চলারপথে রিপোর্ট :
তিতাস নদীর ওপর নির্মিত শেখ হাসিনা ওয়াই সেতুর কোটি টাকার জমি দখল করে দোকানপাট নির্মাণ করা হয়েছে। আরো দোকানঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে দোকানপাট নির্মাণ করে ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ অবস্থায় সেতুর জায়গা দখলমুক্ত করতে ইউএনওর কাছে আবেদন করেছেন হোমনা উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের আহসান উল্লাহ নামে এক ব্যবসায়ী। গত ১৫ মার্চ আবেদন করলেও রহস্যজনক কারণে বন্ধ হচ্ছে না দোকান নির্মাণের কাজ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর ও কুমিল্লার হোমনা উপজেলার মধ্যে সড়ক যোগাযোগ রক্ষা করতে নির্মাণ করা হয় শেখ হাসিনা ওয়াই সেতু। এই সেতুর নিচের এলজিইডির জায়গায় দোকানঘর তুলে দখল করে নিয়েছেন কয়েকজন ব্যক্তি। কয়েকজন ব্যক্তি দোকানঘর নির্মাণ করে দখল কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বাধা দিতে গেলে উল্টো হুমকি-ধমকি ও মিথ্যা মামলার ভয় দেখানোর ঘটনা ঘটছে। সেতুর পিলার ঘেঁষে দোকানপাট নির্মাণ করার কারণে বহু বছরের পুরোনো রামকৃষ্ণপুর বাজারে যাওয়ার রাস্তা বন্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমন কি, মানুষের চলাচলের রাস্তাও বন্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বুধবার সরেজমিন দেখা গেছে, সেতুর নিচে সরকারি জমি দখল করে দোকানঘর নির্মাণ করছে ১২-১৫ জন। পিলার ঘেঁষে এসব দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। বাজারের ব্যবসায়ীদের দাবি, দোকান নির্মাণে ভূমি অফিস থেকে বাধা দেওয়া হলেও মানছে না কেউ।
অভিযোগদাতা আহসান উল্লাহ বলেন, ‘রামকৃষ্ণপুর গ্রামের শাহ আলম এলজিইডির জায়গা দখল করে দোকানঘর নির্মাণ করছেন। এতে আমার ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, হাঁস-মুরগি ও গরুবাজারের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই আমি বাদী হয়ে ইউএনওর কাছে অভিযোগ করেছি। ভূমি অফিস থেকে বাধা দিলেও মানছেন না শাহ আলম গংরা।’
জানা গেছে, ১০৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দেশের একমাত্র ওয়াই আকৃতির শেখ হাসিনা তিতাস সেতুটি ২০১৮ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন করা হয়। আগে সেতুটি দেখার জন্য আসতেন দর্শনার্থীরা। কিন্তু সেতুর জায়গা দখল করে দোকানপাট নির্মাণ করায় সৌন্দর্য ফিকে হয়ে গেছে। দখলদারদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবারের ঈদের সময় সেতু এলাকায় ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা।
স্থানীয়দের জোর দাবি, ভূমিখেকোদের কবল থেকে জমি উদ্ধার করে রামকৃষ্ণপুর বাজার রক্ষা ও সেতুর সৌন্দর্য ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
রামকৃষ্ণপুর বাজারের ইজারাদার সফিকুল ইসলাম আকন্দ বলেন, সেতুটি নির্মাণের পরে বাঞ্ছারামপুর, হোমনা ও মুরাদনগরে যাতায়াতে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসছে। এতে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে কর্মচাঞ্চল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। বিষয়টিকে পুঁজি করে সেতুর জায়গা দখল করে দোকানপাট নির্মাণ করছেন রামকৃষ্ণপুর গ্রামের শাহ আলম। এ কারণে আমি ইজারা নিয়েও গরুবাজার বসাতে জায়গা পারছি না। অবৈধ দখল বন্ধ না হলে সেতুর দুই পাশের আরও জায়গা বেহাত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
অভিযোগের বিষয়ে শাহ আলম বলেন, ‘শুধু আমি না, অনেকেই দোকানঘর নির্মাণ করে দখল করছেন। তাদের দেখে আমিও দোকানঘর নির্মাণ করেছি। সরকারের প্রয়োজন হলে জায়গা ছেড়ে দেব।’
চান্দেরচর ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (নায়েব) আমান উল্লাহ জানান, উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নির্দেশে সরকারি জমি দখলকারী শাহ আলমকে নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু বাধা অমান্য করে দোকানঘর নির্মাণ করছে।
হোমনা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রকৌশলী সাইফুল ইসলামের ভাষ্য, সেতুর জায়গা অধিগ্রহণ করেছে এলজিইডি বিভাগ। জমির মূল্যও পরিশোধ করা হয়েছে। এ জমি দখল করতে দেওয়া হবে না।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইউসুফ হাসান জানান, অভিযোগ পেয়ে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের মাধ্যমে নিষেধ করা হয়েছে। সমস্ত স্থাপনার তালিকা করে উচ্ছেদ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্ষেমালিকা চাকমার দাবি, অভিযোগ পেয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। জমিটি এলজিইডি বিভাগের হওয়ায় সরাসরি ব্যবস্থা নিতে বিলম্ব হচ্ছে। দখল বন্ধ না হলে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম জানান, ওয়াই সেতুর নিচের বাঞ্ছারামপুর অংশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। হোমনা অংশে অবৈধ দখলদার থাকলে তা দ্রুত অপসারণ করার জন্য হোমনা উপজেলা প্রশাসনকে অনুরোধ করা হবে।
রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন আগামী জুন মাসে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথে ট্রেন চলাচল করবে। এতে দুই দেশের সম্পর্ক আরো জোরদার হবে। তিনি রোববার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের শীবনগর এলাকায় নির্মাণাধীন আখাউড়া-আগরতলা রেলওয়ে প্রকল্প পরিদর্শনকালে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের শুন্যরেখায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এইকথা বলেন।
পূর্বাঞ্চলীয় রেলপথ সম্পর্কে রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ধীরে ধীরে সবগুলো রেলপথকে মিটারগেজ থেকে ব্রডগেজ লাইনে রূপান্তর করা হচ্ছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথকে পর্যায়ক্রমে মিটার গেজ থেকে ব্রডগেজে পরিনত করা হচ্ছে। তেমনিভাবে আখাউড়া থেকে সিলেট পর্যন্ত যে রেলপথ আছে সেটিকেও ব্রডগেজে রূপান্তর করা হবে।
এ সময় মন্ত্রী আরো বলেন, আমরা অতীতে দেখেছি আন্দোলনের নামে পাকিস্তানের ভাবার্দশে বিশ্বাসী, ৭১এর পাকিস্তানী বাহিনীর প্রেতাত্মারা রেলের কোচ পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করেছে। রেলে আগুন দিয়েছে। তাদের আন্দোলনের গতি প্রকৃতি নিয়ে আমরা সব সময় শংকিত থাকি।
এক প্রশ্নের জবাবে রেলপথ মন্ত্রী বলেন, জাতীয় সংসদে সাড়ে ৩শ সদস্য রয়েছেন। বিএনপির সাত সংসদ সদস্য পদত্যাগ করেছে তাতে কিছু যায় আসে না। এতে সংসদের কোন ব্যাঘাত ঘটবে না। তিনি বিএনপিকে আগামী নির্বাচনে জনমত তৈরী করার আহবান জানান।
এ সময় মন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রেলওয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকোর কান্ট্রি ডিরেক্টর শরৎ শর্মা, এজিএম ভাস্কর বকশী, ইন্ডিয়ান রেলওয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইরকনের টিম লিডার রমন সিংলা বাংলাদেশ রেলওয়ের ব্যবস্থাপক (পূর্ব) জাহাঙ্গীর হোসেন, আখাউড়া-আগরতলা রেলওয়ে প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক সহিদুল ইসলাম, রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী (পূর্ব) জাফর আহমেদসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
বিশেষ প্রতিনিধি :
বাংলাদেশের আকাশে রজব মাসের চাঁদ দেখা গেছে। আজ ২৩ জানুয়ারি সোমবার সন্ধ্যায় চাঁদ দেখা যাওয়ায় মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) থেকে ১৪৪৪ হিজরি সালের রজব মাস গণনা শুরু হবে। পবিত্র শবে মেরাজ পালিত হবে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি (২৬ রজব) রবিবার দিনগত রাতে।
রাজধানীর বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে সোমবার সন্ধ্যায় জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মুনিম হাসান।
সভায় অতিরিক্ত সচিব জানান, সব জেলাপ্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, আবহাওয়া অধিদপ্তর, মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী বাংলাদেশের আকাশে ১৪৪৪ হিজরি সালের রজব মাসের চাঁদ দেখার সংবাদ পাওয়া গেছে। এজন্য মঙ্গলবার থেকে রজব মাস গণনা শুরু হবে। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি পবিত্র শবে মেরাজ পালিত হবে।
শবে মেরাজের দিন বাংলাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। তবে, সরকারি প্রতিষ্ঠানে এ দিন ঐচ্ছিক ছুটি।
‘শবে মেরাজ’ অর্থ ঊর্ধ্ব গমনের রাত। মুসলমানদের ধর্ম বিশ্বাস অনুযায়ী, ২৬ রজব দিনগত রাতে ঊর্ধ্বাকাশে ভ্রমণ করে মহানবী হয়রত মোহাম্মদ (স.) আল্লাহ তা’য়ালার সাক্ষাৎ লাভ করেছিলেন। এ বছর সেই রাতটি পড়েছে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি।
শবে মেরাজ মুসলমানদের কাছে বিশেষ মর্যাদার। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা নফল ইবাদত-বন্দেগির মধ্যদিয়ে এ মূল্যবান রাত কাটান। এই দিন অনেকে নফল রোজাও রাখেন।
অনলাইন ডেস্ক :
১৯৭৫ সালের পরবর্তী সরকার মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে দেশের অগ্রযাত্রা বন্ধ করে দিয়েছিল বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ১৯৭৫-এর পর রাষ্ট্র ক্ষমতায় পালাক্রমে বসে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি এবং স্বৈরাচারী সামরিক শাসকেরা। শিক্ষাঙ্গনে চরম নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়। সামরিক শাসক জিয়া ছাত্রদের হাতে তুলে দেয় অবৈধ অস্ত্র ও কালো টাকা। তাদের রাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করে। লাশের পর লাশ পড়তে থাকে ক্যাম্পাসগুলোতে।
আজ ৯ জুলাই রবিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে প্রধানমন্ত্রী ফেলোশিপ ২০২৩-২৪ এর নির্বাচিত ফেলোদের অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এ অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও ফেলোশিপপ্রাপ্তদের প্রাণঢালা অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়া। ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে প্রথম বাজেটে জাতির পিতা যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে প্রশাসনিক বিন্যাসের পাশাপাশি শিক্ষা ও গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ করেন। ওই অর্থবছরে শিক্ষাখাতে এদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২১.১৬ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়। তিনি সব স্কুল-কলেজ পুনর্গঠন করেন এবং নতুন বিদ্যালয়-কলেজ ভবন নির্মাণ করেন। তিনি ১ লাখ ৬৫ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি এবং ৩৬ হাজার ১৬৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭২ সালে ড. কুদরাত-ই-খুদার নেতৃত্বে তিনি জাতীয় শিক্ষা কমিশন গঠন করেন। কিন্তু, ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যার পর ড. কুদরাত-ই-খুদা কমিশনের সেই রিপোর্ট আর বাস্তবায়ন করা হয়নি।
১৯৭৩ সালে তিনি মহান জাতীয় সংসদে বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস করার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে স্বায়ত্তশাসন প্রদান করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন গঠন করেন। একই বছরে তিনি অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯৭৪ সালে জাতির পিতা ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণা এবং আণবিক শক্তি বিভাগ’ নামে একটি স্বতন্ত্র বিভাগ সৃষ্টি করেন। আণবিক কমিশন গঠন করেন। ১৯৭৪ সালেই তিনি ‘শিক্ষা ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়’ গঠন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫-এর পর রাষ্ট্রে গবেষণা তো দূরের কথা, শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়। সেশনজট অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায়। জাতির পিতা হাজিদের জন্য হিজবুল বাহার নামে একটি জাহাজ ক্রয় করেছিলেন। দুঃখের বিষয় জিয়াউর রহমান এ হিজবুল বাহার জাহাজকে প্রমোদ তরী বানিয়েছিলেন, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণদের নিয়ে যাওয়া হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যখনই সরকার গঠন করেছে তখনই জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে শিক্ষাসহ প্রতিটি সেক্টরের উন্নয়নে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে আমরা ক্যাম্পাসগুলোতে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে শিক্ষা এবং গবেষণায় গুরুত্ব দেই। ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে প্রথম ১২ কোটি টাকা গবেষণা অনুদান প্রদান করি। পরবর্তীকালে গবেষণা ও প্রযুক্তির জন্য এ অনুদান ১০০ কোটিতে উন্নীত করি। আমরা ১২টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, চিকিৎসা বিশ্ববিদ্যালয়, ১৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, সমুদ্র বিজ্ঞান গবেষণা ইনস্টিটিউট, বায়োটেকনোলজি ইনস্টিটিউট, নভো থিয়েটার প্রতিষ্ঠা করি।
সিভিল সার্ভিস, শিক্ষাবিদ এবং দেশের যোগ্য নাগরিকদের জ্ঞান ও সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রীর ফেলোশিপ চালু করা হয়।
এই ফেলোশিপ প্রোগ্রামের আওতায় নির্বাচিত ফেলোদের যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডাসহ বিদেশে বিভিন্ন স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়। ফেলোশিপ প্রোগ্রাম শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ২৩৯ জন মাস্টার্স ফেলো এবং ৯৮ জন পিএইচডি ফেলো বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে গেছেন।
পিএইচডির জন্য স্কলারশিপ নিশ্চিত করতে আবেদনকারীদের প্রথমে তাদের নিজস্ব সামর্থে বিশ্বের ১০০ সর্বোচ্চ র্যাঙ্কিংয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটিতে ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে।
মাস্টার্সের জন্য স্কলারশিপ নিশ্চিত করতে আবেদনকারীদের প্রথমে তাদের নিজস্ব সামর্থে বিশ্বের ২০০ সর্বোচ্চ র্যাঙ্কিংয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটিতে ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে।
ভর্তি নিশ্চিত হলেই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গভর্নেন্স ইনোভেশন ইউনিটের (জিআইইউ) অধীনে বৃত্তির জন্য আবেদন করা যাবে।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়াও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন জিআইইউর মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ আবদুল লতিফ।
অনলাইন ডেস্ক :
চাঁদপুরের মেঘনায় অভিযান চালিয়ে ২৮টি বাল্কহেড ও তিনটি ড্রেজার জব্দ করেছে নৌ পুলিশ। এ সময় ৬২ জন শ্রমিককে আটক করা হয়েছে। শনিবার মুন্সীগঞ্জে নৌ দুর্ঘটনার পর রাত থেকে রবিবার পর্যন্ত এ অভিযান চালানো হয়। তবে নৌ পুলিশ বলছে, এটি তাদের নিয়মিত অভিযানের অংশ।
চাঁদপুর নৌ পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান নিজেই অভিযানে নেতৃত্ব দেন। তিনি জানান, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কিছু মালিক ও শ্রমিক রাতে অবাধে বাল্কহেড চালিয়ে যাচ্ছে। এর সঙ্গে ড্রেজার ব্যবহার করে অবৈধভাবে বালু কাটছিল। ধারাবাহিক অভিযানের অংশ হিসেবে বাল্কহেড ও ড্রেজারগুলো জব্দ করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার বলেন, যে বাল্কহেডগুলো জব্দ করা হয়েছে, প্রত্যেকটি মেঘনা নদী থেকে উত্তোলন করা বালু নিয়ে যাচ্ছিল। জব্দ করা বাল্কহেড ও আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কামরুজ্জামান বলেন, দু’মাস আগেও মেঘনায় অভিযান চালিয়ে অর্ধশতাধিক বাল্কহেড এবং শতাধিক শ্রমিককে আটক করা হয়েছে। নৌ পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি সফিকুল ইসলামের নির্দেশনায় এ অভিযান চালানো হচ্ছে। এটি অব্যাহত থাকবে।
বিশেষ প্রতিনিধি :
প্রকৃতিতে শীতের বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে। সময়ের পালাবদলে শীত শেষে দুয়ারে কড়া নাড়ছে ঋতুরাজ বসন্ত। আমের মুকুলের মিষ্টি ঘ্রাণে কেবলই মৌ মৌ করতে শুরু করেছে চারিদিক। কয়েকদিনের মধ্যেই আমের মুকুলের মিষ্টি গন্ধে সুবাসিত হয়ে উঠবে প্রকৃতি। এ সময়টাতে মুকুলের যত্ন না নিলে আমের ভালো ফলন সম্ভব নয়। আর এ কারণেই আশায় বুক বেঁধে আম চাষিরা শুরু করেছেন পরিচর্যা। মুকুলে যাতে পোকার আক্রমণ না হয় ও ঝড়ে না পড়ে, সেদিকে নজর রাখছেন নওগাঁর চাষিরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলায় ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। যা গতবারের চেয়ে ৫২৫ হেক্টর জমিতে বেশি। চলতি মৌসুমে উপজেলাভিত্তিক আম চাষের পরিমাণ হলো-সদর উপজেলায় ৫১০ হেক্টর, রানীনগরে ১৩০, আত্রাইয়ে ১২০ দশমিক ৫, বদলগাছীতে ৫৩০, মহাদেবপুরে ৬৩০, পত্নীতলায় ৫ হাজার ৮১৫, ধামইরহাটে ৬৭৫, সাপাহারে ৯ হাজার ২৫৫, পোরশায় ১০ হাজার ৫৫০, মান্দায় ৪০০ ও নিয়ামতপুরে ১ হাজার ৩৮৪ দশমিক ৫ হেক্টর জমিতে।
শস্যভান্ডার হিসেবে খ্যাত উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা নওগাঁ। এই জেলা এখন সারাদেশে আমের রাজধানী হিসেবে পরিচিত। নওগাঁর বিভিন্ন আম বাগান ঘুরে দেখা গেছে, বাগানের সারি সারি গাছে সবুজ পাতার মাঝে আমের মুকুল আসতে শুরু করেছে। সবচেয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের গাছে বেশি মুকুল আসছে। গত এক সপ্তাহ আগে থেকেই গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। পুরোদমে মুকুল ফুটতে আরও কয়েক সপ্তাহ সময় লাগবে বলছেন বাগান মালিকরা। তবে যে সব গাছে মুকুল আসছে কুয়াশা আর শীতের কারণে মুকুলের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন আম চাষিরা। তাইতো তারা মুকুল ও গাছের পরিচর্যা শুরু করছেন।
সাপাহার উপজেলা সদরের গোডাউনপাড়ার বরেন্দ্র এগ্রো পার্কের সফল কৃষি উদ্যোক্তা সোহেল রানা বলেন, ৫০ বিঘা জমি বিভিন্ন মেয়াদি লিজ নিয়ে আম বাগান করেছি। তাতে আম রুপালি, বারি ফোর, গৌড়মতি ও আর্শ্বিনা জাতের আম গাছ রয়েছে। এর মধ্যে কিছু আম গাছে মুকুল আসতে শুরু করেছে। পুরোদমে মুকুল আসতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। তাই এ সময় গাছের বাড়তি যত্নের প্রয়োজন। ছোট-বড় আম বাগান পরিচর্যায় সময় ব্যয় করতে হয়। এছাড়াও বাগানের আগাছা পরিষ্কারসহ পোকা দমনে স্প্রে করা হচ্ছে কীটনাশক।
পোরশা উপজেলার নিতপুরের আম চাষি মাসুদ বলেন, প্রায় এক সপ্তাহ আগে থেকে বাগানের আম গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। যেসব গাছে মুকুল এসছে, কুয়াশা আর শীতের কারণে মুকুলের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই মুকুল আসার পর থেকেই গাছের প্রাথমিক পরিচর্যা শুরু করেছি। মুকুল রোগ বালাইয়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় বালাইনাশক স্প্রে করছেন।
পত্নীতলা উপজেলার আরেক আম চাষি রবিউল ইসলাম বলেন, তার আম বাগানের অধিকাংশ গাছেই মুকুল দেখা দিয়েছে। তবে যেসব গাছে মুকুল আসছে প্রায় নতুন গাছ। নতুন গাছ হওয়ায় আগে ভাগেই মুকুল আসতে শুরু করেছে। মুকুলের মাথাগুলোকে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য স্প্রে করা হচ্ছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে চলতি মাসের শেষের দিক থেকে শুরু করে ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিক পর্যন্ত সব গাছে মুকুল দেখা যাবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু হোসেন বলেন, আবহাওয়াগত ও জাতগত কারণেই কিছু গাছে আগাম আমের এই মুকুল আসতে শুরু করেছে। এসব গাছে ফুল ফোটার আগে কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে। এতে করে কুয়াশা বা অন্যান্য পোকার আক্রমণ কম হবে। তবে কোনো ক্রমেই গাছে সেচ দেওয়া যাবে না। এতে করে নতুন করে পাতা জন্মাবে। এই জন্য চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এখনও সব গাছে মুকুল আসেনি। ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে পুরোদমে গাছে মুকুল আসবে। তখন শীত কেটে যাবে। তখন আমের মুকুল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না।