হুদাকন্যা অন্তরা হচ্ছেন তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান

জাতীয়, 5 May 2023, 956 Views,

চলারপথে ডেস্ক :
তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান হতে যাচ্ছেন সাবেক বিএনপি নেতা ও মন্ত্রী প্রয়াত ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার মেয়ে ব্যারিস্টার অন্তরা সেলিমা হুদা। বাবার মৃত্যুতে তার প্রতিষ্ঠিত দলটির চেয়ারম্যানের শূন্য আসনে বসতে যাচ্ছেন অন্তরা।

banner

নাজমুল হুদার প্রেস সচিব তারেক হোসেনের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা মৃত্যুবরণ করেন। ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা মারা যাওয়ায় তার পদটি শূন্য হয়ে আছে। এমতাবস্থায় গঠনতন্ত্র মোতাবেক ৯০ দিনের মধ্যে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের শূন্য পদটি পূরণ করার বিধান রয়েছে।

এতে আরো উল্লেখ করা হয়, গত ২২ মার্চ এক জরুরি সভা ও আজ ৫ মে শুক্রবার সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নতুন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদটি পূরণ করা হয়। আগামীকাল (শনিবার) এক সংবাদ সম্মেলনে মাধ্যমে দেশবাসীকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নাম প্রকাশ করা হবে।

দলীয় সূত্র বলছে, বৈঠকে সবাই চেয়েছিল নাজমুল হুদার স্ত্রী সিগমা হুদা দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হোন। কিন্তু সিগমা হুদা চান, মেয়ে বাবার প্রতিষ্ঠিত দলের চেয়ারম্যান হোক।

তৃণমূল বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শনিবার দুপুর ১২টায় সাইনপুকুর, স্যুট, বাসা নম্বর-৮/সি, রোড নম্বর-১৪৩, গুলশান-১ (শ্যুটিং ক্লাব ও এসিসিএল ক্লাবের সামনে) তৃণমূল বিএনপির সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে উপস্থিত থাকবেন তৃণমূল বিএনপির ঊর্ধ্বতন নেতারা।

উল্লেখ্য, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি নাজমুল হুদার তৃণমূল বিএনপিকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দলটিকে প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ‘সোনালি আঁশ’। তখন নাজমুল হুদা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। দলটি নিবন্ধন পাওয়ার পরই মারা যান তিনি।

Leave a Reply

কিশোরি হেনস্থার মামলায় নিউইয়র্কে গ্রেফতার বাংলাদেশি

অনলাইন ডেস্ক : ১২ বছর বয়েসী এক কিশোরিকে লাঞ্ছিত ও Read more

ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেকে মাস্ক, বেজোস ও…

অনলাইন ডেস্ক : প্রযুক্তি জগতের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক, জেফ Read more

টিউলিপের স্থলাভিষিক্ত হলো এমা রেনল্ডস

অনলাইন ডেস্ক : টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক স্থলাভিষিক্ত হলেন নতুন অর্থনীতিবিষয়ক Read more

ছাগলকাণ্ডের আলোচিত সেই মতিউর ও তার…

অনলাইন ডেস্ক : ছাগলকাণ্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক Read more

প্রকাশ্যে কণ্ঠশিল্পী জান্নাত তোরসার ‘কাবিখা’

অনলাইন ডেস্ক : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও পরবর্তী প্রেক্ষাপটের বিভিন্ন Read more

বয়লার বিস্ফোরণে দুইজন নিহত

অনলাইন ডেস্ক : ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে কাঠ রিফাইন কারখানার বয়লার বিস্ফোরণে Read more

টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগ

অনলাইন ডেস্ক : সমালোচনার মুখে যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক Read more

আখাউড়ায় জনসচেতনতামূলক সভা অনুষ্ঠিত

চলারপথে রিপোর্ট : সুলতানপুর ৬০ বিজিবি অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল এ Read more

৪৬ লাখ টাকার বিপুল পরিমান মাদক…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লা সীমান্তে প্রায় ৪৬ লাখ Read more

কৃষিজমি থেকে মাটি কাটার দায়ে দুইজনকে…

চলারপথে রিপোর্ট : সরাইলে রাতের আঁধারে কৃষি জমি থেকে অবৈধভাবে Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ময়লার ট্রাক্টর চাপায় প্রাণ গেল…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার ময়লার ট্রাক্টরের নিচে চাপা পড়ে Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জিয়ামঞ্চের লিফলেট বিতরণ

চলারপথে রিপোর্ট : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কর্তৃক জাতির Read more

ইতালি সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, 27 July 2023, 761 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
ইতালির রোমে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ খাদ্য ব্যবস্থা সামিট+২ স্টকটেকিং মোমেন্টে যোগদান শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

banner

প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী কাতার এয়ারওয়েজের একটি নিয়মিত ফ্লাইট বুধবার রাত ১টা ৫০ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। রোম থেকে ঢাকায় আসার পথে ফ্লাইটি কাতারের দোহার হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক ঘণ্টা যাত্রাবিরতি করে।

এর আগে ফ্লাইটটি প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীদের নিয়ে ইতালির স্থানীয় সময় বুধবার সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টা ৪৫ মিনিট) রোম ফিউমিসিনো বিমানবন্দর থেকে দেশের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।

রোম থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছালে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবসহ সামরিক-বেসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাঁকে স্বাগত জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আমন্ত্রণে ইউএনএফএসএস+২ সম্মেলনে যোগ দিতে ২৩ জুলাই ইতালির রোমে পৌঁছেন।

খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সদর দপ্তরে ২৪-২৬ জুলাই ইউএনএফএসএস+২ সম্মেলনটি ‘সাসটেইনেবল ফুড সিস্টেম ফর পিপল, প্লানেট অ্যান্ড প্রোসপারিটি : ডাইভার্স পাথওয়ে ইন এ শেয়ার্ড জার্নি’ প্রতিপাদ্য নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী ২৪ জুলাই বিশেষ অতিথি বক্তা হিসেবে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে ভাষণ দেন।

ইউএনএফএসএস+২-এ ২০ জনেরও বেশি রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানসহ ১৬০ টিরও বেশি দেশ থেকে প্রায় ২০০০ প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। শেখ হাসিনা ‘ফুড সিস্টেম অ্যান্ড ক্লাইমেট অ্যাকশন’ শীর্ষক পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনেও অংশ নেন। একই দিন সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী এফএও সদর দপ্তরে বাংলাদেশ-বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কক্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও যোগ দেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের খাদ্য ব্যবস্থা শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে এফএও সদর দপ্তরে সদ্য উদ্বোধনকৃত বাংলাদেশ-বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কক্ষে নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহালের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। এ ছাড়াও, ইতালির তিন মন্ত্রী-কৃষিমন্ত্রী ফ্রান্সেস্কো ললোব্রিগিদা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্তেদোসি এবং বিচারমন্ত্রী কার্লো নর্দিও এফএও সদর দপ্তরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

এএফও’র মহাপরিচালক কু ডংইউ, ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড অব এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট (আইএফএডি) এর প্রেসিডেন্ট আলভারো লারিও এবং ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের (ডব্লিউএফপি) নির্বাহী পরিচালক সিন্ডি হেনসলি ম্যাককেইনও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

২৫ জুলাই প্রধানমন্ত্রী ইউরোপের ১৫টি দেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতগণকে নিয়ে আয়োজিত ‘আঞ্চলিক দূত সম্মেলনে’ যোগ দেন।

এ ছাড়া ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে শেখ হাসিনার দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ও দু’টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ‘জ্বালানি সহযোগিতা’ ও ‘সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচি’ শীর্ষক দুটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) বিনিময় হয়।

শেখ হাসিনা ইতালিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া নাগরিক সংবর্ধনায়ও যোগ দেন।
সূত্র : বাসস

বাংলাদেশ চাঁদেও যাবে : প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, 7 October 2023, 669 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আশেপাশের দেশ চাঁদে চলে যায়, আমরা কেন পিছিয়ে থাকব? ভবিষ্যতে বাংলাদেশ চাঁদেও যাবে। সেইভাবে আমরা দেশে দক্ষ ও স্মার্ট জনশক্তি গড়ে তুলব।

banner

আজ ৭ সেপ্টেম্বর শনিবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশের বিমানবন্দরের আধুনিকায়ন শুরু করে। আকাশপথে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় সংযোগ স্থাপনের পরিকল্পনা আছে সরকারের। কেউ যশোর থেকে সৈয়দপুর যাবে, সৈয়দপুর থেকে চট্টগ্রাম যাবে, কেউ যশোর থেকে কক্সবাজার যাবে অথবা কক্সবাজার থেকে যশোর যাবে, বিমানের মাধ্যমে হবে- এমন পরিকল্পনা আমাদের আছে। আগামীতে আন্তর্জাতিক এভিয়েশন হাব হবে বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, মানুষের যোগাযোগ ব্যবসা-বাণিজ্য অর্থনীতি উন্নতির জন্য একান্ত অপরিহার্য। আধুনিক যুগের নৌপথ সড়কপথ রেলপথের সঙ্গে সঙ্গে আকাশপথ সেটাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বহন করে। বিশেষ করে, এদের সঙ্গে আমাদের যে যোগাযোগ সেই যোগাযোগের মূল বাহন হচ্ছে বিমান। অর্থাৎ আকাশ যাত্রাটা হচ্ছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সেটাকে গুরুত্ব দেই।

সরকারপ্রধান বলেন, ১৯৯৬ সালে আমি যখন সরকারে আসি তখন আমাদের বিমানবন্দরের কোনো বোডিং ব্রিজ ছিল না, পার্কিং লোড ছিল না, কিছুই ছিল না। আমরা সরকারে এসে বিমানবন্দরের উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছিলাম। চট্টগ্রাম ও সিলেটে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আমরা নির্মাণ করি। সঙ্গে শাহজালাল বিমানবন্দরের উন্নয়নের প্রকল্প গ্রহণ করি। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল এ সময়ে বিমানবন্দরের উন্নয়নের যাত্রা শুরু হয়। আমি সবাইকে অনুরোধ করব, যদি পারেন তাহলে ১৯৯৬ সালের আগ পর্যন্ত কী উন্নয়ন ছিল, সেটা একটু দেখবেন।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী সকাল ১০টা ১০ মিনিটে শাহজালাল বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল এরিয়ায় এসে পৌঁছান।

এ সময় দেশের গানের সঙ্গে মনোজ্ঞ নৃত্য পরিবেশন করে তাকে স্বাগত জানানো হয়। এরপর অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধাসংবলিত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩-এর বিভিন্ন অংশ ঘুরে ঘুরে দেখেন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম. মফিদুর রহমানসহ বেবিচক ও মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেছিলেন। তৃতীয় টার্মিনালে একসঙ্গে ৩৭টি উড়োজাহাজ পার্ক করা যাবে। এছাড়াও বহুতল কার পার্কিংয়ে রাখা যাবে এক হাজার ৪৪টি গাড়ি। নতুন টার্মিনালে এক কোটি ২০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেওয়া সম্ভব।

এর আগে ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর শাহজালাল বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পটির অনুমোদন দেয় একনেক। নির্মাণ কাজে অর্থায়ন করছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।

খেলতে গিয়ে শিশুর মৃত্যু

জাতীয়, 30 August 2023, 717 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় খেলতে গিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের লোহার দোলনার আঘাত পেয়ে শাহাদৎ হোসেন নামে এক দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। আজ ৩০ আগস্ট বুধবার দুপুরে উপজেলার কিসামত চন্দ্রপুর এলাকার কিসামত চন্দ্রপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুল চলাকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

banner

নিহত শাহাদৎ হোসেন উপজেলার কিসামত চন্দ্রপুর এলাকার মিজানুর রহমানের ছেলে। সে ওই বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুপুরে বিদ্যালয়ের লোহার দোলনায় খেলতে গিয়ে আঘাত পান দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র শাহাদৎ। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে আদিতমারি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথে শিশুটি মারা যান। এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা স্কুলে গিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। পরে আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার জি আর সারোয়ার ও আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিভাবকদের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

এ ঘটনায় কারো গাফিলতি ছিল কিনা তার তদন্ত করে দেখা হবে।

এ বিষয়ে আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। শিশুর পরিবারসহ সকলের সাথে কথা বলছি। বর্তমান পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার জি আর সারোয়ার বলেন, ঘটনাস্থলে এসে অভিভাবকদের সাথে কথা বলা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ না থাকায় মরদেহ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল ২৭ বস্তা টাকা, চলছে গণনা

জাতীয়, 20 April 2024, 387 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
১৩০ দিন পর আজ খোলা হয়ে‌ছে কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের দানবাক্স। এবার মসজিদের ৯টি দানবাক্স বা সিন্দুকে পাওয়া গেছে ২৭ বস্তা টাকা।

banner

আজ ২০ এপ্রিল শনিবার সকাল ৮টার দি‌কে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে মস‌জি‌দের ৯টি সিন্দুক খোলা হয়। এরপর টাকাগুলো বস্তাবন্দি করে নেওয়া হয় মসজিদের দোতলায়।

টাকাগুলো ভরতে ২৭টি বস্তার প্রয়োজন হয়। পুরো কাজে তত্ত্বাবধান করছেন জেলা প্রশাসক ও মস‌জিদ ক‌মি‌টির সভাপ‌তি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজা‌দ ও পু‌লিশ সুপা‌র মোহাম্মদ রা‌সেল শে‌খসহ বেশ কয়েকজন নির্বাহী ম্যাজিস্টেট।
এর আ‌গে গত বছরের ৯ ডি‌সেম্বর খোলা হ‌য়ে‌ছিল মস‌জি‌দের সিন্দুকগু‌লো। তখন পাওয়া গি‌য়ে‌ছিল ছয় কো‌টি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা।

এবার দা‌নের প‌রিমাণ সেই টাকা‌কেও ছা‌ড়ি‌য়ে যে‌তে পা‌রে ব‌লে ধারণা করা হ‌চ্ছে।
এর আগে গত বছরের ১৯ আগস্ট মস‌জি‌দের সিন্দুকে পাঁচ কো‌টি ৭৮ লাখ ৯ হাজার ৩২৫ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। তারও আ‌গে ৬ মে মসজিদের সিন্দুকে মিলেছিল পাঁচ কোটি ৫৯ লাখ সাত হাজার ৬৮৯ টাকা। জানুয়ারি মাসেও পাওয়া যায় চার কোটিরও বেশি টাকা।

স্থানীয়রা জানান, এ মসজিদের দানবাক্স খুললেই পাওয়া যায় কয়েক কোটি টাকা। এ কারণে মসজিদের দানবাক্সে কী পরিমাণ টাকা পাওয়া গেল, তা নিয়ে লোকজনের থাকে অনেক কৌতূহল। তাই গণনা শেষে জানিয়ে দেওয়া হয় টাকার অঙ্ক।

তবে স্থানীয়রা অনেকে বলেছেন, স্বচ্ছতার স্বার্থে আয়ের পাশাপাশি মসজিদের টাকা-পয়সা ব্যয়ের হিসাবটাও জনসম্মুখে নিয়মিত প্রকাশ করা উচিত। ইদানীং মসজিদে দানের প্রবাহ আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি।

স্থানীয়রা জানান, মুসলমানসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজন এ মসজিদে দান করে। এখানে দান করলে মনোবাসনা পূরণ হয় এমন বিশ্বাস থেকে তারা ছুটে আসে পাগলা মসজিদে। দান করে মোটা অঙ্কের টাকা। তবে এ মসজিদের দানবাক্সে যে বিপুল পরিমাণ টাকা পাওয়া যায়, তা জেলার আর কোনো মসজিদে মেলে না। টাকার সঙ্গে সোনা-রুপার অলঙ্কারসহ থাকে বিদেশি মুদ্রাও। প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক গবাদি পশু, হাঁস-মুরগি, ফলফলাদি, মোমবাতি ও ধর্মীয় বই দান করে লোকজন।

তা ছাড়া আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়ায় দানবাক্সে পাওয়া চিঠিপত্র। এসব চিঠিতে লোকজন তাদের জীবনে পাওয়ার আনন্দ, না-পাওয়ার বেদনা, আয়-উন্নতির ফরিয়াদ, চাকরির প্রত্যাশা, পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের আশা ও রোগব্যাধি থেকে মুক্তি পেতে আকুতি প্রকাশ করে। এমনকি শত্রুকে ঘায়েলের দাবিও থাকে কোনো কোনো চিঠিতে।

দানবাক্স বা সিন্দুক খোলার সময় মসজিদে নেওয়া হয় বাড়তি নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা। জেলা প্রশাসনের বেশ কয়েকজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ ও আনসার সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বড় দল টাকা-পয়সা গণনার তত্ত্বাবধান করে থাকেন।

সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সিন্দুকের টাকা-পয়সা বস্তাবন্দি করছে দায়িত্বপ্রাপ্ত লোকজন। পরে বস্তাগুলো ধরাধরি করে মসজিদের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অপেক্ষমাণ গণনাকারীদের সামনে ঢেলে দেওয়া হয় টাকাগুলো। এভাবেই শুরু হয় গণনার কাজ।

পাগলা মসজিদের টাকা জমা হয় রূপালী ব্যাংকে। তাই এই ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারী, মসজিদের কর্মচারী ও কমিটির লোকজন, মাদরাসার ছাত্রসহ সব মিলিয়ে দুই শতাধিক লোক সারা দিন টাকাগুলো গুনবে।

মসজিদ পরিচালনা, এর অর্থ-সম্পদ সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনায় ২৯ সদস্যের একটি কমিটি রয়েছে। এর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন যথাক্রমে জেলা প্রশাসক ও কিশোরগঞ্জ পৌর মেয়র।

জানা গে‌ছে, মসজিদের দানের টাকা ব্যাংকে গচ্ছিত থাকে। আর ওই টাকার লভ্যাংশ থেকে গরিব অসহায় লোকদের আর্থিক সহায়তা, ক্যান্সারসহ জটিল রোগে আক্রান্তদের আর্থিকভাবে অনুদান দিয়ে মসজিদটি আর্তমানবতার সেবায় ভূমিকা রাখছে। দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের অনুদান দেওয়া হয় মসজিদের তহবিল থেকে। এইসব সেবামূলক কর্মকাণ্ড সারা বছরই করে থাকে পাগলা মসজিদ।

মসজিদ পরিচালনা ক‌মি‌টি জানায়, শুধু মুসলমান নয়, অন্য ধর্মের লোকজনও পাগলা মসজিদে বিপুল অঙ্কের টাকা-পয়সা দান করে। সব সম্প্রদায়ের মানুষ পাগলা মসজিদ পরিদর্শনে আসে। যা প্রকৃতপক্ষে অসাম্প্রদায়িকতার বিরল এক দৃষ্টান্ত।

মসজিদের সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, দানের টাকায় মসজিদের বড়সড় উন্নয়ন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। মসজিদ ঘিরে এখানে আন্তর্জাতিক মানের একটি দৃষ্টিনন্দন বহুতল ইসলামী কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। সমৃদ্ধ লাইব্রেরিসহ থাকবে আরো বিভিন্ন আয়োজন। এ প্রকল্পের জন্য প্রাথমিকভাবে ১১৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। প্রকল্পের প্রাথমিক কাজ শেষের পথে। এখন সব কিছু গুছিয়ে আনা হচ্ছে। খুব শিগগিরই হয়তো কাজে হাত দিতে পারব আমরা।

কিশোরগঞ্জ শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে মাত্র ১০ শতাংশ ভূমির ওপর এই মসজিদ গড়ে উঠেছিল। সময়ের সঙ্গে আজ পাগলা মসজিদের পরিধির সঙ্গে বেড়েছে খ্যাতিও।

আজ শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস

জাতীয়, 14 December 2023, 593 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
মহান বিজয়ের ৫২তম বছরের আর এক দিন। এর পরই বাঙালি মেতে উঠবে বাঁধভাঙা উল্লাসে। কিন্তু এই উৎসবের সঙ্গে মিশে আছে এক রক্তের ইতিহাস।

banner

মৃত্যু, সম্ভ্রমহানি, নির্যাতন, কান্না, ক্ষুধা, ঘরবাড়ি হারানো, শস্যের পোড়া খেত-মুষড়ে পড়া একটা কালের স্মৃতি। ১৯৭১ সালের সেই স্মৃতিকালের একটি ক্ষত বুকের গহিনে আজও হানা দিয়ে যায়।

বিজয়ের ঠিক মাহেন্দ্রক্ষণের আগে জাতি হারায় তার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। আজ শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস। বাংলাদেশের মানুষের বেদনাবিধুর দিন।

১৯৭১ সালের এ দিনে দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তার দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামস মিলিতভাবে পরিকল্পনা করে বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে।

এ মাটির প্রিয় সেসব সন্তানের লাশের গন্ধ যেন আজও বাতাসে ভাসে। সন্তানহারা মা, স্বামীহারা স্ত্রী, পিতৃহারা সন্তানের করুণ হৃদয়ের কান্না আর রক্তক্ষরণ কেনোদিনও থামার নয়।

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালে বাংলার মানুষের ওপর পৃথিবীর ইতিহাসের জঘন্যতম নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায়। নির্বিচারে বাঙালি হত্যা, মাইলের পর মাইল ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া, ভৌত অবকাঠামো ধ্বংস করা, নারীদের সম্ভ্রমহানি-সবকিছুই করেছে তারা। কিন্তু বাঙালির রণকৌশলের কাছে তারা টিকতে পারছিল না।

তাই বাঙালির চূড়ান্ত বিজয়ের মাত্র দুদিন আগে ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামসের সদস্যরা বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নিধনে মাঠে নামে।

রাতের অন্ধকারে বাসা অথবা কর্মস্থল থেকে শিক্ষাবিদ, গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, কবি ও সাহিত্যিকদের চোখ বেঁধে ধরে নিয়ে তারা হত্যা করে। এ হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য ছিল বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করা।

দেশের নানা জায়গায় হত্যাযজ্ঞ চললেও মূল হত্যাযজ্ঞ চলে রাজধানীর রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে। ঢাকার মিরপুর, রায়েরবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে বুদ্ধিজীবীদের লাশ ফেলে রাখা হয়।

১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জনের পরপরই বুদ্ধিজীবীদের নিকটাত্মীয়রা বধ্যভূমিতে অনেকের লাশ খুঁজে পান। তাদের নিথর দেহজুড়েই ছিল আঘাতের চিহ্ন, চোখ, হাত-পা বাঁধা।

কারও কারও শরীরে একাধিক গুলিও ছিল। ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে অনেককে হত্যা করা হয়েছিল। ক্ষতচিহ্নের কারণে অনেকের লাশ তাদের প্রিয়জনরা শনাক্তও করতে পারেননি।

শহিদ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে রয়েছেন অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী, অধ্যাপক গোবিন্দ চন্দ্র দেব, অধ্যাপক জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, অধ্যাপক মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, অধ্যাপক আনোয়ার পাশা, অধ্যাপক গিয়াসউদ্দিন আহমদ, ডা. ফজলে রাব্বী, ডা. মোহাম্মদ মুর্তজা, অধ্যাপক রাশিদুল হাসান, ড. সন্তোষ ভট্টাচার্য, ডা. মোহাম্মদ শফি, সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেন, শহীদুল্লা কায়সার, নিজামুদ্দীন আহমদ, খোন্দকার আবু তালেব, আ ন ম গোলাম মোস্তফা, শহীদ সাবের, সৈয়দ নাজমুল হক, জহির রায়হান, আলতাফ মাহমুদ, ড. আবদুল খায়ের, ড. সিরাজুল হক খান, ড. ফয়জল মহী, ডা. আবদুল আলীম চৌধুরী, সেলিনা পারভীন, কবি মেহেরুন্নেসা, গিয়াস উদ্দীন আহমদ প্রমুখ।