চলারপথে রিপোর্ট :
ঈদ উপলক্ষে বেড়াতে নিয়ে না যাওয়ায় আখাউড়ায় স্বামীর সাথে অভিমান করে সাথী ইসলাম (২৬) নামে এক গৃহবধু আত্মহত্যা করেছে। আজ ২৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকালে আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের শিবনগর গ্রামে এ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। নিহত সাথী ওই গ্রামের অটো চালক মোস্তাফা কামালের স্ত্রী। সে কে ঘরের তীরের সাথে ওড়না প্যাচিয়ে আত্মহত্যা করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঝুলন্ত অবস্থায় নিহতের মরহদেহ উদ্ধার করে আখাউড়া থানায় নিয়ে এসেছে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ আত্মহত্যার ঘটনা বলে ধারনা করছে।
আখাউড়া থানা ওসি (তদন্ত) মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, ঈদ উপলক্ষে সাথী ইসলাম তার স্বামীকে ঘুরতে নিয়ে যেতে বলে। ঈদ মৌসুমে গাড়ি চালিয়ে ভালো রোজগার হওয়ায় পরে ঘুরতে নিয়ে যাবে বলে অটোচালক স্বামী। এরইমধ্যে একদিন ঘুরতে নিয়ে যায়। বুধবার আবার স্বামীর কাছে ঘুরতে যাওয়ার বায়না ধরে। কিন্তু বলেন এখন যাত্রী বেশি ঈদ মৌসুম শেষ হলে আবার ঘুরতে নিয়ে যাব। একথা বলে তিনি বিকালে বাড়ি থেকে চলে যায়। রাত ১২ টার দিকে মোস্তাফা কামাল বাড়িতে ফিরে ঘরের দরজা বন্ধ পেয়ে ডাকাডাকি করলে সাথী রাগ করে দরজা না খুলে তাকে অন্য ঘরে ঘুমাতে বলে। মোস্তাফা কামাল তখন তার ভাতিজার সাথে অন্য ঘরে ঘুমায়। সকাল ৬ টার দিকে স্ত্রীকে ডাকাডাকি করে কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে জানালার ফাঁক দিয়ে তার স্ত্রীকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়।
এ ব্যাপারে মনিয়ন্দ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, গত ৩ বছর আগে মোস্তাফা কামাল ও নারায়নগঞ্জ জেলার সাথী ইসলামের প্রেমের সম্পর্ক থেকে বিয়ে হয়। ঈদুল ফিতরের পর সাথী তার স্বামীকে কুটি কাঠের পুল এলাকায় ঘুরতে নিয়ে যেতে বলে।
কিন্তু ঈদের মৌসুমে যাত্রী বেশি থাকায় কুটি না নিয়ে আখাউড়া চেকপোষ্ট এলাকায় ঘুরতে নিয়ে যায়। বুধবার বিকালেও সে আবার ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার জন্য বায়না ধরে। এ নিয়ে স্বামীর প্রতি অভিমান করে সে আত্মহত্যা করেছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় স্ত্রীর দেয়া অভিযোগে মোঃ রিপন মিয়া (২৬) নামে এক যুবককে কারাদন্ড প্রদান ও জরিমানার আদেশ দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) এস.এম রাহাতুল ইসলাম এই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত ও স্থানীয় সূত্র জানায়, পৌর এলাকার দেবগ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে রিপন মিয়া নামের ওই যুবক আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা। তার স্ত্রীর অভিযোগ সে মাদকাসক্ত। মাদক সেবন করে প্রায়ই সে স্ত্রীকে মারধর করে। বিকেলে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়। এ অবস্থায় ভ্রাম্যমাণ আদালত রিপনকে মিয়াকে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও এক হাজার টাকা অর্থদন্ডের আদেশ দেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া পৌরশহরের সড়কবাজার থেকে অজ্ঞাতনামা এক বৃদ্ধা (৭৫) নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আজ ২৯ এপ্রিল সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে রেলস্টেশন সংলগ্ন শহরের সড়কবাজার এলাকার মুক্তিযুদ্ধা মোঃ সিরাজুল হক পৌর মুক্তমঞ্চ থেকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। পুলিশের ধারনা বৃদ্ধা ওই নারী অসুস্থ হয়ে মারা যান।
মরদেহ উদ্ধারকারি পুলিশ কর্মকর্তা ও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোবারক হোসেন জানান, নিহত বৃদ্ধা নারী মানসিক ভারসাম্যহীন ও ভবঘুরে প্রকৃতির ছিলেন। কথা বলতে পারতেন না। সারাদিন স্টেশনে ঘুরে ঘুরে ভিক্ষা করতেন। রাতে মুক্তমঞ্চে এসে ঘুমাতেন বলে শুনেছি। সকালে ফুটপাতের ব্যবসায়িরা মুক্তমঞ্চে লাশ পড়ে থাকতে দেখে থানায় খবর দেয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
আখাউড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক ও অফিসার ইনচার্জ মো. নুরে আলম বলেন, ভবঘুরে ও মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারীকে স্টেশন এলাকায় অনেকেই ভিক্ষা করতে দেখেছেন। তার নাম ও পরিচয় শনাক্ত করতে পুলিশ চেষ্টা করছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে অভিযান চালিয়ে বিদেশি মদসহ শেখ আবুল হায়াত নামে এক ভারতীয় নাগরিককে আটক করেছে পুলিশ।
আজ ২২ নভেম্বর শুক্রবার সকালে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা করাগারে পাঠানো হয়। এর আগে, বৃহস্পতিবার বিকেলে স্টেশনে অভিযান চালিয়ে চার বোতল বিদেশি মদসহ তাকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় ব্যাগে একটি ভারতীয় পাসপোর্ট পাওয়া যায়।
গ্রেফতারকৃত শেখ আবুল হায়াত ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার খড়গ্রাম থানার হাজেরাবাটি (মসজিদপাড়া) গ্রামের শেখ মনিরুলের ছেলে।
আখাউড়া রেলওয়ে থানার ওসি মো. জসিম উদ্দিন খন্দকার গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিকেলে ভারতীয় ওই যুবক রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এসময় তার গতিবিধি দেখে টহল পুলিশের সন্দেহ হয়। একপর্যায় পুলিশ তার সঙ্গে থাকা ব্যাগ তল্লাশি করে চার বোতল বিদেশি মদ উদ্ধারসহ তাকে গ্রেফতার করে। ওসি আরো জানান, এ বিষয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইন ও চোরাচালানের অভিযোগ একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সকালে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা করাগারে পাঠানো হয়েছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যেকোনো মূল্যে অপরাধ নির্মূল করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় প্রখ্যাত আউলিয়া হযরত শাহপীর কল্লা শহীদ (র.) মাজার শরীফ পরিচালনা কমিটির নির্বাচন আগামী শুক্রবার অনুষ্ঠিত হবে।
এ উপলক্ষে আজ ২২ নভেম্বর বুধবার সকালে পৌরশহরের খড়মপুরে মাজার শরীফ মার্কেট কাম কমপ্লেক্সের ২য় তলায় হল রুমে আইন-শৃঙ্খলা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও মাজার কমিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রশান্ত চক্রবর্তী। সভায় সদস্য পদে প্রতিদ্বন্ধিতাকারী ৪২ জন প্রার্থীসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন নির্বাচনের প্রিসাইডিং অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আবুল হোসেন, আখাউড়া থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ শফিকুল ইসলাম।
নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সুষ্ঠু, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের লক্ষে দিক নিদের্শনামূলক বক্তব্য রাখেন। সভায় জানানো হয় নির্বাচন চলাকালীন সার্বক্ষনিক একজন ম্যাজিষ্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়াও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। বিধি মোতাবেক স্বচ্ছ ভোট হবে। জাল ভোট দেওয়ার কোন সুযোগ নাই। ভোটার ভোট কক্ষে মোবাইল ফোন নিতে পারবে না। প্রার্থীর এজেন্ট মোবাইল সঙ্গে রাখতে পারবে না। ভোটদানে প্রভাবিত করতে পারবে না। এমন অভিযোগ প্রমান পাওয়া গেলে ওই এজেন্টকে অযোগ্য ঘোষণা করে বহিস্কার করা হবে। নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা করলে কিংবা সরকারি কাজে বাধা দিলে আইন অনুযায়ী জেল-জরিমানা হতে পারে বলেও সতর্ক করে দেন কর্মকর্তারা। এক্ষেত্রে ৫ দিন থেকে ৬ মাস পর্যন্ত জেল হতে পারে।
এসময় সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সকলের সহযোগিতা কামনা করা হয়। সবাইকে জয় পরাজয় মেনে নেওয়ার আহবান জানান কর্মকর্তারা। প্রার্থীরাও সুষ্ঠু ভোটের লক্ষ্যে তাদের প্রস্তাব তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ রফিকুল ইসলাম খাদেম (মিন্টু), কমিটির সদস্য ও পৌর কাউন্সিলর তাকদির খান খাদেম, কমিটির সদস্য কাজী লিটন খাদেম, মোবাশে^র আহমেদ খাদেম, সাজিদ মিয়া খাদেম, মোজাম্মেল হক খাদেম, রোস্তম কামরান খাদেম, দেলোয়ার খাদেম, ইয়াছিন খাদেম, কাজী মামুন খাদেম, সদস্য প্রার্থী এম. এন. এইচ খাদেম দুলাল, রাশেদ খান খাদেম প্রমুখ।
উল্লেখ্য, কল্লা শহীদ (র.) মাজারটি বাংলাদেশ ওয়াকফ্ এস্টেট এর তালিকাভুক্ত একটি দরগাহ শরীফ। ই. সি. নং ৪৫৬৬। ২৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি মাজার পরিচালনা করে। পদাধিকার বলে জেলা প্রশাসক ওই কমিটির সভাপতি এবং আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিনিয়র-সহ সভাপতি।
গ্রামের ৭টি পাড়া থেকে ৪২ জন প্রার্থী হয়েছেন। প্রত্যেক পাড়া থেকে ৩ জন করে ২১ জন সদস্য নির্বাচন করবেন ভোটাররা। পরবর্তীতে সদস্যের ভোটে একজন সাধারণ সম্পাদক ও একজন সহ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়। ওয়াকফ প্রশাসকের সুপারিশক্রমে ২ জন সদস্য মনোনয়ন দেওয়া হয়। কমিটির মেয়াদ ৩ বছর।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত আরো একজনের পরিচয় মিলেছে। নিহত ব্যক্তি হলেন নোয়াখালি জেলার দক্ষিণ হাতিয়ার পূর্ব সোনাদিয়া গ্রামের ইদ্রিস মিয়ার ছেলে কামাল উদ্দিন হৃদয় (৪০)। তার ৩ বছর বয়সের ১টি ছেলে এবং ৬ বছরের ১টি মেয়ে সন্তান রয়েছে।
তিনি ফলের ব্যবসা করতেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি ভিডিও কল করে স্ত্রী সন্তানের সাথে কথা বলেছিলেন এবং মাজারের দৃশ্য দেখান। সন্ধ্যা এক মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান এই মাজার ভক্ত। নিহতের শশুর জাবের হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ নিয়ে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত ৪ জনেরই পরিচয় পাওয়া গেলো। ১০ আগষ্ট বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে আখাউড়া খড়মপুর কল্লা শহীদ (র.) মাজার শরীফের ওরসে মাজারের পশ্চিমে রেলপথে আন্ত:নগর পারাবাত এক্সপ্রেস ট্রেনের থাক্কায় নদীতে পড়ে ৪ জনের মৃত্যু হয়। ৪টি মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের কমীর্রা।
আখাউড়া থানার সাব ইন্সপেক্টর আবীর আহমেদ বলেন, নিহত ব্যক্তির মোবাইলের নম্বর থেকে কল দিয়ে নিহতের পরিবারের লোকজনকে ছবি পাঠালে তারা পরিচয় নিশ্চিত করে। পরে পিবিআই নিহতের ফ্রিঙ্গার প্রিন্ট নিয়ে এনআইডির তথ্য বের করে। তাদের দেওয়া তথ্যের সাথে এনআইডি কার্ডের নাম, বয়স ও বাবার নাম মিল আছে। তবে ঠিকানা কুমিল্লা লিখা। আমরা তাদেরকে লাশ নেওয়ার জন্য শুক্রবার রাতের ট্রেনে থানায় আসতে বলেছিলাম। কিন্তু তারা না আসায় অজ্ঞাতানামা হিসেবে মরদেহটি আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামকে দেওয়ার জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নিহত কামাল উদ্দিন হৃদয়ের শশুর জাবের আহমেদ বলেন, আমার জামাতা চট্টগ্রামে ফলের ব্যবসা করতো। সে মাজারের ভক্ত ছিল। প্রতি বছরই ওরশের সময় মাজারে যেত। ওই দিন দুপুরে ভিডিও কল করে আমাদের সাথে বলে। মাজার এলাকার দৃশ্য দেখায়। মাগরিবের সময় ফোন করে বলেছিল ভিডিও কল করতে কিন্তু মোবাইলে চার্জ ছিল না। পরে ফোন চার্জ দিয়ে কল দিয়ে তার মোবাইলটি বন্ধ পাই। তারপর অনেকবার ফোন করেও ফোন সচল পাইনি। পরদিন শুক্রবার দুপুরে আখাউড়া থানা থেকে আমাদেরকে ফোন করে। পরে ছবি পাঠালে আমরা সনাক্ত করি। আমাদেরকে বলেছিল ৪/৫ ঘন্টার মধ্যে যাওয়ার জন্য। কিন্তু এত কম সময়ের মধ্যে যাওয়া সম্ভব হয়নি।
এদিকে এ ঘটনায় ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।