অনলাইন ডেস্ক :
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমানে উন্নয়নশীল দেশ হয়ে ওঠার পথে বাংলাদেশের মসৃণ উত্তরণ এবং পরবর্তীতে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে উত্তরণ লাভ করা, ও এর ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ বাস্তবায়নের জন্য বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতা বৃদ্ধি প্রয়োজন। আমাদের আস্থা আছে বিশ্বব্যাংকের ওপর। আশা করছি বিশ্বব্যাংকও বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশিদার হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আরও বলেছেন, “২০২৬ সালে জাতিসংঘের এলডিসি মর্যাদা থেকে মসৃণ ও টেকসই উত্তরণ লাভের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাংককে আমি আমাদের মানব পুঁজি ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা উন্নয়ন কর্মসূচিগুলিকে একটি মসৃণ উত্তরণের জন্য সহায়তা দেয়ার জন্য অনুরোধ করছি। সে লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ আইডিএ উইন্ডোটি সংরক্ষণ ও অব্যাহত রাখা প্রয়োজন।”
যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বব্যাংক সদর দপ্তরের প্রিস্টন অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত “বিশ্বব্যাংক-বাংলাদেশ অংশীদারিত্বের ৫০ বছরের প্রতিফলন” শীর্ষক পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে সোমবার ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাংকের সামনে পাঁচটি সুনির্দিষ্ট পরামর্শ রেখেছেন যা বিশ্বব্যাংক ঋণদাতাদের বিবেচনায় নেয়া উচিত।
এ সময় পাঁচটি প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন (আড়াই বিলিয়ন) ডলারের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টের কাছে পদ্মা বহুমুখী সেতুর একটি ছবি তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ আয়ের অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য অবকাঠামো ও লজিস্টিকসে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখবে।
শেখ হাসিনা বলেন, “আমি আশা করব বিশ্বব্যাংক অতীতের মতো আগামী বছরগুলোতে আমাদের ভৌত ও সামাজিক উভয় খাতে মেগা-প্রকল্পগুলোতে সম্পৃক্ত হবে।”
ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার জাতীয় আকাঙ্খার সঙ্গে জাতিসংঘের এসডিজির সমন্বয় করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, “এসডিজি বাস্তবায়নের জন্য বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের বর্ধিত, ছাড় দেয়া এবং উদ্ভাবনী অর্থায়নের জরুরি প্রত্যাশা রয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন যে, মহামারী, সশস্ত্র সংঘাত এবং জলবায়ু জরুরি অবস্থার কারণে চলমান বৈশ্বিক একাধিক সংকট বেশিরভাগ উন্নয়নশীল অর্থনীতিগুলোকে গুরুতর চাপের মধ্যে ফেলেছে।
তিনি বলেন, মহামারী ও সশস্ত্র সংঘাত থেকে উদ্ভূত একাধিক সংকট সত্ত্বেও, কিছু উন্নয়ন অংশীদার তাদের ঋণের খরচ এবং সুদের হার বাড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য উন্নয়ন অংশীদারদেরকে কার্যকর বিকল্প খুঁজে বের করার আহ্বান জানাচ্ছি যাতে আমাদের অর্থনীতিগুলো উদ্ভুত চ্যালেঞ্জগুলি আরও ভালভাবে মোকাবেলা করতে পারে।”
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আশা করে যে, জলবায়ু সংক্রান্ত কর্মকা-ে বিশ্বব্যাংকের বর্ধিত সম্পৃক্ততা প্যারিস চুক্তির অধীনে অর্থায়নের ঘাটতি পূরণে সহায়তা করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “আমরা জলবায়ু প্রশমন ও অভিযোজনের মধ্যে অর্থায়নের সমান বণ্টনের ওপর জোর দেব।”
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও প্রস্তুতিতে বিশ্বব্যাপী রোল-মডেল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে এবং আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা, দুর্যোগ-সহিষ্ণু অবকাঠামো এবং সম্প্রদায় ভিত্তিক পদক্ষেপের ক্ষেত্রে প্রচুর বিনিয়োগ করেছে।
তিনি বাংলাদেশকে জলবায়ু অভিযোজনের একটি জীবন্ত গবেষণাগার হিসেবে বর্ণনা করেন যেখানে বেশ কিছু প্রকৃতি-ভিত্তিক ও কৌশলগত সমাধান রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ এর অধীনে প্রকল্পগুলি বাস্তবায়নে আমাদের সাথে যোগ দেয়ার জন্য বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের আমন্ত্রণ জানান।”
রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারে তাদের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে তারা জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে, কিন্তু আজ পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গাও ফিরে যায়নি।
তিনি বলেন, “বিস্তৃত অঞ্চলের জন্য ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তার প্রভাবের পাশাপাশি পরিস্থিতি আমাদের জন্য ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে। আমি বিশ্বব্যাংককে আমাদের মানবিক প্রচেষ্টায় যোগদানের জন্য এবং রোহিঙ্গা ও তাদের সম্প্রদায়ের জন্য ৫৯০ মিলিয়ন ডলার অনুদানের জন্য ধন্যবাদ জানাই।”
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ গত চার দশকে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে এবং ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে ব্যাপক নৃশংসতার পর থেকে তাদের সংখ্যা ১.২ মিলিয়নে পৌঁছেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছিলো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজের ভাগ্য গড়তে নয়, দুঃস্থ মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য তিনি ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাবা-মা এবং তিন ভাইসহ সবকিছু হারিয়ে দেশবাসীকে পাশে পেয়ে তিনি দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, তাঁকে তাঁর জীবনের অনেক ঝুঁকির মুখোমুখি হতে হয়েছে, তবে তিনি কখনই মাথা নত করেননি।
তিনি বলেন, ‘আমি কখনো মাথা নিচু করে দেশবাসীকে অসম্মান করতে চাই না।’
প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, বাঙালি একটি বিজয়ী জাতি, আমরা বিজয়ী জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে এগিয়ে যেতে চাই। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অব্যাহত ও অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে, কারণ তার আশেপাশে থাকা লোকদের কঠোর পরিশ্রম, আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করার কারণে এবং সে সাথে রয়েছে দেশের জনগণের অটুট সমর্থন।
প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস এবং এর প্রাক্তন প্রধান অর্থনীতিবিদ কৌসিক বসু অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন এবং বৈশ্বিক ঋণদাতা ভিপি মার্টিন সমাপনী বক্তব্য রাখেন।
শেখ হাসিনা বলেন, তিনি বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশের অংশীদারিত্বের ৫০ বছর উপলক্ষ্যে সবার সাথে যোগ দিতে পেরে আনন্দিত।
তিনি বলেন, “আমি প্রেসিডেন্ট মালপাসকে তার আমন্ত্রণ ও আতিথেয়তার জন্য ধন্যবাদ জানাই। বিশ্বব্যাংকে অনেক বাংলাদেশীকে নিয়োজিত দেখে আমি আনন্দিত।” তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ নির্বিঘেœ এগিয়ে যেতে থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক একটি নেতৃস্থানীয় উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশকে ধারাবাহিকভাবে সহায়তা করে আসছে। বিশ্বব্যাংক চলমান আইডিএ কর্মসূচির অধীনে বাংলাদেশের জন্য বর্তমান বৈদেশিক সহায়তার প্রায় ৩২ শতাংশ অবদান রাখে।
তিনি আরো বলেন, “এছাড়া, আইএফসি এবং এমআইজিএ আমাদের বেসরকারী খাতকেও সহায়তা করছে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “এখানে (বিশ্বব্যাংক) আমার উপস্থিতি ইঙ্গিত দেয় যে, আমরা বিশ্বব্যাংকের প্রতি আমাদের আস্থা বজায় রেখেছি। আগামী দুই দশকে আমাদের সাফল্য নির্ভর করবে আমাদের সম্মিলিত সক্ষমতা এবং ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই উপায়ে উদীয়মান চ্যালেঞ্জগুলি অতিক্রম করার প্রচেষ্টার উপর”।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার পিতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দূরদর্শী নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতাকে আমাদের সংবিধানে মৌলিক রাষ্ট্রীয় নীতি হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। তার নৃশংস হত্যাকা-ের পর, জাতিকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে আমাদের দীর্ঘ ২১ বছরের গণতান্ত্রিক সংগ্রাম করতে হয়েছে। তিনি বলেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহন তার সরকার ২০২১ সালের মধ্যে একটি ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার অঙ্গীকার করে।
তিনি বলেন, “টানা তিন মেয়াদে জনগণ ও দেশের সেবা করার সুযোগ লাভের জন্য আমি আমাদের জনগণের কাছে কৃতজ্ঞ। গত দেড় দশকে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সুষ্ঠু সামষ্টিক অর্থনৈতিক মৌলিক বিষয়গুলির জন্য বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটেছে। ”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৫ সালে, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশ হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করেছে এবং ২০২১ সালে, জাতিসংঘ এটিকে দ্বিতীয়বারের মতো এলডিসি মর্যাদা থেকে উত্তরণ লাভের যোগ্য ঘোষণা করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ২৬.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের অর্থনৈতিক উদ্দীপনা প্যাকেজ এবং বিনামূল্যের গণ টিকাদানের মাধ্যমে সফলভাবে কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলা করেছে।
তিনি বলেন, “আমাদের নিজস্ব সম্পদে পদ্মা বহুমুখী সেতুর সমাপ্তি এবং গত বছর এর উদ্বোধন সম্ভবত আমাদের সহনশীলতা ও সাফল্য অর্জনের সেরা উদাহরণ।”
শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ আজ বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতি হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে, যার জিডিপি ৪৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
তিনি বলেন, “আমাদের অর্থনীতি গত এক দশকে গড়ে ৬ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। মহামারীর ঠিক আগে এটি ৮.১৫ শতাংশে পৌঁছেছে। এর ফলে ২০২২ সালে মাথাপিছু আয় ২,৮২৪ মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২২ সালে সার্বিক দারিদ্র্যের হার ১৮.৭ শতাংশে নেমে এসেছে যা ২০০৬ সালে ছিল ৪১.৫ শতাংশ।
তিনি বলেন, তার সরকার সামাজিক সুরক্ষার জন্য জাতীয় বাজেট বরাদ্দ ৪০ গুণ বাড়িয়েছে, যা জিডিপির ২.৫ শতাংশ।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার এক বছর আগে সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার বিনা খরচে সকল গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষকে আবাসন প্রকল্পের আওতায় আনার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, “আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে, আমরা প্রায় ৫০ লাখ মানুষকে বিনা খরচে বাড়ি দিয়েছি এবং আয়সংস্থানমূলক দক্ষতা ও সহায়তা দিয়েছি।” প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তার সরকার প্রতিটি বাড়ির দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা এবং বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের শ্রমশক্তিতে নারীদের অংশগ্রহণের হার আমাদের আঞ্চলিক দেশগুলোর তুলনায় বেশি।
শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের সরকার সম্প্রতি আমাদের জাতীয় জিডিপিতে নারীদের গৃহস্থালির কাজ প্রতিফলিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা বাংলাদেশকে একটি আঞ্চলিক সংযোগ, বিমান ও লজিস্টিক হাব হিসেবে গয়ে তোলার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়।
তিনি বলেন, “আমরা ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি, যা ২০৩০ সালের মধ্যে আনুমানিক দশ মিলিয়ন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খলে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। বিশ্বের শতাধিক সেরা সবুজ কারখানার অর্ধেকেরও বেশি এখন বাংলাদেশে রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে একটি ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার জন্য তার পরবর্তী রূপকল্প চালু করেছে যার লক্ষ্য ডিজিটালভাবে নাগরিকদের ক্ষমতায়িত করা; চেহারাহীন সরকারি সেবা প্রদান; একটি জ্ঞান-ভিত্তিক নগদ অর্থ লেনদেনহীন অর্থনীতি; এবং একটি অধিকার-ভিত্তিক ন্যায়সঙ্গত এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ।
অনলাইন ডেস্ক :
নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে গোপালগঞ্জ জেলায় দুই দিনের ব্যক্তিগত সফর করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ ৮ ডিসেম্বর শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এম এম ইমরুল কায়েস বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের আচরণবিধি মেনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে সরকারি প্রোটোকল না নিয়ে পতাকাবিহীন ব্যক্তিগত গাড়িতে টুঙ্গিপাড়া থেকে কোটালিপাড়া যান। বঙ্গবন্ধুকন্যা গতকাল ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জও এসেছেন সরকারি প্রোটোকল ছাড়া।’
ব্যক্তিগত সফরে গত ৭ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেলে সড়কপথে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় আসেন প্রধানমন্ত্রী।
টুঙ্গিপাড়া ও কোটালিপাড়ায় ব্যক্তিগত সফর শেষে শুক্রবার বিকেলে সড়কপথে ঢাকায় ফেরেন তিনি।
সফরকালে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
তিনি এ দুদিন টুঙ্গিপাড়ার বাড়িতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্ট নিহত স্বজনদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে ফাতিহা পাঠ ও দোয়া করেন। মোনাজাতে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
চলারপথে রিপোর্ট :
দিনাজপুরের কাহারোলে হিমাগারে আলু বাছাইয়ের কাজ করার সময় ফ্যান ছিঁড়ে পড়ে মোছাঃ আনোয়ারা বেগম (৪৫) নামে এক মহিলা গুরুতর আহত হয়েছেন।
আহত মোছাঃ আনোয়ারা বেগম কাহারোল উপজেলার মুকুন্দপুর ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের মোঃ শাহিনুর ইসলামের স্ত্রী। আজ ২৯ আগস্ট মঙ্গলবার সকাল ১১টায় কাহারোল উপজেলার মুকুন্দপুর ইউনিয়নের বটতলা এলাকায় অবস্থিত শাহী হিমাগারে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
শাহী হিমাগারে কর্মরত শ্রমিক মোঃ আব্দুল আজিজ জানান, বটতলা এলাকায় অবস্থিত শাহী হিমাগারে সকালে আলু বাছাইয়ের কাজ করছিলেন কিছু মহিলা শ্রমিক। কাজ করার সময় হঠাৎ করে মোছাঃ আনোয়ারা বেগমের মাথার উপর একটি ফ্যান ছিঁড়ে পড়ে যায়। এতে তিনি মাথায় আঘাতে পেলে তাকে আহত হলে তাকে উদ্ধার করে বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আফরোজ সুলতানা লুনা জানান, সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে তাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আনা হয়। এই মুহূর্তে রোগীর অবস্থা আশংকা মুক্ত নয়। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে একদিনেই ২৯২টি মামলা করেছে ট্রাফিক বিভাগ। ঢাকা মহানগরীতে এসব মামলায় ১৭ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
আজ ১৮ সেপ্টেম্বর বুধবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মো. ওবায়দুর রহমান এসব তথ্য জানান।
পুলিশ কর্মকর্তা জানান, যারা সড়কে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে এবং আইন অমান্য করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ। এরই অংশ হিসেবে ১৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার একদিনে আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ২৯২টি মামলা ও ১৭ লাখ ৬৭ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করেছে ট্রাফিক পুলিশ।
ওবায়দুর রহমান আরও জানান, নগরীর বিভিন্ন সড়কে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ৩৯টি গাড়ি ডাম্পিং ও ১৫টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে। ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের কাছ থেকে ছয় লাখ নয় হাজার টাকা তাৎক্ষণিক জরিমানা আদায় করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
বিদায় ২০২৪, স্বাগত ২০২৫। শুভ হোক নতুন বছর। সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা। বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের মতো আমরাও আমাদের অগণিত পাঠকদের জানাই ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’। রাজনৈতিক সহিংসতা, নানা দুর্যোগ-দুর্ঘটনা আর ঘটনা প্রবাহের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে ইংরেজি ২০২৪ সাল। মহাকালে মিলিয়ে গেল আরো একটি খ্রিস্টীয় বছর। সেইন্ট গ্রেগরি প্রবর্তিত ক্যালেন্ডারের হিসাবে ২০২৪ সাল শেষ হয়ে শুরু হয়েছে ২০২৫ সাল। সারাবিশ্বের মানুষ আনন্দ-উল্লাস করে পালন করছে এই নতুন বছরের শুরুর ক্ষণটিকে।
মহাকালের অতল গর্ভে হারিয়ে গেছে অনেক প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির সাক্ষী হয়ে থাকা আরো একটি বছর। আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু, বিরহদহন লাগে।/ তবুও শান্তি, তবু আনন্দ, তবু অনন্ত জাগে। – কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানের এ কথার মতই দুঃখ, কষ্ট সবকিছু কাটিয়ে নতুন জীবনের দিকে যাত্রার প্রেরণা নেবে মানুষ। নতুন বছরটি যেন সমাজ জীবন থেকে, প্রতিটি মানুষের মন থেকে সকল গ্লানি, অনিশ্চয়তা, হিংসা, লোভ ও পাপ দূর করে। রাজনৈতিক হানাহানি থেমে গিয়ে আমাদের প্রিয় স্বদেশ যেন সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যেতে পারে। নতুন বছরটি আনন্দে, শান্তিতে ভরে উঠুক-এই প্রত্যাশা। শুভ নববর্ষ ২০২৫!
চলারপথে রিপোর্ট :
ঝিনাইদহের শৈলকূপায় সাপের কামড়ে তমা (৯) নামে এক শিশু শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। আজ ১২ সেপ্টেম্বর সকালে দিগনগর ইউনিয়নে এঘটনা ঘটে। নিহত শিশু একই ইউনিয়নের দিগনগর গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণির শিক্ষার্থী ও একই গ্রামের নেকবর মিয়ার মেয়ে।
জানা গেছে, রাতে মায়ের সাথে বিছানায় ঘুমিয়ে ছিল শিশু তমা। রাত ১০টার দিকে শিশুটি ঘুম ভেঙ্গে কান্না শুরু করে। সেসময় পরিবারের সদস্যরা ঘরের ভিতরে সাপ দেখতে পায়। এরপর শিশুটির নাভিতে সাপে কামড়ের দাগ দেখে। ওই শিশুটিকে শৈলকূপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। অ্যান্টিভেনম না থাকায় ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে রেফার্ড করে। এরপর সদর হাসপাতালেও অ্যান্টিভেনম না থাকায় ফরিদপুর রেফার্ড করে। ফরিদপুর হাসপাতালে নেওয়ার পথিমধ্যে শিশুটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন দিগনগর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জিসান পারভেজ শিমুল ও শৈলকূপা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম।