চলারপথে রিপোর্ট :
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে একটি মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে আন্তঃনগর সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের সংঘর্ষ হয়েছে। উপজেলার হাসানপুর রেল স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা মালবাহী ট্রেনের পেছন থেকে সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ধাক্কা দিলে ১৬ এপ্রিল রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
দুই ট্রেনের সংঘর্ষে সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের ৭টি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে অন্তত অর্ধশত যাত্রী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
লাকসাম রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন চৌধুরী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
ওসি জসিম উদ্দিন বলেন, মালবাহী ট্রেনটি হাসানপুর স্টেশনে দাঁড়িয়েছিল। এ সময় চট্টগ্রাম থেকে আসা সোনার বাংলা এক্সপ্রেস একই লাইনে ঢুকে পেছন থেকে মালবাহী ট্রেনটিকে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
জসিম উদ্দিন বলেন, মালবাহী ট্রেনটিকে সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ধাক্কা দিলে চারটি বগি মালবাহী কন্টেইনারের ওপর উঠে যায়। এ ছাড়া অন্য বগিগুলো লাইনচ্যুত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঘটনাস্থল থেকে কয়েকজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় ক্লিনিক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরাও জানান, সোনার বাংলা এক্সপ্রেস স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা মালবাহী ট্রেনকে ধাক্কা দেয়।
অনলাইন ডেস্ক :
রাজধানীর উত্তরা থেকে ঢাকা মহানগর উত্তর যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী রিতা খানকে (৪৭) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও হত্যার অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে। ১৬ ফেব্রুয়ারি রবিবার সন্ধ্যার পর উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরের একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে উত্তরা পশ্চিম থানা-পুলিশ।
আজ ১৭ ফেব্রুয়ারি সোমবার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রিতা খান দীর্ঘদিন ধরে উত্তরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন। যার ছবি ও প্রমাণ বিভিন্ন মিডিয়ায় রয়েছে। তার বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় হত্যার অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে।
পুলিশ জানায়, রিতা খানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হবে।
গ্রেফতার হওয়া রিতা খান সাবেক তুরাগ থানা যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী ছিলেন। তুরাগের বাউনিয়া দলিপাড়া এলাকার মৃত রহমত হোসেন খানের মেয়ে তিনি।
অনলাইন ডেস্ক :
অজ্ঞাতনামা চার-পাঁচজনের একটি গ্রুপ হত্যার জন্য মাঠে নেমেছে। নিজ নির্বাচনী এলাকার থানার ওসির মারফত বিষয়টি জানতে পেরে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন হবিগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
আজ ৩০ জুন রবিবার সকালে তিনি বলেন, অজ্ঞাত এক ব্যক্তি আমাকে জানান, সিরিয়াল কিলারের একটি গ্রুপ বর্তমানে সক্রিয়। তারা আমাকে হত্যা করতে চান। আমি যেন আগামী ২-৩ দিন বাসা থেকে বের না হই।
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সংসদে থাকাকালীন আমার এলাকার যে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আছেন, তিনি আমাকে কল করে জানান, গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে। তাই বাড়ি আসার পর তার সঙ্গে যেন আমি একটু বসি।
পরে শুক্রবার বাড়ি যাওয়ার পর দুপুরে আমার সঙ্গে বসেছিলেন ওসি। তখন ওসি আমাকে একটি ম্যাসেজ দেখালেন। সেখানে ওসিকে একজন অজ্ঞাত ব্যক্তি ২-৩ দিন কল করেছেন। কিন্তু কলটি আমলে না নেয়ায় ওই ব্যক্তি ওসিকে একটি ম্যাসেজ করে জানান, তিনি আমার সঙ্গে কথা বলেতে চান। এছাড়া ম্যাসেজে দেখা গেছে, একটি কন্ট্রাক্ট কিলার গ্রুপ হায়ার করা হয়েছে। তারা বর্তমানে অ্যাক্টিভ।
তিনি আরও বলেন, ওসির ফোন দিয়ে আমি পরে অজ্ঞাত সেই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলি। তখন অজ্ঞাত ওই ব্যক্তি জানায়, তিনি নিজের পরিচয় এবং ঠিকানা দিতে চান না। এছাড়া তিনি নিজেও ওই কিলার গ্রুপের একজন সদস্য ছিলেন। যখন আমাকে হত্যার জন্য তার কাছে নাম আসে এবং সেই কাজ তাকে করতে হবে এমন নির্দেশনা আসে, তখন তিনি ওই কাজে অস্বীকৃতি জানান। কারণ, তার বাড়িও সিলেটে। তিনি আমার কাজকর্ম সম্পর্কে সব জানেন, তাই তিনি রাজি হননি বলেও আমাকে জানিয়েছেন।
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ফোনকলে ওই ব্যক্তি জানান, আমি যেন আগামী ২-৩ দিন বাসা থেকে বের না হই। কিন্তু এর আগেও আমি মৌখিকভাবে এবং পিএসের মাধ্যমে হুমকি পেয়েছি। কিন্তু সেগুলো আমলে নেইনি। তবে এবার যখন ওসির মাধ্যমে এসেছে, তখন আমার কাছে মনে হয়েছে এবার সিরিয়াসভাবে আমলে নিতে হবে।
তিনি জানান, ওই ঘটনার পর আমি শনিবার ঢাকায় চলে আসি। এরমধ্যে আমি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথাও বলেছি। পরে আমি শেরেবাংলা নগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি।
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, আমি একজন সংসদ সদস্য। যখন আমার এলাকার ওসি কোনো এক মাধ্যমে জেনেছেন আমার লাইফ রিস্কে আছে, তখনই কিন্তু তার এসপি বা ডিআইজির সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল। এটা কি সত্যই হুমকি নাকি ভুয়া সেটি আমার কাছে আসার আগেই তাদের তদন্ত করে দেখা উচিত ছিল। আমাকে কেন জিডি করতে হলো?
তিনি বলেন, আমার প্রশ্ন হলো- আমার থ্রেট তো আমি জানি না, আমার আগে জেনেছেন ওসি। এরপর এটা এসপি বা ডিআইজিকে জানানো দরকার ছিল এবং আমি জানার আগেই আমাকে প্রোটেকশন দেয়ার কথা ছিল। এরপর আমাকে জানাতে পারতেন যে, ওই থ্রেটটা (হুমকি) রিয়েল নাকি ফেইক। কিন্তু ওসি আমাকে বলেছেন, আমার জিডি করতে হলো। এখন তো আমার জীবনের নিরাপত্তা নিজেকেই দিতে হচ্ছে। আমি বুঝি না, এই রাষ্ট্রযন্ত্র আসলেই কি আমাকে বাঁচায় রাখতে চায় কি না। কারণ, আমি যেখানে জিডি করেছি বা পুলিশ বিভাগকে জানিয়েছি, তারাই তো আমার আগে এ ঘটনা জেনেছে।
অনলাইন ডেস্ক :
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, বিএনপি সংস্কারের বিপক্ষে না, বিএনপি সংস্কারের দল। তবে সংস্কারের সবকিছুই হতে হবে জনগণের সম্মতিতে। আজ ১৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে দলের পক্ষ থেকে সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা সবাই খুব ভালো চাই। কিন্তু খুব ভালো করার জন্য যেন আমরা এতো সময় না নেই- যাতে মানুষের পরিবর্তনের যে আকাঙ্ক্ষা সেটি স্তিমিত হয়ে যায়। নিশ্চয় আমরা ভালো করতে চাই এবং এই ভালো করার প্রয়াস অব্যাহত থাকবে, সবসময় থাকবে।
তিনি বলেন, আমরা কালকেও প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি, বিএনপির চাইতে বেশি সংস্কার বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক দল করেছে? রাজনৈতিকভাবে বলেন, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা তো বিএনপি করেছে। বহু দলীয় গণতন্ত্র তো বিএনপি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছে, সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা তো বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছে। তত্ত্বাবধায়ক শাসন ব্যবস্থা তো বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছে, প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণ তো অনেক ক্ষেত্রে করেছে। এমনকি বিএনপি তো গ্রাম সরকার প্রবর্তন করেছে।
তিনি আরো বলেন, মুক্তবাজার অর্থনীতি বিএনপি চালু করেছে, দুর্নীতি দমন কমিশন বিএনপি গঠন করেছে।
এই বিএনপি নেতা বলেন, আজকে অর্থনীতির- সরকারের রাজস্ব আয়ের অন্যতম খাত হলো ভ্যাট, বিএনপি করেছে। আজকে অর্থনীতির মূল স্তম্ভ পোশাক খাত বিএনপির হাতে হয়েছে, কৃষি উন্নয়ন, প্রবাসী কর্মসংস্থান, পল্লী বিদ্যুতায়ন থেকে শুরু করে সমবায় উন্নয়ন, কুটির শিল্প… বিএনপি সংস্কারের বিপক্ষে না, বিএনপি সংস্কারের দল।
তিনি বলেন, তারপরও কেউ কেউ নানা কথা বলেন, তারা যখন সংস্কারের ‘স’ উচ্চারণ করেনি- তখন তো দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ভিশন ২০৩০ দিয়েছেন। কেউ যখন সংস্কারের কথা ভাবেনি, তখন শহীদ জিয়াউর রহমান ১৯ দফা কর্মসূচি দিয়েছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আমরা সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছি এবং আমরা এটা বলেছি, এর চেয়ে ভালো প্রস্তাব থাকলে সেটি সাদরে গ্রহণ করব।
ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে বৈঠকে ছিলেন কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এমদাদুল হক, ইফতেখারুজ্জামান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
আর দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে ৪ সদস্যের প্রতিনিধি দলে নজরুল ইসলাম খান ছাড়াও ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
অনলাইন ডেস্ক :
দেশের প্রত্যেক মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলাচলের জন্য পৃথক লেন চেয়ে হাইকোর্টে একটি আবেদন দায়ের করা হয়েছে। পাশাপাশি ‘বিশেষ’ ব্যক্তির অপরাধের কারণে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ না করারও নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিল সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে আজ ৯ মে মঙ্গলবার পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলের নির্দেশনা চেয়ে করা রিটে এ সম্পূরক আবেদন করা হয়। আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তৈমূর আলম খন্দকার, ইয়ারুল ইসলাম, ব্যারিস্টার মার-ই-য়াম খোন্দকার।
সংশ্লিষ্ট আইনজীবী সূত্রে জানা যায়, আবু হানিফ হৃদয় নামের যাত্রাবাড়ীর এক বাসিন্দা এ রিট করেন। এর আগেও তিনি এ সংক্রান্ত একটি রিট করেছিলেন। যেটি গত ১৫ জানুয়ারি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করেন হাইকোর্ট।
রিটে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করে সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়। এরপর নতুন করে তিনি একই বিষয়ে আবার রিট করেন।
ওই রিট বিচারাধীন অবস্থায় গত ২২ এপ্রিল উদযাপিত ঈদুল ফিতর উপলক্ষে পদ্মা সেতু মোটরসাইকেল চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয় সরকার যা এখনও কার্যকর রয়েছে। এ পর্যায়ে আগের রিটের সঙ্গে রিটকারী হানিফ হৃদয় হাইকোর্টে সম্পূরক আবেদন দায়ের করেন।
গত বছরের ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন করা হয়। পরদিন ২৬ জুন যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। তবে এদিন ভয়াবহ দুর্ঘটনার কারণে পরে এক তথ্য বিবরণীতে বলা হয়, ২৭ জুন ভোর ৬টা থেকে পুনরায় আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় মোটরসাইকেল চলাচলের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদনটি দায়ের করা হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমানে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চলছে, যাতে প্রতিদিন প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার যাত্রী যাতয়াত করছে। বিশেষ করে মেয়েদের জন্য মেট্রোরেল একটা নিরাপদ যান হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। এই মেট্রোরেল চালু হবার পরে ঢাকার যানজট অনেকাংশে কমে গেছে।
তিনি বলেন, রাজধানীর যানজট সহনশীল করার জন্য আমরা ঢাকা মাস ট্রানজিট তৈরি করেছি, এর মাধ্যমে ৬টা রুটে মেট্রোরেল নির্মাণ করা হচ্ছে, একটা তো হয়েই গেছে। ইতোমধ্যে আমরা চট্টগ্রামে মেট্রোরেল নির্মাণের জন্য সার্ভে করছি। আমি থাকতে থাকতে প্রতিটি বিভাগীয় শহরে আমি মেট্রোরেল করে দিয়ে যাবো ইনশাআল্লাহ, যাতে দেশের মানুষ দ্রুততম সময় যানজট মুক্ত হয়ে চলাচল করতে পারে।
আজ ২৯ জুন শনিবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে ২০২৪-২০২৫ অর্থ-বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকেই বাজেটকে উচ্চাভিলাসী বলে মন্তব্য করেছেন। আমি মোটেই তা মনে করি না। বাজেট শতভাগ কখনো পূরণ হয় না। তারপরও সুনির্দিষ্ট একটা লক্ষ্য থাকে। সেই লক্ষ্যে আমরা যেতে পেরেছি। কোথায় ৬২ হাজার কোটি টাকার বাজেট, আর কোথায় ৭ লাখ কোটি টাকার বাজেট! আমরা তো এই জায়গায় আসতে পেরেছি। চ্যালেঞ্জ নিয়েছি বলেই না সম্ভব হয়েছে। আমাদের ইচ্ছাটা কি? দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন। সেজন্যই তো উন্নয়নটা হয়। আমাদের উন্নয়নের ধারা যেন অব্যাহত থাকে সে লক্ষ্যেই আমরা এই বাজেট প্রণয়ন করেছি এবং উন্নয়ন বাজেট দিয়েছি। এখানে কমানোর কিছু নেই।
তিনি বলেন, এই বাজেটের মধ্যে আগামী দিনে আমরা যে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করেছি ২০২১ থেকে ২০৪১ সাল সেটি বাস্তবায়নে সক্ষম হবো। সেই ধারাবাহিকতা আমাদের আছে। আমরা একটা রাজনৈতিক দল করি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। আমাদের কিন্ত নিজেদের ঘোষণাপত্র আছে, আমরা কিন্তু নির্বাচনের আগে ইশতেহার ঘোষণা করি। এই ইশতেহার আমরা কখনো ভুলে যাই না। জাতির কাছে যে ওয়াদা দিয়ে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আমরা ক্ষমতায় এসেছি তা পালন করি। এই বাজেট প্রণয়নকালীন সময়েও আমাদের যে নির্বাচনী ইশতেহার, সেটির অগ্রাধিকার এবং মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের যে দিক-নির্দেশনা সেটাও বাজেটে উঠে এসেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাস সর্ববৃহৎ বাজেট আমরা দিয়েছি। বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। আমাদের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। আগামী অর্থ-বছরের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৬.৭৫ শতাংশ। বাজেটের উপর এ পর্যন্ত বিরোধীদলীয় নেতাসহ ২৩৪ জন সংসদ সদস্য বক্তব্য রেখে বাজেটের উপর আলোকপাত করেছেন এবং পরামর্শ দিয়েছেন। এর বাইরে অনেকেই বাজেট নিয়ে আলোচনা করেছেন। বাজেট নিয়ে আলোচনা সমালোচনা যে যাই করুক সকলকেই আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কেউ কেউ বাজেটকে উচ্চাভিলাসী বলেছেন, কেউ বলেছে ঘাটতি বাজেট। কিছুক্ষণ আগে বিরোধীদলীয় নেতা বললেন- এই বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব নয়, আমাদের প্রবৃদ্ধির হার কমাতে হবে, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি কমাতে হবে ইত্যাদি। এবং এই চ্যালেঞ্জ নেওয়ার মতো সক্ষমতা আছে কিনা। চ্যালেঞ্জ নেওয়াটাই তো আমাদের কাজ। চ্যালেঞ্জ নিয়েই তো আমরা চলতে চাই, চ্যালেঞ্জ নিয়েই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
বিরোধী দলীয় নেতা জি এম কাদেরের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন হাত পাতার জায়গায় নেই। আমরা ঋণ নেই, ঋণ শোধ করি। এরশাদ সাহেবের সময় রংপুরে মঙ্গা লেগেই থাকতো। এখন মঙ্গা নেই। আজকের সাফল্যে কৃতজ্ঞতা দেশের জনগণের প্রতি। তারা বার বার আমাদের সমর্থন দিয়েছে। তাই আমরা কাজ করতে পেরেছি। কোভিড অতিমারীর সময় অনেক উন্নত দেশ প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পারেনি। আমাদের প্রবৃদ্ধি ছিল ধণাত্মক। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের সবচেয়ে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অজনকারী দেশগুলোর তালিকায় সামনের সারিতে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে বাংলাদেশ সারাবিশ্বে মর্যাদার আসনে আসীন হয়েছে। আমরা উন্নয়নের পরিকল্পনা নিয়ে তা বাস্তবায়ন করি এবং মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করি। যারা পরিবর্তনগুলো দেখেন না, তাদের বলবো গ্রামে যান। গ্রামের মানুষের যে ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে, সেটা গেলেই দেখবেন। এরশাদ সাহেবের উত্তরবঙ্গে যে মঙ্গা নেই, সেটাও দেখবেন। কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর, গাইবান্ধাসহ বিভিন্ন এলকায় দুর্ভিক্ষ লেগেই থাকতো। সেখানে ছুটে গেছি, মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছি। গ্রামের পর গ্রামে গিয়েছি, মানুষের শরীরে মাংস ছিল না চামড়া আর হাড় ছাড়া। এখন মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে পেরেছি।
তিনি বলেন, আমাদের চলার পথ মোটেই মসৃণ ছিল না। বার বার বাধা এসেছে। দেশের ভেতর থেকে যেমন বাধা এসেছে, আন্তর্জাতিক পর্যায়ের নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়েও চলতে হয়েছে। আবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ, স্যাংশন, কাউন্টার স্যাংশন- নানা বাধা এসেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ লাগলে সব কিছুর দাম বেড়ে গেল। ওই অবস্থার মধ্যেও বিরাট চ্যালেঞ্জ নিয়ে এগিয়ে যেতে হয়েছে। কোভিডের সময় উন্নত দেশ বিনা পয়সায় ভ্যাকসিন দেয়নি। আমরা দিয়েছি। বিনা পয়সায় টেস্ট করেছি।