চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে ২০ কৃতি শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা ও বার্ষিক পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে। আজ ৮ মে সোমবার দুপুরে উপজেলার নাছিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ২০১৭ সালে থেকে ২০২২ সালে পর্যন্ত বৃত্তি প্রাপ্ত ২০ জন কৃতি শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা ও বার্ষিক পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি অরুণ জ্যোতি ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ফখরুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ ইকবাল মিয়া, ইনস্ট্রাক্টর জিন্নাতুন নাহার, সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাজাহারুল হক ও সাংবাদিক সুজিত কুমার চক্রবর্তী।
সহকারী শিক্ষক লিটন দেবনাথের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রধান শিক্ষক সিক্তা রানী রায়। অনুষ্ঠানে জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ এস.এম.সির সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি অরুণ জ্যোতি ভট্টাচার্যকে সম্মাননা ক্রেষ্ট ও বিদ্যালয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে শামিমা খাতুনকে সম্মাননা ক্রেষ্ট প্রদান করা হয়। এসময় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থী নির্বাচিত হয়েছেন নাসিরনগর উপজেলার সাদিয়া সাবাহ জেসি। সে নাসিরনগর আশুতোষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। জেসির বাড়ি নাসিরনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের কুলিকুন্ডা গ্রামে।
তার পিতা মোঃ আমির আলী ভূইয়া উপজেলার মকবুলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও মাতা তাছলিমা বেগম উপজেলার পূর্বভাগ দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা।
স্কুল সূত্র জানায়, সাদিয়া সাবাহ জেসি জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ-২০২৩ সালে প্রথমে নাসিরনগর উপজেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থী ও পরে জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। জেসি জানান, তার এই অর্জনে পিতা-মাতাসহ বিদ্যালয়ের শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের বিরাট ভ‚মিকা রয়েছে।
জেসি চট্টগ্রাম বিভাগেও নিজের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখতে পারেন এজন্য সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন।
উল্লেখ্য, সাদিয়া সাবাহ জেসি ২০১৮ সালে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছিল।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা পরিষদ নিবার্চনে চেয়ারম্যান পদে জয়ী হয়েছেন ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী রুমা আক্তার। ৮ মে বুধবার রাতে বেসরকারিভাবে এ ফলাফল ঘোষনা করা হয়। এ ফলাফলে ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী রুমা আক্তার পেয়েছেন ৩৩ হাজার ৯৮০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি আনারস প্রতীকের প্রার্থী মো: ওমরাও খান পেয়েছেন ১৮ হাজার ৩৮০ ভোট।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আবু আহাম্মদ কামরুল হুদার টিউবওয়েল প্রতীকে ৩৭ হাজার ৯২৬ ভোট জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী ভানু চন্দ্র দেব মাইক প্রতীক পেয়েছেন ২০ হাজার ৪০৭ ভোট।
উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রিটা আক্তারের ফুটবল প্রতীকে ৩২ হাজার ২৩৭ ভোট জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী রুবিনা আক্তার কলস প্রতীক পেয়েছেন ২২ হাজার ৩৬৩ ভোট। নিবার্চনে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগরে একটি সমবায় সমিতিকে বিল পাইয়ে দিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দিয়েছে ক্ষুব্ধ জেলেরা।
অন্যদিকে, এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য না দিলেও চাপে আছেন বলে স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত ইউএনও।
অভিযোগপত্র থেকে জানা গেছে, ৩৯৬ দশমিক ৬৫ একরের শাপলা বিলের অবস্থান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলায়। তবে বিলের অধিকাংশ জমির মালিকানা সরাইল উপজেলার শাহজাদপুর ও মলাইশ গ্রামের লোকজনের। বিলের পাশ দিয়ে বয়ে চলা তিতাস ও শাপলা বিল, এই এলাকার সাত শতাধিক জেলের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র মাধ্যম।
সম্প্রতি ১৪৩০-১৪৩২ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত তিনবছরের জন্য বিলটি ইজারা দিতে বিজ্ঞপ্তি দেয় জেলা প্রশাসন। এ বিষয়ে তদন্তক্রমে ও উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভার সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ছক মোতাবেক প্রতিবেদন প্রস্তুতের জন্য নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেয় জেলা প্রশাসন। তদন্তে জলমহাল নীতিমালা-২০০৯ উপেক্ষা করে জেঠাগ্রাম মৎস্যজীবী সমবায় সমিতিকে বিল বরাদ্দ দেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়।
যেখানে জলমহাল নীতিমালা-২০০৯ এর (৫) ১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ীও সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধিত নিকটবর্তী বা তীরবর্তী প্রকৃত মৎস্যজীবীদের প্রাধান্য দেওয়ার কথা। জলমহাল নীতিমালা-২০০৯ এর (৫) ১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, নির্দিষ্ট নিকটবর্তী বা তীরবর্তী প্রকৃত মৎস্যজীবীদের সমিতি যা সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধিত, সেই সমিতি বা সমিতিসমূহ নির্দিষ্ট বা তীরবর্তী জলমহাল ব্যবস্থাপনার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
শাহজাদপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির আবেদন উপজেলার বাইরের হওয়ায় বিবেচনাযোগ্য নয় বলেও ইউএনও ছক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন। তবে বিল বরাদ্দের শর্ত কিংবা জলমহাল নীতিমালার কোথাও সমবায় সমিতিকে একই উপজেলার হতে হবে এমন কথা উল্লেখ নেই। এ অবস্থায় ইউএনওর বিরুদ্ধে বিতকির্ত ও পক্ষপাতমূলক তদন্তের অভিযোগ এনে তা বাতিল করতে এবং পুনঃতদন্তের দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছেন স্থানীয় জেলেরা। এ বিল বন্দোবস্ত তাদের অনুকূলে না দিলে জীবন জীবিকা দুর্বিষহ হয়ে ওঠবে বলে জানান জেলেরা।
একাধিক জেলে অভিযোগ করে বলেন, এ বিলে আমরা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করি। এ বিল থেকে আয় দিয়ে আমাদের সংসার চলে। আমাদের পার্শ্ববর্তী উপজেলার লোকজন ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে বিল নিতে চাচ্ছে। বিল নিয়ে গেলে আমরা বউ-বাচ্চা নিয়ে খাব কি?
শাহজাদপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি অধীর চন্দ্র দাস বলেন, আমাদের ৭০০ এর অধিক জেলের একমাত্র ভরসা এই বিল। আমাদের পেটে লাথি দিয়ে এ বিল এখন প্রভাবশালীরা নিয়ে যাচ্ছে। আমি সরকার ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে বিলটি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বরাদ্দের দাবি জানাচ্ছি।
শাহজাদপুর ২ নম্বর ইউপি মেম্বার মো. জুয়েল মিয়া বলেন, শাপলা বিল নাসিরনগর মৌজায় পড়লেও এ বিলের ৯৫ ভাগ জমিই শাহাজাদপুর ইউনিয়নের। প্রকৃত জেলেদের মূল্যায়ন করা হলে বিল দিয়ে দাঙ্গা ফ্যাসাদ হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ইউএনও কার্যালয়ে গেলে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিতে রাজি হননি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলাম। তবে জলমহাল বরাদ্দের তদন্তের বিষয়ে তিনি চাপে আছে বলে জানান।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দাফন সম্পন্ন
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের লক্ষীমুড়া গ্রামের নিহত হারুন মিয়ার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। রোববার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় মনিপুর বন্দরবাজার বালুর মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় স্থানীয় হারুন মিয়ার আত্মীয় স্বজনসহ সহস্রাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করে। এর আগে শনিবার (১০ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে হারুন মিয়া নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরদিন দুপুরে ময়নাতদন্তের পর হারুন মিয়ার মরদেহে এসে পৌঁছায় তার নিজ এলাকায়। মরদেহ পৌঁছার পর থেকেই স্থানীদের ভিড় বাড়ে তার বাড়িতে। এরপর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। জানাজায় উপস্থিত ছিলেন, বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাজু আহমেদ, পত্তন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, আওয়ামীলীগ নেতা হৃদয় আহমেদ জালাল, সাবেক মেম্বার সেলিম মিয়া, হোসেন মিয়া, মাওলানা সিরাজ আকরামসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা। নিহত হারুন মিয়ার ভাতিজা সোহেল বলেন, দুধ মিয়া সরাসরি করিম মিয়ার পক্ষে নিয়েছে। যার কারণে আমার চাচা হারুন মিয়া হত্যার শিকার হয়েছে। আমার চাচার হত্যার সাথে দুধ মিয়া জড়িত। দুধ মিয়াসহ যারা আমার চাচাকে হত্যা করেছে তাদের ফাঁসির দাবি জানাই।
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ জানান, শান্তিপূর্ণ ভাবে হারুন মিয়ার জানাযা সম্পন্ন হয়েছে। এলাকায় স্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অভিযুক্ত আসামীদের দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে তিনি জানান।
মুরাদ মৃধা, নাসিরনগর :
নাসিরনগর উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের আয়োজনে এবং “এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই” প্রতিপাদ্যে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নাসিরনগরে তারুণ্য উৎসব উদযাপন করা হয়েছে।
আজ ১৩ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার নাসিরনগর উপজেলা প্রশাসনিক ভবন মিলনায়তনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহীনা নাসরিনের সভাপতিত্বে এবং উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রাকেশ পালের সঞ্চালনায় এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করা হয় এবং আহতদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয়।
আলোচনায় বক্তারা নিরাপদ মাতৃত্ব, জুলাই বিপ্লব, পরিচ্ছন্নতা অভিযান, অবৈতনিক গৃহস্থালি কাজের মর্যাদা বৃদ্ধি, পারিবারিক কার্যক্রমে নারী-পুরুষের সমান অংশীদারত্ব ও দায়িত্ববণ্টন এবং “এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই”—উদ্যোক্তা সৃষ্টির মাধ্যমে বেকারত্ব দূরীকরণ ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন।
বক্তারা বলেন, “আজকের তরুণরাই আগামীর জাতির কর্ণধার। তাদের দেশপ্রেম, প্রতিভা ও পরিশ্রমই জাতির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।” তারা সমাজের সবচেয়ে উদ্যমী, সৃজনশীল ও প্রযুক্তিবান্ধব অংশ, যারা ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম।
তারা আরো বলেন, যদি তরুণরা মাদক, ইভটিজিং ও অন্যায়ের পথে জড়িয়ে পড়ে, তাহলে সমাজ ধ্বংসের দিকে এগোবে। তাই তারুণ্যের শক্তিকে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে ব্যক্তি, সমাজ ও দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে। শোষণহীন, বৈষম্যহীন ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে তারুণ্যের ইতিবাচক ভূমিকা অপরিহার্য।
উৎসবে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে তরুণদের দেশ গঠনে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানানো হয়।