চলারপথে রিপোর্ট :
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবাইকে দেশ ও জনগণের কল্যাণে একত্রে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
আজ ৪ মে বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনের ‘ক্রেডেনশিয়াল হলে ‘শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা ২০২৩’ উপলক্ষে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এ আহ্বান জানান।
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘মানুষকে আলোর পথ দেখাবেন। দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করবেন।’
তিনি বলেন, পৃথিবীর সব ধর্মই মানুষের কল্যাণের কথা বলে। প্রতিটি ধর্মেই অনেক ভালো বিষয় আছে। রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন সব সময় যা উৎকৃষ্ট তা গ্রহণ এবং যা নিকৃষ্ট তা বর্জন করারও উপদেশ দেন। ‘মানুষের কল্যাণের জন্যই ধর্ম, অকল্যাণের জন্য নয়’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মানুষের জন্যই ধর্ম, ধর্মের জন্য মানুষ নয়।’
শুধু নিজে বা পরিবারকে নিয়ে ভালো থাকার চিন্তা না করে সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চিন্তা করারও তাগিদ দেন রাষ্ট্রপতি।
মহামতি বুদ্ধকে মানবতা ও মুক্তির পথিক হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় সম্প্রদায়ের অংশ। এই অঞ্চল তথা বিশ্বে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকদের দায়িত্ব ও কর্তব্য অনেক বেশি বলেও মনে করেন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন।
তিনি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতাদেরকে মহামতি বুদ্ধের শিক্ষাকে নিজের জীবনে প্রতিফলিত করতে এবং অন্যদেরকেও উৎসাহিত করার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশসহ বিশ্বের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের সঙ্গে মিশে আছে প্রাচীন বৌদ্ধবিহারসহ হাজার বছরের বৌদ্ধ ঐতিহ্য।’
মো. সাহাবুদ্দিন একটি সুখী-সমৃদ্ধ ও শান্তিময় বাংলাদেশ গড়তে গৌতম বুদ্ধের সুমহান শিক্ষা ও আদর্শকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি সবাইকে সৎ ও সুন্দর জীবন-যাপনে উদ্বুদ্ধ হওয়া, ভালো কাজে অন্যকে অনুপ্রাণিত করা এবং নিজেদেরকে দেশের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিও গুরুত্বারোপ করেন।
বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সাথে রাষ্ট্রপতি এবং তার সহধর্মিণী ড. রেবেকা সুলতানা আজ বিকাল চারটা থেকে করে প্রায় ঘণ্টাখানেক শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সাউন্ড সিস্টেমের মাধ্যমে বৌদ্ধ ধর্মীয় গান ও মিউজিকের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতারা রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
অনুষ্ঠানে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের উপসংঘরাজ শ্রীমৎ ধর্মপ্রিয় মহাথের, ধর্ম সচিব কাজী এনামুল হাসান, চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. প্রভাত চন্দ্র বড়ুয়া, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) প্রধান বার্তা সম্পাদক সমীর কান্তি বড়ুয়া, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান সুপ্ত ভূষণ বড়ুয়া এবং ট্রাস্ট সচিব জয়দত্ত বড়ুয়া উপস্থিত ছিলেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতা, রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার, বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি মিশনের প্রধান এবং আট শতাধিক আমন্ত্রিত অতিথিসহ প্রায় সহস্রাধিক লোক অংশ নেন।
অনলাইন ডেস্ক :
পাবনার সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাবকে ছিনিয়ে নেয়ার তিনদিন পর গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ ৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার সকাল ৭টার দিকে উপজেলার মথুরাপুর বিল এলাকার একটি বাড়ি থেকে ওহাবকে গ্রেফতার করা হয়।
জেলা পুলিশ সুপার মোরতোজা আলী খানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল এ গ্রেফতার অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত আসামি তার ব্যক্তিগত সহকারী রাব্বিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুজানগর সার্কেলের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ।
এর আগে ২ ফেব্রুয়ারি রবিবার বিকেলে উপজেলার মথুরাপুর স্কুল মাঠে পুলিশের গাড়ি থেকে কর্মী-সমর্থকরা আব্দুল ওহাবকে ছিনিয়ে নেন। এ ঘটনায় ওই দিন রাতে সুজানগর থানার উপ-পরিদর্শক মো. আজাহার আলী বাদী হয়ে আব্দুল ওহাবকে প্রধান আসামি একটি মামলা করেন। এতে ওহাবসহ ৬৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া আরো কয়েকশত জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই যৌথবাহিনীর অভিযানে ১৬ জনকে আটক করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এক নারীসহ ১১ জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে সোমবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ, আব্দুল ওহাবকে ছিনিয়ে নেয়ার পর থেকে পুলিশ ও যৌথবাহিনী তাকেসহ জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলমান রেখেছিলো। এরই অংশ হিসেবে পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে অভিযানে মথুরাপুর বিল এলাকার একটি বাড়ি থেকে তাকেসহ দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আসামিরা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।
চলারপথে ডেস্ক :
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলেই উন্নয়ন হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ মানুষকে উপহার দেয় উন্নয়ন। আমরা আজ শতভাগ বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি প্রত্যেকের ঘরে ঘরে। আমরা নতুন নতুন স্কুল করেছি। ২৬ হাজার নতুন প্রাইমারি স্কুল সরকারীকরণ করেছি। আজ আমাদের সাক্ষরতার হার ৭৫ দশমিক ২ শতাংশ।
আজ ১১ মার্চ শনিবার বিকেলে ময়মনসিংহের সার্কিট হাউজ মাঠে আওয়ামী লীগের বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে ময়মনসিংহে চারটি সিনেমা হলে বোমা হামলা হয়। তখন অনেক মানুষ মারা যায় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওদের ক্ষমতায় থাকা মানেই দেশের মানুষের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে উন্নয়ন হয়। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরই ময়মনসিংহকে বিভাগ করে দিয়েছি। প্রতিটি বিভাগের মতো এ বিভাগে ময়মনসিংহে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হবে, একটি পৃথক ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় করে দেবো। আমরা অনেক কিছু করতে পারতাম। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে অনেক কিছু সম্ভব হয়নি।’
দেশে খাদ্য উদ্বৃত্ত আছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘২০০১ সালে আমরা যখন ক্ষমতা হস্তান্তর করি, তখনো ২৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য মজুত রেখে গেছি। ২০০১ সালে আসলো লুটেরা, সন্ত্রাসীর দল বিএনপি। তারা আবার বাংলাদেশকে খাদ্যে ঘাটতির দেশে পরিণত করে। ২০০৯ সালে আবার যখন সরকার গঠন করি, তখন দেখি সেই ২৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতি। আল্লাহর রহমতে দেশে এখন আর খাদ্য ঘাটতি নেই। ২১ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য এখন মজুত আছে।’
আমিষের উৎপাদন বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘আবাদি জমির পাশাপাশি আমাদের জলাভূমিকেও ব্যবহার করতে হবে। মাছ চাষের মাধ্যমে জলাভূমির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।’
যুবসমাজকে উদ্যোক্তা হিসেবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘দেশের যুবসমাজকে উন্নয়নের অংশীদার হতে হবে। আমরা যুবকদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ ও ঋণের ব্যবস্থা করেছি। যুবকরা এসব সুযোগ নেওয়ার মাধ্যমে উদ্যোক্তা হিসেবে নিজের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি আরও মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে পারবেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার একটাই লক্ষ্য—আমার বাবা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার জন্য তা বাস্তবায়ন করা।’
শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার মাসে ময়মনসিংহে আমি আপনাদের জন্য কিছু উপহার নিয়ে এসেছি। এসময় উদ্বোধন করা ৭৩টি উন্নয়ন প্রকল্প পড়ে শুনিয়ে তিনি বলেন, স্বাধীনতার মাসে ৭৩টি প্রকল্প উদ্বোধন করে দিয়ে গেলাম, সেগুলো স্বযত্নে রাখবেন। এরপর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা ৩০টি প্রকল্প পড়ে শুনিয়ে বলেন, এগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।
এর আগে দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে জনসভাস্থল সার্কিট হাউজ মাঠ থেকে একযোগে ৭৩টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ৩০টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরমধ্যে প্রায় ৫৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা ৭৩টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং প্রায় দুই হাজার ৭৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩০টি উন্নয়ন প্রকল্পের নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন সরকারপ্রধান। দুপুর ২টা ৫৮ মিনিটে জনসভা মঞ্চে ওঠেন প্রধানমন্ত্রী। বিকেল ৩টায় প্রধান অতিথির আসন গ্রহণ করেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহেতাশেমুল আলমের সভাপতিত্বে জনসভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, মির্জা আজম এমপি, শফিউল আজম চৌধুরী নাদেল প্রমুখ।
প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যোগ দিতে সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মী, সমর্থক ও সাধারণ মানুষ দলে দলে আসতে থাকেন। দুপুর ১২টার দিকে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ মাঠ। প্রধানমন্ত্রী আসার আগেই জনসমুদ্রে পরিণত হয় জনসভাস্থল। সকাল থেকে সড়কজুড়ে নাচ-গান আর বাদ্য-বাজনা বাজিয়ে জনসভায় যোগ দেন নেতাকর্মীরা।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তুহিন জানিয়েছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় কোমলমতি শিশুদের নিরাপত্তা বিবেচনায় পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
আজ ৪ আগস্ট রোববার থেকে ধাপে ধাপে খোলার কথা থাকলেও সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয় বলে জানান তিনি।
মাহবুবুর রহমান জানান, পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। বন্ধ থাকা প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো ধাপে ধাপে খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
৪ আগস্ট থেকে দেশের ১২টি সিটি করপোরেশন এবং নরসিংদী জেলার পৌর এলাকা ব্যতীত প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট পরিচালিত শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর আওতায় লার্নিং সেন্টারগুলোতে শ্রেণি কার্যক্রম অনুমোদিত সময়সূচি অনুযায়ী চালু হবে বলে জানিয়েছিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
অনলাইন ডেস্ক :
মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী আজ। ১৯৮১ সালের এই দিনে দিবাগত রাতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে একদল বিপথগামী সৈনিকের হাতে তিনি শাহাদাতবরণ করেন। সেই থেকেই তাঁর প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপি দিবসটিকে যথাযথ মর্যাদায় শাহাদাতবার্ষিকী হিসেবে পালন করে আসছে। প্রতি বছরই দিবসটি উপলক্ষে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, দোয়া-মোনাজাতে দল ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী অংশ নেন। অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা, থাকে কয়েক দিনব্যাপী কর্মসূচি।
জিয়াউর রহমান তাঁর ঘটনাবহুল কর্মময় জীবনের কারণেই মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। তাঁর সততা, নিষ্ঠা, দেশপ্রেম, পরিশ্রম, নেতৃত্বের দৃঢ়তাসহ নানা গুণাবলি এ দেশের গণমানুষের হৃদয় স্পর্শ করেছিলেন।
জিয়াউর রহমান ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়ার গাবতলীর বাগবাড়িতে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মনসুর রহমান কলকাতায় প্রধান কেমিস্ট হিসেবে সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত ছিলেন। শৈশব ও কৈশোরের একটি সময় গ্রামে কাটিয়ে জিয়া পিতার সঙ্গে কলকাতায় এবং দেশ বিভাগের পর করাচিতে চলে যান। শিক্ষাজীবন শেষে ১৯৫৩ সালে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি কাকুলে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে ভর্তি হন।
১৯৫৫ সালে তিনি কমিশন লাভ করেন। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধে খেমকারান সেক্টরে অসীমসাহসিকতার সঙ্গে একটি কোম্পানির অধিনায়ক হিসেবে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। তাঁর কোম্পানি যুদ্ধে সবচেয়ে অধিক সাফল্য ও খেতাব লাভ করে। সৈনিক জীবনে তিনি যেমন চরম পেশাদারত্ব দেখিয়েছেন, তেমনি জাতীয় জীবনের সব সংকটে শক্ত হাতে হাল ধরেছেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী যখন নিরস্ত্র জনতার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। মেজর জিয়াউর রহমানই তখন চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। ৯ মাসের মুক্তিসংগ্রামে তিনি একটি সেক্টরের অধিনায়ক হিসেবে সমরনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। পাশাপাশি জেড ফোর্সের কমান্ডার হিসেবে নেতৃত্ব দেন। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি বীরউত্তম খেতাব লাভ করেন।
১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হওয়ার পর ওই বছরের ৭ নভেম্বর এক বিশেষ প্রেক্ষাপটে সিপাহি-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর আগে ৩ নভেম্বর ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে সামরিক অভ্যুত্থানে খোন্দকার মোশতাক আহমদ ক্ষমতাচ্যুত হন এবং সেনাবাহিনীর তৎকালীন প্রধান মেজর জেনারেল জিয়াকে গৃহবন্দি করা হয়। সেনাবাহিনীতে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে। চারদিকে এক অনিশ্চয়তার মধ্যে আধিপত্যবাদের শ্যেনদৃষ্টিতে উৎকণ্ঠিত ছিল সারা জাতি। ৭ নভেম্বর সিপাহি-জনতার মিলিত প্রয়াসে জিয়াকে মুক্ত করা হয় এবং নেতৃত্বের হাল ধরেন তিনি।
গভীর দেশপ্রেমের গুণাবলি দিয়ে জিয়াউর রহমান জাতির মধ্যে নতুন করে জাগরণের সৃষ্টি করেন। দেশের মানুষের উপযোগী একটি স্বতন্ত্র জাতীয়তাবাদী আদর্শের বাস্তবায়ন ঘটান। দেশে ঐক্যের রাজনীতি চালু করে সবাইকে এককাতারে নিয়ে আসেন তিনি। তাঁর প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল বিএনপিতে একদিকে যেমন চরম বামপন্থিরা স্থান পান তেমনি চরম ডানপন্থিরাও জায়গা করে নেন। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন, বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেন। মাত্র ছয় বছরের জন্য রাষ্ট্রপরিচালনার সুযোগ পেয়ে তিনি বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন এবং তলাবিহীন ঝুড়ির অপবাদ থেকে দেশ ও জাতিকে মুক্ত করেন। বিশ্বদরবারে বাংলাদেশকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সাহস জোগান। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীকে নতুনভাবে ঢেলে সাজিয়েছিলেন। মৃত্যুর পর ঢাকায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত তাঁর স্মরণকালের জানাজায় প্রমাণিত হয় তিনি কত জনপ্রিয় ছিলেন।
অনলাইন ডেস্ক :
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় দফায় ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের লিখিত পরীক্ষা আগামী ২৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে।
আজ ৬ মার্চ বুধবার রাতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তুহিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক মনীষা চাকমার সই করা ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারদের কাছে পাঠানো এক চিঠিতেও এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ ২০২৩ এর তৃতীয় গ্রুপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের লিখিত পরীক্ষা প্রশাসনিক কাজের স্বার্থে আগামী ২২ মার্চের পরিবর্তে ২৯ মার্চ সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে।
২৯ মার্চ সকাল ১০টায় লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে মর্মে অবগত করা ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করার অনুরোধ জানিয়ে প্রতিষ্ঠান প্রধানকে চিঠি দেওয়ার জন্য অনুরোধও জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
গত বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি রংপুর, সিলেট ও বরিশাল বিভাগের ক্লাস্টারের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে অধিদপ্তর। এরপর ২২ মার্চ রাজশাহী, খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এরপর ১৭ জুন ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
প্রথম ধাপে তিন লাখ ৬০ হাজার ৭০০, দ্বিতীয় ধাপে চার লাখ ৫৯ হাজার ৪৩৮ এবং তৃতীয় ধাপে ৩ লাখ ৪০ হাজার প্রার্থী আবেদন করেন। বর্তমানে প্রায় ৮ হাজারের বেশি পদ শূন্য রয়েছে।