চলারপথে ডেস্ক :
বর্তমান সময়ের আলোচিত ব্যক্তিত্ব গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওইয়ান্না ইলাইহি রাজিউন)। জানা যায় ১১ এপ্রিল মঙ্গলবার রাত ১১টা ১৫ মিনিটে রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন।
এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন তার স্ত্রীসহ স্বজন ও দীর্ঘদিনের সহকর্মী ও শিক্ষার্থীরা। পরে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু একটি গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি স্যারের জীবনের অবসান ঘটেছে।
ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১১টা ১৫ মিনিটে ইন্তেকাল করেছেন। আমরা জানাজা-দাফনের বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাবো।’
জানা যায়, মহান মুক্তিযুদ্ধের একজন বীর সেনানী ও সংগঠন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী চট্টগ্রামের রাউজানে এক মুসলিম পরিবারে তার জন্ম । ১৯৪১ সালের ২৭ ডিসেম্বর জন্ম নেয়া মানুষটি ব্যক্তিগত যশখ্যাতি ও সমৃদ্ধির জীবনকে পেছনে ফেলে মুক্তিযুদ্ধের সময় মাটির টানে দেশে ফিরে এসে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত লড়াই করে গেছেন। বাংলাদেশে স্বাস্থ্যখাতের অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম, দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি নিরব লড়াই চালিয়ে যান।
অন্যদিকে দেশে রাজনীতির সুস্থধারা ফিরিয়ে আনতেও নিজের অবস্থান থেকে আওয়াজ তুলেছেন বার বার। আর এসব কারণে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে তার বেশ জনপ্রিয়তা লক্ষ্য করা যায়। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তার অবদানের কথা অজানা ছিল তাদের কাছেও তিনি গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত করতে সক্ষম হয়েছেন।
বাংলাদেশের জন্য অন্তপ্রাণ এই মানুষটির বাবা ছিলেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা। রাজধানী ঢাকার বকশীবাজারের নবকুমার স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেছেন তিনি।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী ১৯৬৪ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস এবং ১৯৬৭ সালে বিলেতের রয়্যাল কলেজ অব সার্জনস থেকে ভাস্কুলার সার্জারিতে এফআরসিএস প্রাইমারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
জানা যায়, তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর সেনানী ও সংগঠক জাফরুল্লাহ চৌধুরীর লন্ডনে রয়্যাল কলেজ অব সার্জনসে এফআরসিএস পড়ার সময় শুরু হয় স্বাধীনতা যুদ্ধ।
৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যার প্রতিবাদে জনসম্মুখে পাকিস্তানের পাসপোর্ট ছিঁড়ে ফেলেন। তারপর বৃটিশ স্বরাষ্ট্র দপ্তর থেকে ‘রাষ্ট্রবিহীন নাগরিকের’ প্রত্যয়নপত্র নিয়ে সংগ্রহ করেন ভারতীয় ভিসা।
দেশের টানে বিলেতের সুখ-সুবিধা ছেড়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে লন্ডন থেকে ভারতে এসে আগরতলার মেলাঘরে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে গেরিলা প্রশিক্ষণ নেন।
ভারত থেকে দেশে এসে যোগ দেন সম্মুখ সমরে। গেরিলা যোদ্ধা থেকে হয়ে উঠেন রণাঙ্গনের চিকিৎসক। যুদ্ধাহতদের জন্য খোলেন ফিল্ড হাসপাতাল।
মহান মুক্তিযুদ্ধ শেষে দেশ গড়তে নিজেকে নিয়োজিত করেন বৃটেনে প্রথম বাংলাদেশি সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিডিএমএ)’র প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের বিষয়ে একটি গণমাধ্যমকে তিনি বলেছিলেন, আমার পাশে আমার মা থাকবে না, সে দেশে থেকে লাভ আছে? আমার মা বাংলাদেশে ছিল, আমি বিলেতে ছিলাম। আমার মায়ের নির্দেশ ছিল দেশ রক্ষা করো। সে নির্দেশ মেনে আমরা তিন ভাই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করি।
যুদ্ধে আহত মুক্তিকামী মানুষকে সেবা দিতে বন্ধু ডা. এমএ মবিনের সহায়তায় ডা. জাফরুল্লাহর গড়ে তোলা ৪৮০ শয্যাবিশিষ্ট ‘বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা পেতেন যুদ্ধে আহতরা।
শুধু তাই নয়, তিনি স্বল্প সময়ের মধ্যে অনেক নারীকে প্রাথমিক স্বাস্থ্য জ্ঞান দান করেন। যা দিয়ে তারা যুদ্ধে আহত রোগীদের সেবা করতেন। ত্রিপুরার ওই ফিল্ড হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করে অগণিত মুক্তিযোদ্ধা ফিরেছিলেন যুদ্ধের ময়দানে। তার এই অভূতপূর্ব সেবা পদ্ধতি পরে বিশ্ববিখ্যাত জার্নাল পেপার ‘ল্যানসেট’-এ প্রকাশিত হয়।
১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল আতাউল গনি ওসমানীকে বহনকারী যে হেলিকপ্টারটি হামলার শিকার হয়েছিল তাতে অন্যদের মধ্যে ছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
চলারপথে রিপোর্ট :
কুতুবদিয়ায় পুকুরের পানিতে ডুবে আব্দুল মোকাররম (৭), জান্নাতুল বকেয়া (৪) এবং তাবাসসুম (১৫মাস) নামের তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
আজ ১৮ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়নের বাইগ্যার পাড়া আবছারের ছেলে আব্দুল মোকাররম (৭) এবং বিকেল ৩টার দিকে দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়নের জুলেকা বিবি পাড়ার মো. ইকবালের মেয়ে জান্নাতু বকেয়া (৪) ও সন্ধ্যা ৬টায় বড়ঘোপ ইউনিয়নের আজম কলোনীর ছোটনের মেয়ে তাবাসসুম (১৫মাস) মৃত্যুবরণ করে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, আব্দুল মোকাররম ও জান্নাতুল বকেয়া পৃথক পৃথক স্থানে বাড়ির লোকজনের অগোচরে বাড়ির সামনে পুকুরে পানিতে ডুবে যায়। পরে, স্থানীয়রা উদ্ধার করে কুতুবদিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে মৃত ঘোষণা করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় বিজ্ঞান শিক্ষার উন্নয়ন বিষয়ক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ১৮ জুলাই মঙ্গলবার উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে এনজিও সংস্থা ওয়াফথর আয়োজনে ও বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান শিক্ষার উন্নয়নে ও শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানে ভীতি দূর করে বিজ্ঞান মনস্ক করে গড়ে তোলার লক্ষে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আনোয়ারের সভাপতিত্বে ও ওয়াফথর সমন্বয়কারী মো. আতিকুর রহমানের উপস্থাপনায় সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহমুদুর রহমান খোন্দকার।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কুলাউড়া প্রেসক্লাব সভাপতি এম শাকিল রশীদ চৌধুরী ও তথ্য সেবা কর্মকর্তা তাছফিয়া রহমান। সেমিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ওয়াফের নির্বাহী পরিচালক মো. আব্দুল মালিক। সেমিনারে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ও গণমাধ্যম কর্মীরা অংশ নেন।
সেমিনারে একটি স্কুলকে বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে বিজ্ঞান শিক্ষার বিশেষ পরিবর্তন আগামী ৬ মাসের মধ্যে প্রদর্শনের, বিজ্ঞান ক্লাসগুলো নিয়মিত করতে রুটিন তৈরি করে ক্লাস করা, বিজ্ঞান ল্যাব এবং বিজ্ঞান যন্ত্রপাতির নিয়মিত ব্যবহার নিশ্চিত করা, ব্যবহারিক ক্লাস পরিচালনায় দক্ষতার জন্য বিজ্ঞান শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ এবং বিজ্ঞান মেলাসহ অন্যান্য বিজ্ঞান কার্যক্রমে সকল প্রতিষ্ঠানকে নিয়মিত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার উপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি বলেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয়ে গত দু’দিন আগে জাতীয় বাজেট পেশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে যে, স্মার্ট বাংলাদেশের অভিযাত্রায় দেড় দশকের অর্জনকে ভিত্তি করে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিযাত্রাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু স্মার্ট বাংলাদেশ কিভাবে হবে যদি তারুণ্যকে স্মার্ট হিসেবে গড়ে তুলতে না পারি ।
তিনি আজ ৩ জুন শনিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা যুবমৈত্রীর ৬ষ্ঠ সম্মেলন উপলক্ষে উদ্বোধনী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
স্থানীয় সুর সম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনের সরোদ মঞ্চে জেলা যুব মৈত্রীর আহবায়ক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ নাসিরের সভাপতিত্বে ও জেলা যুবমৈত্রীর সদস্য সচিব ফরহাদুল ইসলাম পারভেজের পরিচালনায় আয়োজিত সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাশেদ খান মেনন এমপি আরো বলেন, অতীতে আমরা উন্নত অর্থনীতির কথা, নানা স্বপ্নের কথা বলেছি। কিন্তু আজ দুঃস্বপ্ন হচেছ দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতি, মূল্যস্ফীতি, নানা অপসংস্কৃতি, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার নানা আক্রমণের দাপটে। আজ বেকারত্বে যুব সমাজ হতাশা ও নিরাশায় নিমজ্জিত।
তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরের ঘোষনা দিয়েছি। কিন্তু বেকারত্বের ফলে আমাদের যুব সমাজ মাদকসহ ডিজিটাল ব্যবস্থায় আসক্তিতে ভুগছে।
তিনি বলেন, বাজেটে একশ কোটি টাকা তারুণ্যের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে গবেষণা ও উদ্ভাবনীর জন্য। বলা হয়েছে ২লাখ বিরাশি হাজার কর্মসংস্থানের কথা। কিন্তু বাজেটে এ ব্যাপারে কোন সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা নেই । যুব সমাজকে স্বউদ্যোগী হতে বলা হয়েছে । কিন্তু স্বউদ্যোগের পাশাপাশি সরকারি সহযোগিতাও প্রয়োজন। কারণ আমাদের জনসংখ্যার শতকরা ৩৫ ভাগই হচ্ছে যুব সমাজ। তারাই দেশকে এগিয়ে নিযে যাবে। তাদের জন্য সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা না গেলে ২০৪১ সালে আমরা উন্নত বাংলাদেশ গড়তে পারবো না । তাই মাদকমুক্ত, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গীবাদমুক্ত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে স্মার্ট যুবশক্তি গড়ে তোলার জন্য তিনি আহবান জানান।
সম্মেলন উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ যুবমৈত্রীর সভাপতি তৌহিদুর রহমান। সম্মেলনে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য মাহমুদুল হাসান মানিক, জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি অ্যাডভোকেট কাজী মাসুদ আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ খান, বাংলাদেশ যুবমৈত্রীর সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমেদ রুবেল, বিজয়নগর উপজেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক দীপক চৌধুরী বাপ্পী প্রমুখ।
সম্মেলনে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জেলা যুবজোটের সভাপতি জাফর আহমেদ আকসির, বাচিক শিল্পী মনির হোসনে, জেলা ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি ফাহিম মুনতাসির। সম্মেলনে স্থানীয় বক্তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকরি মেডিকেল কলেজ, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং শিল্পকারখানা প্রতিষ্ঠার দাবি জানান।
সম্মেলনের সাংগঠনিক অধিবেশনে কাজী তানভীর মাহমুদ শিপনকে সভাপতি, ফরহাদুল ইসলাম পারভেজকে সাধারণ সম্পাদক এবং অ্যাডভোকেট বাছির মিয়াকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ৪৯ সদস্য জেলা যুব মৈত্রীরকমিটি ঘোষণা করা হয় ।
চলারপথে রিপোর্ট :
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবাইকে দেশ ও জনগণের কল্যাণে একত্রে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
আজ ৪ মে বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনের ‘ক্রেডেনশিয়াল হলে ‘শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা ২০২৩’ উপলক্ষে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এ আহ্বান জানান।
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘মানুষকে আলোর পথ দেখাবেন। দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করবেন।’
তিনি বলেন, পৃথিবীর সব ধর্মই মানুষের কল্যাণের কথা বলে। প্রতিটি ধর্মেই অনেক ভালো বিষয় আছে। রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন সব সময় যা উৎকৃষ্ট তা গ্রহণ এবং যা নিকৃষ্ট তা বর্জন করারও উপদেশ দেন। ‘মানুষের কল্যাণের জন্যই ধর্ম, অকল্যাণের জন্য নয়’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মানুষের জন্যই ধর্ম, ধর্মের জন্য মানুষ নয়।’
শুধু নিজে বা পরিবারকে নিয়ে ভালো থাকার চিন্তা না করে সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চিন্তা করারও তাগিদ দেন রাষ্ট্রপতি।
মহামতি বুদ্ধকে মানবতা ও মুক্তির পথিক হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় সম্প্রদায়ের অংশ। এই অঞ্চল তথা বিশ্বে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকদের দায়িত্ব ও কর্তব্য অনেক বেশি বলেও মনে করেন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন।
তিনি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতাদেরকে মহামতি বুদ্ধের শিক্ষাকে নিজের জীবনে প্রতিফলিত করতে এবং অন্যদেরকেও উৎসাহিত করার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশসহ বিশ্বের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের সঙ্গে মিশে আছে প্রাচীন বৌদ্ধবিহারসহ হাজার বছরের বৌদ্ধ ঐতিহ্য।’
মো. সাহাবুদ্দিন একটি সুখী-সমৃদ্ধ ও শান্তিময় বাংলাদেশ গড়তে গৌতম বুদ্ধের সুমহান শিক্ষা ও আদর্শকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি সবাইকে সৎ ও সুন্দর জীবন-যাপনে উদ্বুদ্ধ হওয়া, ভালো কাজে অন্যকে অনুপ্রাণিত করা এবং নিজেদেরকে দেশের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিও গুরুত্বারোপ করেন।
বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সাথে রাষ্ট্রপতি এবং তার সহধর্মিণী ড. রেবেকা সুলতানা আজ বিকাল চারটা থেকে করে প্রায় ঘণ্টাখানেক শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সাউন্ড সিস্টেমের মাধ্যমে বৌদ্ধ ধর্মীয় গান ও মিউজিকের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতারা রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
অনুষ্ঠানে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের উপসংঘরাজ শ্রীমৎ ধর্মপ্রিয় মহাথের, ধর্ম সচিব কাজী এনামুল হাসান, চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. প্রভাত চন্দ্র বড়ুয়া, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) প্রধান বার্তা সম্পাদক সমীর কান্তি বড়ুয়া, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান সুপ্ত ভূষণ বড়ুয়া এবং ট্রাস্ট সচিব জয়দত্ত বড়ুয়া উপস্থিত ছিলেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতা, রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার, বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি মিশনের প্রধান এবং আট শতাধিক আমন্ত্রিত অতিথিসহ প্রায় সহস্রাধিক লোক অংশ নেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
জাতীয় সংসদে উত্থাপিত সাইবার নিরাপত্তা আইনে মিথ্যা মামলা দায়ের করলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য করে সাজার বিধান যুক্ত করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে মিথ্যা মামলার শিকার হওয়া ব্যক্তি লিখিত অভিযোগ দিলে আদালত তা আমলে নেবেন।
এই বিধান যুক্ত করে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি এই আইনটির রিপোর্ট সংসদে উত্থাপন করেছে।
আজ ১০ সেপ্টেম্বর রবিবার সাইবার নিরাপত্তা বিল–২০২৩ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণায় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক।
এর আগে ৭ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার কয়েকটি সাংবাদিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে এসব সুপারিশ চূড়ান্ত করে কমিটি। এছাড়া বিলের ৩২ নম্বর ধারা বাদ দেওয়াসহ কয়েকটি ধারায় শব্দগত পরিবর্তন আনার সুপারিশ করা হয়েছে।
বিলে নতুন একটি ধারা যুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। এই ধারায় বলা হয়, যদি কোনো ব্যক্তি অন্য কোনো ব্যক্তির ক্ষতিসাধনের অভিপ্রায়ে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই আইনের অন্য কোনো ধারার অধীন মামলা বা অভিযোগ দায়ের করার জন্য ন্যায্য বা আইনানুগ কারণ না জেনেও মামলা বা অভিযোগ দায়ের করেন বা করান, তাহলে তা হবে একটি অপরাধ। এই অপরাধে মামলা বা অভিযোগ দায়েরকারী ব্যক্তি এবং যিনি অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই ব্যক্তি মূল অপরাধটির জন্য যে দণ্ড নির্ধারিত রয়েছে সে দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। যদি এই আইনের একাধিক ধারায় কোনো মামলা বা অভিযোগ করেন, তাহলে ওই ধারায় বর্ণিত অপরাধগুলোর মধ্যে মূল অপরাধের জন্য যার দণ্ডের পরিমাণ বেশি হয় সেটাই দণ্ডের পরিমাণ হিসাবে নির্ধারণ করা যাবে।
এ বিলে উল্লেখ করা হয়েছে, কোনো ব্যক্তির লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ট্রাইব্যুনাল এই অপরাধের অভিযোগ গ্রহণ ও মামলার বিচার করতে পারবেন।
বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রহিত করে এই সাইবার নিরাপত্তা আইন করা হচ্ছে। ৫ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সাইবার নিরাপত্তা বিল সংসদে উপস্থাপন করা হয়। এরপর বিলটি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। এছাড়া বিলের ২১ ধারায় শব্দগত পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় সংগীত বা জাতীয় পতাকার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের প্রপাগান্ডা ও প্রচারণা সংক্রান্ত অপরাধের কথা বলা আছে। এখানে ‘পতাকার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের প্রপাগান্ডা বা’ এর স্থলে ‘পতাকা সম্পর্কে বিদ্বেষ, বিভ্রান্তি ও কুৎসামূলক’ শব্দ প্রতিস্থাপন করা হবে। বিলের ৩২ ধারা বাতিল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই ধারায় অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট যুক্ত করা হয়েছিল। ডিজিটাল মাধ্যমে কেউ অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যক্টভুক্ত অপরাধ করলে তার সাজার বিধান করতে এটি যুক্ত করা হয়েছিল। বিলের ৪২ ধারায় বিনা পরোয়ানায় তল্লাশি ও গ্রেফতারের ক্ষমতা দেওয়া আছে পুলিশকে। এখানে সংশোধনী এনে বলা হচ্ছে, এই ধারায় সাবইন্সপেক্টর পর্যায়ের কর্মকর্তার জায়গায় পুলিশ পরিদর্শক পর্যায়ের কর্মকর্তা বিনা পরোয়ানায় তল্লাশি ও গ্রেফতার করতে পারবেন।
উপস্থাপিত বিলের ৮ ধারায়ও সংশোধনী আনা হচ্ছে। ডিজিটাল মাধ্যম থেকে তথ্য–উপাত্ত অপসারণ ও ব্লক করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে এই ধারায়। এখানে আগে বলা ছিল যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ‘প্রতীয়মান’ হয় ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে প্রকাশিত বা প্রচারিত কোনো তথ্য-উপাত্ত দেশের বা উহার কোনো অংশের সংহতি, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, ধর্মীয় মূল্যবোধ বা জনশৃঙ্খলা ক্ষুণ্ন করে বা জাতিগত বিদ্বেষ ও ঘৃণার সঞ্চার করে, তা হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ওই তথ্য-উপাত্ত অপসারণ বা ব্লক করার জন্য, মহাপরিচালকের মাধ্যমে, বিটিআরসিকে অনুরোধ করতে পারবে। এখানে প্রতীয়মান শব্দের জায়গায় ‘তথ্য–উপাত্ত বিশ্লেষণ সাপেক্ষে, বিশ্বাস করার কারণ থাকে যে’ প্রতিস্থাপন করা হবে।