চলারপথে ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্র সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের ক্ষমতায় স্বাধীনতা বিরোধী, খুনী ও অগ্নি সন্ত্রাসীরা কখনই যেন ফিরতে না পারে সে বিষয়ে দেশবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে। এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
গতকাল মঙ্গলবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে রিজ কার্লটন হোটেলের হলরুমে আমেরিকায় বাংলাদেশী প্রবাসীদের দেয়া এক নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘খুনী, স্বাধীনতা বিরোধী, যুদ্ধাপরাধীরা যাতে আর কখনই ক্ষমতায় ফিরতে না পারে তা নিশ্চিত করুন। এই বিএনপি-জামাত জোট বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ২০১৩ থেকে ১৫ সাল পর্যন্ত তথাকথিত আন্দোলনের নামে বহু মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে এবং রাস্তার পাশের হাজার হাজার গাছ উজাড় করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দেন যে, ‘এই চক্র দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল যেখানে আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৪ বছরে দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে একে আবারো উন্নয়নের মহাসড়কে তুলেছে।বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে। আমরা এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধাগুলোকে সর্বোচ্চ কাজে লাগিয়ে দেশে বিদেশে রাষ্ট্র বিরোধী অপপ্রচার চালানোর জন্যে বিএনপি জামাত জোটের কঠোর সমালোচনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আরও বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছি। বিএনপি-জামাত জোট ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা ব্যবহার করে আমাদেরই বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এসব অপপ্রচারে কান না দেয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, লাখো মানুষের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পেয়েছে। তিনি বলেন, সবাইকে মাথা উঁচু করে ও যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে বিশ্বে চলতে হবে।
বাংলাদেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে তার সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, সরকার অবকাঠামো, স্বাস্থ্যসেবা, বাসস্থান, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ প্রতিটি খাতের উন্নয়ন নিশ্চিত করেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই আমরা এটা করতে পেরেছি।
দেশের উন্নয়নে প্রবাসীদের অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের উন্নয়নে প্রবাসীরা অনেক অবদান রেখেছে।’
প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে হুন্ডির পরিবর্তে বৈধ মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোর আহ্বান জানান কারণ, সরকার যথাযথ প্রক্রিয়ায় রেম্যিটান্স প্রেরণকে উৎসাহিত করতে ২.৫ শতাংশ প্রণোদনা ঘোষণা করেছে।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারনে বিশ^ব্যাপী অর্থনৈতিক সংকটের পরও সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারনে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখা সম্ভব হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, চলমান যুদ্ধের কারণে উন্নতসহ অনেক দেশ সংকটে পড়লেও বহু দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থা এখনও ভালো।
প্রধানমন্ত্রী খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন যেন বাংলাদেশ কোন সংকটে না পড়ে।
দেশের দারিদ্র্যের হার ১৮.৭ শতাংশ এবং অতি দারিদ্রের হার ৫.৬ শতাংশে নামিয়ে আনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে কোন চরম দারিদ্র্য থাকবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাংক অনুসরণ করে সারাদেশে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় বিনামূল্যে বাড়ি দিয়ে আসছে।
তিনি আরো বলেন, তাঁরা ইতোমধ্যে আবাসন প্রকল্পের আওতায় ৩৫ লাখ লোককে বাড়ি দিয়েছেন এবং তাদের জীবিকা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘দেশে কেউ গৃহহীন থাকবে না, কারণ সরকার প্রতিটি গৃহহীন লোককে বিনামূল্যে আবাসন প্রকল্পের আওতায় আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
এ লক্ষে আরো ৬০ হাজার ঘর তৈরি হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
এ সময় মঞ্চে অন্যান্যের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন উপস্থিত ছিলেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান অন্ষ্ঠুান পরিচালনা করেন।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের তরুণ প্রজন্মই হবে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের প্রতিটি ক্ষেত্রে সবচেয়ে দক্ষ জনশক্তি।
আজ ২৯ জুলাই শনিবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে প্রথমবারের মতো দুই দিনব্যাপী বাংলাদেশ স্টার্টআপ সামিট-২০২৩ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ একটি স্মার্ট দেশ হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তরুণ প্রজন্ম মেধাবী এবং তাদের নতুন উদ্ভাবন বাস্তবায়নের ক্ষমতা রয়েছে।
চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার জন্য সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা প্রতিটি উপজেলায় বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করছি এবং ভবিষ্যতের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি।
শেখ হাসিনা বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ইন্টারনেট অব থিংস, ব্লক চেইন, রোবোটিকস, বিগ ডাটা, মেডিকেল স্ক্রাইব, সাইবার নিরাপত্তার মতো উন্নত প্রযুক্তিতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে হবে।
সরকারপ্রধান জানান, তার সরকারের লক্ষ্য ২০২৫ সালের মধ্যে পাঁচটি ইউনিকর্ন (কমপক্ষে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি স্টার্টআপ কোম্পানিকে ইউনিকর্ন বলা হয়) এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৫০টি ইউনিকর্ন স্টার্টআপ তৈরি করতে সহায়তা করা। যেখানে প্রতিটি ইউনিকর্ন স্টার্টআপ লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, আমি দেশি এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের স্টার্টআপগুলোতে আরও বেশি বিনিয়োগ করার আহ্বান জানাই। আমরা আপনার বিনিয়োগ রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালা তৈরি করেছি।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। বক্তব্য রাখেন আইসিটি বিভাগের সচিব শামসুল আরেফিন ও স্টার্টআপ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদ।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ‘ভারত-বাংলাদেশ স্টার্টআপ ব্রিজ’ নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্ম এবং ‘স্মার্ট বাংলাদেশ স্টার্টআপ ফান্ড’-এর পাশাপাশি ‘স্মার্ট বাংলাদেশ এক্সিলারেটর’ উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ স্টার্টআপ সামিট, বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্রান্ট এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বিষয়ক তিনটি অডিও-ভিজ্যুয়াল প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
এ ছাড়া আটটি স্টার্টআপকে তাদের অসামান্য পারফরম্যান্সের জন্য আটটি বিভিন্ন বিভাগে স্টার্টআপ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে এবং সেগুলো হল শপআপ, পাঠাও, বিকাশ, ১০ মিনিট স্কুল, ইউএনডিপি ইয়ুথকো ল্যাব, নগদ, এসবিকে টেক ভেঞ্চার এবং পরবর্তী অর্থায়ন।
পুরস্কার প্রাপ্তদের পক্ষে নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক এবং এসবিকে টেক ভেঞ্চারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোনিয়া বশির কবির তাদের নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করেন। এ ছাড়া দুই উদ্যোক্তার মধ্যে বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন অনুদান থেকেও অনুদান দেওয়া হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশ থেকে অন্তত এক লাখ শ্রমিক নিয়োগের কথা জানিয়েছে জাপানি কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়ীরা। আজ ২৯ মে বৃহস্পতিবার টোকিওতে ‘বাংলাদেশ সেমিনার অন হিউম্যান রিসোর্সেস’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, জাপানে বাংলাদেশিদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রয়োজনীয় সব কিছু করবে। এটা আমার জন্য সবচেয়ে রোমাঞ্চকর ও প্রেরণার দিন। এটি শুধু কাজ করার জন্য নয়, বরং জাপানকে জানারও দ্বার উন্মোচন করবে বাংলাদেশের মানুষের জন্য।
সেমিনারে প্রধান উপদেষ্টা দুটি সমঝোতা স্মারকের সাক্ষী হন। প্রথমটি বাংলাদেশের ব্যুরো অব ম্যানপাওয়ার এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং (বিএমইটি) ও কাইকম ড্রিম স্ট্রিট (কেডিএস)-এর মধ্যে, যার একটি জাপান-বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগ; দ্বিতীয়টি বিএমইটি ও জাপানের ন্যাশনাল বিজনেস সাপোর্ট কম্বাইন্ড কোঅপারেটিভস (জাপানে ৬৫টির বেশি কোম্পানির একটি ফেডারেশন) এবং জেবিবিআরএ (জাপান বাংলা ব্রিজ রিক্রুটিং এজেন্সি)-র মধ্যে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই অনুষ্ঠানটি একটি দ্বার উন্মোচনের প্রতীক। তিনি উল্লেখ করেন যে বাংলাদেশ ১৮ কোটি মানুষের দেশ, যার অর্ধেকই ২৭ বছরের নিচে। সরকারের কাজ হলো তাদের জন্য দরজা খুলে দেওয়া।
শিজুওকার কর্মপরিবেশ উন্নয়ন সমবায়ের তত্ত্বাবধায়ক সংস্থার প্রতিনিধি পরিচালক মিতসুরু মাতসুশিতা বলেন, অনেক জাপানি কোম্পানি বাংলাদেশিদের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করছে এবং তিনি বিশ্বাস করেন যে এই ধারা অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশি মেধাবীদের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। তাদের প্রতিভা লালন করা আমাদের দায়িত্ব।
এনবিসিসি চেয়ারম্যান মিকিও কেসাগায়ামা স্মরণ করেন যে প্রায় ১৪ বছর আগে অধ্যাপক ইউনূস জাপানে এসেছিলেন এবং ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে নারীদের সহায়তার গল্প বলেছিলেন।
তিনি বলেন, আমাদের ফেডারেশন তরুণ ও দক্ষ শ্রমিকের জন্য বাংলাদেশকে একটি সম্ভাবনাময় উৎস হিসেবে দেখছে। তারা উভয় দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারবে। আগামী পাঁচ বছরে আমরা এক লাখ বাংলাদেশি শ্রমিককে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত।
ওয়াতামি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট মিকি ওয়াতানাবে জানান, বাংলাদেশে তাদের প্রতিষ্ঠিত একটি স্কুল প্রতিবছর ১৫০০ শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দেয়, এবং তারা এই সংখ্যা ৩০০০-এ উন্নীত করার পরিকল্পনা করছে। বাংলাদেশের কারিগরি শিক্ষা গ্রহণকারীরা জাপানের চাকরির বাজারে প্রবেশ করতে পারবে।
জাপান ইন্টারন্যাশনাল ট্রেইনি অ্যান্ড স্কিল্ড ওয়ার্কার কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের (জেইটিসিও) চেয়ারম্যান হিরোআকি ইয়াগি জাপানের শ্রমবাজারে বাংলাদেশিদের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখনও ভাষা শিক্ষকের ঘাটতি রয়েছে।
জাপানের স্বাস্থ্য, শ্রম ও কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের (এমএইচএলডব্লিউ) প্রতিমন্ত্রী নিকি হিরোবুমি বলেন, জাপানে জনসংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে এবং সে কারণে বাংলাদেশি শ্রমিকদের সহায়তা প্রয়োজন হবে। এটি শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, জাপানের জন্যও একটি আশাব্যঞ্জক দিক হতে পারে।
স্বাগত বক্তব্যে জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. দাউদ আলী বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে জাপানে শ্রমিক সংকট এক কোটি ১০ লাখ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। বাংলাদেশ এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আরও দক্ষ শ্রমিক পাঠাতে পারে। সূত্র-বাসস
অনলাইন ডেস্ক :
বাশার আল-আসাদের পতনের পর সিরিয়ায় বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতৃত্বে নতুন অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের একজন হলেন আয়শা আল-ডিবস। নারীবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি।
আয়শা আল-ডিবস জানিয়েছেন, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা গৃহযুদ্ধ জর্জরিত দেশটি পুনর্গঠনে তাঁর প্রশাসন নারীদের অবদান রাখতে দিতে সক্ষম হবে।
২২ ডিসেম্বর রবিবার কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আয়শা আল-ডিবস একথাগুলো বলেন।
সাক্ষাৎকারে আয়শা আল-ডিবস জানান, সিরীয় নারীদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় সম্পৃক্ত করতে এবং স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা খাতে যোগ্যতাসম্পন্ন নারীদের নিয়োগ দিতে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সিরিয়ার সব প্রদেশ ও সম্প্রদায়ের নারীদের আসন্ন জাতীয় সম্মেলনে অংশ নিতে উৎসাহ দেন দেশটির অন্তর্বর্তী সরকারের এই মন্ত্রী। সম্মেলনে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা।
আসাদ সরকারের কারাগার থেকে নারী বন্দীদের মুক্তি ও তাঁদের কল্যাণের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হবে বলে জানান আয়শা আল-ডিবস। সেই সাথে তিনি জানান, কারাগারগুলোয় বন্দী নির্যাতনের জড়িত কারা কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
তিনি বলেন, সাবেক বন্দী নারীদের পুনর্বাসনের জন্য তাঁদের মনস্তাত্ত্বিক সহায়তার প্রয়োজন। তাঁদের স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও আইনি সুরক্ষার প্রয়োজন, যাতে তাঁরা কারা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিতে পারেন।
বিদ্রোহী যোদ্ধাদের দামেস্ক দখলের মধ্য দিয়ে ৮ ডিসেম্বর পতন হয় স্বৈরাচার বাশার আল-আসাদ সরকারের। শুধু তা-ই নয়, বাশার আল-আসাদ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ায় সিরিয়ায় পাঁচ দশকেরও বেশি সময়ের পারিবারিক শাসনের অবসান হয়। সূত্র : আল-জাজিরা
অনলাইন ডেস্ক :
সকল সন্তানদের কাছে নির্ভরতার অন্যতম প্রতীক হচ্ছেন বাবা। সন্তানের কাছে শ্রদ্ধেয় এক গভীর অনুভূতির শব্দ এটি। নিখাদ ভালোবাসার সঙ্গে উচ্চারিত হয় ‘বাবা’ শব্দটি। বাবা শব্দের মাঝেই জড়িয়ে আছে ভালোবাসা, মায়া, নির্ভরতা। আর তাই প্রত্যেক বাবাকে শ্রদ্ধা জানাতে প্রতি বছর জুন মাসের তৃতীয় রবিবার বিশ্বব্যাপী পালন করা হয় ‘বিশ্ব বাবা দিবস’। বাবার সঙ্গে সুন্দর সময় কাটানোসহ নানা উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদযাপন করা হয় দিনটি।
কিন্তু কোথা থেকে বা কবে থেকে বাবা দিবস পালনের সূচনা, তা আমাদের অনেকেরই অজানা।
বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিক থেকে বাবা দিবস পালনের প্রচলন হয়। মায়েদের পাশাপাশি বাবারাও তাদের সন্তানের প্রতি দায়িত্বশীল- এটা বোঝানোর জন্যই এই দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে। পৃথিবীর সব বাবাদের প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা প্রকাশের ইচ্ছা থেকেই যার শুরু।
ভার্জিনিয়ার মোনোনগাহ্য় কয়লা খনিতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে প্রাণ হারান ৩৬২ জন পুরুষ। ঘটনাটি ১৯০৭ সালের ডিসেম্বর মাসে। নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগই ছিলেন সন্তানের বাবা। এই ঘটনায় প্রায় এক হাজার শিশু পিতৃহারা হয়ে পড়ে। পরের বছর ১৯০৮ সালের ৫ জুলাই পশ্চিম ভার্জিনিয়ার এক গির্জায় একটি স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। নিহতদের সম্মান জানাতে সন্তানরা মিলে এই প্রার্থনাসভার আয়োজন করে। এটি ছিল বাবাকে সম্মান জানাতে ইতিহাসের প্রথম আয়োজন।
সনোরা স্মার্ট ডড নামে এক নারীর বড় ভূমিকা রয়েছে বাবা দিবসকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিতে। ১৯০৯ সালের আগে ওয়াশিংটনে বাবা দিবস বলে কোনও বিশেষ দিন ছিল না। সে সময় স্থানীয় গির্জায় ডড মা দিবস পালনের কথা শোনেন।
মা দিবস পালনের রীতি রয়েছে কিন্তু বাবা দিবস পালনের রীতি নেই জেনে ডড ভীষণ অবাক হন। তারপর তিনি বাবা দিবসের স্বীকৃতির জন্য সোচ্চার হয়ে ওঠেন। ডড তার বাবাকে অসম্ভব ভালোবাসতেন। মা ছিল না তার। মায়ের মৃত্যুর পর শত দুঃখ-কষ্টের মধ্যে থেকেও তাদের সাত ভাইবোনকে বড় করে তুলেছিলেন তাদের সিঙ্গেল বাবা। বাবার এই ত্যাগ দেখে ডডের মনে হলো, মা দিবসের এত আয়োজন হলে বাবা দিবস কেন বাদ থাকবে। বাবাকে সম্মান জানানোর জন্যও একটা দিন থাকা দরকার।
তারপর অনেক চেষ্টা করে দীর্ঘ এক বছরের সাধনায় স্থানীয় কমিউনিটিগুলোতে বাবা দিবস পালন করতে পারেন ডড। ১৯১০ সালের ১৯ জুন বিশ্বে প্রথমবারের মতো পালিত হয় বাবা দিবস।
ওয়াশিংটন থেকে শুরু হলেও পরবর্তী সময়ে এক রাজ্য থেকে আরেক রাজ্যে ছড়িয়ে পড়তে থাকে এ দিবস পালনের কথা। আস্তে আস্তে মা দিবসের পাশাপাশি বাবা দিবসের প্রতিও সচেতন হতে থাকেন সন্তানরা। এরপর ১৯২৪ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্যালভিন কুলি বাবা দিবসে সম্মতি দেন। তারপর ১৯৬৬ সালে প্রেসিডেন্ট লিন্ডন জনসন জুন মাসের তৃতীয় রবিবার আনুষ্ঠানিকভাবে বাবা দিবস উদযাপনের কথা ঘোষণা করেন। এবং সবশেষে ১৯৭২ সালে তখনকার আমেরিকান প্রেসিডেন্ট নিক্সন একটি আইনে স্বাক্ষর করে বাবা দিবসকে জাতীয় মর্যাদা দেন। তারপর থেকে জুন মাসের তৃতীয় রবিবার সারা বিশ্বে বাবা দিবস পালন হয়ে আসছে।
হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছর আজ পড়েছে বাবা দিবস। বিশ্বের কয়েকটি দেশ ভিন্ন মাসের কয়েকটি ভিন্ন তারিখে বাবা দিবস পালন করলেও, একটি বিশাল অংশ যেমন- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, চিলি, কলাম্বিয়া, কোস্টারিকা, কিউবা, সাইপ্রাস, চেক প্রজাতন্ত্র, ফ্রান্স, গ্রিস, হংকং, ভারত, আয়ারল্যান্ড, জ্যামাইকা, জাপান, মালয়েশিয়া, মেক্সিকো, নেদারল্যান্ড, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলংকা, সুইজারল্যান্ড, বাংলাদেশ, ভেনিজুয়েলা ও জিম্বাবুয়েসহ আরও কিছু দেশে জুনের তৃতীয় রোববার এ বিশেষ দিনটি পালিত হয়।
অন্যদিকে দক্ষিণ আমেরিকায় দিবসটি পালিত হয় ১৯ মার্চ। আর অস্ট্রেলিয়া ও ফিজিতে পালন করা হয় সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম রোববার।
বাবা দিবস পালনের ক্ষেত্রে দেশ ভেদে বৈচিত্র্য দেখা যায়। এ দিবসটি বিভিন্ন দেশে বিভিন্নভাবে পালিত হয়। এ দিন ছেলেমেয়েরা তাদের বাবাকে উপহার দিয়ে ভালোবাসা প্রকাশ করে। আর বাবারাও ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে গিফট পেয়ে বেশ অভিভূত হয়ে যান। এ গিফট দেয়ার ক্ষেত্রেও দেশ ভেদে দেখা যায় ভিন্নতা। কোনো কোনো দেশে ছেলেমেয়েরা বাবাকে কার্ড বা ফুলের তোড়া উপহার দিয়ে বাবা দিবসের শুভেচ্ছা জানায়। আবার কোথাও কোথাও বাবাকে ছেলেমেয়েরা নেকটাই ও উপহার দেয়। অনেকে আবার বাবা দিবস উপলক্ষে কেক কাটার আয়োজনও করে।
একটি পরিবারে মায়ের চেয়ে বাবার গুরুত্বও কোনো অংশে কম নয়। পরিবারের প্রধানের ভূমিকায় বাবার অবদান অনস্বীকার্য। বাবার কঠোর শাসন অনেকের জীবনের গতিকে পরিবর্তন করে আলোর পথে এনেছে। তিনি যেন সন্তানের জন্য এক বটবৃক্ষ। পৃথিবীর সব বাবার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানিয়ে তাই তো কবির ভাষায় বলতে হয়, ‘বাবা’ কখনো বলা হয়নি তোমায় ঠিক কতখানি ভালোবাসি।
অনলাইন ডেস্ক :
ভারতে আজ ২ অক্টোবর বুধবার সকালে একটি ব্যক্তিগত হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে এর ৩ আরোহী নিহত হয়েছে। জানা গেছে
হেলিকপ্টারে ৩ আরোহী ছিল।
এক দমকল কর্মকর্তার বরাত দিয়ে দেশটির গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত মুম্বাইয়ের দক্ষিণ-পূর্বে এবং পুনে শহরের উপকণ্ঠে বুধবার সকাল পৌনে ৭টার দিকে পাহাড়ি এলাকায় হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর এতে আগুন ধরে যায়।
মুম্বাইয়ের চিফ ফায়ার অফিসার দেবেন্দ্র পটফোড সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, দুর্ঘটনায় দুই পাইলট এবং একজন প্রকৌশলী মারা গেছেন।
তিনি বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখি হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়ে আগুন ধরে গেছে।এতে তিন আরোহী দগ্ধ হয়ে নিহত হয়েছে।মরদেহ পুলিশ উদ্ধার করে নিয়ে গেছে।
হেলিকপ্টারটি বিরোধী দল জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টির নেতাদের নিয়ে মুম্বাইয়ের দিকে যাচ্ছিল।
দুর্ঘটনার কারণ এখনও সনাক্ত করা না গেলেও, স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে ওই সময় এলাকায় ঘন কুয়াশা ছিল।
সূত্র : আরব নিউজ