স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে টিকার চতুর্থ ডোজের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ফখরুল ইসলাম টিকাদান কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ অভিজিৎ রায়ের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ হাবিবুল্লাহ সরকার, আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ সাইফুল ইসলাম, থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আ.স.ম আতিকুর রহমান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অঞ্জন কুমার দেব, মেডিক্যাল ট্যাকনোলজিষ্ট (ইপিআই)শাখাওয়াত হোসেন, সাংবাদিক সুজিত চক্রবর্তী, সাংবাদিক আকতার হোসেন ভূইয়া, সাংবাদিক এসএম বদিউল আশরাফ মুরাদ, উপজেলা সেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি প্রভাষক নির্মল চৌধুরী, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি এইচএম শুভ সিদ্দিকী প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
সঠিক তদারকির অভাবে এবং অযত্ন ও অবহেলায় অস্তিত্ব হারাতে বসেছিল কালের সাক্ষী হয়ে থাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর জমিদার বাড়ি। ৭৫ বছর ধরে বেদখলে ছিল বিশালাকার বাড়িটি।
সম্প্রতি হরিপুর বড় বাড়ি সংরক্ষণে উদ্যোগ নিয়েছে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ। অবৈধ দখল উচ্ছেদের পর এবার শীঘ্রই সংস্কারের কাজে হাত দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
১৮শ শতাব্দীতে জেলার নাসিরনগর উপজেলায় তিতাস নদীর পাড়ে প্রায় ৪৮০ শতাংশ জমিতে জমিদার কৃষ্ণপ্রদাস রায় চৌধুরী ও গৌরীপ্রসাদ রায় চৌধুরী দৃষ্টিনন্দন এ বাড়িটি নির্মাণ করেন।
জানা যায়, ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর জমিদার পরিবারের লোকজন বাড়িটিতে কয়েকজন পুরোহিতদের রেখে কলকাতায় চলে যান। এরপর পুরোহিতদের বংশধরদের পাশাপাশি স্থানীয় কিছু মুসলিম পরিবার দখল নিয়ে বসবাস শুরু করেন সেখানে। সেই থেকে প্রায় ৭৫ বছর ধরে বাড়িটি ছিল বেদখলে। এতে বাড়িটি দিনের পর দিন বিলুপ্তির পথে যেতে থাকে। তবে সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বাড়িটির দখলে থাকা পরিবারগুলোকে অন্যত্র পুনর্বাসিত করা হয়। এরপরই নেওয়া হয় বাড়িটি সংস্কারের উদ্যোগ।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, তিতাসের পূর্বপ্রান্তে এত বড় বাড়ি আর কোথাও নেই। কারুকাজ খচিত ৬০টি কক্ষ বিশিষ্ট বাড়িটিতে রং মহল, দরবার হল, নাচ ঘর, পুকুর, খেলার মাঠ, মন্দির ও সীমানা প্রাচীর রয়েছে। তবে এর অনেক অংশ ভেঙে ফাটলও ধরেছে। লাল ইট সুরকির গাঁথুনি দিয়ে তৈরি ভবনের দু’পাশে কৃষ্ণ প্রসাদ রায় চৌধুরী ও গৌরী প্রসাদ রায় চৌধুরীর দুটি সমাধি সুউচ্চ মঠ রয়েছে। বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা এখানে এসে ঘুরে ঘুরে পুরো রাজবাড়ির সৌন্দর্য দেখছেন। অনেকে আবার মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. গোলাপ মিয়া বলেন, হরিপুর রাজবাড়ি এটি আমার জন্মের আগে নির্মিত। এই বাড়িটি দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত ছিল। বাড়িটিতে বহিরাগত লোকেরা থাকতেন। তবে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দখলে থাকা বহিরাগতদের আশ্রয়ণ প্রকল্পে জায়গা দিয়ে তাদের উচ্ছেদ করা হয়। আমাদের দাবি, এই বাড়ি যেন পুনঃসংস্কার করে দেয়। তাহলে আমাদের তিতাসের পূর্ব পাড়ে অতীতের একটি স্মৃতি থাকবে।
স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দা আব্দুল জব্বার বলেন, দীর্ঘ কয়েক যুগ ধরে বাড়িটি পরিত্যক্ত। এই বাড়িটি চুনকাঠ ও বীমের উপর দাঁড়িয়ে আছে। যেকোনো সময় একটি বড়ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমি চাই, সরকার যেন দ্রুত এই বাড়িটি সংস্কার করে দেয়। বাড়িটি সংস্কার করে দিলে দর্শনার্থীর সংখ্যা আরো বাড়বে। আমাদের এলাকার উন্নয়ন হবে।
ঘুরতে আসা কয়েকজন পর্যটক বলেন, আমরা হরিপুর জমিদার বাড়ি দেখতে এসেছি। দেখলাম এখানে অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শন রয়েছে। রাজমহল, রঙমহল, দরমহলসহ প্রতিটি দেওয়ালে বিভিন্ন প্রকার কারুকাজ করানো রয়েছে। বাড়িটি অনেক পুরোনো হওয়ায় জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। তবে বাড়িটির ফটকের সামনে যদি এর ইতিহাস লিখে রাখা হয় তাহলে পর্যটকরা এসে এর সঠিক তথ্য জানতে পারবে। বাড়িটি যদি দ্রুত সংস্কার করা যায় তাহলে ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম দেখতে পারবে।
জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম বলেন, হরিপুর জমিদার একটি দর্শনীয় স্থান। এটা প্রত্নতত্ত্বের একটা গুরুত্ব আছে। জমিদার বাড়িতে যেসব বহিরাগত পরিবার ছিল তাদের আশ্রয়ণ প্রকল্পে জায়গা দিয়ে ওখানে স্থানান্তর করা হয়েছে। এর মধ্যে হিন্দু ব্রাহ্মণ পরিবার ছিল তারা নিজেরাই চলে গেছেন।
বাড়িটি সংস্কারের বিষয়ে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের মহাপরিচালক চন্দন কুমার দে বলেন, আমাদের যে সরকারি রাজস্ব ফান্ড আছে তা থেকে এই বছরই আমরা বাড়িটির সংস্কার কাজ শুরু করব। আমরা প্রকল্প তৈরির চেষ্টা করছি। খুব দ্রুত প্রকল্পটা আমাদের মন্ত্রণালয়ে আমরা পাঠিয়ে দেব। আসা করছি প্রকল্পটা অনুমোদন হলে একটা বড় আকারের কাজ করতে পারব। বাড়িটি যেভাবে আছে আমরা ঠিক সেই ভাবে রেখেই সংস্কার কাজ করব।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালেদ বলেন, প্রত্নতাত্ত্বিক সংরক্ষার একটি আইন বা ব্যবস্থা আছে যা সারা বিশ্বে একই নিয়ম। সেভাবেই আমরা এটি সংস্কার করব।
চলারপথে রিপোর্ট :
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার গোকর্ণ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ৩‘শ দু:স্থ ও অসহায় পরিবারের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
৮ এপ্রিল সোমবার সকালে “মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য, একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে “গোকর্ণ হিতৈষী সংঘ” নামে একটি সেবামূলক সংগঠনের উদ্যোগে গোকর্ণ সৈয়দ পাড়ার লায়ন সৈয়দ মোহাম্মদ শরীফের বাড়ি প্রাঙ্গণে এসব ঈদ সমাগ্রী বিতরণ করা হয়। ঈদ সামগ্রীর মধ্যে ছিলো পোলার চাল, সরু ভাতের চাল, চিনি, তেল, পিয়াঁজ, আলু, লবন, সেমাই ও দুধ। অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক ভূপাল দত্ত চৌধুরীর সভাপতিত্বে ঈদ সামগ্রী বিতরণের উদ্বোধন করেন গোকর্ণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ শাহিন। এসময় সাবেক উত্তরা ব্যাংক কর্মকর্তা ও “গোকর্ণ হিতৈষী সংঘ” এর সভাপতি সৈয়দ সালাউদ্দিন মুকুল, সৈয়দ আশরাফ আনোয়ার টিটু, সৈয়দ জাজ্ঞা বীরসহ স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
“গোকর্ণ হিতৈষী সংঘ” এর সভাপতি সৈয়দ সালাউদ্দিন মুকুল জানান, এলাকার কৃতি সন্তান লায়ন সৈয়দ মোহাম্মদ শরীফ, ডা: গৌতম পদ সৌম, ডাঃ সৈয়দ ইসরার কামাল, মিসেস সৈয়দা নাসিম, সৈয়দ আলী রেজাসহ আরো অনেকের সহযোগিতায় প্রতিবারের ন্যায় এবারও ৩‘শ পরিবারের মাঝে হিতৈষী সংঘের পক্ষ থেকে ঈদ উপহার হিসেবে এসব সামগ্রী বিতরণ করা হয়। যারা সার্বিক সহযোগিতা করেছে আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে নয় সদস্যের কমিটির মধ্যে সাতজনই নারী। বিভিন্ন পদ পাওয়া এসব নারীরা জেলাজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। কমিটি ঘোষণার পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তা ভাইরাল হয়ে যায়।
জানা যায়, ২৮ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শাহিনুর রহমান শাহিন ও সদস্য সচিব সমীর চক্রবর্তী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন কনিকা আক্তার ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন দেওয়ান নুসরাত।
কমিটির অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদেও নারীদের প্রাধান্যতা পেয়েছে। সিনিয়র সহ-সভাপতি হয়েছেন পুষ্পা আক্তার, সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন আয়েশা সিদ্দিক পান্না ও মুক্তা আক্তার। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন নূসরাত জাহান তনু ও নাজনীন আক্তার।
এ কমিটিতে পুরুষ সদস্য হিসেবে রয়েছেন দুইজন। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানভীর মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইকবাল হোসেন। নারী নেতৃত্বের এই শক্তিশালী অংশগ্রহণ স্থানীয় রাজনীতিতে ইতিবাচক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
কমিটিকে আগামী ৩০ দিনে মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নতুন নেতৃত্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গণতান্ত্রিক চর্চা ও সংগঠনের কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
কমিটিতে নতুন সভাপতি নির্বাচিত হওয়া কনিকা আক্তার বলেন, সারা দেশে নারীরা পিছিয়ে ছিলো। কিন্তু জুলাই-আগষ্টের বিপ্লব আমাদের শিখিয়ে গেছে নারীরা চাইলেই সব কিছু করতে পারে। ফ্যাসিষ্ট হাসিনাকে পতনের নেপথ্যে কিন্তু নারীদের ভূমিকা ছিলো সবার আগে। তা ছাড়া আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও চাইছেন নারী নেতৃৃত্ব এগিয়ে আসুক।
জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সমীর চক্রবর্তী বলেন, নাসিরনগরে ছাত্রদলের ফরম বিতরণ করার সময় মেয়েরাই এগিয়ে আসে। সেখানে ছেলেদের খুব একটা এগিয়ে আসতে দেখিনি। আমাদের দলের প্রধানও নারী তাই দলের নিদের্শনা অনুযায়ী নারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া আমাদের দলের লক্ষ্য।
নাসিরনগর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বশির উদ্দিন তুহিন বলেন, নারীরা আর পিছিয়ে নেই। তারা পিছিয়ে থাকবে না। পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও বিএনপির সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে যাবে এটাই আমাদের নেতা তারেক রহমানের নিদের্শনা।
চলারপথে রিপোর্ট :
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে “নারীর সমঅধিকার, সমসুযোগ এগিয়ে নিতে হোক বিনিয়োগ” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ৮ মার্চ শুক্রবার সকালে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ইমরানুল হক ভূইয়ার সভাপতিত্বে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ দাসের সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান রাফিউদ্দিন আহমেদ।
বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রুবিনা আক্তার, থানার অফিসার্স ইনর্চাজ (ওসি) মো: সোহাগ রানা, উপজেলা নিবার্চন কর্মকর্তা মো: শহিদুল ইসলাম, উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, প্রোগ্রামার মো: শাহজালাল।
উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে নারী দিবসের আলোচনা সভায় “নারীর ক্ষমতায়নে বঙ্গবন্ধুর অবদান”কে তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন সদর ইউপি চেয়ারম্যান পুতুল রানী দাস, প্রেসক্লাব সভাপতি সুজিত চক্রবর্তী ও শিবলী চৌধুরী প্রমুখ।