চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগর উপজেলার ভলাকুট ইউনিয়নের খাগালিয়া গ্রামে সংঘর্ষের ঘটনায় বাড়িছাড়া প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার। প্রতিপক্ষরা তাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে গরু, হাঁস, পাকা ধান, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে। অবশ্য লুট হওয়া ২২টি গরু উদ্ধার করে ভুক্তভোগীদের কাছে ফেরত দিয়েছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ প্রশাসন। কিন্তু তারা বিপাকে পড়েছে ধানি জমি নিয়ে।
বছরের এ সময়টায় পাকা ধান ঘরে তোলায় ব্যস্ত সময় পার করেন পরিবারের সবাই। পুলিশের গ্রেফতার আতঙ্ক আর প্রতিপক্ষের ভয়ে বাড়িছাড়া হওয়ায় সময় মতো কাটতে না পারায় ৬০টি পরিবারের ৪০০ বিঘা জমির পাকা ধান নষ্ট হচ্ছে জমিতেই। সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নিয়েছে নাসিরনগর উপজেলা প্রশাসন। আজ ২৯ এপ্রিল শনিবার গ্রামবাসীকে নিয়ে ধান কাটার জন্য গঠন করা হয়েছে ১১ সদস্যের সম্প্রীতি কমিটি।
এর আগে পাকা ফসল জমিতে নষ্ট হওয়ায় প্রতিকার চেয়ে উপজেলা সমন্বয় সভায় স্থানীয় সংসদ সদস্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ভলাকুট ইউনিয়নের বীর মুক্তিযুদ্ধা কার্তিক চন্দ্র দাস। পরে সংসদ সদস্য, পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বিবাদ এড়িয়ে দ্রুত আসামি পক্ষের ধান কেটে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার বিষয়ে পরামর্শ দেন।
সরেজমিন খাগালিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, বিশাল এলাকাজুড়ে পাকা ধান পড়ে আছে। আর কয়েকদিন গেলেই সেগুলো আর কাটা যাবে না। ফলে পাকা ধান ক্ষেতেই নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জরিফা বেগম জানান, কৃষিই আমাদের আয়ের একমাত্র ভরসা। সারা বছরের মধ্যে শুধু ধান চাষ করেই আমাদের পেট চলে। কিন্তু এবার যদি ধান না কাটতে পারি আমরা আগামী এক বছর কিভাবে চলবো।ইউএনও স্যার এসে কমিটি গঠন করে দিয়ে গেছে। আশা করছি, দ্রুতই পাকা ধান কাটতে পারবো।
সম্প্রীতি কমিটির প্রধান ও ভলাকুট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রুবেল মিয়া বলেন, আমি এ পর্যন্ত ২২টি লুট হওয়া গরু উদ্ধার করে প্রকৃত মালিকের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছি। পাকা ধান কাটার জন্য একটি সম্প্রীতি গঠন করা হয়েছে।
নাসিরনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন বলেন, মাসিক সমন্বয় সভায় আলোচনা হয় কৃষক ধান কাটতে না পারার বিষয়টি তুলে ধরা হয়। বিষয়টি সমাধানে উপজেলা প্রশাসন উদ্যোগ নিয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা ফখরুল ইসলাম বলেন, মাসিক আইনশৃঙ্খলা ও সমন্বয় সভায় কৃষকের পাকা ধান কাটার অনিশ্চিয়তার বিষয়ে আলোচনা হয়। শনিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পক্ষকে নিয়ে বসে ধান কাটার বিষয়ে একটি সম্প্রীতি কমিটি গঠন করে দিয়েছি। আশা করছি, পাকা ধান কাটতে সমস্যা হবে না।
গত ২২ এপ্রিল ঈদের দিন বিকালে খাগালিয়া ৩নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য রব মিয়া ও সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল হামিদের পক্ষের লোকজন খাগালিয়া নতুন বাজার এলাকায় সরকারি খাস জায়গায় ধান মাড়াইয়ের ‘খলা’ স্থাপনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়ালে জামাল মিয়া নামে এক কৃষক নিহত হন। এরপরই শুরু হয় প্রতিপক্ষের বাড়িতে লুটপাট।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগর উপজেলায় আগস্টে সর্বাধিক দিন লাইব্রেরিতে উপস্থিত থেকে বই পড়ায় ২৩ শিক্ষার্থীকে পুরস্কার দেওয়া হয়।
১২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মুহাম্মদ ইমরানুল হক ভূঁইয়া শিক্ষার্থীদের হাতে এ পুরস্কার তুলে দেন।
পুরস্কার পাওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন বালিকা বিভাগে ২৭ দিন উপস্থিত থেকে ১ম হওয়া সাদিয়া বুশরা, হাফছা বেগম, নুসরাত সাকুরা, সুমাইয়া আফরিন, মহিমা রায়, সৃষ্টি রায়, লামিয়া আক্তার, আদ্রিতা, নুসরাত জাহান সোহা ও শাহ সামিয়া। ২০ দিন উপস্থিত থেকে ২য় হওয়া ইস্পা আক্তার। ১১ দিন উপস্থিত থেকে ৩য় হওয়া ইসরাত সানিয়া আক্তার। বালক বিভাগে ২৭ দিন উপস্থিত থেকে ১ম হওয়া স্নেহাল গোপ পান্না, তন্ময় সরকার, সৌমিক রায়, গগনদীপ কুন্ডু, পৃথিবী দাস সূর্য্য, আব্দুল গফফার মাহুদী, সৌভিক রায়, আরিয়ান ইসলাম সোহান ও ওমর ফারুক। ২৫ দিন উপস্থিত থেকে ২য় হওয়া সপ্তদীপ কুন্ডু। ২২ দিন উপস্থিত থেকে ৩য় হওয়া ক্বারি মো. আব্দুল্লাহ।
নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইমরানুল হক ভূঁইয়া জানান, বাংলাদেশের অনেক উপজেলায় কোন পাবলিক লাইব্রেরি নেই। নাসিরনগরবাসীর সৌভাগ্য যে উপজেলায় একটি পাবলিক লাইব্রেরি রয়েছে। সেটিতে পাঠক একেবারে ছিলো না। পাঠক বাড়ানোর লক্ষ্যে ফেব্রুয়ারি থেকে পুরস্কার দেওয়া শুরু হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় ৫৫ কিলোমিটার সড়কের পিচ উঠে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। গত কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণে এসব রাস্তা আরো বেহাল হয়ে পড়েছে। গর্তে যানবাহন আটকে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এসব সড়কে হেঁটে চলা দায় হয়ে পড়েছে এলাকাবাসীর।
নাসিরনগর উপজেলার ধরমন্ডল, হরিপুর, চাতলপার, গোয়ালনগর, চাপরতলা, গোকর্ণ, কুন্ডা ও সদরের বিভিন্ন সড়কে চালক-যাত্রী ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চার বছর ধরে উপজেলার বিভিন্ন সড়ক বেহাল। সংস্কারও নেই। চার বছরে এসব সড়কে দুই শতাধিক যানবাহন দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। ঝাঁকুনি থেকে বাচতে হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন অনেকে। রোগী, বয়স্ক ব্যক্তি ও অন্তঃসত্ত্বা নারীদের নিয়ে পথ চলতে বেশি সমস্যা হচ্ছে।
জানা গেছে, উপজেলায় এলজিইডির ১০৩ কিলোমিটার পাকা সড়ক রয়েছে। এর মধ্যে গত বছরের বন্যায় প্রায় ৫৫ কিলোমিটার সড়ক, ১০টি সেতু-কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসব সড়কের অধিকাংশ সংস্কার হয়নি। তবে ২০২১-২২ ও ২৩ অর্থবছরে সদর থেকে তিলপাড়া হয়ে চিতনা পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার রাস্তা মেরামত করা হয়েছে।
নাসিরনগর থেকে ধরমন্ডল ইউনিয়নে যেতে ৯ কিলোমিটার পাকা সড়ক রয়েছে। এ রাস্তা ব্যবহার করে পাশের লাখাই উপজেলার ২০টি গ্রামসহ ধরমন্ডল ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রাম। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় ইট, বালু ও কার্পেটিং উঠে গিয়ে সড়ক খানাখন্দে ভরে গেছে। রাস্তার অবস্থা এতটাই খারাপ যে মানুষ হেঁটে যেতেও ভয় পায়।
ধরমন্ডল ইউনিয়নের বাসিন্দা আতর চান বিবি বলেন, ‘গাড়িত উঠলে ঝাক্কি লাগে। মাজায় ব্যথা করে। তাই হাইট্ট্যা (হেঁটে) বাড়িত যাইতাছি।’
সদরের কলেজ মোড় থেকে গোকর্ণ ও হরিপুর ইউনিয়ন হয়ে পাশের উপজেলা মাধবপুর পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার সড়কে প্রায় ১৮ হাজার গর্তের সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি এলাকাবাসীর। তিন ইউনিয়নের ৩৫টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ ভোগান্তিতে আছে। কলেজ মোড় থেকে গোকর্ণ ইউনিয়নের ছৈয়ারকুড়ি বাজার পর্যন্ত সাত কিলোমিটার সড়কের প্রতি পাঁচ ফুট দূরত্বে বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে।
গোকর্ণ সৈয়দ ওয়ালী উল্লাহ স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী তায়েবা আক্তার বলল, তারা তিন কিলোমিটার হেঁটে বাড়িতে যাওয়া-আসা করে প্রতিদিন। যানবাহন থাকলেও ঝাঁকুনির ভয়ে কেউ গাড়িতে উঠতে চায় না।
হরিপুর ইউনিয়নের মঞ্জুর আলী বলেন, ‘রাস্তার অবস্থা এত খারাপ যে এক দিন গাড়িত উঠলে তিন দিন ঘুমান লাগে। ভোটের সময় নেতারা রাস্তা কইরা দেওনের কথা কইলেও ভোট চইলা গেলে দেয় না।’
স্বস্তিতে নেই কুন্ডা, ফান্দাউক ও চাপরতলা ইউনিয়নের লোকজনও। তাঁদের অভিযোগ, কুন্ডা ইউনিয়নের তুল্লাপাড়া থেকে মছলেন্দপুর পর্যন্ত সাত কিলোমিটার, মছলেন্দপুর থেকে রানিয়াচং আশ্রয়ণ প্রকল্প পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটার পাকা রাস্তা এখন কাঁচা সড়কে পরিণত হয়েছে।
গোকর্ণ ইউনিয়নের বেড়িবাঁধের রাস্তা এবং ওই এলাকার দুটি সেতু ভেঙে রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। বর্ষায় অতিরিক্ত পানি হলে বেড়িবাঁধ ভেঙে এলাকার বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হবে বলে শঙ্কা স্থানীয়দের।
বুড়িশ্বর ইউনিয়নের বেনীপাড়া গ্রামে হবিগঞ্জ-নাসিরনগর-সরাইল আঞ্চলিক মহাসড়কের একটি সেতুর রেলিং ভেঙে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বাঁশ দিয়ে বেঁধে সেতুটি রক্ষার চেষ্টা করছে সংশ্লিষ্টরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ডেইজি রায় টুম্পা বলেন, বিষয়টি জানা ছিল না তাঁর। তবে সেতুর অবস্থা দেখে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনজুর রহমান বলেন, কুন্ডা ও গোকর্ণ বেড়িবাঁধ এলাকায় নতুন করে সেতু নির্মাণ করছেন না তারা। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সেতুটি দেখভাল করবে।
উপজেলা প্রকৌশলী রবিউল হোসাইন বলেন, এসব রাস্তা ও সেতুর টেন্ডার প্রক্রিয়া চলমান। বর্ষায় যেন জনদুর্ভোগ কমানো যায়, সে জন্য কিছু রাস্তা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সংস্কার করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আর শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে নাসিরনগর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছে। এসময় প্লে-কার্ড হাতে নিয়ে অবস্থান নেয় তারা।
১৭ জুলাই বুধবার সকালে নাসিরনগর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা কলেজ ক্যাম্পাসের সামনে এই বিক্ষোভ করে। এক পর্যায়ে পুলিশের বাঁধা অতিক্রম করে শিক্ষার্থীরা প্রধান সড়কে নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এসময় পুলিশ বাধাঁ দিলে শিক্ষার্থী ও পুলিশের মাঝে উত্তেজনা দেখা দেয়।
পরে পুলিশ বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদেরকে কলেজ ক্যাম্পাসে ফিরে যেতে অনুরোধ করলে নাসিরনগর-সরাইল সড়কের আধুনিক হাসপাতালের সামনে থেকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে চলে যায়।
এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আর শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাসহ হত্যার বিচার করতে হবে আমরা বিচার চাই।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগরের বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগে এক পরিবারের সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আজ ২৮ আগস্ট সোমবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মো. ছোট্ট মিয়ার বাড়িতে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, ছোট্ট মিয়া একজন কৃষক। তিনি অন্যের জমিতে কাজ করে যা উপার্জন করেন তা দিয়ে পরিবার চালান। সোমবার ১১টার দিকে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করছেন পরিবার। বেলা ১২টার দিকে নাসিরনগর ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে ৩০ মিনিট চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় তিন কক্ষবিশিষ্ট দুই চালা আধপাকা ঘরটি পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
ঘরের মালিক ছোট্ট মিয়া বলেন, ‘আগুনে আমার ঘরের সব কাইরা নিছে। আমি মাইনসের খেতে কাম কইরা ৫০ হাজার টেহা (টাকা) জমাইছিলাম। ভাবছিলাম বন্যার পানি কমলে টেহা দিয়া একটা গরু কিনুম, কিন্তু সেই আশা একবারে শেষ।’
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ছোট্ট মিয়া একজন দরিদ্র কৃষক। জানতে পেরেছি প্রায় চার লাখ টাকা মূল্যের ক্ষতির শিকার হয়েছেন তিনি। আমরা ওই পরিবারকে সরকারিভাবে সহায়তা করার কথা ভাবছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগে একজন কৃষকের বেশকিছু ক্ষয়ক্ষতির খবর পেয়েছি। জেলাপ্রশাসক স্যারের সঙ্গে কথা বলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটিকে সহায়তা করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুইপক্ষে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারীসহ ১০জন আহতের খবর পাওয়া গেছে।
আজ ২ সেপ্টেম্বর শনিবার সকালে উপজেলার সদরের পশ্চিমপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন- মীর ফাহাদ (৩৮), মীর বশির আহমেদ (৬০), মীর আলতাফ হোসেন (৪০), মীর রাসেল (৫২), মীর মিনহাজ (৫০), মীর জালাল (৪৫), মীর রুবেল (৩৮), মীর নাসির (১৮), বাসিরুন্নেসা (৭০), মীর মাসুমা (২২)। এদের মধ্যে আশংকাজনক অবস্থায় মীর ফাহাদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা প্রেরণ করা হয়েছে। তারা সবাই পারিবারিকভাবে একে অপরের আত্মীয় ।
ভুক্তভোগী ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা মীর বশিরের সাথে চাচাত ভাই মীর কাশেমের জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। প্রায় একযুগ আগে মীর কাশেম সদর ইউনিয়নের কুলিকুন্ডা গ্রামের মীর আফতাজ উদ্দিনের কাছে জমি বিক্রি করে। পরবর্তীতে দেড় বছর আগে আফতাজের কাছ থেকে সেই জায়গা ক্রয় করে মীর বশির। কিন্তু মীর বশির জায়গার দখল নিতে পারছিল না। ঘটনার দিন উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে সেই জমি মাপার কথা ছিল। বেলা ১১টার দিকে উভয়পক্ষ উপস্থিত হলে তাদের মধ্যে বাগবিতন্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে। এতে উভয়পক্ষের নারীসহ প্রায় ১০জন আহত হয়।
আহত এডভোকেট মীর রাসেল জানান, আমার ভাই মীর বশির একটি জায়গা ক্রয় করে। কিন্তু সেই জায়গা মীর কাশেম দখল করে রেখেছে। আজ জায়গাটি দখল করতে গেলে মীর কাশেমের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমাদের উপর হামলা চালায়।
এ বিষয়ে মীর কাশেমের ভাতিজা মীর জালাল জানান, আমাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা। আমরা কাউকে আক্রমণ করিনি, তারাই আমাদের উপর হামলা করেছে।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহাগ রানা বলেন, ঘটনা শোনার সাথে সাথেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। প্রকৃত ঘটনার সাথে জড়িত দোষী ব্যক্তিদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।