চলারপথে রিপোর্ট :
এনটিভিতে প্রচারিত জনপ্রিয় প্রতিযোগিতা ‘পিএইচপি কুরআনের আলো’-এর রানার্সআপ হাফেজ ক্বারী সালমান ফারসিকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।
আজ ২৯ এপ্রিল শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার খান্দুরা গ্রামে আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেশবরেণ্য আলেম-উলামা ও স্থানীয়দের উপস্থিতিতে তাকে স্বর্ণপদক দেয় সৈয়দ মুর্শেদ কামাল স্মৃতি সংসদ।
সৈয়দ মাসউদ বখত কায়েদের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শায়খ সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া আজহারী, পীর মাওলানা আলাউদ্দিন আল কাদেরী, নাসিরনগর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ ফজলে ইয়াজ হুসেন চিশতী, খান্দুরা ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা জহিরুল ইসলাম, সৈয়দ মুর্শেদ কামাল স্মৃতি সংসদের প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ সাজ্জাদ মুর্শেদ সোহান, সৈয়দ রাফিউল আব্দাল এবং সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম সৈয়দ মুর্শেদ কামালের বড় সন্তান সৈয়দ শাফায়েত মুর্শেদ শুভ।
অনলাইন ডেস্ক :
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের বার্তা ও আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য কিছু জাতীয়ভিত্তিক সংস্কার সম্পন্ন করা জরুরি হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠাকে কেন্দ্রে রেখে ইতোমধ্যে প্রাথমিকভাবে ৬টি কমিশন গঠন করা হয়েছে। এসব কমিশন আগামী ১ অক্টোবর থেকে কাজ শুরু করবে।
আজ ১১ সেপ্টেম্বর বুধবার অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের এক মাস পূর্তি উপলক্ষ্যে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ড. ইউনূস বলেন, ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মুখে এবং হাজারো মানুষের আত্মদানের বিনিময়ে বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের বার্তা ও আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য একটি অভূতপূর্ব সময় ও সুযোগ আমরা অর্জন করেছি। এর বাস্তবায়ন তথা বাংলাদেশে ফ্যাসিজম বা স্বৈরতান্ত্রিক শাসন পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা রোধ এবং জনমালিকানা ভিত্তিক, কল্যাণমুখী ও জনস্বার্থে নিবেদিত একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্যে কিছু জাতীয়ভিত্তিক সংস্কার সম্পন্ন করা জরুরি হয়ে পড়েছে। উক্ত সংস্কার ভাবনার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা।
তিনি বলেন, আমরা যেহেতু জনগণের ভোটাধিকার ও জনগণের মালিকানায় বিশ্বাস করি, সেহেতু নির্বাচনব্যবস্থার উন্নয়নে আমাদের সংস্কার ভাবনায় গুরুত্ব পেয়েছে। আমরা মনে করি নির্বাচনের নামে সংখ্যাগরিষ্ঠতার একাধিপত্য ও দুঃশাসন মানুষের ওপর চাপিয়ে দেওয়া বা এর মাধ্যমে এক ব্যক্তি বা পরিবার বা কোনো গোষ্ঠীর কাছে সকল ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়। এসব আশঙ্কা রোধ করার জন্য নির্বাচনের সাথে সম্পর্কিত নির্বাচন কমিশন সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কারের কথা আমরা ভাবছি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনব্যবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুলিশ প্রশাসন, জনপ্রশাসন, বিচার প্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন- এই চারটি প্রতিষ্ঠানের সংস্কার করা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য অপরিহার্য। এসব প্রতিষ্ঠানের সংস্কার জনমালিকানা ভিত্তিক, জবাবদিহিমূলক ও কল্যাণমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায়ও অবদান রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি। এর পাশাপাশি করে সমাজের সকল স্তরের মানুষের প্রতিনিধিত্ব ও স্বার্থ নিশ্চিত করার জন্য এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বার্তাকে প্রতিফলিত করার জন্য সাংবিধানিক সংস্কারের প্রয়োজন আমরা অনুভব করছি।
এসব বিষয়ে সংস্কার করার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসাবে ছয়টি কমিশন গঠন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এসব কমিশনের কাজ পরিচালনার জন্য বিষয়ভিত্তিক অভিজ্ঞতা বিবেচনা করে ছয়জন বিশিষ্ট নাগরিককে কমিশনগুলো পরিচালিনার দায়িত্ব দিয়েছি। এরপর আরও বিভিন্ন বিষয়ে কমিশন গঠন প্রক্রিয়া আমরা অব্যাহত রাখবো।
প্রধান উপদেষ্টা জানিয়েছেন, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ড. বদিউল আলম মজুমদার, পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে কাজ করবেন সরফরাজ চৌধুরী, বিচারবিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ড. ইফতেখারুজ্জামান, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে ড. শাহদীন মালিক দায়িত্ব পালন করবেন।
‘এসব কমিশনের অন্য সদস্যদের নাম কমিশন প্রধানদের সাথে আলোচনা করে ঠিক করা হবে। কমিশনগুলোর আলোচনা ও পরামর্শসভায় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, ছাত্র-শ্রমিক-জনতা আন্দোলনের প্রতিনিধি, নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।’
ড. ইউনূস বলেন, পূর্ণাঙ্গভাবে গঠিত হওয়ার পর কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে তার কাজ আগামী পহেলা অক্টোবর থেকে শুরু করতে পারবে বলে আশা করছি এবং এটি পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে আমরা ধারণা করছি। কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে সরকার পরবর্তী পর্যায়ে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে পরামর্শসভার আয়োজন করবে। চূড়ান্ত পর্যায়ে ছাত্র সমাজ, নাগরিক সমাজ, রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, সরকারের প্রতিনিধি নিয়ে ব্যাপকভিত্তিক তিন থেকে সাত দিনব্যাপী একটি পরামর্শসভার ভিত্তিতে সংস্কার ভাবনার রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে। এতে এই রূপরেখা কীভাবে বাস্তবায়ন হবে তার একটি ধারণাও দেওয়া হবে।
‘এই আয়োজন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বার্তা বাস্তবায়ন এবং রাষ্ট্র পুনঃনির্মাণ তাগিদের ঐক্যবন্ধনে গোটা জাতিকে শক্তিশালী ও আশাবাদী করে তুলবে বলে আমাদের বিশ্বাস।’
নাসিরনগর প্রতিনিধি :
নাসিরনগরে বাস ও সিএনজি চালিত অটোরিক্সার মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে সিএনজি চালকসহ নয়জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।আজ ৩১ জানুয়ারি মঙ্গলবার সকাল নয়টার দিকে উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের আশুরাইল গ্রামের বটতলা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় অটোরিকশাটি দুমড়েমুচড়ে সড়কের পাশে ছিটকে পড়ে।
দুর্ঘটনার তথ্য নিশ্চিত করেছেন নাসিরনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুল্লাহ সরকার। তিনি জানান, আহত সবাইকে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আহতরা হলেন- বায়জিদ মিয়া, মো. শাহআলম মিয়া, খাদিজা আক্তার, লাল চান বাদশা, আলম মিয়া, খুকু মনি, নাজমা বেগম, অহিদ মিয়া ও ফুরকান মিয়া। এর মধ্যে লাল চান বাদশা, আলম মিয়া, খুকু মনি, নাজমা বেগম,অহিদ মিয়া ও ফুরকান মিয়ার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, হবিগঞ্জ থেকে পালকি পরিবহনের একটি ঢাকাগামী বাস ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ছেড়ে আসা লাখাইগামী সিএনজি অটোরিকশা আশুরাইল এলাকায় আসার পর মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় সিএনজি অটোরিক্সায় থাকা সকল যাত্রী মারাত্মক আহত হয়। দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা মুমূর্ষু অবস্থায় নারী-শিশুসহ নয়জনকে উদ্ধার করে নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সবাইকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেফার করেন।
ওসি হাবিবুল্লা সরকার জানান, দুর্ঘটনার পর বাসচালক পালিয়েছে। বাসটি জব্দ করা হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
কিশোরগঞ্জের বহুল আলোচিত পাগলা মসজিদের ৮টি দানবাক্সের এবার মিলেছে ১৯ বস্তা টাকা। আজ ৬ মে শনিবার সকাল ৮টায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এটিএম ফরহাদ চৌধুরীর নেতৃত্বে আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছে। এরপর সেখানে রূপালী ব্যাংকের ডিজিএম শাহীদুর রহমান এবং ব্রাঞ্চ ম্যানেজার ও এজিএম রফিকুল ইসলামও উপস্থিত হন।
টাকাগুলো মসজিদের দোতলার ফ্লোরে ঢেলে মূল্যমান অনুযায়ী পৃথক করা হচ্ছে। পাগলা মসজিদ ইসলামিক কমপ্লেক্সের ছাত্র-শিক্ষক এই কাজে অংশ নিয়েছেন। এর আগে গত ৭ জানুয়ারি দানবাক্সে পাওয়া গিয়েছিল ৪ কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা। সঙ্গে ছিল বিদেশী মুদ্রা এবং সোনা ও রূপার গহনা। এবারও বিদেশী মুদ্রা এবং গহনা পাওয়া গেছে। তিনমাস অন্তর দান বাক্সগুলো খোলার রেওয়াজ রয়েছে। কখনও বিভিন্ন কারণে কিছুটা বিলম্বও হয়। গণনাশেষে এসব টাকা রূপালী ব্যাংকে মসজিদের হিসাবে জমা করা হবে। বিভিন্ন এলাকার মানুষজন মানত হিসেবে পাগলা মসজিদে এসব টাকা ও সোনাদান দান করে থাকেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
প্রভাবশালীদের দখলে চলে যাচ্ছে একের পর এক বিল। অপরিকল্পিতভাবে কাটা হচ্ছে মাছের ঘের। নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি। ধবংস হচ্ছে দেশীয় মাছ ও জীববৈচিত্র্য।
ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন আইন থাকলেও প্রভাবশালীরা এই আইনের তোয়াক্কা না করে অপরিকল্পিতভাবে কেটে যাচ্ছেন একটার পর একটা মাছের ঘের। আর এই বিল, দেশীয় মাছ, জীববৈচিত্র্য, তিনফসলি জমি রক্ষা ও অপরিকল্পিতভাবে মাছের ঘের কাটার প্রতিবাদে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
আজ ৩০ মে মঙ্গলবার উপজেলার কলাবাড়ি ইউনিয়নের বুরুয়া দক্ষিণপাড়া এলাকার নারী-পুরুষ বুরুয়া বিলে হাঁটুপানিতে নেমে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
এ সময় গৃহিণী চায়না হালদার, নয়নতারা মন্ডল, আধুরী বৈদ্য, সবিতা মজুমদার, কৃষক মঙ্গল বিশ্বাস, অরবিন্দ দত্ত, পরিতোষ হাজরা, বুদ্ধিমন্ত বিশ্বাস, পরিতোষ মজুমদার, মৃণাল বৈদ্য বক্তব্য রাখেন।
বুদ্ধিমন্ত বিশ্বাস বলেন, এই বুরুয়া বিলে গত ৪০ বছর ধরে আমি দেশীয় মাছ ধরে সংসার চালাই। এখন এখানে ঘের করা হলে আমার অন্য পেশায় গিয়ে সংসার চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। আমার মতো আরো অনেকে এই বিল থেকে দেশীয় মাছ ধরে সংসার চালায়। তাই আমরা এলাকাবাসী চাই না এখানে ঘের কেটে এই দেশীয় মাছ ধবংস করা হোক।
চায়না হালদার বলেন, এই বিল থেকে ঘাস কেটে আমরা আমাদের গরুকে খাওয়াই। এখন এখানে ঘের কাটলে এই বিলে আর ঘাস পাওয়া যাবে না। আর ঘাস পাওয়া না গেলে আমাদের গরু পালনে সমস্যায় পড়তে হবে।
কৃষক মৃণাল বৈদ্য বলেন, এলাকার চিত্ত মজুমদার, স্বপন মজুমদার, দিলীপ মজুমদার, মনোতোষ মজুমদারসহ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি মিলে বুরুয়া বিল দখল অপরিকল্পিতভাবে মাছের ঘের তৈরি করছে। এভাবে মাছের ঘের তৈরি করলে দেশীয় মাছ, জীববৈচিত্র্য ধবংস হয়ে যাবে।
মাছের ঘের তৈরি কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনোতোষ মজুমদার বলেন, ‘এই বিলে আমাদের প্রায় ১০০ বিঘা জমি আছে। এই জমি বছরের প্রায় অধিকাংশ সময়ই পানিতে ডুবে থাকে। আমরা সকলে মিলে বিলের কিছু এলাকায় বাঁধ দিয়ে এই পানি নামানোর জন্য একটি স্লুইস গেট নির্মাণের চেষ্টা করছি। এভাবে বাঁধ দিয়ে স্লুইস গেট নির্মাণের মাধ্যমে পানি নামালে আমাদের জমিগুলো আর অনাবাদি থাকবে না। এ জন্য আমরা কয়েকজন মিলে এখানে মাছের ঘের তৈরি করছি।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, ‘দেশীয় মাছ, জীববৈচিত্র্য ও ফসলি জমি রক্ষার জন্য আমরা নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। এ ছাড়া ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন আইন মেনে পরিকল্পিতভাবে যাতে মাছে ঘের কাটা হয় সে জন্য আমরা প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছি।’
অনলাইন ডেস্ক :
নরসিংদীর নিজামুল হক (৫৪) নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে মোবাইল ফোনে দাদা-নাতনি সম্পর্ক গড়ে তোলেন গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার এক নারী। এরপরই নিজামুলকে ডলার দেওয়ার কথা বলে তার সাড়ে ছয় লাখ টাকা হাতিয়ে নেন ওই রহস্যময়ী নারী। এ ঘটনায় প্রতারক চক্রের মূলহোতা শরিফুল ইসলামকে (৩৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আজ ১০ ফেব্রুয়ারি শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার কামাল হোসেন।
গ্রেফতার শরিফুল ইসলাম সাদুল্লাপুর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের এনায়েতপুর গ্রামের মৃত গোলাম হোসেনের ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নরসিংদীর মৃত আলাউদ্দিনের ছেলে নিজামুল হকের মোবাইল ফোনে প্রায় তিন মাস আগে এক অজ্ঞাতনামা নারী ফোন করে দাদা-নাতনির সম্পর্ক সৃষ্টি করেন। এরপর ওই নারী নিজের দারিদ্রতার কথা বলে জানান – তার কাছে কিছু আমেরিকান ডলার আছে। তিনি এগুলো নিজামুল হককে দেওয়ার প্রস্তাব করেন। এরপর নিজামুল ১৩ জানুয়ারি ব্যবসার কাজে রংপুর এলে ওই নারীর অনুরোধে সাদুল্লাপুরে আসেন এবং তার বাড়িতে যান। সেখানে খাওয়া-দাওয়া শেষে ওই নারী তার পিতা হিসেবে একজনকে পরিচয় করিয়ে দেন।
একপর্যায়ে একটি ব্যাগে করে প্রায় এক হাজার পিস আমেরিকান ডলার তাকে দেখান এবং বলেন যে এখানে আট হাজার ডলার আছে। এই ডলারগুলো নিজামুলকে নিয়ে তাদেরকে সাত লাখ টাকা দিতে বলেন তিনি। তবে ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তির কাছে টাকা না থাকায় তিনি বাড়িতে ফিরে যান। এরপর থেকে ওই নারী বিভিন্ন সময় ফোন করে তাকে আমেরিকান ডলারগুলো ক্রয় করার জন্য অনুনয়-বিনয় করে বিরক্ত করতে থাকেন।
এ অবস্থায় ৬ ফেব্রুয়ারি দুপুরের দিকে সাড়ে ছয় লাখ টাকা নিয়ে নিজামুল তার মেয়ের জামাইসহ নরসিংদী থেকে রংপুরে আসেন। তিনি বিভিন্ন ব্যবসায়িক কার্যক্রম করার পর সাদুল্লাপুরের ধাপেরহাট বাজারের চতরাগামী পাকা রাস্তার পাশে পৌঁছালে ওই নারী নিজামুলকে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে যান। এরপর অনেকগুলো লোকের সামনে ডলারের বিনিময়ে তার থেকে ছয় লাখ টাকা নেন। পরে নিজামুলকে ওই নারীর সহযোগীরা মোটরসাইকেলে উঠিয়ে ধাপেরহাট বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছে দেন। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তি গাড়িযোগে নরসিংদীতে চলে যান। কিন্তু, পরে তিনি বুঝতে পারেন যে তিনি প্রতারণার শিকার। তখন তিনি সাদুল্লাপুর থানায় এজাহার দাখিল করেন।
ওই অভিযোগের ভিত্তিতে সাদুল্লাপুর থানা পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে বাদীর লুণ্ঠিত পাঁচ লাখ টাকা, অপরাধ কাজে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, চার্জারভ্যান ও নকল ডলার উদ্ধার করেন। ওই সময় প্রতারক চক্রের মূলহোতা শরিফুল ইসলাম গ্রেফতার হন।