চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলায় কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় গত দুই বছর ধরে আবাদ হচ্ছে জাপানি মিষ্টি আলু “ওয়াকিনাওয়া”। রপ্তানি উপযোগী এই জাতের আলু ২০২১-২২ অর্থবছরে উৎপাদন করতে কৃষি বিভাগ থেকে ০৫ জন কৃষকের মাঝে কাটিং সরবরাহ করা হয়। গত বছরের উৎপাদিত মিষ্টি আলু দিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরে আরো কয়েক জন কৃষকের মাঝে প্রদর্শনী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে উপজেলা কৃষি অফিস। নবীনগর পশ্চিম ইউনিয়নের নবীপুর গ্রামের নুরুল আমীন, চর লাপাংয়ে অহিদ মিয়া প্রায় ৩০ বিঘা জমিতে সম্প্রসারিত হয়েছে। স্থানীয় আলুর তুলনায় এই আলুর আকার বেশ বড় এবং ভিতরের অংশ কমলা রঙের। স্থানীয় কৃষক এবং ভোক্তা পর্যায়ে এই মিষ্টি আলু “গাজর আলু” হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে। নবীনগর উপজেলায় প্রতি বছর ১৭৫ হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলু আবাদ হয়ে থাকে। অধিকাংশ জাত স্থানীয়, যার উৎপাদন কম হয়। পাশাপাশি রোগবালাই ও বিভিন্ন কীট-পতঙ্গ আক্রমণ করে বেশী, যা এ জাতের ক্ষেত্রে হয় না। জাপানি মিষ্টি আলু “ওয়াকিনাওয়া” বিঘা প্রতি গড় ফলন- ৭৫ মন। যা স্থানীয় বাজারে পাইকারি মূল্য কেজি প্রতি -২৫ টাকা।ওয়াকিনাওয়া আলু নিয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার মো. জাহাঙ্গীর আলম লিটন জানান, রপ্তানি উপযোগী এই মিষ্ট আলু সম্প্রসারিত হলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা যাবে। আগে সাধারণ মানের স্থানীয় জাতের মিষ্টি আলুর আবাদ করা হতো। সে গুলো তেমন পুষ্টি গুণসম্পন্ন ছিল না। ওয়াকিনাওয়া জাতের আলুতে প্রচুর পরিমাণ এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এটি ক্যান্সার প্রতিরোধ এবং উচ্চ রক্তচাপ ও রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা হ্রাস করে। এ নতুন জাতের মিষ্টিআলুর চাষ করে কৃষকরা আর্থিক ভাবে লাভের স্বপ্ন দেখছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে জুয়ার আসরে অভিযান চালানোর সময় পুলিশের ধাওয়া খেয়ে নিখোঁজ ছগির মিয়া (৩৫) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ ২৭ জুন মঙ্গলবার বিকেলে নবীনগর উপজেলার নাটঘর ইউনিয়নের নান্দুরা গ্রামের তিতাস নদীতে ছগির মিয়ার মরদেহ ভেসে ওঠে। নিহত ছগির উপজেলার এই ইউনিয়নের কুড়িঘর গ্রামের মৃত আবু সালাম মিয়ার ছেলে।
নাটঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ২৬ জুন সোমবার মধ্যরাতে উপজেলার কুড়িঘর গ্রামের জাহান ইটভাটার দক্ষিণপাশে কিছু লোক জুয়া খেলছিল। খবর পেয়ে পুলিশ ওই এলাকায় অভিযান চালায়। ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় এলাই মিয়াসহ তিনজনকে পুলিশ আটক করে নিয়ে যায়। এসময় ছগির মিয়াসহ আরও কয়েকজন পালিয়ে যায়। রাতেই আটক এলাই মিয়ার স্ত্রী ও ছেলে আমাকে আটকের বিষয়টি জানায়।
চেয়ারম্যান আরো বলেন, মঙ্গলবার সকালে নিখোঁজ ছগির মিয়ার এক ভাই আরশ মিয়া জানায়, ছগিরকেও নাকি পুলিশ নিয়ে গেছে। কিন্তু থানায় খবর নিয়ে জানা যায় ছগির মিয়াকে তারা আটক করেনি। সারাদিন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করেও ছগির মিয়াকে পাওয়া যায়নি। বিকেলের দিকে খবর আসে নান্দুরা গ্রামের পূর্বপাশে তিতাস নদীতে ছগিরের মরদেহ ভেসে উঠছে। স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে খবর দিলে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, সোমবার রাতে পুলিশ ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিন জুয়ারিকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছে। এসময় আরো কয়েকজন পালিয়ে গেছে। ছগির মিয়ার মৃত্যু কীভাবে হয়েছে পুলিশ এখনো তা নিশ্চিত নয়। মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর কারণ বলা যাবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
দারিদ্র্যতা হারাতে পারেনি তাকে। কঠোর পরিশ্রম করে আজ সাফলতার স্বাদ পেয়েছে সে। বাড়িতে পড়ার জায়গা না থাকায় চাচার পাঠাগারে বসে পড়ত। কখনো দর্জির কাজ, কাঁথা সেলাই কখনো বা প্রাইভেট পড়িয়ে এসএসসি পরীক্ষায় ‘এ প্লাস’ পেয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সুমাইয়া আক্তার।
সুমাইয়া আক্তার জেলার নবীনগর পৌর শহরের সুহাতা এলাকার জীবন মিয়ার মেয়ে। সে এবার উপজেলার ভোলাচং হাই স্কুল থেকে মানবিক বিভাগ থেকে এ প্লাস এসএসসিতে উত্তীর্ণ হয়েছে।
জানা যায়, সুমাইয়া আক্তাররা দুই বোন। সে বড়, ছোট বোন উন্মে হানি চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। সুমাইয়ার বাবা পেশায় একজন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালক। তার বাবা প্রায় সময় অসুস্থ থাকেন। সুমাইয়ার মা পারভীন আক্তার গৃহিনীর পাশাপাশি কাঁথা সেলাই করে পরিবার চালান। সুমাইয়া মায়ের সঙ্গে কাঁথা সেলাই করতেন। পাশপাশি দর্জির কাজ করত ও প্রাইভেট পড়াত। বাড়িতে পড়ার জায়গা না থাকায় চাচা স্বপন মিয়ার পাঠাগারে প্রায় সময় বসে নিরবে লেখাপড়া করত সুমাইয়া। কঠোর পরিশ্রমের পাশাপাশি সে প্রতিদিন গড়ে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা পড়ালেখা করত।
সুমাইয়ার চাচা স্বপন মিয়া বলেন, সুমাইয়াকে কখনো চাপ দেইনি যে এ প্লাস পেতে হবে। তাকে বলতাম সার্টিফিকেটের এ প্লাস না পেয়ে তোমার নিজের মধ্যে এ প্লাস এর যোগ্যতা অর্জন কর। সে সেভাবেই লেখাপড়া করেছে। সুরাইয়া প্রচুর পরিশ্রম করত, কাজের ফাঁকে প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা নিয়মিত লেখাপড়া করতো। পাঠাগারে সাধারণত রাতে ছেলেরা আসতো, সে নিজের মতো করে নিরবে বসে পড়ালেখা করতো। তার মধ্যে কোন দ্বিধা থাকত না, সে নিজের মতো করে পড়ার পরিবেশটা তৈরি করে নিতো।
তিনি আরো বলেন, আমাদের পরিবার থেকে এই প্রথম কেউ এ প্লাস পেয়েছে। এটি খুব সম্মানের। আমি তার জন্য সবার কাছে দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করি। সুরাইয়া যেন ভবিষ্যৎতে একজন ভালো মানুষ হয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করতে পারে সেটাই আমাদের প্রত্যাশা। সুমাইয়া গুঞ্জন পাঠাগারের আবৃত্তি বিভাগের পরিচালকও।
সুমাইয়া জানান, আমার চাচা স্বপন মিয়া পড়ালেখার ব্যাপারে সাহায্য সহযোগিতা করেছে। নিয়মিত ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা পড়ালেখা করেছি। স্কুলের শিক্ষকরা আমার পড়ালেখার খোঁজখবর নিতেন। আমি ভবিষ্যতে একজন শিক্ষক হতে চাই। সেই জন্য সকলের দোয়া কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ভোলাচং হাই স্কুলের শিক্ষক হেলাল উদ্দিন বলেন, সুমাইয়া মানবিক বিভাগ থেকে এ প্লাস পেয়েছেন। এতে আমরা ভীষণ খুশি। সামনে পড়ালেখার সুযোগ পেলে সে আরও ভালো রেজাল্ট করবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, নবীনগর ও বিজয়নগর এই তিন উপজেলার নির্বাচনের প্রচার প্রচারনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। জয়ের আশায় প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট চাইছেন, দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। প্রার্থী নিজে এবং তাদের কর্মী সমর্থকদের মাধ্যমে নিজ নিজ প্রতীকের প্রচার করছেন তারা। এদিকে ভোটারদের মতে, সৎ যোগ্য ও এলাকার উন্নয়নে যিনি ভূমিকা রাখবেন, যাকে সুখে দুখে পাশে পাওয়া যাবে, তাকেই তারা ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত করবেন। তবে ভোটার এবং প্রার্থী সকলেই আশাবাদী একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সাধারণ ভোটাররা সৎ, যোগ্য ও নিষ্ঠাবান প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করতে চান। তবে জয়ের ব্যাপারে সকল প্রার্থীরাই আশাবাদী। আর তাই সেই আশায় প্রার্থীরা বিরামহীন চালিয়ে যাচ্ছেন নিজ নিজ প্রচার প্রচারণা। দিন যতই যাচ্ছে প্রার্থী, কর্মী ও ভোটারদের মধ্যে বাড়ছে আুৎসবের আমেজ। প্রার্থীর পক্ষে কর্মীরা সালাম জানাচ্ছেন ভোটারদেরকে। আগামী ৫ জুন চতুর্থ ধাপে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, বিজয়নগর ও নবীনগর উপজেলার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনটি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ১৯ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৫ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে জোয়ারের পানিতে ডুবে নাহিদ মিয়া (৪) নামে এক শিশু মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শিশু নাহিদ ওই গ্রামের শহিনুর আলমের ছেলে।
নবীনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, নাহিদসহ আরও কয়েকজন শিশু বাড়ির পূর্বপাশের একটি জমিতে বর্ষার জোয়ারের পানিতে গোসলে করতে যায়। গোসল শেষে অন্য শিশুরা বাড়িতে চলে আসলেও নাহিদ আসেনি। এর কিছুক্ষণ পর নাহিদের মরদেহ জোয়ারের পানিতে ভেসে উঠলে স্থানীয়রা দেখতে পায়।
পুলিশের কর্মকর্তা আরো বলেন, শিশুর মরদেহ জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি রবিউল আউয়াল রবি ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুসের বিরুদ্ধে চাদাঁর টাকা ফেরতের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা।
আজ ১২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজারে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীবৃন্দের ব্যানারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে ব্যবসায়ী ও দোকান মালিকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মোঃ আল আমিন, মোঃ এরশাদ মিয়া, আবুল কাশেম, আলমগীর হোসেন, বোরহান উদ্দিন, মোঃ শান্ত, ইয়ার হোসেন, সোহেল রানা, দিদার আহমেদ ও চিনু রানী।
এছাড়াও মানববন্ধনে বাঙ্গরা বাজারের কয়েক শতাদিক ব্যবসায়ী ও দোকান মালিকরা অংশগ্রহণ করেন।
এসময় মানববন্ধনে অংশ নেওয়া কয়েকজন ব্যবসায়ী ও দোকান মালিকরা তাদের বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকার পতনের আগে বাঙ্গরা বাজার পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস পেতো না। তারা বাজারের প্রায় দুই শতাদিক ব্যবসায়ীদের থেকে গত কয়েক বছরে বিভিন্ন অজুহাতে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তারা আরো বলেন, এ কমিটি বিগত দিনে বাজারের কোন উন্নয়ন তো করেনি বরং বাজারটাকে বিভিন্নভাবে লুটপাট করে ধ্বংস করে দিয়েছে। এর ফলে অনেক ব্যবসায়ীরা এখন নিঃস্ব হয়ে গেছে। তাই এখন ব্যবসায়ীদের থেকে হাতিয়ে নেওয়া সকল টাকাগুলো আমরা বাজার কমিটির কাছে ফেরত চাই।
তারা আরো বলেন, ব্যবসায়ীদের থেকে হাতিয়ে নেওয়া টাকা বাজার কমিটি ফেরত দিতে গরিমসি বা তালবাহানা করলে সকল ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা অতি দ্রুত প্রশাসনের দারস্ত হবেন বলেও কঠোর হুশিয়ারী দেন।মানববন্ধন শেষে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ও দোকান মালিকরা বাঙ্গরা বাজার পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে নবীনগর টু কোম্পানীগঞ্জ সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেন।তবে এব্যাপারে বাঙ্গরা বাজার পরিচালনা কমিটির কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।