চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে স্থানীয় আলম ব্রাদার্স এগ্রো ফুড এবং এস আলম এগ্রো ফুড নামের দুটি ডায়ার মিল (বয়লার) পরিবেশের ক্ষতি করে চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
তাদের মিলের কালো ধোঁয়ার সঙ্গে উড়ন্ত ছাই ও দূষিত কালো পানি মিল ঘেঁষা খালে পড়ে ভরাট হওয়ার পাশাপাশি কৃষি জমিরও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
এতে ওই মিলগুলোর পাশে থাকা জমির ধান এখন হুমকির মুখে। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়াসহ ডায়ার মিল দুটি অন্যত্র সরিয়ে নিতে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগসহ আবেদন জানিয়েছে গ্রামবাসী।
গ্রামবাসীর দেওয়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, আশুগঞ্জ উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের খড়িয়ালা গ্রামে আবাসিক এলাকায় আলম ব্রাদার্স এগ্রো ফুড এবং এস আলম এগ্রো ফুড নামের দুটি ডায়ার মিল (বয়লার) স্থাপন করা হয়েছে। যা পরিবেশ সম্মত না হওয়ায় মিল থেকে উড়ন্ত ছাই ও ধূলা বাতাসের সঙ্গে উড়ে গ্রামবাসীর জন জীবনে অসুবিধার সৃষ্টি করছে। এতে শিশু, বৃদ্ধসহ নানা বয়সী মানুষ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। এছাড়াও মিলের গরম পানি ও ছাই পার্শ্ববর্তী খালে পড়ে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ফলে খালটি দিয়ে এখন কোনোভাবেই পানি প্রবাহিত হচ্ছে না। এতে মিলের গরম পানি ও ছাইয়ের কারণে কৃষিজমির ফসল নষ্ট হচ্ছে। গ্রামবাসী বিষয়টি মিল মালিকদের বার বার জানালেও তারা তাতে কর্ণপাত করেনি। বরং উল্টো গ্রামবাসীকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি-ধমকি দিয়ে বে-আইনিভাবে মিলের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
সরেজমিন খড়িয়ালা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ধানি জমির পাশেই রয়েছে একটি সরকারি খাল। এর পাশেই গড়ে তোলা হয়েছে ওই মিল। মিলের পেছন অংশে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি খালটি পোড়া ধানের কালো ছাইয়ের স্তূপ জমে ভরাট হয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে পড়েছে। এতে কৃষকরা জমি চাষের সময় খালের পানি ব্যবহার করতে পারছে না। এছাড়াও মিলের চিমনি দিয়ে অনবরত নির্গত হচ্ছে কালো ধোঁয়া।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ফরিদা বেগম বলেন, আমি ৩৭ শতক জমিতে ধানের চাষ করেছিলাম কিন্তু মিলের ছাইয়ের কারণে তা নষ্ট হয়ে গেছে। শুধু আমার জমিই নয় খালের পাশে থাকা অনেক জমির ধান এখন হুমকির মুখে।
তিনি আরো বলেন, এখানে একটি ডোবা রয়েছে সেখানে চাষের জন্য মাছ ছাড়া হলে সেগুলোও মারা যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা রাকিব মিয়া বলেন, মিলের কালো দূষিত ধোঁয়ার কারণে গ্রামের মানুষের অনেক কষ্ট হচ্ছে। সাদা কাপড় পড়ে থাকা যায় না। এছাড়া সরকারি যে খালটি ছাইয়ের কারণে ভরাট হয়ে গেছে সেটি মেঘনা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত। কিন্তু ভরাটের কারণে পানি প্রবাহিত হচ্ছে না। আমরা এ থেকে মুক্তি চাই।
মো. ফয়সাল বলেন, ছাই এবং দূষিত পানিতে খালটির এখন করুণ অবস্থা। কৃষকরা জামি চাষ করার জন্য খালের পানি ব্যবহার করতে পারছে না। এতে করে জমিগুলো এখন নষ্ট হওয়ার পথে। আমরা খালটিকে পুনরায় আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সরকারের দৃষ্টি কামনা করছি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আলম ব্রাদার্স এগ্রো ফুড এবং এস আলম এগ্রো ফুডের মালিক আলম মিয়া জানান, আশুগঞ্জে ৪০টি ডায়ার মিল রয়েছে। আমরা এই সমিতির আওতাভুক্ত। আমাদের পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র আছে। আমরা পরিবেশের সব আইন কানুন মেনেই মিল পরিচালনা করছি। তারা অন্য বিরোধের জেরে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. খালেদ হাসান বলেন, এ বিষয়ে আমাদের হাতে একটি অভিযোগ এসেছে। দ্রুত সরেজমিন তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জেরে সিরাজ মিয়া (৪৪) নামের এক শারীরিক প্রতিবন্ধীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। আজ ২০ আগস্ট রবিবার সকাল আটটার দিকে উপজলার তালশহর পশ্চিম ইউনিয়নের মৈশাইর আলাকপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহত সিরাজ মিয়া উপজেলার তালশহর পশ্চিম ইউনিয়নের মৈশাইর গ্রামের উত্তর পশ্চিমপাড়া এলাকার মৃত সোলায়মান মিয়ার ছেলে।
জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভর্তি আহত প্রতিবন্ধী সিরাজ মিয়া জানান, সরাইল উপজেলার কালিগচ্ছ গ্রামের ব্রিকস ফিল্ড তার বড়ভাই সাধনের ৮ শতাংশ জায়গা রয়েছে। এ জায়গা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত মৃত আব্দুল হাইয়ের ছেলে মন মিয়ার সাথে বিরোধ চলে আসছিল। এ জায়গাটি জোরপূর্বক ভাবে মন মিয়া দখল করে রেখেছে। মন মিয়ার বিরুদ্ধে তার বড়ভাই সাধনে একটা মামলা করেছে। এসব বিষয় নিয়ে মন মিয়ার সাথে প্রায় ঝগড়া হতো তার। আজকে সিরাজ মিয়া বাড়ি থেকে আশুগঞ্জ যাওয়ার পথে মন মিয়া, সোহাগ, হারিজ মিয়াসহ ৭-৮ জন তাকে মারধর করে টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভর্তি করেন।
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাহিদ আহমেদ জানান, এক প্রতিবন্ধীকে মারধরের কথা শুনেছি। হাসপাতালে ও ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিবো।
স্টাফ রিপোর্টার:
দেশে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধী টিকার বুস্টার ডোজ পেয়েছেন ৬ কোটি ৪২ লাখ ৬১ হাজার ৯১৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় বুস্টার ডোজ পেয়েছেন ১ লাখ ১ হাজার ৬৫৮ জন। রোববার (১১ ডিসেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন শাখার (এমআইএস) পরিচালক ও লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. শাহাদাত হোসেন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়। এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে প্রথম ডোজ পেয়েছেন ১৫ হাজার ৮৪৮ জন এবং দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ২১ হাজার ৭৮১ জন। তাদেরকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, সিনোফার্ম, ফাইজার, মডার্না এবং জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন ১৪ কোটি ৮৮ লাখ ৫৬ হাজার ৪৯২ জন এবং দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ১২ কোটি ৬৪ লাখ ৫৮ হাজার ৮৪৮ জন। এ সময়ে টিকার বুস্টার (তৃতীয়) ডোজ পেয়েছেন ছয় কোটি ৪২ লাখ ৬১ হাজার ৯১৪ জন।
২০২১ সালের ১ নভেম্বর ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। এখন পর্যন্ত এক কোটি ৭৩ লাখ ৯৭ হাজার ৫৩৯ শিক্ষার্থী টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছে। দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছে ১ কোটি ৬১ লাখ ৯৮ হাজার ৩২৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে প্রথম ডোজ পেয়েছেন ২৪২ শিক্ষার্থী। দ্বিতীয় ডোজ টিকা পেয়েছেন ৬৮৯ শিক্ষার্থী। তবে এখন পর্যন্ত কোনো শিক্ষার্থীকে বুস্টার ডোজ দেওয়া হয়নি।
এদিকে, এখন পর্যন্ত ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে ১ কোটি ৭৫ লাখ ৩৫ হাজার ৮০০টি। এছাড়া দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে ১০ লাখ ৩৩ হাজার ৪২১ শিশুকে। অন্যদিকে, এখন পর্যন্ত ভাসমান জনগোষ্ঠীর ৫ লাখ ৭৭ হাজার ১৮০ জনকে জনসন অ্যান্ড জনসনের সিঙ্গেল ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে বুস্টার ডোজ পেয়েছেন ১৪ হাজার ৭৭০ জন।
চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনকে ‘বি’ গ্রেডে পুনঃবহালসহ ১১ দফা দাবিতে প্রতিবাদ সভা করেছে আশুগঞ্জের সর্বস্তরের লোকজন।
২৬ মে সোমবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ রেল স্টেশন চত্বরে “ঐক্যবদ্ধ আশুগঞ্জ”-এর উদ্যোগে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় আশুগঞ্জ শহর শিল্প ও বনিক সমিতির সভাপতি হাজী মোঃ গোলাম হোসেন ইপ্টির সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি হাজী মোঃ শাহজাহান সিরাজ, উপজেলা জামায়াত ইসলামির আমির শাহজাহান ভূইয়া, আশুগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হেলাল খান, চর চারতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফাইজুর রহমান, বীরমুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর খন্দকার, আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানির সিবিএ সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক সহ আশুগঞ্জের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা বলেন, আশুগঞ্জ রেলওয়েস্টেশনটি বি-গ্রেড থেকে ডি গ্রেটে নামিয়ে নিয়ে আসায়, সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না যাত্রীরা। পাশাপাশি স্টেশনে যাত্রীদের কোনও নিরাপত্তা না থাকাই যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। তাই ১১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অনতিবিলম্বে স্টেশনটিতে বি-গ্রেডের সকল সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়। যদি অচিরেই দাবি না মানা হয় কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি মানাতে সরকারকে বাধ্য করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার এক নারী বিয়ের দেড় বছরের মাথায় শ্বশুরবাড়ি নরসিংদী জেলার রায়পুরায় মুক্তা বেগম (২০) নামে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ ৭ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার ভোররাতে মুক্তার লাশ শ্বশুরবাড়ি নরসিংদীর রায়পুরা থেকে বাবার বাড়িতে এনে দেওয়া হয়।
সকালে আশুগঞ্জ থানার পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে পোস্ট মর্টেমের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রেরণ করেছে। এর আগে ভোর চারটার দিকে নিহতের লাশ এক আত্মীয়ের মাধ্যমে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। নিহতের স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ওই আত্মীয়কে লাশের গাড়িতে উঠিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। নিহত মুক্তা বেগম আশুগঞ্জ উপজেলার লালপুর হোসেনপুর (কুড়ের পাড়) গ্রামের গোলাম মিয়ার মেয়ে। তার ৭ মাস বয়সী এক ছেলে রয়েছে। এ ঘটনায় আশুগঞ্জ থানা পুলিশ নিহতের শ্বশুর রায়পুরা উপজেলার চাঁনপুর গ্রামের মুজিবুর রহমান ও শাশুড়ি খোশনাহার বেগমকে আটক করেছে।
পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক মুজিবুর রহমান ও তার স্ত্রী খোশনাহার বেগম মুক্তাকে শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তারা জানান, রাত ৮টা থেকে ২টা পর্যন্ত মুক্তা ও তার স্বামী আব্দুল্লাহর মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি হয়। রাত ২টার দিকে স্বামী আব্দুল্লাহ মুক্তাকে মুখে হাত চেপে শ্বাসরোধে হত্যা করে। ঘটনা আড়াল করতে মুক্তার লাশ তার পরিবারের কাছে অসুস্থতার খবর দিয়ে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার মুক্তাকে মৃত ঘোষণা করলে খায়েশ মিয়া নামে আত্মীয়কে দিয়ে সিএনজিতে লাশটি মুক্তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। মুক্তার বুকের ব্যথার কথা বলে তারা ওই আত্মীয়কে সহযোগিতা করতে সঙ্গে নিয়েছিল।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বিগত দেড় বছর আগে নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার চাঁনপুর গ্রামের মুজিবুর রহমানের ছেলে আব্দুল্লাহর সঙ্গে মুক্তার বিয়ে হয়। আব্দুল্লাহ মিষ্টির দোকানের কারিগর। বিয়ের কয়েক মাস যেতে না যেতেই আব্দুল্লাহ ও তার পরিবারের লোকজন মিষ্টির দোকান দেয়ার জন্য মুক্তার বাবার কাছে ৩ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করতে থাকে। এ নিয়ে স্বামী, শ্বশুর-শ্বাশুরীসহ অন্যান্যরা প্রতিনিয়ত মুক্তাকে মানসিক নির্যাতনসহ মারধর করত। এ নিয়ে দুই পরিবারের মাঝে বিগত এক বছরে বেশ কয়েকটি সালিশ হয়েছে। মুক্তার বাবা গোলাপ মিয়া মেয়ের শান্তির কথা চিন্তা করে যৌতুকের টাকা দেয়ার আশ্বাস দিলেও অক্ষমতার জন্য ব্যবস্থা করতে না পারায় দিতে পারছিলেন না। এরই মধ্যে মুক্তার একটি ছেলে শিশুর জন্ম হয়। যার বয়স বর্তমানে ৭ মাস। গোলাপ মিয়া মেয়ের জামাইকে মিষ্টির দোকান দিতে টাকা দিতে না পারলেও তার মেয়ের ও নাতির চিকিৎসা, সিজারিয়ান অপারেশনের খরচ প্রদানসহ নানাভাবে সহযোগিতা করে আসছিলেন।
গতকাল ৬ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে মুক্তার শ্বশুর বাড়ির পক্ষ থেকে তারা বাবা গোলাপ মিয়াকে মোবাইল ফোনে জানানো হয় স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে তার মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নেয়া হচ্ছে। খবর পেয়ে গোলাপ মিয়া জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৌঁছার আগেই তার লাশ নিয়ে বেরিয়ে যায়। পরে তিনি বাড়িতে এসে তার মেয়ের লাশ দেখতে পান। এদিকে সকালে নিহতের শ্বশুর ও শাশুড়ি মুক্তার লাশ দেখতে এলে পুলিশ তাদের আটক করে।
এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সজল কান্তি দাস বলেন, নিহতের লাশের সুরতহাল করে ময়না তদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রেরণ করা হয়েছে। তার গলা ও শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নিহতের শ্বশুর শাশুড়িকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা মুক্তাকে শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। যেহেতু ঘটনাস্থল নরসিংদী উপজেলার রায়পুরায় তাই নিহতের স্বজনদের রায়পুরা থানায় এজাহার দিতে বলা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সাবেক এমপি মঈন উদ্দিন মঈনসহ আওয়ামী লীগের ১৩৫ জন নেতাকর্মীকে আসামী করে আশুগঞ্জ থানায় দুটি পৃথক মামলা রুজু করা হয়েছে।
২০ আগস্ট মঙ্গলবার সকালে আশুগঞ্জ উপজেলার আড়াইসিধা গ্রামের নাসির মিয়ার ছেলে মোঃ রমজান মিয়া ও মইশার গ্রামের মফিজ মিয়ার ছেলে হাসান মিয়া বাদী হয়ে এসব মামলা দায়ের করেন। তারা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সক্রিয় সদস্য বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
মামলায় সাবেক এমপি ছাড়াও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী মোঃ সফিউল্লাহ মিয়া, সাধারণ সম্পাদক আবু নাসের, ৫জন ইউপি চেয়ারম্যানসহ আওয়ামী লীগের উপজেলা ও বিভিন্ন ইউনিয়ন শাখার নেতৃবৃন্দকে আসামী করা হয়েছে।
পৃথক দুটি মামলার অভিযোগে প্রায় অভিন্ন ভাষায় বলা হয়, গত ৪ আগস্ট (রবিবার) ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ গোল চত্বর এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শান্তিপূর্ণ মিছিলে অভিযুক্তরা সংঘব্ধভাবে হামলা করে। এসময় তারা বেশকয়েকটি ককটেল বিষ্ফোরণসহ ছাত্র-জনতার মিছিলে অতর্কিতভাবে গুলি ছুড়ে। এতে ককটেলের স্পিøন্টার ও গুলিতে কয়েকজন আন্দোলনকারী মারাত্মক আহত হয়। এছাড়া আক্রমণকারীরা লাঠিসোটা দিয়ে পিটিয়ে অনেক আন্দোলনকারীকে আহত করে। এসময় আক্রমণকারীরা অন্তত বিশটি মোটর সাইকেল পুড়িয়ে দেয়াসহ নানা ধরনের নাশকতা করে বলে মামলা দুটিতে উল্লেখ করা হয়।
মামলা দু’টির বাদী মোঃ রমজান মিয়া ও হাসান মিয়া জানান, ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিলে অতর্কিত হামলা করে আওয়ামী লীগ সেদিন তাদের ফ্যাসিবাদী চরিত্র পূর্ণভাবে প্রকাশ করেছে। আমরা ভিক্টিম এবং সংক্ষুব্ধ। তাই নৈরাজ্যকারীদের বিচারের জন্য মামলা করেছি।
আশুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ সফিউল কবির জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়ে পৃথক দুটি মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্ত করে আসামীদের গ্রেফতার ও পরবর্তী আইনানুগ ব্যাবস্থা নেয়া হবে।