চলারপথে রিপোর্ট :
বড়ভাই পুলিশকে তথ্য দেওয়ায় প্রতিশোধ নিতে তার ছোটভাইকে হত্যার পর পানিতে ফেলে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চাঞ্চল্যকর কিশোর জাহিদুল হত্যার দায়ও শিকার করেছেন তারা।
আজ ২৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় সংবাদ সম্মেলনে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. ইকবাল হোছাইন এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের দক্ষিণ জাগৎসার গ্রামের এলাছ মিয়ার চার ছেলের মধ্যে জাহিদুলসহ তিন ছেলে চট্টগ্রামে বেকারিতে কাজ করতেন। ১৭ রমজান ছুটিতে বাড়িতে আসে জাহিদুল। ২৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় বাড়ি বের হয়ে আর ফেরেনি। পরদিন সকালে সুলতানপুরে একটি পুকুরে জাহিদুলের বীভৎস মরদেহ পাওয়া যায়। জাহিদুলকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। বুক ও পেটে ছুরিকাঘাত করে ভূরি বের করে ফেলা হয়। দুই হাতের কব্জির রগ ও বিশেষঅঙ্গও কেটে ফেলা হয়। দুই কানের ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত কাটা পাওয়া যায়।
ইকবাল হোছাইন আরো জানান, ঘটনা তদন্তে নামে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা পুলিশ। প্রযুক্তির সহায়তায় দক্ষিণ জগৎসার গ্রামের মৃত আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে মোহাম্মদ হোসেনকে (৩৫) গ্রেফতার করা হয়। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তার তথ্যে একই গ্রামের নজরুল ইসলাম (৪৪) ও সিয়াম (১৫) নামে দুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের বৃহস্পতিবার বিকেলে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতার অভিযান চলছে।
পূর্ব বিরোধকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড উল্লেখ করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছেন, জাহিদুলের পরিবারের সঙ্গে পূর্ব বিরোধ ছিল মোহাম্মদ হোসেনের। দীর্ঘদিন আগে একটি নারী নির্যাতন আইনের মামলায় মোহাম্মদ হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল। তাকে পুলিশ খুঁজছিল। গ্রেফতারি পরোয়ানা মূলে তাকে ধরতে জাহিদুলের বড় ভাই সানাউল পুলিশকে সহায়তা করেছিলেন। এ থেকেই ক্ষুব্ধ ছিলেন মোহাম্মদ হোসেন। ২৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় স্থানীয় কিশোর মো. সিয়ামকে দিয়ে কৌশলে সানাউলের ছোটভাই জাহিদুলকে ডেকে আনেন মোহাম্মদ হোসেন। তাকে সুলতানপুরের একটি পুকুরের পাড়ে নিয়ে মোহাম্মদ হোসেন ও তার বন্ধু নজরুল ইসলামসহ আরও দুজন মিলে কিশোর জাহিদুল ইসলামকে হত্যার পর পানিতে ফেলে দেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বেশী দামে কাঁচা মরিচ বিক্রির দায়ে ৪ ব্যবসায়ীকে ৬ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
আজ ৩ জুলাই সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক মোঃ মেহেদী হাসান পৌর এলাকার কাউতলী কাচা বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন।
অভিযানকালে ব্যবসায়িদের ক্রয়-বিক্রয়ের ভাউচার সংরক্ষণ না করা, আড়ৎদাররা খুচরা ব্যবসায়িদেরকে কোনো ধরনের রশিদ সরবরাহ না করা এবং দোকানে মূল্য তালিকা না থাকায় ৪ ব্যবসায়িকে ৬ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
জরিমানাপ্রাপ্তদের মধ্যে সততা বাণিজ্যালয়কে ৩ হাজার, মায়ের দোয়া সবজি আড়ৎদারকে ১ হাজার টাকা, সুমন সবজি আড়ৎদারকে ১ হাজার টাকা ও মোঃ জানু মিয়া সবজি আড়ৎদারকে ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এ ব্যাপারে অভিযান পরিচালনাকারী ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক মোঃ মেহেদী হাসান জানান, গত কিছুদিন ধরে বাজারগুলোতে কাঁচা মরিচের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ি নিজেদের ইচ্ছেমতো দামে কাঁচা মরিচ বিক্রি করেন।
দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশনা রয়েছে। এছাড়াও কাঁচা মরিচের দাম নিয়ে ভোক্তাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কাউতলী বাজারে অভিযান চালিয়ে ৪ ব্যবসায়িকে ৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের অভিযান অব্যাহত থাকবে। অভিযানকালে সদর থানার পুলিশ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার কালিসীমা গ্রামের দু’পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষে কমপক্ষে ২৫জন আহত হয়েছে। এসময় উভয়পক্ষের দাঙ্গাবাজরা অর্ধশতাধিক বাড়িঘরে হামলা চালিয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে আজ ১৮ ফেব্রুয়ারি রবিবার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের কালিসীমা গ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের কালিসীমা গ্রামের খানিবাড়ি গোষ্ঠী ও সিরাজ আলী বাড়ির গোষ্ঠী একটি পক্ষ এবং দোলা বাড়ি গোষ্ঠী অপর একটি পক্ষ। একটি পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের সদস্য বাবুল মিয়া ও অন্য একটি পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আরজু মিয়া। উভয়পক্ষের সাথে রয়েছে এলাকার বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যানের লোকজন। দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে এলাকায় আধিপত্য নিয়ে মত বিরোধ চলে আসছিল। এরই জেরে শুক্রবার রাতে একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে প্রথমে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
গতকাল শনিবার সকাল থেকে আজ ১৮ ফেব্রুয়ারি রবিবার দুপুর পর্যন্ত দফায় দফায় উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে সশস্ত্র সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
এসময় দাঙ্গাবাজরা কমপক্ষে অর্ধশতাধিক বাড়িঘওে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে লুটপাট করে। দফায় দফায় সংঘর্ষে কমপক্ষে ২৫জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে মামুন (৩৮), সম্রাট (১৬), মনির (৪০), রামিম (২০), সাকিব (২০), বাছির মিয়া (৫১), সোহেল (৪০), তাজিম (১০), সাগর (২৪), আশিক (৩২), রোকসানা (৫০) ও আলম (৩৪) জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসা নিয়েছেন।
বাকি আহতরা জেলা শহরের বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম হোসেন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। এ ঘটনায় ১৪জনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা আছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১০ গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসকের কাছে স্বারকলিপি প্রদান করেছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা।
আজ ৩ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বিভিন্ন স্কুলের প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষক অংশ গ্রহণ করেন। মানববন্ধন চলাকালে বৈষম্য নিরসনে প্রাথমিক শিক্ষক সমন্বয় পরিষদের সমন্বয়ক মোঃ মনির হোসেনের সভাপতিত্বে ও সমন্বয়ক মোঃ লোকমান হোসেনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন প্রধান শিক্ষক মোঃ কাউসার, শাহাদাত হোসেন, মোহাম্মদ টিপু, রুবি জাহান, বিল্লাল হোসেন, সহকারী শিক্ষক মোঃ মনির হোসেন, আমরিনা বেগম, মোঃ খালেদ হাসান, মোঃ সাদেকুর রহমান, মোঃ লোকমান হোসেন, জাহানার বেগম, মাসুদ মিয়া, মোঃ শাহজালাল, সুমন সেন গুপ্ত, মোঃ জাহাঙ্গীর, প্রণয় দেব প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড এবং শিক্ষকরা হলেন জাতি গড়ার কারিগর। শিক্ষার মানোন্নয়নের সাথে শিক্ষকদের মানোন্নয়ন ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তারপরও দীর্ঘদিন ধরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে। স্নাতক বা সমমানের যোগ্যতায় পুলিশের এস.আই, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক, মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ডিপ্লোমাধারী নার্স, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের ১০ম গ্রেডে বেতন দেয়া হচ্ছে। সেখানে একই যোগ্যতার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেডে বেতন দেয়া হচ্ছে। যেখানে ৮ম শ্রেনী পাশের একজন গাড়িচালক বেতন পায় ১২তম গ্রেডে। এ থেকে বোঝা যায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কতটা অবহেলিত।
বক্তারা আরো বলেন, শিক্ষার ভিত্তি মজবুত করতে হলে অবশ্যই প্রাথমিক শিক্ষকদের সঠিক মর্যাদা দিতে হবে। ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার দাবি বাস্তবায়ন আমাদের প্রতি করুনা নয়, এটি আমাদের অধিকার। এ জন্য অনতিবিলম্বে আমাদেরকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার দাবি জানাচ্ছি।
পরে শিক্ষকদের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
সড়কের পাশ থেকে অজ্ঞাত এক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ ৭ অক্টোবর সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সুলতানপুর-আখাউড়া আঞ্চলিক সড়কের বাসুদেব ইউপির কোট্টা সড়কের পাশ থেকে এ লাশ উদ্ধার করা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ মোজাফফর হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বিকেলে সদর উপজেলার বাসুদেব ইউপির কোট্টা সড়কের পাশে লাশ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। পরে সেখান থেকে একজন জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করে পুলিশকে অবহিত করেন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে প্রেরণ করে। ওসি আরো জানান, অজ্ঞাত নারীর বয়স আনুমানিক ২৫। তার নাম-পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। নিহতের শরীরে গোলাপী রঙের বোরখা ছিল। লাশের বিভিন্ন অংশে পিঁপড়া ও পোকামাকড় কামড়ে মাংস তুলে ফেলেছে। তাৎক্ষণিকভাবে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, রোববার দিবাগত রাতে যে কেউ তাকে হত্যা করে ফেলে যায়। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।