চলারপথে রিপোর্ট :
‘শবে কদর’ কথাটি ফারসি। শব মানে রাত বা রজনী আর কদর মানে সম্মান, মর্যাদা, গুণ, সম্ভাবনা, ভাগ্য ইত্যাদি। শবে কদর অর্থ হলো মর্যাদার রাত বা ভাগ্যরজনী। শবে কদরের আরবি হলো লাইলাতুল কদর তথা সম্মানিত রাত। আজ লাইলাতুল কদর। এটি একটি সম্মানিত ও মহিমান্বিত রাত। লাইলাতুল কদর সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় আমি কোরআন নাজিল করেছি লাইলাতুল কদরে।’ ‘লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।’ ‘এ রাতে ফেরেশতারা ও জিবরাইল তাদের প্রভুর অনুমতিক্রমে সব সিদ্ধান্ত নিয়ে অবতরণ করেন। শান্তিময় এ রাত ফজরের সূচনা পর্যন্ত’। (সুরা কদর)।
এ রাত কোরআন নাজিলের রাত। মহত্ব ও গুরুত্বসহকারে মহান আল্লাহর ইবাদতের রাত। এ রাত হলো হাজার মাস তথা তিরাশি বছর চার মাসের চেয়ে উত্তম। ওই ব্যক্তির চেয়েও ভাগ্যবান আর কে হতে পারে, যে এ রাতে নির্ঘুম থেকে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করার সুযোগ পেয়েছে। এ পবিত্র রাতে ফেরেশতারা পৃথিবীতে আসে মানবজাতির জন্য বরকত, রহমত ও কল্যাণ নিয়ে।
সূর্যাস্তের পরপরই এ রাতে মহান আল্লাহ তার আরশ থেকে প্রথম আকাশে নেমে আসেন। মায়া আর দয়া নিয়ে, প্রেম ও ভালোবাসা দিয়ে মানবজাতিকে ডাকেন আর বলেন, ‘কে আছ পাপী! তুমি ক্ষমা চাও, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব। কে আছ দুঃখী! আমি তোমার দুঃখ মোচন করব। কে আছ রোগী! আমি তোমাকে সুস্থ করে দেব। কে আছ দায়গ্রস্ত! আমি তোমাকে দায়মুক্ত করে দেব। তোমাদের কার রিজিকের প্রয়োজন! আমার কাছে চাও, আমি তার রিজিক বৃদ্ধি করব।’ মহান আল্লাহ এভাবে ফজর পর্যন্ত ডাকতে থাকেন। যারা তার ডাকে সাড়া দিয়ে প্রার্থনায় লিপ্ত হয়, তারা কল্যাণকামী হয়। সৌভাগ্যবান হয়।
শবে কদরের রাতে কুরআন নাজিল সম্পর্কে আল্লাহতাআলা বলেন, ‘রমজান মাস! যে মাসে কুরআন নাজিল হয়েছে মানবের দিশারি রূপে ও হিদায়াতের সুস্পষ্ট নিদর্শন। (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৫)। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আরও বলেন, ‘উজ্জ্বল কিতাবের শপথ! নিশ্চয় আমি তা নাজিল করেছি এক বরকতময় রাতে; নিশ্চয় আমি ছিলাম সতর্ককারী, যাতে সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্ধারিত হয়। এ নির্দেশ আমার তরফ থেকে, নিশ্চয় আমিই দূত পাঠিয়ে থাকি। এ হলো আপনার প্রভুর দয়া, নিশ্চয় তিনি সব শোনেন ও সব জানেন। তিনি নভোমণ্ডল-ভূমণ্ডল ও এ উভয়ের মাঝে যা আছে সে সবের রব। যদি তোমরা নিশ্চিত বিশ্বাস করো; তিনি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই, তিনি জীবন ও মৃত্যু দেন, তিনিই তোমাদের পরওয়ারদিগার আর তোমাদের পূর্বপুরুষদেরও। তবু তারা সংশয়ে রঙ্গ করে। তবে অপেক্ষা করো সে দিনের, যেদিন আকাশ সুস্পষ্টভাবে ধূম্রাচ্ছন্ন হবে। (সুরা-৪৪ দুখান, আয়াত: ১-১০)।
শবে কদর ও কোরআন অবতরণ এবং এই রাতের ফজিলত সম্পর্কে দয়াময় আল্লাহ কোরআনে ‘সুরা কদর’ নামে একটি স্বতন্ত্র সুরা নাজিল করেছেন। তাতে বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আমি কোরআন নাজিল করেছি মর্যাদাপূর্ণ কদর রজনীতে। আপনি কি জানেন, মহিমাময় কদর রজনী কী? মহিমান্বিত কদর রজনী হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। সে রাতে ফেরেশতাগণ হজরত জিবরাইল (আ.) সমভিব্যাহারে অবতরণ করেন; তাঁদের প্রভু মহান আল্লাহর নির্দেশ ও অনুমতিক্রমে, সকল বিষয়ে শান্তির বার্তা নিয়ে। এই শান্তির ধারা চলতে থাকে ঊষার উদয় পর্যন্ত। (সুরা-৯৭ কদর, আয়াত: ১-৫)।
শবে কদরের রাতের ফজিলত সম্পর্কে বলা হয়েছে, এ রাত গুনাহ মাফের রাত। হাদিসে এসেছে- ‘যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদরে ঈমান সহকারে ও আল্লাহর কাছ থেকে বড় শুভফল লাভের আশায় ইবাদতের জন্য দাঁড়িয়ে থাকবে, তার পেছনের সব গুনাহ মাফ হয়ে যাবে’ (বুখারি ও মুসলিম)। এ রাতের কল্যাণ থেকে একমাত্র হতভাগ্য লোক ছাড়া আর কেউ বঞ্চিত হয় না (ইবনে মাজাহ ও মিশকাত)।
কিয়ামুল লাইল: ‘কিয়ামুল লাইল’ অর্থ হলো রাত্রি জাগরণ। মহান আল্লাহর জন্য আরামের ঘুম স্বেচ্ছায় হারাম করে রাত জেগে ইবাদত করা আল্লাহর প্রিয় বান্দাহদের একটি গুণ। মহান আল্লাহ তার প্রিয় বান্দাহদের পরিচয় দিয়েছেন এভাবে- ‘তারা রাত্রি যাপন করে রবের উদ্দেশে সিজদাবনত হয়েও দাঁড়িয়ে থেকে’ (সুরা ফুরকান : ৬৪)।
‘তাদের পার্শ্বদেশ বিছানা থেকে পৃথক থাকে (অর্থাৎ তারা শয্যা গ্রহণ করে না; বরং এবাদতে মশগুল থাকে)। তারা গজবের ভয়ে এবং রহমতের আশায় তাদের রবকে ডাকতে থাকে এবং আমি যা দিয়েছি তা থেকে দান করে থাকে। কেউ জানে না। তাদের আমালের পুরস্কারস্বরূপ (আখিরাতে) তাদের জন্য কী জিনিস গোপনে রাখা হয়েছে’ (সুরা সিজদা : ১৬-১৭)। নবীজি (সা.) একদিন সাহাবায়ে কেরামদের (রা.) সামনে বনি ইসরাইলের এক উপাসকের কথা বলছিলেন। সে ব্যক্তি এক হাজার মাস ধরে আল্লাহর ধ্যান ও সাধনায় লিপ্ত ছিল। এ কথা শুনে সাহাবায়ে কেরাম (রা.) আফসোস করতে লাগলেন আর বললেন, আমরা এত বছর ইবাদত করব কীভাবে? তাছাড়া আমাদের অনেকে তো এত বছর বেঁচেও থাকি না। ঠিক তখনই জিবরাইল (আ.) এ রাতের সুসংবাদসহ সুরা কদর নিয়ে নবীজির (সা.) কাছে হাজির হলেন এবং এ উম্মতকে শ্রেষ্ঠ উম্মত হিসেবে প্রমাণ করে দিলেন। (তাফসিরে মাজহারি)।
নবীজি (সা.) বলেন, ‘তোমরা মাহে রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোতে লাইলাতুল কদর তালাশ করো।’ (বুখারি)। এ রাত হলো জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়ার রাত। হজরত আয়েশা (রা.) একবার রাসুল (সা.)কে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমি যদি লাইলাতুল কদর সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে আমি ওই রাতে কী দোয়া করব? তখন নবীজি (সা.) বললেন, তুমি এ দোয়াটি করবে- ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফউন; তুহিব্বুল আফওয়া, ফা’ফু আন্নি’ অর্থাৎ হে আল্লাহ! তুমি তো ক্ষমাশীল! ক্ষমাকে তুমি ভালোবাস। অতএব, আমাকে তুমি ক্ষমা কর।
নবীজির (সা.) সময় অনেক সাহাবী (রা.) রমজানের ২৭ তারিখকে লাইলাতুল কদর হিসেবে স্বপ্ন দেখেছেন। সাহাবীরা (রা.) নবীজিকে (সা.) স্বপ্নের কথা জানালে নবীজি (সা.) বলেন, আমিও এমনটা স্বপ্নে দেখেছি। হজরত উবাই ইবনে কাব (রা.) বলেন, ‘মহান আল্লাহর শপথ করে বলছি-নবীজি (সা.) ২৭ রমজানের রাতকে লাইলাতুল কদরের রাত বলেছেন।’ অন্য হাদিসে রয়েছে, নবীজি (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যদি দুর্বল অথবা কোনো কারণে অক্ষম হয়ে থাকে, সে যেন রমজানের ২৭ তারিখ রাতে ইবাদত করে।’ (মুসলিম)। আরেক হাদিসে এসেছে-নবীজি (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদর পেতে চায়, সে যেন তা রমজানের সাতাশতম রাতে অনুসন্ধান করে। (মুসনাদে আহমদ)।
চলারপথে রিপোর্ট :
মাত্র ১২ বছর বয়সে চট্টগ্রামে খালাতো ভাইয়ের বাসায় বেড়াতে গিয়ে হারিয়ে গিয়েছিলেন আবদুল্লাহ আল মামুন ছিদ্দিক। দীর্ঘ ১৫ বছর পর সেই আবদুল্লাহ আল মামুন ছিদ্দিককে ফিরে পেল তার পরিবার।
আবদুল্লাহ আল মামুন ছিদ্দিক নোয়াখালী জেলার সেনবাগ উপজেলার নবীপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বিষ্ণপুর গ্রামের নোয়াবাড়ির রফিক উল্লার ছেলে। এক ভাই তিন বোনের মধ্যে সে সবার বড়।
জানা গেছে, চট্টগ্রামের বটতলি রেলস্টেশনে খালাতো ভাই মোহরার সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে হারিয়ে যায় ১২ বছর বয়সের আবদুল্লাহ আল মামুন ছিদ্দিক। তখন থেকেই শিশুসন্তানকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও কোনো সন্ধান পায়নি তার পরিবার। এর পর থেকে ছেলের সন্ধানে বাবা-মা এমন কোনো চেষ্টা বাকি রাখেননি।
সম্প্রতি আবদুল্লাহ আল মামুন ছিদ্দিককে চট্টগ্রামের বটতলি রেলস্টেশনে দেখেন তার চাচাতো ভাই নুর মোহাম্মদ। সঙ্গে সঙ্গে নিশ্চিত হয়ে তার বাড়িতে পরিবারকে জানায় বিষয়টি। এর পর তার বাবা রফিক উল্লা ও মা আয়েশা খাতুন চট্টগ্রামে পৌঁছে চাচাতো ভাই নুর মোহাম্মদের সহযোগিতায় আবদুল্লাহ আল মামুন ছিদ্দিককে বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন।
আবদুল্লাহ আল মামুনের মা-বাবা বলেন, আমাদের সন্তানকে পেয়ে আল্লাহর দরবারে লাখো শুকরিয়া। এখন আর তাকে কোথাও হারিয়ে যেতে দেব না।
অনলাইন ডেস্ক :
দেশের চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস কমিয়ে গবেষণায় মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, পাবনাতেই হবে দ্বিতীয় পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র।
আজ ১১ মার্চ সোমবার প্রধানমন্ত্রী তাঁর কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ, এনএসটি ফেলোশিপ এবং বিশেষ গবেষণা অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যবিষয়ক গবেষণায় বাংলাদেশের পিছিয়ে থাকার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ডাক্তার সাহেবরা প্র্যাকটিস করেন, টাকা কামাই করেন, গবেষণার দিকে বেশি যান না।
ঠিক? কয়েকজন ডাক্তার আছেন, আমি সামনাসামনি জিজ্ঞাসা করছি। এখন গবেষণার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।’
চিকিৎসকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘গবেষণায় গুরুত্ব দিলে দেশের মানুষ আরো সুস্থ হবে, সবল হবে, মেধাবীরা আরো মেধা বিকাশের সুযোগ পাবে। গবেষণা অপরিহার্য। স্বাস্থ্য বিষয়ে যাঁরা গবেষণা করবেন, তাঁদের বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হবে।’
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সব ক্ষেত্রেই যে গবেষণার বিকল্প নেই, সে কথা তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, ‘কৃষিতে গবেষণা করে আজকে আমরা শুধু খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ না, বাংলাদেশে এখন আমাদের ফল, ফুল, মূল, এমনকি টিউলিপ, যেটা শীতের দেশ ছাড়া হয় না, সেই টিউলিপও বাংলাদেশে হচ্ছে। স্ট্রবেরিও বাংলাদেশে হচ্ছে। সবই গবেষণার ফসল। গবেষণা আমাদের নতুন দুয়ার খুলে দেয়। আর বাংলাদেশের মাটি হচ্ছে সোনার মাটি, যা লাগানো যায় সেটাই হয়। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা।’
চিকিৎসকদের তিনি বলেন, ‘যাঁরা সরকারি চাকরি করছেন, তাঁরা প্রাইভেট প্র্যাকটিসটা একটু কমিয়ে দিয়ে গবেষণার দিকে মনোযোগ দেন। যাঁরা গবেষণা করবেন, তাঁদের উত্সাহ দেওয়ার জন্য যা প্রয়োজন আমরা করব।
গবেষণাটা আমাদের খুব দরকার। বিজ্ঞান এবং স্বাস্থ্য বিজ্ঞান, এই দুইটার ওপর আমাদের গবেষণায় সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। আমরা চাই, আমাদের গবেষণায় আরো বেশি লোক মনোযোগী হবেন। গবেষকদের কোনো অসুবিধা থাকলে সেটা কিভাবে দূর করা যায়, সে ব্যাপারে আমাদের সরকার সব সময় অত্যন্ত আন্তরিক।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে গবেষণার জন্য যে টাকা আমরা অনুদান হিসেবে দিচ্ছি, মনে রাখতে হবে, এই টাকাটা বাংলাদেশের জনগণের টাকা। জনগণের টাকা জনগণের কল্যাণে যেন লাগে। কারণ গবেষণা থেকে যেটা উদ্ভাবন হবে, সেটা কিন্তু জনগণের কাজে লাগবে। সেই কথাটাই মাথায় রাখতে হবে। আমি মনে করি তরুণের যে মেধাশক্তি, সেটা বিকাশের মধ্য দিয়ে দেশকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।’
অনূর্ধ্ব-১৬ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতায় বাংলাদেশের মেয়েদের অভিনন্দন জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘ষোলর নিচে যারা (মেয়ে), তারা তো ভারতকে তিন গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন। তাদেরকে আমি ডাকব এবং তাদের ডেকে প্রাইজমানি দিয়ে উত্সাহিত করব।’
১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশের যে উল্টো যাত্রা শুরু হয়েছিল সেই ইতিহাসও অনুষ্ঠানে মনে করিয়ে দেন তাঁর মেয়ে শেখ হাসিনা।
দেশের দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রও পাবনার রূপপুরে করা হবে উল্লেখ করে প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্বিতীয়টির কাজ যাতে শুরু করা যায় সেই ব্যাপারে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমরা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছি। আরেকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চেষ্টা করেছিলাম দক্ষিণে। কিন্তু সেখানের মাটি এত নরম, প্রতিটি দ্বীপে আমরা অনুসন্ধান চালিয়ে দেখেছি। আসলে সেখানে করা বোধ হয় সম্ভব নয়। তবে এখন যেখানে আমরা বিদ্যুৎকেন্দ্র করেছি সেটার কাজ সম্পূর্ণ শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয়টাও আমরা এই পাবনাতে, এই রূপপুরেই করতে পারব।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটার কাজ যখন শেষ হবে সঙ্গে সঙ্গে আমরা যেন দ্বিতীয়টার কাজ শুরু করতে পারি, এখন থেকে আমাদের সেই প্রস্তুতি নিতে হবে। তা ছাড়া বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ আমরা উেক্ষপণ করেছি এবং স্যাটেলাইট-২ উেক্ষপণেও আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি।’
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জাহিদ মালেক।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আলী হোসেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
বহুল কাঙ্ক্ষিত আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে এই রেলপথ। উদ্বোধনের আগে আজ ১৪ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার গঙ্গাসাগর রেলস্টেশন থেকে ভারত সীমান্তবর্তী শিবনগর পর্যন্ত একটি খালি কনটেইনার ট্রেন চালানো হয়েছে।
এ সময় রেলপথ নির্মাণকারী ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের কান্ট্রি ম্যানেজার শরৎ শর্মা ও আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ প্রকল্পের পরিচালক (বাংলাদেশ অংশ) মো. আবু জাফর মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৮ সালের জুলাইয়ে আখাউড়ার গঙ্গাসাগর থেকে আগরতলার নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত ১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। করোনা মহামারিসহ নানা সংকটের কারণে দেড় বছর মেয়াদি প্রকল্পের কাজ শেষ করতে সময় লাগছে পাঁচ বছরেরও বেশি। রেললাইনের কাজ শেষ হলেও ইমিগ্রেশন, কাস্টমস ভবন এবং প্ল্যাটফর্মের ফিনিশিং কাজ এখনো চলছে।
আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ প্রকল্পের পরিচালক (বাংলাদেশ অংশ) মো. আবু জাফর মিয়া জানান, আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের ৯৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আমাদের অংশে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানো হয়েছে। ট্রেনটি ৪০ কিলোমিটার গতিতে চলেছে। উদ্বোধনের পর প্রথম দিকে পণ্যবাহী ট্রেন এবং পরবর্তীতে যাত্রীবাহী ট্রেনও চালানো হবে এই রুটে।
অনলাইন ডেস্ক :
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা একটি বদ্ধমূল সমস্যা এবং এর প্রভাব অনেক বেশি বিস্তৃত। লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ছাড়াও পরিবার, সম্প্রদায় ও সামগ্রিকভাবে জাতিকে প্রভাবিত করে। এই সহিংসতা কেবল শারীরিক ক্ষতির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি গভীর মনস্তাত্ত্বিক ক্ষত সৃষ্টি করে, পারিবারিক কাঠামোকে ব্যাহত করে এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্তরে ক্ষতিগ্রস্তদের অগ্রগতিতে বাধা দেয়।
আজ ২২ জুলাই শনিবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ‘জেন্ডার-বেইজড ভায়োলেন্স বেঞ্চ বুক লঞ্চ’’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশে ইউএসএআইডি’র প্রোমোটিং পিস অ্যান্ড জাস্টিস অ্যাকটিভিটি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে ‘জুডিসিয়াল বেঞ্চ বুক অন অ্যাড্রেসিং জেন্ডার-বেইজড ভায়োলেন্স ইন বাংলাদেশ’ এবং ‘বাংলাদেশ জুডিসিয়াল বেঞ্চ বুক অন দ্য প্রিভেনশন অব অপ্রেশন অ্যাগেইনস্ট উইমেন অ্যান্ড চিলড্রেন অ্যাক্ট, ২০০০’ নামে দুটি বেঞ্চ বুক লঞ্চ করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী বলেন, বিচার বিভাগ ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা মোকাবিলা ও প্রশমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আদালত এই ধরনের সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে, যাতে তারা প্রতিকার পায় এবং অপরাধীদের জবাবদিহি করতে পারে। এমন প্রেক্ষাপটে, নারী ও শিশু নির্যাতন এবং লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা বিষয়ক মামলার জটিল বিষয়গুলোর সহজ সমাধানে বিচার বিভাগীয় বেঞ্চ বুক দুটি বিচারকদের সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।
তিনি বলেন, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সকল স্তরের মানুষের উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এর অংশ হিসেবে সমাজের দুর্বল ও অসহায় মানুষদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে ব্যাপক পরিসরে আইনি, প্রশাসনিক এবং নীতিগত সংস্কার করেছে।
আনিসুল হক বলেন, নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিত করার বিষয়ে সু-দৃষ্টি দিয়েই শেখ হাসিনার সরকার ২০০০ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং ২০১০ সালে পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইনের মতো গুরুত্বপূর্ণ আইন প্রণয়ন করেছে। ২০১২ সালে পর্নোগ্রাফি (নিয়ন্ত্রণ) আইন এবং মানব পাচার প্রতিরোধ আইন করেছে। এই আইনগুলো সহিংসতা ও লিঙ্গ-ভিত্তিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শক্তিশালী স্তম্ভ হিসেবে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, নারী ও শিশুরা মানব পাচারের প্রধান লক্ষ্যবস্তু। এই ঘৃণ্য অপরাধ দমনে কৌশলগতভাবে সাতটি বিভাগীয় সদরে সাতটি মানবপাচার বিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধের লক্ষ্যে সরকার দেশব্যাপী ১০১টি বিশেষায়িত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটি উল্লেখযোগ্য নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করেছে। এই দূরদর্শী পদক্ষেপগুলো নারী ও শিশুদের সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করেছে।
আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি. হাস, ইউএসএআইডি’র ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি মিশন ডিরেক্টর সোনজাই রেনোল্ডস-কুপার, প্রোমোটিং পিস অ্যান্ড জাস্টিস অ্যাকটিভিট‘র চিফ অব পার্টি হেদার গোল্ডস্মিথ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থানায় দায়ের হওয়া ধর্ষণ মামলার আসামি আমিরুল ইসলাম ওরফে রাসেলকে (৪২) গ্রেফতার করেছে র্যাব। আজ ১৩ অক্টোবর শুক্রবার দুপুরে উপজেলার মুরাদপুর ইউনিয়নের উত্তর মাহমুদাবাদ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আমিরুল ওই এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে। তিনি ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার এড়াতে প্রায় ১৪ বছর ধরে আত্মগোপনে ছিল।
র্যাব জানায়, ২০০৯ সালে ২৬ বছর বয়সী এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে সীতাকুণ্ড থানায় মামলা হয়। ওই মামলার আসামি ছিল আমিরুল। মামলার তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। বর্তমানে আদালতে মামলাটি বিচারাধীন।
চট্টগ্রাম র্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নুরুল আবছার বলেন, মামলা দায়েরের পর থেকে আসামি আমিরুল পলাতক ছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার দুপুরে সীতাকুণ্ডের নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৭ এর একটি দল। আসামিকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।