আমরা বিশ্বব্যাংকের প্রতি আস্থা বজায় রেখেছি : প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, 2 May 2023, 1295 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমানে উন্নয়নশীল দেশ হয়ে ওঠার পথে বাংলাদেশের মসৃণ উত্তরণ এবং পরবর্তীতে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে উত্তরণ লাভ করা, ও এর ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ বাস্তবায়নের জন্য বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতা বৃদ্ধি প্রয়োজন। আমাদের আস্থা আছে বিশ্বব্যাংকের ওপর। আশা করছি বিশ্বব্যাংকও বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশিদার হবে।

banner

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আরও বলেছেন, “২০২৬ সালে জাতিসংঘের এলডিসি মর্যাদা থেকে মসৃণ ও টেকসই উত্তরণ লাভের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাংককে আমি আমাদের মানব পুঁজি ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা উন্নয়ন কর্মসূচিগুলিকে একটি মসৃণ উত্তরণের জন্য সহায়তা দেয়ার জন্য অনুরোধ করছি। সে লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ আইডিএ উইন্ডোটি সংরক্ষণ ও অব্যাহত রাখা প্রয়োজন।”

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বব্যাংক সদর দপ্তরের প্রিস্টন অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত “বিশ্বব্যাংক-বাংলাদেশ অংশীদারিত্বের ৫০ বছরের প্রতিফলন” শীর্ষক পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে সোমবার ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাংকের সামনে পাঁচটি সুনির্দিষ্ট পরামর্শ রেখেছেন যা বিশ্বব্যাংক ঋণদাতাদের বিবেচনায় নেয়া উচিত।

এ সময় পাঁচটি প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন (আড়াই বিলিয়ন) ডলারের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টের কাছে পদ্মা বহুমুখী সেতুর একটি ছবি তুলে দেন।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ আয়ের অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য অবকাঠামো ও লজিস্টিকসে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখবে।

শেখ হাসিনা বলেন, “আমি আশা করব বিশ্বব্যাংক অতীতের মতো আগামী বছরগুলোতে আমাদের ভৌত ও সামাজিক উভয় খাতে মেগা-প্রকল্পগুলোতে সম্পৃক্ত হবে।”

ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার জাতীয় আকাঙ্খার সঙ্গে জাতিসংঘের এসডিজির সমন্বয় করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, “এসডিজি বাস্তবায়নের জন্য বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের বর্ধিত, ছাড় দেয়া এবং উদ্ভাবনী অর্থায়নের জরুরি প্রত্যাশা রয়েছে।”

প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন যে, মহামারী, সশস্ত্র সংঘাত এবং জলবায়ু জরুরি অবস্থার কারণে চলমান বৈশ্বিক একাধিক সংকট বেশিরভাগ উন্নয়নশীল অর্থনীতিগুলোকে গুরুতর চাপের মধ্যে ফেলেছে।

তিনি বলেন, মহামারী ও সশস্ত্র সংঘাত থেকে উদ্ভূত একাধিক সংকট সত্ত্বেও, কিছু উন্নয়ন অংশীদার তাদের ঋণের খরচ এবং সুদের হার বাড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য উন্নয়ন অংশীদারদেরকে কার্যকর বিকল্প খুঁজে বের করার আহ্বান জানাচ্ছি যাতে আমাদের অর্থনীতিগুলো উদ্ভুত চ্যালেঞ্জগুলি আরও ভালভাবে মোকাবেলা করতে পারে।”

তিনি বলেন, বাংলাদেশ আশা করে যে, জলবায়ু সংক্রান্ত কর্মকা-ে বিশ্বব্যাংকের বর্ধিত সম্পৃক্ততা প্যারিস চুক্তির অধীনে অর্থায়নের ঘাটতি পূরণে সহায়তা করবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “আমরা জলবায়ু প্রশমন ও অভিযোজনের মধ্যে অর্থায়নের সমান বণ্টনের ওপর জোর দেব।”

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও প্রস্তুতিতে বিশ্বব্যাপী রোল-মডেল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে এবং আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা, দুর্যোগ-সহিষ্ণু অবকাঠামো এবং সম্প্রদায় ভিত্তিক পদক্ষেপের ক্ষেত্রে প্রচুর বিনিয়োগ করেছে।

তিনি বাংলাদেশকে জলবায়ু অভিযোজনের একটি জীবন্ত গবেষণাগার হিসেবে বর্ণনা করেন যেখানে বেশ কিছু প্রকৃতি-ভিত্তিক ও কৌশলগত সমাধান রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ এর অধীনে প্রকল্পগুলি বাস্তবায়নে আমাদের সাথে যোগ দেয়ার জন্য বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের আমন্ত্রণ জানান।”

রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারে তাদের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে তারা জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে, কিন্তু আজ পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গাও ফিরে যায়নি।

তিনি বলেন, “বিস্তৃত অঞ্চলের জন্য ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তার প্রভাবের পাশাপাশি পরিস্থিতি আমাদের জন্য ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে। আমি বিশ্বব্যাংককে আমাদের মানবিক প্রচেষ্টায় যোগদানের জন্য এবং রোহিঙ্গা ও তাদের সম্প্রদায়ের জন্য ৫৯০ মিলিয়ন ডলার অনুদানের জন্য ধন্যবাদ জানাই।”

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ গত চার দশকে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে এবং ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে ব্যাপক নৃশংসতার পর থেকে তাদের সংখ্যা ১.২ মিলিয়নে পৌঁছেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছিলো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজের ভাগ্য গড়তে নয়, দুঃস্থ মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য তিনি ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাবা-মা এবং তিন ভাইসহ সবকিছু হারিয়ে দেশবাসীকে পাশে পেয়ে তিনি দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, তাঁকে তাঁর জীবনের অনেক ঝুঁকির মুখোমুখি হতে হয়েছে, তবে তিনি কখনই মাথা নত করেননি।

তিনি বলেন, ‘আমি কখনো মাথা নিচু করে দেশবাসীকে অসম্মান করতে চাই না।’

প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, বাঙালি একটি বিজয়ী জাতি, আমরা বিজয়ী জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে এগিয়ে যেতে চাই। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অব্যাহত ও অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে, কারণ তার আশেপাশে থাকা লোকদের কঠোর পরিশ্রম, আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করার কারণে এবং সে সাথে রয়েছে দেশের জনগণের অটুট সমর্থন।

প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস এবং এর প্রাক্তন প্রধান অর্থনীতিবিদ কৌসিক বসু অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন এবং বৈশ্বিক ঋণদাতা ভিপি মার্টিন সমাপনী বক্তব্য রাখেন।

শেখ হাসিনা বলেন, তিনি বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশের অংশীদারিত্বের ৫০ বছর উপলক্ষ্যে সবার সাথে যোগ দিতে পেরে আনন্দিত।

তিনি বলেন, “আমি প্রেসিডেন্ট মালপাসকে তার আমন্ত্রণ ও আতিথেয়তার জন্য ধন্যবাদ জানাই। বিশ্বব্যাংকে অনেক বাংলাদেশীকে নিয়োজিত দেখে আমি আনন্দিত।” তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ নির্বিঘেœ এগিয়ে যেতে থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক একটি নেতৃস্থানীয় উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশকে ধারাবাহিকভাবে সহায়তা করে আসছে। বিশ্বব্যাংক চলমান আইডিএ কর্মসূচির অধীনে বাংলাদেশের জন্য বর্তমান বৈদেশিক সহায়তার প্রায় ৩২ শতাংশ অবদান রাখে।

তিনি আরো বলেন, “এছাড়া, আইএফসি এবং এমআইজিএ আমাদের বেসরকারী খাতকেও সহায়তা করছে।”

শেখ হাসিনা বলেন, “এখানে (বিশ্বব্যাংক) আমার উপস্থিতি ইঙ্গিত দেয় যে, আমরা বিশ্বব্যাংকের প্রতি আমাদের আস্থা বজায় রেখেছি। আগামী দুই দশকে আমাদের সাফল্য নির্ভর করবে আমাদের সম্মিলিত সক্ষমতা এবং ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই উপায়ে উদীয়মান চ্যালেঞ্জগুলি অতিক্রম করার প্রচেষ্টার উপর”।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার পিতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দূরদর্শী নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতাকে আমাদের সংবিধানে মৌলিক রাষ্ট্রীয় নীতি হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। তার নৃশংস হত্যাকা-ের পর, জাতিকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে আমাদের দীর্ঘ ২১ বছরের গণতান্ত্রিক সংগ্রাম করতে হয়েছে। তিনি বলেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহন তার সরকার ২০২১ সালের মধ্যে একটি ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার অঙ্গীকার করে।

তিনি বলেন, “টানা তিন মেয়াদে জনগণ ও দেশের সেবা করার সুযোগ লাভের জন্য আমি আমাদের জনগণের কাছে কৃতজ্ঞ। গত দেড় দশকে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সুষ্ঠু সামষ্টিক অর্থনৈতিক মৌলিক বিষয়গুলির জন্য বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটেছে। ”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৫ সালে, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশ হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করেছে এবং ২০২১ সালে, জাতিসংঘ এটিকে দ্বিতীয়বারের মতো এলডিসি মর্যাদা থেকে উত্তরণ লাভের যোগ্য ঘোষণা করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ২৬.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের অর্থনৈতিক উদ্দীপনা প্যাকেজ এবং বিনামূল্যের গণ টিকাদানের মাধ্যমে সফলভাবে কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলা করেছে।

তিনি বলেন, “আমাদের নিজস্ব সম্পদে পদ্মা বহুমুখী সেতুর সমাপ্তি এবং গত বছর এর উদ্বোধন সম্ভবত আমাদের সহনশীলতা ও সাফল্য অর্জনের সেরা উদাহরণ।”

শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ আজ বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতি হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে, যার জিডিপি ৪৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

তিনি বলেন, “আমাদের অর্থনীতি গত এক দশকে গড়ে ৬ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। মহামারীর ঠিক আগে এটি ৮.১৫ শতাংশে পৌঁছেছে। এর ফলে ২০২২ সালে মাথাপিছু আয় ২,৮২৪ মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২২ সালে সার্বিক দারিদ্র্যের হার ১৮.৭ শতাংশে নেমে এসেছে যা ২০০৬ সালে ছিল ৪১.৫ শতাংশ।

তিনি বলেন, তার সরকার সামাজিক সুরক্ষার জন্য জাতীয় বাজেট বরাদ্দ ৪০ গুণ বাড়িয়েছে, যা জিডিপির ২.৫ শতাংশ।

শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার এক বছর আগে সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার বিনা খরচে সকল গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষকে আবাসন প্রকল্পের আওতায় আনার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, “আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে, আমরা প্রায় ৫০ লাখ মানুষকে বিনা খরচে বাড়ি দিয়েছি এবং আয়সংস্থানমূলক দক্ষতা ও সহায়তা দিয়েছি।” প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তার সরকার প্রতিটি বাড়ির দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা এবং বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের শ্রমশক্তিতে নারীদের অংশগ্রহণের হার আমাদের আঞ্চলিক দেশগুলোর তুলনায় বেশি।

শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের সরকার সম্প্রতি আমাদের জাতীয় জিডিপিতে নারীদের গৃহস্থালির কাজ প্রতিফলিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা বাংলাদেশকে একটি আঞ্চলিক সংযোগ, বিমান ও লজিস্টিক হাব হিসেবে গয়ে তোলার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়।
তিনি বলেন, “আমরা ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি, যা ২০৩০ সালের মধ্যে আনুমানিক দশ মিলিয়ন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খলে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। বিশ্বের শতাধিক সেরা সবুজ কারখানার অর্ধেকেরও বেশি এখন বাংলাদেশে রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে একটি ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার জন্য তার পরবর্তী রূপকল্প চালু করেছে যার লক্ষ্য ডিজিটালভাবে নাগরিকদের ক্ষমতায়িত করা; চেহারাহীন সরকারি সেবা প্রদান; একটি জ্ঞান-ভিত্তিক নগদ অর্থ লেনদেনহীন অর্থনীতি; এবং একটি অধিকার-ভিত্তিক ন্যায়সঙ্গত এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ।

Leave a Reply

টাকা আত্মসাতের মামলায় ডেসটিনির এমডিসহ ১৯…

অনলাইন ডেস্ক : ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেডের গাছ বিক্রির টাকা Read more

অফিসার পদে চাকরির সুযোগ দিচ্ছে ব্র্যাক,…

অনলাইন ডেস্ক : বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকে ‘অফিসার’ পদে জনবল Read more

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে…

অনলাইন ডেস্ক : বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এর Read more

প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দিলেন…

অনলাইন ডেস্ক : অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ Read more

বলিউড থেকে নার্গিস ফাখরি যে কারণে…

অনলাইন ডেস্ক : ইন্ডাস্ট্রিতে পা রেখেই ছকভাঙা অভিনয়। নার্গিস ফাখরিকে Read more

কিশোরি হেনস্থার মামলায় নিউইয়র্কে গ্রেফতার বাংলাদেশি

অনলাইন ডেস্ক : ১২ বছর বয়েসী এক কিশোরিকে লাঞ্ছিত ও Read more

ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেকে মাস্ক, বেজোস ও…

অনলাইন ডেস্ক : প্রযুক্তি জগতের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক, জেফ Read more

টিউলিপের স্থলাভিষিক্ত হলো এমা রেনল্ডস

অনলাইন ডেস্ক : টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক স্থলাভিষিক্ত হলেন নতুন অর্থনীতিবিষয়ক Read more

ছাগলকাণ্ডের আলোচিত সেই মতিউর ও তার…

অনলাইন ডেস্ক : ছাগলকাণ্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক Read more

প্রকাশ্যে কণ্ঠশিল্পী জান্নাত তোরসার ‘কাবিখা’

অনলাইন ডেস্ক : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও পরবর্তী প্রেক্ষাপটের বিভিন্ন Read more

বয়লার বিস্ফোরণে দুইজন নিহত

অনলাইন ডেস্ক : ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে কাঠ রিফাইন কারখানার বয়লার বিস্ফোরণে Read more

টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগ

অনলাইন ডেস্ক : সমালোচনার মুখে যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক Read more

১০ দিনের রিমান্ডে আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমান

জাতীয়, 14 August 2024, 190 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ১০ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

banner

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় দোকান কর্মচারী শাহজাহান আলীকে (২৪) হত্যার অভিযোগে করা মামলায় এ রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে।

১৪ আগস্ট বুধবার তাদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদের আদালত ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

নিউমার্কেট থানা ও আদালত সূত্রে জানা যায়, কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় পাপোশের দোকানের কর্মচারী শাহজাহান আলীকে হত্যায় সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হককে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নৌপথে পলায়নরত অবস্থায় রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গত ১৬ জুলাই কোটাবিরোধী আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় পাপোশের দোকানের কর্মচারী শাহজাহান আলীকে হত্যার অভিযোগে তার মা আয়শা বেগম (৪৫) একটি মামলা করেন। মামলায় আসামি করা হয় অজ্ঞাতনামা।

আখাউড়ায় রেলওয়ে জেলা স্কাউটের উদ্যোগে ট্রেনের যাত্রী সেবা প্রদান

আখাউড়া, জাতীয়, 5 July 2023, 1573 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
পবিত্র ঈদুল আযহার ছুটি শেষে আখাউড়ায় ট্রেন যাত্রীদের সেবা প্রদান করেছে স্কাউট ও রোভাররা। আজ ৫ জুলাই বুধবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত আখাউড়া রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ভ্রমনকারী যাত্রীদেরকে ট্রেনে আরোহন, মালামাল উঠানো-নামানোসহ বিভিন্ন সেবা প্রদান করেছে স্কাউট সদস্যরা।

banner

আখাউড়া রেলওয়ে জেলা স্কাউট দুই দিনব্যাপী ঈদ যাত্রী সেবা কার্যক্রম শুরু করেছে। ট্রেনে উঠা-নামায় সহযোগিতা, যাত্রীদের সুপেয় পানি পানের ব্যবস্থা এবং ষ্টেশন চত্বরে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা করেছে স্কাউটস সদস্যরা। সেবামূলক এ কাজে ৬টি স্কাউট গ্রুপের ৩০/৩৫ জন সদস্য অংশ নিচ্ছে।

জেলা স্কাউট সূত্রে জানা যায়, ঈদুল আযহার ছুটি শেষে আখাউড়া রেলওয়ে জংশন ষ্টেশন হয়ে হাজার হাজার ট্রেন যাত্রী বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করে।

এসময় ষ্টেশনে প্রচুর ভীড় হয়ে থাকে। তাই নির্দিষ্ট ট্রেন এবং ট্রেনের বগি খোঁজে পাওয়া এবং নারী-শিশুদের নিয়ে ট্রেনে উঠতে যাত্রীদের কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।

এ অবস্থায় যাত্রীদের সুবিধার্থে আখাউড়া রেলওয়ে জেলা স্কাউট ২ দিন ঈদ যাত্রী সেবা কার্যক্রম শুরু করেছে। এ কার্যক্রমে অগ্নিবীণা, গোধুলী, সূর্য সৈনিক, হলি চাইল্ড, দিগন্ত এবং প্রত্যাশী রেলওয়ে মুক্ত স্কাউট গ্রুপের স্কাউট ও রোভার এবং কর্মকর্তারা অংশ নিচ্ছে। এসময় যাত্রী সেবার পাশাপাশি অনলাইন টিকেটের রেজিষ্ট্রেশন করে দেওয়া হয়।

সেবা কার্যক্রমে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রেলওয়ে জেলা স্কাউট সম্পাদক এস.কে. খাদেম সেলিম, সাবেক সম্পাদক আহসান কবির লিটন, সহকারী কমিশনার কাজী হান্নান খাদেম, সহকারী কমিশনার তোফাজ্জল আলী উজ্জল, হলি চাইল্ড সম্পাদক আকতারুজ্জামান রান, জেলা রোভার প্রতিনিধি মোঃ সাকিবুল হাসান, সূর্য সৈনিক যুগ্ম সম্পাদক জুবায়ের আহমেদ, রোভার রাব্বি চৌধুরী, গার্ল ইন রোভার সাদিয়া সুলতানা, স্কাউট নাসিবা হক, লামিয়া ইসলাম, পল্লী চিকিৎসক বিনা আক্তার।

আজ পবিত্র শবে কদর

জাতীয়, 18 April 2023, 1237 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
‘শবে কদর’ কথাটি ফারসি। শব মানে রাত বা রজনী আর কদর মানে সম্মান, মর্যাদা, গুণ, সম্ভাবনা, ভাগ্য ইত্যাদি। শবে কদর অর্থ হলো মর্যাদার রাত বা ভাগ্যরজনী। শবে কদরের আরবি হলো লাইলাতুল কদর তথা সম্মানিত রাত। আজ লাইলাতুল কদর। এটি একটি সম্মানিত ও মহিমান্বিত রাত। লাইলাতুল কদর সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় আমি কোরআন নাজিল করেছি লাইলাতুল কদরে।’ ‘লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।’ ‘এ রাতে ফেরেশতারা ও জিবরাইল তাদের প্রভুর অনুমতিক্রমে সব সিদ্ধান্ত নিয়ে অবতরণ করেন। শান্তিময় এ রাত ফজরের সূচনা পর্যন্ত’। (সুরা কদর)।

banner

এ রাত কোরআন নাজিলের রাত। মহত্ব ও গুরুত্বসহকারে মহান আল্লাহর ইবাদতের রাত। এ রাত হলো হাজার মাস তথা তিরাশি বছর চার মাসের চেয়ে উত্তম। ওই ব্যক্তির চেয়েও ভাগ্যবান আর কে হতে পারে, যে এ রাতে নির্ঘুম থেকে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করার সুযোগ পেয়েছে। এ পবিত্র রাতে ফেরেশতারা পৃথিবীতে আসে মানবজাতির জন্য বরকত, রহমত ও কল্যাণ নিয়ে।

সূর্যাস্তের পরপরই এ রাতে মহান আল্লাহ তার আরশ থেকে প্রথম আকাশে নেমে আসেন। মায়া আর দয়া নিয়ে, প্রেম ও ভালোবাসা দিয়ে মানবজাতিকে ডাকেন আর বলেন, ‘কে আছ পাপী! তুমি ক্ষমা চাও, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব। কে আছ দুঃখী! আমি তোমার দুঃখ মোচন করব। কে আছ রোগী! আমি তোমাকে সুস্থ করে দেব। কে আছ দায়গ্রস্ত! আমি তোমাকে দায়মুক্ত করে দেব। তোমাদের কার রিজিকের প্রয়োজন! আমার কাছে চাও, আমি তার রিজিক বৃদ্ধি করব।’ মহান আল্লাহ এভাবে ফজর পর্যন্ত ডাকতে থাকেন। যারা তার ডাকে সাড়া দিয়ে প্রার্থনায় লিপ্ত হয়, তারা কল্যাণকামী হয়। সৌভাগ্যবান হয়।

শবে কদরের রাতে কুরআন নাজিল সম্পর্কে আল্লাহতাআলা বলেন, ‘রমজান মাস! যে মাসে কুরআন নাজিল হয়েছে মানবের দিশারি রূপে ও হিদায়াতের সুস্পষ্ট নিদর্শন। (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৫)। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আরও বলেন, ‘উজ্জ্বল কিতাবের শপথ! নিশ্চয় আমি তা নাজিল করেছি এক বরকতময় রাতে; নিশ্চয় আমি ছিলাম সতর্ককারী, যাতে সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্ধারিত হয়। এ নির্দেশ আমার তরফ থেকে, নিশ্চয় আমিই দূত পাঠিয়ে থাকি। এ হলো আপনার প্রভুর দয়া, নিশ্চয় তিনি সব শোনেন ও সব জানেন। তিনি নভোমণ্ডল-ভূমণ্ডল ও এ উভয়ের মাঝে যা আছে সে সবের রব। যদি তোমরা নিশ্চিত বিশ্বাস করো; তিনি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই, তিনি জীবন ও মৃত্যু দেন, তিনিই তোমাদের পরওয়ারদিগার আর তোমাদের পূর্বপুরুষদেরও। তবু তারা সংশয়ে রঙ্গ করে। তবে অপেক্ষা করো সে দিনের, যেদিন আকাশ সুস্পষ্টভাবে ধূম্রাচ্ছন্ন হবে। (সুরা-৪৪ দুখান, আয়াত: ১-১০)।

শবে কদর ও কোরআন অবতরণ এবং এই রাতের ফজিলত সম্পর্কে দয়াময় আল্লাহ কোরআনে ‘সুরা কদর’ নামে একটি স্বতন্ত্র সুরা নাজিল করেছেন। তাতে বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আমি কোরআন নাজিল করেছি মর্যাদাপূর্ণ কদর রজনীতে। আপনি কি জানেন, মহিমাময় কদর রজনী কী? মহিমান্বিত কদর রজনী হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। সে রাতে ফেরেশতাগণ হজরত জিবরাইল (আ.) সমভিব্যাহারে অবতরণ করেন; তাঁদের প্রভু মহান আল্লাহর নির্দেশ ও অনুমতিক্রমে, সকল বিষয়ে শান্তির বার্তা নিয়ে। এই শান্তির ধারা চলতে থাকে ঊষার উদয় পর্যন্ত। (সুরা-৯৭ কদর, আয়াত: ১-৫)।

শবে কদরের রাতের ফজিলত সম্পর্কে বলা হয়েছে, এ রাত গুনাহ মাফের রাত। হাদিসে এসেছে- ‘যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদরে ঈমান সহকারে ও আল্লাহর কাছ থেকে বড় শুভফল লাভের আশায় ইবাদতের জন্য দাঁড়িয়ে থাকবে, তার পেছনের সব গুনাহ মাফ হয়ে যাবে’ (বুখারি ও মুসলিম)। এ রাতের কল্যাণ থেকে একমাত্র হতভাগ্য লোক ছাড়া আর কেউ বঞ্চিত হয় না (ইবনে মাজাহ ও মিশকাত)।

কিয়ামুল লাইল: ‘কিয়ামুল লাইল’ অর্থ হলো রাত্রি জাগরণ। মহান আল্লাহর জন্য আরামের ঘুম স্বেচ্ছায় হারাম করে রাত জেগে ইবাদত করা আল্লাহর প্রিয় বান্দাহদের একটি গুণ। মহান আল্লাহ তার প্রিয় বান্দাহদের পরিচয় দিয়েছেন এভাবে- ‘তারা রাত্রি যাপন করে রবের উদ্দেশে সিজদাবনত হয়েও দাঁড়িয়ে থেকে’ (সুরা ফুরকান : ৬৪)।

‘তাদের পার্শ্বদেশ বিছানা থেকে পৃথক থাকে (অর্থাৎ তারা শয্যা গ্রহণ করে না; বরং এবাদতে মশগুল থাকে)। তারা গজবের ভয়ে এবং রহমতের আশায় তাদের রবকে ডাকতে থাকে এবং আমি যা দিয়েছি তা থেকে দান করে থাকে। কেউ জানে না। তাদের আমালের পুরস্কারস্বরূপ (আখিরাতে) তাদের জন্য কী জিনিস গোপনে রাখা হয়েছে’ (সুরা সিজদা : ১৬-১৭)। নবীজি (সা.) একদিন সাহাবায়ে কেরামদের (রা.) সামনে বনি ইসরাইলের এক উপাসকের কথা বলছিলেন। সে ব্যক্তি এক হাজার মাস ধরে আল্লাহর ধ্যান ও সাধনায় লিপ্ত ছিল। এ কথা শুনে সাহাবায়ে কেরাম (রা.) আফসোস করতে লাগলেন আর বললেন, আমরা এত বছর ইবাদত করব কীভাবে? তাছাড়া আমাদের অনেকে তো এত বছর বেঁচেও থাকি না। ঠিক তখনই জিবরাইল (আ.) এ রাতের সুসংবাদসহ সুরা কদর নিয়ে নবীজির (সা.) কাছে হাজির হলেন এবং এ উম্মতকে শ্রেষ্ঠ উম্মত হিসেবে প্রমাণ করে দিলেন। (তাফসিরে মাজহারি)।

নবীজি (সা.) বলেন, ‘তোমরা মাহে রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোতে লাইলাতুল কদর তালাশ করো।’ (বুখারি)। এ রাত হলো জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়ার রাত। হজরত আয়েশা (রা.) একবার রাসুল (সা.)কে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমি যদি লাইলাতুল কদর সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে আমি ওই রাতে কী দোয়া করব? তখন নবীজি (সা.) বললেন, তুমি এ দোয়াটি করবে- ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফউন; তুহিব্বুল আফওয়া, ফা’ফু আন্নি’ অর্থাৎ হে আল্লাহ! তুমি তো ক্ষমাশীল! ক্ষমাকে তুমি ভালোবাস। অতএব, আমাকে তুমি ক্ষমা কর।

নবীজির (সা.) সময় অনেক সাহাবী (রা.) রমজানের ২৭ তারিখকে লাইলাতুল কদর হিসেবে স্বপ্ন দেখেছেন। সাহাবীরা (রা.) নবীজিকে (সা.) স্বপ্নের কথা জানালে নবীজি (সা.) বলেন, আমিও এমনটা স্বপ্নে দেখেছি। হজরত উবাই ইবনে কাব (রা.) বলেন, ‘মহান আল্লাহর শপথ করে বলছি-নবীজি (সা.) ২৭ রমজানের রাতকে লাইলাতুল কদরের রাত বলেছেন।’ অন্য হাদিসে রয়েছে, নবীজি (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যদি দুর্বল অথবা কোনো কারণে অক্ষম হয়ে থাকে, সে যেন রমজানের ২৭ তারিখ রাতে ইবাদত করে।’ (মুসলিম)। আরেক হাদিসে এসেছে-নবীজি (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদর পেতে চায়, সে যেন তা রমজানের সাতাশতম রাতে অনুসন্ধান করে। (মুসনাদে আহমদ)।

আদালতের রায়ের পর আন্দোলনের কোনো যৌক্তিকতা নেই : গণপূর্তমন্ত্রী

জাতীয়, 27 July 2024, 268 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেছেন, হাইকোর্টের অ্যাপিলেট ডিভিশন সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বিন্যাস করে রায় দিয়েছেন। সে অনুযায়ী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এরপর কোটা সংস্কার আন্দোলন তথা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আর কোনো যৌক্তিকতা নেই।

banner

আজ শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে পাক্ষিক মত ও পথ-এর আয়োজনে ‘সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনের সুযোগে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, কোটা সংস্কার নিয়ে যে আন্দোলন হয়েছে, তা নিশ্চয় কিছু ভুল-বোঝাবুঝির কারণে হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে মুক্তিযোদ্ধা, তাদের সন্তান ও নাতি-নাতনির জন্য সংরক্ষিত ৩০ শতাংশ কোটা কখনোই পূরণ হয়নি। বাস্তবে এটি ৭ থেকে ৮ শতাংশের বেশি হয়নি। এই ৭-৮ শতাংশ কোটা পূরণকারী প্রতিযোগীরা প্রিলিমিনারি, লিখিত এবং ভাইভায় নিজস্ব যোগ্যতার বলে উত্তীর্ণ হয়েছেন।

এরপর এসেছে কোটার প্রশ্ন। তথাকথিত আন্দোলনকারীরা এসব বিষয়ে না বুঝেই আন্দোলনে মাঠে নেমেছে।
র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, আন্দোলনকারীরা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে বিকৃত করে নিজেদের রাজাকার আখ্যায়িত করেছে। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের চেতনাবিরোধী তাদের এই স্লোগান সাধারণ মানুষ ভালোভাবে নেয়নি।

তাদেরকে বুঝতে হবে যে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনার পরিপন্থী কোনো কার্যকলাপ দেশের মানুষ সহ্য করবে না।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান এবং সুধীসমাজের কতিপয় সদস্যের নেতিবাচক বিবৃতি প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, যারা জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে কাজ করেছে, সেই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের যারা পিটিয়েছে, তাদের হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রেখেছে, সরকারি স্থাপনায় আগুন দিয়েছে তাদের সমালোচনা না করে উনারা বরং নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী, অগ্নিসংযোগকারী আন্দোলনকারীদের প্রতি সহমর্মিতা প্রদর্শন করছেন। এই সহমর্মিতা এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ তাদের হীন উদ্দেশ্যকে প্রকাশ করে। তারা যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে না, তারা যে স্বাধীনতার আদর্শে অনুপ্রাণিত নয় এতে সেটাই প্রমাণিত হয়।

গণপূর্তমন্ত্রী আরো বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে তারা ভারতবিরোধী স্লোগান দিয়েছে, যারা বঙ্গবন্ধুকে কটাক্ষ করেছে, যারা নিজেদের রাজাকার বলে পরিচয় দিয়েছে; তারা প্রকৃত অর্থে আমাদের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অপমান করার চেষ্টা করেছে।

তাদের বিচার হওয়া উচিত। যারা মেট্রো রেলের স্টেশন, বিটিভি, ত্রাণ অধিদপ্তর, সেতু ভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় আগুন দিয়েছে তারা শুধু রাষ্ট্রের ক্ষতি করেনি, তারা নিজেদেরও ক্ষতি করেছে। কারণ এসব রাষ্ট্রীয় সম্পদে সবারই অংশীদারি রয়েছে।
সরকারি সম্পত্তি বিনষ্ট করে কখনো সরকার উৎখাত করা যায় না, বরং এটা নিজেদেরই ক্ষতি। এই অযৌক্তিক আন্দোলনকে ইস্যু করে সংঘটিত সব হত্যাকাণ্ড, অগ্নিসংযোগ, জ্বালাও-পোড়াও সব কিছুর সুস্থ তদন্ত সাপেক্ষে বিচার হওয়া উচিত এবং বর্তমান সরকার তা সঠিকভাবে করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠন ‘আমরা একাত্তর’-এর সভাপতি এবং স্বাধীনতা-পরবর্তী ডাকসুর প্রথম জিএস মাহবুব জামান প্রধান আলোচক হিসেবে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট-পরবর্তী বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ সম্পর্কে ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মসূচির স্মৃতিচারণা করেন।

তিনি তার বক্তব্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে হতাহতের ঘটনা ঘটার দুই দিন আগেই যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাথিউ মিলার কিভাবে দুজন নিহতের ঘটনা উল্লেখ করলেন সে প্রশ্ন তোলেন। এ ব্যাপারে সুষ্ঠু তদন্ত ও গবেষণা হওয়া প্রয়োজন। এ ছাড়া আন্দোলন চলাকালে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদের হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে অধিকতর তদন্ত হওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

চলন্ত গাড়ির ওপর ধসে পড়ল পাহাড়, যান চলাচল বিঘ্নত

জাতীয়, 4 August 2023, 771 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
চট্টগ্রামে ভারী বর্ষণে নগরের টাইগারপাস এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। এসময় সড়কে চলাচল করা একটি মাইক্রোবাসের ওপর পাহাড়ের একাংশ ধসে পড়ে। এতে গাছগাছালি ভেঙে সড়কটিতে যানচলাচল বন্ধ ছিল ঘণ্টা কয়েক।

banner

ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা গিয়ে সড়ক পরিষ্কার করলে যান চলাচল শুরু হয়। আজ ৪ আগস্ট শুক্রবার সকালে নগরের টাইগারপাস-লালখানবাজার সড়কে এ ঘটনা ঘটে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, টাইগারপাসে রেলওয়ের মালিকানাধীন একটি পাহাড়ের একাংশ ধসে পাশে সিডিএ এভিনিউ সড়কে ছিটকে পড়ে। এতে সড়কের একাংশ যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। ছুটির দিন হওয়ায় সড়কে তেমন যান চলাচলও ছিল না। তাই কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। খবর পেয়ে সকাল সাড়ে আটটার দিকে এসে সড়কের মাটি সরানো শুরু করে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা। প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টার পর পাহাড় থেকে ধসে পড়া মাটি সরানো সম্ভব হয়। এরপর সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ১ জুলাই টাইগারপাস এলাকার বাটালি হিলের ঢালে পাহাড় ও প্রতিরক্ষা দেয়াল ধসে মারা যায় একই পরিবারের পাঁচজনসহ ১৭ জন। এর আগে ২০০৭ সালের ১১ জুন চট্টগ্রাম নগরের কুসুমবাগ, কাইচ্যাঘোনা, সেনানিবাসের লেডিস ক্লাব সংলগ্ন লেবুবাগান, বায়েজিদ বোস্তামী, লালখান বাজারের মতিঝর্ণা পাহাড়সহ সাতটি স্থানে পাহাড় ধসে মাটিচাপা পড়ে মারা যায় শিশু-নারী ও বৃদ্ধসহ নানা বয়সের ১২৭ জন।