অনলাইন ডেস্ক :
রাজধানীর কলাবাগান ক্রীড়াচক্র মাঠে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির মা ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ রহিমা ওয়াদুদের নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। আজ ৭ মে রবিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে তাকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।
জানাজায় মরহুমার মেয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, ছেলে ডা. জাওয়াদুর রহিম ওয়াদুদ টিপু, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান, পানিসম্পদ বিষয়ক উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদসহ পরিবারের সদস্য, বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা, তার প্রিয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সহকর্মীসহ অন্যান্যরা জানাজায় অংশগ্রহণ করেন। জানাজা শেষে বিভিন্ন স্তরের মানুষের পক্ষ থেকে মরহুমার কফিনে ফুলের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়।
রহিমা ওয়াদুদের ছেলে ডা. জাওয়াদুর রহিম ওয়াদুদ টিপু বলেন, আমার মা সব সময় দেশের কথা ভেবেছেন, দেশের জন্য কাজ করেছেন। তিনি অত্যন্ত দেশপ্রেমিক মানুষ ছিলেন। নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক ছিলেন। আমি আপনাদের কাছে তার জন্য দোয়া প্রার্থী।
উল্লেখ্য, ভাষাবীর এম এ ওয়াদুদের সহধর্মিণী ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির মা রহিমা ওয়াদুদ। তিনি ছিলেন একজন আদর্শবান, সৎ ও নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক। শিক্ষকতার জীবনে তিনি বহু শিক্ষার্থীর মানস গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ভাষাবীর এম এ ওয়াদুদের মাতৃভাষা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন থেকে শুরু করে সব মুক্তির আন্দোলন-সংগ্রামে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছেন রহিমা ওয়াদুদ। তার মৃত্যুতে জাতি একজন নির্লোভ, দেশপ্রেমিক ও একনিষ্ঠ শিক্ষককে হারাল বলে মন্তব্য বিশিষ্টজনদের।
এর আগে ৬ মে শনিবার দুপুর ১১টা ৫৬ মিনিটে রাজধানীর কলাবাগানে নিজ বাসভবনে বার্ধক্যজনিত কারণে ইন্তেকাল করেন রহিমা ওয়াদুদ। তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। তিনি ছেলে ডা. জাওয়াদুর রহিম ওয়াদুদ টিপু ও মেয়ে ডা. দীপু মনিসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
বহুল প্রতিক্ষিত আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ নির্মান কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। আগামী ২২ আগস্ট থেকেই আখাউড়া-আগরতলা রেলপথে পরীক্ষামূলকভাবে পরিচালনা করা হবে ট্রেন। তবে চূড়ান্তভাবে ট্রেন চলাচলে আরো কিছুদিন সময় লাগবে। প্রকল্প-সংশিষ্টদের কাছ থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
এজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এখন চলছে শেষ মুহুর্তের রেললাইনে খুটিনাটি চিহ্নিত করার কাজ। তবে চূড়ান্তভাবে ট্রেন চলাচলে আরো কিছুদিন সময় লাগবে।
এ অবস্থায় এই রেলপথকে ঘিরে বন্ধুত্বপূর্ণ দুই দেশের বাসিন্দাদের মধ্যে আগ্রহের শেষ নেই। সংশ্লিষ্টরা জানান, এই রেলপথটি চালু হলে ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা বাণিজ্যের পাশাপাশি সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে নব-দিগন্তের সূচনা হবে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, বহুল প্রতিক্ষিত আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ নির্মান কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। ইতিমধ্যে রেললাইনের স্লিপারের উপর ফেলা হচ্ছে পাথর। প্রাথমিকভাবে মিটারগেজ ইঞ্জিনবগি দিয়ে ৬ কিলোমিটার রেলপথ ট্রায়াল দেয়া হবে। এই লক্ষ্যেই রাত-দিন কাজ করছেন এই রেলপথ নির্মাণ কাজের সাথে যুক্ত প্রকৌশলীরা।
আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের টেক্সমেকো রেল এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ঊর্ধ্বতন সহকারী প্রকৌশলী মোঃ রিপন শেখ বলেন, আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি চলছে। আগামী ২২ আগষ্ট আমরা মিটার গেজ রেলপথ ট্রায়াল দিব। আশা করি এর মধ্যে আমাদের সব কাজ হয়ে যাবে। প্রাথমিকভাবে মিটারগেজ ইঞ্জিনবগি দিয়ে ৬ কিলোমিটার রেলপথ ট্রায়াল দেয়া হবে। সেটি হবে গঙ্গাসাগার রেলস্টেশন থেকে শিবনগর পর্যন্ত। সেখানে আমাদের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
এ ব্যাপারে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের টেক্সমেকো রেল এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এম্বাকমেন্ট (বাঁধ) প্রকৌশলী মোঃ বেনজির আহমেদ বলেন, আমাদের সকল কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। এখন আমাদের ট্যাক ট্রেকিংয়ের কাজ চলছে। ট্রায়ালকে কেন্দ্র করে যাবতীয় কার্যক্রম এখন চলমান রয়েছে।
বাংলাদেশ রেলপথ মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বরত “উর্ধ্বতন সহকারী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম বলেন, এখন আমাদের প্রায় ১০ কিলোমিটার ট্রেন চালানোর ব্যবস্থা হয়ে গেছে। আগামী ২২ আগষ্ট মঙ্গলবার থেকে পরীক্ষামূলকভাবে পাথরবাহী একটি লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) বগিসহ এই রেলপথের উপর দিয়ে চলানো হবে। সেটি চলে যাবে ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশের সীমান্তের শূণ্যরেখায়। এই লক্ষ্যে সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
আখাউড়ার গঙ্গাসাগর থেকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের শিবনগর পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বাংলাদেশ অংশে এই রেলপথ নির্মানে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪০ কোটি টাকা।
এদিকে দুই দেশের স্বপ্নের এই রেলপথ নির্মানকে কেন্দ্র করে ভারত-বাংলাদেশের বাসিন্দাদের মধ্যে যেন আগ্রহের শেষ নেই।
আখাউড়া উপজেলার গঙ্গাসাগর এলাকার বাসিন্দা ফখরুল ইসলাম বলেন, এই রেললাইনটি নির্মিত হওয়ায় আমাদের ব্যবসায়ীদের অনেক উন্নয়ন হবে। আমাদের দেশের ব্যবসায়ীদের ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে। বাংলাদেশের সরকারের সাথে ভারতের ভাল সম্পর্ক রয়েছে। আমাদের ব্যবসায়ীদের উন্নয়নের পাশাপাশি দুই দেশের মানুষের অনেক উন্নয়ন হবে।
এ ব্যাপারে ভারতীয় নাগরিক সুইটি দেব বলেন, এই রেল লাইন চালু হলে দু’দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি সম্পর্কটা আরো বেশি বাড়বে। আমাদের যাত্রী আসা যাওয়া ও ব্যবসা বানিজ্যের ক্ষেত্রেও অনেক ভাল হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
পবিত্র ঈদুল আযহার ছুটি শেষে আখাউড়ায় ট্রেন যাত্রীদের সেবা প্রদান করেছে স্কাউট ও রোভাররা। আজ ৫ জুলাই বুধবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত আখাউড়া রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ভ্রমনকারী যাত্রীদেরকে ট্রেনে আরোহন, মালামাল উঠানো-নামানোসহ বিভিন্ন সেবা প্রদান করেছে স্কাউট সদস্যরা।
আখাউড়া রেলওয়ে জেলা স্কাউট দুই দিনব্যাপী ঈদ যাত্রী সেবা কার্যক্রম শুরু করেছে। ট্রেনে উঠা-নামায় সহযোগিতা, যাত্রীদের সুপেয় পানি পানের ব্যবস্থা এবং ষ্টেশন চত্বরে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা করেছে স্কাউটস সদস্যরা। সেবামূলক এ কাজে ৬টি স্কাউট গ্রুপের ৩০/৩৫ জন সদস্য অংশ নিচ্ছে।
জেলা স্কাউট সূত্রে জানা যায়, ঈদুল আযহার ছুটি শেষে আখাউড়া রেলওয়ে জংশন ষ্টেশন হয়ে হাজার হাজার ট্রেন যাত্রী বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করে।
এসময় ষ্টেশনে প্রচুর ভীড় হয়ে থাকে। তাই নির্দিষ্ট ট্রেন এবং ট্রেনের বগি খোঁজে পাওয়া এবং নারী-শিশুদের নিয়ে ট্রেনে উঠতে যাত্রীদের কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।
এ অবস্থায় যাত্রীদের সুবিধার্থে আখাউড়া রেলওয়ে জেলা স্কাউট ২ দিন ঈদ যাত্রী সেবা কার্যক্রম শুরু করেছে। এ কার্যক্রমে অগ্নিবীণা, গোধুলী, সূর্য সৈনিক, হলি চাইল্ড, দিগন্ত এবং প্রত্যাশী রেলওয়ে মুক্ত স্কাউট গ্রুপের স্কাউট ও রোভার এবং কর্মকর্তারা অংশ নিচ্ছে। এসময় যাত্রী সেবার পাশাপাশি অনলাইন টিকেটের রেজিষ্ট্রেশন করে দেওয়া হয়।
সেবা কার্যক্রমে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রেলওয়ে জেলা স্কাউট সম্পাদক এস.কে. খাদেম সেলিম, সাবেক সম্পাদক আহসান কবির লিটন, সহকারী কমিশনার কাজী হান্নান খাদেম, সহকারী কমিশনার তোফাজ্জল আলী উজ্জল, হলি চাইল্ড সম্পাদক আকতারুজ্জামান রান, জেলা রোভার প্রতিনিধি মোঃ সাকিবুল হাসান, সূর্য সৈনিক যুগ্ম সম্পাদক জুবায়ের আহমেদ, রোভার রাব্বি চৌধুরী, গার্ল ইন রোভার সাদিয়া সুলতানা, স্কাউট নাসিবা হক, লামিয়া ইসলাম, পল্লী চিকিৎসক বিনা আক্তার।
অনলাইন ডেস্ক :
আমেরিকার সঙ্গে আওয়ামী লীগের আপস হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ ৩ অক্টোবর মঙ্গলবার বিকালে আমিনবাজারে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দুই সেলফিতে বাজিমাত হয়ে গেছে। আমেরিকার সঙ্গে আওয়ামী লীগের আপস হয়ে গেছে। দিল্লি কিংবা আমেরিকারসহ সবার সঙ্গে আওয়ামী লীগের বন্ধুত্ব রয়েছে, কারো সঙ্গে শত্রুতা নেই।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ নিষেধাজ্ঞা কিংবা ভিসানীতির পরোয়া করে না। বিএনপি যতই ষড়যন্ত্র করুক বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হবেই হবে। নির্বাচন নিয়ে কোনো চিন্তা নেই, এটা সঠিক সময়েই হবে। বিএনপি কোনো কারণে ফাউল করলে লাল কার্ড পাবে। তারা আন্দোলনের হেরে গেছে, নির্বাচনেও হেরে যাবে।
বিএনপির কারণেই খালেদা জিয়ার মামলার নিষ্পত্তি হয়নি বলেও মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, খালেদা জিয়া ছাড়া ইলেকশনে না যাওয়ার হুমকি বিএনপি আর কত দেবে? বিএনপি খালেদা জিয়া ছাড়া নির্বাচন করবে না, এ কথা একেবারেই মিথ্যা। তাদের নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার জন্য একটি আন্দোলনও করতে পারলেন না।
সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি আবারও ক্ষমতায় গেলে দেশের সম্পদ চুরি, লুটপাট, ষড়যন্ত্র সন্ত্রাস করবে। গণতন্ত্রকেও গিলে খাবে। আবারও এই দেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন বানাবে। তাদের নেতা কাপুরুষের মতো লন্ডনে পালিয়ে বেড়াচ্ছে কেন, সাহস থাকলে ঢাকায় আসুক।
ওবায়দুল কাদের দেশের জনগণকে শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ছাড়া জনপ্রিয়, বিশ্বস্ত এবং সাহসী নেতা আর নেই।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে প্রয়োজনে বাবার মতো বুকের রক্ত দিতেও আমি প্রস্তুত।
আজ ১১ নভেম্বর শনিবার বিকেলে কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র-সংলগ্ন টাউনশিপ মাঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় তিনি এ কথা বলেন। এর আগে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর চ্যানেল উদ্বোধন ও প্রথম টার্মিনালের নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি যেদিন বাংলাদেশে ফিরে এসেছি, সেদিন আমার কেউ ছিল না। যাদের রেখে গিয়েছিলাম এসে পেয়েছি সারি সারি কবর। আপনাদের মাঝেই আমি ফিরে পেয়েছি আমার বাবার স্নেহ, মায়ের স্নেহ, ভাইয়ের স্নেহ।
‘কাজেই আপনাদের কল্যাণের জন্য, আপনাদের উন্নয়নের জন্য আমি যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত। প্রয়োজনে বাবার মতো বুকের রক্ত দিতেও আমি প্রস্তুত। শুধু আপনাদের কল্যাণ করাটাই আমার একমাত্র কাম্য। আমি আপনাদের কাছে দোয়া চাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাবা-মা, ভাই সব হারিয়েছি। আমাদের হারাবার কিছু নেই, পাওয়ারও কিছু নেই। শুধু একটাই কাজ- বাংলাদেশের মানুষ যেন ভালো থাকে। যেভাবে আমার বাবা স্বপ্ন দেখেছিলেন ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা, সেই বাংলাদেশই আমি গড়ে তুলতে চাই। আমার বাবার স্বপ্নটাই আমি পূরণ করতে চাই।
বিএনপি-জামায়াত থেকে জনগণকে সাবধান থাকার আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, কোনো মানুষের মধ্যে যদি মনুষত্ববোধ থাকে তাহলে জীবন্ত মানুষকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারতে পারে না। বিভিন্ন জায়গায় জীবন্ত মানুষগুলোকে ওই বিএনপি-জামায়াত পুড়িয়ে হত্যা করছে। গাড়ি-ঘোড়া পুড়িয়ে দিচ্ছে। মানুষকে পুড়িয়ে মারা, সম্পদ পুড়িয়ে নষ্ট করা এটাই তাদের কাজ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে জাতির পিতা স্বল্পোন্নত দেশে রেখে গিয়েছিলেন। তার আদর্শ বুকে নিয়ে ও পদাঙ্ক অনুসরণ করে আজকে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় উন্নীত করেছি। সেটা আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। এটা বাস্তবায়ন করতে হলে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকেই জয়ী করতে হবে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমরা উন্নয়ন করি, আমরা সৃষ্টি করি, ওরা ভাঙে, ওরা নস্যাৎ করে। ওরা ধ্বংস করতে জানে, জনগণের কল্যাণ করতে জানে না। কাজেই ওদের থেকে জনগণকে সাবধান থাকতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনে সাজ সাজ রব উঠেছিল সমুদ্রের কোলঘেঁষা প্রত্যন্ত জনপদ মাতারবাড়ী এলাকায়। সেখানে এক জনপদের বদলে যাওয়ার সাক্ষী সাগরপাড়ের অগণিত মানুষের দলে দলে যাত্রা। প্রধানমন্ত্রীর আগমন আর জনসভা কেন্দ্র করে সকাল থেকে ছিল মানুষেল স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি।
উপচেপড়া আবেগের বহিঃপ্রকাশ জনসভা মাঠে মানুষের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। নজিরবিহীন গণজমায়েতে পূর্ণ মাতারবাড়ী টাউনশিপ মাঠ। প্রায় তিন দশক পর মাতারবাড়ী আসা শেখ হাসিনাকে বরণ করে নেন সব শ্রেণি-পেশা আর বয়সী মানুষ। তারা বলছেন, ১৯৯৫ সালে বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে যে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন মাতারবাড়ীবাসীকে, তা বাস্তব করেন সরকারপ্রধান হিসেবে।
এর আগে সকালে দোহাজারী-কক্সবাজার আইকনিক রেলস্টেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছি। কিন্তু বাংলাদেশের গ্যাস বহির্বিশ্বের কাছে বিক্রি করতে রাজি হইনি, তাই আমাকে পরবর্তী সময়ে ক্ষমতায় আসতে দেয়নি একটি চক্র। আমি ক্ষমতার লোভে দেশের সম্পদ কারও হাতে তুলে দিতে রাজি ছিলাম না।
রিরোধীদলকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা উন্নয়ন চোখে দেখে না। তাদের বলবো, ঢাকায় খুবই উন্নতমানের আই ইনস্টিটিউট করা আছে, সেখানে মাত্র ১০ টাকা টিকিট কেটে চক্ষু পরীক্ষা করে নেবেন।
তিনি আরও বলেন, আজ দিনটি বাংলাদেশের জনগণের জন্য একটি গর্বের দিন। দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকতে পেরে সত্যি আমি খুব আনন্দিত। একটা কথা দিয়েছিলাম, কথাটা রাখলাম।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, বিএনপি-জামায়াত শুধু ধ্বংস করতে জানে, সৃষ্টি করতে জানে না। গত ১৫ বছরে অনেক এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ।
সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড যেসব বিরোধী দলীয় নেতাদের চোখে পড়ে না, তাদের ডাক্তার দেখানোর পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি জানি যে আমাদের বিরোধী দল, তারা আমাদের উন্নয়নটা চোখে দেখে না, এগুলো বলার কিছু নাই। চোখ থাকতে যারা অন্ধ হয় তাদের আর কী বলব।
‘তাদের একটা পরামর্শ দিতে পারি- আমি কিন্তু ঢাকায় খুব আধুনিক আই ইনস্টিটিউট করেছি, চোখ থাকতেও যারা অন্ধ তারা সেই আধুনিক আই ইনস্টিটিউটে যেয়ে চোখটা দেখিয়ে আসতে পারেন। মাত্র ১০ টাকার টিকিট লাগে, বেশি লাগে না। আসলে তাদের চোখের দোষ না, মনের দোষ।
এদিন প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজারে ১৪টি সমাপ্ত প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ৪টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ব্রিকসকে বহুমুখী বিশ্বের বাতিঘর হিসেবে আবির্ভূত হতে হবে। আমাদের এই বহুমুখী বিশ্বে ব্রিকসকে একটি বাতিঘর হিসাবে প্রয়োজন। আমরা আশা করি আমাদের প্রতি প্রতিক্রিয়ার সময় এটি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে আবির্ভূত হবে। আমাদের শিশু ও যুবকদের কাছে অবশ্যই প্রমাণ করতে হবে আমাদের জাতিগুলো সংকটে পড়তে পারে, কিন্তু কখনই পরাজিত হবে না।
জোহানেসবার্গের স্যান্ডটন কনভেনশন সেন্টারে ৭০টি দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে ফ্রেন্ডস অব ব্রিকস লিডারস ডায়ালগ ‘নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক অব ব্রিকস’-এর সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের পক্ষে ভাষণ প্রদানকালে তিনি একথা বলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাপোসাও এ সংলাপে বক্তব্য রাখেন।
ব্রিকস প্লাস ডায়ালগের ফাঁকে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম রাইসি ও ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রীর সাথে কুশল বিনিময় করেন। জাতিসংঘ মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেস, উগান্ডার ভাইস-প্রেসিডেন্ট, দক্ষিণ আফ্রিকার উপ-প্রধানমন্ত্রী, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুশল বিনিময় করেন।
গ্লোবাল সাউথ-এ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া তথাকথিত পছন্দ ও বিভাজনকে ‘না’ বলা উচিত। সার্বজনীন নিয়ম ও মূল্যবোধকে অস্ত্রে পরিণত করার প্রচেষ্টাকে আমাদের অবশ্যই প্রত্যাখ্যান করতে হবে। আমাদের নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার চক্র বন্ধ করতে হবে। আমাদের সব ধরনের হুমকি, উসকানি ও যুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে।
শেখ হাসিনা আরো বলেন, আমি বিপজ্জনক অস্ত্র প্রতিযোগিতা থেকে পিছিয়ে এসে বিশ্বব্যাপী জনগণের প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর প্রতি মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে শান্তি, ন্যায়বিচার ও স্থিতিশীলতার জন্য আমাদের দায়িত্ব নিতে হবে। সকলকে একসাথে অবশ্যই আন্তর্জাতিক অর্থায়ন ও প্রযুক্তির জন্য প্রত্যেকের প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে এবং জলবায়ু, ন্যায়বিচার, অভিবাসীদের অধিকার, ডিজিটাল ইক্যুইটি এবং ঋণ স্থায়িত্বের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমান ব্রিকস চেয়ারম্যান ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার আমন্ত্রণে ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ২২ আগস্ট জোহানেসবার্গে পৌঁছেছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকা ব্রিকস দেশগুলোর ঐতিহাসিক ১৫তম শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করেছে।
এর সদস্য দেশগুলো হচ্ছে- ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সূত্র : বাসস