চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বসতবাড়িতে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে গ্রামবাসীর কাছ থেকে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানসহ দুজনকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন আদালত।
গতকাল বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আফরিন আহমেদ হ্যাপী এ আদেশ দেন।
আসামিরা হলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সদর উপজেলার কালিসীমা গ্রামের বাসিন্দা কাইয়ূম মিয়া ও একই গ্রামের এলাই মিয়া।
ব্রাহ্মণবাাড়িয়া জেলা আদালতের পুলিশ পরিদর্শক কাজী দিদারুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, আসামিরা চার মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে আসেন। আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠান।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্ত আব্দুল কাইয়ূম ও এলাই মিয়া নিজেদের বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের বৈধ ঠিকাদার বলে ভুয়া পরিচয় দিয়ে গ্রামবাসীকে প্রলুব্ধ করেন। বসতবাড়িতে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার কথা বলে কালিসীমা গ্রামের মানুষের কাছ মোট অংকের টাকা হাতিয়ে নেন। তারা প্রতিটি পরিবারের কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা করে নিয়েছেন। এভাবে গ্রামের মোট ৫৮টি পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখেরও বেশি টাকা নেন।
এতে আরো উল্লেখ করা হয়, এক পর্যায়ে আসামিরা ভুয়া গ্যাস বিলের বই ছাপিয়ে এতে ভুতুড়ে হিসাব নম্বর বসিয়ে দুই মাসের অগ্রিম বিল পরিশোধের কথা বলে গ্রামবাসীর কাছ থেকে আরও টাকা নেন। পরে গ্রামের কয়েকজন বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশনের ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, আসামিরা তাদের যে বিলের বই ও হিসাব নম্বর দিয়েছেন সেগুলো ভুয়া।
এ নিয়ে ভুক্তভোগীরা ক্ষুব্ধ হলে গ্রাম্য সালিশ বসানো হয়। সালিশে অভিযুক্তরা গ্যাস সংযোগ দিতে অপরাগতা স্বীকার করেন এবং সবাইকে টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেন। এরপর টাকা ফেরত না দিয়ে কালক্ষেপণ করায় ভুক্তভোগীরা আদালতে মামলা করেন।
এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ সাফায়েত উল্লাহ তদন্তে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার নামে টাকা আত্মসাতের সত্যতা পেয়েছেন মর্মে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পণ্যবাহী একটি কাভার্ডভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তিনটি সিএনজিচালিত অটোরিকসাকে চাপা দিলে ১ শিশু আহত হয়। এ সময় ১০ যাত্রী নিরাপদে সড়ে যেতে সক্ষম হয়।
১৯ আগস্ট সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের সদর উপজেলার ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকোল কলেজ হাসপাতালের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কুমিল্লা থেকে সিলেটগামী একটি কাভার্ডভ্যান ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকোল কলেজ হাসপাতালের সামনে নির্মানাধীন মহাসড়কে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশের সার্ভিস লেনে পড়ে যায়।
এসময় সার্ভিস লেনে থাকা যাত্রীবাহী তিনটি সিএনজিচালিত অটোরিকসাকে চাপা দেয়।
তবে কাভার্ডভ্যানটি কিছুটা ধীরগতি অটোরিকসা গুলোর উপরে পড়ায় কমপক্ষে ১০জন যাত্রী নিরাপদে অটোরিকসা থেকে নেমে যেতে সক্ষম হন। এ ঘটনায় এক শিশু আহত হয়েছে।
খবর পেয়ে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌছে শিশুটিকে স্থানীয়দের সাহায়তায় উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।
খাটিখাতা হাইওয়ে থানার এএসআই মোঃ শাহিন মিয়া জানান, একটি কাভার্ডভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তিনটি অটোরিকসাকে চাপা দেয়। এ ঘটনায় একটি শিশু আহত হয়েছে, তবে শিশুটি শঙ্কামুক্ত।
চলারপথে রিপোর্ট :
চায়ের কাপ দিয়ে পুলিশের মাথায় ও মুখে আঘাত করে তাকে আহত করে পালিয়ে গেছেন এক আসামি। আহত পুলিশ সদস্যকে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যার দিকে ঘটনাটি ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন বৌ-বাজারে।
আহত পুলিশ সদস্যের নাম মো. সাইফুল ইসলাম। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় এসআই পদে কর্মরত।
সদর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম জানান, জেলা শহরের উত্তর মৌড়াইল এলাকায় ডাকাতি প্রস্তুতি মামলার আসামি ইয়ামিন মিয়ার নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। বুধবার সন্ধ্যার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পাই ইয়াছিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন বৌ বাজারে জসিম মিয়ার চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছে। এমন সংবাদে ইয়াছিনকে আটক করতে সদর মডেল থানার এসআই সাইফুল ইসলাম সেখানে যায়। সেখানে ইয়াছিনকে আটক করতে গেলে ইয়াছিনের হাতে থাকা চায়ের কাপ দিয়ে এসআই সাইফুলকে মাথায় ও মুখে আঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ ও স্থানীয়রা তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে যায়।
তাকে হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে ইয়াছিনকে ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে বলেও জানান ওসি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রম্য লেখক, নাট্যব্যক্তিত্ব ও ঔপন্যাসিক পরিমল ভৌমিকের নতুন বই ‘রাক্ষুসে বিলাপ’ উপন্যাসের মোড়ক উন্মোচন ও পাঠচক্র অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল সোমবার বিকালে চেতনায় স্বদেশ গণগ্রন্থাগারের আয়োজনে জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারের হল রুমে এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
চেতনায় স্বদেশ গণগ্রন্থাগারের সভাপতি ও কথা সাহিত্যিক আমির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, বিশিষ্ট কবি ও গীতিকার মোঃ আবদুল কুদ্দূস।
সভায় মুখ্য আলোচক ছিলেন সাহিত্য একাডেমির সভাপতি, কবি ও গবেষক জয়দুল হোসেন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারের সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলাম লিমন, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট অঞ্চল) সাংবাদিক মোঃ মনির হোসেন।
সভায় ‘রাক্ষুসে বিলাপ’ উপন্যাসের উপর বিষয় ভিত্তিক আলোচনা করেন সাহিত্য একাডেমির সহ-সভাপতি কবি ও কথাসাহিত্যিক অ্যাডভোকেট মানিক রতন শর্মা, তিতাস সাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদের উপদেষ্টা মোঃ আব্দুর রহিম, আশুগঞ্জ ফিরোজ মিয়া সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক এম.এ হানিফ, জেলা পাবলিক লাইব্রেরির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মমিনুল আলম বাবু। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া কবি পরিষদের সভাপতি, কবি ও গল্পকার শৌমিক ছাত্তার।
ঝিলমিল একাডেমির পরিচালক মনিরুল ইসলাম শ্রাবণের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের চিকিৎসক মোঃ আব্দুল মতিন (সেলিম)।
সভায় বক্তারা বলেন, পরিমল ভৌমিক একজন নির্ভেজাল মানুষ। তিনি একজন সজ্জন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। পেশায় শিক্ষক হয়ে পড়ন্ত বয়সেও পরিমল ভৌমিকের গীতিশীল লেখালেখি তরুণ লেখকদের উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা যোগাবে।
উল্লেখ্য ‘রাক্ষুসে বিলাপ’ পরিমল ভৌমিক ভৌমিকের প্রকাশিত সপ্তম বই (দ্বিতীয় উপন্যাস)। তাঁর বেশ প্রকাশিত অন্যান্য গ্রন্থ সমূহ হলো- বহু রূপি ভূত (২০০৮) দৈত্য দানব ভূত (২০০৯), ১০টি রম্য রচনা (২০১০), ‘নাম ফাটুক-মনে কিছু কইরেন না’ (রম্য রচনা-২০২০), ভৌতিক গল্প ‘ভূত গবেষণা ইনস্টিটিউট’ (২০২১) ‘কাহিনির শেষ পাতায়’ (উপন্যাস-২০২২) ‘রাক্ষুসে বিলাপ’ (উপন্যাস-২০২৩) বইগুলো প্রকাশ করেছে জ্ঞানজ্যোতি প্রকাশনী, ঢাকা।
চলারপথে রিপোর্ট :
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ২০১৬-১৭ সেশনের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান রাব্বি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। রাব্বির গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার উলচাপাড়া গ্রামে।
গতকাল ১৮ সেপ্টেম্বর সোমবার নিজ কক্ষের দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করেন পরিবারের লোকজন। পরে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পরিবারের বরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, অন্যান্য দিনের মতোই গতকাল রোববার রাতে নিজের ঘরে ঘুমাতে যান রাব্বি। তবে সোমবার দুপুর পর্যন্তও রাব্বি ঘুম থেকে না ওঠায় সন্দেহ জাগে পরিবারের লোকজনের মনে। সাড়াশব্দ না পেয়ে তার ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে গিয়ে তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান স্বজনরা।
এ বিষয়ে বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, ছেলেটি আমার নিজ জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হওয়ায় খুব কাছ থেকে চিনতাম। সে খুব অমায়িক ছিল। আমি যতটুকু জানি তার প্রেমঘটিত বা অর্থনৈতিক কোনো সমস্যা ছিল না। একবছর আগে তার বাবা মারা যান। এজন্য তার মন খারাপ ছিল। আমি সবসময় চেষ্টা করেছি রাব্বির খোঁজ রাখতে। কিন্তু মাঝে সে আর যোগাযোগ করেনি। তার মৃত্যুর খবর পাওয়া মাত্রই আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছি।
এদিকে রাব্বির এমন মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে নিজ বিভাগ ও জেলার শিক্ষার্থীদের মাঝে। সদর উপজেলার উলচাপাড়া মসজিদে রাব্বির জানাযা অনুষ্ঠিত হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আসমাতুন্নেছা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে শীত বস্ত্র কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।
আজ ১ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সকালে প্রধান অতিথি হিসেবে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এস.এম. শান্তুনু চৌধুরী।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামীমা সিকদার দীনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসক ডাঃ মোঃ মাহমুদুল হাসান, জেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা গায়েত্রী দেবনাথ, সরকারি শিশু পরিবারের উপ-তত্ত্বাবধায়ক রৌশন আরা, বিদ্যালয়লয়ের দাতা সদস্য এ.বি.এম তৈমুর।
অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১৫০টি কম্বল বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অভিভাবকগণ উপস্থিত ছিলেন।