চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় মাদক ব্যবসায়ীদের ছুরিকাঘাতে খাইরুল ইসলাম নামে এক পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় গ্রেফতার আতঙ্কে পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে শিবনগর এলাকা। ওই ঘটনায় করা মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি ও মাদক ব্যবসায়ীদের ধরতে প্রতিদিনই অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। ফলে পুলিশের ভয়ে দিনে তো নয়ই, রাতেও বাড়ি ফিরছেন না গ্রামের কোনো পুরুষ।
সরেজমিনে শিবনগর গ্রামে গিয়ে কোনো পুরুষের দেখা মেলেনি। রাস্তাঘাটও অনেকটা ফাঁকা। কয়েকটির বাড়িতে নারীদের দেখা গেলেও কোনো সাড়াশব্দ নেই। ছোট ছোট শিশুরা বাড়ির উঠানে খেলা করছিল। কিন্তু অপরিচিত মানুষ দেখে পুলিশ মনে করে তারাও ভয়ে পালিয়ে যায়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ৭০-ঊর্ধ্ব এক বৃদ্ধা জানান, গ্রামে কোনো পুরুষ মানুষ নেই। সবাই ভয়ে আছে যদি পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। কারণ পুলিশের ওপর হামলার মামলা। ছাড়া পেতে মুশকিল হয়ে যাবে। তাই তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
মনিয়ন্ধ ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও স্থানীয় যুবলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া সবুজ বলেন, ওই দিন রাতেই অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেফতার করতে শুরু করে পুলিশ। এরপরই শিবনগর গ্রামে গ্রেফতার আতঙ্ক শুরু হয়। আমরা প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার ও আইনের মাধ্যমে শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বলেন, শিবনগর গ্রামটি মাদকপ্রবণ এলাকা হিসেবেই পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরেই প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী গ্রামে ব্যবসা চালিয়ে আসছে। প্রতিদিন কোটি টাকারও বেশি মাদক কেনাবেচা হয় এই গ্রামে। প্রতি মাসে মাসোহারা দিয়ে তারা ব্যবসা চালিয়ে আসছে। এছাড়া এ গ্রামে একটি মানব পাচারকারী চক্রও সক্রিয় রয়েছে। এর আগেও মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করতে এসে পুলিশ ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন হামলার শিকার হয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আখাউড়া থানা পুলিশে পরিদর্শক (ওসি) মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, সাধারণ মানুষ না, যারা হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত ও ওই এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী এরাই পুলিশের ভয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে। দোষীদের ও মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করতে পুলিশের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ৫ মে শুক্রবার রাতে আখাউড়া থানা পুলিশের একটি দল উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নে মাদক উদ্ধারে অভিযান চালায়। সেখানকার শিবনগর এলাকায় অভিযান পরিচালনাকালে সেলিম নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে ধরার সময় সে পুলিশের উপর হামলা চালায়। এ সময় পুলিশ সদস্য খাইরুল ইসলামকে ছুরিকাঘাত করে মাদক ব্যবসায়ী পালিয়ে যায়। এতে তিনি মাথায় ও পেটে গুরুতর আঘাত পান। পরে আহত অবস্থায় পুলিশ সদস্য খায়রুলকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ৫৪ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করে সেই মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৫০-৫৬ জনকে আসামি করা হয়। এদিকে হামলার ঘটনায় পুলিশ শিবনগর গ্রামে অভিযান চালিয়ে এ পর্যন্ত ৫০ জনকে গ্রেফতার করেছে বলে জানা গেছে। পুলিশ বলছেন, গ্রেফতারকৃতরা প্রত্যেকেই এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও অপরাধী। তাদের নামে মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধের একাধিক মামলা রয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়া উপজেলায় এক নারীকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনা ঘটে আজ ২৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকালে আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের গাজির বাজার এলাকায়।
এ ঘটনায় পুলিশ ফারহান রনি নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে। রনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহনেওয়াজ ভূঁইয়ার ছেলে। তিনি চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী বলে জানা গেছে।
তবে নিহত নারীর নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। তার মাথাহীন দেহের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে গেছে। হাতে চুরি থাকায় দেহটি নারী বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, গাজীর বাজার এলাকায় এনামুলের বাড়ি থেকে রাজহাঁস চুরি হয়। সকালে হাঁস খুঁজতে গিয়ে শাহনেওয়াজ ভূঁইয়ার পরিত্যক্ত টিনের ঘর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখেন। সেখানে থাকা ফারহান রনি পাতা পোড়াচ্ছেন বলে জানান। তার কথা বিশ্বাস না হলে হাঁসের মালিক তার ভাই রোমানকে নিয়ে ঘরে কী দেখতে চান। এ সময় ফারহান ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের মারার হুমকি দেন। সন্দেহ ঘনীভূত হলে তারাসহ গ্রামের লোকজন গর্তে পুড়তে থাকা মরদেহ দেখতে পান। পরে খবর দিলে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।
আখাউড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহীনূর ইসলাম জানান, নিহতের দেহের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে গেছে। পুরুষ না মহিলা বুঝা যাচ্ছে না। পরিচয় শনাক্তে সিআইডি ও পিবিআইকে খবর দেওয়া হয়েছে।
মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, আখাউড়া থেকে :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় রমজান মাস উপলক্ষে অসহায় ও দুস্থ দরিদ্র মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে আখাউড়া ব্লাড ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে ইফতার বিতরণ করা হয়।
ব্লাড ফাউন্ডেশন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক মোঃ রবিন মিয়ার সঞ্চালনায় ২৫ মার্চ মঙ্গলবার বিকালে আখাউড়া সড়ক বাজারের কয়েকটি পয়েন্ট ও রেলওয়ে ষ্টেশন রোড সহ পথচারী ও অটোরিকশা চালকসহ ছিন্নমূলের মানুষদের মাঝে ইফতার বিতরণ করা হয়েছে।
বিশেষ অতিথি ছিলেন, সংগঠনের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, সমাজসেবক মো.শাহাব উদ্দিন আহমেদ, আমেদাবাদ আলহাজ্ব শাহ আলম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ফখরুল ইসলাম, ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক হারুনুর রশিদ।
এ সময় ব্লাড সংগঠনের পক্ষ থেকে মো: শাহাবউদ্দিন আহমেদ বলেন, এই কর্মসূচির মাধ্যমে অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর পাশাপাশি সমাজে মানবতার বাণী পৌঁছে দেওয়ার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে আখাউড়া ব্লাড ফাউন্ডেশন। ভবিষ্যতেও আমরা এ ধরনের সেবামূলক কাজ চালিয়ে যাব।
আমেদাবাদ আলহাজ্ব শাহ আলম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ফখরুল ইসলাম বলেন, আমি সমাজের সকলকে অসহায়দের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি, আখাউড়া ব্লাড ফাউন্ডেশন বিশ্বাস করে- মানবতার সেবাই পরম ধর্ম।
ইফতার বিতরণ শেষে উপজেলা মাঠে এসে দোয়া ও মাখফিল অনুষ্ঠিত হয়। উপস্থিত ছিলেন, ব্লাড ফাউন্ডেশনের সদস্যরা ও উপজেলা প্রশাসন কর্মকর্তারা।
চলারপথে রিপোর্ট :
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর টানা বর্ষণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর এলাকার আশপাশের সীমান্তবর্তী কয়েক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। আজ ১ জুন রবিবার সকালে দেখা যায়, স্থলবন্দরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা কলন্দি খাল, কালিকাপুর হয়ে আব্দুল্লাপুর দিয়ে জাজি গাং, বাউতলা দিয়ে মরা গাং ও মোগড়া ইউনিয়ন দিয়ে বয়ে যাওয়া হাওড়া নদী দিয়ে অস্বাভাবিকভাবে পানি ঢোকার কারণে তলিয়ে যাচ্ছে ওইসব গ্রামের রাস্তা-ঘাট। এতে করে উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের কালিকাপুর, বীরচন্দ্রপুর, আব্দুল্লাহপুর ও বঙ্গেরচর গ্রামের জমি ও রাস্তাঘাট তলিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, শনিবার দিবাগতরাত থেকে এসব নদী, খাল দিয়ে পানি ঢুকছে। এতে করে এসব গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে।
আখাউড়া স্থলবন্দরের মৎস্য রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক মিয়া বলেন, গতরাত থেকে পানি ঢুকছে। বন্দরের আশপাশে পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত রফতানিতে কোনো প্রভাব পড়েনি। তবে পানি যেভাবে বাড়ছে এতে করে আখাউড়া-আগরতলা সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে করে দুইদেশের বাণিজ্য বন্ধ হওয়ার শঙ্কায় রয়েছি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনজুর রহমান বলেন, হাওড়া নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৩০/৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। তবে বিপদসীমা পার করেনি। বিপদসীমা থেকে ২ মিটার নিচে আছে।
মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, আখাউড়া থেকে :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় টিকটক করতে গিয়ে চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে ছিটকে পড়ে কাইয়ুম (২৩) ও তারেক (২৫) নামে দুই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গুরুত্বর আহত হয়েছে আরো দুইজন।
চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে দুই যুবক নিহত হয়েছে। আজ ২ এপ্রিল বুধবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া রেলওয়ে ব্রিজ এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় আরো তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়রা জানায়, চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা সিলেটগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি মোগড়া রেলওয়ে ব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে ট্রেনের ছাদে থাকা কয়েকজন যুবক উঠে দাঁড়ায়। এ সময় রেললাইনের উপর দিয়ে যাওয়া ডিস লাইনের তার পেঁচিয়ে তারা ট্রেন থেকে পড়ে যান। এতে ঘটনাস্থলে দুই যুবক নিহত হন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে।
আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয়রা আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আখাউড়া রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জসিম উদ্দিন খন্দকার বলেন, লাশ উদ্ধারের জন্য ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। হতাহতদের পরিচয় শনাক্ত করতে পুলিশ কাজ করছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় আমোদাবাদ আলহাজ্ব শাহ আলম উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মো.তারেক আহমেদ এর পদত্যাগের দাবিতে ক্লাশ বর্জন করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আজ ২৯ সেপ্টেম্বর রবিবার সকাল ১০ টায় বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে কয়েকশত শিক্ষার্থী এ কর্মসূচি পালন করেন। পরে বিদ্যালয় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।
মিছিলটি এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে মিলিত হয়। সেখানে পৌছালে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন, মো. হান্নান, মো. উজ্জল, রুনা আক্তার, বিল্লাল হোসেন, নূর জাহান প্রমুখ। বক্তারা বলেন, আমরা বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ চাই। বিদ্যালয়ে কোনো লাইব্রেরি নাই। টয়লেটের ব্যবস্থা নাই। ভালো শিক্ষক এলেও থাকতে চান না। বিদ্যালয়ে বেশি ফি নেওয়া হয়।
এ সময় বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষক তারেকের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি, অনৈতিক কর্মকান্ড, অতিরিক্ত ফি ধার্য, নানা ধরনের অপরাধের অভিযোগ তুলে ‘দফা এক দাবি এক, প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ’ বলে শ্লোগান দিতে থাকেন। তবে এ বিষয় ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তারেক তার বিরুদ্ধে আনিত সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।