ্গণে দুই দিনব্যাপী স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম. এ. ওয়াজেদ মিয়ার ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণে তিনি এ ক্যাম্প উদ্বোধন করেন। পীরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ে নারী-পুরুষ ও শিশুরা ক্যাম্পে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করছে।
স্পিকার বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক জনগণকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সরকারিভাবে ৩২ ধরনের ওষুধ জনগণকে সরবরাহ করা হচ্ছে। ক্যাম্পে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য ঢাকা থেকে প্রায় ৩০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এসেছেন, যা প্রশংসনীয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেনের নেতৃত্বে ৩০ জনের বিশিষ্ট চিকিৎসক দল এই স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্পে চিকিৎসাসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ প্রদানের জন্য উপস্থিত হওয়ায় তিনি সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। এ সময় বীকন ফার্মাসিউটিক্যালসের সত্ত্বাধিকারী এবাদুল করিম এমপি ৬৪ কার্টন ওষুধ সরবরাহ করায় তাকেও আন্তরিক ধন্যবাদ জানান স্পিকার। এরপর তিনি ক্যাম্পের বিভিন্ন বুথ পরিদর্শন করেন এবং সেবাপ্রার্থীদের স্বাস্থ্যের খোঁজ নেন।
স্পিকার বলেন, মানবতার সেবায় বিনামূল্যে চিকিৎসকদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান এক অনন্য উদাহরণ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রংপুরের জেলা প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীনের সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোসার্জন ও ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী চৌধুরী, রংপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. বিমল চন্দ্র রায় এবং সরকারি শাহ আব্দুর রউফ কলেজের প্রিন্সিপাল মো. রাশেদুন্নবী উপস্থিত ছিলেন।
অনলাইন ডেস্ক :
সরকার পতনের একদফা আন্দোলন এবং শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর বিভিন্ন থানায় হামলার ঘটনা ঘটে। এতে থানাসহ বিভিন্ন ইউনিট এবং ডিউটিস্থল থেকে অস্ত্র লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এসব অস্ত্র উদ্ধারে আগামী ৪ সেপ্টেম্বর থেকে যৌথ অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আজ ১ সেপ্টেম্বর রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ফয়সল আহমেদ এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আগামী ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখ থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদ ইতোমধ্যে কিছু উদ্ধার করা হয়েছে। লুণ্ঠিত অবশিষ্ট অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনের পর লুট হওয়া অস্ত্র ফেরত দিতে আহ্বান জানিয়ে আসছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। এসব লুট হওয়া অস্ত্র এবং গোলাবারুদ ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ফেরত না দিলে আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানায় পুলিশ সদর দপ্তর।
এছাড়া এর আগে বেসামরিক জনগণকে গত ১৫ বছরে দেওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এসব অস্ত্র জমা দেওয়ার জন্য সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। সূত্র : যুগান্তর