চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মুস্তাব আলীর (৫৮) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আজ ১০ মে বুধবার সকাল ১০টার দিকে ২নং গ্যাস ফিল্ডস কোয়ার্টারের বাথরুম থেকে তার মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
মুস্তাব আলী নাটোর জেলার পাইকপাড়া সর্দারবাড়ির মৃত মজির উদ্দিনের ছেলে। তিনি স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে গ্যাস ফিল্ডের কোয়ার্টারে থাকতেন। ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে তিনি এই প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন।
নিহতের গাড়িচালক ও তার পরিবার সূত্রে জানা যায়, আজ সকাল ৮টার দিকে অধ্যক্ষ মুস্তাব তার গাড়ির চালককে বাসায় আসতে বলেন। এরপর তিনি বাথরুমে গেলে আর বেরিয়ে আসেননি। পরে পরিবারের লোকজনের সন্দেহ হলে তারা বাথরুমের দরজা ভেঙ্গে তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান।
ঘটনাস্থলে থাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সাফায়েত উল্লাহ জানান, অধ্যক্ষ মুস্তাব ঋণগ্রস্ত ছিলেন। তিনি তার চাচাতো ভাইয়ের কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা এবং ব্র্যাক ও ডাচ-বাংলা ব্যাংক থেকে লোন নিয়েছিলেন। এছাড়া তার ৪টি ট্রাক ছিল। কিন্তু তিনি সেগুলোর কিস্তি পরিশোধ করতে পারছিলেন না। ফলে যেখান থেকে তিনি ট্রাকগুলো ডাউন পেমেন্টে কিনেছিলেন সেখান থেকে দুটি ট্রাক নিয়ে যায়। অবশিষ্ট ট্রাকগুলো টিকিয়ে রাখতে গিয়ে তিনি ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। অধ্যক্ষ মুস্তাব গত মার্চ মাসেও একবার কেরি পোকা মারার ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন।
তিনি আরো বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিহতের মরদেহ সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের একটি ব্যায়ামাগারে (জিম) গোপনে আপত্তিকর ভিডিও ধারণের প্রতিবাদ করায় এক গৃহবধূসহ দুইজনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৩০ আগস্ট বুধবার সন্ধ্যায় জেলা শহরের মৌলভীপাড়ায় বিএস ফিটনেস ক্লাব নামে একটি জিমে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর ৯৯৯-এ কল করলে আহতদের উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় ঘটনাস্থল থেকে জিমের পরিচালক জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হাবিবুল্লাহ ভূইয়া বিপ্লব, ফিটনেস ট্রেইনার মিতু আক্তার ও সাইমকে আটক করা হয়।
এ ঘটনা রাতে ওই গৃহবধূর ভাসুর মাসুদুর রহমান (সোহাগ) বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় মামলা করেন। মামলার পর ওই তিনজনকে গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ।
মামলার এজাহার ও আহতদের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ওই গৃহবধূ ও তার বোন শহরের মৌলভীপাড়ায় বিএস ফিটনেস সেন্টারে নিয়মিত ব্যায়াম করেন। সেখানে মেয়েদের ব্যায়াম করার আলাদা ব্যবস্থা ও পুরুষ যাওয়ার অনুমতি না থাকায় তারা ভর্তি হয়েছিলেন। জিমের ট্রেইনার মিতু আক্তারের আচরণে গোপন ভিডিও ধারণ করার বিষয়ে তাদের সন্দেহ হয়।
দুইদিন আগে তারা নিশ্চিত হন ট্রেইনার মিতু গোপনে তাদের ভিডিও ধারণ করেছেন। বুধবার বিকেলে মিতুকে ভিডিও করার কথা জিজ্ঞাসা করলে তাদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। এরই জেরে ট্রেইনার মিতু বিষয়টি জিমের পরিচালক জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হাবিবুল্লাহ ভূইয়া বিপ্লবকে জানান। খবর পেয়ে বিপ্লব মিতুকে নিয়ে তাদের দুই বোনের কাছে যান। সেখানে মিতু ওই গৃহবধূর চুলের মুঠি ধরে মারধর শুরু করেন।
একপর্যায়ে জিমে থাকায় শহরের উত্তর পৈরতলার সোহেল মিয়া নামে এক যুবক তাদের বাঁচাতে আসলে বিপ্লবসহ তার সহযোগীরা তাদের লোহার রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করে আটকে রাখেন। এ অবস্থায় তাদের পরিবারের লোকজন আসলে জিমের ভেতরে ঢুকতে পারেননি। আশপাশের সড়কে উৎসুক মানুষ জমায়েত হয়ে ভিডিও করে ঘটনাটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন।
শেষে একজন ৯৯৯-এ কল দিলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মডেল থানা পুলিশ এসে তারা ভুক্তভোগীদের উদ্ধার করেন। এসময় জিমের পরিচালক হাবিবুল্লাহ ভূইয়া বিপ্লব, ট্রেইনার মিতু আক্তার ও সাইমকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। গুরুতর আহত হওয়ায় ওই গৃহবধূ ও সহায়তা করতে আসা সোহেলকে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসাইন বলেন, জিমের ঘটনায় চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৮/৯ জনকে আসামি করে একটি মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় গ্রেফতার তিন আসামিকে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
কোটা সংস্কার বিষয়ে মহামান্য আপিল বিভাগের রায়ের প্রেক্ষিতে সরকার কর্তৃক প্রজ্ঞাপন জারির পরও অহেতুক গুজব ছড়িয়ে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির অপতৎপরতার বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
আজ ২৯ জুলাই সোমবার বিকাল ৩ টা থেকে শহরের বঙ্গবন্ধু স্কয়ার, লোকনাথ টেংকের পাড়, প্রেসক্লাব চত্বর ও বিরাসার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা জমায়েত হয়ে অবস্থান, বিক্ষোভ ও মিছিল করতে থাকে। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালিত হয়।
এসময় বিভিন্ন স্থানে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক তানজিন আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক মো. মনির হোসেন, ত্রাণ সম্পাদক আবদুল খালেক বাবুল, সাংস্কৃতিক সম্পাদক জহিরুল ইসলাম, বিজ্ঞান প্রযুক্তি সম্পাদক অধ্যক্ষ মোস্তফা কামাল, উপদপ্তর সম্পাদক সুজন দত্ত, সদর উপজেলা সাধারণ সম্পাদক এমএএইচ মাহবুব আলম, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি এড. লোকমান হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সাইদুজ্জামান আরিফ, জেলা শ্রমিকলীগ সভাপতি কাউসার আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আশরাফ খান আশা, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল, সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আফরিন, সদর উপজেলা যুবলীগ সভাপতি আলী আজম, সাধারণ সম্পাদক জসীম উদ্দিন, পৌর যুবলীগ সভাপতি সভাপতি আলামিন সওদাগর, সাধারণ সম্পাদক আকবর হোসেন লিটন, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি মনিরুজ্জামান ভূঞা শিপু।
চলারপথে রিপোর্ট :
আজ ৬ মার্চ সোমবার বেলা ১১ টায় জামে মসজিদ রোডস্থ চেম্বার ভবনের তৃতীয় তলায় ফরিদ উদ্দিন আহমেদ মিলনায়তনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র ৩৬তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সভাপতি আলহাজ্ব আজিজুল হক।
সভায় ২০২২ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন চেম্বারের সভাপতি আলহাজ্ব আজিজুল হক।
২০২২ সালের অডিট রিপোর্ট উপস্থাপন করেন চেম্বারের ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি কাজী জাহাঙ্গীর।
২০২৩ সালের বাজেট উপস্থাপন করেন চেম্বারের সহ-সভাপতি হাজী মোঃ বাবুল মিয়া ও বিগত সভার কার্যবিবরণী পেশ করেন চেম্বারের সচিব মোঃ আজিম উদ্দিন।
সভায় বিগত অর্থ বছরের কার্যবিবরণী, বার্ষিক প্রতিবেদন, অডিট রিপোর্ট, সম্ভাব্য বাজেট উপস্থিত সদস্যদের অকুণ্ঠ সমর্থনে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।
অন্যান্যবারের ন্যায় ২০২৩ সালের অডিট রহমান কাসেম এন্ড কোম্পানীকে করার অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় চেম্বারের ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি কাজী জাহাঙ্গীর এর মমতাময়ী মাতাসহ জানা অজানা যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের সকলের রুহের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়।
সভায় অন্যান্যের উপস্থিত ছিলেন চেম্বারের সাবেক সভাপতি তানজীল আহমেদ, সাবেক ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি সুভাষ চন্দ্র পাল, চেম্বার পরিচালক মোঃ শাহজাহান মিয়া, মোঃ কামাল মিয়া, মোঃ আজিজুর রহমান শামীম, সুব্রত পাল, জাবেদুল ইসলাম সোহাগ, মোঃ জসিম উদ্দিন, তানভীর আহমেদ, মোঃ আল মামুন, মোঃ বাবুল মিয়া, মোঃ রফিকুল ইসলাম, মোঃ জুয়েল খান, প্রদীপ চন্দ্র সাহা, আলহাজ্ব হারুনুর রশিদসহ চেম্বারের সাধারণ সদস্যবৃন্দ।
সভা পরিচালনা করেন পরিচালক আলহাজ্ব মমিনুল আলম বাবু।
চলারপথে রিপোর্ট :
দীর্ঘ দেড় মাস পর স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালত। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে আইনজীবীরা আদালতের কার্যক্রমে অংশ নেন। বিচারপ্রার্থীরাও আদালত প্রাঙ্গণে জড়ো হতে থাকেন। এতে আদালতের স্বাভাবিক কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।
এর আগে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা আইনজীবী সমিতিতে অনুষ্ঠিত বিশেষ সাধারণ সভায় আইনজীবীরা আদালতে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেন। তবে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-১ এর আদালত বর্জন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন তারা।
এদিকে আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা) ছুটিতে থাকায় বিচার কাজ পরিচালনা করেন ট্রাইব্যুনাল -৩ এর বিচারক। ফলে সব আদালতের কার্যক্রমেই অংশ নিচ্ছেন আইনজীবীরা।
এদিন দুপুর ১২টায় জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগারকে তার এজলাসে বসে স্বাভাবিক বিচার কাজ পরিচালনা করতে দেখা গেছে। জেলা জজের এজলাসেও আইনজীবীদের স্বাভাবিক উপস্থিতি ছিল।
এ বিষয়ে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল বলেন, আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম চলছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক ছুটিতে থাকায় ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) রবিউল আলম ট্রাইব্যুনাল -১ এর মামলাগুলো পরিচালনা করছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী সামসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, সোমবারের বিশেষ সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আইনজীবীর আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সব আদালতের কার্যক্রমেই অংশ নিয়েছেন।
নতুন মামলা রুজু নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গত ১ জানুয়ারি থেকে আইনজীবীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুকের আদালত বর্জন করতে থাকেন।পরে জেলা ও দায়রা জজ ও নারী এবং শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর অপসারণ এবং নাজির মোমিনুল ইসলামের বিচারের দাবিতে গত ৪ জানুয়ারি থেকে আইনজীবীরা দফায় দফায় আদালত বর্জন করেন।
পরে আইনমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর গত ১৬ জানুয়ারি থেকে দুটি আদালত ছাড়া অন্য সব আদালতের কার্যক্রমে অংশ নিতে থাকেন। এদিকে বেঁধে দেওয়া সময়ে আইনজীবীদের দাবি পূরণ না হওয়ায় ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সর্বাত্মক আদালত বর্জন কর্মসূচির ঘোষণা দেন আইনজীবীরা।
এতে হাজার হাজার বিচারপ্রার্থী চরম দুর্ভোগের শিকার হন। পরে গত ১২ ফেব্রুয়ারি আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এসে স্থানীয় এমপি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীসহ আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করেন।