চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়া উপজেলার মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শরীরচর্চা শিক্ষক জেলা প্রশাসকের সামনে জাতীয় সংগীত শুদ্ধভাবে গাইতে না পারার ঘটনায় দেশজুড়ে সমালোচনার রেশ কাটতে না কাটতে আবারো নতুন করে আলোচনায় ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এবার পরীক্ষার হলে বসে এক শিক্ষার্থী টিকটক করে ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাড়ে; যা ইতোমধ্যে ভাইরালও হয়েছে।
বৃহস্পতিবারের ঘটনায় ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্টি হয়।
যদিও ঘটনার পর বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত এসএসসি পরীক্ষার্থী সাব্বির হোসেন ও তার অভিভাবককে ডেকে সতর্ক করেছেন মাত্র।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শশাংক রায় চৌধুরী সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পরীক্ষার হলে মোবাইল এলাও না। এ ঘটনায় ওই ছাত্রের অভিভাবককে ডাকা হয়েছে। পাশাপাশি আজ ৯ এপ্রিল রবিবার গণিত পরীক্ষার দিন হল থেকে অন্তত ১৫টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সঙ্গে বসে তাদের ব্যাপারে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।
জানা গেছে, আখাউড়া উপজেলার মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে আগত এসএসসি পরীক্ষার্থীদের চূড়ান্ত মডেল টেস্ট পরীক্ষা চলছে। গত বৃহস্পতিবার ছিল ইংরেজি দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা। ওই দিন শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন পরীক্ষা চলাকালীন হলে বসে টিকটক ভিডিও তৈরি করে তার ফেসবুকে আইডিতে আপলোড করে। পরীক্ষার হলে টিকটক ভিডিওর পনেরো সেকেন্ডের একটি ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়। এ নিয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্টি হয়।
পরীক্ষার হলে ধারণকৃত টিকটক ভিডিওটিতে দেখা যায়, যেখানে পরীক্ষার উত্তরপত্রসহ কেন্দ্রের ভেতরে বিভিন্ন চিত্র ফুটে উঠেছে একটি ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের মাধ্যমে।
আখাউড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেন বলেন, এসএসসি পরীক্ষা সামনে রেখে কোনো বিদ্যালয়ে মডেল টেস্ট পরীক্ষার নামে পরীক্ষা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আবার পরীক্ষার হলে বসে মোবাইল ফোনে টিকটক ভিডিও ধারণের প্রশ্নই উঠে না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম সম্প্রতি উপজেলার মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে তিনি বিভিন্ন খোঁজখবর নেন। এ সময় শুদ্ধভাবে জাতীয় সংগীত গাইতে না পারায় জেলা প্রশাসক রাগান্বিত হয়ে ওই বিদ্যালয়ের শরীরচর্চা শিক্ষক মো. সোহরাব হোসেনের বেতন স্থগিত এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণের জন্য আট কর্মকর্তাকে ভোট গ্রহণের দায়িত্ব না দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে।
গতকাল ১৪ মে মঙ্গলবার সকালে নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাবেয়া আক্তারের কাছে লিখিতভাবে এ আবেদন জানান চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. মনির হোসেন। অভিযোগে পৌর মেয়র তাকজিল খলিফার নিয়ন্ত্রিত চারটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ও তাঁর ঘনিষ্ঠ আট কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ছয়জনই সরকারি কর্মকর্তা।
দ্বিতীয় ধাপে ২১ মে আখাউড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দুজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক ও মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের তিনবারের চেয়ারম্যান মনির হোসেন (ঘোড়া প্রতীক) এবং উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ও উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মো. মুরাদ হোসেন ভূঁইয়া (আনারস প্রতীক)। ইতিমধ্যে মুরাদকে সমর্থন দিয়েছেন আখাউড়া পৌরসভার মেয়র ও আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাকজিল খলিফা। তাঁর অনুসারীরা মুরাদকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বলে এলাকায় প্রচারণাও চালাচ্ছেন।
লিখিত আবেদনে মো. মনির হোসেন অভিযোগ করেন, আখাউড়া পৌরসভার মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. তাকজিল খলিফা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. মুরাদ হোসেন ভূঁইয়াকে সমর্থন দিয়ে সভা-সমাবেশ করছেন। আচরণবিধি ভঙ্গ করে পৌরসভা কার্যালয়েও সভা করছেন। সভা-সমাবেশে প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী মনির হোসেন সম্পর্কে মানহানিকর বক্তব্য দিচ্ছেন। মেয়র তাকজিল খলিফার নিয়ন্ত্রণাধীন চার প্রতিষ্ঠান হলো আখাউড়া পৌরসভা, জাহানারা স্কুল অ্যান্ড স্কুল, নাছরীন নবী পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও সিরাজুল হক উচ্চবিদ্যালয়। তিনি উপজেলার ওই তিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি। মেয়রের নিয়ন্ত্রিত এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মুরাদ হোসেন ভূঁইয়ার পক্ষে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ভোটের দিন নিজেরা যেন সিল মেরে ব্যালট বাক্সে ভরেন, সে বিষয়ে চাপ প্রয়োগ করছেন বলে তথ্য রয়েছে। সেসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অনেকে গোপনে এসে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মনির হোসেনের কাছে তথ্য দিচ্ছেন। তাঁরা বিষয়টি নিয়ে বিব্রত বোধ করছেন বলেও জানিয়েছেন।
পৌর মেয়রের নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ও তাঁর ঘনিষ্ঠজনেরা ভোট গ্রহণের দায়িত্ব পেলে নির্বাচন প্রভাবিত করতে পারেন বলে মনির হোসেন আশঙ্কা করছেন। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে তাকজিল খলিফার প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ও তাঁর ঘনিষ্ঠজনকে নির্বাচনের দায়িত্বে না দেওয়ার জন্য সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছেন তিনি।
লিখিত আবেদনে যে আট কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তাঁরা হলেন আখাউড়া পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী তানভীর হাসান, উপসহকারী প্রকৌশলী ফয়ছেল আহাম্মদ খান, নাছরীন নবী পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক দেবব্রত বণিক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক কাজী মো. ইকবাল, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. মোসলেহ উদ্দিন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তাপস কুমার চক্রবর্তী, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল হাসেন ও উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা ইউসুফ নুরুল্লাহ। তাঁরা অতীতে বিভিন্ন নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তবে নাম উল্লেখ করা সরকারি ছয় কর্মকর্তার মধ্যে নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুজন বলেন, বিষয়টি নিয়ে তাঁরা বিব্রত। তাঁরাও চান না, নির্বাচনের দিন তাঁদের কোনো দায়িত্বে রাখা হোক। আর রাখা হলেও প্রয়োজনে কন্ট্রোল রুমে কিংবা তাঁদের বাদ দেওয়া হোক।
চেয়ারম্যান প্রার্থী মনির হোসেন বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মুরাদ হোসেনের পক্ষে প্রকাশ্যে মাঠে নেমেছে আওয়ামী লীগ। প্রতিনিয়ত সরকারিসহ দলীয় প্রতিষ্ঠানে সভা-সমাবেশ হচ্ছে। ভূরিভোজসহ আচরণবিধির তোয়াক্কা করছেন না মেয়রের অনুসারীরা।
নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আখাউড়ার ইউএনওর কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী মনির হোসেন। সেখানে আমাদের কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তার নাম রয়েছে। আমরা অভিযোগ পেয়েছি। বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
চলারপথে রিপোর্ট :
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ছয় দিন বন্ধ থাকার পর আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আবারও পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
আজ ৩ জুলাই সোমবার সকাল থেকে বন্দরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়। তবে ছুটির সময় বন্দর দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিল বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
আখাউড়া স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, ঈদুল আজহা উপলক্ষে আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশন ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে গত ২৭ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত ছয় দিনের ছুটি ঘোষণা করে। ছুটি শেষে আজ ৩ জুলাই সোমবার থেকে যথারীতি পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশের অন্যতম বৃহৎ ও রপ্তানিমুখী আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে দেড় লাখ মার্কিন ডলার মূল্যের বিভিন্ন পণ্য উত্তর-পূর্ব ভারতে রপ্তানি হয়। রপ্তানি পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে হিমায়িত মাছ, প্লাস্টিক, রড, সিমেন্ট, ভোজ্য তেল, তুলা ও বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী ইত্যাদি।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে এক হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ নাসিমা বেগম নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আজ ১৩ অক্টোবর রোববার দুপুরে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত নাসিমা বেগম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের মিনারকোট গ্রামের আনিস খাঁর স্ত্রী।
পুলিশ জানায়, জেলা পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে গোপন সংবাদের মাধ্যমে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ভোররাতে মিনারকোট এলাকায় তার বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। পুলিশ আসার খবর পেয়ে গ্রেফতার এড়াতে নাসিমা কৌশলে বসতঘরের শয়নকক্ষে ইয়াবাগুলো লুকিয়ে রাখেন। একপর্যায়ে পুলিশ তার শয়নকক্ষের নিচ থেকে এক হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধারসহ তাকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে।
আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবুল হাসিম বলেন, মাদকবিরোধী অভিযানে এক হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ নাসিমাকে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে নিয়মিত মামলা দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে সোপর্দ করা হয়। আমাদের মাদকবিরোধী অভিযান নিয়মিত চলছে। যেকোনো মূল্যে মাদক নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় সম্পত্তি নিয়ে বিরোধে জের ধরে বড় ভাই আব্দুর রহমান ভূঁইয়াকে (৫২) পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে।
হত্যাকারী তার আপন ছোট ভাই খলিলুর রহমান ভূঁইয়া ও তার ২ ছেলে। সোমবার রাতে উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের নুনাসার গ্রামে এ নৃশংস ঘটনা ঘটে।
নিহত আব্দুর রহমান ওই গ্রামের আব্দুল কাদের ভূঁইয়ার ছেলে। এ ঘটনায় খলিলুর রহমানের দুই মেয়ে ইমা ও হাবিবাকে আটক করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, বাড়ির সম্পত্তি নিয়ে ছোট ভাই খলিলুর রহমান সঙ্গে বিরোধ চলছিল বড় ভাই আব্দুর রহমানের। জায়গা সম্পত্তি নিয়ে উভপক্ষের একাধিক মামলাও চলছে।
গতকাল সোমবার পুলিশ ঘটনাস্থলে তদন্ত করতে যায়। মামলায় ছোট ভাই খলিলুর রহমানের দুই ছেলেকে আসামি করেন আব্দুর রহমান।
এনিয়ে সোমবার দিনের বেলায় দুই ভাইয়ের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। সন্ধ্যায় ইফতারের পর আব্দুর রহমান মসজিদ থেকে নামাজ শেষে বাড়িতে আসলে খলিলুর রহমান ও তার ছেলেরা অতর্কিত হামলা চালায়।
একপর্যায়ে আব্দুর রহমানকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন তারা। এসময় স্বজনরা আব্দুর রহমানকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আখাউড়া থানার ওসি আসাদুল ইসলাম জানান, পারিবারিক সম্পত্তির বিরোধে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যরা পালিয়েছে। তাদেরকে আটকের চেষ্টা চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ভারতে মেলা দেখতে গিয়ে আটকে পড়া ১০ জনসহ ১৩ বাংলাদেশি নাগরিক দেশে ফিরেছেন।
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্ত চেকপোস্ট দিয়ে আজ ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে তারা দেশে ফিরেছেন।
ভারতের আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের মাধ্যমে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
দেশে ফেরত আসা বাংলাদেশিরা হলেন-চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার কদলপুর গ্রমের দুলাল নাথের ছেলে রুবেল কুমার নাথ, উত্তর গুজরা গ্রামের মিলন বিশ্বাসের ছেলে রাজিব বিশ্বাস, সুলতানপুর গ্রামের মিলন দের ছেলে শঙ্কর দে, একই গ্রামের বিষু দাসের ছেলে জয় দাস, কাজল দাসের ছেলে সঞ্জয় দাস, অনিল দাসের ছেলে উল্লাস দাস, সুকুমার চৌধুরী দাসের ছেলে দীপক দাস গুপ্তা, মন্টু রাম ঘোষের ছেলে রুমন ঘোষ, যোগেস ঘোষের ছেলে রুবেল ঘোষ, রনধীর দাসের ছেলে প্রান্ত দাস, একই জেলার হাটহাজারী উপজেলার পশ্চিম দেওয়ান নগরের মো. হোসেনের মেয়ে নাহিদা শেখ এবং তার দুই শিশু সন্তান ফয়েজ ইসলাম শেখ ও ফাইজা শেখ।
শূন্যরেখায় দেশে ফেরত আসা দীপক দাস গুপ্তা বলেন, আমরা ১০ জন খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে মেলায় ঘুরতে গিয়েছিলাম। মেলা থেকে আগরতলার একটি মন্দির দেখে ফেরার পথে আমাদের বহনকারী ভারতীয় গাড়িটির চালক আমাদের নির্দিষ্ট গন্তব্যের পরিবর্তে স্থানীয় একটি থানায় নিয়ে যায়। এরপর পুলিশ আমাদের আটক করে আদালতে সোপর্দ করলে আদালত আমাদের অনুপ্রবেশের দায়ে এক মাস করে সাজা দেন। কারাভোগ শেষে আমরা একটি সেইফ হোমে ছিলাম। সেখান থেকে চার মাস পর বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে আমরা আজ দেশে ফিরলাম।
ফিরে আসা নাহিদা শেখ বলেন, আমি, আমার স্বামী ও এক সন্তানসহ গত তিন বছর আগে স্বামীর চিকিৎসার জন্য অবৈধ পথে ভারতের মুম্বাই শহরে গিয়েছিলাম। চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার পথে ভারতীয় পুলিশের হাতে আটক হয়ে এক বছর কারাভোগ করি। এরপর একটি হোমে ছিলাম। তখন আমার আরেকটি সন্তানের জন্ম হয়। গত ছয় মাস আগে ওখানে আমার স্বামীর মৃত্যু হলে সেখানেই দাফন করা হয়। দীর্ঘ তিন বছর পর আমি আমার দুই সন্তান নিয়ে দেশে ফিরেছি।
আগরতলার বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের কর্মকর্তা ওমর শরীফ বলেন, ১৩ জন বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত পাঠিয়েছি। তাদের মধ্যে এক নারী ও দুটি শিশু ছাড়া বাকি ১০ জন এসেছিলেন মেলা দেখতে। তারা দেশে ফেরার পথে ভারতীয় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হয়ে আদালতের মাধ্যমে সাজাভোগ করেন। বিষয়টি জানতে পেরে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। পরে কাগজপত্র যাচাই-বাচাই শেষে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হলো।
এসময় উপস্থিত ছিলেন আখাউড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম রাহাতুল ইসলাম, বিএসএফের ১২০ মোম্পানি কমান্ডার বিবেক ধীমান, আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট ইনচার্জ মো. খাইরুল আলম, ৬০ বিজিবির আইসিপি ক্যাম্প কমান্ডার শাহ আলমসহ অনেকে।